- মিষ্টি মেয়ের প্রেমের গল্প
- বিয়ের পর মিষ্টি প্রেমের গল্প
- দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প
- রোমান্টিক প্রেমের গল্প
- সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প
1.মিষ্টি মেয়ের প্রেমের গল্প
আমার জামাই যে আমাকে ভালোবাসেনা এটা আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম। আমাকে পাত্তাই দেয়না।যতবার বুঝতে চেয়েছি ভালোবাসে কিনা ততবার এমন কিছু বলেছে যে দুঃখে কয়েকদিন কথা বলিনি। এতে তার কোনো মাথাব্যথাও দেখিনি।
গত পরশু আমি সাকিবকে বললাম,
– সাকিব মনে করো একটা নৌকায় আমি আর তোমার অফিসের বস। নৌকাটা ডুবে যাচ্ছে ।তুমি তাহলে আগে কাকে বাঁচাবে?
– কাউকেই না।
– মানেহ?
– প্রথমত আমি সাঁতার জানিনা আর দ্বিতীয়ত তুমি আমাকে রেখে আমার বসের সাথে নৌকায় কি করো ? তোমাদের মরে যাওয়াই উচিত।
কথাটা শুনে বিশাল হতাশ হয়ে গেলাম। আমি বুঝাতে চাইলাম বস আর আমার ভেতর কে বেশি প্রিয় আর কি বুঝলো। হতাশ হয়ে রুমে গিয়ে মুভি দেখা শুরু করলাম। রোমান্টিক মুভি। ফিফটি ফার্স্ট ডেটস। সাকিব খেয়ে ঘুমোতে চলে গেলো আর আমি একা একা মুভিটা দেখলাম ।মুভিটা দেখে একটা বুদ্ধি মাথায় এলো। এই মুভিতে নায়িকার কিছু মনে থাকেনা আর ছেলেটা প্রতিদিন তাকে মনে করায় আর এভাবে বিয়ে বাচ্চা সব হয়। আমি যদি স্মৃতি হারানোর নাটক করি তাহলে কেমন হবে ?
ছেলে মানুষ বিশাল খারাপ। কাউকে পেয়ে গেলে দাম থাকেনা। তাই এখন ভেবেছি একটা শিক্ষা দিবো। দূরে সরে গেলে তখন বুঝবে আমার মর্ম।
পরদিন সকালবেলা উঠে দেখি সাকিব নাই। যারে খেল দেখাবো সেই নাই। পরে মনে পড়লো আরেহ আজ তোহ শুক্রবার ।ও বাজারে হয়তোবা ।
ও বাজার থেকে আসবার পর আমি আমার নাটক শুরু করলাম।
– এই কে আপনি ? এখানে কি করেন ? কি চাই আপনার ?
– সাত সকালে কি শুরু করলা ? এই ধরো বাজার। আজকে গরুর মাংস রান্না করো।
বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে ব্যাক্কল বনে গেলাম। পাত্তাই দিলোনা। না এভাবে হবেনা। আমি আবারো চেঁচানো শুরু করলাম ,
– কে রান্না করবে ? আরেহ কে আপনি ?আমি আপনাকে চিনি ?আমার কিছু মনে পড়ছে না কেনো ?
সাকিব এবার আমার দিকে সিরিয়াস হয়ে তাকালো। মনে হচ্ছে ও এবার চিন্তায় পড়ে গিয়েছে। হাহাহা এটাই তোহ চাচ্ছিলাম। এবার বুঝবে মজা কাকে বলে। সাকিব কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আমাকে বললো ,
– আরেহ তুমি তোহ কুলসুম। আমাদের বাসায় কাজ করো। আমার বউ বাপের বাড়ি গিয়েছে আর যাবার সময় তোহ বলে গেলো তোমাকে যে রান্না করতে হবে। আরেহ তোমার মনে নাই ?
