#প্রণয়ের আসক্তি
পর্ব ১৪
#writer_Mousumi_Akter
‘গু*লি*টা ঠিক কোথায় বিঁধলে তোর প্রা*ণ টা বেরিয়ে যাবে এক সেকেন্ডের মাঝে ফকিন্নির বাচ্চা বল।মাটিতে সুয়ে আকাশের চাঁদ ধরার স্বপ্ন দেখিস।প্রথমে এ বাড়ির ছোট ছেলের সাথে ফস্টি নষ্টি করে এখন বড় ছেলের ঘাড়ে ঝুলেছিস।একবিন্দু পরিমাণ লজ্জা থাকলে ছোট ভাইয়ের সাথে বাচ্চা বাঁধিয়ে বড় ভাই এর সাথে বিয়ে করেতিস।’
মুখে চাপ দাঁড়ি গায়ে সাদা ব্লেজার পরা গুন্ডা টাইপ একজন মধ্যবয়স্ক লোক মৃথিলার কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে প্রচন্ড রাগে বিশ্রিকথাগুলো বললো।এমন বিশ্রি অপমানজনক কথা শুনে মৃথিলা হুহু করে কেঁদে উঠলো।লোকটা এবার পিস্তল টা কপাল টা সরিয়ে মৃথিলার গলায় ধরলো খুব জোরের সাথে।সাথে সাথেই মৃথিলা ভয়ে কেঁপে উঠলো তার অন্তিম সময় এর কথা ভেবে।কিন্তু মানুষ টা কে?তাকেই বা কেনো মা*র*তে চাইছে।এসব কিছুই বুঝতে পারছে না।
মৃথিলা কাঁপতে কাঁপতে বললো,
‘আপনি কে?’
‘এক্ষুণি টের পাবি আমি কে?টুকুস করে গু*লি যখন সামনে দিয়ে ঢুকে পেছন দিয়ে তোর প্রা*ণ নিয়ে বেরোবে তখন ই টের পাবি আমি কে ফকিন্নি, বস্তির বাচ্চা।তোর জন্য আমার মেয়ে মা*রা যাবে।আর তুই বেঁচে থাকবি।আমার সুখ এর জন্য একশ খু**ন করতে আমার হাত কাঁপবে না।বেশী না মাত্র একটা গু*লি বের করবো।’
চিৎকার চেচামেচিতে নিরা,রিফাত,সুপ্তি সবাই উপর থেকে নেমে রান্না ঘরে প্রবেশ করলো।এমন ভয়াবহ সিসুয়েশণ দেখে নিরা উত্তেজিত হয়ে পড়লো আর খুব জোরে ডাকলো,
‘দাদাভাই শিঘ্রি এসো।ভাবিকে মে**রে ফেললো।’
নিরব জানে নবনিতার মা -বাবা আর নবনিতা সাজ সকালে এসছে কিছু একটা ঝামেলা করবেই।নিরার আওয়াজ নিরবের কানে যেতেই নিরব মুহুর্তের মাঝে উপস্হিত হলো।মৃথিলার গলায় পিস্তল ঠেকানো আর নবনিতার বাবা মীজান মুন্সী বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলেই যাচ্ছে।এমন দৃশ্য দেখে নিরব সাথে সাথে পেছন থেকে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল টা বের করে মিজান মুন্সির কপালে ঠেকালো।নিরবের চক্ষুদ্বয় লাল রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে।খুব কঠিন ভাবে চোয়াল শক্ত করে বললো,
‘আপনার গুলি চালানোর অভিজ্ঞতা হয়তো কম আছে কিন্তু আমার কম নেই।আপনি তো গুলি চালাবেন কিনা ভাবতে সময় নিয়েছেন কিন্তু আমি সময় নিবো না।জাস্ট একটা চাপে তিনটা বেরোবে।’
ইসহাক আহমেদ আর ইরিনা আহমেদ এসে নিরবের হাত থেকে পিস্তল টা নিতে নিতে বললো,
