- ব্যর্থ প্রেমের সেরা গল্প
- করুন প্রেমের গল্প।
- ব্যর্থ প্রেমের সেরা গল্প।
১.ব্যর্থ প্রেমের সেরা গল্প
যখন প্রাক্তন এর সাথে সম্পর্কে ছিলাম সে বার বার বলেছিলো মানুষের কিছু দিক থাকাটা জরুরী।
না তুমি সুন্দর, না তোমার বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালো, বাড়িতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আব্বু আম্মুকে কি বলবো….? চামড়া সাদা হওয়াটা নাকি খুবই দরকার ছিলো….!
সেই বছরের কিছু মাস পর আমার বিয়ে ঠিক হয়। ছেলে দেখতে সুন্দর,শিক্ষিত আবার বিশাল সম্পত্তির মালিক ঢাকায় বাড়ি রয়েছে নিজের। ৩ গ্রামের মধ্যে তারাই ধনী। আমাদের ফ্যামিলি কখনো ভাবে নি এমন উজ্জ্বল শ্যামলা মেয়ে তার উপর নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন মেয়ের এত বড় ঘরে বিয়ে…..!
কেননা বর্তমানে একটা অবস্থাবান ছেলের বউ প্রায়শই সেরা সেরা সুন্দরী হয়, ধুমধামে বিয়ে ও হয়। তবে উনার কাছে প্রথম প্রশ্ন করেছিলাম আপনি সাদা চামড়ার মানুষ এত ধনী আমায় কেনো পছন্দ হলো??
উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন ” আমি যখন বারবার মেয়ে দেখে বি*র*ক্ত হচ্ছিলাম মাগরিবের নামাজে মুনাজাতে বলেছিলাম যাকে আমার জন্য বানাও নি তার প্রতি আমাকে আকৃষ্ট করোনা”
মাগরিবের নামাজ শেষে তোমাকে দেখলাম কেনো যেনো মনে হচ্ছিলো তোমার থেকে চোখ সরাতে পারছিলাম না, যাকে প্রথম দেখায় ভালোলাগাটা ভালোবাসায় পরিনত হয় সেখানে কালো সাদা ধনী গ*রীব তুচ্ছ তুমি যেমন এ হও না কেনো আমার চোখে সর্বদা তুমি সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠ নারী।
সেদিন মিলিয়ে নিয়েছিলাম ” তোমার জন্য যা অ*কল্যাণকর তা আল্লাহ তা সরিয়ে নিয়েছেন এবং যা কল্যাণকর তা তোমার জন্য বরাদ্দ রেখেছেন”
নিঃসন্দেহে আল্লাহ সুষ্ঠ পরিকল্পনাদাতা।
লেখা: আফরা আইজান।
২.করুন প্রেমের গল্প।
সাত বছর পর জেল থেকে বের হয়ে প্রথমেই নজরে এলো মিতালিকে। মেয়েটা তেমন ভাবেই আমার জন্য অপেক্ষা করছে, যেমনটা সাত বছর আগে অপেক্ষা করতো। আমার অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা গাছ তলায় দাঁড়িয়ে থাকতো। এই সাত বছরে আমাদের ভালোবাসার কতটা পরিবর্তন হয়েছে বলতে পারি না। তবে আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ধ”র্ষ”ণে”র শাস্তি পাওয়া আ”সা”মির জন্য কোনো স্ত্রীর মনে ঠিক কতটা ভালোবাসা থাকতে পারে!
মিতালি আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে সালাম দিলো।
কাঁপা গলায় উত্তর দিলাম,
–” ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো মিতালি? “
–” এইতো ভালোই। তুমি কেমন আছো? “
–” যেখানে মা-বাবাও আমার পরিচয় ছেড়ে দিয়েছে, সেখানে তুমি আমাকে নিতে এসেছো যে?”
