চারজন টুপ করে ছাপড়া ঘরগুলির মধ্যে ঢুকে পড়লো। আমি আমার বারান্দায় দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। পনেরো ষোল বছরের দুটি ছেলে আর দুটি মেয়ে আমার বাসার উল্টা দিকের ফাঁকা প্লটে গড়ে উঠা বস্তির মধ্যে কেন ঢুকলো! দূর থেকে ওদের পোষাক পরিচ্ছদ দেখে তো ভদ্র ঘরের ছেলে মেয়েই মনে হচ্ছে।
ছাপড়া ঘরগুলির মাঝখানে একটু উঠানের মত জায়গায়। ওখানে দুটি লোক চারটা প্লাস্টিকের চেয়ার দিলো। ছেলেমেয়েগুলি চেয়ারে বসে সিগারেট ধরালো। চারজন মনের সুখে সিগারেটের ধুয়া ছাড়ছে।
আসিফ এসে আমার পাশে দাঁড়ালো।
— এত মনোযোগ দিয়ে কি দেখছো এশা?
আমি ঐ ছেলেমেয়েগুলিকে দেখালাম। কৌতুহল ধরে রাখতে না পেরে আসিফকে জিজ্ঞাসা করলাম,
— আজকাল রাস্তাঘাটে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে সব জায়গায় দেখি অল্প বয়সী ছেলেদের সাথে মেয়েরাও পাল্লা দিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। কিন্তু এরা রাস্তায় না খেয়ে বস্তির ভিতরে ঢুকলো কেন?
— হয়তো ওদের বাসা এ এলাকায়। রাস্তায় প্রকাশ্যে খেলে ওদের বাসার কেউ দেখে ফেলবে।
— তাই হবে হয়তো।
আমার অবশ্য পুরো বিষয়টা খুব খারাপ লাগছে। একে তো অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা সিগারেট খাচ্ছে তার উপরে বস্তির ভিতরে বসে।
ফাইজা এসে বারান্দায় উঁকি দিলো।
— আম্মু, আমার একটু কিছু খেতে ইচ্ছা করছে।
আমার ইচ্ছা ছিলো ছেলেমেয়েগুলি আর কি কি করে তা দেখার। ফাইজার ডাকে ভিতরে চলে এলাম। মেয়েটা ক্লাশ নাইনে উঠার পর থেকেই খাওয়া নিয়ে খুব বিরক্ত শুরু করছে। নিজেকে শুকনা রাখতে হবে এই হচ্ছে তার জীবনের একমাত্র ধ্যান জ্ঞান। সারাদিন কিছু খাবে না। তারপর যখন মাথা ঘুরবে তখন বলবে,
—- আমাকে কিছু খেতে দাও।
আমি নানা রকম খাবার এগিয়ে দিই। ও তখনো সামান্য কিছু মুখে দিয়েই বলবে,
— আমার কিছুই খেতে ভালো লাগে না।
— কেন ভালো লাগে না?
এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই।
মেয়ে খাওয়ার পরিমাণ একদম কমিয়ে দিলে আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। মেয়েকি কোন কিছু নিয়ে আতঙ্কে আছে কিনা! একদিন মেয়ের পাশে শুয়ে মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে আদর করে দিয়ে বললাম,
— মামণি, আম্মু আব্বু হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে আপজন। সবাই যদি কাউকে ছেড়ে যায় মা বাবা কিন্তু সন্তানকে কখনো ছেড়ে যায় না। এই যেমন ধরো তোমার যদি কখনো কোন খারাপ কিছু ঘটে তখনো মনে রাখবে আমরা তোমার পাশে আছি। আমরা সব সময় তোমাকেই সাপোর্ট করবো।
ফাইজা ঠান্ডা গলায় বললো,
— কি খারাপ কিছু?
— আল্লাহ্ মাফ করুন কত কিছুইতো হতে পারে। কত মেয়ের কথা শুনি তাদের খারাপ ছবি ফেসবুকে চলে যায়। এরকম আর কি! সবসময় সাবধান থাকা ভালো।
কথা এখানেই শেষ হলো কারণ ফাইজা আমার হাতটা সরিয়ে দিয়ে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো। দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ল্যাপটপের সামনে বসলো। আমি যেয়ে দরজা খুলে দিলাম। ও বললো,
— পর্দাটা টেনে দাও।
— পর্দা টানতে হবে কেন? বাসায়তো আমরা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই।
— আমার প্রাইভেসির জন্য লাগবে।
— আমার কাছে তোমার কিসের প্রাইভেসি?
