শিমুল_ফুল
৩৪
জাকিয়াসুলতানাঝুমুর
ভোর সকালে পলাশের ঘুম ভেঙে যায়।বুকের উপর কারো গরম শ্বাসে চমকে তাকায়।নিধির এলোমেলো চুলে মুখ খানিক স্পষ্ট।পলাশের মনে পড়ে গতকালই নিধিকে নিজের নামে লিখে নিয়েছে।নিধির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে পলাশ মুগ্ধ হয়।কেউ ঘুমালেও এতো সুন্দর লাগে!আসলে সবাইকে ঘুমালে সুন্দর লাগে না কিন্তু ঘুমন্ত মানুষটা যদি একান্ত ব্যাক্তিগত প্রিয় কেউ হয় তাহলে নিঃসন্দেহে ভালো লাগে,না চাইতেও মুগ্ধতা চলে আসে।পলাশের মনে হলো এতো সুন্দর সকালে এই এলোমেলো পরীর গালে চুমু না খেলে ভীষন অন্যায় হয়ে যাবে।সে শিক্ষক মানুষ এসব অন্যায় করতে নারাজ নিচু হয়ে নিধির গালে ইচ্ছেমতো চুমু খায় অথচ নিধির খবর নেই।নিধির ঘুমের গভীরতা দেখে পলাশ হাসে,ভাবে এই মেয়েকে কোলে করে নিয়ে গেলেও সজাগ হবে না।তার কাছে এখনো সব স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে,নিধি তার এটা বিশ্বাস হতেই কষ্ট হয়।তার আব্বা এখনো চুপ আছে তার মানে উনি নিশ্চয়ই কোনো পরিকল্পনা করছে।সে থাকতে নিধির কোন ক্ষতি হতে দেবেনা,পলাশ নিধির কপালে একটা চুমু দিয়ে আস্তেধীরে উঠে বসে।প্রচুর ক্ষুধা পেয়েছে কিছু খাওয়া দরকার।নিধির ঘরে কোথায় কি আছে জানা নেই,একবার ভাবে নিধিকে ডাকবে কিন্তু নিধির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আর ডাকতে ইচ্ছে হয় না।পলাশ ফ্রেস হয়ে গলায় তোয়ালে ঝুলিয়ে সুখী-সুখী মুখে রান্নাঘরে যায়।রান্নাঘরে চোখ ঘুরিয়ে কোথায় কি আছে দেখলো।সে ক্যাবিনেটে ড্রাই ট্রোস্ট পেলো হাতে একটা নিয়ে খেতে খেতে ভাবে নিধিরও নিশ্চয়ই ক্ষুধা লাগবে।কাল শিমুল যে খাবারগুলো কিনে দিয়ে গিয়েছিলো সেগুলো সব শেষ।পলাশ ভাবলো সে নিজেই কিছু করবে।ফ্রিজ খুলে ডিম ছাড়া আর কিছু পায়না।আবার কিচেন ক্যাবিনেটের কাছে যায়।একটা দুধের ডিবি,একটা কফির ডিবি,আর একটা সুজির প্যাকেট পায়।নিচের একটা বড়ো বক্সে ময়দা পায়।ছোট ডিবিতে মুড়ি পায়।ভাবে তার প্রিয় পিঠাই বানানো যাক।সবসময় মাকে যেভাবে বানাতে দেখেছে নিজেও অনেকবার মাকে সাহায্য করেছে।পারবে পারবে বলে শুরু করে দেয়।
কিছু কিছু চাওয়া থাকেনা কখনো পূরণ হওয়ার না,কিন্তু আল্লাহর ইশারায় পূরণ হয়ে যায়।শুকনো গাছের গোড়ায় পানি ঢাললে যেমন সতেজ হয়ে যায় পলাশকে পেয়ে নিধিও সব কষ্ট ভূলে সুখের দেখা পেয়েছে।প্রথমে পলাশ তারপর বাবা মাকে হারিয়ে এই পৃথিবীতে বড়ো একা হয়ে গিয়েছিলো,ভেবেছিলো এই জীবনে আর সুখের দেখা পাবে না।প্রতিজ্ঞা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে,মন দিয়ে লেখাপড়ার এক পর্যায়ে এক ফ্রেন্ডের থেকে জানতে পারে পলাশ বিয়ে করেনি,এখনো নিধির খোঁজ করে।