ফুলসজ্জা পর্ব ৪
লেখিকাঃ #অনামিকা_ইসলাম “অন্তরা”
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
আবিরের এমন হু,হু করে হেসে উঠা,টিপ্পনীকাটা মেনে নিতে পারছে না নীলিমা। আর তাই রুম থেকে কিছু না বলেই বের হয়ে যাচ্ছিল।ঠিক তখনি__
আবির:- কোথায় যাচ্ছ?
নীলিমা:- মণির কাছে….
আবির:- শুবে না???
নীলিমা:- শুইব…
আবির:- তো? মণির কাছে কি???
নীলিমা:- আমি মণির সাথে শুইব….
আবির:- আর ইমন???
নীলিমা:- আপনার সাথে….ইমন ভাইয়া শুইবে আপনার সাথে।
আবির:- কিন্তু…..
নীলিমা:- আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছে ওর সাথে ঘুমাতে। একান্তে কিছুটা সময় কাটাতে…
আবির:- ওহ,আচ্ছা।তাহলে যাও….
নীলিমা:- হুম…..
নীলিমা হনহনিয়ে আবিরের রুম থেকে বেরিয়ে ওর রুমে চলে যায়।
মণি-ইমন তখন একজন আরেকজনের কাছে যাচ্ছিল। ঠিক সে সময়টাতে রুমে আচমকা নীলিমা প্রবেশ করে কোনোরকম নক ছাড়া’ই। ইমন-মণি ভিষণ রকম অপ্রস্তুত ছিল। নীলিমাকে দেখে দু’জনেই দু’জনকে সামলে নিয়ে আমতাআমতা করে বলে__
” নীলি…মাাাা….”
নীলিমা চোখ দুটো বন্ধ করে বলে__
” আমি স্যরি…”
Extremely sorry….
মণি:- কিছু বলবি???
নীলিমা:- না, না।
কিচ্ছু বলব না। আমি দেখতে আসছিলাম কয়টা বাজে….???
আমি যায়, তোরা ঘুমা….
কথাগুলো বলে নীলিমা একরকম লাফিয়ে রুম থেকে বের হলো। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
ইমন-মণি একে-অপরের দিকে তাকিয়ে বলল হা, হা লজ্জা পাইছে….
এদিকে আবির?!!!
দরজা খুলে শুয়ে আছে।
অপেক্ষায় আছে কখন ইমন আসবে।
কিন্তু ইমন আর আসছে না।
এদিকে ঘুমে আবিরের চোখ দুটো লেগে আসে। আবির ঘুমিয়ে পরে এই ভেবে যে ইমন এসে না হয় দরজা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরবে।
হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় আবিরের। আবির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে বাইরে মুসলধারে বৃষ্টি পরছে।ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে ১২টা বাজে। আবির মনে মনে ভাবছে__
“মাত্র ১২টা বাজে?”
আচ্ছা, ইমন আসে নি কেন এখনো?
ওরা কি তাহলে বৃষ্টির দিন পেয়ে গল্পে মেতে উঠেছে???
আমি কি যাব ঐখানে????
যায় দেখেই আসি।
দেখি গিয়ে ওরা কি করে???
আবির নীলিমার রুমের দিকে পা বাড়ায়। নীলিমার রুমের কাছে গিয়ে আবির থমকে দাঁড়ায়। দরজাটা যে বন্ধ আর লাইটও অফ করা…..
আবির আস্তে আস্তে দরজায় নক করে মণিকে ডাকে।
মণি-ইমন কেহ’ই এখনো ঘুমায়নি।
তাই প্রথম ডাকেই ইমন সারা দিয়ে বলল__
” কিছু বলবেন ভাইয়া?”
আবির:- ইমন না আমার সাথে শুইবে? তো ও কখন আসবে? রাত যে অনেক হলো….
ইমন:- আবির ভাই! আমি আপনার সাথে শুইব সেটা কে বলেছে আপনাকে?
আবির:- কেন? নীলিমা…
আর নীলিমা’তো বলছে মণির সাথে সে ঘুমোবে।কেন সে আসেনি???
মণি বিছানা থেকে উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে। তারপর__
” কি বলছেন ভাইয়া? ও আমার সাথে শুইবে বলে এ রুমে এসেছিল?”
আবির:- তাই তো বলল। ও কোথায়?
মণি:- ভাইয়া ও তো ঘন্টাখানেক আগেই চলে গেছে…..
আবির:- চলে গেছে মানে? ও এ রুমে নেই????
মণি:- না ভাইয়া! ও চলে গেছে….
আবির:- কি বলছ তুমি এসব?
ও তো রুমেও যায়নি….
মণি:- ভাইয়া অন্য রুমে দেখবেন প্লিজ???অন্য কোথাও ঘুমিয়েছে কি না???
আবির:- হতে পারে সেখানেই ঘুমোচ্ছে। ঠিক আছে তোমরা ঘুমাও।
গুড নাইট….
