#শিমুল ফুল
পর্ব ২৪
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
পলাশ কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নিচ্ছে।ঠান্ডা মেজাজের পলাশের ব্যক্তিত্ব কলেজের সবার নজর কাড়ে।পলাশ যখন ক্লাসে পড়ায় তখন সে বইয়ের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারে মেয়েরা তাকে দেখছে যেই সেই দেখা না মন-হারিয়ে দেখা যাকে বলে।ছাত্রীদের এই চাহনী তাকে বারবার মনে করিয়ে দেয় এক কাজলচোখের অধিকারীনির এই চাওয়াতেই হারিয়েছিলো।প্রেমে মজে গিয়েছিলো নিজের সবটা নিয়ে।
মেয়েটাও কি কম ভালোবাসতো?নিধি তাকে এতো এতো ভালোবাসতো যে পলাশ এখনো চোখ বন্ধ করে নিধির ভালোবাসার তীব্রতা টের পায়।এই তীব্রতা টের পেয়েই তো এতোগুলো বছর কাটিয়েছে।সামনেও কাটাবে।কিন্তু আফসোস এই তীব্রভাবে ভালোবাসার মানুষটিকেই ধরে রাখতে পারেনি,হারিয়ে ফেলেছে এই জীবনে আর পাওয়া হবে না।পরিবার থেকে বিয়ের জন্য বলা হয়,পলাশের বিয়ে করার ইচ্ছে নেই।
যখন ভাবে বিয়ের পর বউকে কাছে টানতে হবে বউ গুটিসুটি মেরে বুকে মুখ লুকাবে তখনি পলাশের বুকটা কেঁপে ওঠে,নিজেকে অপরাধী মনে হয়।কথার বেরখেলাপ করার ভার মাথায় পড়ে,সে যে নিধিকে কথা দিয়েছিলো পলাশের বুকে লেপ্টে থাকা নারীটা নিধি হবে।কিন্তু পলাশ পারলই না।বুকে তো নিধি এলো না এলো এক বুক হাহাকার।পলাশ প্রতিনিয়ত ঘুমরে মরে,ব্যাথায় কাতরায় যখন ভাবে নিধি অন্য বুকে,অন্য কাউকে ভালোবাসে।এসব ভাবলেই বুকটা পুড়ে যায়,এতো বড়ো ছেলেরও ঠোঁট কেঁপে চোখ জ্বালাপোড়া করে জল পড়ে,দুনিয়ার সব বিতৃষ্ণা লাগে,তার আব্বাকে অসহ্য লাগে,তিনি একটু সদয় হলেই পলাশের জীবনের ধারা অন্যরকম ছন্দেতালে যেতো।অথচ তিনি শান্ত পলাশের বাবার প্রতি সম্মানকে ব্যবহার করেছে।পলাশ তার আব্বাকে বুঝাতেই পারলো না নিধি তার সব।আহ আফসোস!ছোট নিধিটা এতো বুঝতো,পলাশের চোখে তাকিয়ে পলাশের মন পড়ে নিতে পারতো।পলাশ বইয়ের দিকে তাকিয়ে বইয়ে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করে।তখনি প্রিন্সিপাল রুমে আসে।পলাশ প্রিন্সিপালের উপস্থিতিতে উনার দিকে তাকায়।তারপর কয়েক সেকেন্ড স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।নিধি তার নিধি!তার কাজলচোখের নিধি!পলাশের বুকে ব্যাথা হয়,এটা কিসের ব্যাথা?