কষ্টে ভরা মনে আশার আলো ফুটে,সিদ্ধান্ত নেয় কলেজের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেবে।তারপর অনেক কষ্টে অনন্তপুর কলেজে নিজের পোস্টিং এনেছে।নিধির সব কষ্ট সফল,সে তার জীবনের সেরা প্রাপ্তি হিসেবে পলাশকে পেয়েছে।পলাশের মতো মানুষকে নিজের জীবন সঙ্গি করতে পেরে মনে মনে আল্লাহর কাছে আবার শুকরিয়া আদায় করে।সকালের মিঠি রোদ পর্দা গলে নিধির চোখে লাগে সে মাথা ঘুরিয়ে পাশের বালিশটা দেখে।পলাশ নেই।নিধি অবাক হয়,এতো সকালে কোথায় যেতে পারে?নিজেও বিছানা ছেড়ে উঠার জন্য হাত পা নাড়ে।কিন্তু নিধির এতো অসুস্থ লাগছে যে বিছানা থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না।হাত-পা নাড়াতেই ব্যাথায় টনটন করে উঠে।সারা শরীরের শক্তি যেন একেবারে উধাও হয়ে গেছে।চোখে মুখে ক্লান্তির রেখা স্পষ্ট।সোজা হয়ে আরো কয়েকমিনিট শুয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
পলাশ একটা ছোট পাতিলে পানি নিয়ে গুড়ো দুধ গুলিয়ে তারপর চুলায় বসিয়ে দেয় দুধ গরম হয়ে আসলে তাতে চিনি দেয়।আলাদা একটা বাটিতে সুজি হালকা একটু পানি দিয়ে গুলিয়ে নেয়।তারপর দুধের পাতিলে দিয়ে দেয়।সুজি দেয়াতে দুধ আস্তে আস্তে ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে নেয়।আরেকটা বাটিতে ময়দা নেয় সাথে কয়েক চামচ গুড়ো দুধ দেয় পানি দিয়ে পাতলা করে গুলিয়ে নেয়।ফ্রাই পেন চুলায় বসিয়ে হালকা তেল দিয়ে তৈরি ময়দার মিশ্রণ দেয় তারপর তৈরি ক্ষীর দিয়ে কাঠির সাহায্যে রোল আকৃতি করে নেয়।পলাশ হঠাৎ করেই মুচকি হাসে বাড়িতে হলে এসব মোটেই করা যেতো না। বউয়ের এতো যত্ন,আবার পাটিসাপটা পিঠা বানিয়ে খাওয়ানো!বাবাহ!এসব করলে পেশকারা বাড়িতে তুলকালাম করে দিতো।পলাশ মুচকি হাসে ইচ্ছে করছে ভিডিও করে পেশকারাকে দেখাতে কিন্তু সে এই ইচ্ছে পূরন করবে না।কি দরকার ঝামেলা বাড়িয়ে পেশকারার জ্বালা বাড়ানোর!
নিধি অলস পায়ে বাথরুমে যায়।মিনিট কয়েক পড়ে মাথায় তোয়ালে পেচিয়ে বেড়িয়ে আসে।রুম থেকে বেরিয়ে রান্নাঘর থেকে টুংটাং শব্দ শুনে সেদিকে পা বাড়ায়।গিয়ে পলাশের কাজ দেখে সে হতবাক!
“ওমা তুমি রান্নাও পারো?”
নিধির উপস্থিতি টের পেয়ে পলাশ তাকায়।মুচকি হেসে আবার পিঠা বানায় আর মাত্র একটা পিঠা হবে।নিধি পলাশের কাজ দেখে বলে,
“আমার কি ভাগ্য!আমার বর রান্নবান্না সব পারে।আল্লাহ!কতো ভালো বর!”
পলাশ কথা বলেনা।মুচকি হাসি মুখে ঝুলিয়ে কাজে ব্যস্ত।
“আমার তো তাহলে রান্নাবান্নার কোনো ঝামেলাই নেই।তুমি রাধবে আমি খাবো।ইশ কি আরাম!”
