#শেষ পর্ব ৩ ও শেষ
#শেষ_প্রহর
#Yasira_Abisha (#Fatha)
প্রাক্তনকে আজ ১০ বছর পর দেখবো৷ কলিজার ভিতরটা ধুকধুক করছে। আমার জীবনের প্রথম আর শেষ প্রেম একমাত্র সে ছিলো। এসব ভাবতে ভাবতেই আমি চলে এসেছি কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে, হাত পা একদম ঠান্ডা হয়ে আসছে, এখানে যতগুলো মানুষ আছে তারা সবাই আমার পূর্বপরিচিত। একটা সময়ের কত সুখ দুঃখের মুহুর্ত তাদের সাথে কাটিয়েছি, আজ তো আমার খুশি হওয়ার কথা এতোদিন পর সবার সাথে দেখা হওয়ার কারণে কিন্তু আমি একদমই পারছিনা। কারণ একটাই,
বাল্যকালের প্রেম ১০ বছর পর আজকে আমার সামনে এসে দাঁড়াবে। ইরাদকে আমার দেখতেও ইচ্ছা করে আবার একদমই দেখতে ইচ্ছা করে না। ভালোবাসা বলতে এই মানুষটাই আমার ছিলো সবসময় তাই তাকে দেখতে ইচ্ছা করে, ওর মুখের ওই হাসিটা আমার খুব পছন্দের ছিলো। যখন ইরাদ দূর থেকে আমার দিকে তাকিয়ে হাসতো আমি মুগ্ধ হয়ে ওকে দেখতাম। লজ্জা লাগতো চোখে চোখ রাখতে, কোথথেকে এতো ভালোলাগা এসে ভর করতো ওর পুরো চেহারায় সেটা শুধু আল্লাহ পাকই জানে। আমার মনে একরাশ শান্তি এনে দেওয়ার জন্য ইরাদের একবার “অনেক বেশি ভালোবাসি জান।” এই কথাটাই যথেষ্ট ছিলো। কিন্তু কেনো তাকে নিয়ে ভাববো আমি? সে অধিকার তো আমার আর নেই। সে এখন অন্যের স্বামী তাই কোনোভাবেই ইরাদকে নিয়ে আমি চিন্তা করিনা। সে তো আমার না, সে এখন আমার প্রাক্তন মাত্র। ইরাদের সামনে নিজেকে আমি শক্ত রাখতে পারবো কি না? আমি এই ভয়ে আছি। এতো গুলো বছর নিজেকে একটা খোলস দ্বারা আবৃত করে রেখেছি আজ সেই খোলস ভাঙ্গার বড় ভয় হচ্ছে। আজ একই সাথে আমার ভয়, জড়তা, কষ্ট সব মিলিয়ে চলে এলাম গেটের বাইরে। আল্লাহর কাছে নিজেকে সামলে রাখার শক্তি চেয়ে আমার সবচেয়ে পরিচিত একটা অস্র নিয়ে যেটা হলো হাসি, চেহারায় একটা হাসির রেখে ফুটিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। চোখ বুলিয়ে দেখলাম, ইরাদকে ঠিক তখন চোখে পরে নি, চারিদিকে সব গুলো পরিচিত মুখ কত বছর পর আজকে দেখতে পাচ্ছি। আমাকে দেখে আমার স্কুল লাইফের বেস্টফ্রেন্ড গুলো চলে এলো এবং ওর মধ্যে আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধুবী লাবিবা সবার৷ আগে দৌড়ে কাছে এসে জড়িয়ে ধরলো,
– রুহিইইইইইইইইইইইইইই, কতো কতো মিস করসি তোকে।
আমি ও ওকে জড়িয়ে ধরলাম এতো গুলো বছর পর বান্ধুবীকে কাছে পেলাম।
আমাকে নিয়ে ওরা ভেতরে গেলো।
আমার চোখ দুটো ইরাদকে খুজছিলো বারবার, একটা সাইডে দেখতে পেলাম ওর সব বন্ধুরা দাড়িয়ে আছে। কলিজার ভেতরটা ধুক করে উঠলো, আমি জানি ইরাদ এ পাশেই আছে নিশ্চয়ই। আমার বান্ধুবী গুলো ও এদিকটায় এসে বসলো।
লাবিবা- কি রে রুহি দেরি করলি কেন?