Arni Shawkat
2. বিয়ের পর মিষ্টি প্রেমের গল্প
গল্পঃওটা_মানে_ওটা।
বাসর রাতে জানতে পারলাম আমার বউ তরীর একটা দোষ আছে। জিনিসের নাম মনে না আসলে “ওটা ” শব্দটা ব্যবহার করে। স্মরণ শক্তি কম হলে, তেমন’টা মানুষের হয়ে থাকে। তার “ওটা” শব্দের জন্য, আমার জীবন ছারখার হওয়ার অবস্থা।
সে আমাকে ফুলসজ্জার রাতে বলল,” শাওন তোমার ওটা খুব সুন্দর!”
আমি চোখ বড় করে রাখলাম। তাকে আমি আবার কখন “ওটা” দেখালাম। মেয়ে দেখছি ভেরি ফ্রাস্ট। চিন্তা করেই, ছবি এঁকে ফেলেছে মনে।
আমি লজ্জা পেয়ে বললাম,” না মানে ইয়ে যতটা সুন্দর ভাবছ, ততটা না। দেখলেই বুঝতে পারবে।”
তরী বলল,” তোমার ওটা তো আমার চোখের সামনেই। খুব ছোট। “
আমি ভয় পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম, প্যান্ট ছিঁড়া কিনা। হাত দিয়ে দেখলাম, না ঠাণ্ডা লাগছেনা। তার মানে প্যান্ট তো ঠিকাছে। কীভাবে বুঝল ছোট? সে কি এরকম আরো দেখেছে?
আমি গরম হয়ে বললাম,” তুমি কীভাবে জানো ওটা ছোট? তুমি কী কয়েক’টা মেপে দেখেছ নাকি?”
এবার সে কান্নাভাব বলল, ” দেখলে সমস্যা কোথায়? ওটাতো সবাই দেখে!”
– কী বলো? সবাই দেখে?
– আমার এক বান্ধবী তমারও ওটা ছিল। আমরা ধরে ধরে দেখতাম।
আমার মাথা চক্কর দিচ্ছে। এই মেয়ে কী বলে! পুরুষ মানুষের ওটা আবার মেয়েদের কীভাবে থাকে? আবার সেটা নাকি ধরে ধরে দেখত। এই আমি কাকে বিয়ে করলাম?
আমি কান্নাভাব নিয়ে বললাম,
– কী বলো? আমি তো বাসর রাতে শহীদ হয়ে যাবো। ওটা কেউ ধরে নাকি?
– আরে, আমি গালের তিলের কথা বলছি।
– গালের তিল? ( আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম)
– না হলে, তুমি কী ভেবেছ!!
– হা হা হা। আমিও না। তুমি বুঝবেনা।
কিন্তু একটু পরে যখন তরী’কে আদর করতে লাগলাম, তখন সে ছাড়িয়ে আমতা আমতা করে বলল,” আমি তো আমার “ওটা” আমার রুমে রেখে এসেছি। এখন কীভাবে হবে!”
আমি তো ভয়ে ঢুক গিলতে থাকলাম। “ওটা” যে কেউ রেখে আসে সেটা আজ জানলাম। এবার কান্না মাখা চোখে জিজ্ঞাসা করলাম,” কি রেখে এসেছ?”
– না মানে ওটা আরকি! যেটা দিয়ে ওটা করে!
আমি কাঁদতে লাগলাম। হায়রে ওটা যে ঘরে কেউ রেখে আসে, সেটা আমি প্রথম জানলাম। তাই চোখ বেয়ে কান্না পড়ছে। বাসর রাতে তো আনা উচিত ছিল।
কিন্তু সে কিছুক্ষণ পরে বলল,” তুমি কাঁদছ কেন? আরে লম্বা ওইটা আর কি?”
আমি তো মাথার চুল ছিঁড়তে থাকলাম। এত গোপন ভিডিও দেখলাম, ওদের সেটা লম্বা কীভাবে হয়?
কিন্তু তরী আমাকে বলল,” ও মনে পড়েছে। আরে! মোবাইলের কথা বলছি।”
কথাটা শুনে আমার বুকে হাত দিয়ে ধরে থাকলাম। বুকে পানি এলো। আরেকটু হলে সংবাদপত্রের হেডলাইন হয়ে যেতাম।
যাক তরী যেটা বাসায় রেখে এসেছে ভেবেছিলাম , সেটা না।
এই মেয়ের “ওটা-সেটা” বলার জন্য আমার জীবন-জিন্দেগী তামা-তামা হয়ে যাচ্ছে। ওইদিন আব্বাকেও বলে বসল,
– আব্বা! আপনার ওটাতো বাঁকা!
