প্রিয়োসিনী পর্ব ১৫
#নীরা_আক্তার
নোহা নওরিনকে ঘরে ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
-কি হয়েছে নোহা?কোনো সমস্যা হয়েছে কি?
-সত্যিই করে একটা কথা বলবে?
-কি কথা?
-কিছু লুকাবে না কসম খাও….
-কিহ সব বলো?কসম খেতে নেই জানো না!
-হুম্ম।দাভাইয়ের নামে কসম খাও একটাও মিথ্যা বলবা না লুকাবাও না!
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,
–আমান ভাইয়ের সাথে তোমার সত্যিই কি কোনো সম্পর্ক ছিলো?
দপকরে নওরিনের চোখ দুটো জ্বলে উঠে…
-এগুলো বলার জন্য আনছো?
-বলো
–আমি ক্লান্ত নোহা।সবাইকে চরিত্রে ক্লারিফিকেশন দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমার কষ্টটা বুঝবে বাট…তোমারা সবাই কেন আমাকে বার বার এভাবে কাঠগড়ায় দাড় করাচ্ছো বলো তো?সব জেনে শুনেই তো তোমার দাভাই আমাকে বিয়ে করেছিলো। তাহলে এতো কিসের প্রশ্ন আমাকে ঘিরে।
নওরিন উঠে দাড়ায়।নোহা নওরিনকে হাত ধরে বসিয়ে দেয়….
–আমি শুধু তোমাকে প্রটেক্ট করতে চাই!
-কিহ?
–আমান ভাইকে আমার থেকে বেশি কেউ চিনতো না।দাভাই আমান ভাই দুজনই আমার খুব কাছের মানুষ।দুজনকেই আমি খুব ভালোবাসি।কিন্ত দুজনের চরিত্রে আকাশ পাতাল ফারাক।আমি আমান ভাইকে একটু একটু করে বদলাতে দেখেছি।সিকদার বাড়ির সবচেয়ে বদরাগী বদমেজাজি চরিত্রহীন পুরুষটা একটু একটু করে নিজেকে বদলে নিয়েছিলো তোমার জন্য।তোমার কথাতে নওরিন।এগুলো মিথ্যে নয় সব সত্যি।আমান ভাইয়ের পাগলামো ক্রেজিনেস সব কিছুই আমি দেখেছি।এগুলো কিচ্ছু মিথ্যে নয়!
-ও গড! আমি পাগল হয়ে যাবো। আমি কখন তোমার আমান ভাইকে বদলাতে গেলাম।এগুলো কেন বলছো আমায়?আমি শুনতে চাই না…..কিছু!
-নওরিন লাস্ট এক বছর তোমার সাথে আমান ভাইয়ের রিলেশনশিপ ছিলো।এটা আমরা সবাই জানি।আমিও জানি আর দাভাইও জানে।বাড়ির সবাই জানে।আমান ভাই নিজে সবাইকে সব কিছু বলেছে।সারা রাত আমান ভাইকে আমি বারান্দায় বসে তোমার সাথে কথা বলতে শুনেছি।একটার পর একটা গিফট কিনতে দেখেছি।কিছু গিফ্ট আমি নিজেও কিনে দিয়েছি।এগুলো তো আমি মিথ্যে বলে মানবো না।কারণ আমি নিজে দেখেছি সব কিছু ।
-রিয়েলি?পাগলের প্রলাপ বকছো তোমরা?তোমরা সবাই এক!
-তোমার একটা কথায় আমান ভাই সব ছেড়ে ছুটে আসতো তোমার স্কুলে তোমার কাছে….আর তুমি পাগলের প্রলাপ বলছো?
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নোহার দিকে….
-বিশ্বাস করো আমি মারা যেতাম তবুও আমান সিকদারের সাথে কোনো সম্পর্কে যেতাম না।ওনার মতো অসভ্য লোকের সাথে কখনোই না।আর তার চেয়ে বর কথা আমি ওনাকে কখনো সেই চোখে দেখিই নি।ইনফ্যাক্ট তখন তো আমি এনগেজড ছিলাম।কেন করবো এমন রিলেশনশিপ।আমার কোনো দামি গিফ্টের প্রয়োজন না সেদিন ছিলো না এখন আছে।
নওরিন অসহায় দৃষ্টিতে নোহার দিকে তাকিয়ে আছে….