‘বাবা শান্ত হও।তুমি কি পা*গ*ল হলে।উনি তোমার মীজান আঙ্কেল।’
‘আমার মাথা ঠিক আছে।বাট তোমাদের বিজনেস পার্টনার এর মাথা ঠিক নেই।যার মাথা ঠিক নেই তার বেঁ**চে থাকার প্রয়োজন নেই।নিরব দাঁত কিড়মিড় করে কথা টা বললো।’
ইসহাক আর ইরিনা দুজনেই জানে নিরব রেগে গেলে সামলানো মুশকিল।ছেলের সাথে তর্কে গিয়েও লাভ নেই।
মীজান মুন্সী বললো,
‘ইসহাক তোমার ছেলে এই বস্তির মেয়ের জন্য আমার কপালে পিস্তল ঠেকিয়েছে।তোমার ছেলে এই মেয়ের জন্য বরবাদ হয়ে যাবে বলে দিলাম।যে মেয়ের জন্য এত দিনের সম্পর্ক কে খু**ন করতে তোমার ছেলে দু’বার ভাবছে না।সেই মেয়ের জন্য দু’দিন পরে তোমার ছেলে আর কি কি করবে তার কোনো ধারণা নেই।’
নিরব আবার ও রেগে গিয়ে বললো,
‘আমার ধৈর্যর বাঁধ ভাঙাবেন না আঙ্কেল।তাহলে কিন্তু কি হবে আমি তার গ্যারান্টি দিতে পারছি না।আপনি কাকে বস্তির মেয়ে বলছেন।ও বস্তির মেয়ে নয়।শী ইজ মাই ওয়াইফ আন্ডারস্ট্যান্ড।’
‘আমার মেয়ের সাথে বিয়ে হবার কথা ছিলো তোমার।আমার মেয়েকে কাঁদিয়ে তুমি অন্য একটা মেয়েকে ওয়াইফ বলে পরিচয় দিচ্ছো?আমার মেয়ের পাশে ওই বস্তির মেয়েটাকে দাঁড় করিয়ে দেখো কেমন দেখা যাচ্ছে।’
‘আপনি নাবিলাকেও বস্তির মেয়ে বলেছিলেন।তারপর নাবিলা মা*রা যায়।মেয়েরা গ্রাম থেকে উঠে আসলেই কি বস্তি হয়ে যায়। গেট আউট। আই সে জাস্ট গেট আউট ফরম মাই হাউজ।’
সুপ্তির মনের মাঝে ভীষণ ভালো লাগছে।যাক মৃথিলাকে প্রোটেক্ট করার মতো এবার সত্যিকারের কেউ চলে এসছে।সুপ্তি এবার নিশ্চিন্ত হলো।কিন্তু ইসহাক,ইরিনা,নিরা,রিফাত, নবনিতা মীজান মুন্সি এরা সবাই যেনো আসমান থেকে মাটিতে পড়লো নিরবের ব্যবহারে।তারা নিরব কে এমন আচরণ কখনো করতে দেখে নি।সবাই মৃথিলার দিকে তাকালো।মৃথিলার মাঝে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু আছে। না হলে নিরব মৃথিলার জন্য জীবনের প্রথম এমন অদ্ভুত আচরণ কেনো করবে।মৃথিলাকে ছুঁয়ে কিছু বললে যেনো নিরব সব ভেঙে চুরে গুড়িয়ে ফেলবে।মৃথিলা তাকিয়ে দেখে সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে।নিরবের এমন ব্যবহারের কারণ যে মৃথিলা সেটাই সবাই তাকিয়ে বুঝাচ্ছে।মৃথিলার নিজের কাছে খারাপ লাগছে তার জন্য এত অশান্তি।নবনিতাকে তার মা ধরে রেখেছে।নবনিতা এসব সহ্য করতে পারছে না।তার নিরব কেই লাগবে মৃথিলাকে খু**ন করে হলেও।
মীজান মুন্সি রাগে গজগজ করতে করতে বললো,