আবির এ রুম ও রুম করে পুরো বাড়ি খুঁজে হয়রান।তবুও নীলিমাকে খুঁজে পাচ্ছে না কোথাও???
সবশেষে আবির ছাদে গেল। যদিও জানে নীলিমা এমন বৃষ্টির সময় ছাদে থাকবে না, কারন বৃষ্টির একফোঁটা ওর শরীরে পরলেই হাঁচি শুরু হয়। এ এক ভয়ংকর অসুখ।
হাঁচি থেকে শ্বাসকষ্ট। বিয়ের প্রথম বর্ষায় শখ করে আবির নীলিমাকে জোর করে নিয়ে বর্ষাস্নাত বিকেলে বৃষ্টিতে নেমেছিল।
তারপর নীলিমার কি জ্বর….
হাঁচি, শ্বাসকষ্ট..!!!!
আবির তো ভয় পেয়ে গিয়েছিল সেদিন নীলিমার ভয়ংকর এমন অসুখ দেখে। সেই থেকে নীলিমাকে নিয়ে আর কখনো বৃষ্টিতে ভিঁজার ইচ্ছে পোষন করেনি আবির। যদিও বিয়ের আগে আবির ঠিক করেই রেখেছিল বর্ষাস্নাত বিকেল বেলায় আবির ওর বউকে নিয়ে রাজপথে বৃষ্টিতে হেঁটে বেড়াবে কখনো বা বর্ষামুখর সন্ধ্যা কিংবা রাত্রিবেলায় বউকে নিয়ে ছাদে বৃষ্টিবিলাস করবে।আবিরের মনের আশা মনেই রইল।
পূরণ আর হলো না….
আবির জানে নীলিমা ছাদে থাকবে না তারপরও একনজর দেখার জন্য ছাদে গেল। ছাদের ছোট্ট ঘর থেকে ছাদে উঁকি দিয়েই আবিরের চোখ ছানাভরা হয়ে যায়।
নীলিমা এই বৃষ্টিতে ছাদের কর্ণারে চুপটি করে বসে আছে। আবির দৌঁড়ে নীলিমার কাছে গেল……
আবির:- তুমি এখানে?
এইভাবে বসে আছ আর তোমাকে পুরো বাড়ি খুঁজে আমি হয়রান হয়ে গেছি। এখানে এসেছ কেন????
নীলিমা আবিরের দিকে একনজর তাকিয়ে আবারো আগের ভঙ্গিতে হাটুতে ভর দিয়ে আছে।
মনে হচ্ছে যেন কিছুই হয়নি।
আবির:- কি হলো? কথা কানে যাচ্ছে না? এভাবে বৃষ্টিতে ভিঁজতে কে বলেছে তোমায়???
নীলিমা:-……..
আবির:- কথার উত্তর তো দাও…..
নীলিমা:-…….
আবির আর পারছে না।
অনেক হয়েছে বলে আবির একটানে নীলিমার হাত ধরে নীলিমাকে বসা থেকে দাঁড় করিয়ে দেয়। নীলিমার ঠোঁটজোড়া শীতে নীল হয়ে গেছে। আর নীলিমাও ভিঁজে রীতিমত কাঁপছে। আবিরও এতক্ষণে ভিঁজে একাকার…..
আবির নীলিমার হাত ধরে আছে, আর নীলিমা নিচের দিকে তাকিয়ে কাঁপছে….
আবির:- চলো….
নীলিমা:- না……
আবির:- চলো…….
নীলিমা:- না……..
আবির:- চলো……….
নীলিমা:- না, না, না……..
আবির আর একটা কথাও বলেনি।
সোজা নীলিমাকে কোলে উঠিয়ে নেয়। নীলিমা “থ” হয়ে গেছে।স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে।আবিরও কিছুক্ষণ নীলিমার দিকে তাকিয়ে ছিল, তারপর ওর দিকে তাকিয়েই সিড়ির প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করতে থাকে। আবির নীলিমাকে নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে যায়।বাথরুমে গিয়ে নীলিমাকে দাঁড় করিয়ে__
” তুমি এখানে দাঁড়াও। আমি আসছি।”
নীলিমা ছোট্ট বাচ্চাদের মত আবিরের কথামত চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষাণিকবাদে’ই আবির ফিরে আসে হাতে একটা শাড়ি নিয়ে…..
নীলিমা:- আমি শাঁড়ি পরতে পারি না।পরলেও সামলাতে পারি না।
আবির:- তোমায় সামলাতে হবে না।
আমি আছি না? আমি’ই সামলিয়ে দিব। তুমি শুধু কোনোরকম ভেঁজা জামা চেঞ্জ করে শাঁড়িটা প্যাচিয়ে রুমে আসো….
নীলিমা:- তারপর???
আবির:- এত কথা বলো না তো…
তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করো।
নীলিমা:- আচ্ছা….
আবির:- হুম করো।।।।।
নীলিমা:-……. (চুপ)
আবির:- এভাবে স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে আছ কেন???
নীলিমা:- আপনি একটু বাইরে…(…..)….????
আবির:- Oh,sorry….
