লিখিত পরীক্ষা দিয়ে বিবাহ
১ম পর্ব
————————————
সম্ভবত এ দুনিয়ায় আমিই প্রথম পুরুষ,যাকে বিবাহ করার জন্য লিখিত পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।লিখিত পরীক্ষার পরে ব্যবহারিক বা মৈখিক আর কোনো পরীক্ষা দিতে হবে কিনা সেটা অবশ্য এখনো আমি জানিনা।এটা নির্ভর করছে পাত্রীর মেজাজ মর্জির উপর।পরীক্ষা নিয়ে পাত্র নির্বাচনের এই আইডিয়াটি অবশ্য পাত্রীর না, এটা পাত্রীর ছোট বোনের।সে কিছুটা বিচ্ছু টাইপের মেয়ে।সে সবাইকে বলে বেড়ায়, সে নাকি দুনিয়ায় এসেছে ছেলেদের নাজেহাল করতে।
যে মেয়েটির সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে, তার নাম লিমা।সে আমেরিকায় থাকে।ওখানে লেখা-পড়া শেষ করে এক বছর হলো নিউইয়র্ক সিটিতে পুলিশ অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছে।
তিনদিন আগে লিমার পুরো পরিবার আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছে।পরিবারের ইচ্ছে আগামী সাত দিনের মধ্যে লিমার বিবাহ সম্পন্ন করবে।বিয়ের পর লিমা আমেরিকায় চলে যাবে।তারপর কাগজ পত্র ঠিক করে স্বামীকে আমেরিকা নিয়ে যাবে।লিমার আত্মীয়-স্বজন সময় বাঁচানোর জন্য আগেই অনেকগুলো ছেলের বায়োডাটা আর ছবি আমেরিকায় পাঠিয়ে দিয়েছিল।লিমার পরিবার সেখান থেকে দশটি ছেলে বাছাই করে একটি তালিকা তৈরি করেছেন।সেই তালিকায় এক নম্বর নামটি আমার।সিরিয়াল নম্বর এক হওয়ার কারণে আমার পরীক্ষা প্রথমে হবে।যদি আমি পরীক্ষায় পাস করতে ব্যর্থ হই,তাহলে আমাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।সেক্ষেত্রে আমার পরে সিরিয়ালে থাকা অন্যান্য পাত্রের পরীক্ষা নেওয়া হবে। দুটি কারণে আমার নামটি এক নম্বরে স্থান পেয়েছে।প্রথম কারণটি হলেন আমার খালা।উনি হলেন লিমার মায়ের কলেজ জীবনের বান্ধবী।বন্ধুত্বের কারণেই লিমার মা বান্ধবীর ভাগিনাকে এই অ্যাডভান্টেজটা দিয়েছেন।দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে আমার বেকারত্ব।লিমার বাবা-মা লিমার জন্য একজন বেকার ছেলেই খুঁজছেন।তাদের বিশ্বাস,ছেলে বেকার হলে,তাদের মেয়ে নাকি ছেলেকে হাতের মুঠোয় রাখতে পারবে।
আমি অবশ্য এখন বিয়ে করতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু পরিবারের সবার চাপে আমাকে হা বলতে হয়েছে।পরিবারের সবার ধারণা আমার মতো গুড ফর নাথিং, ফালতু বেকার ছেলেকে খামাকা বসিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। আমার খালার ধারণা আমার চেহারার মধ্যে একটা ইভটিজার ইভটিজার ভাব আছে।তাই যত তাড়াতাড়ি আমার বিয়ে দেওয়া যায়, সেটাই নাকি সবার জন্য মঙ্গল।বাবা সরাসরি বলে দিয়েছেন,হয় এই বিয়েতে রাজি হতে হবে, নতুবা তিনি আমাকে ঘর থেকে বের করে দেবেন।আসলে বেকার ছেলের জন্য আমেরিকার সিটিজেন মেয়ে পাওয়ার এই সুযোগটা আমার পরিবার কোনো ভাবেই হাতছাড়া করতে চাচ্ছেন না।
