#শিমুল ফুল
পর্ব ২২
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
পলাশ তখন মাস্টার্স শেষ করে গ্রামে ফিরে এসেছে।হাতে অফুরন্ত সময়।পলাশ ইংরেজি নিয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে।তাদের গ্রামের কলেজের প্রিন্সিপাল কলেজে ডেকে নেয়।কলেজে ভালো ইংরেজি শিক্ষক নেই,অনুরোধ করে যতদিন পলাশের চাকরি হচ্ছে না ততদিন যদি একটু সময় দিতো এবারের ইন্টারের ব্যাচটা ভালো রেজাল্ট করতে পারবে।পলাশ অবসর বিধায় রাজি হয় তারও ইচ্ছা শিক্ষকতা করার এখন পড়ালে চর্চা হলো।তারপর নিয়মিত পড়ানো শুরু করে।তার পড়ানো ভালো বলে সব স্টুডেন্ট তার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে।পলাশও হাসিমুখে পড়ায়।কিছুদিন পরে কলেজে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে একটা মেয়ে এসে ভর্তি হয়।জানা যায় মেয়েটার আব্বা ব্রাক ব্যাংকে চাকরি করে।বাবা বদলি হয়েছে বিধায় পরিবার সাথে নিয়েই এখানে এসেছে।তাই মেয়েকেও অন্য কলেজ থেকে ট্রান্সফার করে নিয়ে এসেছে।প্রথম দিন ক্লাসে পলাশ যখন পড়াচ্ছিলো তখন মেয়েটা প্রশ্ন করে যে এই জায়গাটা বুঝতেছেনা।পলাশ বই থেকে চোখ তুলে তাকায় উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা একটা মেয়ে জিজ্ঞাসু কাজলকালো চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটাকে দেখে শান্তশিষ্ট পলাশের বুকে ঠান্ডা গা কাঁপানো শিহরণ বয়ে যায়।পলাশ মাথা নিচু করে ফেলে গোটা জিবনে এই প্রথম এমন অনুভূতি হচ্ছে আসলে লেখাপড়ায় এতোই ডুবে ছিলো যে মেয়েদের দিকে তাকানোর সময় পায়নি।পলাশ জ্বিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আবার তাকায়।পলাশকে তাকাতে দেখে মেয়েটা ভদ্রতাসূচক হাসে।পলাশ উত্তর দেয়।জানতে পারে মেয়েটার নাম নিধি আনোয়ার।সে নামটা বারবার গুনগুন করে বলে,’নিধি নিধি নিধি।পলাশ ভাবে এটা হয়তোবা ভালো লাগা।আস্তে আস্তে কেটে যাবে।কিন্তু এক দিন দুই দিন সাপ্তাহ গড়ায় ভালো লাগার রেশ কাটে না যেন আরো বেশী দেখার জন্য মন আকুল হয়ে থাকে।পড়ার ফাকে ফাকে বারবার দেখে।তারপর একদিন নিজেকে নিজে খুব শাসায় সে শিক্ষক আর নিধি স্টুডেন্ট।শিক্ষক হয়ে ছাত্রীর উপরে এমন আকুল চোখে তাকানো ঠিক না,এটা অপরাধ।ভাবে আর তাকাবে না।দুইদিন নিজেকে খুব কষ্টে আটকে রাখে ভুল করেও তাকায় না।কিন্তু এই না তাকানো নিধির সহ্য হয় না সেও সবার সাথে পলাশের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে।পলাশ হাসে।নিধিও হাসে।মেয়েরা যেন একটা সময় নিজে নিজেই পরিপক্ক হয়ে যায়,কোন বিদ্যা ছাড়াই ছেলেদের বুঝতে পারে।তাইতো পলাশের চোখের ভাষা পড়েই নিধি বুঝে নিলো অনেককিছু।শান্ত পলাশের বুকে অশান্ত ঝড় তুলে দিতে পারে এই কাজলচোখের বালিকা।প্রাইভেট শেষে সবাই চলে গেলেও নিধি যায় না।বান্ধুবীরা যেতে ডাকলে বলে তার একটা চ্যাপ্টারে সমস্যা আছে সেটা সলভ করেই আসছে।পলাশ মুচকি হাসে।নিধি বুঝতে পারে পলাশ খুব লজ্জা পায়।নিধিই পলাশকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় চিঠির মাধ্যমে।চিঠি পড়ে পলাশ মুচকি হাসে।প্রতিউত্তরে বলে,
“তোমার কি পলাশ ফুল পছন্দ নিধি?”