শিমুল গত পাঁচ দিন রুম থেকে বের হয় নি।শরীর এতো দূর্বল লেগেছে যে শোয়া থেকে উঠতে ভীষন খারাপ লেগেছে।আজকে ভালো লাগছে।সকালে সবার সাথে নাস্তা করেছে।এই পাঁচ দিন পুষ্পর সাথে ফোনে কথা হয়েছে।বেশী কথা বলতে পারেনি আঘাতটা মাথায় তাই মাথায় সেকি ব্যাথা!বালিশ থেকে মাথাটা তুললে ব্যাথায় টনটন করে মনে হয় ঘাড় থেকে মাথা ছিড়ে পড়ে যাচ্ছে।শিমুল সব ব্যাথা হাসি-মুখে সয়ে নিচ্ছে।পুষ্পকে নিজের করে নিতে পেরেছে এই সুখের কথার কাছে এসব ব্যাথা তো কিছুই না।সারাদিন শুয়ে বসে থেকে সন্ধ্যায় পুষ্পকে ফোন দেয়।
পুষ্প তখন পড়তে বসেছে।শিমুলকে বিয়ে করার পর থেকে রোকসানা মুন্নী আর মিজান শেখ পুষ্পর সাথে ঠিকঠাক কথা বলেনা।পুষ্প ভালো মেয়ে হতে মায়ের মন খুশী করতে উনার কাজ আগে আগে করে দেয়,বাবার কি লাগবে এগিয়ে দেয়,মুন্নীর সাথে সেধে সেধে কথা বলতে যায় কিন্তু কেউই পুষ্পর সাথে ভালো করে কথা বলেনা।পুষ্প চুপচাপ পড়ছে এমন সময়ই রোকসানার ফোনটা টিংটাং করে বেজে উঠে।পুষ্প উঠে ধরতে যাওয়ার আগেই রোকসানা রিসিভ করে।
“হ্যালো কে?”
শিমুল রোকসানার কন্ঠ শুনে মনে মনে ভাবে শাশুড়ি খুব জ্বালিয়েছেন এবার আমি জ্বালাই।
“আম্মা আমি!আপনার নতুন জামাই শিমুল হাওলাদার।”
রোকসানার মুখটা অন্ধকার হয়ে যায়।শিমুলের নাম শুনেই আড়চোখে পুষ্পকে দেখে।
রোকসানা চুপ থাকা দেখে শিমুল বললো,
“আম্মা আমার বউ কই?”
রোকসানা পুষ্পর বিছানায় মোবাইলটা ছুড়ে মেরে চলে যায়।রোকসানার মুখের আদল দেখেই বুঝে যায় এটা শিমুল।পুষ্প মুচকি হেসে মোবাইলটা ধরে।
“হ্যালো।”
পুষ্পর গলা শুনে শিমুল সটান শুয়ে পড়ে।মোলায়েম গলায় বললো,
“আমার বউ কি করে?”
শিমুলের মুখে বউ ডাক শুনলে পুষ্পর খুব ভালো লাগে,শান্তিতে বুকটা ভরে যায়।
“কিছুনা।”
“বউকে শাড়ি পড়া দেখতে ইচ্ছে করে।বউ কি ইচ্ছে পূরন করবে?”
পুষ্প আনন্দে ঝুমঝুম করে বললো,
“করবে।”
“তাহলে আজকে শাড়ি পরবে।এগারোটায় আসবো।”
পুষ্প মন খারাপ করে বললো,
“কিন্তু আমার তো শাড়ি নেই।আম্মার আছে।আমি আমার কাছে চাইতে পারবো না লজ্জা করে।”
“তোমার নেই?”
“না।”
“আচ্ছা।”
পুষ্পর মন খারাপ হয়।শিমুল এই প্রথম তাকে শাড়ি পড়তে বলেছে কিন্তু পুষ্প ব্যর্থ।
“হুম।”
“মোবাইলটা কাছে রেখো,আবার ফোন দেবো।”
“আচ্ছা।”
শিমুল ম্যানিব্যাগটা পকেটে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।বাইক দিয়ে হোমনা মার্কেটে আসতে বেশী সময় লাগেনা।নিজের পছন্দমতো লাল শাড়ি চুড়ি কিনে নেয়।পুষ্পদের বাড়ির সামনে এসে পুষ্পকে ফোন দিয়ে বেরিয়ে আসতে বলে।পুষ্প এসে শিমুলকে দেখে।
“ম্যাডাম কাছে আসেন।”
শিমুলের হাতের ব্যাগ দেখেই পুষ্প বুঝে যায়।
“আপনি এতো রাতে মার্কেটে গিয়েছিলেন?”
