#প্রণয়ের আসক্তি
পর্ব ৪০ এবং অন্তিম পাতা।
#writer_Mousumi_Akter
পুলিশের সমস্ত কর্মকর্তাদের মুখ মলিন মুখে হাসি নেই।ডিআইজি অফিসার মাথা নিচু করে বললেন, ‘কখনো ভাবতে পারিনি নিরবের মতো একজন দায়িত্ব পরায়ণ অফিসার কে এরেস্ট করা লাগবে।জীবন সিনেমার থেকেও কঠিন।’
মৃথিলা বিচলিত হয়ে বলল, ‘কিন্তু কেনো? ওনি কি করেছেন?’
‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার জন্য,পাচারকারীদের পাশাপাশি ও কিছু মানুষের জীবন নিয়েছে যারা নির্দোষ ছিলো।নিজের,মা-বাবা,ভাই,চাচা সবাইকে নিজ হাতে খু*ন করেছে।এছাড়া এদের সাথে যারা জড়িত আছে দোষ সম্পূর্ণ ছিল না তবুও নিরব তাদের খু*ন করেছে।নিরব যদি তাদের আইনের হাতে তুলে দিতো।নিরব ক্যানো এমন করল বিশ্বাস ই হচ্ছেনা।নিরব তার সমস্ত অন্যায় স্বীকার করেছে।’
মৃথিলা এবার আরো বেশী অবাক হয়ে বলল, ‘মা’ মানে।’
ডিআইজি বললেন, “নিয়ে চলো।’
মৃথিলা নিরব কে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে বলল, ‘ওনি কাউকে মারেন নি।ওনাকে নিবেন না,ওনি কিচ্ছু করেন নি।’
নিরবের ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছুই করার নেই।চোখ দুটো বন্ধ করে আছে।যাওয়ার আগে মৃথিলার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে বলল, ‘এইপারে হয়ত আর এত কাছাকাছি হবোনা আমরা দু’জন।’
পুলিশ নিরব কে নিয়ে যাচ্ছে।মৃথিলা নিরবের হাত টেনে ধরে বলল, ‘আপনাকে কেনো নিচ্ছে ওরা।আপনি তো কিছুই করেন নি।প্লিজ ওকে নিবেন না।ও কিচ্ছু করে নি।যা করার আমি করেছি।সব খু*ন আমি করেছি।আমাকে নিয়ে যান,ওনাকে ছেড়ে দিন।’
কেউ মৃথিলার কোনো কথা শুনল না।নিরব কে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে গেলো।
মৃথিলা ভয়ানক চিৎকার দিয়ে গাড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করল।ছুটতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলো।রিফাত মৃথিলাকে ধরে ওঠালো।রিফাত নিজেই একটা আস্ত পাথরের ন্যায় হয়ে আছে।মৃথিলা হাত পা ছোড়াছুড়ি করছে আর কাঁদছে।মৃথিলার কাঁন্নায় ঘুমন্ত শহর ও হয়ত জেগে উঠল।রিফাত অশ্রুসিক্ত নয়নে বলল, ‘মৃথিলা আমাদের কারো ভাগ্য ভালবাসা নামক শব্দ ছিলো না।আমাদের ভাগ্য ভীষণ খারাপ।সুপ্তি ছাড়া প্রতিটা প্রহর কত বেশী যন্ত্রণায় কাটছে আমি ছাড়া এই নিষ্টুর পৃথিবীর কেউ তা জানেনা।আমার সুপ্তি তোমাকে এত বেশী ভালবাসত নিরবের বাবার চক্রান্ত থেকে তোমাকে বাঁচাতে নিজের প্রাণ দিয়েছে।নিরব আর সুপ্তি আমার দুইটা কি-ড-নি।’
‘কিন্তু নিরব কে ক্যানো নিয়েছে?নিরব কিভাবে খু*নি হলো।’
