mama এক নারী চরিত্র
মায়ের মমতা মানেনা কোন কাঁটাতারের জাল,দিন কাল বছর পেরিয়ে হয়েছে তার এক অতৃপ্ত হাল।মরেও সে বেঁচে আছে কোন এক কারণে,রাতের আঁধারে এখন সে তার বাচ্চা নিতে আসে।বলছিলাম ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া হরর মুভি mama এর কথা।মানুষ অজান্তেই কিছু ভুল করে,যার জন্য পরে নিষ্পাপ কিছুকেই পস্তাতে হয়।আর কিছু জিনিস তো শেষ হয়েও শেষ হয়ে যেতে পারেনা।
চলুন শুরু করা যাক,২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই হরর mama মুভির ঘটনা প্রবাহ। ২০০৭/২০০৮ সালে আমেরিকার অর্থ ব্যবস্থায় ভালোয় ধ্বস নিমেছিল,এরই কবলে পরেছিল আমেরিকার জেফ্রি ডেসান্স নামের এক লোক।সে তার সব অর্থ সম্পদ শেয়ার বাজারে হারিয়েছিল।সে দিশেহারা হয়ে,হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তার দুই পার্টনারকে মেরে ফেলে বাসায় আসে।তার দুই মেয়ে ছিল ভিক্টোরিয়া ও লিলি। ভিক্টোরিয়া বাসায় গুলির শব্দ শুনতে পায়।কিছুক্ষন পরে জেফ্রি তার দুই মেয়েকে তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে তুলে নেয়।জেফ্রি বিচলত অবস্থায় অনেক দ্রুত গাড়ি চালাচ্চিল কেননা সে তিনটি খুন করে ফেলেছে।একসময় সে তার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।হাইওয়ের বরফে গাড়িটি এক্সিডেন্ট করে পাশের জঙ্গলে পড়ে যায়।
অন্যদিকে আবার এরই মধ্য তাদের বাসায় পুলিশ চলে আসে।কিছুক্ষনের মধ্যই সেখানে জেফ্রির যমজ ভাই লুকাস আসে।সে তার ভাইয়ের খোঁজ করে,ভাতিজিরা ঠিক আছে কি না তা জানতে চায়।শুরুতে আসলে যে গুলির শব্দ শোনা যায় তাতে লুকাস তার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছিল।অর্থাৎ লুকাস তার সবকিছু হারিয়ে এক ধরণের সাইকো তে পরিণত হয়েছে,সে একে একে তার পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলে নিজেও মরতে চেয়েছিল।
এক্সিডেন্ট করার পরেও জেফ্রি ও তার মেয়েরা বেঁচে যায়
গাড়ি থেকে বেড়িয়ে জেফ্রি তার মেয়েদের নিয়ে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাটতে থাকে।তারা জঙ্গলের ভিতর একটা বাড়ি দেখতে পায়।জেফ্রি বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়,ভিক্টোরিয়া সেখানে কালো ছায়ার মতো কিছু একটা দেখতে পায়।কিন্তু চশমা ভাঙা থাকায় সে স্পস্ট কিছু দেখতে পায়না।তারা সবাই বাড়িতে ঢুকে পড়ে।বেশ পূরনো এই বাড়িতে কেউ ছিলনা।জেফ্রি চিমনিতে গিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।তারপর সে পাশের রুমে গিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে,সে তার কৃত কর্মের জন্যই কাদছিল।সে এসবের শেষ করতে চায়,তাই সে তার পুরো পরিবারকে শেষ করবে। একটু পরে সে তার মেয়ের কাছে এসে বলে, সে অনেক চেস্টা করেছে কিন্তু সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে।
