১.গার্লফ্রেন্ড কে হাসানোর জোকস
বাসে উঠে বসতে না বসতেই পাশের সীটের একটা সুন্দরী মেয়ে বলে উঠলো “ও মাই গড! আপনি এতো সুন্দর কেন? আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল আপনার বডি এতো সুন্দর কেন! নিশ্চই জিম করেন?
জীবনে আব্বা-আম্মা আমাকে কালাচাঁদ ছাড়া ডাকে নাই। গার্লফ্রেন্ড আদর করে কালু ডাকে। কিন্তু আজ এই বাসে এই মেয়ে আমার মধ্যে এমন কি দেখে সুন্দর বলল বুঝতে পারলাম না। মনে মনে লজ্জা পাচ্ছিলাম।
একটুপর মেয়েটা আমার পাশে বসা ছেলেটাকে বলল “এই যে ভাই আপনি উঠুন, আমি এই ভাইয়ের পাশে বসতে চাই।আপনি আমার সীটে বসুন”। দেখলাম ছেলেটা সুড়সুড় করে পাশের সারির মেয়েটার সীটে গিয়ে বসল। মেয়েটা বসল আমার পাশে। খেয়াল করে দেখলাম মেয়েটা বেশ সুন্দর।
কয়েকদিন আগে টিভির বিজ্ঞাপন দেখে একটা ফেসওয়াশ কিনেছিলাম। বিজ্ঞাপনে বলা ছিল এই ফেসওয়াশ চার সপ্তাহ মাখলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও চকচকে। কিন্তু দুই সপ্তাহেই যে কাজে দিবে এটা ভাবিনি।
মেয়েটা এবার বলল ” আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে”?
লোকাল বাসে সুন্দরী মেয়ে পাশে বসলে সব ছেলেরাই সিঙ্গেল হয়ে যায়। তাহলে আমি কি দোষ করছি? তাই মেয়েটাকে বললাম ” জ্বী না আমি সিঙ্গেল”। মেয়েটা এবার সরাসরি বলল ” প্রেম করবেন আমার সাথে”? মেয়েটার কথা শুনেই মনের মধ্যে জেমস ভাইয়ের ” ঝাকানাকা দেহ দোলানা” গানটা বেজে উঠলো। সারাজীবন গার্লস স্কুলের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়ে পটাতে পারিনি। যে মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছি সেই মেয়ে বলেছে আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে। এক মেয়ে তো বলেই দিয়েছে কয়লা আর আমার চেহারার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই, দুইটাই কালা। ইসস যদি পাশে বসা সুন্দরী মেয়েটার কথাটা ভিডিও করে ওদের দেখাতে পারতাম। মেয়েটাকে উত্তর দিতে যাবো এর মধ্যে আরেকটা মেয়ে পাশে এসে দাঁড়ালো।
দাঁড়িয়ে আমার পাশে বসা মেয়েটিকে বলল ” বাসে বসা সুন্দর ছেলেদের দেখলেই প্রেম করতে ইচ্ছে করে, না? এই ছেলেকে আমার পছন্দ হয়েছে। তুই অন্য কাউকে দেখ”। দেখলাম আমার পাশে বসা মেয়েটা উঠে চলে গেলো। এবার যে মেয়েটা এলো সে আরো সুন্দরী দেখতে। আমি তাড়াতাড়ি ফোন বের করে সামনের ক্যামেরায় নিজের চেহারা দেখে নিলাম। সত্যি এটা আমি নাকি অন্য কেউ। নিজেকে রেস থ্রির সালমান খান মনে হচ্ছিল,শুধু চশমাটাই নাই। বাসায় ভুলে সানগ্লাস ফেলে এসেছি বলে নিজের উপর রাগ হচ্ছিল। নতুন মেয়াটা এবার বলল ” ওয়াও, আপনি আমার দেখা সেরা পুরুষ । প্রেম করবেন আমার সাথে”? মেয়েটার কথা শুনে বুকের মধ্যে ধপাস ধপাস শুরু হয়ে গেলো। গর্বে বুক ফুলে উঠলো। মনে মনে সেই ফেসওয়াশ কোম্পানি কে অনেক ধন্যবাদ দিলাম। মেয়েটাকে উত্তর দিতে যাবো এমন সময় দেখি আরো তিনটা মেয়ে এসে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ওরা তিনজন একসাথে বলে উঠলো ” এই ছেলে প্রেম করবে আমার সাথে?”