- মোটিভেশনাল উক্তি বাংলা quotes.
- বাংলা মোটিভেশনাল স্ট্যাটাস।
- বাংলা মনোভাব স্ট্যাটাস।
1.মোটিভেশনাল উক্তি বাংলা quotes
মোটিভেশনাল ৫৩ টি উক্তি, যা আপনার অবশ্যই পড়া উচিতঃ—
১। স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে; স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরনের প্রত্যাশা, মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।
– এ পি জে আব্দুল কালাম
২। জীবন চলার পথে বাঁধা আসতেই পারে তাই বলে থেমে যাওয়ার কোন অবকাশ নেই, যেখানে বাঁধা আসবে সেখান থেকেই আবার শুরু করতে হবে।
– রেদোয়ান মাসুদ
৩। পৃথিবীতে কোনো মেয়েই ছয়টা গাড়ীর মালিক ছেড়ে সিক্স প্যাক ওয়ালা ছেলেদের সাথে যাবে না, তাই জিমে যাওয়া বন্ধ করে কাজে যাও।
– রবার্ট মুগাবে
৪। আপনি যদি গরীব হয়ে জন্ম নেন তাহলে এটা আপনার দোষ নয়, কিন্তু যদি গরীব থেকেই মারা যান তবে সেটা আপনার দোষ।
– বিল গেটস
৫। টিয়া পাখির মতো মুখস্ত করে বড় বড় সার্টিফিকেট অর্জন করে বড় বড় চাকরি পাওয়াকে শিক্ষা বলে না, শিক্ষা হচ্ছে সেটা যা একজন মানুষের ভিতরের কুশিক্ষাকে দূরে করে সমাজের পরিবর্তনে এগিয়ে আসার উৎসাহ যোগায়।
– রেদোয়ান মাসুদ
৬। কখনো ভেঙে পড়ো না। পৃথিবীর যা কিছু হারিয়ে যায়, অন্য কোন রূপে সেটি ঠিকই আবার ফিরে আসে জীবনে।
-মাওলানা জালাউদ্দিন রুমি।
৭। আপনার দর্শন ও স্বপ্নকে নিজের সন্তানের মত লালন করুন কারণ এগুলোই আপনার চূড়ান্ত অর্জনের প্রতিচিত্র হয়ে উঠবে।
-নেপোলিয়ন হিল
৮। একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার প্রয়োজন হয়ে থাকার চেয়ে একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারির প্রিয়জন হওয়া অনেক সম্মানের, গৌরবের।
– রেদোয়ান মাসুদ
৯। তোমার স্বপ্ন আর তোমার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে কেবল একটি জিনিস- সেটি হচ্ছে অজুহাত! যে মুহূর্ত থেকে তুমি নিজেকে অজুহাত দেখানো বন্ধ করে কাজ শুরু করবে সে মুহূর্ত থেকে তোমার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকবে না- সেটি বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করবে!
-Jordan Belfort
১০। একজন গড়পড়তার মানুষ কথা বলে। একজন ভাল মানুষ ব্যাখ্যা করে। একজন উর্ধ্বতন মানুষ কাজ করে দেখায়। একজন সেরা মানুষ অন্যদেরকে প্রেরণা যোগায় যাতে তারা নিজেরাই কাজকে নিজের মত করে দেখতে পারে।
-হার্ভি ম্যাকে
১১। আপনি জীবনে যা চান তা আপনি পেতে পারেন যদি আপনি অন্যদেরকে তাদের চাওয়া নিশ্চিত করতে সাহায্য করে থাকেন।
-জিগ জিগলার
১২। একবার পরীক্ষায় কয়েকটা বিষয়ে আমি ফেল করেছিলাম কিন্তু আমার বন্ধু সব বিষয়েই পাশ করে। এখন সে মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা।
– বিল গেটস
১৩। সুখে থাকাই জীবনের চরম সার্থকতা নয় বরং কাউকে সুখে রাখতে পারাটাই হলো জীবনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা।
– রেদোয়ান মাসুদ
১৪। যদি আমাকে একটি সমস্যা সমাধানের জন্য এক ঘন্টা বেঁধে দেয়া হয়, আমি ৫৫ মিনিট সমস্যাটা নিয়ে চিন্তা করি এবং বাকি ৫ মিনিট সমাধানটা নিয়ে চিন্তা করি।