— আম্মু, তুমিতো ভাবছো আমার ন্যুড ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তোমার ভাবনা তো আমি বদলাতে পারবো না। তাই আমি আর তোমার সাথে কথা বলতে চাই না।
আমি একেবারে ‘থ’ হয়ে গেলাম। মেয়ে এত রিএকশ্যান দেখাবে আমি ভাবতেও পারিনি। এত সেনসেটিভ মেয়েকে নিয়ে আমার চিন্তার শেষ নেই।
ফাইজার স্কুল বাসা থেকে মাত্র দশ মিনিটের হাঁটা পথ। স্কুল ছুটি হলে ও একাই হেঁটে চলে আসে। আজ একটু কেনাকাটা করতে বের হয়েছিলাম। কেনাকাটা শেষ করে স্কুলের সামনে গেলাম। উদ্দেশ্য ভাবীদের সাথে একটু গল্প করবো তারপরে মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফিরবো। ফাইজার ক্লাসের বান্ধবীর আম্মুরা সব একসাথে বসে গল্প করছে। আমাকে দেখে সবাই খুব খুশী হলো।
— কেমন আছেন এশা ভাবী? অনেক দিন পরে দেখা হলো।
— জ্বি ভালো আছি। আপনারা সবাই কেমন আছেন?
কুশল বিনিময়ের পরে মেয়েদের নিয়ে আলাপ শুরু হলো। মেয়েদের নিয়ে সব মায়েদের সমস্যাগুলি একই রকম। সবগুলি মেয়েই বাসায় একই রকম সমস্যা করে। যেমন সারাক্ষণ ল্যাপটপ বা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চায়, ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখবে, ঠিকমতো কথার জবাব দিবে না, ঠিকমত পড়তে চায় না, বাসার খাবার একেবারেই খেতে চায়না, ফুডপান্ডায় খাবার অর্ডার করতে চায় ইত্যাদি।
নিশুর আম্মু আক্ষেপ করে বললো,
— আমরাওতো ঐ বয়স পাড় করেছি। আমরা কি বাবা মাকে এতো জ্বালিয়েছি?
উর্বশীর আম্মু জবাব দিলো,
— ভাবী, আমরাও জ্বালিয়েছি। আমাদের আম্মারাও কিন্তু বলতেন, আমরা তোদের মতো আমাদের মা-বাবাকে এত জ্বালাই নাই।
আশফিয়ার আম্মু বললো,
— যুগের সাথে সাথে সমস্যাগুলিও জটিল হচ্ছে। আমিতো সারাক্ষণ দোয়া করি আমার মেয়েটা তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাক, বুঝতে শিখুক।
নীতু, রিতু আর প্রীতির আম্মু বললো,
— ভাবী, তাহলে আমার কথা ভাবেন। আপনার একজন আর আমার টিন এজের তিন কন্যা। আমার জীবনের সব সময়টাই আমি ওদের পিছনে ব্যয় করছি। আমিও ভাবি, কবে যে আমার মেয়েগুলি বুঝতে শিখবে।
স্কুলে ছুটির ঘন্টা বাজছে। দারোয়ান গেট খুলে দিলো। আমি লক্ষ্য করলাম কয়েকদিন আগে আমার বাসার সামনের বস্তিতে আরো দুটি ছেলের সাথে বসে যে মেয়ে দুটি সিগারেট খাচ্ছিলো ওরা গেট দিয়ে বের হচ্ছে। আমার পাশে বসা শীথির আম্মুকে হাত দিয়ে ইশারা করে মেয়ে দুটিকে দেখিয়ে বললাম,
— ওদেরকে চিনেন?
— না ভাবী। কেন? কিছু হয়েছে?
— না, তেমন কিছু হয়নি।
ফাইজা বের হয়ে আমাকে দেখে খুবই অখুশী।
— তুমি কেন এসেছো? আমি তো একাই যেতে পারি।
— টুকিটাকি জিনিস কেনাকাটা করলাম। তাই ভাবলাম তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাই।
মেয়ে মুখ কালো করে মায়ের সঙ্গে বাসায় ফিরলো।
মাসখানিক পরে আমি ফাইজার অপেক্ষায় বাসায় বসে আছি কিন্তু ফাইজার দেখা নেই। স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষণ হয়েছে। ভীষণ টেনশন হচ্ছে। আমি আর অপেক্ষা করতে না পেরে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে ফাইজার স্কুলে রওয়ানা দিলাম। স্কুলের গেটে যেয়ে দেখি চারিদিকে মোটামুটি ফাঁকা হয়ে গেছে। আমি গেটম্যানকে যেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ফাইজার কথা। পুরনো গেটম্যান ওদের সবাইকে চিনে।
— ম্যাডাম, ফাইজা আপু আর ত্রপা আপু একসাথে অনেকক্ষণ আগেই বের হয়ে গেছে।
আমি ত্রপার আম্মুকে ফোন দিলাম। ত্রপার আম্মু বললো,
— ভাবী, ত্রপার আজকে স্কুলের পরে কি একটা ইভেন্ট আছে। তাই ও এক ঘন্টা পরে গাড়ী পাঠাতে বলেছে।
— ইভেন্টটা কোথায় ভাবী?
