রোদ শুভ্রর প্রেমকথন পর্ব ৩১
#লেখিকা- নৌশিন আহমেদ রোদেলা
____________________
ইদের আমেজ শেষ। এবার গ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার পালা। কিন্তু বাড়ি ফেরার আগে আমার মহান বাবার মহান কাজ হলো মেজো বোনের বাড়িতে কোরবানির মাংস পৌঁছে দেওয়া। আমার বাবারা ছয় ভাইবোন। তিনবোন আর তিনভাই। ছোট ফুপি আর মেজো ফুপি ইদটা আমাদের সাথে গ্রামে কাটালেও বড় ফুপি রয়ে গেছেন সেই জামালপুরেই। মিথি আপুর বিয়ের পর এটাই তাদের প্রথম ইদ। মেয়ে জামাইকে রেখে বাপের বাড়িতে ইদ করা কি সাজে ফুপির? তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরই ছুটতে হলো জামালপুরে।
সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, আজকের রাতটা সেখানে থেকে পরেরদিন ট্রেন ধরে চলে যাবো ময়মনসিংহ। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। টোপলা-টোপলি বেঁধে আমরাও ছুটলাম জামালপুরে। কাকিমণির পেছনে ঘ্যানঘ্যান করে রাফিয়া আর রাতুল ভাইয়াও এসে পৌঁছালেন আমাদের সাথে। জামালপুরে পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষে ছেলেরা গিয়ে বসলো বাড়ির উঠোনে। প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো সারি বেঁধে সাজিয়ে গোল হয়ে বসলো তারা।
আর আমরা বসলাম বারান্দায়। রাত তখন আটটা কি নয়টা বাজে। বারান্দা আর বাইরের লাইটগুলো অফ করে ঝাপসা অন্ধকারে চন্দ্রবিলাসে ব্যস্ত আমরা। দু’পক্ষেই হাসি-ঠাট্টা চলছে তাদের নিজস্ব গতিতে। হঠাৎই ছেলেদের মাঝে একটা চাপা গুঞ্জন শোনা গেলো। সেই গুঞ্জনকে থামিয়ে দিয়ে বিরহী গলায় গেয়ে উঠলেন আলিফ ভাইয়া,
—” খুব জানতে ইচ্ছে করে
খুব জানতে ইচ্ছে করে
তুমি কি সেই আগের মতই আছো
নাকি অনেকখানি বদলে গেছ।।
এখনো কি প্রথম সকাল হলে
স্নানটি সেরে পূজার ফুল তুলে
পূজার ছলে আমারই কথা ভাবো
বসে ঠাকুর ঘরে।।”
আলিফ ভাইয়ার গানের মাঝেই সন্দেহী গলায় বলে উঠলেন শুভ্র ভাই।
—” কাহিনি কি রে? এতো বৈরাগী হচ্ছিস কেন? ছ্যাকা ফ্যাক্ট নাকি?”
আলিফ ভাইয়া জবাব দিলেন না। আলিফ ভাইয়াকে চুপ থাকতে দেখে আবারও প্রশ্ন করলেন শুভ্র ভাই,
—” টু মাচ পার্সোনাল? তাহলে স্কিপ করে যা।”
শুভ্র ভাই “স্কিপ” করার কথা বললেও কারো মাঝে কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না। সবাই ঝিম ধরে বসে আছে। চাঁদের আলোর সাথে সাদা বেদনায় মাখামাখি হচ্ছে সবার বুক। কিছুক্ষণ নিরব থেকে মৃদু গলায় বলে উঠলেন আলিফ ভাইয়া,
—” আমার কিছু ভালো লাগছে না শুভ্র ভাই। অনিমা যে ছোট্ট একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাকে ছেড়ে দিবে চিন্তায় করতে পারি নি আমি। ওকে আমি অনেক বুঝিয়েছি, অনেক রিকুয়েষ্ট করেছি কিন্তু ও শুনলোই না। তুচ্ছ একটা বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে আমাকেই ছেড়ে দিলো। আমি ওকে প্রচন্ড ভালোবাসি শুভ্র ভাই। প্রচন্ড।”
