#প্রণয়ের আসক্তি
পর্ব ২৮
#writer_Mousumi_Akter
আগামিকাল কোরবানীর ইদ।ইসহাক হাসান এবার ২’শ গরু কিনেছেন। মানুষ কে খাওয়ানোর জন্য।এখান থেকে এক টুকরো গোশত ও তিনি বাড়ির জন্য রাখবেন না।সবটা গরীব অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিবেন।ঠিক এসব কারণেই সবাই ইসহাক হাসান কে বলে চেয়ারম্যান হবার জন্য।কিন্তু ইসহাক হাসানের এসবের প্রতি কোনো লোভ নেই।সে ক্ষমতার লোভী মানুষ নয়।এমনিতেই সামর্থ অনুযায়ী মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করাটাই তার ধর্ম।
বিকালে কয়েকজন লোক এসেছে বাড়ির বাইরে থেকে।তাদের জন্য নাস্তা সহ ভাত মাংশের ব্যবস্হা করা হয়েছে।এমন ভিয়াইপি আপ্যায়ন এর কারণ সবার জানা থাকলেও নিরার জানা নেই।কারণ তারা নিরা কেই দেখতে এসছে।ইরিনা হাসান মৃথিলাকে বলল, ‘যাও তো মা নিরা কে সাজিয়ে নিয়ে এসো।’
মৃথিলা নিরার রুমে প্রবেশ করলো।চারদিক পিনঃপতন নিরবতা।নিরা চুপ করে বসে আছে।দুঃচিন্তা নিরা কে পা*গ*ল করে তুলছে।নিরা ফ্লোরে বসে আছে হাঁটুর মাঝে মাথা গুজে।মৃথিলা এসে নিরার মাথায় হাত দিতেই নিরা কাঁন্নাভেজা কন্ঠে বলল, ‘প্লিজ ভাবি সবাই কে বলো।আমি এ বিয়ে করতে চাই না ভাবি।তুমি তো সবটা জানো ভাবি।আমি নিলয় কে ভালবাসি।’
‘তোমার দাদাভাই রিফাতের সাথে যেনো কোথাও একটা গিয়েছে।রাতে ফিরলে বলবো।বাবার সম্মান বাঁচাতে এখন অন্তত চলো নিরা।আমি কথা দিচ্ছি তোমার সাথে খারাপ কিছু হতে দিবো না।’
‘আমার ভরসা কিন্তু তুমি ভাবি।আমায় ছুঁয়ে কথা দাও আমাকে তুমি বাঁচাবে এই বিপদ থেকে।’
‘এইভাবে বলতে আছে নিরা।তুমি না আমার বোন।তোমার দায়িত্ব তো আমার ই।’
‘জানো ভাবি কাল রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছি।’
‘কি স্বপ্ন।’
‘আমি আকাশের সন্ধ্যাতারা হয়ে জ্বলছি।আর তোমরা আমার জন্য কাঁদছো।’
‘তারা হওয়া তো ভালো কথা।ইশ আমিও যদি হতে পারতাম।’
‘ভাবি স্বপ্ন দেখেছি আমি মা*রা গিয়ে তারা হয়েছি।’
‘ছিঃনিরা।এসব কি বলো।এসব বলতে নেই।’
এরই মাঝে নিরা আবার বমি করছে।নিরার এই বমি বেশ সন্দেহজনক।মৃথিলা নিরাকে বলল,’তোমার কি পেটে গ্যাস জমেছে নিরা।এইভাবে বমি করছো।’
নিরা আচমকা একটা প্রশ্ন করল, ‘আচ্ছা ভাবি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ গুলো কি কি বলতে পারবে।না মানে কি হয় প্রথম।’
‘আমি তো জানিনা নিরা।আমরা তো এখনো বেবির ব্যাপারে কিছুই ভাবিনি।যাদের আগে বেবি হয়েছে ওরাই বলতে পারবে।’
নিরা বেশ অবাক হয়ে মৃথিলার হাসিমাখা মুখের দিকে তাকালো।মৃথিলার মাঝে কোনো ভাবলেশ নেই।সে যে নিলয়ের বেবির মা হয়েছিলো এত দ্রুত কিভাবে ভুলে গেলো।নিরা সন্দিহান ভাবে আবার জিজ্ঞেস করল,
‘তুমি সত্যি প্রেগন্যান্ট ছিলে না ভাবি।’
‘না।’
‘নিলয় ভাইয়ার বেবির ব্যাপার টা কি ছিলো।’
‘ওহ তুমি ওই ঘটনা টা বলছো।আমি আসলে ওই চ্যাপ্টার টা ক্লোজ করে দিয়েছি মন থেকে।আমার সব টা জুড়ে শুধুই তোমার দাদাভাই বুঝেছো।কিন্তু তুমি এসব জিজ্ঞেস করছো কেনো?’
