#লেখনিতে_আরিশা_জান্নাত_আদ্রা
আফরিদ এগিয়ে এসে মনিরের পিছনে একটা লা’থি দিলো,সাথা অশ্রাব্য গা’লি।
-শা’লা হারামি,সবসময় তুই দেরী করিস।লেট লতিফ কোথাকার।
-আমি কি করবো,অফিসে (বাথরুম) ঢুকেছিলাম,তোরা যে এতবার কল ম্যাসেজ দিয়েছিস আমি কি দেখেছি নাকি?
-তুই আর তোর অফিস দু’টোই ভইরা রাখ,যদি দেরী হইতো দেখতি তোরে কি করতাম।
-এই ইফরিত্বের বা’চ্চা থামবি তোরা,,’সিমরানের কন্ঠে রাগ ঝড়ে পরলো।
-ইফরিত্ব কা’রে কস তুই কি?
‘সিমরান এগিয়ে বললো “আমি কি?
-তুই ইমরান।
–ইফরিত্ব……
-ওই তো ও’রা এসে গেছে,বলেই দ্রুত পদে ছুটলো শুভ।
-এখন কথা বলার সময় নেই,আমার সাথে আয়,’বলেই তাড়া দিলো আরিমা।
‘দূর থেকে মাঠ দেখা যাচ্ছে,প্রচুর ভিড়’ভাট্টা ,তার পাশেই নির্মাণাধীন একটা বিল্ডিং,তারা পা টিপে টিপে বিল্ডিং এ উঠে গেলো।
এখন স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে।
‘ভীড়ের মাঝে ফায়ানকে দেখেই আরিমার বুকটা হুঁ হুঁ করে উঠলো,কি অবস্থা মানুষটার,কপাল থেকে রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে বুকের দিকটা পাঞ্জাবি ভিজে যাচ্ছে,তবুও মানুষটার কোনো হেলদোল নেই,যেনো কিছুই হয়নি।একদম শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে।আশেপাশের লোকজন তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, পাছে না আবার তাদের নেতা সাহেবের উপর কেউ হামলে পরে।
‘আরিমার চোখ গেলো একটা মোটা দেখে লোক হাতে মস্ত বড় লাঠি নিয়ে ফায়ানের দিকে এগোচ্ছে,ঠিক তার পিছন থেকে।কারো সেদিকে খেয়াল নেই,সবাই ঝামেলা কমাতে ব্যাস্ত।
সাত ভেড়ার ছানায় দৃশ্যটা দেখেছে।ফারহা কিছু বলতে পারছে না,এখান থেকে ডাকলে তার ভাই শোনতে পারবে না।সে আতঙ্কে আরিমা’র হাত খাঁমচে ধরলো।দৃষ্টি অসহায়।আরিমা সেদিকে তাকিয়ে নিচের ঠোঁটটা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরলো।যেনো গভীর কিছু ভাবছে সে।
‘পায়ের নিচে একটা পাথর দেখতে পেলো আরিমা,কারো মাথায় লাগলে খুলি বের হতে যথেষ্ট এটা।
পাথর টা তুলে নিলো আরিমা,বাকিরা শুধু তার কান্ড দেখছে।এক চোখ বন্ধ করে লোকটার মাথা বরাবর টার্গেট করলো।
যেই না ফায়ানের মাথায় আঘাত করতে যাবে,তখনই ঢিল’টা ছুড়লো আরিমা,একদম লোকটার মাথায় লেগেছে।
‘হঠাৎ ফায়ান তার পিছনে কারো চিৎকার শোনে ঘুরে দাঁড়ালো,সাথে সাথে তার মুখ থেকে উচ্চারণ হলো”শিট”
ফায়ানের উপরের দিকে তাকানোর সাথে সাথে তারা সেখান থেকে সরে গেলো।
‘আরিমার মুখে তৃপ্তির হাসি।বাকিরা হা করে তাকে দেখছে,এত নিখুঁত টার্গেট কীভাবে করলো ‘ও?তারা তো কখনোই পারবে না।
-কি’রে কীভাবে কি করলি তুই?
‘আরিমা একবার শুভ’র দিকে তাকিয়ে বললো,,
-ক্রিকেট খেলতে খেলতে অভ্যাস হয়ে গেছে,।
-আমরাও তো খেলি,তাই বলে এভাবে তো টার্গেট করা আমাদের জন্য সম্ভব না?
”আরিমা ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকালে তৎক্ষনাৎ চুপ হয়ে যায় শুভ,
-তুই ক্রিকেট পারিস?
– হ্যা পারি।
-এই আমাকেও শিখাবি?
‘বেলার কথায় বিরক্ত হলো বেশ আরিমা।
-শা’লি ওখানে নেতা সাহেব আহত আর তোরা ক্রিকেট নিয়ে পড়ে আছিস?আসলেই ভেড়ার ছানা তোরা।
-এতটুকুতে ভাইয়ার কিচ্ছু হবে না,বাসায় চল সবাই।ভাইয়া নিশ্চয় এখন বাসায় ফিরবে,আমাকে না পেলে আবার কথা শোনাবে।
____________
:একটা তুলি দিয়ে কপালের র’ক্ত মুছছে ফায়ান,তার পাশে নাদিম অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,তার মনে হচ্ছে”ইশশশ সাথে থেকেও ভাইকে রক্ষা করতে পারলাম না।
-নাদিম,
-জ্বি ভাই।
-তুমি আমাকে ভাই বলে সম্বোধন কেনো করো?