-তাহলে কে নওরিন? কে করেছে এই সব কিছু?আমান ভাই কার সাথে প্রেম করলো এতোদিন?
–আমি কি করে জানবো?
-তুমি জানো না?হয় সেটা তুমি ছিলে নয় তো কেউ তোমার আইডেনটিটি ইউজ করেছে….বুঝো না কিছু?ছোট বাচ্চা তুমি?
নওরিনের বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে!
-চুপ করে থাকলে সমস্যা বাড়বে বয় কমবে না…আমান ভাইয়া বেঁচে আছে মরে যায় নি আজ না হোক কাল ঠিকই ফিরে আসবে আর তারপর কি করবে?
প্রচুন্ড ভালোবাসা যখন প্রচুন্ড ঘৃনায় পরিনত হয় তখন সেই ঘৃনা কতোটা ভয়ংকর হয় জানো?সবকিছু শেষ করে দিবে ও এর চেয়ে ভালো না যে সত্যিইটা বলে দাও।ঝামেলা শেষ হয়ে যাক।তারপর তুমিও মুক্ত আমিও তোমার দায় থেকে মুক্ত
-কি বলবো?
-অদ্ভুত তো।এতোক্ষণ কি বললাম আমি তোমায়?
-আমি জানি না!কিছু না জেনে প্রমান ছাড়া কাউকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়।আর তোমার ভাইরাও ধোঁয়া তুলসি পাতা নয়। হতেই পারে সে সবকিছু মিথ্যে বলেছে….আমাকে বদনাম করার জন্য।
-তুমি কি কিছু বুঝোনা নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছো।
নওরিন মাথা নিচু করে নেয়,
–আমি শুধু তোমায় বাঁচাতে চায়েছি নওরিন!
-কেন চাইছো?
-দেখো তোমার এই অসন্মানের দায় কিছুটা হলেও আমার।আমান ভাইয়ের রিলেশনশিপে গোড়া থেকেই আমি ইনভলভ ছিলাম।ধরো আমান ভাইয়ের ভালো লাগা খারাপ লাগা গুলো আমার সাথে শেয়ার করতো।অ্যাজ এ বেস্ট ফ্রেন্ড।আর আমি তাতে আমার মতো করে রিয়াকশন দিতাম।একদিন হটাৎ করেই আমান ভাই ইশার মুখে তোমার বিয়ের কথা শুনে…প্রচুন্ড ভেঙ্গে পড়েছিলো।আমার ও খুব রাগ হয়েছিলো তোমার উপর মানে আমান ভাইয়ের সেই গফের উপর।আমিই ভাইকে সাজেস্ট করেছিলাম তোমায় তুলে এনে রাখতে। শুধু সাজেস্ট না ইনসিস্ট করেছিলাম।আর এদিকে তোমার বিয়েটাও ভেঙ্গে যেতো আর তুমিও তোমার শাস্তি পেয়ে যেতে।পরে আমান ভাই তোমায় বিয়ে করে নিতো আর সব ঠিক হয়ে যেতো।বাট আই ওয়াজ রং।আমি বুঝতে পারিনি সব কিছু এতো জটিল হয়ে যাবে।আমি জানতাম না আমান ভাইয়ের সেই প্রেমিকা তুমি ছিলে নওরিন।
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নোহার দিকে,
-আসলে সেদিন ইশার ফোনের ওয়াল পেপারে আমি প্রথম তোমার ছবি দেখি।মানে ইশার বেস্ট সেই ফ্রেন্ডের ছবি দেখি।আমান ভাই কখনো আমায় তোমার ছবি দেখায়নি।আসলে আমান ভাই চেয়েছিলো একবারে তোমায় বিয়ে করে আমায় দেখাবে।কিন্তু ততোক্ষনে আমি বুঝে গিয়েছিলাম কোথাও একটা সমস্যা হয়েছে।আমার বিশ্বাস ছিলো তুমি এমন হতেই পারো না।আমি স্ব জ্ঞানে কখনো তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবো না।…..কিন্তু ততোক্ষণে আমান ভাই বেরিয়ে গিয়েছে।পরিস্থিতি হাতের বাহিরে বেরিয়ে গিয়েছিলো।আমি দাভাইকে সবটা জানায়।দাভাই ও চায় নি আমানভাই কোনো ভুল করে বসুক।দাভাই সেখানে যায় তোমাদের দুইজনকেই সেইফ করে।তুমি তো আমান ভাইকে প্রায় মেরেই ফেলেছিলে।
নওরিন কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না।
-ওনি?