‘কিছুনা ভাবি এমনিই।’
মৃথিলা নিরাকে শাড়ি পরিয়ে নিচে নিয়ে এলো।পাত্রপক্ষের নিরা কে দেখেই পছন্দ।ছেলের বাবা বলল, ‘ইদের পরে কাবিন , কালেমা সব হয়ে থাকবে।পরে নিরা আর আমার ছেলের লেখাপড়া শেষ হলে ওদের অনুষ্টান হবে। কি বলেন ইসহাক হাসান।’
ইসহাক হাসান হাসতে হাসতে বলল, ‘ব্যবসায়িক ডিল টা তাহলে এবার আরো পাকাপোক্ত হলো।তবে আমার নিরা কোনো ব্যবসায়িক ডিল নয়।আমার ক*লি*জা।আমার নিরাকে দেখে শুনে রাখবেন।আমার নিরার জন্য হাসতে হাসতে জা*ন ও দিতে পারি আমি।’
‘আপনার মেয়েকে আমিও আপনার মতোই দেখে শুনে রাখবো।কোনো চিন্তা করবেন না।’
ইদের আমেজ চারদিকে।শহরে রঙিন বাজি ফুটছে।রঙিন আলোয় শহর আলোকিত।মৃথিলা ঘরে বসে নিরব এর জন্য অপেক্ষা করছে।নিরব মাত্রই বাইরে থেকে এসেছে।নিরব কে দেখে মৃথিলা দ্রুত রান্নাঘর ছেড়ে উপরে গেলো।নিরব মাত্র শার্ট খুলে খালি গায়ে দাঁড়িয়েছে।আয়নায় মৃথিলাকে দেখা যাচ্ছে।মৃথিলা পেছন থেকে উঁকি দিচ্ছে।মৃথিলার পরনে সাদা আর লাল রং মিক্সড করা শাড়ি।মৃথিলা একদম নিরবের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে।নিরব পেছনে না তাকিয়েই মৃথিলার হাত ধরে টেনে সামনে এনে বলল,
‘আমার অন্তরচক্ষু সারাক্ষণ তোমাকে দেখতে পায় প্রিয়দর্শিনী।’
মৃথিলা নিরবের বুকে আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে আদুরে গলায় বলল, ‘আজ এত লেট হলো ক্যানো?আমি অপেক্ষা করছিলাম।’
নিরব দুষ্টুমির সাথে হেসে বলল, ‘ কেনো অপেক্ষা করছিলে। বিশেষ কোনো কারণ।’
মৃথিলার চোখ, মুখ লজ্জামিশ্রিত হলো।নিরব কে জড়িয়ে ধরলো শক্ত ভাবে।একদম মিশে গেলো নিরবের সাথে।নিরব মৃথিলার মাথায় চুমু দিয়ে বলল, ‘এমন সুন্দর বউ পৃথিবীর আর কারো নেই।আমার বউ আমার চোখে বিশ্বজাহানের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারী।কত ভাগ্যবান আমি।’
মৃথিলা লজ্জায় কিছু বলছে না।নিরবের নাক ডোবানো মৃথিলার চুলে।শ্যাম্পু আর চুলের ঘ্রাণ মাতাল করে ফেলছে নিরবকে।নিরব মৃথিলার ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে ঠোঁট ছুইয়ে বলল, ‘এখনি অনর্থ কিছু ঘটে যাবে।আমাকে বাঁধা দিতে পারবে না।’