‘তোমাকে বাঁচাতেই নিরব সব দোষ নিজের কাধে নিয়েছে।তুমি যখন নিঁখোজ হলে ঠিক তখন ই তোমার সব খোজ খবর নিয়ে নিরব জানতে পারে তুমি ছিলে পবিত্র একটা মেয়ে।সদ্য ফোটা ফুলের মত পবিত্র।তোমার এমন একটা জীবনে আসার জন্য তুমি দায়ী নও।নিরব নিজেকে দায়ী মনে করে।নিরব তখন ই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তোমাকে সব টা জানিয়ে সব দোষ নিজের কাধে নিবে।’
‘আমি ওনাকে ধোকা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনি,আমি ওনার যোগ্য ই না।আমি ছলনাময়ী,আমি ছলনা করে ওনার নিষ্পাপ ভালবাসা আর আবেগ নিয়ে খেলা করেছি।ওনাকে ঠকিয়েছি,তীলে তীলে কষ্ট দিয়েছি।এই এত কিছুর পরেও ওনি কিভাবে আমাকে এতটা ভালবাসতে পারেন।এইভাবে আমাকে আসহনীয় যন্ত্রণা দিয়ে ওনি মুক্তি পেতে পারেন না।’
‘আমি নিরব কে বুঝিয়েছি মৃথিলা, কিন্তু নিরব এর একটা কথায় আমি দূর্বল।আমার সন্তানের মায়ের গায়ে খু*নের কালিমা লাগতে দিবোনা।তাছাড়া ইচ্ছাকৃত যদি মৃথিলা এমন করত আমি নিজেই শাস্তি দিতাম।’
‘আমি ওনাকে নির্দোষ প্রমাণ করব।আমি ওনাকে এইভাবে আমার সমস্ত অপরাধ কাঁধে নিতে দিবোনা।ওনি কি ভেবেছেন ওনাকে ছাড়া আমি বেঁচে থাকব।’
সারাটা রাত মৃথিলা ছটফট করেছে।পরেরদিন রিফাতের সাথে থানায় গিয়ে মৃথিলা সত্যটা বলে।কিন্তু পুলিশ কিছুই বিশ্বাস করেনি।অফিসার মৃথিলার মাথায় হাত রেখে বলল,
‘নিরব কে তুমি কত বেশী ভালবাসো আমরা জানি।নিরব আমাদের বলেছে তুমি এসে তার দোষ তোমার কাধে নেওয়ার চেষ্টা করবে।এমন ভালবাসা সত্যি আজকাল দেখা যায়না।কি করব আমরা চেষ্টা করব নিরব কে বাঁচানোর।কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হবেবা।কেননা আইন নিজ হাতে নিয়ে এত গুলো খু*নের শাস্তি ফাঁসি হবে।দোষীদের মারার অপরাধ কিছুটা শাস্তি কমানো যেতো কিন্তু পাশাপাশি পাচারকারীদের সাথে যারা সহযোগিতায় ছিলো তাদের খু**ন করেছে একাধিক।’
মৃথিলা কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘স্যার একবার ওনার সাথে দেখা করতে চাই।’
মৃথিলাকে নিরবের কাছে নেওয়া হলো।নিরব আজও হাসি মুখে তাকিয়ে আছে তার প্রিয়দর্শিনীর দিকে।মৃথিলা বেসামাল কাঁন্নায় ভেঙে পড়ে বলল, ‘আপনাকে ছাড়া আমি বাঁচব না,কিছুতেই না।কেনো পুলিশ আসার আগে আমাকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন না আপনি।’
নিরব একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
‘তোমার কাঁন্না আমি সহ্য করতে পারিনা মৃথিলা।প্লিজ আমাকে দূর্বল করে দিওনা।আমি আইনের পোশাকের সাথে বেইমানি করতে পারিনি।তাহলে বেঁচে থেকেও মরার মত হয়ে থাকতে হত।’