আসলে মনে’ই ছিল না……
নীলিমা:-
আবির:-
আবির বাথরুম থেকে বেরিয়ে রুমে চলে যায়।রুমে গিয়ে পরনের কাপড়-চোপড় চেঞ্জ করে নেয়।
একটু পর নীলিমা বাথরুম থেকে আসে। আবির নীলিমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নেয়।তারপর কোনোরকম হাসি আটকিয়ে বলে__
” এই তাহলে তোমার অবস্থা?”
নীলিমা:- আমি তো বলছি আমি পরতে পারি না। আপনি’ই তো বললেন শাঁড়ি প্যাচিয়ে রুমে আসতে।
আবির:- বলছি….
তাই বলে সত্যি সত্যি তুমি…????
নীলিমা:-
আবির:-
নীলিমা:-
আবির:- হয়ছে,হয়ছে।এদিকে আসো……
নীলিমা:- কেন???
আবির:- শাঁড়ি পরিয়ে দেয়।
নীলিমা:- না, লাগবে না….
আবির:- পরে যাবে তো;
নীলিমা:- পরব না।ঠিক সামলে নিব।
আবির:- ভালো।
নীলিমা:- হুম।
আবির:- ঘুমাবে না?
নীলিমা:- হুম।
আবির:- শুয়ে পরো তাহলে।
নীলিমা:- দরজা দিবেন না???
আবির:- নাহ…..
নীলিমা:- মিশিয়ে আসি???
আবির:- দরকার নাই…..
নীলিমা:- আচ্ছা….
আবির:- কি আচ্ছা???
নীলিমা:- দরকার নাই।
আবির:- হুম।দরকার নাই।ঘুমাও….
নীলিমা:- একটু জায়গা দেন….
আবির:- হুম, যাও…(সরে গিয়ে জায়গা দিয়ে)
নীলিমা:- গুড নাইট….
আবির:- নাইট…..
নীলিমা:- এটা কোনো ওয়িশ হলো?
আবির:- দুঃখী মানুষের আবার ওয়িশ…..এটুকু যে মুখ থেকে আসল। তুমি বলে এটুকু বললাম।যা মুড খারাপ অন্য কেউ হলে তো কথায় বলতাম না।
নীলিমা:- Mood off? Why?
আবির:- জানি না….
নীলিমা:- Oh….
আবির:- ঘুমাও……
নীলিমা:- আচ্ছা……….
ঘন্টাখানেক পর___
“নীলিমা…..”
ঐ নীলিমা…….?!!!
নীলিমা….
আবির নীলিমাকে ডেকেই চলছে।
নীলিমা ঘুমের ঘোরেই বলছে__
” হুম?”
আবির:- চলো না….
নীলিমা:- কোথায়???
আবির:- সুখের দেশে।
নীলিমা:- সেটা আবার কোথায়? আর কিভাবে যাব???
আবির:- খুব কাছে….
যেতে হয় সুখের নায়ে চড়ে….
নীলিমা:- সুখের না’য় কোথায় পাব???
আবির:- বুকে আসো…..
আবিরের কথা শুনে নীলিমা রীতিমত লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে বসে। ঘুম যেন একলাফেই নীলিমার চোখ থেকে পালিয়ে গেছে।
নীলিমা আবিরের দিকে তাকায়।
আবির তখনও বিড়বিড় করে কথাগুলো বলেই চলছে। নীলিমা আবিরকে আস্তে করে ডাক দেয়। আবির বিছানায় উঠে বসে। ঘুমন্ত চোখ নিয়ে নীলিমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে?
নীলিমা ভ্রু কুঁচকে বলে সেটা তো আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করব। কি হচ্ছে এসব???
আবির চোখ বড় বড় করে বলে__
” কি হচ্ছে?”
নীলিমা:- আপনি বাজে বকছিলেন ঘুমের ঘোরে।
আবির:- তো..???
নীলিমা:- কেন বলছেন ওসব?
আবির:- আশ্চর্য! আমি কি বলছি আমি নিজেই তো জানি না। আর আমি কি ইচ্ছে করে বলি নাকি? ঘুমের ঘোরে বলে ফেলি….
নীলিমা:- আর বলবেন না কখনো….
আবির:- নীলিমা!
ঘুমের ঘোরে কথা বলাটা আমার ছোটবেলার অভ্যাস। আমি তো চাই না বলতে, মুখ দিয়ে এসে যায়। মানুষ ঘুমিয়ে নিরবে স্বপ্ন দেখে, আর আমি সবাইকে জানান দিয়ে স্বপ্ন দেখি।
আমার মত খোলা মনের অধিকারী আর কয়জন আছে বলো???
নীলিমা:- ভালো…..
নীলিমা বিছানা থেকে উঠে গিয়ে টিভি ছাড়ে। আবির নীলিমার পিছুপিছু সোফায় গিয়ে বসে। নীলিমা টিভি অন করে একের পর এক চ্যানেল পাল্টেই যাচ্ছে। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
আবির:- টিভিতে এত রাত্রে বাজে জিনিস ছাড়া আর কিচ্ছু পাবে না।আমার ল্যাপটপে একটা মজার মুভি আছে।দেখবে???