– অ্যালবার্ট আইনস্টাইন
১৫। দুঃসময়ের অন্ধকার কখনো কখনো আমাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটির দ্বার খুলে দেয়।
– অ্যানোনিমাস
১৬। কখনো হাল ছেড়ে দিও না! এখনকার এই দাঁতে দাঁত চেপে করা কষ্টগুলো তোমাকে বিজয়ীর খেতাব দেবে সারাজীবনের জন্য।
-Muhammad Ali
১৭। যতবার আমি ব্যর্থ হই এবং চেষ্টা চালিয়ে যাই তার উপর সরাসরি নির্ভর করে আমি কতবার সফল হতে পারব।
-টম হপকিন্স
১৮। আমার অভিধানে “অসম্ভব” নামে কোন শব্দ নেই
– নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
১৯। এই বিশ্বে স্থায়ী কিছুই না, এমনকি আমাদের সমস্যাগুলোও না
– চার্লি চ্যাপলিন
২০। প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার পার্থক্য হল দুঃখ। তাই নিজের প্রত্যাশাটা একটু কমিয়ে ফেলুন, দেখবেন আপনার দুঃখও কমে গেছে।
-রেদোয়ান মাসুদ
২১। জীবনটাকে নতুন করে আবিষ্কার করার জন্য কখনো কখনো সব ছেড়েছুড়ে হারিয়ে যেতে হয়!
-Erol Ozan
২২। সহজে জেতার আনন্দ কোথায়? বাধা যত বিশাল, বিজয়ের আনন্দও ততোই বাঁধভাঙ্গা!
-Pele
২৩। নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নকে আপনার আত্মার সন্তান হিসেবে লালন করুন, এগুলোই আপনার চূড়ান্ত সাফল্যের নকশা হবে
– নেপোলিওন হিল
২৪। আকাশের দিকে তাকাও। আমরা একা নই। পুরো মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ। যারা স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে শুধুমাত্র তাদেরকেই শ্রেষ্ঠটা দেওয়ার জন্য চক্রান্তে লিপ্ত এই বিশ্ব।
– এ পি জে আব্দুল কালাম
২৫। অভিজ্ঞতা- এই জিনিসটি কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষটি পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু যতক্ষণ না নিজে অভিজ্ঞতাটি অর্জন করছো বিষয়টি তুমি সত্যিকার উপলব্ধি করতে পারবে না।
– অ্যানোনিমাস
২৬। পারিব না’ একথাটি বলিও না আর, কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার; পাঁচজনে পারে যাহা, তুমিও পারিবে তাহা, পার কি না পার কর যতন আবার একবার না পারিলে দেখ শতবার।
– কালীপ্রসন্ন ঘোষ
২৭। তুমি ভুল করছো এতে লজ্জার কিছু নেই। বারবার ভুল করা একটি জিনিসই প্রমাণ করে- তুমি হাল ছাড়োনি, তুমি চেষ্টা করে চলেছ।
– অ্যানোনিমাস
২৮। জীবন মানে নিরন্তর ছুটে চলা.. পদে পদে বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতায় রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হওয়া, সে ক্ষত মুছে আবার প্রবল আগ্রাসে ঝাঁপিয়ে পড়া.. সংগ্রাম এবং সাফল্য – এই তো জীবন!
-Roy T. Bennett
২৯। ভুল থেকেই মানুষ শিখে, কিন্তু সে ভুলটি যেন না হয় জীবনের শেষ ভুল। কারণ এমনও হতে পারে আপনি যে সুযোগটি হাতছাড়া করে ফেলেছেন,সে সুযোগটিই ছিল আপনার জীবনের শেষ সুযোগ।
-রেদোয়ান মাসুদ
৩০। জীবনে অনেক বিষয় আছে যেগুলো তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোরও মানে হয়না, কারণ এর বাইরেও তোমার হাতে হাজার হাজার জিনিস রয়েছে যেগুলো তুমি বিজয় করতে পারো!
