#স্বার্থপর
পর্ব – ১
আমার বিয়ের ৩ দিনের মাথায় অামার ভাসুররা মিলে পারিবারিক বৈঠকে বসলো। আমার বরের ৩ ভাই।সেই একেবারে ছোট।তার নাম জহির৷ বিয়ে উপলক্ষে সবাই এসেছেন গ্রামের বাড়িতে। মাঝের রুমে সবাই আছেন। ৪ ভাই এবং ভাবিরা, সাথে আমিও। নতুন বউ এক কোনায় জুবুথুবুহয়ে বসে আছি। বুঝতে পারছিনা সবাই এমন গম্ভীর হয়ে কি আলোচনা নিয়ে বসলো।বিস্ময় নিয়ে তাকাচ্ছি সকলের চরহারার দিকে। আমার মত আরো একজন অন্য কোনায় ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে বসে আছে, তিনি আমার শ্বাশুড়ি৷ শ্বশুরমশাই গত হয়েছেন অনেক বছর৷
সেজভাবি অনেক্ষণ সেজভাইয়ের পেছনে খোঁচাখুঁচি করছে কথা শুরু করার জন্য। অবশেষে সেজভাই যে বক্তব্য পেশ করলেন তার সারমর্ম হচ্ছে, অনেক বছর আম্মা অর্থাৎ আমার শ্বাশুড়ি মা সেজ ভাইয়ের কাছে ছিলো। এখন তিনি বেশ অর্থকষ্টে আছে সুতরাং আম্মাকে আর রাখা সম্ভব হচ্ছে না তার কাছে। আমি আম্মার দিকে তাকালাম। তিনি ভাবলেশহীন যেন আগে থেকেই জানতেন এমনই হবে। সেজভাইয়ের কথা টেনে নিয়ে মেঝভাই বললেন অর্থকষ্ট কিসের প্রতিমাসে আম্মার জন্য টাকা কি পাঠানো হয় না? মেজভাই ব্যাকের বড় কর্মকর্তা৷ মেজভাবিও চাকরি করেন৷ ভাইদের মধ্যে তিনিই বেশ সচ্ছল।
সেজভাই উত্তরে বললেন, আম্মার বয়স হয়েছে। সার্বক্ষনিক একজন দরকার হয় তার সেবাযত্ন করার৷ আমি তো অনেক দেখলাম এবার আপনারা শহরে নিয়ে লোক রাখেন আম্মার জন্য।আমি গরিব মানুষ আমার এত সামথ্য কই। মেজভাবি চোখ ছাড়াবড়া করে বললেন, তুমি জানোনা আমরা দুজনেই চাকরিজীবী। আমার মেয়েটা কত ছোট। কয়জন কে দেখে রাখার লোক রাখবো আমি৷ বড়ভাবি তো সারাদিন ফ্রী থাকে বাসায়। ভাবির বাসায় নিয়ে রাখুক না।
ধনুক ঘুরে তীর বড় ভাবির দিকে ঘুরে যাবে তিনি হয়ত বুঝে উঠেন নি, কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললেন। ফ্রী…?ফ্রী কি জিনিস। তোমাদের মত ২/৪ টা কাজের লোক পুষতে পারলে বলতে পারতে বড়ভাবি ফ্রী। তখন কাউকে বলা লাগতো আম্মা কোথায় থাকবে৷ আমার ঘরভর্তি মানুষের সেবা করে কুল পাইনা। আর তুমি আমাকে কে ফ্রী দেখ? কোন দিক দিয়ে আমি ফ্রী?