“হ্যাঁ।আজকে বউ দেখবো তাই।”
পুষ্প লজ্জা পায়।মাথা নিচু করে ব্যাগটা নিয়ে ঘরে চলে যায়।
রাতে সবাই ঘুমানোর পরে পুষ্প শাড়ি চুড়ি পরে রেডি হয়।ঘড়িতে টাইম দেখে সাড়ে এগারোটা বাজে।পুষ্প আস্তে করে দরজা খুলে উঁকি দিয়ে দেখে শিমুল দাঁড়িয়ে আছে।পুষ্প দরজা আটকে বেরিয়ে আসে।অবাক হয়ে।বলে,
“কখন এসেছেন?ডাকলেন না?”
শিমুল পুষ্পর দিকে তাকিয়ে আছে।ঠোঁট কিঞ্চিৎ ফাকা হয়ে গেছে।পরক্ষণেই জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়,হাত দিয়ে চুল আঁচড়ে বললো,
“ডাকলে তো ঠিকঠাক সাজতে না।তাড়াতাড়ি করে চলে আসতে।”
পুষ্পর কেন জানি শিমুলের দিকে তাকাতে লজ্জা লাগছে।একটু তাকিয়ে বললো,
“ঘরে আসবেন?”
শিমুল পুষ্পর দিকে হাত বাড়িয়ে বললো,
“না।আমাদের হিজল গাছই ভালো।”
পুষ্প মুচকি হেসে শিমুলের হাত ধরে।দুজনে চুপচাপ হাটে।চঞ্চল শিমুলের এই নিশ্চুপতা দেখে পুষ্প কয়েকবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়।কিন্তু শিমুল চুপচাপ হাটছে।মাঝে মাঝে তাকে দেখছে।ছয় দিনের চাঁদ আলো ছড়াচ্ছে।আকাশে চাঁদের সাথে হাজারো তারা আলো দিচ্ছে।চারদিকে সব স্পষ্ট দেখা যায়।
হিজল গাছের কাছে গিয়ে শিমুল দাঁড়ায়।নিজের হাতের মুঠোয় পুষ্পর দু’গাল ধরে চুপ করে দেখে।শিমুলের তপ্ত শ্বাসে পুষ্পর মনটা কেঁপে ওঠে।হাত-পা অবশ হয়ে যায়।সে একবার চোখে তুলে শিমুলের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়।এই সর্বনাশা চোখে তাকানো যাবে না।এই চোখে যে হাজারো কথা,আকুতি,মিনতি উপচে পড়ছে।এই নেশা জড়ানো চোখের চাহনি পুষ্প নিতে পারেনা।শিমুলের ছোঁয়া পেয়ে শরীর অজানা শিহরণে কেঁপে উঠছে।
শিমুল বললো,
“আমার বউকে অনেক সুন্দর লাগছে।লাল শাড়ি পড়াতে লাল শিমুল ফুলের মতোই লাগছে।একদম টকটকে লাল ফুল।”
পুষ্প লজ্জা পায়।মাথাটা নিচু করতে চায়।শিমুল নিচু করতে দেয় না।তার দিকে করেই বললো,
“কি হলো?”
পুষ্প মাথা দু’দিকে নাড়িয়ে বললো,
“কিছুনা।”
শিমুল পুষ্পর লজ্জামাখা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।গাল ছেড়ে কোমড়ে হাত দিয়ে নিজের কাছে আনে।
“সত্যিই সুন্দর লাগছে।”
পুষ্প বললো,
“শিমুলের তো তাই।”
শিমুল চুপচাপ দেখে।পুষ্পকে এমন রুপে আর আগে দেখা হয়নি।তার ফুলকে খুব আবেদনময়ী মনে হচ্ছে।শিমুল হঠাৎ খেয়াল করলো তার খুব পাগল পাগল লাগছে।সামনের রমনীর সাথে একটু বেশী অভদ্র হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।আবার কিনা ফুলটা তার বউ,নিজের এতো বেশামাল পাগলা ইচ্ছা যেন আজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।এন্ডোনালির শিরশিরানি শিমুলের পাগলা রূপ প্রকাশ করতে ছুটছে বন্য গতিতে।শিমুল বললো,
“খুব শীঘ্রই ঘরে তুলে নিবো।”
“আচ্ছা।”
“এতো বাধা বিপত্তির পরে আমি আমার এই লাল টুকটুকে ফুলটা পেয়েছি।নিজেকে খুব সুখী লাগে।”
পুষ্প কিছু বলেনা প্রতিউত্তরে শিমুলের বুকে মাথা রেখে নিজেকে মিশিয়ে দেয়।শিমুলের বুকে মিশে,তার ঘনঘন শ্বাস,দ্রুত বুকের উঠানামা খেয়াল করে।মাথা তুলে বললো,
“কি হয়েছে?”