নিধি পলাশের চোখে চোখ রেখে বললো,
“আগে পছন্দ ছিলো না এমনকি চিনতামও না।এখন চিনি পছন্দও করি।একটু বেশীই পছন্দ করি।”
পলাশ মুচকি হেসে বললো,
“আমারো।”
“কি?”
“নিধি পছন্দ।”
নিধি হাসে।দুজনের প্রেম খুবই ভালো চলছিলো।হঠাৎ করেই একদিন নিধি বলে,তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।পলাশ যেন আটকায়।বিয়ে ঠিক মানে?পলাশের মাথায় বাজ পড়ে।ছুটে যায় তার আব্বার কাছে।লাজুক পলাশ লজ্জাভুলে নিধির কথা তার আব্বাকে জানায়।শওকত হাওলাদার সোজা না করে দেয়।শুধু না করেই থামেনি নিধির আব্বাকে আবার বদলি করে অন্য এলাকায় পাঠিয়ে দেয়।নিজে বন্দোবস্ত করে নিধির বিয়েও দেয়।নিধির সাথে পলাশের শেষ কথা ছিলো।
“আপনি আমাকে ঠকালেন।”
পলাশ কেঁদে দিয়েছিলো।নিধিকে তার চাই কিন্তু তার আব্বা যে এমন করবে এটা কখনো ভাবেনি।নিধি প্রচুর কেঁদেছিলো।বিয়ে করবেনা বলে অনেক মার খেয়েছে।শিমুলও কেঁদেছে তার আব্বার পা ধরে বসে থেকেছে তিনি রাজি হয়নি।
“কেঁদো না নিধি।যার সাথে বিয়ে হবে সে আমার থেকেও বেশী ভালো হবে।”
নিধি চিৎকার করে বলেছিলো,
“ভালো হোক।কিন্তু সে তো পলাশ না।আমার পছন্দের পলাশ ফুল তো সে না।”
পলাশের চোখ বেয়েও পানি পড়েছিলো তবে সেটা নিঃশব্দে।
“পছন্দের ফুল অপছন্দের তালিকায় ফেলে দাও।”
“ভালোবাসি তো পলাশ।”
নিধির কান্না পলাশ সইতে পারে না তাই আবার তার আব্বাকে ধরে কিন্তু শওকত হাওলাদারের কাছে ছেলের পছন্দের থেকে সমাজ,ক্ষমতাই বেশী বড়ো।রাজি তো হয়নি বরং তার রাগ তার আম্মার উপর মিটিয়েছে।পলাশ চুপচাপ সব দেখেছে।শান্ত স্বভাবের পলাশ কোন টু শব্দ করেনি।আব্বার কথাই রেখেছে নিধিকে ভুলে গিয়েছে,তার আব্বাকে সমাজের কথা থেকে বাচিয়েছে।এই ঘটনার পর থেকে শান্ত স্বভাবের পলাশ যেনো আরো শান্ত হয়ে যায়।কলেজের চাকরি পার্মানেন্ট হয়।নিধির সাথে আর যোগাযোগ রাখেনি।কিন্তু আধো কি পলাশ নিধিকে ভুলতে পেরেছে? পারেনি।আর পারবেওনা।এখনো নিধিকে তার বুকে মিশিয়ে রেখেছে।রাতে নিধির কথা মনে হয়ে ঘুমাতে পারেনা,কতো বছর হয়ে গেছে তারপরেও নিধিকে মনে করে কাঁদে।বুকে ব্যাথা হয়,হাহাকার করে উঠে নরম মনটা।তাইতো বিয়ে করেনি।নিধিকে ছাড়া অন্য কাউকে কেন জানি কল্পনা করতে পারেনা।আরেকটু লড়াই করলে হয়তো নিধি তার হতো।এই আফসোস সারাজীবন বয়ে যেতে হবে।আজকে তিয়াস যখন ছুটে কলেজে আসে পলাশ তখন ক্লাস নিচ্ছিলো।তিয়াসের মুখে সব শুনে বাইক নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে।তার বুকে যে কষ্ট,হাহাকার,যন্ত্রনা হয়।অসহ্য জ্বলন পুড়নে নির্ঘুম রাত্রি যাপন করে সে চায়না তার ভাইও একি কষ্টে জর্জরিত হোক।বাড়িতে ঢুকে তার আব্বার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
