#লেখিকাঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্ব_20
মেঘের কথায় মিহির একদম হতবম্ব হয়ে গেলো। মেঘ যে ওকে ভুল বুঝছে সেটা ভালো করেই বুঝতে পারছে। নিজের অজান্তেই বোনকে এতোটা কষ্ট দিয়ে ফেললো। এবার কি করবে ও? কোন মুখে ক্ষমা চাইবে মেঘের কাছে। আর মেঘ কি কোনোদিন ওকে ক্ষমা করবে? যদি ওর ছোট বুড়িটা ওর সাথে আর কখনো কথা’ই না বলে তখন কি হবে? এসব ভেবেই মিহিরের মনে বোনকে হারানোর ভয়টা জেকে বসেছে।
মেঘ হেচকি দিতে দিতে বললো
“ওরা মাম্মামের সাথে,, তোর সাথে সব সময় কি রকম ব্যাবহার করতো সেগুলোও আমি ভুলিনি। মাম্মাম একজন এম.বি.বি.এস ডক্টর হওয়া শর্তেও ওরা মাম্মামকে জব করতে দেয়নি। আর বাবাই’ও কিচ্ছু বলেনি শুধু কাকি মনির কথা চুপচাপ মেনে নিয়েছে। মাম্মামের প্রত্যেকটা এক্সামের রেজাল্ট এতো ভালো ছিলো,,তাও ওরা মাম্মামকে একজন হাউস ওয়াইফ বানিয়ে রেখেছিলো। আর সারাদিন শুধু মাম্মামকে খোটা দিয়ে বলতো তোমার এই বাড়ির বউ হওয়ার কি যগ্যেতা আছে। আর মাম্মাম সেগুলো চুপচাপ সহ্য করে নিতো ।কখনো ওনাদের মুখের উপড়ে কথা বলতো না। ওদের প্রত্যেকের কটু কথা গুলো আমার মনে গেথে আছে।যেগুলো শতো চেষ্টা করেও ভুলে যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু কি বলতো,, আমি তো আর তোদের মতো নই যে ,, কথায় কথায় মারামারি করবো ভাংচুর করবো। আমি কাউকে কষ্ট দিয়ে কথা বলতে পারি না। আর বড়দের সাথে তো একদমই বেয়াদবি করতে পাড়ি না। কারো সাথে যদি একটু রেগেও কথা বলি তাহলে প্রচন্ড গিলটি ফিল হয়। মনে হয় যেনো আমি নিজের অজান্তেই কাউকে খুব কষ্ট দিয়ে ফেললাম। খুব খারাপ লাগে,, কান্না পায়। আল্লাহ আমাকে কারো সাথে রুঢলি কথা বলার শক্তিটা দেয়’ই নেই । সেটা কি আমার দোষ? এবার তোরা যদি এটাকে ন্যাক্যামো বলিশ তাহলে তাই।”
মিহির অসহায় কন্ঠে বললো
“সরি বনু আমার ভুল হয়ে গেছে। এবার কান্না থামা প্লিজ। আমি কখনো আর তোকে এভাবে বলবো না।কোনোদিন বকবো না। তাও প্লিজ এভাবে কাদিস না। এই ভাবে কাদলে তুই অসুস্থ হয়ে পড়বি। প্লিজ সোনা আর কাদিস না। “
মেঘ চিল্লিয়ে বললো
“অসুস্থ হলে আমি হবো তাতে তোর কি? আমি মরে গেলেও বা তোর কি? তুই আমাকে একটুও ভালো বাসিস না। তুইও আমাকে ওদের মতো অসহ্যকর মেয়ে বলেছিস । আমি আর কখনো তোর সাথে কথা বলবো না। তোর ধারে কাছেও যাবো না। আমি এখনি এখান থেকে চলে যাবো। এখানে কিছুতেই আর থাকবো না।তোরা সবাই খুব খারাপ।”
কথা গুলো বলেই মেঘ দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো । মিহির’ও ছুটে ওর পিছনে পিছনে গেলো। কিন্তু গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান যেখানে হচ্ছে সেখানে এসেই এতো লোক জনের ভিড়ের মধ্যে মেঘকে হাড়িয়ে ফেললো। মিহির এদিক সেদিক হন্নে হয়ে মেঘকে খুজতে লাগলো।
________________________
আহানের একটা জরুরি ফোন এসেছিলো তাই ও ফার্ম হাউজের একদম সামনে যেখানে সবার গাড়িগুলো পার্ক করা আছে সেখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলো।ভিতরে এতো মানুষের চেচামেচির শব্দে ফোনে ভালোভাবে কথাই বলতে পারছিলো না তাই বিরক্ত হয়ে এদিকটায় চলে এসেছে। আহান হেটে হেটে ফোনে কথা বলছিলো তখনই দেখলো মেঘ কাদতে কাদতে এই দিকেই আসছে। মেঘকে এভাবে কাদতে দেখে আহান অবাক হয়ে গেলো। দ্রুত ফোনের অপর পাশের ব্যাক্তিকে উদ্দ্যেশ্য করে এক্সকিউজ মি,,আমি আপনার সাথে পড়ে কথা বলছি বলে ফোনটা কেটে দিলো। তারপর ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে ,,দ্রুত পায়ে মেঘের দিকে এগিয়ে গেলো।