আব্বা, ভয়ে চুপসে গেছে। ঢুক গিলছেন। কিন্তু, তরী আবার বলল,
-আপনার ওটা’কে আমার শাশুড়ি আম্মা কীভাবে যে বড় করেছে, সেটা আমি বুঝিনা।
বাবা, দেখছি বুকে হাত দিয়ে আছে। মুখে সাদা ফেনা বের হচ্ছে।
আমি তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে বললাম,
– বাবা! তুমি যেটা ভাবছো , ওইটা সেটা না। এটা অন্য ওটা।
আমি তাড়াতাড়ি তরী’কে বললাম, ” তাড়াতাড়ি নাম’টা বলে দাও, নইলে আব্বা মারা যাবেন!”
তরী আমতা-আমতা করে বলল,” চ” দিয়ে শুরু ওইটা আরকি। আব্বা, এবার মেঝেতে শুয়ে গেছে।
“চ” দিয়ে কি নাম ভেবেছেন, আল্লাহই ভালো জানেন। পা গুলো মৃগীরোগীর মতো বারি দিচ্ছে।
কিন্তু তরী বলল, ছোট “চ” না, বড় “ছ” দিয়ে শুরু।
এবার, আমি বুঝে বললাম,” ছেলে?”
সে বলল, ” হ্যাঁ। আপনার ছেলেটা বড়ই বাঁকা। যেটা বুঝে, সেটা করে। শাশুড়ি আম্মা আপনার ছেলে’কে বড় করেছে কীভাবে! বুঝিনা আমি।”
আব্বা, নিজে নিজে ঠিক হয়ে চলতে শুরু করলেন।
বড় খালুকেও হাসপাতালে পাঠাল, ওটা বলার জন্য।
বড় খালু আসলে, তরী সালাম করে বলল,” খালু! আপনি আমাকে আপনার ওটা দিয়ে দুয়া করেন! যেটা আপনার লম্বা!”
বড় খালা থতমত খেয়ে গেলেন, মনে হচ্ছে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়ে গেছে। হয়ত ভাবছেন, “ওটা”দিয়ে কীভাবে দুয়া করে।
ওমা! উনি দেখি, ওটা দিয়ে দুয়া করার কথা চিন্তা করে, দাঁড়িয়ে হার্ট এটাক করেছেন। সে দাঁড়ানো অবস্থায়, হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। এমনকি দাঁড়ানো অবস্থায়, তাকে স্যালাইন সহ চিকিৎসা দেওয়া হলো।
পরে বুঝলাম, তরী বলেছে ওটা মানে হাতের কথা।
তরী’কে নিয়ে বড্ড বিপদে পড়ে গেলাম। তার রুপ দেখে, কাবিন নামায় ২০ লাখ টাকা লিখিয়ে, এখন তাকে তালাকও দিতে পারছিনা।আবার সইতেও পারছিনা।।
ওইদিন তার কারণে বস্-এরও তালাক হয়ে গেল। বিয়ে উপলক্ষ্যে অফিসের সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। অফিসের বস্ তার বউ নিয়ে আসলেন। আমার বউ’কে দেখে দুষ্টুমি করে বলল,” বাঃ! শাওনের বউ’তো অনেক সুন্দর। অনেক লাকি সে। আমি কেন পেলাম না আফসোস হচ্ছে।”
তখন, তরী লজ্জা করে বলল,” স্যার! আপনার ওটা দেখছি কাঁটা। “
স্যার আর স্যারের বউ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। যেন কোনো কিছুর সাথে মিলে গেছে। স্যারের বউ, তাকে কলার ধরে নিয়ে গেলেন বাসায়। ওটা কাঁটা যে কীভাবে জানল, তরী। নিশ্চয় দেখিয়েছেন স্যার।
পরে শুনি, স্যার’কে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে তালাক দিয়ে দিয়েছেন। স্যারের সে কি কান্না! আমি স্যার’কে দেখতে গিয়ে বললাম, আপনি যেটা ভেবেছেন সেটা না। এটা ঠোঁট কাঁটা থাকার কথা বলেছে। স্যার, দেখি ঘুমিয়ে গেছেন। নিঃশ্বাস চলছেনা।
আমি এবার বাসায় এসে তরী’কে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ওষুধ খেলে তার ওটা ভালো হয় কিনা কে জানে?