‘ইসহাক ব্যাবসা,বানিজ্য সব আজ থেকে আলাদা।আমি এই শান্তির নীড় অশান্তিতে পরিপূর্ণ করে দিবো।তোমার ছেলে আজ আমাকে অপমান করেছে।আমাদের এত দিনের সম্পর্ক কে তোমার ছেলে এক বস্তির মেয়ের জন্য অপমান করলো।আমাকে কিনা এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলছে।’
নিরব আবার ও বললো,
‘আপনি আমার ওয়াইফ কে অপমান করেছেন। এখনো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় নি এটাই মানবতা।আপনাকে এটেম্প টু মার্ডার এর জন্য এখনো গ্রেফতার করিনি শুকরিয়া আদায় করুণ।’
‘ইসহাক আমি কিন্তু পথে বসিয়ে ছাড়বো তোমাদের বলে দিলাম।আমি বিপরীতে গেলে কি হবে বুঝতে পারছো।’
ইসহাক হাসান দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয় আছে।রাগে তার সমস্ত শরীর ফেটে যাচ্ছে।কিছুই বলতে পারছেনা। হাতের তালুতে নখ বসে গিয়েছে ইসহাক হাসানের।মীজান মুন্সি ব্যবসার অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে।তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট হলে কোটি কোটি টাকার লস হয়ে যাবে।
ইরিনা হাসান নিরব কে বললো,
‘উনি তোমার বাবার বয়সী। তুমি এটা কেমন ব্যবহার করছো বাবা।আমার ছেলে তো এমন না।’
‘সরি মা।কিন্তু আমার মাথা ঠিক ছিলো না।’
‘মৃথিলাকে নিয়ে রুমে যাও তুমি।মৃথিলার রেস্ট এর প্রয়োজন। ‘
নিরব মৃথিলাকে নিয়ে রুমে চলে গেলো।ইসহাক হাসান আর ইরিনা হাসান মীজান মুন্সি,নবনিতা সহ তার ওয়াইফ কে নিজেদের ঘরে নিয়ে গেলো।মীজান মুন্সি রাগে ছটফট করছে।নবনিতা কেঁদেই যাচ্ছে।নিজের মা-বাবার সাথে যে নিরব এমন একটা ব্যবহার করবে তা নবনিতার কল্পনাতেও ছিলো না।এখন যেনো সবটা আরো হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।
ইসহাক হাসান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
‘মিজান মুন্সী তুমি কি পা*গ*ল হয়ে গিয়েছো।জানোনা আমার বড় ছেলে কেমন।তার মনে মায়া দয়া বেশী।ন্যায় পরায়ন।সে অন্যায় দেখতে পারেনা। তুমি জেনে শুনে কেনো তার সামনে এমন ভুল করতে গেলে।’
মিজান মুন্সী ও ভীষণ রেগে গিয়ে বললো,
‘আমার মেয়ের চোখের কাঁন্না আমি দেখতে পারিনা।তোমার ছেলের ব্যবহার আমার ভুলবো না।ওই মেয়ের জা*ন আমি কেড়ে নিবো তবেই শান্তি পাবো।’
‘আহা শান্ত হও মীজান।এসব ব্যবসা ছিনিয়ে নেওয়ার ভয় কি আমার বড় ছেলে পায়।তুমি তো তারে ভালো করেই চিনো।আজ নতুন তা তো না।ব্যবসা বাণিজ্য কোম্পানী সব লাটে উঠতো।ওই মেয়ে যদি থানায় গিয়ে কেস দিতো আমার ইজ্জত মান ব্যবসা সব লাটে উঠতো।নিরব বিয়ে করে আমাকে উদ্ধার করেছে।তুমি যদি ব্যবসা আলাদা করতে চাও আমার কিছুই বলার নেই।এমনিতেই নীলাভ নিঁখোজ আমি ভারী অশান্তিতে আছি।তুমি আর বাড়তি ঝামেলা করোনা।ছেলের হয়ে মাফ চাইছি।’