মেঘ দৌড়ে গিয়ে আজম রহমানের গাড়ির সামনে দাড়ালো। ড্রাইবার গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে ফোন টিপছিলো। মেঘ নাক টেনে টেনে ড্রাইবার কে উদ্দেশ্য করে বললো
“আঙ্কেল আমাকে বাড়িতে নিয়ে চলুন প্লিজ।”
ড্রাইবার অবাক হয়ে জিঙ্গেস করলো
“কেনো মামনি?”
“আমি আর এখানে থাকবো না। “
“কিন্তু কেনো মামনি? তোমরা একটু আগেই তো এখানে আসলে আর এখনি চলে যাবে?আর এভাবে কাদছো কেনো?স্যার ম্যাম ওনারা কোথায়?”
“মাম্মাম বাবাই কোথায় আছে আমি জানিনা। আমি শুধু এখান থেকে যেতে চাই ব্যাস।”
আহান এসে মেঘের হাত ধরে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে হন্তদন্ত জিঙ্গেস করলো
“হোয়াট হ্যাপেন মেঘ? কাদছো কেনো? কেউ কি তোমাকে কিছু বলেছে?”
মেঘ চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো
“না আমাকে কেউ কিচ্ছু বলেনি। আমি বাসায় যাবো।”
“কেউ কিছু বলেনি তাহলে কাদছো কেনো?”
মেঘ ঝাড়ি মেরে বললো
“আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই কাদছি আপনাকে বলবো কেনো? আপনি যান এখান থেকে।আমি বাসায় যাবো”
আহান মুখ থেকে বিরক্তি কর একটা চ শব্দ উচ্চারন করে রাগি কন্ঠে বললো
“স্টপ ক্রাইং মেঘ। আমি যেটা জিঙ্গেস করছি আগে সেটার জবাব দেও,, তোমাকে কে কি বলেছে? জেরিন আবির ওরা কেউ তোমাকে কিছু বলেছে?”
“বললাম না আমাকে কিছু বলেনি। তাও বারবার একই প্রশ্ন কেনো করছেন? আর আমার কোনো বিষয় নিয়ে আপনাকে এতো ভাবতে হবে না।”
মেঘের কথায় আহান ভীষন রেগে গেলো। ও মেঘের হাত ছেড়ে দিয়ে ওর গাল জোড়ে চেপে ধরে চোয়াল শক্ত করে বললো
“ভালো কথা বললে তুই কানে শুনতে পাসনা তাইনা? কখন থেকে আমি একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছি আর তুই সেটার জবাব দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করছিস না। এতো সাহস পাস কোথা থেকে তুই? “
আহান এতো জোড়ে মেঘের গাল চেপে ধরেছে যে ব্যাথ্যায় মেঘের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। মেঘ ব্যাধ্যা পাচ্ছে দেখে আহান মেঘের গাল ছেড়ে দিলো। মেঘের কান্নার মাএা এবার আগের থেকে আরও বেরে গেলো।অতিরিক্ত কান্নার ফলে মেঘের শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। ও হাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে।মেঘকে এভাবে কাদতে দেখে আহান অস্থির হয়ে গেলো। মেঘের কাছে গিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো
“ইট’স ওকে।তোমাকে কিচ্ছু বলতে হবে না । কান্না থামাও প্লিজ।”
মেঘ এক হাত আহানের পিঠে দিয়ে ওর শার্ট আকরে ধরে বললো
“আমি এখানে থাকবো না প্লিজ । আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন প্লিজ।এখানে আর এক মূহুর্ত থাকলে আমি মরেই যাবো।”
আহান মেঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো
“মেঘ পরি কান্না থামাও প্লিজ। আমরা এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাবো।আর এক মূহুর্তও এখানে থাকবো না। তুমি যা চাইছো তাই হবে। প্লিজ স্টপ ক্রাইং নাহলে তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বে।”
মেঘ আহানের বুকে মুখ গুজে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে আর বিরবির করে বলছে আমাকে আর কেউ ভালোবাসে না । সবাই খুব পচা।