সে তার মেয়ের চশমা খুলে নেয় এবং বাহিরের দিকে তাকাতে বলে।সে তার মেয়েকে গুলি করে মেরে ফেলতেই ধরে কিন্তু একটা ছায়া এসে জেফ্রিকে তুলে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে।ভিক্টোরিয়া সব ঝাপসা দেখতে পায়,কেননা তার কাছে তার চশমা ছিলনা।
বাবা-মাকে হারিয়ে দুই বোন ভিক্টোরিয়া ও লিলি এই বাসা তেই থাকতো।তারা খাবার জন্য বিভিন্ন ফল পেতো যা ওই কালো ছায়া তাদের দিয়ে যেত।এভাবে ৫বছর পেরিয়ে যায়।এই সময় গুলোতে লুকাস অর্থাৎ ভিক্টোরিয়ার চাচা তাদের অনেক খুঁজে বেরিয়েছ।সে তাদের খুঁজতে পরে লোক ও ভারে করেছিল।লোকগুলো অনেক খোজাখুজির পরে জেফ্রির গাড়ি খুঁজে পায়।গাড়িটির কিছু সামনে যেতেই তারা ওই বাসা দেখতে পায়,বাসাটিতে মেয়েগুলো ছিল কিন্তু তাদের অবস্থা একেবারেই অস্বাভাবিক।জঙ্গলের বদ্ধ ঘরে থাকতে থাকতে তাদের অবস্থা পশুপাখির মতো হয়ে গেছিল।খোচরগুল লুকাস কে ফোন করে এই বিষয়গুলো জানায়।তারা বাচ্চা মেয়েগুলোকে হসপিটালে পাঠানো সিদ্ধান্ত নেয়।লুকাস তার গার্লফ্রেন্ড এনাবেল সহ এক ফ্লাটে থাকতো।
এনাবেল ছিল এক নামী ব্রান্ডের লিড গিটারিস্ট,আর লুকাস আর্টিস্ট হিসাবে জিবিকা নির্বাহ করতো।বাচ্চাগুলোকে হসপিটালে সাইকাইটিস্ট ড.ট্রেফাস এর তত্বাবোধনে রাখা হয়।লুকাস জানা মাত্র এনাবেল সহ সেই হসপিটালে আসে। ডাক্তার বলে বাচ্চাদের বিষয় খুবই জটিল,তার স্পর্শ কাতর।তবে ভিক্টোরিয়ার দ্রুত উন্নতি সম্ভব কেননা সে মোটামুটি বড় হয়ে গেছে আর হারিয়ে যাবার আগে কথা শিখেছিল। তার স্মৃতিতে ৫বছর আগের অনেক কিছুই থাকার কথা।কিন্তু লিলির ক্ষেত্র বিষয়টি এমন নয়,সে কথা বলতে পারতো না ।একদম ছোটতেই সে এসবের শিকার হয়েছে ,তাই তার স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে।
লুকাস তার ভাতিজি দের সাথে দেখা করতে আসে,
কিন্তু তাকে দেখেই মেয়েগুলো বিছানার নিচে লুকিয়ে পড়ে।চশমা পড়ার পরে ভিক্টোরিয়া লুকাস কে চিনে ফেলে।লুকাস কে সে তার বাবা মনে করে জড়িয়ে ধরে,কেননা লুকাস দেখতে তার বাবার মতোই ছিল।কিন্তু লিলি কাউকেই চিনতে পারেনা।
লুকাস মেয়েগুলোর দায়িত্ব নিতে চায়,কিন্তু অন্যদিকে লিলির খালাও এই দায়িত্ব নিতে চায়।তাই তাদেরকে কোর্টের দারস্থ হতে হয়।বিচারকের কাছে ড.ট্রেফাস মেয়েগুলোর নানা বিষয় তুলে ধরেন।ড.ট্রেফাস বলেন,মেয়েগুলোর দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।তারা ওই বদ্ধ বাসাতে নানা পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে ছিল,মানুষের স্পর্শ না পেয়ে তাদের আচরণ জীব-জন্তুর মতো হয়ে গেছে।তারা এখন মানুষকে ভয় পায়, তার মানুষকে বিশ্বাস করতে চায়না।তাদের মানুষিক বিকাশ বাধা গ্রস্ত হয়ে গেছে। এভাবে দীর্ঘকাল একা থেকে থেকে তারা নিজেদের মধ্য এক কালপনিক অভিভাবক তৈরি করেছে।