। এবার আমার পাশের বসা মেয়েটা উঠে ওদের সাথে মারামারি শুরু করলো। চারজন মেয়ে আমার চার হাত পা ধরে বাসের মধ্যে টানাটানি শুরু করলো। একজন বলে এই ছেলে আমার, আরেকজন বলে না না এই ছেলে আমার। ওদের টানাটানি তে আমার গুলিস্তান থেকে কেনা নতুন শার্ট ছিঁড়ে গেছে। প্যান্ট ছিঁড়া ছিঁড়া অবস্থা। নিজেকে সালমান খান ভাবা ছেড়ে টম ক্রুজ ভাবতে শুরু করলাম। আহা! সুন্দরী মেয়েরা আমাকে পাবার জন্য আজ মারামারি করে। এই দিন যে আসবে কল্পনাও করিনি।এর মধ্যে বাসের হেলপার এক লাঠি নিয়ে দৌড়ে এসে বলল ” ঐ তোরা সবাই বস, নাহলে কারেন্ট শখ দিবো ” সাথে সাথে চারটা মেয়ে আমাকে ছেড়ে দিলে আমি গাড়ির মধ্যে ধপাস করে পড়ে গেলাম।
হেলপার কাছে এসে বলল ” ঐ মিয়া আপনি কখন উঠলেন বাসে? ও বুঝছি, সিগারেট কিনতে নামছিলাম তখনি উঠছেন তাইনা? তাড়াতাড়ি নামেন ভাই, এই বাস পাবনা যাবে। বাসের মধ্যে যারা আছে তারা সবাই পাগল। ওদের সবাইকে পাবনার মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। হেলপারের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি পাবনার মানসিক হাসপাতালে।
লোকাল বাস
রিফাত আহমেদ
২.রোমান্টিক জোকস গল্প
এসির বাতাস খেতে মার্কেটে ঢুকে মেয়েদের পোশাক নেড়েচেড়ে দেখছিলাম। হঠাৎ কর্মচারী বললো, “এভাবে নাড়াচাড়া না করে বউ বা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আসুন। শপিং করতে মজা পাবেন। ”
নিজেকে অপমানিত বোধ করছি, তবুও সামান্য ভাব নিয়ে বললাম, ” আমার গার্লফ্রেন্ডের জন্য আমি কিনতে এসেছি তোমার সমস্যা কি? ”
– স্যরি স্যার, তবে আমি বলছিলাম কারণ আপনি পছন্দ করে নিলে ঝামেলা হবে। ৭০% এর বেশি তার পছন্দ হবে না, তখন আবার রিটার্ন কিংবা পরিবর্তন করতে আসতে হবে।
– বললাম, আমার গার্লফ্রেন্ড এখানেই আসছে তাই অপেক্ষা করছি।
লোকটা আর কিছু না বলে চলে গেল। আমি খুব বুদ্ধিমানের মতো হাঁটতে লাগলাম, কিন্তু এখন গার্লফ্রেন্ড কীভাবে আনবো। কারণ আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড তো দুরের কথা, মেয়ে বান্ধবীও নেই।
এমন করে আমি যখন চিন্তার সাগরে ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছি তখন হঠাৎ করে একটা মেয়ে সেখানে প্রবেশ করলো। আমি তার কাছে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলাম।
– কেমন আছেন?
– কে আপনি?
– একটা উপকার করবেন?
– যেমন।
আমি তাকে সবকিছু খুলে বললাম। মেয়েটা তখন আমার সঙ্গে গার্লফ্রেন্ডের মতো অভিনয় করতে লাগলো। তারপর তার যা যা লাগবে সবকিছু সে কিনতে লাগলো। সবকিছু কেনা শেষ করে মেয়েটা আমাকে বললো,
– একটা কথা বলতে চাই।
– বলেন।
– আপনি যেহেতু কিছুই কিনবেন না তাহলে শুধু শুধু এখানে কেন এসেছেন?
– এসির বাতাস খেতে। বাহিরে প্রচুর গরম তাই ভাবলাম কিছুক্ষণ ফ্রী ফ্রী এসির ভেতরে বাতাস উপভোগ করি।
মেয়েটা খুব হাসতে লাগলো। তার হাসি দেখে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে রইল, আমি অনেকটা গর্ব নিয়ে বুক টানটান করলাম।
– ঠিক আছে তাহলে আপনি আরো কিছুক্ষণ বাতাস খেতে থাকুন আমি চলে গেলাম।
– আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু আমিও আপনার সঙ্গে বের হতে চাই। কারণ এরা ভাববে গার্লফ্রেন্ড চলে গেছে বয়ফ্রেন্ড যাচ্ছে না কেন?