আহান কান গাড়া করে শোনার চেষ্টা করছে মেঘ ঠিক কি বলছে। হঠাৎ ও অনুভব করলো মেঘ নিজের সব ভার ওর উপর ছেড়ে দিয়েছে আর কান্নাটাও বন্ধ হয়ে গেছে।আহান ভালো করে মেঘের দিকে তাকাতেই দেখলো মেঘ অঙ্গান হয়ে।আহান মনে মনে বললো যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো।
ও মেঘকে পাজকোলে তুলে নিলো। তারপর ড্রাইবারকে উদ্দেশ্য করে বললো
“আপনাকে যেতে হবে না ।আমি ওকে আমার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছি। আর এই বিষয়ে কাউকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই ।যা বলার আমি বলে দেবো।”
_________________________
গায়ে হলুদের স্টেজের সামনের একটা চেয়ারে বসে আছে আহির ,,ওর পাশেই বসে আছে দিশা। আহির মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করছে আর দিশা ইয়ার ফোন দিয়ে গান শুনছে। অভি একটা কোল্ড ড্রিংকস এর বোতল হাতে নিয়ে খেতে খেতে দিশার পাশে এসে বসে,, একটানে দিশার কান থেকে ইয়ার ফোনটা খুলে দিলো। তারপর দিশাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“কি হলো মিস বিষা,, হলুদের অনুষ্ঠানে এসে পাএের গায়ে হলুদ না ছুয়িয়ে এখানে এভাবে বসে বসে গান শুনছেন?গায়ে হলুদ ছোয়াবেন কখন?”
দিশা অভির দিকে তাকিয়ে একটা বাকা হাসি দিয়ে বললো
“আমি কি পাএের গায়ে হলুদ ছোয়ানোর জন্য এখানে এসেছি নাকি? আমি তো এসেছি পাএের বোন+ভাইয়ের বউয়ের সাথে পুরোনো হিসাব চুকাতে।”
“মানে,,,,,,,?”
“মানেটা নাহয় একটু পড়েই দেখতে পারবেন।”
দিশার কথা শুনে অভি বেশ অবাক হলো। মনে মনে বললো এইটূকু পুচকে একটা মেয়ে তারও আবার এতো এটিটিউট। আল্লাহ জানে এই মেয়ে আবার কি করতে চলেছে।
পাশ থেকে আহির বললো
“দিশা বেবি যা কাজে লেগে পড়। শুভ কাজে দেরি করে লাভ নেই ।”
“ওক্কে ব্রো।”
বলেই দিশা চেয়ার থেকে উঠে সৌজা সেষ্টেজের দিকে চলে গেলো।সেখানে অনেকেই আছে । কেউ বরের সাথে বিভিন্ন পোজে পিক তুলছে,,কেউ বরকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে,,কেউবা আবার হলুদ ছোয়াচ্ছে। স্টেজের একপাশে বসে DJ রা গান বাজাচ্ছে। দিশা ওদের কাছে এসে ওদেরকে গান বন্ধ করতে বললো তারপর ওদের কাছ থেকে একটা মাইক নিয়ে স্টেজের সামনে গিয়ে দাড়ালো আর বললো
“এটেনশন প্লিজ গাইস! আমি একটা জরুরি এনাউন্সমেন্ট করতে চাই।”
দিশার কথায় সবাই বেশ আগ্রহ নিয়ে ওর দিকে তাকালো। দিশা মাইক হাতে নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে জেরিনের সামনে দাড়ালো তারপর ওর হাত ধরে টেনে স্টেজে নিয়ে আসলো । ঠোটে রহস্যসূচক একটা হাসি ফুটিয়ে বললো
“আমি আর জেরিন খুব একসময়ে খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। কিছু বছর আগে কোনো একটা কারনের জন্য আমি ঢাকায় চলে আসি তারপর আর ওদের সাথে আমার যোগাযোগ করা হয়ে উঠৈনি। আজকে এতো গুলো বছর পর আবার জেরিন কে দেখে আমি যে কতোটা খুশি হয়েছি তা আপনাদের যাষ্ট বলে বুঝাতে পারবো না। ওকে যে কতোটা মিস করতাম সেটা শুধু আমিই জানি। এতো গুলো বছর পর আমাদের দেখা হলো তাই আমি চাইছি আমরা দুজন একসাথে একটা বলিউড গানে ডুয়েট ডান্স করবো। “
দিশার কথা শুনে জেরিন যেনো আকাশ থেকে পড়লো। চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে দিশার দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বললো
“আমি কি কানে ভুল শুনছি? যেই মেয়ে আমাকে দুচোখে সহ্য করতে পারতো না,,সে নাকি আমাকে মিস করেছে এটাও কি সম্ভব?”