যে তার খাওয়াই,গল্প করে,গান গাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। তারা এর নাম দিয়েছে মামা।এই অবস্থা থেকে তাদের সারিয়ে তোলা সম্ভব,তবে এর জন্য ভালো টেক-কেয়ার এর প্রয়োজন।তখন লিলির খালা বলে ওঠে সে এই দায়িত্ব নিতে চায়,কেননা লুকাসরা এখনো নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারেনি।তাদের নিজেদরই ঘর নেই,অপরদিকে তাদের আর্থিক অবস্থা ও এতোটা ভালো নয় যে তারা এই দুটা মেয়ের ভাল ভরন-পোষন করতে পারবে।
পরে ড.ট্রেফাস তাদের পরামর্শ দেয় যে যদি তারা ওই মেয়েদের নিতে চায় তবে কোর্টের রুলস ফলো করেই নিতে হবে।তাদের একটি বাসা নিতে হবে যেখানে তারা ওই মেয়েগুলোর সাথে থাকবে।আর বিভিন্ন সময় কোর্ট থেকে এসে কর্মকর্তারা মেয়েদের অবস্থা দেখে যাবে সব ঠিক মতো হচ্ছে কিনা।এরপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।এসবে এনাবেল খুব একটা খুশি ছিলনা,কেননা একজন ব্রান্ড সদস্যর সাথে বাচ্চা টেক-কেয়ারের বিষয় যায়না।লুকাসকে সে অনেক ভালবাসতো তাই এসবে রাজি হয়।বাচ্চাগুলো ওই নতুন বাসাতে আসে।ভিক্টোরিয়া ইতোমধ্য স্বাভাবিক হয়েছিল কিন্তু লিলির ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি।সে এখনো হাত পায়ে ভর করে চলে,মানুষ দেখলে ভয় পায় এবংখাবারগুলো মেঝেতে বসে বন্য পশুদের মতোই খায়।ড.ট্রেফাস বাচ্চাদের নিয়ে রিসার্চ করছিল,মামা নামক ওই কাল্পনিক চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিল।সে ভিক্টরিয়ার কাছ থেকে মামা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছিল।ড.ট্রেফাস শহরের পাবলিক রেকর্ড অফিসে যায় এবং ভিক্টরিয়ার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য দিয়ে জানার চেস্টা করে সত্যি এরকম কেউ আছে কিনা।
বাচ্চাগুলো দেয়ালে আকাআকি করতো আর প্রায় সময়ই গুনগুন করে ঘুম পাড়ানি গান বলতো।দেয়ালে একটি কালো প্রজাপতি চলে আসে,যা দেখে তারা খুব খুশি হয়।কেননা এই প্রজাপতিটিই ওই মামার প্রতিরুপ।বাচ্চাগুলো ওই মামার সাথেই খেলতো।
এক রাতে এনাবেল ও লুকাস পার্সনাল সময় পার করছিল,
এমন সময় এনাবেল কালো এক ছায়ার ঝলক দেখতে পায়। লুকাস এটাকে বাচ্চাগুলো মনে করে খুঁজতে গিয়ে রেলিং এ একটি কালো প্রজাপতি দেখতে পায়।প্রজাপতিটি দেয়ালের এক ছিদ্রের কাছ যায়।লুকাস ছিদ্র পর্যবেক্ষণ করতে গেলে ওখান থেকে কালো ছায়া বের হয়।এটা দেখে লুকাস ভয়পেয়ে সিঁড়ি থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ে সেন্সলেস হয়ে যায়।লুকাস কিছু সময়ের জন্য কোমায় চলে যায়।ড. স্ট্রেফাস এনাবেল কে বুঝায় এ কোম ট্রেমপোরারি কিছু দিনের মধ্যই সে ঠিক হয়ে যাবে।এসময় এনাবেলকে বাচ্চাগুলোর ঠিক মতো দেখা শুনা করতে হবে।লুকাস সুস্থ হয়ে এটা শুনে খুবই খুশি হবে।