নীলিমা শুধু একবার আবিরের দিকে ফিরে তাকালো। আবির বসা থেকে উঠে ল্যাপটপ’টা আনে। নীলিমার পাশে বসে। আবির ল্যাপটপ ওপেন করে নীলিমার দিকে ফিরিয়ে দেয়।
নীলিমা:- আমি ইংলিশ মুভি দেখি না….
আবির:- দেখো’ই না, মজা পাবে…
আবির-নীলিমা একসাথে বসে
মুভি দেখছে। নীলিমার কাছে ভালো’ই লাগছে মুভি’টা। ভিষণ হাসির একটা মুভি….
নীলিমা মুভি দেখছে আবির নীলিমা’কে দেখছে।ওর মায়ামাখা হাসিমুখটা দেখছে। হঠাৎ করে’ই নীলিমা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে। আবির হকচকিয়ে উঠে।
দু’চোখ বন্ধ করে নীলিমা ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে। আবির যেন কিছু’ই বুঝতে পারছে না। নীলিমার হাটু থেকে ল্যাপটপ’টা নিয়ে আবির ল্যাপটপের দিকে তাকালো। ল্যাপটপটা নিয়ে আবির সেটার স্ক্রিনে তাকালো। স্ক্রিনে তাকিয়ে আবির ওর জিহ্বায় কামড়ে মুচকি হেসে মনে মনে বলে উঠে___
” ওহ্! এই কাহিনী তাহলে?”
সুপ্রিয় পাঠক/পাঠিকাবৃন্দ__
নীলিমা ঠিক তখন’ই চোখ বোজে যখন মুভির হিরো তার হিরোইনকে অকস্মাৎ জাপটে ধরে লিপকিস করা শুরু করে। চোখ বোজার পরও বার বার ওর মনের ক্যানভাসে ভাসছিল ঐ দৃশ্যটা। কেন জানি, ভিতরের মুহূর্তেই অস্থিরতা শুরু হলো। আর তাই নীলিমা চোখ বোজেও ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
আবির:- কি হলো?!!!
নীলিমা:- আমি ঘুমাবো।
নীলিমা সোফা থেকে দৌঁড়ে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।
আবিরও মুচকি হেসে নীলিমার পাশে গিয়ে শুয়ে পরল। নীলিমাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে চোখ দুটো বন্ধ করে আবির। এদিকে নীলিমা?!!!
ওপাশ থেকে আবিরের দিকে ফিরে। আবিরের ঠোঁটের খুব কাছে হাত নিয়ে গিয়ে হাতটা পিছিয়ে আনে নীলিমা। কিছুক্ষণ পর একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে আবিরের ঠোঁটের দিকে নীলিমা ওর ঠোঁটজোরা নিয়ে যায়। ঠোঁটগুলো বিকৃত করে নীলিমা যে’ই না আবিরের ঠোঁটে ঠোঁট লাগাতে যাবে, ওমনি আবির চোখ মেলে তাকাই। নীলিমাকে ওভাবে দেখে আবির চোখ বড় বড় করে নীলিমার দিকে তাকালো।নীলিমা ইয়ে মানে বলে লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসে।
আবিরও শুয়া থেকে উঠে বসে নীলিমাকে বলে__
” কি করছিলে?”
নীলিমা ভয়ে অন্য দিকে ফিরে তাকাই।
আবির আবারো জিজ্ঞেস করে কি হলো? কি করছিলে???
নীলিমা ওদিকে মুখ করে’ই বলে কিছু না….
আবির আবারো বলে__
” সত্যি করে বলো মতলব কি?”
নীলিমা কোনো কথা না বলে চুপ করে বসে আছে ওদিকে তাকিয়ে।
আবির:- এই দেখো! আমি কথা বলছি আর ওনি অন্যদিকে ঘুরে বসে আছে।
এদিকে তাকাও বলছি….
নীলিমা ভয়ে ভয়ে আবিরের দিকের তাকাই।
আবির:- সত্যি করে বলো তো কি করতে চাইছিলে???
নীলিমা:- ফুঁ।
ফুঁ দিচ্ছিলাম। আপনার চোখের পাতায় মাছি এসে বসেছিল, যদি আপনার ঘুম ভেঙে যায় তাই ফুঁ দিয়ে মাছি তাড়াচ্ছিলাম।
আবির:- মিথ্যে কথা বলো কেন?
তুমি ফুঁ নয়,চোঁ করছিলে। আমি স্পষ্ট দেখেছি তোমার ঠোঁট এরকম বাকা হয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছিল। কি???
এবারো মিথ্যে বলবে???
এবার তো অন্তত সত্যিটা বলে দাও। বলো যে তোমার মতল….(….)…..???
আবির সম্পূর্ণ কথা বলতে পারেনি।
তার আগেই নীলিমা ওর ঠোঁট দ্বারা আবিরের মুখটা বন্ধ করে দেয়। নীলিমা আবিরের ঠোঁট….(………)….???