‘নিরব এক রাতে এতটা পাল্টে গেলো কিভাবে ইসহাক।’
‘নারী হলো মায়াবিনীর জাত।সব পুরুষ ই কোনো না কোনো নারীর কারণে বদলে যায়।মধ্য বয়সে এসেও এটা বুঝলে না।’
ইরিনা হাসান বললো,
‘আমি নিরবের সাথে কথা বলে আসি।ভাই -ভাবি আপনারা ধৈর্য ধরুণ।এখন তো রাগারাগি করে কোনো লাভ নেই।আপনারা তো বুঝতেই পারছেন সব ই পরিস্হিতির চাপে হয়েছে।’
ইরিনা হাসান নিরবের রুমের সামনে গিয়ে নক করলো।ভেতর থেকে নিরব বললো,
‘কে ভেতরে এসো।’
মৃথিলা খাটের উপর বসে আছে নিরব খাটে বালিস হেলান দিয়ে পা মেলে বসে আছে।যন্ত্রনায় তার মাথা ফেটে যাচ্ছে।চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।ইরিনা হাসান ভেতরে প্রবেশ করে বললো,
‘বাবা উনি যতই ভুল করুণ তোমার বাবার মতো না।এভাবে মাথা গরম করছো কেনো?তুমি ই তো আমাদের আশা ভরসা।’
‘মা আমার বাবা একজন ভালো মানুষ। তার ওই বিজনেস পার্টনার কিছুতেই আমার বাবার মতো হতে পারেনা।বাবাকে ভাঙিয়ে চুরিয়ে খেয়ে যাচ্ছে তোমর বুঝতেও পারছো না।আর এত টাকার কি প্রয়োজন।আমি কি ইনকাম করিনা।তাতে কি তোমাদের পেট চলবে না।’
ইরিনা হাসান মৃথিলার হাত ধরে বললো,
‘মৃথিলা মিজান মুন্সীর হয়ে মাফ চাইছি মা।আসলে নবনিতা সু*ই*সা*ই*ড করতে গেছিলো তো।তাই বাপ হয়ে মিজান ভাই এর মাথা ঠিক ছিলো না।তুমি কিছু মনে করোনা মা।’
মৃথিলা শ্বাশুড়ির এমন অনুরোধে যেনো লজ্জা পেলো।বেশ নতজানু হয়ে বললো,
‘না মা ঠিক আছে।আমি বুঝতে পারছি উনার রাগ করাটায় স্বাভাবিক।আমার কারণে আপনাদের সংসারে আজ এত অশান্তি হচ্ছে।আসলে মা আমার কপাল টায় পোড়া।সুখ শান্তি আমার কপালে নেই।যেখানে যায় সেখানেই অশান্তি।’
‘ছিঃছি মা এভাবে বলেনা।তুমি আর আমার নিরা কি আলাদা।এ বাড়িতে নিরার মতোই থাকবে তুমি।বিয়ে এমন সম্পর্ক মা যার জোরে সারাজীবন অন্যর বাড়িতস থাকতে হয়।অন্যর ঘর নিজের আপন ঘর হয়ে যায়।তুমি নিরব কে বুঝাও।ওর বাবার হার্ট এর সমস্যা এখন ব্যবসা আলাদা হয়ে গেলে মানুষ টা পথে বসে যাবে।এত দিনের বন্ধুত্ব নষ্ট হলেও কষ্ট পাবে।’
‘ঠিক আছে মা আমি বলছি।’
ইরিনা হাসান চলে গেলে মৃথিলা মিহি কন্ঠে বললো,
‘আপনি যান না ওই আঙ্কেল টার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন।’
নিরবের রাগ এখনো সম্পূর্ণ রয়েছে।রাগে চোয়াল শক্ত করে বললো,