মৃথিলা নিরব কে ধাক্কা মারলো।নিরব ভালবাসায় নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আছে মৃথিলার দিকে।মৃথিলা হাসিমাখা মুখে পেছনের দিকে তাকাচ্ছে আর ছুটছে।নিরব ও মৃথিলার দিকে ছুটছে।মৃথিলার পেছন দিকে তাকানো আর ছোটা দেখে মুগ্ধ নিরব।ভীষণ সুন্দর সে দৃশ্য। মৃথিলা ছুটতে ছুটতে একটা রুমে প্রবেশ করলো।ওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছে মৃথিলা।মুখে আর চোখে লজ্জামিশ্রিত হাসি।নিরবের কথা ভেবেই হাসি পাচ্ছে তার।এরই মাঝে নিরব প্রবেশ করলো রুমে।নিরব মৃথিলাকে মাঝে রেখে মৃথিলার দুই পাশে হাত রেখে মৃথিলার দিকে ঝুঁকে দাঁড়ালো।মৃথিলা আঙুল দিয়ে নখ কাটছে আর লজ্জামিশ্রিত ঠোঁটে তাকাচ্ছে নিরবের দিকে।নিরব প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকালো।তারপর প্যান্টের পকেট থেকে একজোড়া নূপুর বের করে মৃথিলার সামনে ধরলো।নূপুর দুটো দোল খাচ্ছে আর রিনিঝিনি শব্দ হচ্ছে।নিরব মৃথিলার ওষ্টে ওষ্ট স্পর্শ করে বলল, ‘ এই সুন্দর পা বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।ইশ আজ যদি তোমার পায়ের নূপুর হতে পারতাম। সারাক্ষণ তোমার ওই দুধে আলতা রঙের সুন্দর পায়ের সাথে লেগে থাকতে পারতাম।এই একটা জনমে নিজেকে ধন্য মনে করতাম আমি।তোমার পায়ের নূপুর হতে পারবো না জানি তোমার হৃদয়ের অংশ তো হতে পারবো।প্রিয়দর্শিনীর হৃদয় আঙিনায় প্রিয়র অংশ জুড়ে শুধু আমার বসবাস।আমি কত ভাগ্যবান দেখো।’
মৃথিলা মুগ্ধ নয়নে নিরব কে দেখছে।কি শীতলতা নিরবের চাহনিতে,কি ভালবাসা মাখা কথা। এইজন্যই বুঝি রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন তোমার চোখে আমার সর্বনাশ।নিরবের চোখে চাহনি মৃথিলার হৃদয়ে সেকেন্ডে সেকেন্ডে প্লাবিত করছে প্রেমের জোয়ার।এ কি নেশা,কি ভালবাসা যা চোখের চাহনিতে থাকে।নিরব বসে পড়লো হাঁটু গেড়ে।মৃথিলার ফর্সা পা হাঁটুর উপর রাখলো।নিরব মৃথিলার পায়ে চুমু খেয়ে বলল, ‘এর থেকে সুন্দর পা পৃথিবীতে নেই।’
মৃথিলা শিউরে উঠলো নিরবের ওষ্টের ছোঁয়ায়।শরীরের মাঝে বিদ্যুৎ তরঙ্গের ন্যায় ঢেউ খেলে গেলো।লোমকুপ এ ঠান্ডা বরফের শিহরণ বয়ে গেলো।মৃথিলা চোখ বন্ধ করে আছে।দুই হাতে শাড়ি মুঠো করে খামচে ধরে রেখেছে।অনুভূতির সর্বোত্তম ছোঁয়া পেয়েছে।নিরব নূপুর দুটো পায়ে পরিয়ে দিয়ে আবার ও দু পায়ের পাতায় চুমু দিয়ে বলল, ‘আমি যখন থাকবো না তখন ও এ নূপুর তুমি খুলবে না।ভাববে আমি হয়ে তোমার পায়ে জড়িয়ে আছি প্রিয়দর্শিনী।’