–” পৃথিবীর সবাই তোমাকে ধ”র্ষ”ক হিসাবে বিশ্বাস করলেও আমি তোমাকে নিজের স্বামী হিসাবে বিশ্বাস করি। যে ছেলে আঁধার রাতে একা পেয়েও আমাকে স্পর্শ করেনি সে কি করে দশ বছরের একটা বাচ্চা মেয়েকে ধ”র্ষ”ণ করতে চাইতে পারে! এমন বিষয় চোখে দেখলেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে আমার। “
–” এতোটা বিশ্বাস করলে তো ঠকবে তুমি। “
–” ভালোবাসার প্রতিদানে বেইমানি আশা করতে নেই। ভালোবাসায় এ প্রাপ্তি মানানসই নয়। “
মিতালির কথার কোনো উত্তর দিতে পারলাম না, ও-র হাতটা শক্ত করে ধরে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। বিয়ের দ্বিতীয় দিনে যে স্বামী ধ”র্ষ”ণের অপবাদ নিয়ে জেলে যায়, তার প্রতি এতো ভালোবাসা কি করে আসতে পারে ও-র? উত্তরটা জানা নেই আমার। এ উত্তর আমি জানতেও চাই না, মনের ভিতর যে সুখের আবির্ভাব হয়েছে তা ব্যর্থ চিন্তায় মিলিয়ে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। আমার নিবরতা দেখে মিতালি নিজেই বলে উঠলো, ” সেদিন তুমি সোহাগীকে সঠিক সময়ে ও-ই ন”র”পি”শাচদের হাত থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছিলে, না হলে হয়তো মেয়েটা যেমন এলোমেলো হয়ে যেত। আমাদের সুন্দর সমাজে ধ”র্ষ”কদের থেকে ধ”র্ষি”তারা বেশি অপমান সহ্য করে। বাবার বয়সী লোকেরাও মেয়েটার কোথায় কিভাবে স্পর্শ করছে প্রশ্ন করতে দ্বিধা করে না। ব্যাপারটা এমন যেন তাঁরা জানেই না ধ”র্ষ”ণ কেমন করে হয়। “
মিতালির কথায় বছর সাত আগের ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠলো। মনির আর কবির কিভাবে ওই বাচ্চা মেয়েটার শরীরের পোশাক ছিঁ”ড়ে ফেলছে, আমি দৌড়ে গিয়ে সোহাগীকে জড়িয়ে ধরি, মেয়েটা ভয়ে আমার বুকের ভিতর সেঁধিয়ে গেছিলো। তখনই সেখানে রুহি আর মিরা চলে আসে। ওঁরা সবকিছু দেখলেও আমাকে ধ”র্ষ”ক হিসাবে সকলের সামনে পরিচয় করে দিলো। হয়তো নিজেদের স্বামীকে বাঁচাতে এমন করেছিলো। সোহাগী বারবার হাত ইশারা দিলেও কেউ খেয়াল করেনি। রুহি সোহাগীকে তড়িঘড়ি করে অন্য ঘরে নিয়ে গেলো।
–” রুহি আপুর ডির্ভোস হয়ে গেছে। কবিরের নাকি অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল। মনির ভাইও গাড়ি এক্সিডেন্টে নি”হ”ত হয়েছে। “
–” তুমি না বললে ভালোবাসলে বেইমানি আশা করতে নেই?”
–” ভালো একটা মানুষকে বাসতে হয়, তার টাকা অর্থবিত্তকে নয়। স্বামীর টাকায় অন্য ছেলের সাথে পার্ক, রেস্তোরাঁ, হোটেলে ঘুরলে ঠিক কি প্রতিদান আশা করা যায় বলো? ভালোবাসা তো বাঁচতে শেখায়, অন্যায়কে লুকিয়ে রাখতে নয়। “
মিতালির কথার কোনো জবাব দিলাম না। চুপ হয়ে রইলাম।
ফরজের আজানের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। একি! আমি এখনও চার দেওয়ালে কারাগারে বন্দি। কিছু সময় বাদে হাবিলদার এসে জানালো আজ আমার কারাগারে শেষ রাত ছিলো। এ-ই বিশাল লোহার দরজার ওপাশে কি মিতালি অপেক্ষা করছে? নাকি এ শুধুই কল্পনা। ও-ই তো মিতালির মতো কেউ দাঁড়িয়ে আছে। ঝাপসা চোখে স্পষ্ট দেখতে পারছি না যে।
সমাপ্ত
কল্পনার তুমি, তুমিই বাস্তবতায়
#ফারহানা_কবীর_মানাল
৩.ব্যর্থ প্রেমের সেরা গল্প
নিজের বয়ফ্রেন্ড আবিরের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।সারারাত কাটানোর পরে সকাল থেকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না ওকে।অথচ আজকে আমাদের দুজনের বিয়ে করার কথা ছিলো।স্বপ্নেও ভাবতে পারি নি আবির এইভাবে আমায় ব্যবহার করে পালিয়ে যাবে।
বাড়িতে কল করে মাকে কাঁদতে কাঁদতে সবটা বললাম।বাবা লোক পাঠিয়ে দিলো আমায় নেওয়ার জন্য।
বাড়িতে গিয়ে দেখি আমায় দেখার জন্য পাত্রপক্ষ উপস্থিত।আর বিয়েতে অমত করলাম না।যাকে মন দিয়ে ভালোবেসেছিলাম সে আমায় ভালোবেসেছিলো শুধুমাত্র দেহের চাহিদা মেটানোর জন্য।আবিরের মতো অমানুষের জন্য নিজের জীবনটা নষ্ট করার কোনো তাৎপর্য খুঁজে পেলাম না আমি।
বিয়ের তিন বছর পরে।
আজ আমি এক সন্তানের মা।স্বামী আর বাচ্চাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি।হঠাৎ শুনতে পাই বাবা তাদের ঘরে বসে মায়ের সাথে ফিসফিস করে বলছে
—ভাগ্যিস সেদিন সকালবেলা লোক দিয়ে ছেলেটাকে মেরে গুম করে ফেলেছিলাম।তাইতো ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরে পেলাম!নয়তো আজ কী যে হতো!
গল্পের নাম : প্রতারক
প্রদীপ_চন্দ্র_তিয়াশ