— তাতো বলেনি। মনে হয় স্কুলেই। কেন ভাবী?
— না এমনি। ফাইজাও মনে হয় ওর সাথে আছে।
আমার চোখ ফেটে কান্না আসছে। স্কুলের সামনের খাবার দোকানগুলিতে ওদের খুঁজতে লাগলাম। স্কুল থেকে কিছুটা দূরে একটা ফাস্ট ফুডের দোকানে আমি ওদের দেখতে পেলাম। ফাইজা এবং ত্রপা চার/পাঁচটা ছেলের সাথে খুব হেসে হেসে গল্প করছে। ঐ ছেলেগুলিও স্কুল ড্রেস পরা ।দোকানের সামনে একটা পাজেরো জীপ রাখা।
ওদের থেকে একটু দূরে অপেক্ষা করতে থাকলাম। একটু পরে পাজেরো জীপে করে ছেলেগুলি চলে গেলো। ফাইজা এবং ত্রপাও বের হয়ে এলো। ফাইজা বাসার দিকে হাঁটা ধরলো। ওরা আমাকে দেখেনি। বেশকিছুটা যাওয়ার পরে ওকে পিছন থেকে ডাক দিলাম। ও ঘুরে তাকিয়ে আমাকে দেখে বললো,
— আম্মু, সরি তোমাকে বলে আসতে ভুলে গিয়েছিলাম। আজকে ত্রপা আমাদের ট্রিট দিয়েছে।
আমি কিছুই দেখিনি এমন ভাবে বললাম,
— কেন ট্রিট দিয়েছে?
— ওর কয়েকটা নতুন ছেলে বন্ধু হয়েছে। ওরা আজ এসেছিলো। আমাকেও ত্রপা ইনভাইট করেছিলো।
— আমাকে না বলে তোমার এত দেরী করা কি ঠিক হয়েছে?
— না আম্মু ঠিক হয়নি। এজন্যই তো সরি বললাম।
আমি এ প্রসঙ্গে আর কথা বাড়ালাম না। আমার মনটা খুব খারাপ লাগছে।
রাতে দেখি ফাইজা ত্রপার সঙ্গে বেশ অনেকক্ষণ ফোনে কথা বলছে। আমার বিরক্তি সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে শান্ত্বভাবে বললাম,
— এত লম্বা সময় কি নিয়ে কথা বললে?
স্কুলের পরে দীর্ঘ সময় না বলে বাইরে থাকাতে হয়তো ফাইজার মধ্যে কিছুটা অপরাধবোধ সৃষ্টি হয়েছে। অন্য সময় হলে বান্ধবীর সাথে আলাপের কিছুই আমাকে বলতো না। এখন বললো,
— আম্মু, ত্রপার বন্ধু ওকে একটা অফ সোলডার ড্রেস গিফট করেছে। ও ওটা আমাকে ভিডিও কলে দেখালো।
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম,
— বন্ধু অফ সোলডার ড্রেস দিয়েছে? কেমন বন্ধু?
— ত্রপা এখন ওর সাথে রিলেশনে আছে। ঐ ছেলেটাই আজকে ওর তিনটা বন্ধু নিয়ে এসেছিলো। ত্রপা আমাকে ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
আমি খুব ঠান্ডা গলায় বললাম,
— এই কাজটা যে একটা খারাপ কাজ হয়েছে তুমি কি এটা বুঝতে পারছো? তোমার আব্বু শুনলে কি করবেন সেটা ভাবতে পারছো?
