নয়নে লাগিল নেশা পর্ব ৩
#WriterঃMousumi_Akter.
প্রায় এক ঘণ্টা কেটে গিয়েছে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছে প্রান্তিক। কোনোভাবেই মাথা ঠান্ডা হচ্ছে না তার। ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ছে রজনীর ঘৃণাভরা দৃষ্টি। এই দৃষ্টি বিষাক্ত আর ধারালো সুচের মতো ফুটছে প্রান্তিকের শরীরে। এরই মাঝে হঠাৎ মনে হলো এই মুহূর্তে তাকে রজনীকে দেখতে হবে। দেখতে হবে মানে দেখতেই হবে। যা কিছু হয়ে যাক তবুও তার রজনীকেই দেখতে হবে। শাওয়ার থেকে বের হয়ে ব্লু জিন্স আর সাদা হুডি পরে নিল প্রান্তিক।ড্রেসিং-টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হাতে ঘড়ি বাঁধতে বাঁধতে মনে হলো তাকে কেমন কালো দেখা যাচ্ছে। মুখে একটা ব্রণ হয়েছে।দাড়িগুলো যেন একটু বেশি বড়ো হয়ে গিয়েছে।
চোখের নিচে একটু ডার্ক হয়েছে।নিজের ত্বকের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।যেভাবেই হোক সুন্দর দেখা যেতে হবে। বারবার আয়নায় মুখ এদিক-সেদিক করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিজের মুখ দেখছে। তাকে কি দেখতে অনেক খারাপ দেখা যাচ্ছে? নিজের চেহারা নিয়ে এর আগে পরে না ভাবা ছেলেটা আজ নিজের চেহারা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। এর আগে কখনো আয়নায় দাঁড়িয়ে সে ভাবেনি তাকে ভালো না কি খারাপ দেখা যাচ্ছে বা চেহারার আরও উন্নতি করা প্রয়োজন। এই ছেলেটার চেহারায় কোনো দিক থেকে কোনো কমতি নেই; তবুও আজ যেন সব কম লাগছে। প্রেমে পড়লে বোধহয় এমনই হয়।
গায়ে বডি-স্প্রে মেরে টাওয়াল দিয়ে মাথার ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে জানালার পাশে দাঁড়াল। বাইরে ওয়াল ঘেঁষে সারিবদ্ধ কতগুলো রজনীগন্ধা ফুলের গাছ।তার মধ্যে একটা গাছে ফুল এসেছে। প্রান্তিক পেছনের দরজা খুলে বাইরে বের হলো। মুখে ক্ষীণ হাসি। রজনীগন্ধা ফুলটা টেনে এনে নাকের সাথে মিশিয়ে প্রাণভরে সুবাস নিল।ফুলটা নাকের সাথে মেশাতেই মনে হলো রজনী মিশে আছে তার সাথে। ফুল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে আকাশের পানে তাকিয়ে বলল,
“হে প্রকৃতি, নারীকেও তো ফুলের সাথে তুলনা করা হয়। তাহলে বলো– কোন রজনীগন্ধা বেশি সুন্দর, কোন রজনীগন্ধা বেশি সুবাস ছড়ায়, তোমার না কি আমার?”