– না না তাহলে সমস্যা হবে, বাহিরে আমার বাবা দাঁড়িয়ে আছে। আর তিনি আপনার সঙ্গে বের হতে দেখলে বকাঝকা করবেন।
মেয়েটা চলে গেল ক্যাশিয়ারের কাছে। তারপর কিছুক্ষণ কথা বলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
– আমি গাড়িতে অপেক্ষা করছি তুমি তাড়াতাড়ি চলে আসো।
আমি ভাবলাম বাহহ কত বুদ্ধি তার। আমাকে আরও কিছুক্ষণ বাতাস খাবার ব্যবস্থা করে চলে গেল।
কিন্তু আর না, এবার বের হতে হবে।
বের হতে যাবো এমন সময় আমাকে তারা ধরে ফেললো।
– ভাই টাকা না দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?
– কিসের টাকা?
– আপনার গার্লফ্রেন্ড ১৩৭৯০ টাকার পোশাক নিয়ে গেল সেই টাকা।
আমি আকাশ থেকে পড়লাম। ফ্রীতে বাতাস খেতে এসে আমি আমার ২২ হাজার টাকা দামের মোবাইল জমা রেখে বের হতে চাইলাম। কিন্তু সেই প্রথম যে লোকটার সঙ্গে কথা হয়েছে সে আমার কাছে এসে বললো,
– এখানে অপেক্ষা করুন, আর আপনার পরিচিত কাউকে টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
– আশ্চর্য, এতক্ষণ আমি কি করবো?
– কেন? ফ্রী ফ্রী এসির বাতাস খাবেন।
[ সেদিন রাতে আমি বাসায় ফিরেছিলাম রাত বারোটার দিকে। ]
—– সমাপ্ত —–
রম্যগল্পঃ-
এসির বাতাস।
লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব
৩.প্রেমিকাকে হাসানোর কিছু কথা
প্লেনে উঠেই গার্লফ্রেন্ড বলল, “তুমি নাকি আমার জন্য সব করতে পারবা। আমি বললাম “অবশ্যই”। গার্লফ্রেন্ড বলল, ” তাহলে এই প্লেনের মধ্যে হকারি করো দেখি।”
গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনে বেলুনের মতন গর্বে যেমন বুক ফুলে উঠেছিলাম,প্লেনে হকারির কথা শুনে ঠিক সেইভাবেই চুপসে গেলাম। জীবনে কেউ শুনেছে প্লেনে হকারি করা যায়?
গার্লফ্রেন্ডকে বললাম ” ইয়ে মানে এর থেকে কঠিন কিছু থাকলে বলো( ভাব নিয়ে)। এটা তো খুব সহজ কাজ”। গার্লফ্রেন্ড বলল ” আগে এটাই করে দেখাও। যতো সুন্দর করে করবা ততোই বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় এগিয়ে আসবে। নাহলে কিন্তু অন্য কাউকে নিয়ে গিয়ে বাবার সাথে পরিচিত করিয়ে দিবো”।
সম্রাট শাহজাহান যদি প্রেমের জন্য তাজমহল বানাইতে পারে। আমি প্রেমের জন্য হকারি করলে কি দোষ? এছাড়া গার্লফ্রেন্ড সরাসরি কলিজাতে হাত দিয়েছে। নিজের সম্মান বাঁচাতে সীট থেকে উঠে হকারি করতে যাবো এমন সময় মনে হইলো ঢাকার বাসে যারা হকারি করে তারা নানা রকম জিনিস বিক্রি করে। কিন্তু এই প্লেনে আমি কি বিক্রি করবো। গার্লফ্রেন্ড কে বললাম ” ইয়ে মানে হকারি করতে তো জিনিসপাতি লাগে। আমার কাছে তো কিছুই নেই”। গার্লফ্রেন্ড আমার কথা শুনে ওর হাতের ব্যাগটা থেকে একটা ব্রাশের পাতা বের করে দিলো। গুণে দেখলাম সেখানে ১২ টা ব্রাশ। ব্রাশ গুলো হাতে নিয়ে উঠে যেই দাঁড়াতে যাবো ঠিক তখনি গার্লফ্রেন্ড বলল ” যদি ঠিকমতন হকারি না করতে পারো কি হবে বলেছি তো,মনে আছে”? আমি হকারদের মতন হাতে ব্রাশের পাতা পেঁচিয়ে বললাম “হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে”।
কিছুটা সময় নিয়ে ভাবতে লাগলাম কিভাবে লোকাল বাসে হকাররা হকারি শুরু করে। তারপর ব্রাশ গুলো হাতে নিয়ে হকারি শুরু করে দিলাম।
” ডিয়ার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের কি দাঁতের সমস্যা? ঠিকমতন দাঁত ব্রাশ করেন না বলে দাঁতে ময়লা জমে গেছে? দাঁতের গোড়ায় পোকা হয়ে দিন দিন দাঁত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? মুখের দুর্গন্ধে চারপাশের মানুষের সাঠে ঠিকমতন কথা বলতে পারছেন না? তাহলে এক্ষুনী সংগ্রহ করুন বাংলাদেশের নাভানা কোম্পানির এই মূল্যবান ব্রাশ। সকালবিকাল দুবার এই ব্রাশ করে দাঁগ মাজলে আপনার দাঁত হবে চকচকে ফকফকে”। তারপর ব্রাশের পাতা থেকে একটা ব্রাশ বের করে হাত উঁচু করে সবাইকে দেখিয়ে বললাম “দাম মাত্র দশ টাকা দশ টাকা”। প্লেনের মানুষজন আমার দিকে এলিয়েন দেখার মতন করে তাকিয়ে আছে।