মেজভাবি তেলে বেগুনে জলে উঠে প্রতিউত্তর দিলেন৷ মুহুর্তেই ঘরটায় গুনগুন উঠে । সেজভাবি ফিসফিস করে তার স্বামীকে বললো, যাই হয়ে যাক তুমি কিন্তু মাকে রাখতে রাজি হবে না,তিনি কাচুমাচু মুখ করে মাথা নাড়লেন। অন্যদিকে ভাবিরা তর্কাতর্কি করে যাচ্ছে৷ আমার বরের দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকালাম সে হাঁদারামের মতই দাঁড়িয়ে আছে, সম্ভবত কারো উপর কথা বলার অভ্যেস তার নেই। অবশেষে বড়ভাইরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বললেন আম্মা বৃদ্ধাশ্রমেই থাকুক সেখানে দেখে রাখার লোক আছে। আমি আমার বরের দিকে আবার তাকালাম, সে নিশ্চুপ। যা বলার আমাকেই বলতে হবে।মুখরা হিসেবে আমার তেমন নাম নেই তবু এ সুযোগ হাতছাড়া করার প্রশ্নই আসে না, শুধুমাত্র এ জন্যই এ বাড়ির বউ হয়ে এসেছি আমি। আল্লাহই আমাকে এ সুযোগ করে দিয়েছেন।
একটু গলা পরিষ্কার করে ভাইজান বলে ডাক দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ৭ জোড়া চোখ তাকালো আমার দিকে। আমার বরের চোখে বিস্ময় আমি আবার কি বলে ফেলি৷ শুধু আম্মা আগের মতনই জানালার বাইরে তাকিয় আছেন। আমি বলতে শুরু করলাম, আপনারা কেউ যদি কিছু মনে না করেন, মানে যদি আপনারা অনুমতি দেন, ইয়ে… বলছিলাম আম্মা যদি আমাদের সাথে থাকে…. ‘ বলেই আড়চোখে জহিরের দিকে তাকাই।
আমার জায়েরা কটাক্ষ করে বললেন, কটা বেতন পায় তোমার বর, দুদিন পর তো সেই আমাদের ঘাড়েই পড়বে। তার চে যা হচ্ছে হোক না..
আমি ভরসা নিয়ে বড় ভাসুরের দিকে তাকালাম। বড় ভাসুর বললেন,’ তবে তাই হোক। ছোট বউ যখন চাচ্ছে আম্মা জহিরদের সাথেই থাকুক। ‘প্রথমবারের মত আম্মা বিস্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকালেন। আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। ভাইরা যে যার বাড়ি ফিরে গেলেন।
আমার স্বামী ঢাকায় একটা ছোটখাটো চাকরি করেন। সপ্তাখানের মধ্যেই আম্মাক নিয়ে ঢাকায় চলে আসি আমরা। আমাকে গল্পের নায়িকা ভাবার কোনো কারন নাই। আমি ভাইদের চেয়েও স্বার্থপর। কি করবো এ ছাড়া উপায় ছিলো না আমার…..
…….…………………চলবে………………………
স্বার্থপর
২য় ও শেষ পর্ব
আম্মাকে নিয়ে ঢাকায় এলাম। আমি খুশি, ভীষণ খুশি। যা দেখছি তাই ভালো লাগছে। খুশিতে ছটফট করছি আমি।কুড়ি বছর বয়সে স্বামী ও সংসার নিয়ে যতটুকু উচ্ছাস আমার থাকার কথা ছিলো তার সিংহভাগ শুধু মাত্র মার জন্যই। সেই ছেলেবেলা থেকে যে লোভ পুষে রেখেছিলাম, সেই সোনার ডিমের রাজহাঁস আমি পেয়েছি। ছোট্টবেলা থেকে আমার একটাই লোভ, একটাই দুর্বলতা, একটাই চাওয়া৷ স্নেহ কেবল মায়ের স্নেহ।
পৃথিবীতে সবচেয়ে দুঃখির তালিকায় অন্যতম কারা আছে জানেন? যাদের জীবনে মা বাবার কোনো স্মৃতি নেই। নেই মানে একেবারেই নেই। বাবা কিংবা মায়ের অস্তিত্ব কেবলই কল্পনা। আমি সেই অভাগাদের একজন। আমার জন্মদিন মায়ের মৃত্যুদিন। আমার জন্মদিন বলেই কিছু ছিলো না । একমাত্র বাবা ছাড়া সকলেই অপয়া,অলক্ষী এসব বলে দূরে ঠেলে দিয়েছিলো।