প্রান্তিকের মনে হলো– কোনো এক অলৌকিক শক্তি তার কানে কানে এসে বলে গেল, “তোমার রজনীগন্ধার চেয়ে সুন্দর ফুল এই পৃথিবীতে আর নেই। তোমার রজনীগন্ধা বেশি সুন্দর।”
প্রান্তিক বাঁকা হাসি দিয়ে বলল, “থ্যাংক্স।”
প্রান্তিক রা’গী মা’ রা’ মা’ রি করে, পলিটিক্স-এর সাথে জড়িত। তবে কোনো অন্যায় কাজে জড়িত নয়। বরং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই তাকে মা’ রা’ মা’ রিতে আসতে হয়েছে। আগে ভুলেও কারো গায়ে হাত তুলত না। তার বাবার গায়ে বিরোধী দল হাত উঠানোতে প্রান্তুিক বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে। এখন রেগুলার কারো না কারো গায়ে হাত তোলে। অসহায় মানুষের কাছে ভালোবাসার এক নাম– প্রান্তিক চৌধুরী আর খারাপ মানুষের কাছে প্রান্তিক চৌধুরী এক আতঙ্কের নাম। দিনে দিনে হিংস্র থেকে আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে। তবে প্রান্তিককে যারা চেনে তারা জানে ছেলেটার উপরে র* ক্ত নিয়ে যেমন ছড়াছড়ি তেমনি ভেতরে কোমল একটা হৃদয় আছে। তাছাড়াও প্রন্তিক খুবই প্রকৃতিপ্রেমী ছেলে। প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে ভালো লাগে তার। কিছু অদ্ভুত কাজও সে করে। রাতে ঘুম হচ্ছে না মাঝ রাতে শ্রাবণকে ডেকে বলবে, “শ্রাবণ, গাড়ি বের কর আমরা ট্যুরে যাব।”
কোনো কিছু নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত বা ক্লান্ত হলেই সে গাড়ি নিয়ে প্রকৃতি ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে। তাছাড়া নিজের বাড়িও একদম আস্ত একটা সুন্দর প্রকৃতির মতো সাজিয়েছে। বাড়ির পেছনেই বিশাল বড়ো এক খণ্ড জমি আছে। যেখানে শহরে এক শতক জমির দাম ১৫,২০ লাখ টাকার মতো।সেখানে প্রান্তিক দুই বিঘা মতো জমিতে লাল, সাদা, হলুদ কালারের গোলাপ, সূর্যমুখীর রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়ার চাষ করেছে। জুই, বেলী, হাসনাহেনা, শিউলি সব রকম ফুলের গাছই তার বাড়িতে আছে। ফুলের সুবাস তার খুব প্রিয়। একটা ফুলও সে বিক্রি করে না। ফুল বাগান পাহারা দিতেও লোক রাখা আছে। ইচ্ছা করলে এই ফুল থেকেই সে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারে; কিন্তু করে না। একটা ফুলও কাউকে ছিঁড়তে দেয় না; শুধুমাত্র শখের বশেই ফুলের চাষ করা।
একটা ছেলে ভ্রমণ-পিপাসু, ফুলপ্রেমী উপন্যাস পড়ে সময় পেলে প্রকৃতির মাঝে ডুবে থাকতে পছন্দ করে। হ্যান্ডসাম, লম্বা-ফরসা, সাহসী। নিঃসন্দেহে যে-কোনো মেয়েই এমন ছেলে পছন্দ করে। বিশেষ করে– ভ্রমণ পছন্দ করে আর এমন নির্ভীক ছেলেই মেয়েদের প্রথম পছন্দ।
ডায়নিং থেকে প্রিয়তা ডাকছে, “ভাইয়া খেতে এসো।”
বোনের ডাকে নিজের রুম থেকে বেরোল প্রান্তিক। আলমারি খুলে ড্রয়ার থেকে না গুণেই একগোছা টাকা নিল মানিব্যাগে।প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ গুঁজে ডায়নিং-এ গিয়ে বসল। মাহবুব চৌধুরী, আঞ্জুমান চৌধুরী, প্রিয়তা, শ্রাবণ সবাই প্লেটে ভাত নিয়ে বসে অপেক্ষা করছে প্রান্তিকের জন্য।লতিফা সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে।প্রান্তিক ভাতের প্লেট হাত দিয়ে ঠেলে সরিয়ে রেখে লতিফার দিকে তাকিয়ে বলল, “খালা, আপনি জানেন না আমি রাতে ভাত খাই না! তাহলে আমার প্লেটে ভাত কেন দিয়েছেন?”
লতিফা আমতা আমতা করছে। প্রান্তিক আবারও প্রশ্ন করল,
“রুটি বানাননি আজ?”
“না মানে– বাজান…..
