‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখো’-এই গান শোনেননি, এমন শ্রোতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর এই গান যখন কানে বাজে তখন আনমনেই চোখের কোণে ভেসে ওঠে একজন সুদর্শন নায়কের মুখ। তিনি সালমান শাহ। বাংলা চলচ্চিত্রের নক্ষত্র ছিলেন তিনি।
সালমান শাহর প্রতি ওই সময়ের তরুণ-তরুণীরা কতটা পাগল ছিল, তা অনেকেরই জানা। তেমনই এক ভক্ত ছিলেন ইথেন। যার বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনিই সেই সৌভাগ্যবতী তরুণী, যিনি সালমান শাহর নিজ হাতে লেখা চিঠি পেয়েছিলেন!
জানা যায়, ইথেনরা পাঁচ বোন ছিলেন সালমান শাহর অন্ধ ভক্ত। নিয়মিত প্রিয় নায়কের ভিউ কার্ড কিনতেন। হলে গিয়ে সিনেমা দেখতেন। এখনো সালমান শাহর সমস্ত ছবি, ভিউ কার্ড সংরক্ষণ করে রেখেছেন তারা।
সালমান শাহকে ইথেন বহু চিঠি লিখেছিলেন। জানিয়েছিলেন তার অনুভূতি ও ভালোলাগার কথা। ১৯৯৫ সালের ৮ এপ্রিল ইথেনকে উত্তর দিয়েছিলেন নায়ক। সেই চিঠিতে লেখা ছিল…
স্নেহের ইথেন,
আমার অনেক ভালোবাসা ও স্নেহাশিস নিও। তোমার চিঠি অনেক আগেই আমি পেয়েছি। কিন্তু অসম্ভব ব্যস্ততার কারণে উত্তর দিতে সামান্য দেরি হয়েছে বলে আমি দুঃখিত। মাসুম ভাইয়ের কাছে তোমার কথা অনেক শুনেছি। তোমার মত একজন ভক্ত আমার আছে ভেবে সত্যি খুব আনন্দ পাই। এবং মনে মনে খুব গর্বও বোধ করি। তোমাদের মতো আমার ভক্তদের ভালোবাসাই আমার কাজের প্রেরণা। তোমাদের এই ভালোবাসা আমৃত্যু যেন আমার সাথে থাকে, এই দোয়াই বিধাতার কাছে করি।
ব্যস্ততার কারণে অতি সংক্ষেপে চিঠিটা শেষ করতে হচ্ছে বলে আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আবারও চিঠি লেখার আমন্ত্রণ রইলো।
ইতি-
সালমান শাহ
চিঠির সঙ্গে সালমান শাহ শিল্পী সমিতির ঠিকানা দিয়েছিলেন, যাতে ইথেন আবারও সেই ঠিকানায় চিঠি লিখতে পারেন। এছাড়া রঙিন কাগজে সালমান শাহ নিজের একটি অটোগ্রাফও দিয়েছিলেন ইথেনের জন্য। ইথেন সেই চিঠি, অটোগ্রাফ এখনো পরম যত্নে সংরক্ষণ করে রেখেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের এই দিনেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জনপ্রিয় এই নায়ক। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও একবিন্দু কমেনি তার জনপ্রিয়তা ও আবেদন। বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আরও অনেক বেশি রঙিন হয়েছে তাকে নিয়ে ভালোবাসার রঙ।