নূপুর…
সোনার নূপুর পরাতে চেয়ে
যে যুবক নিখোঁজ হয়েছে
প্রায় কুড়ি বছর আগে-
তাকে আজ আর মনে পড়ে না।
তার লম্বা চুল, আগ্নেয়গিরি চোখ,
রিচার্ড মার্ক্সের “হ্যাযার্ড” গান-
আটরশি পীরের মাজার-
হারিয়ে গেছে সব!
কখনো কোন কুয়াশা ঢাকা ভোরে,
খালি পায়ে দুর্বাঘাসের কার্পেটে পা রাখলেও
কই, সোনার নূপুর পরানোর কথা তো
মনে আসে না আর?
বছর দশক আগে মাঝবয়সী এক সুদর্শন
হঠাৎ আমার পা দেখে বলেছিল-
“একদিন সমস্ত পাহাড় কিনে এনে
কুর্নিশ করাবো ঐ চরণে!”
তারপর দেখেছি কতো কতো পর্বত-
অন্নপূর্ণা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, ফুজিয়ামা, পোপোকাতেপেতেল-
মাথা নত করে নি কেউ!
উদ্ধত ভঙ্গিতে চোখ রাঙিয়েছে বরং!
সুদর্শন সে প্রেমিকের কেনা হয় নি কোন পাহাড়-
নূপুর বানানো হয় নি তাই
সুকোমল সুন্দর পায়ের জন্য!
গেল বছর কথা দিয়েছিল এক পার্সী পুরুষ-
রুবি আর পান্না খচিত নূপুরে
নক্ষত্রের মতো জ্বলে উঠবে আলতা রাঙা পা!
রিনিক ঝিনিক বেজে উঠবে প্রতিটা পদধ্বণি!
পায়ের পাতায় চুমু দেবে অস্তমিত সূর্য
আর চাঁদ ভাসিয়ে দেবে দেবদ্যুতিতে!
কিন্তু হায়-
জহরতে এখনো ভরে আছে
পার্সী সেই যাযাবরের বাহন,
মূল্যবান হীরা আর নীলা পাথরে
এখনো সাজানো তার কাঁচের বাসর-
শুধু ভুলে গেছে কখনো কাওকে কথা দেয়া ছিল
এক পায়ে একটি নূপুর পরানোর!
আমার নূপুর পরা হয় নি,
শেকলে বাঁধা হয় নি কারও ভুলো মন!
বরং আমি খোলা রেখেছি ফিরে যাবার পথ!
স্বাধীন করেছি পারিযায়ী সব আবেগ-
আমি ওয়াদা ভেঙেছি
প্রেমিকের প্রতারণার পরিমাণ গণনা করতে!
আমি নূপুর পরি নি আজও!
শেকলে বাঁধা নয় তাই আমার গন্তব্য!
শাহনাজ রানু
.