ডাক্তার সাহেবের চেম্বারে গেলে, ডাক্তার সাহেব বললেন, “কী সমস্যা মা!”
তরী বলল, ” আমার ওটার সমস্যা। আমি কথায় কথায় ওটা বলি। এতে আমার কি দোষ! ওটা কোনো সমস্যা! স্যার! আপনি কি ওটার চিকিৎসক যে, ওটা ঠিক করে দিবেন? আপনারো তো মাঝে মাঝে ওটা চলে আসে। কিন্তু আপনি তো সময় নিয়ে ওটার কথা বলে দেন!”
ডাক্তার চেম্বারে কাঁত হয়ে আছেন। রোগীর কথা শুনে ডাক্তার নিজেই শেষ । কেউ দেখার আগেই পালিয়ে চলে এলাম।
এভাবে হলে, পুরো এলাকা তরী কবরে ঢুকিয়ে দিবে। তাই জায়গা বিক্রি করে, টাকা জোগাড় করলাম। পরেরদিন, সকাল হলে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। সেদিন ঘরে আমি আর তরী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
হঠাৎ পাশের ফ্ল্যাটে চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখি, বাড়ির মালিক’কে কেউ একজন ছুরি মেরে পালিয়েছে। আমি ছুরি’টা বের করার সময়, তখন সে সময় পুলিশ এলে, আমাকে খুনি ভেবে ধরে নিয়ে গেল। তরী আমাকে চিন্তা করতে নিষেধ করল।
কিছুদিন পর, আদালতে আমি। আমার বিপরীতে সাক্ষী প্রমাণ বিপক্ষে গেল। নিশ্চিত আমি খুনি।
কিন্তু, তখন প্রধান সাক্ষী “তরী” কাঠগড়ায় এলো।
জজ সাহেব বললেন, ” মা! তুমি যা দেখেছ, তা সত্যি বলো!”
বাদী পক্ষের আইনজীবি বললেন,” আপনি কি খুন দেখেছেন?”
তরী বলল,” হ্যাঁ! আমি ছিলাম!”
— তাহলে, সব খুলে বলুন।
— আমি আর শাওন ওটার উপরে শুয়ে ছিলাম। ঘুম আসছিল না, তাই দুজনে ওটা করছিলাম। হঠাৎ কারো চিৎকার। শাওন আমাকে ওটার উপর রেখে, বেরিয়ে যায়। আমিও আস্তে আস্তে দেখি বাড়ির মালিকের পেটে ওটা। মালিকের ওটা নড়তে ছিল। আমার হাজবেন্ড মানে আজিজুল হক শাওন যখন, তার ওটা হাত দিয়ে নিয়ে নিলো, তখন বাড়ির মালিক “আহ” করে মারা গেল। আর তখন আপনারা এলেন। আর শাওন’কে ওটা সহ দেখে, অপরাধী ভাবলেন। আমি জজ সাহেবের ওটার কছম খেয়ে বলছি, আমার হাজবেন্ড নির্দোষ । প্লিজ জজ সাহেব, আপনার যদি একটুও ওটা থাকে, তাহলে, আমার হাজবেন্ডকে ছেড়ে দিন। আমার কাছে ওটা আছে। আমি এখনিই বের করছি, সবার সামনে।”
পুরো আদালত তরীর ওটা বের করার কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে গেছে। আসলে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের ক্যাসেট বের করছিল।
জজ সাহেব, এই প্রথম রায় দেয়ার আগেই মারা গেল।
তরীর ওটার জন্য বেঁচে গেছি। এখন থানা, পুলিশ আমাকে দেখলেই ভয়ে দূরে চলে যায়। তরী’কে আর ডিভোর্স দিইনি। তার ওটা শব্দটার জন্যই আমার আবার ওটা পেলাম।
ওটা_মানে_ওটা।
আজিজুল_হক_শাওন।
3.দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প
গ্রুপে প্রেম উৎসব চলছে। তুই অংশ নিস।
শুনে আমার চক্ষু চড়কগাছ। গ্রুপে প্রেম উৎসব? সারাজীবন আমার মত গরীব মানুষ শুনে এসেছে ঘুড়ি উৎসব, পিঠে উৎসব। আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে ঘুড়ি উৎসবে দাওয়াত দেয়নি আর মুনমুন আমাকে প্রেম উৎসবে দাওয়াত দিচ্ছে।
আমি সন্দেহ কণ্ঠে আবার জিজ্ঞেস করলাম
সবার জন্য ওপেন?