আমাকে বিয়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে এবং পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে দায়িত্ব নিয়েছেন আমার একমাত্র দুলাভাই।এই দায়িত্ব কেউ তাকে দেয়নি, তিনি নিজেই এই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।যে কারণে গত একমাস যাবত তিনি সস্ত্রীক আমাদের বাসায় অবস্থান করছেন।উনি ঠিক করেছেন আমার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত উনি এই বাসায় অবস্থান করবেন। আমার ধারণা আমার দুলাভাই এর মাথায় কিঞ্চিৎ সমস্যা আছে।আমার বাবা-মার ধারণাও তাই।যার কারণে দুলাভাই এর কথায় সাধারণত আমরা কেউ ততটা গুরুত্ব দেই না।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমার বোনকে নিয়ে।তার ধারণা তার স্বামী দুনিয়ার সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি।সে তার স্বামীর অন্ধ ভক্ত এবং সে তার স্বামীকে প্রচণ্ড ভালোবাসে।সে যদি কোনোভাবে বুঝতে পারে কেউ তার স্বামীকে অবমূল্যায়ন করেছে,তাহলে তার খবর আছে।একেবারে আগুন লাগিয়ে দেবে।তাই বাধ্য হয়ে আমাদের পরিবারের সবাইকে অনিচ্ছা সত্বেও দুলাভাই এর কথা শুনতে হয় এবং মানতে হয়।
দুলাভাই আমাকে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আমেরিকার ইতিহাস এবং বিসিএস সাধারণ জ্ঞানের কিছু বই পড়তে দিয়েছেন।এছাড়া তিনি প্রতিদিন এক ঘন্টা করে আমার ক্লাশ নিচ্ছেন। উনি প্রথম দিনের ক্লাশের শুরুতেই বিয়ে কেন জরুরি এবং বর্তমানের আধুনিক মেয়েরা কি ধরণের ছেলে চায়,সে বিষয়ে একটা দীর্ঘ ভাষণও দিয়েছেন।ভাষণের শুরুতেই তিনি বেশ ভরাট কন্ঠে বললেন,
-শোনো বিয়ে একটি অতীব জরুরি কর্ম। জীবনকে মধুর করতে বিয়ের বিকল্প আর কিছু নাই।
-কিন্তু দুলাভাই আমার কাছে তো বিয়েকে দরকারি মনে হয় না।মনে হয় এটা একটা ফালতু জিনিস।
-তা তো মনে হবেই না।কারণ তোমার মতো ফালতু ছেলের কাছে শুধু বিয়ে না, দুনিয়ার সব কিছুই ফালতু।তোমার মতো ছেলেরা দুনিয়ায় আসে দুটি কারণে।এক খাওয়া আর দুই ঘুম।শোনো আমি তোমার বোনের সাথে পরামর্শ করে তোমার দায়িত্ব নিয়েছি।তোমাকে যেভাবে হোক এই পরীক্ষায় পাশ করাব।তোমাকে কিছুই করতে হবে না,তুমি শুধু আমার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে।বাকি কাজ আমার।
-ঠিক আছে দুলাভাই।আমি কথা দিলাম,আপনার সব কথা মেনে চলব।
-ভেরিগুড।এবার আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনো।তুমি এমন একটি মেয়েকে বিবাহ করতে যাচ্ছ, যে আমেরিকা থাকে।ওখানকার ছেলে-মেয়েরা সাধারণত স্মার্ট হয়।এখন তোমাকেও ওদের লেবেলে আসতে হবে। আমার পরামর্শ হচ্ছে, তুমি তোমাকে একজন স্মার্ট ছেলে হিসেবে পাত্রীর কাছে তুলে ধরবে।যেন সে বোঝে,তুমি আল্ট্রা মর্ডান এবং সুপার ফাস্ট একটা ছেলে।
-সেটা কিভাবে ?