গার্লফ্রেন্ডের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গার্লফ্রেন্ডের ভয়ে আবার বলা শুরু করলাম। “আমার দাদা ছিলেন বিখ্যাত হকার কালু শেখ, তিনি সারাজীবন ট্রেনে হকারি করেছেন। তারপর তার ছেলে লাল শেখ ছিল আমার বাবা।উনি সারাজীবন বাসে হকারি করছে। আমি লাল শেখের ছেলে ধলা শেখ তাই প্লেনে হকারি করি।”
দেখি পিছন থেকে একটা বয়স্ক মহিলা আমাকে ডাকছে। কাছে যাবার সাথে সাথে উনি আমাকে দশ টাকা দিয়ে হাতের ব্রাশ টা নিয়ে নিলো।
তারপর এক বয়স্ক সাদা লোক আমাকে ডাকলো। উনার কাছে এগিয়ে যেতেই উনি বলল ” হ্যালো মিঃ ধলা শেইখ ( ইংরেজরা বাংলা উচ্চারণ করলে যেমন হয়)। আমি বললাম ” ইয়েস স্যার”। উনি বললেন ” টোমার আইডিয়া আমার খুব পছন্দ হইয়াছে। টুমি একমাত্র হকার যে প্লেন হকারি সূচনা করিয়াছ। যদি নোবেল কমিটি এইরকম মানব সেবায় নোবেল দিতো। টাহলে আমি টোমার নামে ওদের কাচে সুপারিশ করতাম “। আমি খুশিতে বললাম ” থ্যাংকইউ স্যার”। তারপর উনি বললেন ” আমাখে দুইটা নাভানা কোম্পানির ব্রাশ দেও”। সাথে সাথে ব্রাশের পাতা থেকে দুইটা ব্রাশ খুলে উনার হাতে দিয়ে দিলাম।
এরমধ্যে দেখি দুইজন এয়ার হোস্টেজ আমার দিকে দৌড়ে আসছে। ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেলো। আল্লাহ! আজ নিশ্চিত ওরা আমাকে প্লেন থেকে নিচে ফেলে দিবে। ঠিক তখনি হঠাৎ করে আমার গার্লফ্রেন্ড এগিয়ে এসে ছোট বাচ্চার মতন করে আমাকে বলল ” লক্ষী সোনা এমন করে না, চলো চলো সীটে বসো। মানুষ খারাপ বলবে বাবু”। গার্লফ্রেন্ডের এতো সুন্দর ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু সেই অবাক আর বেশিক্ষণ থাকলো না যখন সে প্লেনের সবাইকে উদ্দেশ্য করে ইংরেজিতে বলল ” আপনারা সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার স্বামী একজন মানসিক রোগী। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওকে আমেরিকা নিয়ে যাচ্ছি”।
এবার দেখি প্লেনের সবাই আমার দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এয়ার হোস্টেজ গুলার মুখ ও দেখার মতন ছিল। একজন এয়ার হোস্টেজ এগিয়ে এসে আমার হাতে একটা ললিপপ দিয়ে বলল, “এটা খাও, অনেক মিষ্টি।”
তারপর প্লেনে আমার আর কোনো সমস্যা হয়নি। গার্লফ্রেন্ড ও খুশি আমিও খুশি।
কিন্তু বাংলাদেশে ফিরবার পর এয়ারপোর্টে বিশাল ভিড় দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। পাশের একজন কে বললাম ভাই এতো ভিড় কিসের? লোকটি বলল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছে তাই এতো ভিড়। আমি নিজের মতন একা একা হেঁটে যেইনা এয়ারপোর্ট থেকে বের হচ্ছি। দেখি সবার হাতে আমার ছবি। কেউ কেউ আমার ছবিতে মালা দিয়েছে। কেউ কেউ আমার ছবির নিচে লেখেছে দেশের গর্ব, জাতীর গর্ব মিঃ ধলা হকার। চোরের মতন এয়ারপোর্ট থেকে পালিয়ে বাসায় এসে শুনি কোন হারামজাদা যেন আমার প্লেনে হকারির ভিডিও নেটে ছেড়ে দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের হকাররা আমাকে স্বাগতম জানাতে এয়ারপোর্ট গিয়েছিল।
হকার
রিফাত আহমেদ
৪.প্রিয় মানুষ কে হাসানোর উপায়।
আসলে ছেলেমেয়েদের তাদের পছন্দের বাইরে জোর করে কখনোই বিয়ে দেয়া ঠিক না। আমি এটা ঠিক সেদিন রিয়ালাইজ করেছি যেদিন সোহাগের সাথে আমার বিয়ে হলো। বিয়ের আসর পর্যন্ত সব স্বাভাবিকই ছিলো কিন্তু বাসরঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দুহাতে মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে ও যখন দরজার কাছেই লুটিয়ে পড়লো আমি রীতিমত আঁতকে উঠে ঘোমটা খুলে বললাম,কি হয়েছে?