হুম গ্রুপের সবার জন্য ওপেন। তোর জন্য দুইটা রাখা আছে।
আমি নিজেকে চিমটি কেটে দেখলাম আমি কি জেগে আছি? নাকি স্বপ্ন দেখছি? না ব্যথা পেলাম। স্বপ্নে ব্যথা পাওয়ার কথা না।
আমার জন্য একটা না দুইটা রাখা আছে ভাবতেই নিজেকে কেমন সালমান খান মনে হচ্ছে। লজ্জায় মুনমুনকে জিজ্ঞেস করলাম না কোন দুইজন।
আমি দ্রুত আমাদের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ঢুকলাম। গ্রুপের নাম “তুমি বলে যাও আমি শুনছি। নিজেকে একা ভেবো না”।
এতদিন এই গ্রুপে তেমন নজর দেয়া হয়নি। এখন মনে হচ্ছে এর চাইতে আধুনিক গ্রুপ বুঝি আর একটাও নেই। গ্রুপের মেম্বারদের লিস্ট দেখা শুরু করলাম। কোন দুইজন আমার সঙ্গে প্রেম করবে বুঝতে পারছি না। এই যে মনিরা-কে দেখা যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে হাই হ্যালো হয়। দেখতে অভিনেত্রী তারিনের মতো।
আমি মনিরাকে হাই পাঠালাম।
সঙ্গে সঙ্গে উত্তর
কি খবর?
ভালো। তুমি কেমন আছো?
ভালো। তোমাকেতো পাওয়াই যায় না।
আমি একটু রোম্যান্টিক হতে চেষ্টা করলাম
তুমি যদি হৃদয় দিয়ে কিছু চাও তবে পুরো বিশ্ব তা তোমাকে পেতে সাহায্য করবে।
কি ব্যাপার? হটাত এত রোম্যান্টিক কথা? শুনো সেদিন তোমার বউ নীলা আমাকে জিজ্ঞেস করলো তুমি কার সঙ্গে টাঙ্কি মারো? আমি বললাম আমার সঙ্গে মারে। যাক ভালো হলো তোমার এই কথা তাকে বলা যাবে।
আমার গলা শুকিয়ে কাঠ।
কি উল্টা পাল্টা বলছো। তোমাকে আমি সবসময় বোনের দৃষ্টিতে দেখি। তোমাকে দেখলে মনে হয় আমার মেলায় হারিয়ে যাওয়া বোন। তোমাকে দেখলে একটাই গান মাথায় আসে
সে আমার ছোট বোন…বড় আদরের ছোট বোন।।
ও তাই বুঝি? আমি আরো ভাবলাম তোমার সঙ্গে একটু টাঙ্কি মারবো। নীলার কথাটা মজা করে বললাম। ধুর আমাকে বোন বানিয়ে মুডটাই নষ্ট করে দিলে।
আমার গলা শুকিয়ে কাঠ। না মনিরা যতই বলুক আর রিস্ক নেয়া যাবে না। কোনটা মজা আর কোনটা সাজা মেয়েদের ক্ষেত্রে বুঝা কঠিন।
তাহলে মুনমুন কার কথা বললো। দেখি একজন গ্রুপে পোষ্ট করেছে
বসে আছি পথ চেয়ে
ফাগুনেরও গান গেয়ে
মেয়েটার প্রোফাইলে ঢুকে দেখি মেয়েটার নাম নিশি। আমার সঙ্গে পরিচয় নেই। অপরিচিত-র মধ্যেই প্রেম ভালো। ঝুট ঝামেলা নেই।
আমি নক করলাম।
কার জন্য বসে আছেন?