-একটা উদাহরণ দেই, তাহলেই বুঝতে পারবে।ধরো মেয়ে তোমাকে প্রশ্ন করল,তোমার গার্লফ্রেন্ড কতজন ? তুমি কি বলবা ?
-বলব আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নাই।
-অপদার্থের মত কথা বলবে না।তুমি মেয়েকে বলবে তোমার পাঁচটি গার্লফ্রেন্ড আছে।
-দুলাভাই আপনি এটা কি বললেন ! আমার তো অতীত,বর্তমান কোনো কালেই গার্লফ্রেন্ড ছিল না।
-তোমার মতো অপদার্থদের গার্লফ্রেন্ড থাকবে না, সেটাই তো স্বাভাবিক।একটা মেয়ের ভালোবাসা পেতে গেলে যে যোগ্যতা লাগে।তোমার তো তা নেই।
-দুলাভাই, আপনি কিন্তু সত্য বলেছেন। আচ্ছা দুলাভাই আপনার কি কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল ?
-না, ছিল না।কারণ আমিও তোমার মতো একটা অপদার্থ ছিলাম।তবে আমার একটা গুন ছিল,আমি ছাত্র হিসেবে খুবই মেধাবী ছিলাম।তোমার তো সেই গুনটাও নাই। আমার প্রসঙ্গ থাক। আমি কি বলি মন দিয়ে শোনো।তোমার যে গার্লফ্রেন্ড ছিল না, সেটা তুমি জানো, আমি জানি।কিন্তু লিমা জানে না।সুতারাং তুমি তাকে মিথ্যে বলবে।
-মিথ্যে বলাটা কি ঠিক হবে ? মিথ্যে দিয়ে জীবন শুরু করাটা তো অন্যায়।
-যে মিথ্যে বললে কারও ক্ষতি হয় না, সেটা বলা যায়।শোনো,এ যুগের একটা ছেলের কোনো গার্লফ্রেন্ড নাই,একথা শুনলে যে কোনো মেয়ে ভাববে ছেলের কোনো শারীরিক সমস্যা আছে।
-ঠিক আছে,তাইলে একটা বলি।পাঁচটা একটু বেশি হয়ে যায় না ?তখন হয়ত ভাববে আমার চরিত্রই খারাপ।
-শোনো যারা আমেরিকায় থাকে তারা এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না।আধুনিক জামানায় যে যত খারাপ,সে ততটা স্মার্ট।তাই আমি চাই তুমি লিমার কাছে নিজেকে ব্যাডবয় হিসেবে উপস্থাপন করো।
-দুলাভাই আমার মনে হয়,আপনি আমাকে ভুল পরামর্শ দিচ্ছেন।এ যুগের মেয়েরা খারাপ ছেলেকে স্মার্ট ভাবে,এটা আপনার ভুল ধারণা।
-শোনো মাতব্বরি করবে না।আমি মেয়েদের ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ।তুমি আমার উপর ভরসা রাখতে পারো।
আসলে এই মাথা মোটা লোকের সাথে তর্ক করে কোনো লাভ নেই।সে যেটা বোঝে, সেটাই সঠিক।এর থেকে তাকে একচুলও নড়ানো যাবে না।তাই এ ব্যাপারে আর কথা বাড়ালাম না।
আজ আমার পরীক্ষার দিন।খালার বাসায় পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।পরীক্ষার এই অনুষ্ঠানে আজ আমাদের দুই পরিবারের সবাই উপস্থিত আছেন।পরীক্ষায় পাশ করলেই আজ বিয়ের সকল কিছু এখানেই আলোচনা করে ফাইনাল করা হবে।পরীক্ষা পাশের জন্য একটু আগে দুলাভাই এর মাথায় ভয়ংকর এক বুদ্ধি এসেছে।তিনি ঠিক করেছেন,পরীক্ষা শুরুর একটু আগে উনি কোন এক কাজের অজুহাতে বাসার বাইরে চলে যাবেন।আমি প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর প্রশ্নগুলো পড়ে মাথায় ঢুকিয়ে ফেলব।এরপর ওয়াশরুম ব্যবহার করার কথা বলে আমি ওয়াশরুমে চলে যাব। তারপর দুলাভাইকে ফোন করে প্রশ্নের উত্তরগুলো জেনে নেব।
এর আগে লিমাকে আমি ছবিতে দেখেছি।এবারই প্রথম আমি তাকে সরাসরি দেখলাম। লিমাকে দেখে আমি অভিভূত ।এ তো মেয়ে নয়,পরি।আমার কেন জানি মনে হচ্ছে,আমি পরীক্ষায় পাস করলেও এই মেয়ে আমাকে বিবাহ করবে না।
ড্রইংরুমের ঠিক মাঝখানে আমার পরীক্ষার আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।দুই পরিবারের সদস্যরা আমাকে ঘিরে বসে আছেন।একটু আগে আমাকে প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে।দুলাভাই যথারীতি অফিসে একটা জরুরি ফোন করতে হবে বলে বাইরে চলে গেলেন।আমি লিমাকে প্রশ্ন করলাম,
-পরীক্ষার সময় কতটুকু ? আর পাশ মার্ক কত ?
