#লেখনিতে_আরিশা_জান্নাত_আদ্রা
‘কই গেলেন নি’ঠুর নেতা ‘রে..
‘হায় কোন দূরে….
‘আপনার নেত্রী খোঁজে আপনারে…
‘ভার্সিটির প্রাঙ্গণে…
‘ডানে’তে বামে’তে…
‘উপ্রে নিচে খুঁইজা ম’রি দেখা দেন না আমারে…
‘আপনার নেত্রী খোঁজে আপনারে….
‘ক….
-থামবি তুই?কখন থেকে প্যাঁ প্যাঁ করছিস,যখন পার্টিসিপ্যান্ট করার কথা বলেছিলাম তখন তো তোমার দেখাও মে’লেনি।এখন পক’পক করছো কেনো?
‘ফারহা’র মুখে রাগ ঝড়ে পড়লো।
-উফফ জান্স,কাবাব ম্যা হা’ড্ডি হচ্ছিস কেনো?তোর ভাইকে খুঁজছি আমি।
-ভাইয়া অনেক আগেই চলে গেছে।
‘আরিমার পা জোড়া থেমে গেলো,তার নেতা সাহেব চলে গেছে আর সে শেষ দেখা’টাও দেখতে পেলো না?
-এসব কথা বাদ দে,আগামীকালে’র গরম নিউজ সম্পর্কে ভাব।হঠাৎ রায়হান শেখ’কে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেলো কেনো?
-এটা তোর মোটা মাথায় ঢুকবে না।কাল সকালেই বুঝতে পারবি।বাড়ি গিয়ে টিভি অন কর যা।
-তুই কোথায় যাবি?
‘আফরিদের প্রশ্নে আরিমা বোকা বোকা চোখে তাকালো তার দিকে।
-এভাবে দেখছিস কেন?
-আমার বাসা ছাড়া আমি আর কই যাবো?
-কেনো কোথাও যেতে চাস নাকি?
-হ্যাঁ।
-কোথায়,জামা-কাপড় প্যাক করবো?
-ভেড়ার দল,আমি আমার নেতা সাহেবের মনে যাবো।
***
‘ফায়ান বেলকনিতে এসে ফোনে কথা বলছে,গভীর মনোযোগ তার ফোনে।মনে হচ্ছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চিন্তিত।
নাদিম কিছু দূর দাঁড়িয়ে নখ কাঁটছে দাঁত দিয়ে।
সে নিজেও রায়হান শেখ’কে নিয়ে চিন্তিত।
-কি ব্যাপার নাদিম,তোমাকে টে’ন্স লাগছে যে?
-না মানে ভাই,রা..
-রায়হান শেখ’কে নিয়ে চিন্তা করছো?
-ভাই সে তো ছাড়া পেয়ে গেছে।
-তো?
‘ঠোঁট দুটো গোল করে আওড়ালো ফায়ান।
-ভাই যদি উল্টা-পাল্টা…
-নাদিম একটু কষ্ট করে দেখে আসবে,রায়হানের জামিন কে করে দিয়েছে।আপাতত অফ যাও।
‘ফায়ানের রাশ’ভারী কন্ঠের কথায় খানিকটা স্বস্তি পেলো নাদিম।
-আচ্ছা নাদিম তোমার ছোট ভাই আছে না একটা?তার খবর কি?
-জ্বি ভাই,ফারহা ম্যামের সাথে একই ভার্সিটি তে পড়ে।
-নাম?
-আফরিদ হাওলাদার…..
***
‘সাবেক এমপি রায়হান শেখ কে পুলিশ কাল রাতে ভার্সিটি প্রাঙ্গণ থেকে এ্যারেস্ট করেছে,এর কারণ হিসেবে গোপন সুত্রে জানা যায়,তিনি সৌহার্দ্য ফায়ান খানের একমাত্র বোন’কে কিডন্যাপ করিয়েছিলেন।আর তার আগের দিন তিনি এমপি’র উপরও হামলা করেছিলেন।কিন্তু এতকিছু’র পরেও তার জামিন হলো কীভাবে? কে জামিন করালো রায়হান শেখ’কে?প্রশ্ন আম জনতা’র কাছে থেকেই যায়।
তাছাড়া দেশের লোকজন এবং উপরমহ’লের কর্মী’রাও রায়হান শে’খের প্রতি অসন্তুষ্ট।
রায়হান শেখ কি পরবর্তীতে নমিনেশন পাবে?একটা বড় প্রশ্ন রয়েই যায়।।
‘আরিমা টিভি অফ করে গোল হয়ে বসলো,আসলেই তো,রায়হান শেখ কীভাবে ছাড়া পেলো?
