পার্কের পাশে দিয়ে যাচ্ছি একটা মেয়ে আমাকে ডাকল,” ভাইয়া।”
আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। না পরিচিত বলে মনে হচ্ছে না। মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দরী! একটা সাদা রংয়ের জামা পরেছে। মনে হচ্ছে একটা পরী দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা মনে হয় অন্য কাউকে ডাকছে। আমি হাঁটতে শুরু করলাম। এত সুন্দর মেয়ে দেখলে মনখারাপ হয়ে যায়! একটা মেয়ে এত সুন্দর কিন্তু মেয়েটা আমার না কোনো মানে হয়!
মেয়েটা আবার ডাকল, “রুয়েল ভাই।”
আমাকেই ডাকছে। অবশ্য রুয়েল নামে অন্য ছেলেও হতে পারে। কিন্তু আশেপাশে অন্যকোনো ছেলেকে দেখা যাচ্ছে না। আমি আবার মেয়েটার দিকে তাকালাম। হাতের ইশারায় আমাকেই ডাকছে।
আমি ধীরগতিতে হেঁটে মেয়েটার সামনে গেলাম। কাছে গিয়ে চিনতে পারলাম। এটা সুইটি। আমাদের এলাকার সবার ক্রাশ! ওর সাথে আমার পরিচয় নাই। ওর হাতে একটা লাল গোলাপ।
সুইটি আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো। হাসিটা এত সুন্দর! মানুষ এত সুন্দর করে হাসতে পারে! আমার বুকের মধ্যে কেমন করে উঠল!
“আমি সুইটি।”
আমি ওর দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। কিছুই বুঝতে পারছি না। এত সুন্দর একটা মেয়ে সেচ্ছায় আমার সাথে পরিচয় হচ্ছে কেন কে জানে!
সুইটি আমার কাছে এসে দাঁড়াল৷ আমার মনে হচ্ছে আমি একটা স্বপ্ন দেখছি। স্বপ্নটা খুব সুন্দর! একটা সুন্দরী মেয়ে আমার প্রেমে পড়ে গেছে। আমি নায়ক শাকিব খান। আমাকে মেয়েরা সেচ্ছায় এসে বিয়ে করে বাচ্চা নেয়! অবশ্য আমার কোনো ইচ্ছে থাকে না!
সুইটি গোলাপটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “আই লাভ ইউ। “
এবার আমি নিশ্চিত এটা স্বপ্ন। একটু পরেই মা এসে ডাকবে আর ঘুমটা ভেঙে যাবে।
“কি আমাকে ভালোবাসবা না?”
আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এটা তো দেখি সত্যি ঘটনা! আমি সুইটির হাত থেকে গোলাপটা নিলাম। আমার এখন লাভ ইউ টু বলা উচিৎ। আমার ভাষা হারিয়ে গেছে! কথাই বলতে পারছি না।
“কিছু বল? “
“লাভ ইউ টু।”
“ধন্যবাদ। “
এ সময় পিছন থেকে আরেকটা মেয়ে বলল,” দারুণ হয়েছে! “
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। সুইটি বলল,” অসংখ্য ধন্যবাদ রুয়েল ভাই। দারুণ একটা ভিডিও বানাতে সাহায্য করার জন্য।”
“মানে কীসের ভিডিও? “
“অনেকদিন থেকে আমার টিকটক ভিডিও হিট করছে না। এটা হিট করবে নিশ্চিত। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রুয়েল ভাই। “
“স্বাগতম। তোমার ভিডিওর জন্য শুভকামনা রইল। “
“ধন্যবাদ।”
“আগামীকাল সময় হবে?”
“কেন?”
“আমার একটা আইডিয়া আছে তোমাকে নিয়ে। তুমি খুব ভালো অভিনয় পারো।”
“আপনিও টিকটক করেন?”
“না,। “
“ইউটিউব চ্যানেল আছে বুঝি?”
আমি হালকা করে হাসলাম। কিছুই বললাম না।
“অবশ্যই আসব।”
সুইটির মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে চলে আসলাম। পরেরদিন সুইটি আমার দেয়া ঠিকানায় আসল। সাথে ওর বান্ধবী আয়শা। এটা হলো আমার এক বড় ভাই রনি ভাইয়ের বাড়ি। উনি একজন পুলিশ অফিসার।
সুইটিকে বললাম, “উইল ইউ ম্যারি মি?”
সুইটি হেঁসে বলল,” অবশ্যই। “
আমার বন্ধুরা হাত তালি দিলো। কয়েকজন বান্ধবী এসে সুইটিকে নিয়ে গেল কনে সাজানোর জন্য। সুইটির বান্ধবী বলল, “বিশাল সেট সাজিয়েছেন ! আপনার চ্যানেলে মনে হয় অনেক সাবসক্রাইবার! “
“আছে আরকি।”
সুইটিকে কনে সাজানো হয়েছে। ওকে কী যে সুন্দর লাগছে! আমাকে একবার কাছে ডেকে বলল, “আপনার আইডিয়া ভালো লেগেছে! হুট করে বিয়ে! দারুণ হিট করবে ভিডিওটা।”
“তোমারটা কেমন হয়েছে? “
“একদিনে এক মিলিয়ন ভিউ।”
“দারুণ খবর।”
“ধন্যবাদ রুয়েল ভাই। আপনারটাও ভালো হবে।”
আমাদের বিয়েটা হয়ে গেল। রনি ভাই আর একজন পুলিশ আমাদের বিয়ের সাক্ষী হলেন। একেবারে সত্যিকারের বিয়ের মতো আয়োজন করা হয়েছে।
বাসর ঘরে বসে আছে সুইটি। আমি ঘরে ঢুকলাম। সুইটি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “এত বড়ো ভিডিও কেউ বানায়!”
আমি একটু হাসলাম।
“এবার তাহলে যাই।”
“কোথায় যাবা বউ!”
“মানে কী রুয়েল ভাই! এখনো আপনার ভিডিও বানান শেষ হয়নি?”
“এটা কোনো ভিডিও বানান ছিলো না। এটা সত্যিকারের বিয়ে।”
“হোয়াট!”
“জি, তুমি সেচ্ছায় আমাকে বিয়ে করেছ। দুইজন পুলিশ অফিসার সাক্ষী ছিলেন। তাছাড়া লাইভ ভিডিও দেখান হয়েছে! তোমার বাবা মাকেও আনার জন্য লোক পাঠান হয়েছে। রনি ভাই সব দায়িত্ব নিয়েছেন।”
Nabil Mahmud
আমাদের সকল হাসির গল্পের লিংক