মিনিট দু’য়েক পর নীলিমা ছেড়ে দেয় আবিরকে।
নীলিমা:- এবার হলো? এই করতে চাইছিলাম আমি আপনাকে…..
আবির হতভম্ব হয়ে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীলিমা:- এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন???
আবির:-
নীলিমা:- শুনেন!!!
আমি গরীব হতে পারি কিন্তু অভদ্র নয়।
শুধু কিস করেছি, বেশী কিছু করিনি।হুহ্……..
কথা’টা বলে নীলিমা আবিরের বিপরীতমুখী হয়ে শুয়ে পরে।আবির তখনও হতভম্বের মত বসে নীলিমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল।
আবির বসা থেকে উঠে সোফায় গিয়ে গা এলিয়ে দিল।
আবির চোখ বন্ধ করতে পারছে না,
বার বার তার মনে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে নীলিমার করা সেই কিস’টা….
পরদিন সকালবেলা___
ইমন মণি চলে যাবে। রওয়ানা দেওয়ার আগে মণি আসছে আবিরের সাথে কথা বলতে। এসে দেখে নীলিমা বিছানা গুচাচ্ছে আর আবির সোফায় অঘোরে ঘুমুচ্ছে। তাই দেখে মণি নীলিমা’কে বলছে__
” কিরে! ওনি এভাবে সোফায় ঘুমুচ্ছে কেন?”
নীলিমা:- সেটা ওনাকে’ই জিজ্ঞেস কর….
মণি:- ওনাকে জিজ্ঞেস না করেও আমি হলফ করে বলে দিতে পারি তুই নিশ্চয় ওনাকে কিছু বলেছিস!
নীলিমা:- আরে বইন!
আমি কিচ্ছু বলিনি…..ওনি অনর্থক ওখানে শুইছে।
মণি:- সত্যি বলছিস? কিছু বলিসনি?
নীলিমা:- আমি কি তোকে….(……)…..??!
ঠিক তখন’ই আবির জেগে উঠে।নীলিমার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলে___
” ও ঠিক’ই বলেছে মণি!
ও কিছু বলে নি। তবে……(….)…..????
মণি:- তবে? তবে কি ভাইয়া???
আবির:- করেছে……
নীলিমা:-
মণি:- বলেন কি?
বজ্জাত মেয়েটা কি করেছে ভাইয়া???
আবির ইশারা করে নীলিমাকে দেখায়। নীলিমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আঙুল মুচড়াচ্ছে।
মণি:- কিরে?!!!
তোর আবার কি হলো???
,
নীলিমা হকচকিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে বলে__
” কি হয়ছে?”
,
মণি:- সেটাতো আমি তোকে জিজ্ঞেস করছি। এভাবে মাথা নিচু করে আঙুল বাকাচ্ছিস কেন? আঙুল কি ভেঙে ফেলবি???
,
নীলিমা নিঃশব্দে রুম থেকে বাহির হয়ে যায়। নীলিমা রুমের বাহিরে চলে গেলে মণি আবিরকে জিজ্ঞেস করে এর(নীলিমার) আবার কি হলো ভাইয়া???
,
আবির রাত্রের ঘটনা পুরো’টা খুলে বলে মণিকে। মণির সাথে এতক্ষণে ইমনও এসে যোগ দিয়েছে। সবটা শুনে দু’জন তো রীতিমত “থ”…
ওদের একটাই কথা নীলিমা এটা করেছে?!!!
ওরা যেন কথাটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না।
,
যায় হোক।
অবিশ্বাস করারও কারণ নেই। কারণ কথাটা স্বয়ং আবির বলেছে ওদের। আবির কখনো মিথ্যে বলবে না ওদের সাথে সেটা ওরা খুব ভালো করে’ই জানে।
,
সকালের খাওয়া-দাওয়া শেষে আবির-নীলিমা’কে বলে ইমন-মণি রওয়ানা দেয় বাসার উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে নীলিমাকে বলে যায়_
” কে কি বলেছে সেসব ভুলে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে….”
দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষে আবিরের পরিবারও রওয়ানা হয়ে যায় দেশের বাড়ির উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে সবাই আবির’কে বলে যায় নীলিমার যত্ন নিতে। ও যাতে কোনো প্রকার কাজ করতে না পারে সে খেয়াল রাখতে…..
ওরা সবাই চলে গেছে।
বাসা’টা কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগছে।মন খারাপ করে নীলিমা ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে আসে। আবির সব রুমে খুঁজে নিচে এসে নীলিমাকে পেল। পাশে গিয়ে বসল…….
আবির:- মন খারাপ???
নীলিমা:- হুম….
আবির:- তুমি এই সময়টাইও মন খারাপ করে রাখবে? শুনোনি দুলাভাই কি বলছে???
নীলিমা:- কি???
আবির:- মন খারাপ নয়, হাসিখুশি থাকতে হবে এ সময়। তাহলে’ই তোমার ভেতর যে বেড়ে উঠতেছে ওর…..(……)…..?!!!!