পরের দিন সকালে এনাবেল বাসায় পুলিশ নিয়ে আসে কিন্তু পুলিশ এখানে খুঁজে কিছুই পায়না।এনাবেল রাতের বেলা মাঝে মাঝে বাসায় অদ্ভত কিছু আওয়াজ শুনতে পেতো।তার কাছে মনে হতো কে যেন গুনগুন করে ঘুম পাড়ানি গান গাচ্ছে।সে ঘুমের মধ্য ভয়ঙ্কর সব স্বপ্ন দেখতো।লিলিদের দেখতে একদিন ড.ট্রেফাস লুকাসদের বাসায় আশে।সে দেয়ালে বাচ্চাগুলোর আঁকানো ছবিগুলো ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করে।সেখানে সে বাচ্চাদের বানানো এক অদ্ভত পুতুল খুঁজে পায়।ড.ট্রেফাস এ পুতুলের একটি ছবি তুলে নেয়,এরকম একটি পুতুল সে আগেও দেখেছে।রাতে সে ভিক্টোরিয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ দেখছিল,এখানে সে জঙ্গলের ওই বাড়িতে ভিক্টোরিয়াকে প্রশ্ন করেছিল এই পুতুল কে বানিয়েছে?ভিক্টোরিয়া উত্তর দেয় মামা।কিন্তু এ উত্তর দেবার আগে সে একবার অন্য দিকে চোখ ঘোরায়।ড.ট্রেফাস এটা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারে রুমে অন্য কেউ উপস্থিত ছিল সে সময়,যাকে তারা দেখতে পায়নি।ড.ট্রেফাস বড় কোন সমস্যার আশঙ্কা করে।
এনাবেলরা রাতের খাবার খাচ্ছিল,এমন সময় লিলি বারবার পিছন দিকে তাকিয়ে হাসতেছিল।খাবার শেষ করে তারা ঘুমিয়ে পরে কিন্তু মাঝ রাতে এনাবেল এক মহিলার গুনগুন আওয়াজ শুনতে পায়।সে আওয়াজ এর পিছু নিয়ে বাচ্চাদের রুমের সামনে চলে আসে।এনাবেল দেখতে পায় বাচ্চারা না ঘুমিয়ে খেলছে,সে তাদের বলে এতো রাতে খেলা যাবেনা ঘুমিয়ে পড়।এনাবেল আরো দেখে আলমারি খোলা আছে।সে আলমারি বন্ধ করতে যায় কিন্তু ভিক্টোরিয়া তাকে নিষেধ করে বলে আলমারিটি খোলা রাখতে।এনাবেল তাদের কথা না শুনে আলমারি বন্ধ করে চলে যায়।কিন্তু এনাবেল চলে যাবার পরে লিলির একটা মুচকি হাসি দেখা যায়।পরের দিন এনাবেল ড. স্ট্রেফাসের কাছে যেয়ে আগের রাতের সব ঘটনা খুলে বলে। ড.ট্রেফাস এনাবেলকে একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে বলে এখানে যে সুরে গুনগুন করছে এটিই ছিল নাকি?এনাবেল বলে এটিই ছিল তবে এই কণ্ঠ ছিলনা।সে কণ্ঠ কোন এক মহিলার,তার মনে হয় বাচ্চাগুলোর সাথে কেউ দেখা করতে আসে,তার সাথেই বাচ্চাগুলো গল্প করে ও খেলে।
ড.ট্রেফাস বলে এটা আসলে অন্য কেউ নয়,
এটা ভিক্টোরিয়া নিজেই।তার পার্সনালিটি ডিস-অর্ডার নামে রোগ হয়েছে।এতে সে মাঝে মাঝেই মামা নামক মহিলার চরিত্র ধারণ করে। সে নিজে এসব করছে কিন্তু সে নিজে এসব জানে না। তবে সময়ের সাথে সাথে এটা সারিয়ে তোলা সম্ভব।
এনাবেল উদ্বিগ্ন হয়ে বলে সে নিরাপদ কি না?ড.ট্রেফাস বলে সে ৮বছরের শিশু বাচ্চা মাত্র,সে কি বা করতে পারে।
