সাবলেট পরকিয়া
আমাদের ফ্লাটের আন্টি, ভালোবেসে একে অপরকে দুজন বিয়ে করেছিলো। সংসার জীবনের ৬ বছরে কেউই তাদের ভিতর কোনো ঝগড়া ঝামেলা দেখেনি। কিন্তু হঠাৎ তাদের সংসারটা এলোমেলো হয়ে যায়। ঘটনা শুরু ২০২১ থেকে। সুমি আন্টি তার পাশের বিল্ডিং এর রিমা আন্টির সাথে ২০২১ সালে বন্ধুত্ব করে। একে অপরের বাসায় নিয়মিত যাওয়া আসা আড্ডা সবকিছুই নরমালি চলতে থাকে। তারা দুই বান্ধবী সিদ্ধান্ত নেয় তারা #সাবলেট থাকবে। তারপর যেই বলা সেই কাজ তারা ২০২২ সালে সাবলেট থাকা শুরু করে। দুই বান্ধবীর ম্যাচিং জামা, জুতা, কসমেটিকস সবকিছুই ম্যাচিং চলতো। সুমি আন্টির হাজবেন্ড মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতো
আর রিমা আন্টির হাজবেন্ড ২০ হাজার। গার্মেন্টস এ জব করতো। সুমি আন্টির ছিলো লাভ ম্যারেজ, আর রিমা আন্টির ছিলো এরেঞ্জ ম্যারেজ। সুমি আন্টি আর রিমা আন্টি দুজন প্রায় দেড় বছর একসাথে এক বাসায় সাবলেট ছিলো।
সুমি আন্টির জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো সাবলেট থাকা। ২০২৩ সালের মাঝে সুমি আন্টি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায় আর বাপের বাড়িতে কিছুদিনের জন্য বেড়াতে যায়। আর অই সময় রিমা আন্টির হাজবেন্ড ও গ্রামে যায় দরকারে এর ভিতর রিমা আন্টির সাথে সুমি আন্টির স্বামীর সম্পর্ক তৈরি হয়। গভীরতা বাড়ে। সুমি আন্টি যখন গ্রাম থেকে বাসায় ফিরে তখন আন্টি এসে তার হাজবেন্ডের আচার-আচরণে পরিবর্তন দেখে। তিনি সুমি আন্টির সাথে সবসময় মিসবিহেভ করতো, পাশাপাশি ঘুমাতেও চাইতোনা। একসাথে খেতেও বসতোনা। আন্টিকে সবসময় ইগ্নোর করতো। এই ব্যাপারগুলো তিনি রিমা আন্টির কাছে শেয়ার করে। কিন্তু কে জানতো? এই রিমা ই তা সংসার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে। এভাবে ২ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর সুমি আন্টি ১ দিন রিমাকে বলে আমি আজ একটু ডাক্তার কাছে যাচ্ছি তোমার ভাইয়া যেতে পারবেনা। তুমি চলো আমার সাথে। কিন্তু, রিমা আন্টি নানান অজুহাত দেখায় যেতে চায়না। রিমা আন্টির জামাই দিনে বাসায় থাকেনা। আর রাতে ও অনেক সময় নাইট ডিউটি থাকে। যাইহোক! সুমি আন্টি ডাক্তার কাছে যায়। বাড়ি এসে দেখে মেইন দরজাটা খোলা, ভিতরে ঢুকে দেখে তার হাজবেন্ড তার বান্ধবীকে নিজ হাতে খায়িয়ে দিচ্ছে। হাসাহাসি করতেছে দুজন। এসব দেখে সুমি আন্টি কোনো রিয়েক্ট করেনি, চুপচাপ থাকে। আর তিনি তাদের এটা বুঝায় যে, সে কোনো সন্দেহ করেনি। এরপর তিনি তার বান্ধবী আর জামাইকে চোখে চোখে রাখে। একদিন আন্টি যখন রাতে ঘুমিয়েছিলো তখন তার হাজবেন্ড রিমা আন্টির রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আন্টির হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় আর তিনি তার জামাইকে খুজতে থাকে। তারপর রিমা আন্টির দরজা ধাক্কায় কিন্তু রিমা আন্টি খুলেনা, উনি বলে উনার স্বামী ঘুমায়, কিন্তু সেখানে উনার স্বামী ছিলোনা সেখানে ছিলো সুমি আন্টির হাজবেন্ড। সুমি আন্টি যখন উনার হাজবেন্ডকে কল দেয় তখন ফোনটা রিমা আন্টির রুমে রিং হয়। ব্যস এখান থেকে ঝামেলা শুরু। রিমা আন্টির সাথে সুমি আন্টির স্বামীর পরকিয়া ধরা পরে। তারপর ধীরে ধীরে আরো অনেক কাহিনী বের হয়। দ্বিতীয় পার্ট কাল লিখবো।