-Roy T. Bennett
৩১। প্রত্যেকের জীবনের একটা গল্প আছে। অতীতে ফিরে গিয়ে গল্পের শুরুটা কখনো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তুমি গল্পের শেষটা চাইলেই নতুন করে সাজিয়ে তুলতে পারো।
-Chico Xavier
৩২। আপনি যে নতুন একটি কাজ হাতে নিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করেই সত্যিকারের সিদ্ধান্তের মাপকাঠি ধরা হয়। যদি হাতে কোন কাজ না থাকে, তাহলে আপনি এখনও আপনার সত্যিকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি।
-টনি রবিনস
৩৩। জীবনে আমি হাজার হাজার ভুল করেছি, হাজারবার হোঁচট খেয়েছি- এবং সেটি নিয়ে আমি গর্বিত! প্রত্যেকটি ভুল, প্রত্যেকবার হোঁচট খাওয়া আমাকে গড়ে তুলেছে আরো শক্তিশালী, আরো পরিণত করে।
-Drew Barrymore
৩৪। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে ব্যর্থ হওয়ার একটি মাত্র উপায় আছে আর তা হল ঝুঁকি না নেওয়া।
– মার্ক জাকারবার্গ
৩৫। পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিসগুলো হাতে ছোঁয়া যায় না, চোখে দেখা যায় না, সেগুলো একমাত্র হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়- ভালবাসা, দয়া, আন্তরিকতা।
-Helen Keller
৩৬। বাঁচার মতো বাঁচতে জানলে জীবনটা অসম্ভব রোমাঞ্চকর একটি অভিযান, আর একদম ঝুঁকিহীন জীবন সে তো মুরগির খোঁয়াড়ে ধুঁকে ধুঁকে টিকে থাকা।
– অ্যানোনিমাস
৩৭। প্রতিটা মানুষই তার নিজের কাছে নির্ভুল, আর এ জন্যেই মানুষ ভুল করে, কারণ ভুলকে নির্ভুল ভেবেই মানুষ সবচেয়ে বড় ভুল করে থাকে।
– রেদোয়ান মাসুদ
৩৮। তুমি যদি এখন থেকেই তোমার স্বপ্নগুলো সত্যি করার পেছনে ছুটে না চলো, একদিন তোমাকে কাজ করতে হবে অন্যদের অধীনে- তাদের স্বপ্নগুলো সত্যি করার জন্য।
– অ্যানোনিমাস
৩৯। কী বলা হচ্ছে”, সেটি হৃদয়ে ধারণ করো, “কে বলছে” সেটি বিবেচ্য নয়। পথের ভিখারীও কখনো তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারে।
– অ্যানোনিমাস
৪০। নিজের থেকে বড় কিছু তৈরি করার জন্য আপনার মধ্যে সব সক্ষমতাই রয়েছে।
-সেথ গডিন
৪১। হতাশা একটি বিলাসিতা। হতাশার জায়গাটি আজ থেকে দখল করুক কাজ শেষের তৃপ্তিমাখা ক্লান্তি।
– অ্যানোনিমাস
৪২। শিক্ষার উচিত তাকে উদ্যোক্তা বা চাকরি সৃষ্টিকারী হতে প্রস্তুত করা, চাকরি খুঁজতে নয়। আমরা যদি তরুণদের চাকরি সৃষ্টিকারী হিসেবে গড়ে তুলতাম, তাহলে বেকারত্ব বলে কিছু থাকত না
– ড. মুহাম্মদ ইউনূস
৪৩। আপনার জন্য যা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা যদি দুই পর্বতের নিচে ও থাকে তবু ও তা আপনার কাছে পৌঁছে যাবে। আর আপনার জন্য যা নির্ধারণ করা হয় নি, তা যদি দুই ঠোঁটের মাঝে ও থাকে তবু ও তা আপনার কাছে পৌঁছবে না!