— আম্মু, আমি জানতাম না ওর বন্ধুর সাথে এতজন ছেলে আসবে। আমি ভেবেছিলাম শুধু ওর বন্ধু আসবে, ত্রপা আমাকে পরিচয় করিয়ে দিবে। তারপর আমরা আইসক্রীম খেয়ে বাসায় চলে যাবো। এতো বেশী সময় দেরী হবে না। কিন্তু পরে দেখি অনেকজন এসেছে আর ওরা দূরে একটা শপে বসেছে।
— তাহলে তুমি কি বুঝতে পারছো এভাবে তোমাকে ডেকে নিয়ে যে কেউ তোমাকে একটা বিপদে ফেলতে পারে? তুমিতো যাওয়ার আগে বুঝবেও না ওদের কি প্লান।
ফাইজা চুপ করে মাথা নীচু করে রইলো।
সামনে ফাইজার জন্মদিন। আমরা ওকে নিয়ে একটা ড্রেস কেনার জন্য গেলাম। ইন্টারনেট দেখে কি একটা দোকানের ঠিকানা ফাইজাই খুঁজে বের করলো। ঐ দোকানে যেয়ে দোকানির কাছে ও বললো,
— ক্রপ টপস দেখান।
এ টপসটা কেমন আমি বুঝতে পারিনি। দোকানি টপসটা বের করার পরে বুঝলাম এর বিশেষত্ব হচ্ছে এটা পরলে নাভি বের হয়ে থাকবে। আমি বললাম,
— অন্য ড্রেস দেখো।
— আমি অন্যকোন ড্রেস নিবো না।
— এসব কোনো ড্রেস হলো? আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগছে না।
দোকানদার মনে হয় আমার কথায় খুব মজা পেলো। সবগুলি দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বললো,
— আন্টি, এগুলি লেটেস্ট ড্রেস। এগুলিই এখন সবচেয়ে বেশী চলে।
তারপর ফাইজার দিকে তাকিয়ে বললো,
— আপুদের মত মেয়েরা সবাই এখন এসব টপসই কিনে।
আমার ভীষণ বিরক্ত লাগছিলো। আমি বললাম,
— ঠিক আছে আমরা আর একটু দেখে আসি।
এ কথা বলে আমি দোকানের বাইরে চলে আসলাম। আমি আর ওর আব্বু ফাইজাকে একটু বোঝাতে চেষ্টা করলাম। মেয়ের এক কথা এই টপস না কিনে দিলে জন্মদিনে কোন ড্রেসই কিনবে না। ওর আব্বু আর আমি অনেকটা বাধ্য হয়ে ওকে এটা কিনে দিলাম।
ফাইজার জন্মদিনের সময় ওদের পরীক্ষা থাকাতে কোন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই ওর ঐ টপসটা এখনো পরা হয়নি।
পরীক্ষার কয়েকদিন পরে একদিন এসে বললো ওরা সবাই আগামী শুক্রবার ওদের বান্ধবী রশ্মির বাসায় লেট নাইট পার্টি করবে। পার্টি হবে ওদের ছাদে। সেখানে রশ্মির কিছু ছেলে বন্ধুও আসবে। রশ্মি যে ছেলের সাথে রিলেশনে ছিলো সে সম্প্রতি ওকে বাদ দিয়ে অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন করছে তাই ওর মন খুব খারাপ। রশ্মির মন ভালো করার জন্য লেট নাইট বারবিকিউ পার্টি করবে। ঐ অনুষ্ঠানে মেয়েরা সবাই ক্রপ টপস আর জিনস্ পরবে। আমি একেবারেই রাজী না। মেয়ে মন খারাপ করবে এটা ভেবে অনুষ্ঠানে যেতে দিতে রাজী হলাম তবে ড্রেসের ব্যাপারে বললাম,
— তুমি অন্য কোন ড্রেস পরে যাবে।
— সব মেয়েরা জিনসের সাথে ক্রপ টপস পরবে। আমি কেন অন্য ড্রেস পরবো?
— ঐ ড্রেস পরে তুমি ঐ পার্টিতে যেতে পারবে না।
মেয়ে রাগ করে আমার সাথে কথা বন্ধ করে দিলো। আমিও জিদ ধরলাম। ওর রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করলাম না।
এর দুদিন পরেই নিতুর আম্মু আমাকে ফোন করলো,
— ভাবী, আজকের পেপার দেখেছেন? নিতুদের স্কুলের একটা মেয়ের কি জঘন্য ঘটনা দেখেন। ঘটনাটা মনে হচ্ছে আপনার বাসার খুব কাছে কোথাও ঘটেছে।
আমি ফোন রেখে পেপারটা নিয়ে বসলাম। আমি পেপারে মেয়েটার ছবি দেখে আঁতকে উঠলাম। ঐ দুটি মেয়ের একটি। আমার বাসার সামনের ঐ ছাপড়া ঘরের বস্তি থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। মেয়েটা হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে। মেয়েটা গ্যাং রেপের শিকার হয়েছে।
আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না। আমি ডুকরে কেঁদে উঠলাম। আমার নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেন আমি ঐ মেয়েদের মা বাবাকে খুঁজে বের করলাম না, কেন তাদের জানালাম না যে আপনাদের মেয়েরা বস্তিতে বসে সিগারেট খায়।
আমি কাঁদছি আর কাঁদছি। আমার এই কান্নার কোন সান্ত্বনা নেই।
*****
গল্পের নামঃ অবক্ষয়
লেখনিতেঃ কাজী তাসমীন আরা আজমিরী
বনানী, ঢাকা।
ভালো লাগলে অবশ্যই আমার বাকি গল্পগুলো পড়বেন।
আপনারাই আমার লেখার অনুপ্রেরণা