বিদ্রঃ সুমি আন্টির কোনো সন্তান ছিলোনা। কিন্তু রিমা আন্টির ২ জন ছেলে সন্তান ছিলো।
সুমি আন্টির হাজবেন্ড ইচ্ছে করেই বাচ্চা নিতে চাইতোনা। ২য় পার্ট পড়তে চাইলে কমেন্ট বক্সে জানিয়েন।
#সত্য ঘটনা
প্র’ নো দি’ তা
দ্বিতীয় পার্ট:-
দ্বিতীয় পার্ট বলার পূর্বে আপনাদের কাছে কিছু কথা: এটা কোনো গল্প না এটা বাস্তব কাহিনী। সতর্কতার জন্য এই পোস্টটি করা। আর আমি গল্প লিখতে পারিনা। ঘটনা যা ঘটেছে তা আমি লিখে বুঝাতে চেয়েছি। বাংলা লিখাতে আমি এক্সপার্ট না। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সংক্ষেপে লিখে শেষ করে দিচ্ছি।
যখন একরুমে রিমা আন্টি আর সুমি আন্টির জামাই ধরা পরে তখন সুমি আন্টি নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারেনা। চিল্লাচিল্লি করে আশেপাশের সব ফ্লাটের মানুষকে জড়ো করে। এতে করে সুমি আন্টির হাজবেন্ড ক্ষিপ্ত হয়। আর আন্টিকে মারধর করে। অইদিন অন্য ফ্লাটের মানুষেরা সুমি আন্টির হাজবেন্ডকে বকাঝকা করে। এইদিকে রিমা আন্টির হাজবেন্ড এসব ঘটনা শুনে পাগল প্রায়। রিমা আন্টির দুই ছেলে, বড়টার বয়স ৫ আর ছোটটা দেড়। আংকেল সিধান্ত নেয় তারপর দিনই বাসা ছাড়ার। রাগারাগি করে তালাক ও দিতে চায়। কিন্তু রিমা আন্টি বাসা ছাড়তে চায়না। আর কান্নাকাটি করে মাফ চায়। সন্তানদের দোহাই দেয় যেনো তালাক না দেয়। এর পরের দিন সুমি আন্টির শশুড়বাড়ির সব লোক হাজির। সবাই সুমি আন্টির পক্ষে ছিলো। কিন্তু সুমি আন্টির বাবার বাড়ির কেউই আসেনি কারণ উনার বাবা উনাদের বিয়েতে রাজি ছিলোনা, লাভ ম্যারেজ ছিলো তাই। যাইহোক! বিচার শালিস হয়, মাফ চাওয়া চায়ি হয়। রিমা আন্টি বাসা ছাড়ে। কিন্তু বাসা ছেড়ে ও কোনো লাভ হলোনা। সুমি আন্টির হাজবেন্ড আরো বেশি খারাপ আচরণ করে আন্টির সাথে। আমরা শুধু আন্টিকে শান্তনা দিতাম। এই ঘটনার পর আন্টি ধীরে ধীরে অনেক অসুস্থ হয়ে যায়। অনেক শুকিয়ে যায়। যেই তারা স্বামী স্ত্রী একসাথে খেতো সেই তারা এক বাসায় এক রুমে অপরিচিতোর মতো থাকতো। আংকেল ঠিকমতো বাজার করতোনা। ধীরে ধীরে ভরণপোষণ দেয়া কমিয়ে দেয়। অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতোনা সহজে। তাদের দাম্পত্য জীবন এক মরুভূমিতে পরিনত হয়। আন্টি অনেক চেস্টা করে বাচ্চা নিতে কিন্তু আংকেল রাজি হয়না। সব ডাক্টাররা একই কথা বলেছে আন্টির কোনো সম্যসা নেই। কিন্তু তা ও তার বেবি কন্সিভ হচ্ছিলো না। সুমি আন্টির হাজবেন্ডকে আন্টি যখনই বলতো আমার তো কোনো সম্যসা নেই চলো তোমাকে ডাক্তার দেখাই কিন্তু আংকেল রাজি হতোনা। এভাবেই ৩/৪ মাস কাটে। ২০২৪ সালে আন্টি আরো বেশি ডিপ্রেশনে ভুগে। সুমি আন্টি ভেবেছিলো রিমা হয়তো অন্য জেলায় চলে গেসে, কিন্তু বাস্তবতা ছিলো ভিন্ন। রিমা রুম ভাড়া নেয় পাশের এলাকায়। সবাই ভেবেছিলো হয়তো তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। সবার চোখে ধুলো দিয়ে তারা তাদের পরকিয়া কন্টিনিউ করে। সুমি আন্টির হাজবেন্ড প্রায় প্রায় বাজার নিয়ে রিমার বাসায় যেতো। আর রিমা আশেপাশের সবাইকে বলতো উনি তার কাজিন ভাই। বাজার নিয়ে যাওয়া ঘুরতে যাওয়া সবকিছুই চলত থাকে। এই ঘটনাগুলো সুমি আন্টির কানে চলে আসে। আন্টি আরো বেশি