“কই?”
পুষ্প শিমুলের বুকে হাত রেখে বললো,
“এই যে এমন হচ্ছে কেন?”
শিমুল কিছু বলেনা।চুপচাপ পুষ্পকে পর্যবেক্ষণ করে।মাতাল বাতাসের ছোঁয়া কি পুষ্পর গায়ে লাগছে না?শিমুলের অসহায় লাগে।
পুষ্প শিমুলের অসহায় মুখের দিকে তাকিয়ে শিমুলের বুকের ঝড় তুফানের তীব্রতা টের পায়।সাহস করে শিমুলের গালে চুমু খেয়ে নেয়।শিমুলের বন্য বাতাস যেনো রাস্তা পেলো।মাথাটা নিচু করে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি দিয়ে নরম গাল ঘষে দেয়।পুষ্প তার স্বরে গুঙ্গিয়ে উঠে শিমুলের গেঞ্জি আঁকড়ে ধরে।শিমুল ফিসফিস করে বললো,
“কি জান?”
“না”
“কি না?”
“কিছুনা।”
শিমুল আধো আধো খোলা চোখে পুষ্পকে দেখে হাত দিয়ে পুষ্পর নরম ঠোঁট একটু ছুঁয়ে মাথাটা নিচু করে কোমল ঠোঁটের ভাজে তার সিগারেটে পোড়া ঠোঁট নিয়েই হারায়।আজকে মাতাল হয়ে দুজনে দুজনের মাঝে হারাতে চায়।একে অপরকে আঁকড়ে আরো গভীরে নিতে চায়।শিমুল পুষ্পর গলায় ঠোঁট ছুঁয়ে জোড়ে শ্বাস নেয়।তারপর হঠাৎ পুষ্পকে ছেড়ে গাছের মোটা শিকড়ে গিয়ে বসে পড়ে।মাথা নিচু করে থাকে।পুষ্প এমন কাজে হতভম্ব।সে এগিয়ে গিয়ে শিমুলের সামনে দাঁড়ায়।চুলে হাত ভুলিয়ে বললো,
“আমার বরের কি হলো?”
শিমুল মাথা তুলে তাকায়।পুষ্প দেখে শিমুলের ঠোঁট হালকা কাঁপছে,চোখের ভাষায় মাতালতার ছোঁয়া লেপ্টানো।এই ছেলেটা এমন কেন?যখন তখন মায়ার বাক্স খুলে পুষ্পকে আটকে দেয়,ভুল করতে ফুসলে দেয়।পুষ্প চোখে চোখ রাখে।গালে এক হাত রেখে বললো,
“কি?”
শিমুলের গলা ধরে আসে।ফিসফিস করে বললো,
“আজকে একটু বেশি আদর করলে কি তুমি রাগ করবে?”