আমার জগৎ ছিলো শুধু বাবা আর আমি। মানুষের জীবনে কত ভালবাসার মানুষ থাকে, বাবার জীবনের ভালোবাসার মানুষ কেবল আমি। আমি তার আঁধার ঘরের বাতি। বাবা আমাকে এত বেশি ভালোবাসতেন যেন মায়ের অভাব কখনো না বুঝতে হয়, তবু একটু বড় হতেই আমার মধ্যে শূন্যতা তৈরি হতে লাগলো। মায়ের জন্য শূন্যতা। বাবাকে অনেক বুঝিয়েও কেউ বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারলো না,কারন আমাকে অপয়া ভেবে আমার চাচি জেঠীদের দূরছাই আচরণ আমার বাবার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিলো নতুন মা আমাকে কোনোদিন ভালোবাসবে না। আমার জীবন কাটবে অবহেলায় তা বাবা হতে দেবেন না কখনো।
আমাদের দোচালা ঘরে দুটো মাত্র কামরা। আমি আর বাবা আর কেউ নেই। বাবা রোজ সকালে বাজার ঘরে দোকানে বসেন৷ রান্না বান্না বাবাই করেন। আমি বাবার পাশে বসে থাকি, বাবা গুটগুট করে পৃথিবীর সব মজার মজার গল্প বলেন। আমার একটা অভ্যেস হয়ে গেছিলো, মনে মনে সব কিছুতে আমি মায়ের সাথে তুলনা খুজতে থাকতাম৷ মা যদি থাকত, মাও কি এমন করেই রান্না করতো, আমাদের আজ কেবল ডিম তরকারিই রান্না হতো? মা থাকলে আমাদের মাটির মেঝেটাকি ঝকঝক করতো, মা কি আচাঁর বানাতো, স্কুল থেকে দেরী করে ফিরলে কি বকতো আমাকে? এলোমেলো চুল গুলো ঝুঁটি বেঁধে দিতো? ক্রমে ক্রমে এ অভ্যেস আমার নিত্যদিনের রুটিন হয়ে গেলো।
আমাদের বড় বাড়ি, মানুষজনে ভরপুর তবু বেশিরভাগ সময় আমি একাই কাটাতাম। স্কুল থেকে ফেরার পর দীর্ঘসময় আমি একাই থাকতাম। চাচাতো ভাইবোনরা মিশত না আমার সাথে, আমার চাচি জেঠীদের ধারনা আমি একজন অপয়া, আমার জন্যই মায়ের মৃত্যু। যেহেতু একাই থাকতাম বেশিরভাগ সময় কল্পনায় আমি আমার মাকে তৈরি করতে থাকলাম।নিজের চেহারায় বাবার অংশ বাদ দিয়ে মা কে বোঝার চেষ্টা করতাস মা আসলে কেমন ছিলেন। আমার চাচিরা ‘চাচি’ হিসেবে হয়ত ভালো ছিলেন না তেমন তবে মা হিসেবে ছিলেন অসাধারন৷ আমি প্রত্যেকজন চাচি ‘মা ‘ হিসেবে কেমন, কেমন তাদের আদর,কেমন তাদের শাসন সব আমি জানতাম।লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম।চাচিরা মেয়েদের চুলে টেনে টেনে তেল দিয়ে দিচ্ছে আর চুল না আচঁড়ানোর জন্য বকা দিচ্ছে এটা ছিলো আমার খুব প্রিয় দৃশ্য৷ ইশ কি মায়া, কতই না মমতা মায়ের বকায়।
খুব কম বয়সেই বুঝে গেছিলাম বাবা এবং মায়ের ভালোবাসা অন্যরকম৷ বাবাদের ভালোবাসা মেয়ের প্রতি দৃশ্যমান, মায়েরদের ভালোবাসা দৃশ্যমান ছেলেদের প্রতি৷ ধরুন, ভাতের টেবিলে মেয়ে যদি মাছ খেতে না চায় বাবা হয়ত বোঝাবেন, আমার লক্ষিসোনা, আজ মাছ খাও কাল ডিম খেও । মা এ কাজ করবেন না, গালে দুটো চড় দিয়ে বলবোন এক্ষুনি খা বলছি, পরক্ষনেই ডিম ভেজে আনবেন । মা হিসেবে চাচিদের প্রতিটি মুহুর্তই আমি মন দিয়ে দেখতাম। চাচিদের আসে পাশে ঘুরতাম চাচিরা যদি ডেকে একটু মাথায় হাত বুলায় সে আশায়।