পলাশ হাতের কাঠি রেখে বললো,
“এই আশা করলে সারাদিন-রাত পাঠিসাপটা পিঠা খেয়েই থাকতে হবে।”
“কেন?কেন?!
” কারণ আপনার বর পাঠিসাপটা পিঠা আর চা ছাড়া আর কিছুই বানাতে পারে না।”
নিধি দুঃখ দুঃখ চেহারা করে বললো,
“তাই?”
পলাশ নিধির দিকে তাকিয়ে হাসে।নিধিও হাসে মূহুর্তেই বলে,
“আমাকে ডাকতে।কষ্ট করে এসব করতে গেলে কেনো?”
পলাশ নিধির নাকে আঙুল ছুঁয়িয়ে বলে,
“বিড়ালটা যেভাবে গুটিসুটি করে ঘুমাচ্ছিলো।জাগাতে ইচ্ছে করেনি।”
নিধি আদুরী ভঙ্গিমায় হাসে।পলাশের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে একটা পিঠা হাতে নিয়ে খায়।খেতে খেতে বলে,
“খুব মজা হয়েছে তো!কে শিখিয়েছে?”
পলাশ নিধির প্রশংসা শুনে খুশী হয়।হাত বাড়িয়ে নিধিকে জড়িয়ে নেয়।তারপর নিজেও একটা হাতে নিয়ে খায়।
“আম্মার কাছে শিখেছি।আমার জ্বর হলে আমি এই পিঠা খেতে চাইতাম তখন আম্মা বানিয়ে দিতো আমি পাশেই বসে থাকতাম দেখতে দেখতে শিখা হয়ে গেছে।তারপর মাঝেমধ্যে আম্মাকে টুকটাক সাহায্য করতাম।”
শাশুড়ীর কথা শুনে নিধির মন খারাপ হয়।এতিম মেয়েটার যে আদরের খুব অভাব।পলাশ নিধির মুখের দিকে তাকালে নিধি বললো,
“আম্মার সাথে কথা বলতে পারবো না?আমার খুব ইচ্ছে করছে।”
“পারবেনা কেনো?দাঁড়াও ফোন নিয়ে আসি।”
রাবেয়া হাসিখুশি মুখে টেবিলে নাস্তা এনে রাখে।খুশীতে বুকটা টিপটিপ করছে।কিছুক্ষণ আগে নিধির সাথে কথা হয়েছে।তার আরেক বউমা।মেয়েটা যখন আম্মা বলে ডাকলো রাবেয়ার বুকটা সুখে কানায় কানায় ভরে গেছে।প্রায় দশ মিনিটের মতো কথা বলেছে।রাবেয়া আশ্বাস দিয়েছে সবাইকে মানিয়ে অতি শীঘ্রই পলাশ আর নিধিকে ঘরে ফিরিয়ে আনবে।এই দুই ছেলের জন্যই সারাজীবন কাটিয়ে ফেলেছে এখন এই ছেলেরাই যদি সুখে থাকতে না পারে তাহলে হবে?হবে না।ছেলেদের সুখের জন্য যা করার দরকার সব করবেন,সব।
হঠাৎ করে সুইটি গলা ফাটিয়ে চিৎ/কার দিয়ে উঠে।নাস্তার টেবিলের সবাই ছুটে সুইটির রুমে যায়।
সুইটি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।তার ইউকার্ট চুল আর ইউকার্ট নেই কাধ পর্যন্ত ত্যাড়্যাবেকা করে কাটা,কপালের সামনের চুল একেবারে উধাও।কে করেছে এমন কাজ এটা আর বুঝতে বাকি নেই।শওকত,আর মজিব হাওলাদার আবার নাস্তার টেবিলে ফিরে আসে,শিমুলকে কিছু বলার রুচি হচ্ছে না।আসমা আর পেশকারা রাবেয়াকে ধরে।আসমা তেড়ে এসে বললো,
“তোর ছেলে এগুলা করেছে তাই না?”