সোহাগ কান্নার ঠেলায় কিছু বলতে পারতেছিলো না। অনেকক্ষণ বাদে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বললো, তুশিকে এখন আমি কি জবাব দেবো?
আমি অবাক হয়ে বললাম,তুশি কে?
-আমার গার্লফ্রেন্ড।
আমি অনেকক্ষন কোনো কথা বলতে পারলাম না। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?
সোহাগ রাগী গলায় বললো,কেন থাকবে না? আমি দেখতে সুন্দর,কোয়ালিফায়েড.. আমার কি কোনো সমস্যা আছে যে গার্লফ্রেন্ড থাকবে না?
আমি বললাম,কথা তো সেটা না। কথা হচ্ছে আমাকে বিয়ে করেছেন কেন গার্লফ্রেন্ড থাকলে?
সোহাগ বললো, আম্মুর জন্য করেছি। আম্মুর তুশিকে পছন্দ না। তোমাকে পছন্দ।
আমি বললাম,আমি তো আপনার আম্মুকে বিয়ে করিনাই! আপনাকে করেছি। আর একটা কথা বুঝতে পারলাম না আমি যে, একটা ছেলের পছন্দ না হলে বাসা থেকে কেমনে বিয়ে দেয়? জীবনটা কি সিনেমা?
সোহাগ বললো,তুশির সাথে একটু রাগারাগী হয়েছিলো, ভাবলাম শায়েস্তা করি.. কিন্তু এখন তো আমি নিজেই শায়েস্তা হয়ে গেলাম….ওকে ছাড়া আমি কিভাবে……
আবার কান্নার দমক তোলবার চেষ্টা করার আগেই ধমক দিলাম,অ্যাই চোপ! ছোটোলোক কোথাকার। গফের সাথে রাগারাগী করে উনি বিয়ে করে ফেলেছেন! আমার কি হবে হ্যাঁ? আমার তো এটা প্রথম বিয়েই.. ইনফ্যাক্ট একটা প্রেম পর্যন্ত করতে পারি নাই! ভেবেছিলাম বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে করবো..
সোহাগ অবাক গলায় বললো,তুমি কেন প্রেম করো নাই? দেখতে সুন্দর,কোয়ালিফায়েড..
আমি জবাব দিলাম না। ওর সাথে কথা বলা বৃথা। ওর ধারনায় দেখতে সুন্দর আর কোয়ালিফায়েড হলে সবাই প্রেম করবে। না করলেই বরং ও অবাক হবে। কিন্তু এখন কি হবে আমার? এ আবার কোন মুসিবত!
বিয়ের আগে দুইদিন দেখা করেছি,ঘোরাঘুরি করেছি আমরা। তখনও সোহাগ একটা কথাও বলেনাই নিজের গার্লফ্রেন্ড সম্পর্কে। সম্ভবত তখন রাগারাগী চলছিলো। কিন্তু এটা তো ধোঁকা তাই না? এভাবে কাউকে বিয়ে করা মানে তাকে ঠকানো। আমি এখন কি করবো?