‘আমি বাঁচব না আপনাকে ছাড়া,কিছুতেই না।আপনি আমাকে এ কি জীবন দিলেন।আমি এখন কি করব বলুন না।আমি সহ্য করতে পারছি না।”
নিরব মৃথিলার হাত দুটো ধরে বলল,
‘তোমাকে বাঁচতেই হবে মৃথিলা।আমার সন্তানের খু*ন করোনা।যদি আমার সন্তান কে এই পৃথিবীতে না আনো আমি তোমাকে কখনো ক্ষমা করব না।কথা দাও নিজের কোনো ক্ষতি করবে না।’
‘প্রতিশোধ নিলেন তাইনা?আপনাকে যেটুকু কষ্ট দিয়েছি তার সুদে আসল ফেরত দিচ্ছেন।যখন সব সত্য জানলাম খুশিতে পা-গ-ল লাগছিলো।আমার ভালবাসা আমার কাছেই থাকবে।সুখ আমার কপালে নেই,কিচ্ছু নেই আমার ভাগ্য।আপনার যদি কিছু হয় আমি নিজেকে শে*ষ করে ফেলব।আপনি বেরিয়ে আসুন এখান থেকে নাহলে আমাকে মরতে দিন এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিন।আমাদের দুজনের সব কিছুই তো অপূর্ণ রয়ে গেলো।আমি এতদিন যা করেছিলাম সব অভিনয়।আজ আমি হৃদয় থেকে চাইছি আপনাকে আর আজ আপনি এত দূরে।’
‘আমাদের কিছুই অপূর্ণ নেই,সব কিছুই পূর্ণ হয়েছে।যা তুমি অভিনয় বলছো তাই সত্যি ছিলো।তুমি নিজেও জানো অভিনয় করতে চেয়েছিলে কিন্তু পারোনি।ভালবেসেছিলে আমাকে আর ভালবাসো।’
ভালবাসার নিদারুণ এক পরিস্হিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে নিরব-আর মৃথিলা।কেউ কাউকে এতটা ভালবাসতে পারে।এতটা ভালবাসাও যায়।মৃথিলার আইনজীবী সমস্ত সত্য শুনে যেনো শিউরে উঠলেন।এমন ভয়ংকর ভালবাসার গল্প সে আগে শোনেনি।ভালবাসা বাঁচাতে কেউ এইভাবে নিজের জীবন দিতে পারে।মৃথিলার আর্তনাদে আইনজীবীর চোখ ভেষে যাচ্ছে।এমন ভালবাসার মানুষ কে ছেড়ে মৃথিলা কিভাবে বেঁচে থাকবে।
রিফাত সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে নিরব কে বাঁচানোর জন্য।মৃথিলা রেগুলার অপেক্ষা করছে আজ বুঝি নিরবের মুক্তি হবে।
ছয় মাস পর, রাত দুইটা বাজে।রিফাত মৃথিলাকে ফোন দিয়ে বলল, ‘একটু নিচে এসো নিরবের মুক্তি হয়েছে।’
মৃথিলা খুশি হয়ে উন্মাদের মতো ছুটে গেলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। কিন্তু সেখানে গিয়ে মানুষের ভিড় দেখে মৃথিলা সংকিত হলো।নিরবের লাশ ঘিরে রয়েছে সবাই।রাত বারোটায় ফাঁ*সি হয়েছে নিরবের।যত বড়ই অপরাধী হোক আইনের আওতায় না এনে কোনো পুলিশ কে না জানিয়ে একাধারে নিজের পরিবার সহ আরো অনেক মানুষ কে খু**ন করায় ফাঁসি হয়েছে নিরবের।সমস্ত পুলিশ স্টাফ রা কাঁদছে।মৃথিলা নিরবের লাশ দেখে চিৎকার দিয়ে পড়ল।সে মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা এসবের জন্য।
‘তোমাকে অনেক সাধনার পরে আমি পেয়েছিলাম।আমাকে এভাবে ছেড়ে যেওণা।আমার কেউ নেই তুমি ছাড়া।তুমি আমাকে কিছুই বলে গেলেনা।আমি কিভাবে থাকব তোমাকে ছাড়া।আমাদের সন্তান কে আমি কি বলব।’
এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য সাক্ষী ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার।মৃথিলার আত্মচিৎকারে কাঁদছিলো সবাই।রিফাত মৃথিলার হাতে একটা চিঠি দিলো।মৃথিলা চিঠিটা খুলল,
প্রিয়দর্শিনী,
কিছুক্ষণ পর আমি আর এই পৃথিবীর বুকে থাকব না।তোমার ওই দুধে আলতা বরণ শরীরে কালো শাড়ি জড়াতে আর বায়না ধরব না।তোমার চোখের মায়ায় আমি আর মরব না,কারণ পরকালের ডাক আমি পেয়ে গিয়েছি। আমি স্তব্ধ হয়েছি বহুবার তোমার চোখের চাহনিতে।ওই চোখের চাহনিতে অদ্ভুত এক মায়া আছে। ওই মায়া কাটাতে আমি কোনদিন পারব না, সেই সামর্থ আমার নেই।তোমার প্রতি আমার ভীষণ আসক্তি।তোমাকে দেখার আসক্তি আমার কোনদিন শেষ হবেনা।প্রণয় চেয়েছিলাম আমাদের দুজনের।কিন্তু এমন ভয়ংকর প্রণয় আমি চাইনি।যার আসক্তি আজীবনের মতো থেকে গেলো আমার।তোমার সরল মুখটা সারাক্ষণ চোখের সামনে ভেষে উঠছে।তোমাকে আর জালানো হবে না আমার।রোজ নিয়ম করে আর তোমার কাজল কালো চোখে তাকিয়ে আর মন হারাবে না আমার।রোজ ঘুম থেকে উঠে আর তোমার খোলা চুল দেখা হবেনা,তোমার গাল ভরা হাসি আর আমি কোনদিন দেখতে পাবো না।তোমার নূপুরের শব্দ আর আমার কানে ঝংকার তুলবে না।দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আমার,নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছে।এসবের মায়া আমি কাটাতে পারব না কোনদিন।ভীষণ বাঁচতে ইচ্ছা হচ্ছে এই পৃথিবীর বুকে। তোমার হাত ধরে আরো একটা যুগ যদি বাঁচতে পারতাম।আফসোস আমাদের গন্তব্য থেমে গিয়েছে।মরতে চাইনি আমি,তোমাকে একা করতে ও চাইনি আমি।আমাদের ভালবাসার পরিণতি এমন ভয়ংকর হলো কেনো বলোতো।জীবন য়া তো অন্যরকম ও হতে পারত।না চাইতেও অনেক কিছু আমাদের মাথা পেতে নিতে হয়। তোমাকে আমার আর পাওয়া হলোনা,তোমাকেও পেয়ে পাওয়া হলোনা।তোমাকে ছুঁয়েও ছুতে পারলাম। কাছে পেয়েও ধরে রাখতে পারলাম না।কিছুই করার ছিলোনা আমার।তোমার ওই নিষ্পাপ শরীরে আমি সাদা কাফন দেখে সহ্য করতে পারতাম না।তাই নিজেই চলে যাচ্ছি।তুমি পবিত্র ছিলে,তোমার পাপ আমি গ্রহন করে তোমাকে আবারো সেই পবিত্রতা ফিরিয়ে দিলাম।কিন্তু এত কিছুর পরেও তুমি ভাল থাকবেনা জানি।আমি পারলাম না তোমাকে সুখি করতে,আমাকে ক্ষমা করে দিও।কখনো সাদা শাড়ি জড়িও না শরীরে।রোজ নিয়ম করে আমার কবর দেখতে এসো।আমি তোমাকে ছাড়া অন্ধকারে একা থাকব,কষ্ট হবে।জানি তোমার ও ভীষণ কষ্ট হবে আমাকে ছাড়া।আমাদের পথচলা এটুকুই ছিলো।নিয়তির কাছে হেরে গেলাম। কিন্তু ভালবাসার কাছে হারিনি আমি।কখনো ভাবিনি এমন একটা চিঠি লিখতে হবে।ওপারে দেখা হবে আমাদের কারণ দুজনের ভালবাসা সত্য আর পবিত্র।আমাদের সন্তান কে বলো ওর বাবা ওকে ভীষণ ভালবাসে।’