“কী হয়েছে, আপনার কি শরীর খারাপ খালা? অসুস্থ হলে বেশি চাপ নিবেন না।আম্মুর সাথে গিয়ে একটু পরেই ডাক্তার দেখিয়ে আসেন। শরীর খারাপ হলে নিজেকে কষ্ট দিবেন না।”
প্রান্তিক শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বলল, “খাওয়া কি শুরু করেছিস শ্রাবণ? শুরু না করলে নিচে থেকে দুইটা রুটি নিয়ে আয়।”
মাহবুব আর আঞ্জুমান এতক্ষণ ছেলের দিকে তাকিয়ে ছিল। প্রিয়তাও তার আম্মুর কিছু বলার জন্য অপেক্ষা করছিল।
আঞ্জুমান এবার মুখ খুলল। শ্রাবণকে বলল তুই খেতে বোস বাবা। প্রান্তিকের দিকে তাকিয়ে বলল, “সারাদিন কিছু খেয়েছ তুমি?”
“খেয়েছিলাম আম্মু।”
“ভাত খেয়েছ আজ সারাদিন?”
“না আম্মু।”
“তাহলে এখন রুটি খাবে কেন? আমিই লতিফাকে নিষেধ করেছি আজ রুটি করতে।”
“আম্মু, তুমি জানো না– আমি বেশি ভাত খায় না। এতে মেদ বাড়ে খুব।”
“শরীর দূর্বল হবে তোমার। কাল মা’ রা’ মা’ রি করবে কীভাবে?”
লতিফা খোঁচা দিয়েই ছেলেকে কথাটা বলল।
“আম্মু, মা’রা’মা’রি তো করতে চাই না। কিন্তু এমন কিছু দেখি যে হাত না উঠিয়ে পারি না।”
“তাহলে ভাত খাও এখন।”
“প্লিজ না আম্মু। রাতে ভাত খেলে শরীর কেমন ভারী হয়, মেদ বাড়বে। তোমার ছেলেকে কোনো মেয়ে আর পছন্দ করবে না।”
“আমার ছেলের বিয়ের দরকার কী? মা’ রা’ মা’ রি করলেই তো জীবন কেটে যাবে।”
মাহবুব বলল, “বাবা, তোমার আম্মুর বিষয় তো জানোই। না খেলে ছাড়বে না। তাই খেয়ে নাও।”
আঞ্জুমান চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে ছেলের ভাতের প্লেট এগিয়ে নিয়ে ভাত মাখিয়ে ছেলের মুখে পুরে দিল। প্রান্তিক এই এক জায়গায় দূর্বল। তার আম্মুর কথা ফেলতে পারে না। আঞ্জুমান প্রায় এখনও তার দুই ছেলে-মেয়েকে খাইয়ে দেয়।
ছেলেকে খাইয়ে দিতে দিতে বিভিন্ন গল্প উঠল খাওয়ার টেবিলে। খাওয়া শেষে প্রান্তিক বলল, “বাবা-আম্মু, আমি একটা কথা বলতে চাই।”
আঞ্জুমান আর মাহবুব জানে ছেলে একটি কথা বলতে চাইছে মানে– ভয়ানক কিছু।আঞ্জুমান আর মাহবুব দু’জন দু’জনের দিকে তাকাল।
মাহবুব বলল, “কী বলতে চাও?”
প্রান্তিক কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলল, “আম্মু, বাবা আমি বিয়ে করতে চাই।”
আঞ্জুমান আর মাহবুব দু’জনেই অবাক হলো। বড়ো বড়ো চোখে ছেলের দিকে তাকাল। মাহবুব কেশে উঠল। এক প্রকার লজ্জাও পেল। ছেলে সরাসরি বিয়ের কথা বলছে এটা একটা বাবার কাছে লজ্জারই বিষয়। তারচেয়ে বেশি অবাক করা ব্যাপার।বিয়ের কথা বলতে বলতে তাদের মুখ-ব্যথা হয়ে যাচ্ছিল আর তাদের ছেলে দেরি আছে বলে কাটিয়ে দিয়েছে।
প্রিয়তা হাত তালি দিয়ে বলে উঠল, “ইয়ায় হু! ফাইনালি ভাবির মুখ দেখতে পারব।”
আঞ্জুমান বলল, “সৈয়দ মুনসুর আলীর মেয়ের সাথে কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে?”