চিন্তায় ছেদ পড়লো সোহাগের কথায়। বললো,তুমি বিছানায় ঘুমাও আমি ডিভানে শুয়ে পড়বো।
বাহ! আমার জীবনটা তো পুরাই সিনেমার মতো করেই শুরু হয়েছে! হুবহু সিনেমা। ইচ্ছা করতেছে থাপড়ায়ে ওর সুন্দর চেহারার এমন অবস্থা করি….
জবাব না দিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। সারাদিন অনেক ধকল গেছে,চেষ্টা করছি ঘুমানোর। কিন্তু সোহাগের ফ্যাঁচফ্যাঁচ কান্নার ঠেলায় ঘুমানোর কায়দা আছে? একবার ধমক দিলাম, এই! চুপ করবেন আপনি?
সোহাগ চুপ করলো না। বালিশে মাথা গুঁজে কাঁদতে লাগলো। ছেলেটাকে অবিলম্বে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার ইচ্ছা অনেক কষ্টে দমন করলাম।
মাঝরাতে সোহাগের কথাবার্তায় ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তাকিয়ে দেখি ভিডিও কলে গার্লফ্রেন্ডকে বোঝাচ্ছে, “বিশ্বাস করো তুশি! আমি আলাদা ঘুমাইছি,এই দেখো। ওই দেখো।”
আমি ধমক দিয়ে বললাম, খবরদার আমার দিকে ক্যামেরা তাক করলে খবর আছে। লাইসেন্স করা পিস্তল আছে আমার আব্বুর।
সোহাগ ভয়ে ক্যামেরা নিয়ে সরে গেলো। আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলাম। কাঁদার কথা তো আমার,তাই না? কিন্তু অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছি আমি। গতকাল পর্যন্ত কত স্বপ্ন ছিলো,আজ কি থেকে কি হয়ে গেলো!
পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে সোহাগের চেহারা দেখে ওর বাবা বললো,সব ঠিক আছে? এমন লাগতেছে কেন তোরে? চোখ লাল!
সোহাগ সরল মনে বললো, সারারাত ঘুম হয়নি তাই আর কি!
সবাই হেসে ফেললো। ওর মা রাগী গলায় বাবাকে বললো, তুমি যে কি!
তারচেয়ে বেশী রাগে আমার পিত্তি জ্বলে গেলো।
ঘরে আসার পর সোহাগ বললো, তুমি কি প্লিজ একবার,জাস্ট একটাবার তুশির সাথে কথা বলবা? বলবা যে আমি তোমাকে টাচও করি নাই এ পর্যন্ত.. প্লিজ ও খুব রাগ করে আছে…
আমি খুব স্বাভাবিকভাবে একটা ঘুষি বসিয়ে দিলাম ওর নাকে। ঘুষি খেয়ে নাকে হাত দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সোহাগ। তারপর বললো, এখন বুঝেছি কেন তোমার প্রেম হয়নি…
আমি আরো কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু সোহাগ তার আগেই ঘর থেকে পালিয়ে গেলো। সারাদিন আর আসলো না।
আমি সারাদিন ধরে নানান কথা ভাবছি। কত স্বপ্ন ছিলো আমার! জামাইয়ের সাথে এই জামাইয়ের সাথে ওই। জীবনে প্রেমই করিনি যে বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে করবো….. কিন্তু এ কি হয়ে গেলো?
সোহাগ আর আমি হানিমুনে এলাম কক্সবাজার। আমি আমার মতো দূরে দূরে ঘুরি আর সোহাগ ভিডিও করে তার গার্লফ্রেন্ডরে সমুদ্র দেখায়। বলে, “ইস তুমি থাকলে কি ভালো যে হতো!” অর্থাৎ,আমি না থাকলে…
একদিন বললাম,এভাবে আমার পক্ষে চলা সম্ভব না। তুমি আমাকে ডিভোর্স দাও।
সোহাগ অবাক গলায় বললো,কি বলো তুমি! আমাদের বংশে কেউ কোনোদিন কাউরে ডিভোর্স দেয় নাই!
আমি রাগী গলায় বললাম, তোমার বংশে তোমার মতো ছাগলও তো আরেকটা ছিলো না! এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে?
সোহাগ বললো,কি করতে চাও তুমি?
আমি বললাম,ডিভোর্স দাও।
সোহাগ বললো, সম্ভব না।
– তাইলে তোমার ঐ গার্লফ্রেন্ডকে ছাড়ো।
সোহাগ আঁতকে উঠে বললো,কি বলো! তুশিরে ছাড়া আমি বাঁচবো?
আমি রেগে আগুন হয়ে বললাম, তাইলে ওরেও বিয়ে করো! আমিও থাকি সেও থাক।
সোহাগ জবাব দিলো না। তবে তার হাবেভাবে মনে হতে লাগলো এতক্ষণে একটা মনের মতো অপশন পেয়েছে।
আমি ওর গলা টিপে ধরে বললাম, তোর সাথে আমি থাকবো না। কিছুতেই না!