,
আবির সম্পূর্ণ কথা বলতে পারেনি।তার আগেই নীলিমা বলে উঠে__
” ফাইজলামি করেন, তাই না?”
,
আবির:- সেকি?!!!
আমি ফাজলামি করলাম কোথায়?
,
নীলিমা:- এখন কি মজা নিচ্ছেন এসব বলে???
,
আবির:- মজা???
সেটা কিভাবে নেয়???
,
নীলিমা:-
,
আবির:- কি হলো?
,
,
,
, **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
নীলিমা সোফা থেকে উঠে রুমে চলে যায়।
রাতের খাবার খাওয়ার পর__
আবির রুমে এসে ল্যাপটপে খেলা দেখছে, আর নীলিমা?!!!
ড্রয়িংরুমের সোফায় গালে হাত দিয়ে চুপটি করে বসে আছে।
অনেকক্ষণ হয়ে গেল নীলিমা এখনো আসছে না দেখে ল্যাপটপ অফ করে আবির নিচে আসে দেখার জন্য নীলিমা কি করছে???
এসে দেখে নীলিমা গালে হাত দিয়ে বসে গভীর ভাবনায় মগ্ন।
আবির গিয়ে নীলিমার পাশে বসে।
প্রায় আধঘন্টার মত হয়ে গেছে।
নীলিমা তখনও আপন মনে ভেবে’ই চলেছে।আবির নীলিমার হাতের উপর হাত রাখে। নীলিমা চমকে তাকালো ডান পাশে।
একবার আবির তো, আরেকবার হাতের দিকে তাকাচ্ছে নীলিমা।
আবির:- রুমে চলো….
নীলিমা আবিরের হাতের মুঠো থেকে ওর হাতটা ছাড়িয়ে নিল। তারপর__
” আপনি যান, আমি আসছি…”
আবির:- রাগ করেছ?
নীলিমা:- রাগ করার কি আছে???
আবির:- তাহলে এভাবে মন খারাপ করে বসে আছ কেন???
নীলিমা:- মন খারাপ নয়, ভাবছি….
আবির:- কি???
নীলিমা:- বাড়ির কথা। হসপিটালের কথা…..
আবির:- খুব মনে পরছে? আমরা কি কাল একবার ঘুরে আসব নরসিংদী থেকে???
নীলিমা:-……….
আবির:- ঠিক আছে। কাল রেডি হয়ে থেকো। আমরা সকাল সকাল’ই রওয়ানা দিব।
নীলিমা:-…….
আবির:- এখন রুমে চলো….
আবির এবং নীলিমা দু’জনেই সিড়ি বেয়ে একসাথে উপরে উঠলেও নীলিমা আবিরের রুমে যায়নি। নীলিমা ঐ রুমে চলে যায় যে রুমে ও সবসময় থাকত।
এদিকে আবির?!!!
পিছনে ফিরে দেখে নীলিমা নেই।
ছুটে যায় নীলিমার রুমে।
গিয়ে দেখে নীলিমা ঘুমানোর জন্য বিছানা পরিষ্কার করছে….
আবির:- তুমি এ রুমে???
নীলিমা:- আজকে এ রুমে’ই ঘুমাব।
আবির:- তাহলে আমিও কি এই রুমে’ই ঘুমাবো???
নীলিমা:- না…..
আবির:- আচ্ছা, তাহলে ঘুমাও তুমি।আমি যাচ্ছি….
আবির রুমের বাহির হয়ে যায়।
নীলিমা ঠাস করে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়। আবির কিছু’টা মন খারাপ করে ওর রুমে গিয়ে শুয়ে পরে। রাতে অসংখ্য বার আবির নীলিমার রুমের দরজার সামনে এসে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গিয়েছে। আবির নীলিমা’কে স্যরি বলতে চান। বন্ধুদের করা দুর্ব্যবহারের জন্য আজ আবির সত্যি’ই বড় বেশী লজ্জিত নীলিমার কাছে। আবির নীলিমার কাছে একটা বারের জন্য ক্ষমা চাইতে চান, বলতে চান___
” ভালোবাসি আমার মায়াপরীটাকে….বড্ড বেশী ভালোবাসি। আমার জন্য মায়াপরী’টার মনে একটু জায়গা হবে???”
আগামীকাল ১৩ই ডিসেম্বর….
আবির-নীলিমার বিবাহবার্ষিকী। আবির এবারের বিবাহবার্ষিকী’টা একটু অন্য রকম ভাবে উৎযাপন করতে চেয়েছিল। এই যেমন___
যেসব বন্ধুদের সাথে আবির সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছিল, তারা শেষ একবার নীলিমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ চেয়েছিল। আবির ভেবেছিল__
আগামীকাল ওদের দাওয়াত দিবে।
কিন্তু ওর প্রাণপাখি নীলিমার মনটাও ভিষণ খারাপ। তাই আবির নীলিমাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাবে বেড়াতে। সেখানে’ই খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে আবির নীলিমাকে মনের কথা বলতে চাই….