এই যে আপনার জন্য।
আমি দ্রুত আবার নিশির প্রোফাইলে ঢুকলাম। কি অপরূপ সুন্দরী। দেখলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। এই মেয়েকে বাংলা সিনেমাতেও মানাবে না। এর জন্য কলিকাতার সিনেমা লাগবে।
আজকের ভাগ্য এত ভালো কেন?
আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠে কাকে দেখেছিলাম? পাশের বিল্ডিং এর দাদার সঙ্গে বারান্দায় দেখা হয়েছিলো। উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
এই ছোড়া তুমি না ব্যাংকে চাকরি করো?
জী দাদা ভালো আছেন??
শুনো ভালো নাই। বলেই উনি একটা ময়লা ছেড়া একশো টাকার নোট আমার দিকে ছুড়ে মারলেন।
শুনো ব্যাংক থেকে নতুন টাকা নিয়ে এসো। এটা চালাতে পারছি না। টাকা কিন্তু কম দিবে না। বরং একদিনের ইন্টারেস্ট সহ দিবে। আমি কিন্তু হিসেবে পাকা।
সেই জন্য সকাল থেকেই মেজাজ খারাপ। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ব্যাপারটা আসলে খারাপ না।
আমি প্রেমের অব্যর্থ ডায়লগ ছাড়লাম
কেমন করে চলে যাবে আমার থেকে দূরে
কেমন করে ভুলে যাবে আমাকে মন থেকে!
আমি সেই সুবাস
যে তোমার নিঃশ্বাসে বাস করি
নিজের নিঃশ্বাস,
কিভাবে থামাবে তুমি?
নিশি লিখেছে
বাহ বাহ। এটা কার জন্য?
শুধু তোমার জন্য।
বাহ বাহ। পুরা ক্লোজ-আপ কবিতা।
সেই মুহূর্তে মুনমুনের ফোন
কিরে তুই কি শুরু করছিস?
মানে কি?
তুই নাকি সবাইকে প্রেম নিবেদন করতেছিস?
তুই না বললি প্রেম উৎসব চলছে। আমার জন্য দুইটা রেখেছিস।
আরে বদের হাড্ডি বদ। প্রেম উৎসব মানে হচ্ছে প্রেমের গল্প লিখার উৎসব চলছে। আর আমি বলেছি তুই দুইটা গল্প দিবি। আর তুই নিশিকে প্রেম নিবেদন করছিস। তুই জানিস নিশি একটা ছেলে। গ্রুপে মেয়েদের যে সকল ছেলেরা জ্বালায় তাদেরকে খুঁজে বের করতে একটা ছোট ভাই এই ফেইক আইডি চালায়।
মুখটা কেমন তিতকুটে হয়ে গেলো।
বুড়াটা আসলেই অলক্ষ্মী ছিলো। একশো টাকার নোট পুরা ছিঁড়া ছিলো। আমার একশো টাকা গচ্চা গেলো।
সেই মুহূর্তে নিশির ম্যাসেজ
ভাইয়া বেঁচে গেলেন। নীলা ভাবী আমার ক্লোজ আপু। ভেবেছিলাম আপনার ম্যাসেজ উনার জন্য রেখে দিবো। আরেকজনের ম্যাসেজ মুছতে গিয়ে আপনারটা মুছে গেলো। লাকি ইউ।
এখন আবার বুড়োটাকে লাকি মনে হচ্ছে।
#প্রেম_উৎসব
#আমিনুলের_গল্প_সমগ্র
4.রোমান্টিক প্রেমের গল্প
বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ছিলেন অতি সুন্দরী। বঙ্কিমচন্দ্র একবার তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে করে চলেছেন। স্ত্রীর মুখ ঘোমটায় ঢাকা।
খানিকক্ষণ পর বঙ্কিমচন্দ্র দেখলেন একটি যুবক বারবার আড়চোখে ঘোমটায় ঢাকা তাঁর স্ত্রীর মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
বঙ্কিমচন্দ্র তো এই ঘটনায় বেশ মজা পেলেন। তিনি যুবকটিকে কাছে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘কি কাজ করা হয়?’