-সেদিন তোমার যেই গাড়ির সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো ঐ গাড়িটা দাভাইয়ের ছিলো।দাভাই তোমায় হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলো।
-তার মানে ওনি সব জানতেন?
-উঁহু। যতোটুকু আমান ভাই বলেছে শুধু ততোটুকুই জানে।
নওরিন আর একমুহূর্ত সেখানে দাড়ায় না। ছুট লাগায় ইসরাকের ঘরে।ঘরে ঢুকতেই দেখে ইসরাক শুয়ে আছে আর তার পাশে স্নেহা বসে আছে…
নওরিনকে দেখে পাশ থেকে উঠে দাড়ায়…
-ইসরাক ভাইয়াকে দেখতে এসেছিলাম একা একা শুয়ে আছে তাই আর কি।
নওরিন কোনো কথা বলে না।স্নেহা নিজে থেকে নওরিনকে টানতে থাকে…
–আমরা সবাই আজকে ডিসাইড করেছি রাতে রূপসী আপুর সাথে থাকবো।সবাই এক সাথে চলো!
নওরিন বিরক্তের সাথে স্নেহার হাত ছাড়িয়ে নেয়….
–আমার ওনার সাথেই থাকবো।ওনার সাথে আমার কথা আছে
স্নেহা মুখ ভাঙ্গীয়ে উওর দেয়,
-তোমার বর এক রাতে কোথাও উধাও হয়ে যাবে না।কাল কথা বলিও।অনেক রাত হয়েছে চলো!
স্নেহা নওরিনকে টেনে নিয়ে যায় নিজের সাথে।ইসরাকের সাথে বোঝা পড়াটা আর হয়ে উঠে না…..!
ইসরাক বালিশ দিয়ে মাথা চাপা দেয়,
“ইস্ কি যন্ত্রণা!কানে বার বার আমানের বলা কথাগুলো বাজছে,”
___________
[[একটু আগের কথপোকথন,
–দাভাই তুমি ভালো আছো?
ইসরাক চোখ বন্ধ করে উওর দেয়
-কেমন আছিস তুই?
-আগের চেয়ে বেটার।এখন ঠিক মতো হাটা চলা করতে পারি।তবে মেরুদন্ডের ব্যথ্যাটা কমে নি।
–আর পাগলামো করিস না ভাই….সুস্থ হয়ে যা
-তুমি নওরিনকে কেন বিয়ে করলে দাভাই?
–আমি তোর মতো পাগল নই।পরিবারের সন্মান নষ্ট হতো। দাদুর কথা ভেবেছিস।এই কলঙ্কের দায়ে মেয়েটা মরে যেত।
-মরলে মরতো।আমি তো চেয়েইছিলাম ও মরুক।আমিও মরতাম ও মরে যেতো।
-সবসময় পাগলামো চলে না আমান।
-লাইক সিরিয়াসলি দা ভাই…ঐ মেয়েটা আমার সাথে কতোটা ব্রুটাল রিলেশনশিপে ছিলো তার প্রমান তো আমি তোমায় দিয়েছি ছবিগুলো দেখোনি?ভিডিও কি দিবো?দেখবে?ভাল লাগবে দেখতে নিজের প্রেজেন্ট ওয়াইফ এর সাথে নিজের ভাইয়ের—ভিডিও দেবো বলো?
–আমান প্লিজ সন্মান দিয়ে কথা বল নয়তো!