-ইমাম গাজ্জালী
৪৪। পৃথিবীটা হচ্ছে একটি আয়নার মতো- তুমি সবার সাথে যেমন ব্যবহার করবে যেমন মনোভাব পোষণ করবে ঠিক তেমনটাই ফিরে পাবে প্রতিদানে।
– অ্যানোনিমাস
৪৫। আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না।
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪৬। ঘুমিয়েই কি কেটে যাবে একটি জীবন? জীবন হোক কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর, ছুটে চলার নিরন্তর অনুপ্রেরণা। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কবরের জীবন চিরকাল পড়ে রয়েছেই।
-হযরত আলী (রাঃ)
৪৭। নিজেকে কখনও ছোট করে দেখো না, তাহলে তোমার নিজের আত্মাই মরে যাবে। আত্মা মরে গেলে মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভুলে যায়। আর স্বপ্ন ছাড়া মানুষ কখনও বেঁচে থাকতে পারে না।
-রেদোয়ান মাসুদ
৪৮। ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল।
– সংগৃহীত
৪৯। জীবনে সবকিছু একবার হলেও চেষ্টা করে দেখা উচিত। স্রষ্টা প্রতিটি মানুষকে কিছু না কিছু ক্ষেত্রে অনুপম দক্ষতা দিয়ে পাঠিয়েছেন, তুমি সেটি কখনো জানতেও পারবে না যতদিন না তুমি সেটি চেষ্টা করে দেখছো।
– অ্যানোনিমাস
৫০। যে পুরুষ কখনো দুঃখকষ্ট ভোগ করেনি এবং পোড় খাওয়া মানুষ নয় মেয়েদের কাছে সে তেমন বাঞ্ছনীয় না । কারণ দুঃখকষ্ট পুরুষকে দরদি ও সহনশীল করে তোলে।
– ডেনিস রবিনস
৫১। তোমার মেধার ঘাটতি থাকতে পারে, কিন্তু তোমার চেয়ে বেশি পরিশ্রম অন্য কেউ করবে সেটি তো হতে দেওয়া যায় না- পরিশ্রম দিয়ে মেধার ঘাটতি অবশ্যই পুষিয়ে নেওয়া যায়, আমিই তার উদাহরণ!
-Derek Jeter
৫২। ব্যর্থ হওয়া মানে হেরে যাওয়া নয়, ব্যর্থতা নতুন করে আবার শুরু করার প্রেরণা। হাল ছেড়ে দেওয়া মানেই হেরে যাওয়া।
– অ্যানোনিমাস
৫৩। জেগে ওঠো, সচেতন হও এবং লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত থেমো না।
– স্বামী বিবেকানন্দ
2.বাংলা মোটিভেশনাল স্ট্যাটাস
কিছু লড়াই একাই লড়তে হয়… কিছু মন খারাপের মুহূর্ত একাই কাটিয়ে দিতে হয়…!!
.
জীবনে কত মানুষ আসবে, কত মানুষ যাবে… কেউ কেউ দূর থেকে দু’একটা মোটিভেশনাল স্পিচ দেবে, কেউ কেউ হাতটা ধরে কিছুটা সময় পাশে বসবে… আর কেউ কেউ পাশে বসে মন খারাপের কারণ গুলো জানতে চাইবে, আপনাকে নিখুঁতভাবে পড়তে চাইবে…!!
.
কিন্তু দিন শেষে কি এদের মাঝে কেউ পাশে থাকে? না… কেউ থাকে না, তারা যখন কোনো ভাবে বুঝতে পারে যে, আপনি সত্যি সত্যি তার সাথে দুটো কথা বলে… একটু সময় কাটিয়ে, মন খারাপের গল্প বলে নিজের খারাপ মুহূর্ত গুলোকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছেন… তাকে একটু আঁকড়ে ধরতে চাচ্ছেন,ঠিক সেই মুহূর্তেই তারা এক ঝটকায় আপনার কাছ থেকে নিজের হাতটি ছাড়িয়ে নেবে… বিরক্তি প্রকাশ করবে তাদের নানা রকম কথা ও কাজে…!!
.
শেষ অবধি জীবনের আসল লড়াইটা আপনাকে একাই লড়তে হবে… কারণ, পৃথিবীতে কেউ কারো দুঃখের ভার নিতে চাই না, চোখে চোখ রেখে ভরসা দিয়ে বলতে চাই না… কিচ্ছু হবে না, সব ঠিক হয়ে যাবে… কেউ কারো মন ভালো করার কারণ হতে চাই না, এই ব্যাপারটা প্রচন্ড তেঁতো হলেও সত্য…!!
.