জেরিন কথা গুলো বিরবির করে বললেও দিশা ঠিকই শুনতে পেয়েছে। ও গিয়ে জেড়িনকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বললো
“এতো শকড হওয়ার কিছুই নেই বেবস। তোকে আমি আগে যতোটা ঘৃনা করতাম এখন তার থেকেও একশো গুন বেশি ঘৃনা করি। পারলে তো তোকে এখনি নিজের হাতে খুন করে ফেলতাম । আর একটু আগে যেগুলো বললাম ওগুলো তো যাষ্ট একটু ড্রামা করলাম। দেখালাম ড্রামাটা শুধু তুই একাই করতে পারিস না আমরাও একটু আধটু পাড়ি। এন্ড বাই দ্যা ওয়ে হেরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যা।”
জেরিন দাতে দাত চেপে বললো
“আমাকে হারানোর যোগ্যতা তোর মতো লুজারের নেই। আমি সব কিছুতে সব সময় টপে থাকি আর এবারও আমিই জিতবো। তুই নিজে এটা ডিসাইট কর যে তুই হেরে যাওয়ার পর কোথায় গিয়ে মুখ লুকাবি।”
দিশা জেড়িন কে ছেড়ে দিয়ে একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে
“কাম অন সুইটহার্ট আমরা দুজন ফেইসঅফ করছি না,, ডুয়েট করছি।আমি যদি হেরে যাই তাহলে তো তুইও হেরে যাবি।”
দিশার কথায় জেরিন থতমত খেয়ে গেলো।সত্যিই তো দিশা হেরে গেলে তো ও হেরে যাবে। জেরিন তোতলাতে তোতলাতে বলল
“ত-তো কি হ-হয়েছে আমি তোর থেকে ভালো নেচে দেখাবো।”
“সেটা তো সময়ই বলে দিবে।”
বলেই দিশা সেখান থেকে চলে গেলো।
_________________________
মিহির মেঘকে খুজতে খুজতে ফার্ম হাউজের ছাদে এসেছিলো।তখনি দিশার এনাউন্সমেন্ট শুনতে পেলো।মিহির বিরবির করে বললো
“এইটার মাথায় আবার কি খিচুরি পাকছে কে জানে? কি সব আজগুবি কথা বলছে। ও আর জেরিন নাকি খুব ভালো বন্ধু ছিলো। ওর তো জেরিনকে দেখলেই ঝাল লাগতো,,এক মূহুর্ত্তের জন্যও জেরিনকে সহ্য করতে পারতো না। একেকটা একেক ধরনের আরেকজন কোথায় গিয়ে যে বসে আছে কে জানে।এই টুকু সময়ের মধ্যে কোথায় গায়েব হয়ে গেলো।”
হঠাৎ মিহিরের ফোন বেজে উঠলো। মিহির পকেট থেকে ফোন বের দেখলো আহান মেসেঞ্জারে ভিডিও কল দিয়েছে। মিহির ফোনটা রিসিভ করতেই দেখলো আহান একহাতে ড্রাইভিং করছে আরেকহাতে ফোন ধরে আছে। তীক্ষ্ম কন্ঠে বললো
“মেঘকে কে কি বলেছে মিহির?ও কাদছিলো কেনো?”