‘তার আগে উনি তোমার কাছে ক্ষমা চাইবে।অন্যায় টা সে করেছে।তোমার কাছে ক্ষমা না চাইলে আমি তাকে ছা*ড়*বো না।’
‘আপনি আমাকে নিয়ে এমন করছেন কেনো?মানুষ কি ভাববে।ভাববে একদিন বিয়ে করতে পারে নি নিরব এখন বউ পা*গ*ল হয়ে গিয়েছে।’
‘হয়েছি তো।কারো কোনো সমস্যা।আমার বউ যদি আমি পা*গ*ল হয়ে থাকি সেটা অতি উত্তম কাজ।এতে তো মানুষের আলাদা করে কিছু ভাবার নেই।সারা দুনিয়া এক পাশে আমার বউ এক পাশে এটা দলিল করে দিলাম।’
নিরব গম্ভীর আর থমথমে মুডে গড়গড় করে কথা গুলো বলে গেলো।মৃথিলা নিরবের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।প্রচন্ড রাগে উনি কিসব বলে যাচ্ছেন।মৃথিলা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললো,
‘আজ নীলাভ তো পারতো এমন করে বলতে।তাহলে সব সমস্যার ই সমাধান হয়ে যেতো।’
নিরব হঠাত আচমকা তাকালো মৃথিলার দিকে।সে কি রাগের মাথায় ভুল ভাল কিছু বলে ফেললো।ছিঃমৃথিলা না জানি কি ভাব ছে।নিরব বেশ লজ্জা পেয়ে গেলো।গলা ঝেড়ে বললো,
‘প্রিয়মানুষের মুখ হচ্ছে মানসিক শান্তির মেডিসিন।নীলাভ এর কি এমন হয়েছে কখনো তোমাকে দেখে।’
‘না।’
‘তাহলে কি তুমি তার প্রিয় ছিলে।যার প্রিয় ছিলে না তার থেকে এমন অদ্ভুত জিনিস কিভাবে আশা করো প্রিয়দর্শিনী।
প্রিয়তমার মুখ দেখে যার মানসিক শান্তি আসেনা সে কখনো ভালোবাসেনি।’
‘প্রিয়দর্শিনী কে?’
‘প্রিয়তমার নাম রেখেছি প্রিয়দর্শিনী।’
মৃথিলা ছোট্ট করে উচ্চারণ করলো,
‘ওহ’
সুপ্তি তিনতলার বারান্দায় ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে।খোলা চুল মৃদু বাতাসে উড়ছে।পরণে হলুদ শাড়ী।পাশে রিফাত এসে দাঁড়ালো।কেউ কোনো কথা বলছে না।কিছুক্ষণ পর রিফাত বললো,
‘মেয়েদের খোলা চুলে কি বেশী সুন্দর দেখায়। ‘
সুপ্তি রিফাতের দিকে তাকালো ঘাড় ঘুরিয়ে।কথাটায় বেশ লজ্জা ও পেয়েছে।লজ্জায় মাখা মুখে বললো,
‘ওসব কবিদের কথা।উপন্যাসের পাতায় মানায়।সবাই তো আর গল্পের নায়কা হতে পারেনা যে সবাইকে খোলা চুলে সুন্দর দেখাবে।’
‘প্রতিটা মেয়েই নায়কা হয় কারো না কারো জীবনের গল্পে।’
‘সে ভাগ্য কজনের ভাগ্য হয়।সেসব অনেক ভাগ্যবতী নারীরা পেয়ে থাকে।’
‘তুমিও অনেক ভাগ্যবতী কিন্তু।’
‘এখনো তেমন কিছু উপলব্ধি করতে পারিনি।’
‘ওয়াও বুঝলাম।আচ্ছা তোমার লক্ষ কি জীবনের।’
‘যে কোনো ভাবে মৃথিলার মনে প্রশান্তি দেওয়া।মৃথিলাকে মানসিক শান্তি দেওয়া।মেয়েটার জীবনে খুব কষ্ট,সীমাহীন কষ্ট।মিথুর জীবন টা যেনো আল্লাহ আমার সব ভালো নিয়ে ওর জীবনের সব কষ্ট দূর করে দেন।’