কেটে গিয়েছে দীর্ঘ দশ বছর।নিরবের মৃত্যু বার্ষিকী।মৃথিলা নিরবের চিঠিটা পড়ছে আর হাউমাউ করে কাঁদছে।এই জীবন টা কবে শেষ হবে সেই যন্ত্রণায় ভুগছে মৃথিলা।কবে পরপারে পাড়ি জমিয়ে নিরবের কাছে যাবে।নিরব তার ডায়রিতে লিখে গিয়েছিলো,
“গল্পটা আমাদের ছিলো ঠিক ই কিন্তু বিচ্ছেদ টা আমাদের ছিলো না।বিচ্ছেদ টা তোমার একার পক্ষের ছিলো।কি অদ্ভুত তাইনা?নিজেই আমার জীবনে আসলে আবার বিচ্ছেদ ও তুমি চাইলে।ক্ষত থেকে গেলো আমার হৃদয়ে। এমন এক ক্ষত যা তোমাকে দেখানো তো যাবে না তবে আমাকে বহন করতে হবে আজীবন প্রিয়দর্শিনী।”
মৃথিলা হুহু করে কেঁদে উঠল।কত কষ্ট নিরব পেয়েছিলো।যন্ত্রণায় পুড়ে যাচ্ছে হৃদয়। নিরবের ছেলে নিবিড় হুবহু নিরবের মতোই হয়েছে দেখতে।রিফাত কে মামা ডাকে সে।রিফাত নিজের বোনের পরিচয়ে নিজের পরিবারের সাথে রেখেছে মৃথিলাকে।সুপ্তির বড় একটা ছবি টাঙানো ঘরের ওয়ালে।রিফাত রোজ ছবিটার সাথে কথা বলে।নিবিড় রিফাতের হাত ধরে বলছে,
‘মামা সুপ্তি মা কেমন ছিলো।’
‘একদম তোমার মায়ের মতো ছিলো।আজ থাকলে তুমি দু’টো মা পেতে সোনা।’
‘আর আর পাপা কি তোমার মতো ভাল ছিলো।’
‘আমার চেয়েও অনেক ভাল ছিলো।তোমার বাবার মতো কেউ কোনদিন হতে পারবেনা।’
নিবিড় সুপ্তি আর নিরবের ছবিতে হাত বুলোচ্ছে আর কাঁদছে।
‘পাপা সুপ্তি মা তোমাদের জন্য মা রোজ কাঁদে।ক্যানো মা আর মামাকে রেখে চলে গেলে।পাপা সবার পাপা আছে শুধু আমার নেই।আই মিস ইউ পাপা।’
মৃথিলা নিবিড় কে কাছে টেনে বলল, ‘কাঁদে না বাবা। তোমার পাপা আর সুপ্তি মা তোমাকে ভীষণ ভালবাসে।’
নিবিড় কে জড়িয়ে ধরে মৃথিলা ভীষণ কাঁদছে।আর নিরব আর সুপ্তি থাকলে তাদের জীবন টা কত রঙিন হতো।ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মৃথিলার।নিরবের জন্য হৃদয় টা জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।নিরব ছাড়া প্রতিটি মুহুর্ত যন্ত্রণাদায়ক মৃথিলার।প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ে নিরব তাকে কত ভালবেসেছিলো।
সমাপ্ত।
(প্রিয় পাঠক মহল প্রথম থেকেই থিম টা এভাবেই ভাবা ছিলো।বাস্তব জীবনেও এমন কিছু ঘটে যা আমরা মেনে নিতে পারিনা,তবুও মেনে নিতে হয়।উপন্যাসে আমি ফুটিয়েছি মৃথিলার জীবনের অসহায়তা,নিরবের কঠিন ভালবাসা,সুপ্তি আর রিফাতের নিঁখুত বন্ধুত্ব। আরো গুছিয়ে লিখলে আরো ৩০ পর্বের মতো হতো উপন্যাস টা।পরীক্ষার জন্য দ্রুত শেষ করা।এই উপন্যাসের রহস্য আর চরিত্র গুলোর প্রতি আলাদা টান আমার কোনদিন যাবেনা।সবাই ভালবাসার জ্বলন্ত উদাহরণ।)