ডিপ্রেশনে চলে যায়। একটাসময় সুমি আন্টি সিদ্ধান্ত নেয় তিনি আর এই সংসারে থাকবেনা ডিভোর্স নিবে। এই কথা তিনি তার পরিবারকে জানায়। তার ভাবি তাকে ডিভোর্স নিতে নিষেধ করে। সংসার জোড়া লাগানোর কথা বলে। আন্টিকে আমরা প্রায়ই দেখতাম বারান্দায় হেলান দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো। কারো সাথেই মিশতো না, কথা বলতো না। ডিভোর্স এর কথা উঠলেই তার হাজবেন্ডের রাগারাগি করতো। ডিভোর্স দিতে চাইতোনা। সুমি আন্টির তার হাজবেন্ডের উপর সন্দেহ হয়, এতোকিছুর পর ও কেন ডিভোর্স দিতে চাচ্ছেনা। সুমি আন্টি তার হাজবেন্ডকে আবারো বলে বাচ্চা চায় তিনি। কিন্তু এবারো আংকেল রাজি না। অনেক জোড় জবরদস্তি করে পরিবারের চাপে পরে হসপিটালে যাওয়ার জন্য রাজি হয়। এবং বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার পর যানা যায় সুমি আন্টির হাজবেন্ডের সম্যসা। তিনি বাবা হতে পারবেন না। তার শারীরিক সম্যসা। এ কথা শুনে সুমি আন্টি আরো ভেঙে পরে। এই সব ঘটনা আমরা জানতে পারি কারণ আমরা সেম বিল্ডিং এ ছিলাম। আর সুমি আন্টি মানসিকভাবে ভেঙে পরেছিলো, আমরা সবাই নিয়মিত উনার খোজখবর নিতাম। যাইহোক! ২০২৪ইং এর নভেম্বর এ তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা একসাথেই থাকবে সারাজীবন। সুমি আন্টি তার হাজবেন্ডকে ছেড়ে দেয়নি। সুমি আন্টির হাজবেন্ড ওয়াদা করে তিনি পরকিয়া থেকে ফিরে আসবে। তাওবাহ করে, এবং তার পরিবারের সবার সামনে কুরআন ছুয়ে শপথ করে।
ধীরে ধীরে আংকেল নামাজ পড়া শুরু করে, আগের মতো নরমাল হয়ে যেতে চেস্টা করে। ঠিকমতো বাজার করে। আমরা সহজ ভাষায় বলতে পারি তিনি কিছুটা হেদায়েত প্রাপ্ত হয়েছিলো। আলহামদুলিল্লাহ! কিন্তু রিমা আন্টি তার বিহেভ চেঞ্জ করতে পারেনি। রিমা প্রায় প্রায় সুমি আন্টির হাজবেন্ডকে রাত ১/২টায় কল দিতো। ইমোশনাল মেসেজ দিতো, টাকা চাইতো। এই অবস্থা দেখে সুমি আন্টি রিমার বাসায় গিয়ে রিমাকে মারধর করে আসে। সুমির আন্টির সাথে তার শাশুড়ী ননদরা ছিলো। রিমা তাতেও শান্ত হচ্ছিলোনা, সে সুমি আন্টির হাজবেন্ডের দোকানে গিয়ে সিন ক্রিয়েট করতো। রিমা ছিলো অত্যন্ত লোভী আর চালাক মেয়ে। ২ বাচ্চার মা হয়েও সে এমন ভাবে চলাফেরা করতো মনে হতো যে, সে ক্লাস ৯/১০ এ পড়ে। সবসময় বোরকা ছাড়াই রাস্তাঘাটে চলাচল করতো। রিমার জামাই সব দেখেও ২ বাচ্চার কথা ভেবে ছাড়তে চেয়েও ছাড়তো না। শেষমেষ ২০২৪ এর ডিসেম্বর এ রিমাকে নিয়ে রিমার হাজবেন্ড গ্রামে চলে যায়। চাকরি ছেড়ে দেয়। এভাবেই সব শেষ হলো। এটা কোনো গল্প না কোনো নাটক না। আমাদের জীবনে এমন দুঃসময় আসে যখন আল্লাহ ছাড়া কেউই পাশে থাকেনা। সুমি আন্টি এই ২টা বছর অনেক কেঁদেছে অনেক অশান্তি সহ্য করেছে। শেষমেষ তারা স্বামী স্ত্রী একসাথে আছে সুখী আছে। অনেকেই বলে আংকেল নাকি মন থেকে ভালো হয়নি, কিন্তু আমরা নিজের চোখেই দেখতেছি তিনি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। জানিনা তার পরিবর্তন এর আসল কারণ কি? উনি বাবা হতে পারবেনা হয়তো এটাও কারণ হতে পারে। সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা।
বিদ্রঃ সবাই তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়া করবেন। অনুরোধ!
প্র’ নো দি’ তা