সোহাগ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাবার কয়েক সেকেন্ড আগে ওকে ছেড়ে দিয়ে নিজে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে গেলাম। ডুবে মরবো। সোহাগ দৌড়ে গিয়ে আমাকে ধরে ফেলে বললো, কি করো! পাগলামি করছো কেন? সব তো ঠিকই আছে খামাখা ঝামেলা করছো!
আমি অবাক গলায় জিজ্ঞেস করলাম, সব ঠিক আছে?
সোহাগ বললো, ঠিক নাই তো কি? তুশি তো আর রেগে নেই! সে বুঝেছে তোমার আমার মধ্যে তেমন কিছু নাই।
অর্থাৎ তুশি রেগে নেই কাজেই সব ঠিক আছে। এরপর আর কি বলার থাকতে পারে?
সোহাগ বললো,একা একা যদি তোমার সময় না কাটে তুমিও একটা প্রেম করো,আমরা বন্ধুর মতো থাকি।
আমি জুতো খুলে ওকে মারতে গিয়ে দেখি জুতা নাই। সাগরের ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এদিকে আমাকে পায়ে হাত দিতে দেখে সোহাগ বোঁ বোঁ করে দৌড়াতে দৌড়াতে আরেক মাথায় চলে গেছে।
একদিন তুশির সাথে কথা বললাম। বললাম, আপনি যেটা করছেন এটা যে পরকীয়া তা বুঝেন?
তুশি অবাক গলায় বললো, পরকীয়া হয় কিভাবে? ডিম আগে না মুরগী আগে? কে আগে এসেছে ওর জীবনে?
আমি ফোন রেখে দিলাম।
ভাবলাম বাবা-মাকে সব খুলে বলি। কিন্তু আমার আব্বু হার্ট পেশেন্ট, আম্মুর হাই প্রেশার। এদেরকে কিছু বলা আরেক দিগদারি।
ভাবলাম শ্বশুর বা এটলিস্ট শ্বাশুড়িকে বলি। এই মহিলা আবার আরেক। ছেলেকে চড়-থাপ্পড় কিল ঘুষি দিয়ে শেষ করে দিবেন,কাজের কাজ এতে কিছুই হবে না। তারপরেও একদিন বলতে গেলাম। বললাম, আম্মা! আমার আর সোহাগের মধ্যে একটা সমস্যা…
আম্মা আমারে হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে বললেন, এটা তোমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কখনো ভাববা না জয়েন ফ্যামিলিতে আছো মানেই আমরা তোমাদের সব ব্যাপারে নাক গলাবো। কখনোই তা করবো না। নিজেদের সমস্যা নিজেরা মিটাবা। আমি জানি এসব ব্যাপারে দখলকারী করতে নেই,এইটুকু বিবেচনা আমার আছে…
শ্বাশুড়ির বিবেচনাবোধ দেখে মুগ্ধ হয়ে চলে আসলাম। কিন্তু এই সমস্যার কোন সমাধান আমি বের করতে পারলাম না। চোখের সামনে আমার বর প্রেম করবে আরেকজনের সাথে, রাতে ভিডিও কল দিয়ে দেখাবে আমরা আলাদা থাকি আবার তাকে কিছু বলতে গেলে সে আমাকে উল্টা প্রশ্ন করবে, ডিম আগে না মুরগি আগে…? এমন সমস্যা নাটক/সিনেমাতেও নাই। সেখানে এরকম কিছু হলে অন্তত নায়ক-নায়িকা দুজনই বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে একটা সমাধানে আসে, কিন্তু সোহাগের মতো একটা মাথায় গোবর ভরা ছেলের থেকে এই ধরনের সাপোর্ট আশা করতেও আমি পারি না।
একদিন আমি আর আমার বান্ধবী বের হয়েছি সোহাগ আর তুশির সাথে দেখা। হাত ধরাধরি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাকে দেখে হাত তুলে হাই জানালো সোহাগ। আমার বান্ধবী অবাক হয়ে বললো, এইটা দুলাভাই না?
আমি জবাব না দিয়ে ওকে টেনে নিয়ে চলে এলাম। রাতে রাগী গলায় সোহাগকে বললাম, তুমি আমাকে হাই দিলা কেন?
সোহাগ অবাক হয়ে বললো, হাই দিবো না কেন? আমাদের মধ্যে তো কোন গন্ডগোল হয়নি যে হাই হ্যালো করা যাবে না রাস্তায়,তাই না?