‘বন্ধুত্বে এমন ভালোবাসা আগে দেখিনি।সত্যি তোমাকে স্যালুট। সব মেয়ে ই যেনো এমন নিঁখুত একটা বেষ্ট ফ্রেন্ড পায়।তবে তোমার পবিত্র চাওয়া মিথ্যা হবেনা।নিরব এসে গিয়েছে মৃথিলার জীবনে।মৃথিলাকে কেউ আর ছুঁতেও পারবেনা।নিরব সম্পূর্ণ অন্য ধরনের ছেলে।ওর জায়গা আমি হলেও এত সহযে সবটা মেনে নিতে পারতাম না।কিন্তু নিরব পেরেছে।আর মৃথিলাও নিরব কে একদিন ভীষণ ভালবাসবে আর সেটা খুব শিঘ্রই হবে।’
‘আজ থেকে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবো।মৃথিলার জীবনে সত্যি পারফেক্ট কেউ চলে এসেছে।এমন ছেলে যেনো প্রতিটা ঘরে ঘরে জন্ম নেয়।’
‘সবাই নিরব কে নিয়ে ভাবলএ হবে।নিরবের বন্ধু রিফাত কেও ভাবতে হবে।’
‘আপনি ম্যারেড না।’
‘সে কপাল নেই আমার।আজ ও বউ এর মুখ চোখে দেখলাম না।’
‘বিয়ে করেন নি কেনো?’
‘সেটাই ভাবছি বিয়ে কেনো করলাম না।বিয়ে করা উচিত তাইনা আমার।’
‘জ্বী।’
‘আছে তোমার কোনো বান্ধবী।যাকে খোলা চুলে তোমার মতো দেখায়।’
কথাটা শুনেই নিরা পেছন থেকে সুপ্তিকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,
‘রিফাত ভাইয়া কিউট সুপ্তি আপুর কোনো ফটোকপি নেই।এটার ওয়ান কপি ই পাওয়া যাবে।’
রিফাত বললো,
‘দামী জিনিস এর এক কপি ই পাওয় যায়।’
এরই মাঝে ইসহাক হাসান ডাকলো,
‘নিরা মা এদিকে এসোতো মা।’
নিরা বাবার ডাকে বাবার রুমে প্রবেশ করে বললো,
‘বলো বাবা।’
‘ঘুম কেমন হলো মা।’
‘খুব ভালো বাবা।সুপ্তি আপুর সাথে সারারাত গল্প করেছি।আপুটা খুব ভালো বাবা।’
‘তাই মা।তোমার ভালো লেগেছে।’
‘হ্যাঁ বাবা খুব ভালো লেগেছে।’
‘তাহলে বলো এ বাড়িতে থেকেই লেখাপড়া করতে।আমার নিরার যা ভালো লাগবে তা যদি আকাশের চাঁদ ও হয় বাবা তা এনে দিবে।’
‘বাবা তুমি আমাকে একটু বেশী ভালবাসো।আই উইশ প্রতিটি মেয়ে যেনো তোমার মতো বাবা পায়।জানো বাবা স্কুলের সবাই আমাকে খুব হিংসে করে।বলে তোর মতো কপাল হলো না কেনো?’
নিরার কপালে ইসহাক চুমু দিয়ে বললো,
‘আমার নিরার মুখের দিকে তাকালে নিজের মা’কে দেখতে পায় আমি।’
‘বাবা নবনিত আপুর বাবা এত চেতে আছেন কেনো?’
‘মা তোমাকে আমি যেমন ভালবাসি তোমার মিজান আঙ্কেল ও তার মেয়েকে এতটায় ভালবাসে।রাগ তো একটু হয় ই মা।’
‘বুঝতে পেরেছি বাবা।’
‘তোমার দাদাভাই তোমার কথা শুনবে।তুমি তোমার দাদা ভাইকে বুঝাও যেনো মিজান আঙ্কেলের সাথে রাগারাগি না করে।’
ঠিক আছে বাবা এখন বলা যাবেনা।একটু পরে বলছি।
চলবে?…