– কাজ ছিলো রে।
মিথ্যা বললাম আজ আসবো কি আসবো না? এটা ভাবতে ভাবতেই দিন কেটে গিয়েছিলো অর্ধেক
তুসি- হ্যাঁ তুই তো আমাদের মধ্যে মোস্ট সাকসেসফুল লেডি, আসছিস যে এটাই বেশি।
রায়মা- তুমি আজকে কেনো কাজ করবি?
রায়মা সবসময় এমন আজগুবি প্রশ্ন করে। এটা ওর অভ্যাস, আজকেও সেইম কাজই করলো ওর ওমন প্রাশ্ন শুনে আমরা সবাই হেসে দিলাম। হাসতে হাসতে সামনের দিকে তাকাই এমন সময় আমার চোখে চোখ পড়ে ইরাদের। হ্যাঁ ইরাদ, আমার প্রাক্তন প্রেমিক। যার চোখ দুটো আমাকে শান্তি দিতো, যার হাত আমার পরম ভরসার হাত মনে হতো। সে আগে দূর থেকে হোক আর কাছ থেকে হোক আমার দিকে তাকিয়েই থাকতো। আর আমি তাকে চোখ রাঙিয়ে রাগ দেখাতাম আর বলতাম “এভাবে কেউ তাকায় থাকে? মানুষ কি বলবে? ” তখন ও প্রতিউত্তরে আমাকে বলতো, “আর কি বলবে? একটা পাগল ওর ভালোবাসাকে দেখছে।” তখন আমি না বুঝতে দিলেও ওকে খুব লজ্জা পেতাম। আর আজ সে ইরাদই আমার জন্য কতটা অপরিচিত হয়ে গেছে সময়ের ব্যাবধানে, যে তার সাথে চোখাচোখি হওয়া মাত্রই চোখ দুটো সরিয়ে নিতে হলো। তার পাশে দাড়িয়ে থাকে বেনারসি পরা মেয়েটার দিকে রুহির চোখ গেলো যে একহাত পেচিয়ে ইরাদের হাত ধরে রেখেছে। মেয়েটা ইরাদের স্ত্রী রুহি দেখে বুঝতে পেরেছে। একদম বউ বউ একটা ভাব আছে তার চেহারায় তার ড্রেসআপে একটা বাংলার শুদ্ধ বউদের একটা ছাপ আছে। ছিপছিপে গরনের মেয়েটা। চেহারায় একটা মায়া আছে মাথা ভর্তি চুল সুন্দর করে একটা খোপা গাথা, সাথে ফুল গায়ে স্বর্ণের অলংকার পড়া। সবাই কথা বলছে কিন্তু রুহির মাথায় এসবই ঘুরছে।
আরিশা- যাই বল রুহিকে নিয়ে আমি অনেক প্রাউড ফিল করি, আজকে রুহি সে সাকসেস এচিভ করসে এটা ও ডিজার্ভ করে কারণ এর জন্য ও অনেক কষ্ট করেছে।
আমি শুধু হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলিয়ে যাচ্ছি, মাথায় শুধু ইরাদই ঘুরছে। কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে। এতো গুলো বছরের রাগ, অভিমান, অভিযোগ, ভালোবাসা সবকিছু নিজের মনে পুষে রেখেছি। আজ সবগুলো বেরিয়ে আসতে চাইছে। ইচ্ছে করছে ইরাদকে প্রশ্ন করতে, “যখন আমাকে এভাবে মাঝ রাস্তায় ছেড়েই যেতে হলো তবে কেনো ভালোবেসেছিলে? তুমি তো আগে বেড়ে গেছো, আমি তো পারলাম না ইরাদ। এখনো যে তোমার জন্য কলিজা ফেটে যায়, তোমার কি একটুও কষ্ট হয় না? তাহলে কি আমার সাথে শুধুই নাটক করেছিলে? আমি যখন তোমার টাইপেরই ছিলাম না তবে কেনো এতো ভালোবেসেছিলা যেটা আমি ভুলে থাকতে পারছি না। আমি তো বলিনাই তোমাকে, আমায় ভালোবাসো। আমি তো বলিনাই আমার জীবনে এসে ভালোবাসা জাগিয়ে তুলো, আজ সে আমি নিঃস্ব। আমার যে সবকিছু থেকেও তুমি নেই, আমার জীবনের ১০টা বছর আজ তুমি ছাড়া চলছে তবুও তো ভুলতে পারলাম না। মানুষ বলে আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড। আমার জীবনে কেনো এমন হচ্ছে না? ১০টা বছর ধরে তুমি নেই তবুও আমি পারিনি অন্য কাউকে তোমার জায়গাটায় আনতে। পারি নি ইরাদ।”