প্রান্তিক বেশ অবাক হয়ে বলল, “কই আম্মু! কীসের ঝামেলা?”
“তাহলে ঘটককে বলে মেয়েটার বিয়ে আটকাতে চাইছ কেন?”
“আমিই তাকে বিয়ে করব আম্মু।”
“শোনো, এভাবে আমি তোমাকে একটা মেয়ের ক্ষতি করতে দিব না; কারণ তুমি বিয়েতে এত সিরিয়াস নও। নিশ্চয়ই কোনো ঝামেলা আছে যার জন্য বিয়ে করতে চাইছ।”
প্রান্তিক বাঁকা হেসে বলল, “শ্রাবণ, আম্মুকে বোঝা।”
শ্রাবন হাসল। প্রিয়তা বলে উঠল, “ ইশ! ভেবেছিলাম কলেজে আমার বান্ধবীকে ভাইয়ার সাথে বিয়ে দিব, তা আর হলো না।আমি তাকে ভাবি বলে বলে ডাকি। ভাইয়ার এত বেশি প্রশংসা করি সে এখন মনে মনে নিজেকে ভাইয়ার বউ ভাবে। তার বাড়িও আমাদেরই গ্রামে।”
প্রান্তিক বলল, “সমস্যা কী? তোর যদি অনেক পছন্দ হয় তাহলে শ্রাবণের সাথে বিয়ে দিয়ে এ বাড়িতে রেখে দিব।”
শ্রাবণ সাথে সাথে শুকনো কাশি দিল।প্রিয়তা আর শ্রাবণ দু’জন দু’জনের দিকে তাকাল। কী বাজে অনুভূতি তাদের হচ্ছে!
————————————————————-
আজ সারাদিন রজনী বাড়িতেই শুয়ে আছে। তার ভীষণ মন খারাপ। যা ঘটেছে তা বাড়িতেও জানাতে পারছে না। জানালে যদি তার লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়। এমনিতেই মেয়েকে প্রচণ্ড ভালোবাসেন। এসব শুনলে আর কলেজেই যেতে দিবেন না। সন্ধ্যা থেকে রজনীর মা আয়েশা বেগম ডেকে চলেছে। বাড়ির সাইডেই একটা বাড়িতে বিয়ে। হলুদসন্ধ্যা হচ্ছে। রজনীদের পাড়া-প্রতিবেশী হয়। তারা বারবার রজনীর খোঁজ করতে আসছে। রজনীর নৃত্য ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান জমেই না । মায়ের ডাকাডাকিতে রজনী উঠল। আয়েশা বেগম মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, “শরীলডা খারাফ তোমার মা?”
রজনী অনিচ্ছাকৃত হেসে বলল, “না মা, ঠিক আছি।”
মেয়ের মুখ দেখে মায়েরা অনেক কিছুই বুঝতে পারে। আয়েশা বেগম বুঝতে পারলেন মেয়ের কিছু একটা হয়েছে। যেহেতু বলতে চাইছে না তাই আর জোর করল না। মানুষের মাঝে গেলে মন ভালো হবে ভেবে জোর করে মেয়েকে পাঠালেন। রজনীর পরনে সাদা শাড়ি, ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপিস্টিক, হাতে লাল চুড়ি, গলা আর কানে হলুদের গহনা। রজনীদের গ্রামটা বেশ উন্নত। এই গ্রামের মানুষ বেশির ভাগই চাকরি করে তাই রীতিনীতি মোটামুটি উন্নত। বিয়েটা গ্রাম্য রীতিতে হলেও কিছুটা শহরের রীতও আছে। কারণ শহর থেকে অনেক মানুষ এসেছে তারা শহরের মতো সেজেছে। হলুদসন্ধ্যার আয়োজন করেছে। রজনী স্টেজের কাছে যেতেই সবাই চিৎকার দিয়ে উঠল। নাচতে হবে বলে বায়না ধরল। রজনীর আজ শরীর মন কোনোটাই ভালো নেই। সে চুপচাপ কনের পাশে বসে মেহেদি লাগানো দেখছে। বড়ো বক্স বাজছে সবাই নাচ-গান করছে।