“আব্বা শিমুলের দরজা খুলে দেন।”
শওকত হাওলাদার বললো,
“তুমি স্যার মানুষ এসব প্যাচালে এসো না।”
পলাশ মুখ শক্ত করে বললো,
“খুলবেন কিনা সেটা বলেন।”
“দুইটার পরে।”
“এখন খুলেন।”
চুপচাপ পলাশের মুখে এমন তেজী কথা শুনে শওকত হাওলাদার অভস্থ না।
“মুখে মুখে তর্ক করিস।থাপ্প/ড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো।”
পলাশ রান্নাঘরের দিকে চলে যায়।সাথে সাথেই ফিরে আসে।এগিয়ে যায় শিমুলের রুমের দিকে।শওকত হাওলাদার বাধা দিতে ছুটে আসে,
“তোর সাহস তো দেখি কম না!খুলবিনা বললাম।”
ততোক্ষণে পলাশের মুখ রক্তবর্ণ ধারন করেছে।শওকত হাওলাদারের দিকে তাকিয়ে হাতের বডি/দা উঁচু করে বলে,
“যে বাধা দিতে আসবে তার গ/লা থেকে মা/থা আ/লাদা করে দেবো।এবার আসেন কে আসবেন।”
শওকত হাওলাদার কিছু বলতে চাইলে পলাশ বলে,
“কোন কথা হবেনা।এটা জীবন দাবা খেলার চাল না।”
পলাশ দরজা খুলে দেখে শিমুল মাথা নিচু করে বসে আছে।দরজা খোলার শব্দে শিমুল মাথা তুলে তাকায়।দরজা খোলা দেখে মনে আশা জেগে উঠে।মাথার ব্যাথা সয়ে নেওয়ার মতো না,শরীর ঝিমঝিম করছে তারপরেও উঠে দাঁড়িয়ে পলাশের দিকে তাকিয়ে কেঁদে বলে,
“ভাইয়া পুষ্পর বিয়ে হয়ে গেছে?তাই দরজা খুলে দিয়েছো?”
পলাশ কথা বলেনা।শিমুলের আকাশী রংয়ের গেঞ্জি র/ক্তে ভেজে চুপচুপ হয়ে গিয়েছে।ফ্লোরে র/ক্ত।মাথার চুল র/ক্তে ভেজা।পলাশ এগিয়ে আসে।চিৎকার করে তার আম্মাকে ডাকে।শিমুল বাধা দেয় কাউকে ধরতে দেয় না।রুম থেকে বেরিয়ে তার আব্বার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।রাগে তার শরীর কাঁপছে।
“পুষ্পর যদি কিছু হয় খবর আছে…”
শওকত ছেলের অবস্থা দেখে ভ/য় পেয়ে যায়।তিনি ভাবেন নি শিমুল এমন কিছু করবে।রাবেয়া শিমুলকে দেখে একটা চিৎ/কার দিয়ে জ্ঞা/ন হারায়।শিমুল আর কিছু বলেনা।বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সোজা দৌড় দেয়।পলাশ আর তিয়াস সাথে যায়।শিমুল দৌড়াচ্ছে এই অবস্থায় এতটা পথ দৌড়ে গেলে শিমুলই বাচবেনা।পলাশ শিমুলের সামনে বাইক থামিয়ে উঠতে বলে।
শিমুলরা পুষ্পর বাড়ি গিয়ে সোজা ঘরে ঢুকে।বিছানায় কাজী বসে আছে।শিমুল বুজে আসা গলায় বলে,
“বিয়ে কি হয়ে গেছে?”