রুহির দিকে চোখ পড়তেই ইরাদ ও সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নেয়। রুহি মেয়েটা যেমন মায়াবী ছিলো তেমনি মায়াবী আছে, সবার চেয়ে রুহির সাজ সবসময় আলাদা হতো। এতো রুচিশীলতা ছিলো মেয়েটার মধ্যে যা আজও বহাল আছে। সবাই যে যেমন পেরেছে আজকে নিজেকে সুন্দর করে গুছিয়ে সেজে এসেছে, সবাইকে ভালো লাগছে তবে রুহিকে লাগছে অন্যন্যা। রুহি পিচ কালারের একটা জর্জেটের ওপরে কুর্শির কাজ করা শাড়ি পরেছে, খুব সুন্দর গ্লোসি লিপস্টিক দিয়েছে।চুল গুলো খোলা। গায়ে ডায়মন্ডের সেট। সবমিলে আর ১০জনের মতো তাকে একদম লাগছেনা, তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো স্টাইল আজও রুহি করে এবং সেটা সবাই মানতে বাধ্য। রুহির চোখ দুটো বরাবরের মতো দিপ্ত একবার তাকালে বারবার তাকিয়ে থাকা যাবে। কতগুলো বছর পর রুহিকে আজ ইরাদ দেখছে, হ্যাঁ এটা আর ১০ বছর আগেও তো ইরাদের রুহি ছিলো। যাকে ইরাদ কোনো দিন নিজের চোখ থেকে দূর করতে চায়নি। যার মাথাটা নিজের বুকে রেখে সারাটা জীবন কাটানোর ইচ্ছা ছিলো ইরাদের। যার সাথে পুর্নিমার রাতে ছাদে বসে চাঁদ দেখার ইচ্ছে ছিলো। যার আলিংগনের উষ্ণতায় নির্ঘুম রাতে কাটানোর ইচ্ছা ছিলো ইরাদের। সকালে যার ভেজা চুলের ছিটায় ঘুম থেকে উঠার ইচ্ছা ছিলো ইরাদের। অনেক ইচ্ছা ছিলো রুহিকে ঘিরে ইরাদের, সবগুলোই তো অপূর্ণ রয়ে গেলো। সবটা বলতে ইচ্ছা করছে রুহিকে ইরাদের। রুহিকে বলতে ইচ্ছা করছে “রুহি আমি তো বিয়ে করেছি ঠিকি, একদম মন মতো একটা বউ। জানো ওর তোমার মতো এম্বিশন ছিলো না ক্যারিয়ার নিয়ে, সে তোমার মতো না একদম। মজার ব্যাপার কি জানো? তার সব পছন্দ অপছন্দ ও আমার সাথে মিলে। তোমার মতো আমার সাথে তার পছন্দ অপছন্দতে আকাশ পাতালের পার্থক্য নেই।
সে আমাকে আমার মন মতো করেই রাখে কিন্তু আমি তার দেওয়া ভালোবাসাটা নিজের সবটুকু উজার করে নিতে পারিনা। আমি তাকে তোমার জায়গাটা দিতে পারিনা। তোমার মতো করে নিজের মনে বসাতে পারিনা। সে আমার স্ত্রী ঠিকি হয়েছে কিন্তু আমার ভালোবাসার মানুষ হতে পারে নি। কেনো রুহি? আমার জীবনে এসেছিলে? আমি কেনো তোমাকেই ভালোবাসলাম? আমরা তো প্রথম দিক থেকেই জানতাম আমাদের চিন্তা ধারায় আকাশ পাতাল পার্থক্য। তারপরেও আমরা বন্ধুত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলাম, আর ধীরে ধীরে প্রেমিক-প্রেমিকায় পরিনত হয়ে গিয়েছিলাম আর দেখো আমাদের চিন্তা চেতনার ভিন্নতাই আমাদের আলাদাও করে দিয়েছিলো। আজকে রুহি আমার থেকে মাত্র ১৫ হাত দুরত্বে রয়েছো তবুও মনের দিক থেকে কতটা দূরে আমরা। যে দূরত্ব কোনদিন ও ঘুচবে না। ইচ্ছে করে তোমাকে ভুলে যায় রুহি, কিন্তু আমি পারি না। “