পরদিন ভোরে আবির নীলিমাকে নিয়ে রওয়ানা দেয় নরসিংদীর উদ্দেশ্যে।সকাল ৯টারদিকে আবির নরসিংদী’তে এসে পৌঁছালো….
এখানে এসে আবির লক্ষ্য করল নীলিমা সবসময় কেমন যেন স্তম্ভ হয়ে থাকে। মনে হচ্ছে কোনো নিদারুণ যন্ত্রণা ওর ভিতরটা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এতদিন পর বাবা-মা, নিজ এলাকা, খেলার সাথী, বন্ধ-বান্ধবীদের পেয়েও নীলিমার মুখে হাসি নেই। আবিরের ব্যাপার’টা কেমন যেন ভালো লাগছে না। আবির মনে মনে ভাবছে___
” আচ্ছা কি হয়েছে ওর…”
সেদিন রাত্রে খাওয়ার পর আবির যখন রুমে আসে এর ক্ষাণিকবাদে’ই নীলিমা রুমে আসে।
এসে একটা কথাও বলে নি।
চুপচাপ বিছানা গুছিয়ে বালিশ পেতে দিয়ে নীলিমা চলে যাচ্ছে।
আবির পেছন থেকে নীলিমার হাতটি ধরে।
আবির:- কোথায় যাচ্ছ???
নীলিমা:- ঘুমাবো…
আবির:- ঘুমাবে তো বাইরে কি???
নীলিমার:- লিমার সাথে ঘুমাবো, ও বলছে থাকার জন্য।
আবির:- লিমা একা ঘুমাতে পারবে।
নীলিমা:- ও ভয় পায় ঝড় বৃষ্টিতে একা একা ঘুমাতে। তাই আমায় ওর সাথে থাকতে হবে। যাচ্ছি….
আবির নীলিমা’কে একটানে ওর বুকের সাথে মিশিয়ে বলে___
” ঝড়-বৃষ্টি হলে লিমার জন্য মা আছে, আর আমি???
আমার জন্য কে আছে???!!!”
নীলিমা:- কেউ দেখবে তো। ছাড়েন প্লিজ…
আবির:- দেখুক। আমি আমার বউকে ধরেছি, অন্য কাউকে তো নয়…..
নীলিমা:- প্লিজ ছাড়েন….
আবির নীলিমাকে ছেড়ে রুমের বাহিরে গিয়ে লিমাকে কি যেন বলে আসে। দুষ্টু লিমা মুচকি হেসে দরজা’টা বন্ধ করে একা একা’ই শুয়ে পরে….
আবির:- ব্যস, হয়ে গেল।
নীলিমা:- কি???
আবির:- লিমা রুমের দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরেছে। তুমি এখানেই থাকবে।
নীলিমা:- বললেই হলো! আমি গিয়ে ওকে ডাকছি….
আবির:- কাজ হবে না।
গিট্টু একখান দিয়া আসছি….
নীলিমা:- কি?!!!
কি বলছেন আপনি ওকে?
আবির:- শালি দুলাভাইয়ের ব্যপার।সেটা তোমাকে বলব কেন?
নীলিমা দৌঁড়ে যায় লিমার রুমের সামনে।ডাক দেয় লিমাকে। লিমা কিছুতে’ই দরজা খুলছে না। শেষমেষ অতিষ্ট হয়ে মুখ খুলে লিমা।
” আপু প্লিজ তোদের মাঝে আমায় টানিস না। কাবাবের হাড্ডি হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই… “
নীলিমা রেগেমেগে রুমে যায়। রুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে। আবির গিয়ে পাশে বসে।
নীলিমা বলে ডাক বার কয়েক ডাক দেওয়ার পর নীলিমা সাড়া দিল। বিছানায় উঠে বসল কি হয়েছে???
আবির নীলিমার হাতে একটা লাল টুকটুকে শাড়ি দিয়ে বলে__
” একটু পরবে এটা? খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে…”
নীলিমা হাত দিয়ে শাড়ি’টা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় দুরে। তারপর___
” এসবও কেউ পরে? যত্তসব….”
আবির:- নীলিমা তুমি…(…)….???
নীলিমা:- হ্যাঁ, ফেলে দিলাম। আমার ভালো লাগেনি তাই ফেলে দিলাম।
,
আবির:- আচ্ছা, ঠিক আছে ব্যাপার না। একটু এদিকে আসবে?
,
নীলিমা:- কেন?
আবির:- আসো’ই না….
নীলিমা এগিয়ে আসলে আবির নীলিমার পায়ের কাপড় উঠাতে থাকে।
নীলিমা অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠে___ **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
” কি করছেন? কি করছেন?”
আবির কোনো কথা না বলে নীলিমার পায়ে নূপুর পরিয়ে দিল।
আবির:- কেমন হয়েছে?