কাজী মাথা নেড়ে না করে।শিমুল চোখ বন্ধ করে শ্বাস নেয়।পরক্ষনেই পাশের রুম থেকে চিৎ/কার ভেসে আসে।শিমুল ওখানে গিয়ে দেখে মিজান শেখ উপর দিয়ে গিয়ে দরজা খুলে।লাল বেনারসি পড়ে পুষ্প ফ্লোরে হেলে পড়ে আছে।ফ্লোর লাল র/ক্তে রঞ্জিত।শিমুলের বুকটা ধুকপুক করে।সে কি দেরী করে ফেলেছে?রোকসানা আর মুন্নীর আহাজারিতে চারিপাশ ভারী হয়ে উঠে।তাদের কান্না শিমুলের ভালো লাগেনা।সবাই অবাক হয়ে শিমুলকে দেখে র/ক্তে সারা গা মাখামাখি।দ্রুত পায়ে পুষ্পর কাছে যায় কারো দিকে না তাকিয়ে পুষ্পকে পাজকোলে নিয়ে বাহিরের দিকে ছুটে।মিজান কিছু বলতে চাইলে পলাশ বাধা দেয়।শিমুল সি এন জি তে পুষ্পকে কোলে নিয়ে বসে কাঁ/দছে।ক্ষনে ক্ষনে পুষ্পর কপালে চুমু দিচ্ছে।পুষ্পর শরীর আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।পলাশ সান্ত্বনা দিয়ে বললো,
“কাঁ/দিস না।কিচ্ছু হবে না দেখিস।”
“ওর কিছু হলে আমি ম/রে যাবো।”
হসপিটালে যাওয়ার পরে পুষ্পর চিকিৎসা করা হয়।পুরোনো ব্লে/ড বলে শিরা কাটেনি।এই যাত্রায় বেঁচে গেলো।বাড়ির সবাই এসেছে।শিমুল সাফিনকে ইচ্ছামতো জাড়ে।সবাই শিমুলকে ডাক্তারের কাছে যেতে বললেও শিমুল যায় না।পুষ্পর জ্ঞান ফিরলে শিমুলের এই অবস্থা দেখে কেঁদে দেয়।শিমুল পুষ্পর দিকে অভিমানি চোখে তাকিয়ে থাকে।কেন এমন করতে হবে?যদি কিছু হয়ে যেতো?
শওকত হাওলাদার এসে ছেলেকে নিয়ে যেতে চায়।শিমুল বিরক্ত হয়ে বললো,
“টানেন কেন?”
“নিজের অবস্থা দেখেছিস?অন্য কেবিনে চল মাথায় ব্যা/ন্ডেজ করতে হবে।”
শিমুল বললো,
“কাজী ডাকেন।আগে বিয়ে করবো তারপর ব্যা/ন্ডেজ ফ্যান্ডেজ।”
শিমুলের মাথার চুল থেকে তখনো ফোটা ফোটা র/ক্ত পড়ছে।শওকত ছেলের এতো র/ক্তক্ষরণ দেখে ঘাবরে যায়।
“আগে ব্যা/ন্ডেজ কর তারপর বিয়ে করিস।”
শিমুল তার আব্বাকে আর বিশ্বাস করেনা।ধমকে চেচিয়ে বললো,
“আগে বিয়ে।বিয়ে না হলে আমি এখান থেকে যাচ্ছি না।ম/রে গেলেও না।”
মিজান বেকে বসে চেয়ারম্যান এতো অপমানের পর এসব কিভাবে সম্ভব।শওকত চেয়ারম্যান রাস্তা না দেখে মিজান শেখের হাত ধরে অনুরোধ করে।শিমুলের কঠিন মুখের দিকে তাকিয়ে কেউ কিছু বলার সা/হস পায় না।আর কোনো উপায় না দেখে শিমুলের আর পুষ্পর বিয়ে পড়ানো হয়।কবুল বলতে বললে দুজনেই সেকেন্ডে কবুল বলে ফেলে।বিয়ে পড়ানো হয়ে গেলে শিমুল সবার সামনেই পুষ্পর কপালে চুমু খায়।তারপর তার আব্বার দিকে তাকিয়ে বলে,
“আপনি হে/রে গেছেন।আমি জিতছি।”
শওকত হাওলাদার মুখ থমথমে করে বেরিয়ে যায়।মনে মনে বলে আস্ত একটা বেয়াদব জন্ম দিয়েছি।
নার্সরা শিমুল মাথা ধুয়ে দেয়।কয়েকদিন আগেও মাথায় আঘা/ত পেয়েছিলো তবে আজকের আঘা/তটা গুরতর।তাই সিটিস্কান করে দেখে কোন ক্ষ/তি হয়েছে কিনা।ভাগ্য শিমুলের সহায় ভেতরে কোন র/ক্তক্ষর/ণ হয় নি।কিন্তু সে/লাই লাগে আটটা,দুই ব্যাগ র/ক্ত লাগে।তাতে শিমুলের কোন ব্যা/থা বা আফসোস নেই।পুষ্পকে নিজের করে লিখে নিতে পেরেছে এর চেয়ে খুশীর আর কি হতে পারে!