তাই একা লড়ুন… আর সবাইকে নিয়ে বাঁচুন… অন্যকে ভরসা দিন, কিন্তু নিজে কখনো অন্যের ভরসার আশায় থাকবেন না… তাহলেই লড়তে পারবেন, নয়তো ভেঙে গুড়িয়ে যাবেন…!!
©__ Nazir Hossain
৩.বাংলা মনোভাব স্ট্যাটাস
সাল ২০০৩ থেকে ২০০৫।
জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, মুনীর হাসানদের সামনে রেখে – প্রথম আলো ঘেঁষা গ্রুপটা, বাংলাদেশে স্কুল পর্যায়ে আয়োজন করেছিলো গণিত অলিম্পিয়াড আর ভাষা প্রতিযোগ।
যারা এইসব প্রতিযোগিতায় যাইতো, জাফর ইকবাল সাহেব এবং তার প্রথম আলো গ্যাং, প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণীর ঠিক আগে-আগে (মানে যে সময়টা উত্তেজনা একেবারে তুঙ্গে থাকে) – ওই সময়টা তাদের সাথে দেশ, ভাষা, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকার – এইসব নিয়ে আলাপ করতো। ওই ছেলে-মেয়েদের বয়স তখন ‘রাফলি’ ১০ থেকে ১৭ বছর।
যে কাজটা শিবির করে, মানে সহজেই ম্যানিপুলেট করার ওই বয়সে, ওই জেনারেশনকে গণিত অলিম্পিয়াড এবং ভাষা প্রতিযোগের ছায়ার নীচে, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের “আওয়ামী” বয়ানটা খাওয়ায় দেয়ার দায়িত্ব পালন করেছিলো এই প্রথম আলো, জাফর ইকবাল এবং আনিসুল হক গ্যাং।
ওদের পরিশ্রম বিফলে যায় নাই।
স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত ওই অলিম্পিয়াড-প্রতিযোগ পোলাপানরাই আসলো শাহবাগে। দশ বছর পরে তখন তাদের বয়স ২০ থেকে ২৭। খেয়াল করেনঃ ওই সময়ে, ওই পোলাপানগুলাই কিন্তু ইন্টেলেকচুয়াল মেজোরিটি। এরাই শাহবাগ, এরাই ছবির হাট, এরাই ঢাকা ইউনিভার্সিটি, এরাই চারুকলা, এরাই আজিজ সুপার মার্কেট, এরাই ব্লগ, এরাই ফেসবুক।
আউট অফ নো-হোয়্যার, পার্টিকুলারলি একটা জেনারেশন, একই বয়সের পোলাপান, সম্মিলিতভাবে – রাজাকারদের প্রতি এতো ম্যাসিভ লেভেলের হেইট্রেড কীভাবে গ্রো করলো, যে শাহবাগ আন্দোলন এতো বিশাল আকারে ছড়ায়ে পড়লো?
এই জায়গাটাতেই আনিসুল-জাফর ইকবালরা সফল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে যে “বিকল্প নাই”, জামাত ক্ষমতায় আসবে – এবং সেইজন্য, আওয়ামী লীগের চেতনাকে সার্ভ করা আমাদের কর্তব্য – এই ব্যাপারটার সৌল ডিস্ট্রিবিউটর ছিলো এই জাফর ইকবাল আর আনিসুল হকেরা।
সমস্যা হচ্ছে, সেই ভাষা প্রতিযোগ করে ঘোড়ার ডিমও লাভ হয় নাই। অলিম্পিয়াডের সাফল্যটা কম্পারেটিভলি অবশ্য বেশি ছিলো। বাংলাদেশ থেকে যে ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতার স্ট্যান্ডার্ডে গণিত নিয়ে কাজ করা যায়, এই ব্যাপারটা প্রথম ওরাই প্রিচ করেছিলো, এবং ভালো কিছু ম্যাথমেটিশিয়ান ওরা বের করে এনেছে – হুইচ ইজ পজেটিভ। অলিম্পিয়াডের কিছু পোলাপানই পরে দুনিয়ার বিভিন্ন বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে গেছে, এইটা স্বীকার করতে হবে।