মৃথিলার হঠাত মন খারাপ হয়ে গেলো।হাতের মুঠো থেকে শাড়ি ছেড়ে দিলো।নিরবের দিকে আকাশ কালো ঘুটঘুটে অন্ধকার মুখ নিয়ে তাকালো।কিন্তু মুখে কিছুই বলল না।নিরব বুঝতে পেরে উঠে দাঁড়ালো মৃথিলাকে বুকে টেনে নিলো।বুকে টেনে নিয়ে কয়েকটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল, ‘জানিনা কতদিন বাঁচব।যতদিন বাঁচবো তোমাকেই ভালবাসবো।আর যদি সময়ের আগে ওপারে চলে যায় পরকালে আবার ও তোমাকেই ভালবাসবো।ইহকাল পরকাল দুই কালেই আমার তোমাকেই লাগবে প্রিয়দর্শিনী।’
এরই মাঝে বাইরে চিৎকার চেচামেচি শোনা যাচ্ছে।নিরব -মৃথিলা দুজনেই রুম থেকে বেরোলো।রহমত ছুটতে ছুটতে ডাক্তার আনতে যাচ্ছে।রাহিলা আর আরিফা দুজনে পানি নিয়ে ছোটাছুটি করছে।সবাই নিরার রুমের দিকে যাচ্ছে।নিরব মৃথিলাও গেলো।গিয়ে দেখে নিরা অচেতন হয়ে আছে। ইরিনা হাসান নিরার মাথায় পানি দিচ্ছে।ইসহাক হাসান ও দাঁড়িয়ে আছে।সবার কথা শুনে নিরব আর মৃথিলা বুঝতে পারলো নিরা সেন্সলেস হয়ে পড়ে গিয়েছে।নিরব আর মৃথিলা দুজনেই নিরার পাশে গিয়ে বসলো।এরই মাঝে রহমত ডাক্তার নিয়ে এসছে।ডাক্তার এসে সব পরীক্ষা করে বলল, ‘ নিরা মা হতে চলেছে।’
নিরব চমকে উঠলো সাথে মৃথিলা ও।ইরিনা হাসান আর ইসহাক হাসান এর পায়ের নিচে ভূমিকম্পন হচ্ছে।ইসহাক হাসান ধপ করে বসে পড়লো মাটিতে।ইরিনা হাসান নিরার দুই গাল টিপে ধরে বলল, ‘বাপ ভাইয়ের মুখ পোড়ালি। অলক্ষি এর চে*য়ে ম*র*লি না কেনো তুই।’
নিরব মায়ের হাত সরিয়ে নিয়ে বলল, ‘প্লিজ মা শান্ত হও।নিরা কে কিছু বলোনা।আজ খুব খারাপ লাগছে মা।ঠিক এইভাবে নীলাভ অনেক বাপ ভাই কে কলঙ্কিত করেছে।তোমাদের কাছে অনেক মানুষ এসে বিচার চেয়েছে তোমরা কি ভেবেছিলে তোমাদের সম্পত্তির লোভে মানুষ তোমার ছেলেকে ফাঁসাতে চাইছে।’
‘আজ বুঝতে পারছি বাবা।মা বাবার জন্য এসব কত বড় কলঙ্কের।এখন যা করার কর বাবা।’
মৃথিলা নিরা কে বলল, নিলয় কি এইকাজ করেছে।এই সন্তানের বাবা কি নিলয়।’
‘হ্যাঁ ভাবি।এই সন্তানের বাবা নিলয়।’
নিরব ফুশে উঠে বলল, ‘কে এই নিলয় ঠিকানা বল নিরা।পরিচয় টা বল শুধু। ‘
নিরা মৃথিলার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ভাবি এই বাচ্চা অবৈধ নয়।নিলয় আর আমি বিয়ে করেছি।’
নিরব হেসে দিয়ে বলল, ‘জানতাম আমার বোন কোনো ভুল করবে না।একদম চিন্তা করবি না।নিলয় আর তোর বিয়ে ধুমধাম করে ইদের পরের দিন ই হবে।নিলয় এর ফ্যামিলি কে দেখা করতে বল।’