কিছুক্ষন পরে রুহি উঠে গেলো ওয়াশরুমে খুব করে কান্না করলো, নিজেকে কোনোভাবেই আর কন্ট্রোল করতে পারছিলো না রুহি। ইরাদকে আগে কোনোদিন কোনো মেয়ের পাশে ওর সহ্য ও হতো না আর আজকে ইরাদের সাথে ওর বউকে দেখে রুহির কলিজায় রক্তক্ষরণ হতে শুরু করলো। আজ রুহি ইরাদের জীবনের কেউ না, যে ইরাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল সেই ইরাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত। কথাটা রুহি জানে কিন্তু কিছু সত্যি আছে যা আমাদের মেনে নিতে খুব বেশি কষ্ট হয়। যে কষ্টটা সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের থাকেও না। ইরাদ সুখে থাকুক রুহি সবসময়ই চাইতো কিন্তু রুহিকে ভুলে অন্য কাউকে আজ রুহির জায়গাটা ইরাদ দিয়ে দিয়েছে এটা দেখে খুব বেশি খারাপ লাগছে রুহির। কান্না থামিয়ে রুহি চোখ মুছে নিলো। নিজেকে আয়নায় দেখে চুল গুলো ঠিক করে নিলো। আর ওয়াটার প্রুফ মেকাপকে আসলে একটা ধন্যবাদ ও দিয়ে নিলো। আজ ওকে এপ্লাই করার কারণে রুহির চেহারাটা দেখে কেউ বুঝবে না রুহি কেদেছে। নিজেকে গুছিয়ে রুহি বেরিয়ে এলো, বাথরুম থেকে ঠিক তখনই পাশের বাথরুম থেকে ইরাদ ও বেরিয়ে এলো, চোখে মুখে পানি দিয়েছে ইরাদ। বাথরুমের বাইরে ইরাদের স্ত্রী ওকে টিস্যু বের করে দিলো রুহি পাশ কাটিয়ে হেটে এসে পড়লো। ইরাদ বাথরুমে গিয়ে কান্না করে বের হলো। কে বলেছে ছেলেরক কান্না করে না? ছেলেরাও কান্না করে, ছেলেদের ও তো কষ্ট হয়। ইরাদের যেমন রুহির জন্য হচ্ছে। ইচ্ছে করছে রুহিকে যদি সব কিছু আগের মতো করে নিজের করে পাওয়া যেতো? তাহলে কতোই না ভালো হতো।
ফিরে এসে সব বন্ধুদের সাথে রুহি আর ইরাদ কথা বললো খুব সুন্দর ভাবে, হাসি ঠাট্টাও কম হয়নি। কেউ দেখে বুঝবে না এই দুইটা মানুষ মনের দিক থেকে আরো দশ বছর আগেই মরে গেছে। সবকিছু দেখতে স্বাভাবিক লাগলেও এই দুইটা মানুষ মনের ভেতরে ডুকরে কেদে উঠছে বারবার।