আহানের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টে মিহির আহানকে প্রশ্ন করলো
“মেঘকে কোথায় দেখেছো ভাই?”
“ও এখন আমার সাথেই আছে। আগে আমার প্রশ্নের জবাব দে ?ওকে কে কি বলেছে?”
মিহির অপরাধি ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে তখন যা যা ঘটেছিলো একে একে সব বলে দিলো। আহান রাগি কন্ঠে বললো
“ওয়াউ গ্রেট। খুব ভালো কাজ করেছেন। এবার আপনার বোনের অবস্থাটাও একটু দেখেন।”
বলেই আহান ওর ফোনটা ঘুড়িয়ে ধরলো। মিহির দেখলো পিছনের সিটে মেঘ নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছে। মিহির আৎকে উঠে বললো
“কি হয়েছে ওর?ওভাবে শুয়ে আছে কেনো?”
“অতিরিক্ত কান্নার ফলে সেন্সলেস হয়ে গেছে। আমি ওকে আমার সাথে নিয়ে যাচ্ছি।কেউ ওর কথা জিঙ্গেস করলে যা খুশি একটা কিছু বলে ম্যানেজ করে নিস। আর আজকে যেই ভুলটা করলি ভবিষ্যতে এরকম ভুল যেনো না হয়,, তাহলে তোকে শাস্তি দিতে আমার দ্বীতিয়বার হাত কাপবে না।”
বলেই আহান ফোনটা কেটে দিলো।
_________________________
[8/28, 5:24 PM] তিশা মনি: সাড়িকা সাঈফা দাড়িয়ে দাড়িয়ে তুলছিলো। দিশা এসে সাড়িকা সাঈফাকে উদ্দেশ্য করে বললো
“এইযে টুইনজ এবার সেলফি তোলা বাদ দিয়ে আসল কাজটা কর। নাচের ভিডিও টা খুব ভালো ভাবে করবি। যাতে কোনো এক জায়গা থেকে যেনো একটা স্টেপও মিস না হয়। “
সাইফা বললো
“কামঅন আপি টেইক এ চিল পিল। কোনো কিছু মিস হবে না। ইউ নো হোয়াট? আমরা মানুষকে খুব ভালো করে বাশ দেই। “
সাড়িকা দিশাকে উদ্দেশ্য করে বললো
“বেষ্ট অফ লাক আপি।”
অভি ওদের কাছে এসে বললো
“তোরা সবাই মিলে কি করতে চাইছিস বলতো?”
দিশা ঝাড়ি মেরে বললো
“সেটা আপনাকে বলবো কেনো? সরুন সামনে থেকে।যেটা হবে সেটা তো দেখতেই পাবেন।”
বলেই দিশা গিয়ে স্টেজে উঠলো।ওর পিছনে পিছনে জেরিনও উঠলো।ওরা স্টেজে উঠতেই সব লাইট গুলো অফ হয়ে গেলো শুধু দুইটা স্পট লাইট এসে ওদের দুজনের উপরে পড়লো। গান শুরু হতেই দুজন নাচ শুধু করলো। দুজনই বেশ ভালোই নাচছে। নাচের এক পর্যায়ে এসে দিশা জেরিন কে ল্যাং মারলো। সাথে সাথে জেরিন পড়ে গেলো আর দিশাও ইচ্ছে করে স্টেজ থেকে পড়ে যাওয়ার নাটক করলো। দিশা স্টেজ থেকে বাইরে পড়তেই লোডশেডিং হয়ে গেলো। লোডশেডিং হওয়ার দুই সেকেন্ডের মধ্যেই জেরিনের চিৎকার সবার কানে ভেষে এলো। আর সাথে সাথে কারেন্টও চলে এলো। কারেন্ট আসতেই বিয়ে বাড়ির সবাই স্টেজের দিকে তাকালো। তাকিয়েই হতমম্ব হয়ে গেলো। কেউ কেউ তো ভয়ে জোড়ে চিৎকারও দিলো। সাড়িকা, সাঈফা, দিশা ওরাও অবাক হয়ে গেলো যা করতে চেয়েছিলো তার পরিনাম যে এতোটা ভয়ংকর হবে তা ওরা সপ্নেও ভাবতে পারেনি।
#চলবে,,,,,,,,