পরের দিন ড.স্ট্রেফাস পাবলিক রেকর্ড অফিসে যায়। কল করে তাকে এখানেই আসতে বলা হয়েছিল।এখানে অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি সংরক্ষন করা হয়।ভিক্টোরিয়ার বর্ণনা করা মামার সাথে এখানে থাকা এক অতীতের ফাইলের তথ্য মিলে গেছে।
ওখানে দায়িত্বে থাকা মহিলা কর্মকর্তা বলে,আমি ধার্মিক কোন মানুষ নই তবে আমি বিশ্বাস করি মানুষের মৃত্যুর পরে তার লাশের নির্দিষ্ট একটি জায়গা করে দিতে হয়। কিন্তু অনেক সময় নানা লাশ ফেলে দেওয়া হয় বা কবর ভেঙ্গে ফেলে অন্য কিছু তৈরি করা হয়,আর কবরে বিদ্যমান লাশের জায়গা করে দেওয়া হয় সংকির্ণ কোন স্থানে যা মানুষের একটি ভুল।
লুকাসের সাথে একটি হ্যালোজিনেশন হয়।সে দেখতে পায় সে কোমায় থাকা অবস্থায় রাস্তার পাশে চলে এসেছে,আর তার ভাই তাকে বাচ্চাদের বাচাতে বলছে।সে অনেক উত্তেজিত হয়ে যায় এবং কোমা থেকে বেড়িয়ে আসে।
লুকাসকে নিয়ে এনাবেল বাসায় আসে। এনাবেল লক্ষ্য করে ভিক্টোরিয়া রুমে বসে কাঁদছে।এনাবেল তার কান্নার কারণ জানতে চাইলে ভিক্টোরিয়া বলে,এনাবেলের কোন ক্ষতি হোক তা সে চায়না।এনাবেল জানতে চায় কে তার ক্ষতি করবে? ভিক্টোরিয়া বলে তোমার আমাদের কাছে আসা দেখে সে ঈর্ষাণিত হয়,সে তোমার ক্ষতি করে ফলবে।এসব বলে সে ওখানে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
পরের দিন সকালে এনাবেল দের বাসায় ভিক্টোরিয়ার খালা আসে। তিনি বাচ্চাদের অবস্থা দেখে বলেন বাচ্চাদের ভালো দেখাশোনা হচ্ছেনা।তিনি বাচ্চাদের সাথে করে নিয়ে যেতে চান।এনাবেল তখন রেগে যায় এবং মহিলাটিকে তাড়িয়া দেয়।
রাতে বাসায় ড.ট্রেফাস আসে,তিনি ভিক্টোরিয়াকে জিজ্ঞাস করে মামা তাদের সাথে জঙ্গলের বাসায় ছিল কি না?ভিক্টোরিয়াকে তখন বলে সে দেয়ালে দেয়ালে থেকে বেড়ায়।ড.ট্রেফাস তখন ভিক্টোরিয়াকে একটি ছবি দেখিয়ে বলে এটা মামা কিনা? ভিক্টোরিয়া ছবি দেখে উত্তেজিত হয়ে যায়,আর তখনি পাশের দেয়ালে কালো ছায়া দেখা যায় এবং কিছু অদ্ভত আওয়াজ হতে থাকে।ড.ট্রেফাস তখন ভয় পেয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়।ট্রেফাস একজন ডাক্তার,তাই সে বিজ্ঞানের সাথে এসব মিলাতে পারছিলনা।তবে ড.ট্রেফাস ছাড়বার পাত্র নয়,রহস্য উৎঘাটিনের জন্য সে ওই জঙ্গলের বাড়িতে যায়।ওই বাড়ির দেয়ালে সে নানা ধরণের আকাআকির চিত্র দেখতে পায়।ড.ট্রেফাস এসবের ছবি তুলতে তুলতে মামার দেখা পায়।মামা তার কাছে এসে তার ঘাড় মটকিয়ে তাকে মেরে ফেলে।
অন্যদিকে এনাবেল রাতে ঘুমানোর সময় স্বপ্ন দেখে,সে দেখে একটা মহিলা হাতে বড় একটা পেরেক নিয়ে অনাথ আশ্রমের দিকে যাচ্ছে।আশ্রমে গিয়ে সে ওখনাকার এক সন্ন্যাসী কে মেরে ফেলে এবং এক বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যায়।তাকে ধরার জন্য অনেক লোক তার পিছু ধাওয়া করে।মহিলাটি দৌরাতে দৌড়াতে পাহাড়ের চূড়ায় চলে আসে।আর কোন পথ না পেয়ে সে ওখান থেকে ঝাপিয়ে পড়ে।মহিলাটি নিচে পড়ে মারা যায় কিন্তু বাচ্চাটি একটি গাছের সাথে ঝুলে যায়।তবে বাচ্চাটি ও মরে গিয়েছিল।ঘুম ভাঙ্গার পরে এনাবেল দেয়ালে কালো ছায়ার ঝলক দেখতে পায়।এনাবেল বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়।