দিন শেষ হয়ে এলো, সবাই যার যার বাসার উদ্দ্যেশ্যে রওনা হয়ে গেলো। আলাদা হয়ে গেলো রুহি আর ইরাদ ও, আর জানা নেই কবে ওদের দেখা হবে। আদও কোনোদিন হবে কি না তাও জানা নেই কারোই। দু’জনের না বলা কথা গুলো না বলাই রয়ে গেলো। দু’জন জানে যার যার জীবনে সে সুখে আছে, যা চাওয়ার ছিলো তাই পেয়ে গেছে। তবুও তাদের নির্ঘুম রাত ঠিকি কাটে যার ধারণা অপর পাশের মানুষটার নেই। কখন যে দু’জন দুজনের প্রেমে পরে নিজের ভালো থাকার কারণ গুলো একে অপরের সাথে থাকায় পরিনত করে ফেলেছিলো তা তারাও বুঝতে পারেনি, হয়তো আজ ও বুঝতে পারে না। আর যদি পারেও তবে এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই জীবনে হয়তো আর তাদের এক হওয়া হবে না।
বাড়ি ফিরার সময় ইরাদের হাতে মাথা দিয়ে তমা ওর হাতটা আকড়ে ধরে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে, ইরাদ ওকে তাকিয়ে দেখছে যে ঘুমটা কতটা স্বস্তি নিয়ে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। ইরাদ মুচকি হেসে গাড়ির গ্লাস দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছে এই তো জীবন, এভাবে চলছে সব আর এভাবেই চলবে নিজের জীবনে নাহয় এই স্বস্তি নেই তবে তমারটা যেনো থাকে এই দিকে সে কঠিন নজর দিবে।
হাইওয়ে তে গাড়ি চলছে রুহির এমন সময় ইমনের ফোন এলো,
– রওনা হয়েছো তো?
-হুম, তাড়াতাড়ি ফিরে যাও, ফ্রেশ হয়ে ঘুম দিও আর কাল সকালে কিন্তু একটা অপারেশন আছে তোমার এরপর আমার সাথে লাঞ্চে যাবা মনে আছে তো?
-হুম আছে।
-ওকে বাসায় গিয়ে টেক্সট দিও বাই।
-বাই।
রুহি ফোনটা কেটে হাসলো, ইমন রুহির মেডিকেল কলেজের স্যার ছিলো এরপর সে রুহির প্রেমে পড়ে যায়। যাকে রুহির পরিবার ও খুব পছন্দ করে। এইতো কিছুদিন আগেই ইমন তার পরিবারকে নিয়ে এসেছিলো রুহির বাসায় বিয়ের জন্য। কাল রুহি ইমনকে তার উত্তর জানাবে। বিয়ে করবে কি না? রুহি চোখ বুঝে আর কোনোকিছু ভাববে না আজকে। চোখ বুঝে সে ইরাদকে আর দেখতে চায় না আজকে। রুহির উত্তরের প্রতিক্ষা শুধু ইমন না রুহির মা বাবাও অধির অগ্রহে করছে তাই রুহি ভাবলো সবার আগে সে তার উত্তরটা মাকেই জানালো মেসেজের মাধ্যমে।
“মা ইমনের মা কে তুমি আজকে থেকে বিয়াইন ডাকতে চাইলে আমি আর রাগবো না। তবে বিয়ের জন্য আমি কিন্তু লেমন কালারের লেহেঙ্গা নিবো এটা কিন্তু আমি তাদের বলতে পারবো না তুমিই বলে দিও।”
মেসেজটা দিয়ে রুহি ফোনটা রাখলো। রুহি জানে আর ১০ মিনিট পরেই মা খুশিতে কান্না করতে করতে ওকে ফোন করবে। নিজের জন্য নাহলেও নিজের পরিবারের মানুষের জন্য ভালো থাকার অভিনয়টা করাই যায় অন্তত তাদের ভালো রাখতে। হোকনা নিজের ভেতরটা শেষ, শরীর তো ঠিকি বেচে আছে।
(এই গল্পটা লিখতে গিয়ে আমি বারবার ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছিলাম। এই গল্পটা আসলে একটা গল্প না বরং হাজারো রুহি ইরাদের মনের ভাবনা, যা বলা হয় না কোনোদিন শুধু নিজে ফিল করা হয়। আশা করি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্টে জানাবেন।)