বিয়ে বাড়িতে আসা কয়েকটা ছেলে রজনীকে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে।মানুষের ভিড়ে বাইক নিয়ে হাজির হলো প্রান্তিক আর শ্রাবণ। রাস্তায় বাইক থামাল।এই গ্রামে কোনো অনুষ্ঠান হলেই প্রান্তিকের কাছে দাওয়াত যায়। এ বাড়ি থেকেও দাওয়াত গিয়েছিল। এ বাড়িটা রজনীদের বাড়ির পাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে।তাই বিয়ের আগের রাতেই এসে হাজির হয়েছে। প্রান্তিকেত মন বলছিল– রজনীকে এখানে পাবে সে। প্রান্তিককে দেখে পরিচিত কয়েকজন কোলাকুলি করল। গ্রামের মানুষের বাড়িতে আসলে সবাই ভীষণ খুশি হয়। প্রান্তিক এক গ্লাস পানি খেলেও সবাই খুশি হয়। সবাই তাকে ঘিরে ধরে গল্প করে।অন্যরকম প্রয়োরিটি দেয় সবাই। কেননা গ্রাম থেকে যারা শহরে যায় ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে সব রকম সাহায্য প্রান্তিক করে থাকে। হসপিটাল, ক্লিনিক, স্কুল-কলেজ, ব্যাংক সব জায়গাই প্রান্তিকের আলাদা একটা খাতির আছে।
রাস্তা থেকে সবার সাথে কথা বলার ফাঁকে প্রান্তিকের দুটো চোখ স্থির হলো রজনীর মুখশ্রীতে। প্রান্তিকের মনে হচ্ছে– যেন ফুটন্ত একটা রজনীগন্ধা সবার মাঝে বসে সুবাস ছড়াচ্ছে। রজনীর পাশে গিয়ে দু’টো ছেলে বসেছে। রজনীর দিকে তাকিয়ে তারা একদমই ফিদা। রজনীও তাদের সাথে কথা বলছে দু-একটা। প্রান্তিকের সমস্ত শরীর কেমন টগবগ করছে। ছেলে দুটোর চোখ উ*পড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে প্রান্তিকের। তার রজনী ফুলের সুবাস সে ছাড়া আর কেউ গ্রহণ করতে পারবে না। প্রান্তিক শ্রাবণকে কানে কানে কিছু একটা বলল। পাঁচ মিনিটের মাঝে একটা বাচ্চা মেয়ে রজনীকে বলল,
“আপনার আম্মু আপনারে একটু বাড়িতে ডাকছে।”
রজনী উঠে বাড়ির দিকে রওনা হলো। সাথে সেই ছোটো মেয়েটাও আছে।
বাড়িতে ঢুকে রজনী দেখল কেউ নেই।রজনীর সাথের মেয়েটা হেসে বলল, “আপা, কাকি আপনারে ডাকে নাই, দুলাভাই ডাকছে। আমারে চকলেট দিয়া কইছে, “তোমার রজনী আপারে কও তার একমাত্র জামাই তারে মিস করছে। আমি তোমার রজনী আপার বর। বাট তোমার আপারে কইয়ো না যে আমি ডাকছি, লজ্জা পাবে।”
আপা দুলাভাই যে কী সুন্দর দেখতে! এক্কেবারে দেবের মতো সুন্দর দেখতে।”
রজনী অবাক হয়ে বলল, “তোর কোন জন্মের দুলাভাই?”
পেছন থেকে পুরুষালী কণ্ঠে ভেসে এলো, “এই জন্মের।”
চলবে….
( প্রিয় পাঠক, আজ বোন অসুস্থ ছিল। এই জন্য লিখতে দেরি হলো। ভালোবাসা নিবেন সবাই। আর পেইজে রিয়াক্ট, কমেন্ট, শেয়ার করে রিচ বাড়াতে সাহায্য করুন। )