পুষ্প এখনো কাঁদছে।তার মনে হয়েছিলো সে শিমুলকে হারিয়ে ফেলবে তাই তো এই বোকামীটা করে ফেলেছিলো।মাঝে মাঝে এই বোকামী করাই ভালো পুষ্প এমন বোকামী করেছে বলেই তো আজকে বিয়ে হলো।তার বিশ্বাস হচ্ছে না শিমুল তার স্বামী।
সাফিনের আব্বা আম্মা মিজান শেখের সাথে রা/গারা/গি করে চলে যায়।শিমুল আসে কিছুক্ষণ পরে।শিমুলকে দেখতে খুবই দুর্বল লাগছে তাও খুশীতে দাঁত বের করে হেসে মিজানকে বললো,
“আব্বা আপনার মেয়ে বাড়ি নিয়ে যান।গাড়ি দিয়ে গিয়ে আনবো।”
মিজান শেখ দাঁত কিড়মিড়িয়ে পুষ্পকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়। শিমুলেকে ডিসচার্জ দিবে না জানায়।কিন্তু শিমুল ত্যাড়ামি করে বাড়ি চলে যায়।বাড়ি গিয়ে আগে মায়ের কাছে যায়।রাবেয়া ছেলেকে জড়িয়ে ধরে।শিমুল হেসে হেসে বললো,
“আম্মা বিয়ে করে ফেলেছি।”
“ভালো করেছো আব্বা।”
বাড়িতে যাওয়ার পর পুষ্পর উপর সবাই রা/গ প্রকাশ করে।তাতে পুষ্পর কিছু আসে যায় না।তার মায়ার বাক্স সে পেয়ে গেছে আর কেউ আলাদা করতে পারবেনা।মুন্নী খুব রাগ করে,তার স্বামীর বাড়িতে সে ছোট হলো এই রাগে সে রাতে পুষ্পর সাথে থাকলো না।পুষ্প একা একা খুশীতে ইচ্ছামতো কাঁদে,শিমুলকে পাওয়ার খুশীতে নফল নামায পড়ে ।
শিমুল রাত দুইটার দিকে বেরিয়ে পড়ে।এতো কষ্টের পরে আজকে বিয়ে করলো অথচ কেউ শশুড় বাড়িতে যেতে বললো না।তাই শিমুল নিজেই চলে এসেছে।বিয়ের প্রথম রাত কিনা আলাদা থাকবে?শিমুল জানালায় টোকা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।পুষ্প জানতো আজকে পাগল প্রেমিক আসবেই।তাকে আজকে কোনভাবেই আটকানো যাবে না সে তার পাগল পাগল আবদার নিয়ে ঠিক আসবে।পুষ্প জানালা খুললে শিমুল হাসে।শিমুলের হাসি দেখে পুষ্প মুগ্ধ হয়।শিমুল আস্তে করে বললো,”দরজা খুলো।”
আজকে কোন ভ/য় ছাড়াই পুষ্প দরজা খুলে।শিমুল বাহিরে দাঁড়িয়ে বেশ দুঃখী দুঃখী চেহারা বানিয়ে বলে,
“বউ আজকে না আমাদের বাসর রাত।”
চলবে…..