লিমা চোখ-মুখ কঠিন করে উত্তর দিল,
-এগুলো নিয়ে আপনার ভাবার দরকার নেই। আপনি পরীক্ষা শুরু করুন।
বুঝলাম এই মেয়ে শুধু পোশাকেই পুলিশ না, এর মেজাজও পুলিশি। আমি বিসমিল্লাহ বলে প্রশ্ন পড়া শুরু করলাম।প্রশ্ন পড়ে মনে হলো, আসলে পরীক্ষা টরীক্ষা কিছু না,ফান করার জন্য ওরা এই পরীক্ষার আয়োজন করেছে।কারণ খুবই সহজ প্রশ্ন।আমি নিজেই এর উত্তর দিতে পারব।দুলাভাই এর সাহায্য লাগবে না।কিন্তু তারপরও দুলাভাইকে ফোন দিতে হবে। কারণ তিনি বারবার বলে দিয়েছেন, তার মতামত ছাড়া উত্তর না দিতে।তাই বাধ্য হয়ে দুলাভাইকে ফোন করতে ওয়াশরুম চলে গেলাম।দুলাভাইকে ফোন দিয়ে ফিসফিস করে বললাম,
-ভাই প্রশ্নগুলো খুবই সহজ। আমার ধারণা মেয়ে ফাজলামি করার জন্য এই পরীক্ষার আয়োজন করেছে।আমি নিজেই এর উত্তর দিতে পারব।আপনার সাহায্য লাগবে না। আপনি চলে আসেন।
-বেশি মাতব্বরি করবে না।মনে রাখবে তুমি একটা গাধা।আর গাধা চিরকালই গাধা।তুমি যেটাকে সহজ ভাবছ, সেটা হয়ত সহজ নয়। হয়তো কৌশলে সহজ প্রশ্ন করে তোমাকে বিভ্রান্ত করছে। তুমি প্রশ্নগুলো আমাকে বল।তারপর আমি যে ভাবে বলব, ঠিক সে ভাবেই উত্তর লিখবে।
বাধ্য হয়ে দুলাভাইকে একে একে সব কয়টি প্রশ্ন বললাম।।উনি কোনটার উত্তর কি দিতে হবে আমাকে বলে দিলেন।কিন্তু দুলাভাই এর উত্তরগুলো আমার পছন্দ হলো না।
-দুলাভাই,এইভাবে উল্টা-পাল্টা উত্তর দিলে তো সমস্যা হয়ে যাবে।বিয়ে তো হবেই না,মাঝখান থেকে মান-সন্মান নষ্ট হয়ে যাবে।
-শোনো,তোমাকে যেটা বলেছি সেটা কর। তুমি একশতে একশ পাবে।এটা একটা জ্ঞানী দুলাভাই এর ওয়াদা।
ওয়াশরুম থেকে ফিরে এসে ইচ্ছের বিরুদ্ধেই দুলাভাই এর পরামর্শ মত উত্তর দিয়ে পরীক্ষা শেষ করলাম।এরমধ্যে দুলাভাইও ফিরে এসে সোফায় বসলেন।পরীক্ষার উত্তর পত্রটি লিমার হাতে দিলাম।উত্তর পত্রটি নিয়ে লিমা আর লিমার বোন অন্যরুমে চলে গেল।আমাদের পুরো পরিবারকে রুমে একা রেখে অন্যরাও রুম থেকে চলে গেলেন।সম্ভবত আমাদের একান্তে কথা বলার সুযোগ দিয়ে গেলেন।সবাই চলে যেতেই আমার বাবা-মা-বোন আমাকে ঘিরে ধরলেন। মা বললেন,
-কিরে সব ঠিক মতো লিখেছিস তো ?