***
‘নাদিম হা করে দরজা’র সামনে দাঁড়িয়ে আছে,মেইন ডোর মাড়ানোর সাহস ধরছে না,এখন ফেরত যেতেও পারছে না,পাছে না ভাই তার মাথা কে’টে দেয়।সে নিজেকে তটস্থ করে নিলো।
ছোট ছোট কদমে ভিতরে প্রবেশ করলো,যেখানে ফারহা অট্টহাসি’তে ফেটে পরছে।তার দৃষ্টি ফোনে।কারো সাথে ভিডিও কনফারেন্স এ্যাটেন্ড করছে।
বাড়ির আব-হাওয়া’ও গরম,সবাই হ্যাংলা’র মতো ফারহা’কে দেখছে।
‘এমতাবস্হায় নাদিম কীভাবে জানাবে কথা টা?তবুও সে হালকা কে’শে বুলি আওড়ালো,,
-ম্যাম..
‘ফারহা’র হেলদোল নেই,নাদিম আবার ডাকলো,তবুও ফারহা তার মতোই ফোনে মনযোগী হয়ে আছে।
নাদিম এবার জোরেই ডাকলো,,
-ম্যাম..আপনাকে ভাই আমার সাথে যেতে বলেছে,,’কথা’টা শেষ করেই নাদিম হাপাতে লাগলো,নারী’জাতী এতো জোরে জোরে কথা বলে কীভাবে? তার তো এতটুকুতেই দম বেরিয়ে যাচ্ছিলো।
‘ফারহা হা করে নাদিম’কে দেখছে,কিয়ৎক্ষণ পরেই সে জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
নাদিম ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো ফারহার হাসি দেখে।
‘হাসির জন্য ফারহা কথা বলতে পারছে না,বাড়ির লোকজন ভাবছে ফারহা’কে ভূতে ধরলো কি’না।
***
‘শেখ’ভীলার আবহাওয়া পুরোই গরম।আক্রোশে ফেটে পড়ছে রায়হান শেখ,তা দেখে রাজ কিটকিটিয়ে হাসছে।ছেলের দিকে তাকাতেই তার হার্ট আবার ধুক’পুক করছে।
-রিপা,তোমার ছেলে’কে আমার সামনে থেকে বিদায় করো,ছা’গলটাকে সরাওআমার সামনে থেকে।নয়তো আমি আজ হার্ট অ্যাটাক করে মা’রা যাবো।
-আহহ,বাবা তুমি তো পারো শুধু আমার সাথে,ফায়ান খা’নের টিকিটি’ও নড়াতে পারলে না?পুরো একদিন তোমায় জে’লে রেখেছে।তার প্রতিশ্রুতি সে রেখেছে।দেখেছো দিন শেষে আবার গোপন ভাবে ছাড়িয়েও এনেছে।হাহ্।
‘রায়হান শেখ কট’মট দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রা’জের দিকে।রাজ সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের মনে ছক কষছে।কীভাবে ফায়ান খান’কে ট্র্যাপে ফেলা যায়।
হঠাৎ কারো মুখশ্রী রাজের মনের কোণে উঁকি দিতেই রহস্যময় হাসি দিলো রাজ।
-সৌহার্দ্য ফায়ান খান,এবার কোথায় লুকিয়ে রাখবেন আপনি আপনার রত্ন’কে?রাজ শেখের নজর যে পড়ে গেছে।
***
-খাচ্ছিস না কেন?নে খা,’বলেই ফারহার দিকে কয়েকটা চকলেট বক্স এগিয়ে দিলো ফায়ান।
‘ফারহা চুপচাপ একটা চকলেটের কাগজ ছিঁড়ে খেতে লাগলো,তা দেখে ফায়ান হালকা হাসলো।
-ভাইয়ের উপর রা’গ হয়েছে?
‘ফারহা একবার ফায়ানের দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
-আচ্ছা,কি করলে রা’গ কমবে?
-তুমি বড্ড অন্যায় করে ফেলেছো!
‘ফায়ান ভয়ের অভিনয় করে বলল,,
-কি অন্যায় করে ফেলেছি আমি?
-আরু’র সাথে বাজে ব্যাবহার করেছো।অসুস্থ অবস্থায় থা’প্পড় মেরেছো।তাও সবার সামনে।ওর কতো’ কষ্ট হয়েছে জানো?
‘ফায়ান ঘাড় নাড়াতে নাড়াতে বললো,,
-তুই যেহেতু বলেছিস তাহলে তো বহুত কষ্ট পেয়েছে।তা এখন কি করা উচিত আমার?
-সরি বলবা ওকে?
-ভাইয়ের চেয়ে বাহিরের মেয়েটা বড় তোর কাছে?
‘ফারহা অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো।
-আচ্ছা আচ্ছা আমি বুঝেছি।
‘তখনই ফায়ানের কল এলো,কিছুক্ষণ পরেই ফোন’টা পকেটে ঢুকিয়ে ফারহা’র হাত ধরে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।
ফারহা শুধু ড্যাব’ড্যাব করে তার বড় ভাইয়ের পিঠের পানে তাকিয়ে আছে।আবার নতুন কোনো বিপদ হলো নাকি?
চলবে,,,,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আর গঠনমূলক কমেন্ট করবেন প্লিজ)