-নয়তো কি?বলো?ওহ্ গড।ঐ মেয়েটা নিজের স্বার্থে আমার সাথে রিলেশনশিপে যায়।আবার নিজের স্বার্থে আমারই বুকে ছুড়ি মেরে পালিয়ে যায় এর পরও তুমি কি করে ওকে একসেপ্ট করো?দাভাই আমি সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম ওর জন্য ….
-লিসেন টু মি!ও এখন আমার বউ হয়।হয় তুই ওকে সন্মান দিয়ে কথা বল নয়তো ওর ব্যাপ্যারে কোনো কথায় বলিস না।
-দাভাই!
-ভুলটা তোর ছিলো আমান।জোর করে কখনো ভালোবাসা হয় না!
–আমায় বাঁচালে কেন?মরে যেতে দিতে।তারপর যা ইচ্ছে করতে।
-তুই আমার ভাই।
-ও শুধু আমাদের সম্পদের জন্য আমাকে ইউজ করেছে দাভাই।টাকার জন্য।ও তোমাকেও আমার মতো নিঃস্ব করে ছেড়ে দেবে।ওদের মতো মেয়েরা কখনো ভালো হয় না।ওরা বেঈমান দাভাই।আমি ওকে শেষ করে দেবো।মেরে ফেলবো।
ইসরাকের মাথাটা গরম হয়ে গেছে।প্রচুন্ড রাগে রিরি করতে করতে উওর দেয়,
–এরপর নওরিনের দিকে চোখ তুলে তাকালে আমি তোকে সিকদার বাড়ির মাটিতেই জান্ত পুঁতে ফেলবো আমায় বাধ্য করিস না আমান।
আমান হেসে বলে,
–আজ যদি আমি ফিরে যায় দুদিন লাগবে না ওর আমার কাছে ফিরে আসতে।ও তোমাকে ফাঁকি দিয়ে আমার কাছে চলে আসবে মিলিয়ে নিও।…তুমি কি জানো ও আমার সাথে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করেছে?দেখবে টেকস্ট গুলো যেগুলো ও আমায় করেছে?নাকি ওর থেকে পাওয়া হাজার হাজার মিসড কলের স্ক্রিন শর্ট পাঠাবো?সব গুলোই কিন্তু এখনকার তোমার সাথে বিয়ের পরের…….
ইসরাক আর কিছু না শুনেই ফোন কেটে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।মানসিক ভাবে সে বড্ড বিধ্বস্ত।চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়।মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ না খুলেয় হাত ধরে টান দেয়,
স্নেহা চিৎকার দিয়ে উঠে,
-কি করছো?আমি তোমার বউ নই আমি স্নেহা
ইসরাক দ্রুত হাত ছেড়ে দেয়,
-তুই এ ঘরে কি করছিস?
-বড় খালা পাঠালো….!তুমি নাকি অসুস্থ তোমার কিছু লাগবে কি না সেটা দেখতে বললো!
ইসরাক আবার ধপ করে শুয়ে পড়ে,
-কিছু লাগবে না। নওরিন কোথায় ওকে ডেকে দে…
স্নেহা ইসরাকের পাশে বসে,
–তুমি তো আমার ক্রাশ বয়।তুমি বললে তো আমি প্রানও দিয়ে দিতে পারি আর তো সামান্য ভাবিকে ডাক দেওয়া।দাড়াও এক্ষুনি ডেকে দিচ্ছি।
স্নেহা উঠতে যাবে তখনই ঘরে নওরিন প্রবেশ করে….]