‘নাবিল হকচকিয়ে গেলো,,
-ভাই,আপনিই তো স্যার ডাকতে নিষেধ করেছিলেন,’মিনমিন করে বললো নাদিম।
‘ফায়ান হাসলো,একবার নাদিমের দিকে তাকিয়ে বললো,,
-তুমি কি ভাবছো,তাদের সাধ্য কতো যে সৌহার্দ্য ফায়ান খান’কে মা’রতে পারে?
‘নাদিম আশ্চর্য হয়ে জিগ্যেস করলো,,
-মানে?বুঝলাম না ভাই।
‘ফায়ান বাঁকা হেসে উত্তর দিলো,,
-আমি নিজ থেকে না চাইলে কেউ আমার গায়ে ফুলের টুকাও দিতে পারবে না,দ্রুত গাড়ি বের করো।বোনকে মিস করছি।
‘নাদিম হন্তদন্ত হয়ে চলে গেলো সে জানেনা ফায়ানের মাথায় আসলে কি চলছে।
_________
‘রায়হান শেখের অবস্থা সে খুশীতে নৃত্য করবার উপক্রম, তার চির’শত্রু ‘কে সে আঘাত করতে পেরেছে,যখন পার্সেল খুলে লাশের অবস্থা দেখেছিলো তখনই মিনি হার্ট অ্যাটাক করে ফেলেছিলো রায়হান শেখ,কতো বড় স্পর্ধা ফায়ানের।
-বাবা এত লাফিয়ো না,আমার ব্যাপার’টা সুবিধের ঠেকছে না,নিশ্চয় এতে কোনো প্যাঁচ রেখেছে ফায়ান খান।
‘বরাবরের মতো ছেলের কথাকে প্রাধান্য দিলেন না তিনি,নাক মুখ কুঁচকে সেখান থেকে সরে এলেন,আজ সে সারারাত ফুর্তি করবে,তার শত্রুকে যে আঘাত করতে পেরেছেন উনি।
‘ছেলে রাজ বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,,
-এই প্রতিবন্ধী কীভাবে নির্বাচন করে এটাই তার মাথায় ঢুকে না।
_________
‘আয়া’ দিয়ে সে’ভ করে নাম্বারে ডায়াল করলো আরিমা,তার মনটা হঠাৎ ছটফট করছে।রিসিভ হতেই ওপাশ থেকে নারী কন্ঠে কেউ বললো,,
-আসসালামু আলাইকুম ম্যাম……
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।কি খবর রাহা,সব ঠিক আছে?
-জ্বি ম্যাম সব ঠিক’ঠাক।
-কি করছে এখন?
-ঘুমোচ্ছে ম্যাম,দিন দিন দুষ্টু হয়ে যাচ্ছে,সামলাতে হিমশিম খাই।
‘আরিমা হালকা হেসে বললো,
-অভ্যাস করে নাও,কাজে দিবে।
‘রাহা লাজুক হেসে বললো,,
-জ্বি ম্যাম,আপনি কবে আসবেন?
-শীঘ্রই,’ওর খেয়াল রেখো।’বলেই খট করে কল কেটে দিলো আরিমা।
‘তখনই আবার কল বেজে উঠলো,নাম্বার টা দেখেই তার মনে কিছুটা ভয় কাজ করছে,কি জবাব দিবে সে লোকটার কাছে?
***
‘রায়হান শেখ গুটি সাজাচ্ছে,কীভাবে ফায়ানের দুর্বল পয়েন্টে আ’ঘাত হানা যায়,তার জন্য মেইন টার্গেট ফায়ান খানের বোন।
তাকে যে করেই হোক বাড়ি থেকে কিছুটা দুরত্বে আনতে হবে,যেনো সাথে ফায়ান না থাকে।
‘কীভাবে কাজ’টা করবে কীভাবে?
হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধির বাতি টা জ্বলে উঠলো।বিড়বিড় করে বললো,,,
-সৌহার্দ্য ফায়ান খান,,নিজের প্রিয় জিনিস’টা হারাতে প্রস্তুত থাকো।ভাইকে ছিনিয়ে নিয়েছিলাম।এবার বোনকেও ওপারের টিকিট হাতে ধরিয়ে দিবো।
***
-আজকে ভার্সিটি যাবো না,,
‘ফারহার এহেন কথায় সবাই একসাথে চিল্লিয়ে উঠলো,
-কেনো?
-আরে ভেড়ার দল আস্তে আস্তে।
-কিন্তু কেন যাবি না?
-ভাইয়ার থেকে অনুমতি নিতে হবে রে।
‘আরিমা বললো,,
-কিন্তু কেন?কি হয়েছে বলবি তো।
-দোস্ত,এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটা মেলা বসেছে।চল না যায়,’ফারহার কন্ঠে ঝড়ে পরছে উৎকন্ঠা।
‘সবাই হৈহৈ করে উঠলো।
-কিন্তু তোর ভাই কি যেতে দিবে তোকে?
-সেটাই তো।
-আমি রাজী করাবো চল।
‘ফারহা চোখ দুটো বড় বড় করে বললো,,
-আরু তুই?কীভাবে?ভাইয়া তোর কথা শোনবে?
-বউয়ের কথা না শোনলে পাশের বাসার ভাবির কথা শোনবে?
চলবে,,,,
(ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আর সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করবেন)