কালকে পুষ্পর সাথে হওয়া ঘটনা ফুলি তাকে বলেছে।এখন সুইটির অবস্থা দেখে খুশীই লাগছে আর হাসিও পাচ্ছে।মুখ টিপে হাসিরোধ করে বললো,
“আমার ছেলে এসব করবে কেন?”
ফুলি সুইটির দিকে এগিয়ে বলে,
“আফা আফনের চুল কি কাউয়ায় নিছে গা?”
সুইটি রাগী চোখে তাকালে ফুলি বললো,
“কাউয়ায় চুল নেয়া বেডিরে কোনো বেডায় বিয়া করতোনা আফা।আফনে হারাজীবন বিয়া ছাড়া থাহা লাগবো।বাজারের রতনী পাগ/লির মতোন।”
সুইটি পা আঁ/ছড়ে বললো,
“আম্মু…”
আসমা ফুলিকে ধমক দেয়।ফুলি ভয় পায় না।দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,
“ঠুল্লা মাথা হইয়া যান।ব্লে/ড আইন্না দেই আফা?”
পেশকারা ফুলিকে মা/রতে আসলে ফুলি তার পা দরজার দিকে বাড়ায় আর বলে,
“ঠুল্লা মাথা বেল বেল
রাখবানি গো বালাতেল।
বালাতেল বেইচ্চা
বুড়া বেড়া আনবো নাইচ্চা।”
পেশকারা ফুলিকে ধরতে পারেনা।ফুলি চঞ্চল পায়ে বেরিয়ে যায়।পেশকারা আবার রাবেয়াকে বলে,
“কিভাবে এমন ছেলে পেটে নিছিলা?দেখছো মেয়েটার কি হাল করেছে?”
আসমা মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“পুষ্পর চুল এমন করে কেটে দিলে কেমন লাগবে?”
পেশকারা আর আসমা রাবেয়ার কথার অপেক্ষা না করে শিমুলের রুমের দিকে ছুটে।কিন্তু রুমে যেতে হয়না।শিমুল খুব আয়েশ করে পরোটা খাচ্ছে।পেশকারা গলার আওয়াজ বাড়িয়ে বললো,
“হা/রাম/জাদা কি করেছিস এগুলা?”
শিমুল না বুঝার ভান করে বললো,
“চি/ল্লাও কেনো?আমি কি করেছি?”
“তুই জানিস না?মেয়েটার কি হাল হলো?”
মজিব হাওলাদার কতোক্ষণ চি/ল্লাচি/ল্লি করে শিমুলকে বকাঝকা করে।শিমুল নিরুত্তর।বকা দিক তাতে কী কাজ তো কম্লিট।শিমুলের এই চুপচাপ থাকা সবাইকে আরো রা/গিয়ে দেয়।
শিমুল নাস্তা শেষ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।সুইটির রুমে যেতে যেতে বললো,
“দেখি কি হাল।”
তারপর সুইটির রুমে গিয়ে সুইটির দিকে তাকিয়ে,চুক চুক করে শব্দ করে।
“ইশ তোর ইউকার্ট চুলের কি হলো?”
সুইটি শিমুলের দিকে তাকিয়ে বললো,
“তুমিই তো করেছো।তুমি এতো খা/রাপ?”
শিমুল হাসে।কালরাতেই সে এই মহান কাজটা করেছে।তার বউকে ক/ষ্ট দিবে আর সে ছেড়ে দিবে?শিমুল তো এতো ভালো না।তার ফুলকে কেউ আঘাত করলে মোটেই ছেড়ে দিবে না।সুইটি ঘুমে ছিলো তাই বুঝতেই পারেনি।
“আমি করেছি?”
“হ্যাঁ।”
“আচ্ছা একটা ব্লে/ড এনে দেই সব চুল ফেলে দে।”
সুইটি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।শিমুল বললো,
“তোর চুল নাকি বেশী বড়ো হয়ে গেছে?”
“তোমার বউয়ের চুল যদি না কা/টি আমার নাম সুইটি না।”
“আমার বউয়ের দিকে হাত বাড়ালে তোর হাত কে/টে দেবো।”
সুইটি কিছু বলার আগে শিমুল বেরিয়ে যায়।পেশকারার সব রা/গ গিয়ে পুষ্পর উপরে পড়ে।নবাবজাদি আজকেও দেরী করে উঠেছে।উনি গিয়ে পুষ্পর সামনে দাঁড়ায়।
“এটা কি বাপের বাড়ি পেয়েছো?”