ইসহাক হাসান এবার একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লেন।যাক এবার অন্তত তার সম্মান টা যায় নি।মেয়ের প্রতি তার ভীষণ দূর্বলতা।নিরার কপালে চুমু দিয়ে বলল, ‘সুখি হও মা।’
পরের দিন সকালে ইদ।নিরব আজ লাল কালারের পাঞ্জাবী পরেছে।মৃথিলা ই পাঞ্জাবী টা এনেছে।নিরব কে বলেছে আজ সে কালো নয় লাল পাঞ্জাবী পরবে।নিরব লাল পাঞ্জাবী পরে দাঁড়িয়েছে।মৃথিলা নিরবের প্রিয় রং কালো শাড়ি পড়েছে।মৃথিলা নিরব কে সালাম করে হাত বাড়িয়ে দিলো।নিরব পকেট থেকে চাবি,মানিব্যাগ সব বের করে দিয়ে বলল, ‘নাও সব তুলে দিলাম তোমার হাতে।’
মৃথিলা নিরবের পাঞ্জাবীর বোতাম লাগিয়ে দিতে দিতে বললো, ‘লাল কালারে সুন্দর লাগছে আপনাকে।’
‘লাল হলো ভালবাসার কালার।’
‘হুম আবার র*ক্তে*র ও নিশান।’
এরই মাঝে কুতুবের মা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে পড়েছে।সে কোনো কথা ই বলতে পারছে না।শুধু ঘেরের দিক ইশার দিয়ে দেখাচ্ছে।নিরব মৃথিলা,ইরিনা,ইসহাক হাসান সবাই ছুটে গেলো।ঘেরের পাড়ে গিয়ে সবাই এমন এক ধাক্কা খেলো কেউ ই এমন মর্মান্তিক দৃশ্যর জন্য প্রস্তুত ছিলো না।ইরিনা হাসান মাথা ঘুরে পড়ে গেলো।ইসহাক হাসান ধপ করে বসে পড়লো।মৃথিলা এক চিৎকার দিলো।নিরব যেনো বাকরুদ্ধ।
সারি সারি তিনটা লা*শ পড়ে আছে।একটা নিলয় এর একটা নিরার একটা রহমত এর।নিরার গলায় কেউ ধারালো ছুরি দিয়ে জ*বা*ই করেছে।নিলয় এর ও তাই।রহমত কে কুঁ*পি*য়ে হ*ত্যা করা।নিরার হাসি মুখ টা আর নেই।এই মেয়েটা আর উঠে ছটফট করবে না।চঞ্চল পাখির মতো বাড়ি দিয়ে ঘুরবে না।নাচবে না, গাইবে না, নিরব কে দাদাভাই বলে জড়িয়ে ধরবে না,মৃথিলাকে ভাবি ভাবি করে পা*গ*ল করে তুলবে না।শান্তির নীড় ভবনের শান্তির একমাত্র কারণ নিরা।ইসহাক হাসান কি নিজেকে সামলাতে পারবে।
পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় সদস্যকে হারাতে হবে কেউ বুঝতে পারে নি।নিরার পরনে নিরবের গত ইদের ড্রেস।ইদের আগে নিরবের গলা জড়িয়ে ধরে বলেছিলো দাদাভাই বাদামি গাউন টা আমার চাই।আজ ও সেই ইদের দিন।বোনকে ইদের সালামির পরিবর্তে মাটির নিচে রাখতে হবে।নিরব নিরা কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে।এই নিথর প্রাণ টা আর নড়বে না।মৃথিলা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে মা নিরার মৃ*ত্যু। নিরার হাসি মুখের টোল টার দিকে তাকালে সবার প্রান জুড়িয়ে যায়।এই রহমত কে ই বা কে মা*র*লো।সব টায় জটিল রহস্য।
চলবে…..