আমি জিজ্ঞেস করলাম,গন্ডগোলের ডেফিনেশন কি?
সোহাগ মাথা চুলকে বললো,ওয়েল! তুমি খুবই জটিল একটা প্রশ্ন করে ফেলেছো। ব্যাপারটা আপেক্ষিক তবে….
আমি বললাম,আজ রাতে তুমি বিছানায় ঘুমাবা।
সোহাগ আঁতকে উঠে বললো, অসম্ভব! তুশি…..
আমি একটানে দরজা খুলে টানাহেঁচড়া করে ডিভান বের করতে লাগলাম। শ্বাশুড়ি উঠে এসে অবাক হয়ে বললেন, কি ব্যাপার এত রাতে!
আমি বললাম,ইন্টার্নাল ব্যাপার আম্মা। আপনি পারলে এইটা সরাতে একটু হেল্প করেন।
আম্মা আর কিছু জিজ্ঞাসা না করে ডিভান টেনে সরিয়ে দিয়ে ঘুমাতে গেলেন। আর যাইহোক,তার বিবেচনা আছে!
সোহাগ অনেক রাত পর্যন্ত মেঝেতে বসে রইলো। আমি বললাম, উঠে আসো। সেদিনই মেঝেতে বমি করেছিলাম,ঐ জায়গাটাতেই।
সোহাগ লাফ মেরে বিছানায় উঠে এলো। বললো, আমাকে তুমি টাচ করবা না,প্লিজ।
আমি উদাস গলায় বললাম, আমার সে ইচ্ছাও নাই।
সেই রাতে ভয়ে তুশির ফোন ধরতে পারলো না সোহাগ। পরদিন থেকে তুশি আর ফোন ধরে না।
সোহাগ মাথায় হাত দিয়ে বললো, না জানি কি ভাবছে! কিন্তু আমি তো তেমন কিছু করিনি! লাবণ্য তুমি কি একবার….
আমার কঠিন দৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে বিয়ের পরের দিনের ঘুষির কথা মনে পড়ে গেলো ওর। আর কথা না বাড়িয়ে চুপ হয়ে গেলো সে।
আরেকদিন বাইরে থেকে এসে দেখলাম সোহাগ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমার শ্বাশুড়ি ওর সামনে দিয়েই বারবার রান্নাঘরে যাচ্ছেন, আসছেন কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করছেন না।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, আম্মা কি ব্যাপার? আম্মা উদাস গলায় বললেন,আমি কি জানি! স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপারে আমি নাক গলাই না। এইটুকু বিবেচনা যে আমার আছে তুমি তো জানোই!
হ্যাঁ আমি জানি। দরজা লাগিয়ে সোহাগের পাশে বসে বললাম, কি ব্যাপার? লজ্জা করে না এভাবে কয়দিন পরপর ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে?
সোহাগ বললো, তুশি বিয়ে করে ফেলেছে। আমাকে ছবি পাঠিয়েছে।
আমি বললাম, অতি উত্তম! তুমিও তো বিয়ে করেছিলে তাতে সমস্যা কি? ডিম আগে না মুরগী আগে?
সোহাগ বুঝতে না পেরে বললো, কি বললে?
আমি জবাব দিলাম না।
মাসখানেক পরের কথা, একদিন রান্না করছি সোহাগ পাশে এসে দাঁড়ালো। লাজুক গলায় বললো,কি রাঁধো?
আমি বললাম,চোখ নাই তোমার?
সোহাগ সে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বললো,ওয়াও! ভুনা মাংস আমার খুব ফেভারিট!
আমি মাংসের মধ্যে পানি ঢেলে দিলাম। ঝোল করবো।
আরেকদিন ছাদে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখছি সোহাগ পাশে এসে দাঁড়ালো। কাঁধে হাত রেখে বললো, চাঁদ নিয়ে একটা গান শুনবে?
আমি ওর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,গায়ে হাত দিবানা। হাত কেটে যমুনায় ভাসিয়ে দেবো!
সোহাগ অন্তত এটুকু জানে আমি এটা করতেই পারি,ভয়ে হাত সরিয়ে নিলো সে। কিন্তু গান থামালো না, অনেক কষ্টে মুখস্থ করেছে নিশ্চয়ই,
“ও কারিগর দয়ার সাগর ওগো দয়াময়, চাঁদনি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়…”
বললাম, তোমার চাওয়াটা কি এখনই পূরন করে দেবো তাই চাও?
ভয় পেয়ে দুইপা পিছিয়ে গেলো সোহাগ।
Jannatul Firdous