কিন্তু, সেইটা ছিলো বিশাল বড় পপুলেশনের একটা অতি ক্ষুদ্র অংশ।
স্বাধীনতার চেতনা, দেশ গড়ার স্বপ্নের যে ওস্তাদি ট্যাবলেট জাফর-আনিসুল ওই জেনারেশনকে খাইয়ে দিয়েছিলো, ওই পোলাপানদের বড় অংশটা – কম বয়সের মগজ ধোলাই খেয়ে, বিশাল বড় বড় স্বপ্ন দেখেছে দেশকে নিয়ে। ফাইনালি, তারা যখন চাকরি-বাকরি করতে এসেছে, রিয়েল বাংলাদেশটা যখন তাদের চোখের সামনে ধরা দিয়েছে, তখন তারা একেবারে অকূল পাথারে পড়ে গেছে।
বাংলাদেশের এই চেহারা ওরা কল্পনাও করে নাই। ওরা জানতোও না, এই প্রতিযোগ, অলিম্পিয়াড, সাফল্যের স্বপ্ন, সোনার বাংলা, রাজাকারমুক্ত মাতৃভূমির প্রতিশ্রুতি দেয়া গল্পের পিছে – ওদের জন্য কী বিভীষিকা অপেক্ষা করছে।
বলেন দেখিঃ বিগত বছর পাঁচেকের মধ্যে যে ডিপ্রেশনের মহামারী, এই যে রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা – এই স্বপ্ন দেখিয়ে, স্বপ্নের সম্পূর্ণ বিপরীত একটা দেশ – একটা জেনারেশনের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে, এই ডিপ্রেশনের কারিগর কারা ছিলো? একদম সরাসরি কোনো প্রমাণ নাই, তবে দুইয়ে-দুইয়ে চার না মিললেও কাছাকাছি যায় হিসাবটা।
আঙ্গুল ওঠেঃ জাফর-আনিসুলদের দিকে।
এই ডিপ্রেসড জেনারেশনকে আশার আলো দেখাইতে, হাতে হারিকেন নিয়ে আবির্ভাব ঘটলো যাদের, তাদের নামঃ মোটিভেশনাল স্পিকার। ডিপ্রেশন-সুইসাইডের মহামারী চলতেছে, এর মধ্যে দুইটা আশার কথা কে না শুনতে চায়? ফাঁকা মাঠে গোল দিলো এই দুই লোক। এদের মধ্যে একজন বিসিএস ঘরানার ওস্তাদে আমীর, আরেকজন কর্পোরেট ঘরানার মজলিশে শূরা সদস্য।
মিল একটা জায়গাতেই। পেশাগতভাবে এনারা যাই হন, পেশার বাইরে – সোশ্যাল মিডিয়াতে এনাদের চাপার জোর মারাত্মক ভালো। চটপটে স্মার্ট, আশাবাদী কথা, সুন্দর ক্যারিয়ারের গল্প শুনিয়ে এই সুশান্ত-সুখন আল্টিমেটলি এই দেশের কী উদ্ধার করেছে, সেইটার কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ নাই। তারপরেও, এই দেশের দরকার ছিলো সুখন সুশান্ত। কেন?
কারণ, সবাই ডিপ্রেসড হয়ে গেলে জিডিপি আসবে কোথা থেকে? উন্নয়ন হবে কীভাবে, আর দেশ চলবে কীভাবে? অতএব, শুনাইতে থাকো আশার বাণী, দিতে থাকো মোটিভেশন। দিনরাত পরিশ্রম করো, আর পরিশ্রম করো। বিশ্রাম লিয়েছো কি মইরেছো মামুর ব্যাটা, সাফল্য জীবনেও আসবে না।
এই সাফল্যের চোদনে, আমাদের জনমদুখী জাতিটা – ঈদের দিন, একটা আনন্দের দিন, ঘুমিয়ে কাটিয়েছে। বিশ্বাস হয়? কী পরিমাণ ক্লান্ত হলে একটা জাতি, আনন্দ উদযাপনের বিনিময়ে ঘুমাতে চায় – ভেবে দেখেন তো? কী গাধার পরিশ্রমটা করেছে এই মানুষগুলো, আহারে…
আপনার ছুটির দিনটাও ওরা চুরি করে নিয়ে গেছে, ভাই…