এখন মামা খেলতে আসলে খেলেনা,এমন কি ভিক্টোরিয়া কোথাও যেতেও চায়না।কিন্তু লিলি এখনো মামাকে পছন্দ করে,খেলা করে এবং বাহিরেও যায়।পরের সকালে এনাবেল লিলিকে বাহিরে খুঁজে পায়।তাকে নিয়ে এসে সে বুঝায় মামার সাথে এসব করা যাবেনা।লিলির ধিরে ধিরে এনাবেলকে ভাল লাগতে শুরু করে।
এক সকালে এনাবেল রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে ড.ট্রেফাসের রেখে যাওয়া ফাইল পায়।সে ফাইল খুলে দেখতে গিয়ে এক মহিলার ছবি পায়।পরে এনাবেল আরও তথ্য নিতে ড.ট্রেফাসের চেম্বারে যায়।সে এখানে গিয়ে সে লুকিয়ে ড.ট্রেফাসের তথ্যের বক্স ও ল্যাপটপ নিয়ে নেয়।
হসপিটালে লুকাস ওই দিনের হ্যালোজিনেশনের ছবি আঁকায়।
সে লক্ষ্য করে বাস্তবে এই জায়গা রয়েছে।সে ভিক্টোরিয়াদের খুঁজতে এর আগে এই জায়গায় গিয়েছিল।লুকাস দ্রুত ওই জায়গার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে এনাবেল ড.ট্রেফাসের ল্যাপটপ থেকে ভিক্টোরিয়ার হিপনোটাইসিসের কিছু ক্লিপ পায়। ড.ট্রেফাস,ভিক্টোরিয়াকে মামা সম্পর্কে জিজ্ঞাস করছিল। ভিক্টোরিয়া তখন একটা ঘটনা বলে যা পুরোপুরি এনাবেলের দেখা স্বপ্নের সাথে মিলে যায়।ভিক্টোরিয়া বলে বাচ্চাটি ছাড়ায় মামা নিচে পড়ে গিয়েছিল,তাই সে বহু বছর ধরে বাচ্চাটিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।অবশেষে সে তার বাচ্চাদের বদলে ভিক্টোরিয়াদের খুঁজে পেয়েছে।
আসলে এই মামা নামের মহিলাটি ছিল ১৮০০সালের দিকের মেন্টাল পেসেন্ট এবং তার শারিরিক অবস্থা ও ভালো ছিলনা।সে অনেক রুগ্ন ছিল তাই তার বাচ্চাটিকে এক অনাথ আশ্রমে রাখা হয়েছিল।
মামার বাচ্চা ওইদিন মামার সাথে নিচে পড়ে যায়নি,গাছে ঝুলে ছিল।পরে লোকজন বাচ্চাটিকে কবর দেয়,কিন্তু এই কবর স্থায়ী হয়নি।কবরটি পরে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়,আর মামা তার বাচ্চাকে হারিয়ে ফেলে খুঁজতে থাকে।আসলে ওই পাব্লিক রেকর্ড অফিস থেকে ড.ট্রেফাস যে বক্সটি পেয়েছিল তা ছিল মামার সন্তানের দেহের ধংসাবশেষ।এনাবেল সব বুঝতে পারে।রাতে ভিক্টোরিয়ার ঘুম ভেংগে গেলে সে দেখতে পারে দরজা খোলা আর লিলি রুমে নেই।ভিক্টোরিয়া নিচে নেমে এসে দেখতে পায় লিলি মামার কাছে যাচ্ছে।ভিক্টোরিয়া লিলিকে বলে মামার কাছে যেওনা মামা খারাপ।তখন মামা রেগে চিৎকার করে ওঠে এবং তাদের হামলা করে বসে।বাচ্চাগুলো ভয়ে চিৎকার করে দৌড়াতে শুরু করে।তাদের চিৎকার শুনে এনাবেল ছুটে আসে,আর মামা এনাবেলের উপর হামলা করে মেরে ফেলতে ধরে।তখনই ভিক্টোরিয়া বলে ওঠে তুমি কথা দিয়েছিলে এনাবেলের কোন ক্ষতি করবেনা।