যুবকটি এ প্রশ্নে ঘাবড়ে গিয়ে বলল ‘কেরানীর চাকরি করি।’
বঙ্কিম বললেন ‘কত মাইনে পাও?’
যুবকটি বলল ‘বত্রিশ টাকা।’
বঙ্কিমচন্দ্র তখন বললেন ‘তুমি যে এই মহিলার দিকে বার বার আড়চোখে তাকাচ্ছ, তা আমি এর ঘোমটা খুলে দিচ্ছি। ভালো করে দেখে নাও। আর এও শুনে রাখ। আমি একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। আমার মাইনে আটশো টাকা। এছাড়া বই পত্র লিখেও ভাল রোজগার হয়।
সব মিলিয়ে মাসিক আয় হাজার দেড়েক। এইসবই এই মহিলার পায়ে সমর্পণ করেছি। তবু তার মন পাইনি। আর তুমি সেখানে মাত্র বত্রিশ টাকার কেরানী হয়ে এর মন পেতে চাও?
যুবকটি খুব লজ্জা পেয়ে পরের স্টেশনেই অন্য কামরাতে চলে যায়।
বঙ্কিম ঘটনাবলী (১০ এপ্রিল, ২০১৮, বঙ্গদর্শন ইনফরমেশন ডেস্ক)
5.সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প
স্ত্রী তার স্বামীকে পরীক্ষা করার জন্য একটা চিঠি লিখল –
“দেখো, আমি তোমার প্রতি এবং আমাদের লাইফ নিয়ে প্রচন্ড বিরক্ত। আমি আর তোমার সাথে থাকতে চাই না। আমি সারা জীবনের জন্য চলে গেলাম।”
স্ত্রী এই চিঠিটা লিখে টেবিলের উপর রাখল এবং নিজে খাটের নিচে লুকিয়ে রইলো।
সন্ধ্যায় বেচারা স্বামী বাসায় আসল। আসার পরে স্বামী প্রথমে চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়ল। তারপর কলম দিয়ে চিঠিতে একটা লাইন কি যেন লিখল। আবার চিঠিটা টেবিলে রেখে দিলো। একটু দুঃখ ভারাক্রান্ত থেকে কয়েক মিনিট পর, স্বামীর নীরবতা থেকে হঠাৎ খুব খুশি হলো। শিস বাজাতে লাগলো। গান ছেড়ে ধামাক নৃত্য শুরু করলো। তারপর টেলিফোন সেটটাকে বিছানার উপর আনল। আনার পর তার স্বামী তার কোনো এক বান্ধবীকে ফোন দিলো। ফোনে ঐ প্রান্তকে বলছে–
“আজ অটোম্যাটিক্যালি আমার লাইফ থেকে আমার আপদ দূর হয়েছে। ডার্লিং তুমি আমার জীবনে আগের মতই থাকবে। আমার স্ত্রী আমাদের মাঝে আর বাঁধা হয়ে থাকবে না। তুমি এনিটাইম আমার বাসায় চলে আসবে। বেবী , তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।”
এমন অনেকক্ষন কথা বলার পর স্বামী ফোন রেখে বাসার বাইরে চলে গেলো হাসতে হাসতে। হয়তো তার
ফোনের ঐ প্রান্তের বান্ধবীকে বা অন্য কাউকে আনতে গেছে।
এদিকে তার স্ত্রী তো খাটের নিচে থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হলো। এমন কুলাঙ্গার স্বামীর সাথে সংসার করেছে এতোদিন এই ভেবে কপাল চাপড়াচ্ছিল । হঠাৎ তার মনে হলো, দেখিতো স্বামী চিঠিতে কি লিখছে। তাই তাড়াতাড়ি টেবিলের কাছে এসে চিঠিটা হাতে নিলো । চিঠির ভাঁজ খুলে স্বামীর লেখাটা বের করলো।
স্বামী যে এক লাইন লিখে রাখছে , তা হলো –
“আমার জীবন থেকে চলে গেছো ভালো কথা, কিন্তু খাটের নিচে থেকে কেন তোমার পা দেখা যাচ্ছে?
আমি ডিম আনতে বাইরে গেলাম।”