_______________
সেদিন আর ইসরাক নওরিনের মাঝে কোনো কথা হয় না।দুজনের মনেই দুজনকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিলো তবে প্রশ্নগুলো অত্যন্ত ব্যক্তিগত। ভড়া বাড়িতে এতোগুলো মানুষের মাঝে এইসব কথপোকথন করাটা বোকামি।
স্বাভাবিক ভাবেই সেদিন রূপসী আপুর বিয়েটা হয়ে যায়।রিসিপশনের দিন বিকেলেই তারা স্ব পরিবারে বাড়ি ফিরে আসে।ইসরাক বাকিদের আরো কয়দিন থাকতে বললেও জিনাত সিকদার রাজি হয় না।ছেলের সাথে বাড়ি ফিরবেন তবে শিউলি পারভিন ফিরেন না।তিনি কদিন বাবার বাড়তেই থাকবেন।
এই দুইদিন দুজনের মনের মধ্যে ঝড় থাকলেও দুজনই বেশ স্বাভাবিক ছিলো।ইসরাক মেজাজ স্বাভাবিক রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
বাড়ি ফিরেই গাড়ি থেকে নেমে ইসরাক নওরিনকে ঘরে টেনে নিয়ে যায়।
সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ইসরাকের দিকে,
নোহা একটা ফাঁকা ঢোক গিলে,
-দাভাইয়ের মাথায় কখন যে কিসের ভূত চাপে কে জানে।
সবাই গাড়ি থেকে নামলেও ইশা গাড়ি থেকে নামে না।
তাকে নামতে বললে উওর দেয়,
–আমি আজ এক্ষুনি হস্টেলে ফিরে যাবো।
জিনাত সিকদার বেশ বিরক্ত হয় ছেলে মেয়েদের উপর,রাগে গজ গজ করতে করতে বলে উঠে,
-রোজ রোজ তোমাদের নাটক আর নিতে পারছি না আমি। আমার তো বয়স হয়েছে।আর কতো নির্যাতন সহ্য করবো আমি।
ইশা করো কথায় কানে তুলে না।
ইশা জিদ করে সেখানেই বসে থাকে,তার ভাষ্য মতে কাল পরশু পরীক্ষা আছে আজই তাকে ফিরতে হবে।
নোহাও নাছর বান্দা।ইশার হাত ধরে টেনে নিচে নামায়।
-কোথায় পালাস তুই?
–আশ্চর্য পালাবো কেন?হাত ছাড় লাগছে।
-সবাইকে অন্ধকারে রেখে তুমি গোপনে ডুবে ডুবে পানি খাবা তা আমি হতে দেবো না!
-দেখ শাঁকচুন্নি আমার পেছনে লাগিস না ফল ভালো হবে না।
–থ্রেট দিস?চোরের মন পালায় পালায় না?
-কোনো প্রমান নেই তোর কাছে?
–আমি তো বলিই নি তুই কোনো ক্রাইম করেছিস তাহলে প্রমানের কথা আসলো কোথা থেকে?ঠাকুর ঘরে কে রে আমি তো কলা খাইনি!
ইশা চোখ মুখ কালো করে নেয়,
-দেখ নোহা তোর যা ভাবার ভাব। আমার তাতে কিছু যায় আসে না আমি তো আজই যাবো।কেউ আটকাতে পারবে না।
-ছি ইশা ধিক্কার জানায় তোকে!
-তুই আগে নিজেকে ধিক্কার জানা।নিজের ভাইয়ের মতো মানুষের সাথে ছি বলতেও লজ্জা করছে….
নোহার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।রাগে গজ গজ করতে থাকে।
দুই বোনের ঝগড়ার মাঝে ইমতিয়াজ সিকদার এন্ট্রি নেই।
ইশা বাবার কাছে আর্জি জানায় সে আজই চলে যাবে।কাল ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস আছে।ইমতিয়াজ সিকদার তাকে যাওয়ার পার্মিশন দিয়ে দেয়।জিনাত সিকদার আর কিছু বলেন না।যার যা ইচ্ছে তাই করুক।আজকাল তার কথা কেই বা কানে তোলে….!!
নোহা অনেক চেয়েও ইশাকে আটকাতো পারে না।
____
গাড়িতে বসা ইশা।সে একই নাম্বারে বার বার ডায়াল করছে।কিন্তু অপর পাশ থেকে কোনো রেসপন্স নেই।তবুও ইশা বার বার কল করেই যাচ্ছে……….
“ইস যদি একবার গলাটা শুনতে পেতাম”
ফোনটা বুকে জড়িয়ে চোক বুজে আপন মনেই কথাটা বলে উঠে ইশা।বুকটা ধুক ধুক করছে তার।ইশা হাউ মাউ করে কান্না করে দেয়।
চলবে…….
[ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]