যাক সেসব কথা, আঠারোতে পা দিতেই আব্বা একদম একা করে চলে গেলেন। তবে বিয়ের সব বন্দোবস্ত দিয়ে গেছিলেন চাচাদের হাতে। আমি বড় চাচিকে ভয় ভয়ে শুধু এতটুকুই বলেছিলাম , ছেলের যেন মা বাবা থাকে। বড় চাচি আমার অন্তরের শূন্যতাটুকু সেদিন দেখতে পেয়েছিলেন৷ এবং প্রথম বারের মত আমার মাথায় হাত রাখেন। চোখের জল যেন চাচি না দেখেন হুড়মুড় করে বেড়িয়ে গেছিলাম সেদিন।
কথায় বলে না অন্তর দিয়ে চাইলে ঈশ্বর পাওয়া যায়,আমি মা চেয়েছিলাম পেয়েছি৷ যে নিজের স্বার্থলাভের আশায় কাজ করে তাকেই তো স্বার্থপর বলে,তাইনা। একটি জীবন যেখানে কল্পনায় মায়ের আদর প্রত্যাশা করে গেছি সেখানে সত্যি মা পেয়ে আর লোভ সামলাতে পারিনি।
মা সত্যিকারের রাজহাঁস ছিলেন তা বুঝতে পারি অল্প কিছুদিনেই….মায়েরা হয়ত রাজহাঁসই হন। আমার বরের ছোট চাকরি, দুটো রুমের বাসাতেই বেতনের অর্ধেক চলে যায়৷ আমি আর আম্মা মিলে সংসার গুছাই,আম্মার আড়ষ্টতা ভাঙতে কিছুদিন সময় লাগে, তবে কাছে টেনে নিতে বেশি সময় নেন নি। আম্মাই এক সময় ব্যবসার পরামর্শ দিলেন তার ছোট ছেলেকে। চাকরির বেতনে তো সংসার চলে না। আব্বা কিছু রেখে গেছিলেন আমার জন্য, জহিরেরও জমানো ছিলো সামান্য কিছু টাকা। খুব ছোট করেই বিজনেস শুরু করলো সে, আম্মা এটা সেটা পরামর্শ দেন। শ্বশুর মশাইরও ব্যবসা ছিলো কিনা। আম্মা সত্যি আমার জন্য ছিলেন আশির্বাদ। হাতে ধরে ধরে সব সেখান। আমিও আনন্দ পাই। সারাদিনই গুটুর গুটুর গল্প করে শ্বশুর সাহেবের৷ আমিও শুনি। আমার স্বামীর পরিশ্রমে ব্যবসাটাও বাড়তে থাকে দিন দিন৷ বছর দুই ঘোরার আগেই আমার বড় ছেলেটার জন্ম হয়৷ আম্মা যেন নতুন জীবন পেলেন যদিও প্রথম বার দাদি হওয়া নয়, তবু যেন নতুন করে দাদি হলেন তিনি৷ সারাদিনভর ছোট ছোট হাত পা গুলো নিয়ে খেলেন, দাদাজানের গল্প শোনান নাতিকে। আম্মার জন্যই আমার ছেলেটা খুব দ্রুত কথা শিখতে শুরু করেছিলো।
২ রুমের ঘর ছেড়ে ৩ রুমের বাসা নেই। যেন এক সিড়ি এক সিড়ি করেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম। বছর তিনের ব্যবধানে মেয়ে হলো আমার। ব্যবসার সাথে সাথে সংসারও বড় হলো । বড় হচ্ছিলো ছেলে মেয়ে গুলোও।
আম্মাকে আমি পনের বছর পেয়েছি। পনের বছর ধরে আম্মা সমস্ত ভালোবাসা উজার করে দিয়েছেন আমার পরিবারের প্রতি। ঘরের প্রতিটা কোনায় আম্মা লেগে ছিলেন। আম্মার ছোট ছেলে ৩ কামরার ফ্ল্যাট কিনেছে গত মাসে অল্প কিছুদিন হলো এ বাড়িতে উঠেছি আমরা। সব কেমন ঝকঝকে তকতকে। অথচ আমার মনে পড়ে রইলো সেই দু রুমের কামরার ঘরে৷ এই সুন্দর বাড়িতে আম্মা নেই। আরো কিছু বছর আম্মা বেঁচে থাকলে কি এমন হতো?