-লিখেছি।দুলাভাই যে ভাবে বলেছে সেভাবে লিখেছি।এখানে আমি নিজের থেকে কোনো উত্তর দেইনি।সবই দুলাভাই এর উত্তর।অতএব তোমরা আমাকে দোষারোপ করতে পারবে না।
বাবা অবাক হয়ে বললেন,
-আমি তো তোর কোনো কথাই বুঝলাম না।পরীক্ষা দিলি তুই, আর এখন বলছিস ঐ গাধাটার কথায় উত্তর দিয়েছিস!
বাবার কথা শেষ হতেই,আপা বাবাকে বললেন,
-আব্বা আপনি কিন্তু সারাজীবন আপনার জামাইকে আন্ডার এস্টিমেট করলেন।ও একজন মেধাবী ছেলে।
-আমি তোর সাথে এ মুহূর্তে তর্ক করতে চাচ্ছি না।তুই নিজেই তো বড় একটা গাধা।না হলে এই ছাগলটারে তুই বিয়ে করিস !
এরপর বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-আমাকে বুঝিয়ে বল, ঐ গাধাটা কিভাবে তোর পরীক্ষার উত্তর দিল।
-বাবা, দুলাভাই বলেছিল প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর বাথরুমে যেয়ে দুলাভাইকে ফোন করতে।আমি বাথরুমে যেয়ে ফোন করেছিলাম।দুলাভাই ফোনে আমাকে উত্তর কি লিখতে হবে তা বলে দিয়েছেন।
বাবা এবার ভুরু কুঁচকে আমাকে বললেন,
-তুই এই গাধাটার বুদ্ধিতে উত্তর দিয়েছিস ! আরে ওর তো মাথায় সমস্যা আছে।
আমি বাবার কথার কোনো উত্তর দিলাম না।উত্তর দিলেন দুলাভাই।
-আব্বা ডোন্ট ওয়ারি।আমি জানি আপনি আমাকে পছন্দ করেন না।তবে আমার উপর বিশ্বাস রাখেন।আমি যে উত্তর বলে দিয়েছি, ইমু পরীক্ষায় একশতে একশ পাবে।
দুলাভাইকে সমর্থন জানিয়ে আমার বোন বলল,
-জি আব্বা,ও সত্য বলেছে। ও খুব জ্ঞানী মানুষ।ইমু যদি আপনার জামাই এর কথা মতো লিখে থাকে তাহলে ভয়ের কিছু নাই। ইমু পাশ করবেই।আপনার জামাই এর মতো এমন মেধাবী ছেলে আমি কোথাও দেখিনি।
বোনের কথা শেষ হতেই বাবা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাকে বললেন,
-ইমুর মা,ভুল করেছ।পাগলরে সাথে আনা ঠিক হয়নি।
ঠিক এই সময় লিমা আর লিমার ছোট বোন রুমে ঢুকল।লিমার হাতে আমার পরীক্ষার উত্তর পত্র।আমি লিমার মুখের দিকে তাকালাম।খেয়াল করে দেখলাম,লিমা ভুরু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।মনে হল রাগে তার দুচোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।আমি ভয়ে চোখ নামিয়ে ফেললাম।
(চলবে……
সবগুলো পর্বের লিংক একসাথে