পুষ্প হাত কচলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।সে ভোর সকালেই বেরোতে চেয়েছিলো কিন্তু শিমুল দেয়নি।তার এক কথা ফুলি আছে।পুড়া হাত নিয়ে কাজ করতে হবে না।
পেশকারা পুষ্পর গালে খোঁচা মেরে বললো,
“মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না?নাস্তা কে বানাবে,সবাই কি খাবে সে খেয়াল নেই?খালি জামাই নিয়ে শুয়ে থাকলে চলবে?”
পুষ্প হাত দেখিয়ে বললো,
“বুবু হাত পু/ড়ে ফেলেছি তাই…”
পুষ্পর কথা শেষ হবার আগেই পেশকারা বললো,
“এমন হাতের পু/ড়া নিয়ে জামাইর বাড়িতে কতোই কাজ করেছি।তোমার মতো ডং করি নাই।”
শিমুল কিছুটা দূর থেকেই বললো,
“বিয়ে করে বউ এনেছি কাজের মেয়ে না।তোমার যা লাগবে ফুলিকে বলো।আমার বউ ডং করবে রঙ করবে যা মন চায় করবে।”
ছেলের কথা শুনে রাবেয়া মুচকি হাসে।তার স্বামী কখনোই এভাবে কিছু বলেনি।পেশকারা রাবেয়াকে সীমাহীন কষ্ট দিলেও টু শব্দ করেনি।ছেলে বলছে বিধায় শান্তি লাগছে।পেশকারা মজিব হাওলাদারের দিকে তাকিয়ে বললো,
“দেখেছো?পোলার নাভী শুকিয়েছে কিনা সন্দেহ আর এই পোলা আমার সাথে তর্ক করে!”
শিমুল ত্যাড়া গলায় গেঞ্জি উঠিয়ে বললো,
“আসো দেখো নাভী শুকিয়েছে কিনা।”
শিমুলের কথায় পেশকারা চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়।শিমুল পেশকারার চোখের দৃষ্টি দেখে বললো,
“তুমি চোখে দেখবে তো নাকি তোমার সুইটিকে ডাকবে।”
পেশকারা চোখ পাকিয়েই তাকিয়ে থাকে।শিমুল মুচকি হেসে বললো,
“একজনের মাথার চুল নাকি বেশী বড়ো হয়ে গিয়েছিলো দেখেছো কি হাল হলো!এখন দেখছি তোমার গলার চুলকানীও বেড়ে গেছে।তোমার কি হয় আল্লাহ জানে!”
পেশকারার হতভম্ব চাহনী উপেক্ষা করে শিমুল বাইকের চাবি হাতের আঙুলে ঘুরাতে ঘুরাতে বেরিয়ে যায়।পেশকারা পুষ্পর দিকে তাকালে পুষ্প কাঁচুমাচু করে রান্নাঘরে ঢুকে যায়।
সুইটির চুলের যা অবস্থা তাতে ন্যা/ড়া না করলে হবে না।কোনো উপায় না দেখে বিষন্ন মুখে সুইটি ন্যা/ড়া হয়।তার এতো সুন্দর চুলের এই দশা হলো এই দুঃখে কতোক্ষন কাঁদে।ফুলি খিলখিল করে হেসে পুষ্পর গায়ে ঢলে পড়ে।শিমুল দুপুরে ফিরলে ফুলি ছুটে গিয়ে বললো,
“ভাইজান আমাদের বাড়িতে একটা টিনের ঘর উঠছে।”
ফুলির কথার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে শিমুল হাসে।বাড়ির ভেতরে এসে দেখে সুইটি মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।শিমুল ফুলিকে বললো,
“ফুলি যা তো একটু তেল গরম করে আন।তোর সুইটি আপার মাথায় দিয়ে দেই।বেচারীর ইউকার্ট চুল বলে কথা।”
চলবে…..