আমার ছেলের বয়স তেরো। মন খারাপ করে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছি দেখে, আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো মন খারাপ করো না মা, দাদি আমাদের সঙ্গেই আছে। শুধু নামাজ পড়ে দোয়া করো। ছেলের কপালে চুমু দিয়ে বললাম ঠিকই বলেছ বাবা, দাদু যা যা শিখিয়েছে কখনো ভুল না কিন্তু৷ ঠিক সেসময়ই মেয়ে এসে বললো মেঝ জেঠা জেঠী এসেছে মা। মাথায় আঁচল তুলে দিয়ে ড্রইং রুমে এলাম।
মেঝ ভাই ভাবিকে চিনতেই পারছিনা। মেঝভাইয়ের গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, চোখ ঢুকে গেছে কোটরে, দীর্ঘদিন নির্ঘুম কাটাচ্ছেন বোঝা যাচ্ছ। একই অবস্থা ভাবির, সবসময়ই ফিটফাট দেখেছি ভাবি আজ যেন অন্যরকম।
-কি হয়েছে ভাবি? কোনো সমস্যা হয়েছে কি,?
ভাবি ঠুঁকরে কেঁদে উঠলেন, ভাই বললেন বিস্তারিত৷ তাদের একমাত্র মেয়ে ঝিলি এখন রিহ্যাবে। এডিকটেড। আমার বুক কেঁপে উঠলো। কেমন করে হলো এসব? প্রশ্ন করলাম আমি৷
ভাবি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, সব দোষ আমাদের, মিলি। চাকরি চাকরি করে সংসার দেখার সময় পাইনি, মেয়েটা ছোট থেকেই একা একা বড় হয়ে আজ এ অবস্থা। মেয়েকে আলাদা করে সময় দেই নি। মেয়েটা যে কেমন করে বড় হচ্ছে দেখতেই পাইনি। সেদিন যদি আম্মাকে নিয়ে আসতাম সাথে মেয়েটা একা একা কষ্ট পেতে হতো না।একজন সঙ্গি পেতো সাথে থাকার। এই পথে কখনো না যেত না৷ আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদতে লাগলেন তিনি।
আমার আম্মার কথা মনে পড়লো। আম্মা বলতেন, সংসার একটা মালার মত জানো,মিলি। যাই করো, যেখানেই যাও সবাইকে একসাথে বেঁধে রাখতে হয়। এক সাথে থাকতে হয়।
কিছু বলতে পারলাম না আমি শুধু মনে হলো, ভালোবাসা পেতে স্বার্থপর হওয়া কোনো দোষের কিছু নয়। কারো ক্ষতি না করেও স্বার্থপর হওয়া যায়। সম্পর্কগুলো আগলে রাখতে একটু স্বার্থপর হতেই হয়।
–
নুসরাত সাদিয়া মুনা