মামা তখন এনাবেল কে ছেড়ে ভিক্টোরিয়ার কাছে আসে।ওই সময় তাদের খালা সেখানে চলে আসে এবং ভিক্টোরিয়াকে রক্ষা করার চেস্টা করে।কিন্তু সে সফল হয়না,মামা তাকে মেরে ফেলে।
এনাবেল সেন্সলেস অবস্থায় মেঝেতে পড়েছিল।যখন তার জ্ঞান ফেরে আসে তখন সে ওখানে কাউকে খুঁজে পায়না।তখন সে ওই মহিলার বাচ্চার ধ্বংসাবশেষ নিয়ে ওই বাড়ির দিকে রওনা হয়।রাস্তায় তার লুকাসের সাথে দেখা হয়।সে লুকাসকে নিয়ে ওই বাড়িতে যায়।বাড়িতে গিয়ে দেখে ওই আত্মীয় মহিলাটি মৃত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে,তাকে ধরতেই সে পড়ে যায়।এনাবেলরা বাসার পিছনে যায়,সেখানে তারা দেখতে পায় বাচ্চাগুলো পাহাড়ের চূড়ায় দাড়িয়ে আছে।এই চূড়া থেকেই মহিলাটি ঝাপ দিয়েছিল।তারা পাহাড়ের চূড়ায় যায়।
mama ভিক্টোরিয়াদের সাজিয়ে তার সাথে নিয়ে যাবে।
mama ভিক্টোরিয়াদের তার কাছে ডাকছিল,ভিক্টোরিয়া তার কাছে না গেলেও লিলি তার কাছে চলে যাচ্ছিল।লুকাস এসে লিলিকে আটকিয়ে নেয়। mama এতে রেগে যায় এবং লুকাসের মুখ চেপে ধরে মেরে ফেলতে ধরে; এনাবেল তখনই mama কে তার বাচ্চার দেহের ধ্বংসাবশেষ দেখায়। mama এনাবেলের কাছে এসে দেহের ধ্বংসাবশেষ নেয় এবং জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।মামা দেহের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে চলে যেতে ধরে আর তখনই লিলি মামাকে তাকে ডাক দেয় mama এর সাথে যেতে চায়। mama তখন ছুটি এসে লুকাস ও এনাবেল কে আঘাত করে ফেলে দিয়ে ভিক্টোরিয়া ও লিলিকে নিয়ে চলে যেতে থাকে।ভিক্টোরিয়া এনাবেলের কাছে বিদায় নেয়,কিন্তু এনাবেল তাকে যেতে দিবেনা। সে বারবার তাদের আটকানোর চেষ্টা করছিল আর মামা তার মুখ মাটির দিকে নামিয়ে দিচ্ছিল। mama পাহাড় থেকে বাচ্চাদের নিয়ে নামতেই ধরে আর তখন এনাবেল,ভিক্টোরিয়ার জামা টেনে ধরে।সে কিছুতেই তাদের যেতে দিবেনা। ভিক্টোরিয়া তখন কেঁদে ওঠে সে মামার সাথে mama তখন ভিক্টোরিয়াকে ছেড়ে দেয়।ভিক্টোরিয়া,লিলিকে ডাকে কিন্তু সে ফিরে আসেনা।সে mama এর সাথেই যাবে,পরে mama লিলিকে নিয়ে ওই পাহাড়ের চূড়া থেকে লাফ দেয়।
লিলি mama এর সাথে অনেক খুশি ছিল,একদম বাচ্চাকাল থেকেই তো সে এই mama এর সাথেই ছিল।যাইহোক না কেন এই mama ই তো তাদের খাইয়ে বাচিয়ে রেখেছিল। একটা পর্যায়ে এসে তারা ওই গাছের ডালে এসে আঘাত পায় আর অনেকগুলো প্রজাপতি হয়ে উড়ে যায়।ভিক্টোরিয়াকে, এনাবেল ও লুকাস জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।ভিক্টোরিয়া দেখে তার হাতে একটি সুন্দর প্রজাপতি এসে বসেছে,সে ভাবে হয়তো এটা লিলিই ছিল।প্রজাপতিটি উড়ে চলে যায়,লিলি আবাক দৃস্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।