খুব স্বাভাবিকভাবেই রোনালদোকে আমি কখনও পছন্দ করি নাই। ছোটবেলা থেকে নিজের প্রিয় ফুটবলারের একমাত্র রাইভালকে পছন্দ না করাই আমার জন্য যৌক্তিক ছিলো। সে খারাপ করলে আমার ভালো লাগতো। তার ভরাডুবি দেখে আনন্দ পাইতাম। বিশেষ করে মেসিকে নিয়ে তার এবং তার ফ্যামিলির অবসেশন আমার বিরক্তি আরও বাড়ায় দিতে থাকছে।
কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে এগুলা আর এক্সট্রিমলি ওইভাবে কাজ করে নাই।
ইয়েস, তাকে নিয়ে প্রচুর ট্রল, ব্যান্টারিং আর স্লেজিং করছি এর পরেও। কিন্তু ডীপ ডাউন আমি কখনওই ভুলে যাই নাই, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কে।
২০০৪ সাল থেকে পর্তুগাল টিমটায় সে আছে। এর মধ্যে তার অবদান কী বা কতটুকু তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার সময়েই দলটা তাদের ইতিহাসের একমাত্র ট্রফি ইউরো জিতছে, পরে ন্যাশনস লীগ। সে এর মধ্যে পর্তুগাল পরে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ন্যাশনাল এবং ওভারঅল স্কোরার হইছে।
এটা তো অস্বীকার করার উপায় নাই যে, লাস্ট ডিকেডে অর্থাৎ রোনালদোর প্রাইমে আজকের মতো এমন ট্যালেন্ট আর অভিজ্ঞতায় ভরপুর টিম পর্তুগাল ছিলো না। এমনও সময় গেছে যখন পর্যাপ্ত রিসোর্স না থাকায় পেপে এসে মিডফিল্ডে খেলতেছে। আর্জেন্টিনায় একসময় যেটা হতো, মাশ্চেরানো মিডে খেলছে কারণ দলে কোনো মিডফিল্ডারই ছিলো না।
বাস্তবতা হলো আজকের এই এম্বাপ্পে নিয়া যে এতো মাতামাতি, তার মতো সোনার চামচ মুখে নিয়া মেসি বা রোনালদো জন্মায় নাই। এম্বাপ্পে জন্মের পরই ফ্রান্সের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ টিমটা পাইছে। অথচ মেসি বা রোনালদোদের প্রাইম টাইমে তাদের দলের দিকে তাকাইলে হাসিও পায় না, কান্নাও আসে না। তারা দুজনেই একা হাতে আর্জেন্টিনা আর পর্তুগালকে টেনে নিয়ে গেছে। তাও এক যুগের বেশি সময় ধরে।
তো, সেই পর্তুগাল আজকে প্রতিটা পজিশনে এমন স্বয়ংসম্পূর্ণ, এমন ডেডলি ফুটবল খেলতেছে অথচ আয়রনি হলো, এই সবই রোনালদোর এন্ডিং ফেজে।
নিচের ছবিটা দেখে মনটা খুবই খারাপ হলো। রোনালদো আমার প্রিয় ফুটবলার না হতে পারে, কিন্তু ফুটবলের ইতিহাসে রোনালদো এমন একটা চ্যাপ্টার যেটা প্রতিটা পরীক্ষায় কমন থাকবে।
.
Caption: Abir Abraz