পুষ্পর বুকটা তো কখন থেকেই কাঁপছিলো এখন শিমুলের কথা শুনে তলপেটে হাজারো প্রজাতির উড়ে যায়।তারও যে ইচ্ছা করে শিমুলের খুব কাছে গিয়ে ভালোবাসতে।শিমুলের নেশায় মাখা চোখের দিকে তাকিয়ে পুষ্প শিমুলের মাথায় হাত রাখে।শিমুল পুষ্পর চোখে তাকিয়ে থাকে তার শ্বাস চলছে দ্রুত গতিতে।পুষ্পকে দু’হাতে কাছে টেনে পুষ্পর পেটে নাক গুজে নেয়।পুষ্প কেঁপে ওঠে,একটু পেছাতে চাইলেও পেছাতে পারে না।শিমুলের হাতের বাধন ততক্ষণে শক্ত হয়েছে।পুষ্প ফিসফিস করে বললো,
“না।”
শিমুলের চোখে মুখে তৃষ্ণা।
“প্লিজ।”
পুষ্প কিছু বলার আগেই উত্তপ্ত ঠোঁটের ছোঁয়া গিয়ে লাগে তার কোমল উদরে।পুষ্প চোখ বন্ধ করে নেয়।শিমুল পরপর অনেকবার ঠোঁট ছুঁয়িয়ে দিয়েছে।নাক ঘষে শিমুল ফিসফিস করে বললো,
“ভীষন খারাপ হতে ইচ্ছে করে।”
পুষ্প চুপচাপ কথা শুনে।শিমুলই আবার বলে,
“সাথে তোমাকেও পাগল বানাতে ইচ্ছে করে।”
পুষ্প চুপ করে থাকে।শিমুলও আর কিছু বলেনা।চুপচাপ বসে থাকে।তারপর হঠাৎ করেই পুষ্পকে ছেড়ে বলে,
“তুমি একটু দূরে গিয়ে দাড়াও।”
পুষ্প অবাক হয়ে বললো,
“কেন?”
শিমুল পুষ্পর দিকে তাকায় না।
“এমনি।যা বলেছি করো না।”
পুষ্প চুপচাপ একটু দূরে দাঁড়ায়।মিনিট দুয়েক পড়ে শিমুল কাছে আসে।পুষ্প কিছু বুঝে উঠার আগেই পুষ্পকে কোলে নিয়ে নেয়।মাঠের মাঝে হাটে আর তার দুষ্টু দুষ্টু কথা শুনে পুষ্প খিলখিল করে হাসে।
“সুন্দরী বাড়ি নিয়ে নেই।তারপর না হয় তোমার পার্মানেন্ট শিক্ষক হবো।”
“আমার শিক্ষক লাগবে না।”
“আমি তো বেতন নিবো না ফ্রী ফ্রী পড়াবো।”
“আমি পড়বো না।”
“আমি তো পড়াবো।”
শিমুল শব্দ করে হাসে।পুষ্প শিমুলের গাল ছুঁয়ে দেয়।এই পুরুষটা তার ভাবলেই বুকটা সুখে চিনচিন করে।
শিমুল চাঁদের আলোয় অবাক হয়ে দেখে পুষ্প দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর রমনী!নাকি সে ভালোবাসে বলেই এটা মনে হয়?কে যানে?শুনেছে যার সাথে যার ভাব বিনিময় তাকেই দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর মনে হয়।
দুজনে রাত দুইটার দিকে বাড়ি যায়।বিছানায় শুয়ে পুষ্প লজ্জায় মুখ ঢাকে লোকটা আস্ত পাগল।
সকালে শিমুল চোখ খুলে দেখে সুইটি তার বিছানায় শুয়ে আছে।গায়ে ওরনা নেই।সুইটির হাত তার গালে রাখা।শিমুল একলাফে দাঁড়িয়ে যায়।সুইটি এখানে কেন?শিমুলের মাথা আউলে যায়।উচ্চস্বরে ধমক দিতে নিয়ে শুনতে পায় বাহিরে চারপাশের এলাকার মেম্বাররা উপস্থিত হয়ে আছে।আস্তে করে বললো,
“তুই এখানে কেনো?”
সুইটি বাকা হেসে বললো,
“আদর নিতে এসেছি।”
শিমুল হা করে তাকিয়ে থাকে।সুইটি উঠে বসে।চুল এলোমেলো গায়ের ওরনা একপাশে রেখে এলোমেলো হয়ে বেরিয়ে গেলো।
মেম্বাররা তখন চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করছিলো।শিমুলের রুম থেকে সাত সকালে এমন বেশে,মুখে এমন লাজুক হাসি মাখা এই মেয়ের বেরোনো দেখে সবাই অবাক।একজন বললো,
“চেয়ারম্যান সাব আপনার ছেলের না বিয়ে হলো।তাহলে এসব কি?ছিহ”
চলবে….