মুহূর্তেই নীলিমা আবিরের কাছ থেকে ক্ষাণিকটা দূরে সরে যায়।
খুলে ফেলে নূপুর। পূর্বের ন্যায় সেগুলোকেও খুলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
,
আবির:- আমি জানি তুমি কেন এভাবে রেগে আছ? আজ সব রাগ-অভিমানের শেষ হবে। আজ আমাদদের…. (……)…….
নীলিমা:- চুপ করেন। একদম চুপ।
অনেক বলছেন।
এবার আমায় বলতে দেন।
আমি কিছু বলতে চাই…..
,
আজ আপনার আমার বিবাহ বার্ষিকী,তাই না?
আর তাই কর্তব্যের খাতিরে এগুলো আমায় দিতে, আসছেন নাহ???
লাগবে না আপনার এগুলো…..
আবির:- নীলিমা
প্লিজ শান্ত হও….আমায় একটু বলতে দাও। আমি তোমায় বলতে চাই কিছু….
নীলিমা:- আপনার কোনো কথায় আমি শুনতে চাই না। আজকে আমি বলব, আপনি শুনবেন….
আবির:- বলো….
নীলিমা:- আজ তো আমাদের বিবাহবার্ষিকী,তাই না?
আবির:- হুম….
নীলিমা:- আমি যদি কিছু চাই দিবেন আমায়???
আবির:- কেন দিব না?
অবশ্যই দিব। কি চাও তুমি বলো???
নীলিমা:- আগে প্রমিজ করে বলেন যে দিবেন….
আবির:- এই প্রমিজ করলাম… তুমি যা চাও আমি তাই দিব….
নীলিমা:-……
আবির:- কি হলো? বলো কি চাও??? আমি আমার প্রাণপাখিটার সব আবদার শুনতে রাজি আছি…
,
,
,
,
,
নীলিমা:- মু….ক…তি….
আবির:- কি?!!! কি চাও তুমি???
নীলিমা:- আমি মুক্তি চাই।
আপনার থেকে মুক্তি চাই। আমি একটু প্রাণখুলে নিঃশ্বাস নিতে চাই।
দিবেন আমায় একটু মুক্তি….???
,
আবির নীলিমার কথা শুনে স্তম্ভ হয়ে যায়। নীলিমা যে এমন কিছু চাইবে সেটা বুঝতে পারেনি আবির।
,
নীলিমা:- কি হলো? বলেন না দিবেন আমায় মুক্তি???
,
আবির:- তুমি মুক্তি চাও নীলিমা????
,
নীলিমা:- হুম। মুক্তি চাই।
সব বন্ধন থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।
,
আবির:- এটা ছাড়া অন্য কিছু চাওয়া যায় না???
নীলিমা:- নাহ। আমার আর কিছু চাই না। আমি শুধু মুক্তি চাই….
আবির:- নীলিমা!
তুমি চাইলে আমি সব, সব দিতে পারব। কিন্তু এটা আমার দ্বারা সম্ভব নয় নীলিমা। এটা চেয়ো না আমার কাছে….
আবির:- আপনি আমায় প্রমিজ করেছেন আমি যা চাইব দিবেন। এখন না দিলে কি হবে বুঝতেই তো পারছেন….
আবির:- নীলিমা প্লিজ এমন করো না।
নীলিমা:- তাহলে আমায় মুক্তি দেন।
আবির:- আমি পারব না….
নীলিমা:- আমি তাহলে তিলেতিলে নিজেকে কষ্ট দিব। ভোর হওয়ার আগে এ বাড়ি, ঘর সব, সবকিছু ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাব কিংবা ফ্যানের ঝুলে আত্মহত্যা করব….
,
আবির নীলিমাকে ঠাস করে চড় মেরে দুরে ফেলে দেয়।
,
নীলিমা চোখে জল নিয়ে গালে
হাত দিয়ে বসা থেকে উঠে। রাগের বশবর্তী হয়ে মারলেও আবিরের এখন নিজের প্রতি খুব রাগ হচ্ছে। নীলিমা আবিরের দিকেই এগিয়ে আসছে।
,
আবির কিছু বলতে যাবে তার আগে’ই নীলিমা হঠাৎ করে আবিরের পা ধরে বসে পরে।
,
আবির:- এই, এই!কি করছ?!!!উঠো….
নীলিমা:- আপনি আমায় মারেন, কাটেন, যা খুশি করতে পারেন। তবুও প্লিজ আমায় মুক্তি দেন…..
আমায় মুক্তি দেন,
মুক্তি দেন…..
আবির:- উঠো বলছি নীলিমা….
নীলিমা:- না, আগে আমায় মুক্তি দিবেন সেটা বলেন….
আবির ওর চোখের জল ছেড়ে দেয়। তারপর__
” বেশ! উঠো….
তুমি মুক্তি চাও তাই না???
তাই হবে….”
নীলিমা হাসোজ্জ্বল মুখে চোখের জল মুছতে মুছতে বসা থেকে উঠে।
আবির নীলিমার হাসোজ্জল মুখের দিকে তাকিয়ে আছে…..
.
#_____________চলবে________________
.
।
#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।
।
।
।
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।