শুভ্র ভাই কিছু বললেন না। পাশ থেকে অদুদ ভাইয়া বললেন,
—” তুইই যা কষ্ট পাচ্ছিস আলিফ। অনিমা তো ঠিকই নতুন বয়ফ্রেন্ড নিয়ে নেচে বেড়াচ্ছে। ফেসবুকে নিয়মিত নিব্বা-নিব্বিমার্কা পোস্ট মারছে। ওই মেয়ের মধ্যে কি এমন পাইছিস বল তো? এই মেয়েকে দেখলেই তো আমার থার্ডক্লাস গালি দিতে মন চায়।”
—” প্লিজ ভাইয়া। এভাবে বলবে না। ওকে আমি ভালোবাসি তো বাসি। ভালোবাসতে কোনো কারণ লাগে না। ওকে আমি এমনিই ভালোবাসি।”
শুভ্র ভাই এবার নড়েচড়ে বসলেন। চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে বসে বললেন,
—” এসব কাব্যিক কথা বন্ধ কর আলিফ। এসব শুধু উপন্যাসের পাতাতেই সত্য। রিয়েলিটি কি জানিস? বাবা-মা ছাড়া এই পৃথিবীতে দ্বিতীয় কেউ বিনা কারণে কাউকে ভালোবাসে না। অনেকে তাদের প্রেমিকা বা অর্ধাঙ্গিনীকে প্রচন্ড ভালোবাসে কিন্তু এর পেছনে কারণ থাকে।
কারণহীন ভালোবাসা শুধু দুর্লবই নয় অনেকটা অসম্ভব। আমরা প্রতিদিন অসংখ্য মেয়ের সংস্পর্শে আসি। রাস্তা-ঘাটে অনেককেই চোখে পড়ে কিন্তু এতো এতো মেয়ের মাঝে একজনের প্রেমেই পড়ি এবং একজনকেই চাই। এর কারণ কি? আমরা যদি বিনা কারণেই ভালোবাসি তাহলে সবার প্রেমে পড়ি না কেন? একটা মানুষের রূপ, গুন, কথাবার্তা বা এটিটিউট কোনো একটা কিছুতে মুগ্ধ হয়েই ভালোলাগার সৃষ্টি হয়। সেই ভালোলাগা থেকে তার প্রতি আকর্ষনের সৃষ্টি হয়। তার কাছাকাছি থাকার একটা সুপ্ত তাড়না বুকে ধাক্কা দেয়। তারসাথে মিশতে মিশতে।
তার সাথে সময় কাটাতে কাটাতে ধীরে ধীরে তার সবকিছুই আমাদের ভালো লাগতে থাকে। তখন এমন একটা অবস্থা হয় যে, তুই যে কারণটার ওপর ভিত্তি করে প্রেমে পড়েছিলি সেটা ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলেও তুই মানুষটাকে ভালোবাসছিস কেননা ভালোবাসাটা তখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু হুট করে প্রথম দেখেই নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে জীবন উজাড় করে দেওয়াটা সত্য নয়। মানুষের ভালোবাসা যদি এতোটাই নিঃস্বার্থ হতো তাহলে “ভাঙন” নামক শব্দটা পৃথিবীতে থাকতো না। মানুষ নিজের প্রয়োজন মেটাতেই অপরজনকে ভালোবাসে।”
আলিফ ভাইয়া দ্বিধান্বিত চোখে তাকালেন। মুখ কাঁচুমাচু করে প্রশ্ন করলেন,
—” তাহলে তুমি? তুমিও কি ভালোবাসো না? শুধুমাত্র প্রয়োজনের জন্য?”
শুভ্র ভাই বিরক্ত গলায় বললেন,
—” আরে,ছাগল। ভালোবাসি না কখন বললাম? আমি তাকে ভালোবাসি বলেই তাকে আমার প্রয়োজন। যা বুঝাতে চাইছি তা বুঝ। তুই যে বললি, ভালোবাসতে কারণ লাগে না এটা ভুল। অনেকেই বলে, ভালোবাসা অনুভূতির বিষয়। ভালোবাসতে কারণের প্রয়োজন হয় না বিষয়টা সত্য নয়।
আমরা যেকোনো একটা কারণের উপর ভিত্তি করেই অন্যকে ভালোবাসি। সেটা যেকোনো কিছু হতে পারে। রূপ, এটিটিউট, গলার টুন ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর ধীরে ধীরে সংকীর্ণ ভালোলাগাটার বিস্তার হয় এবং মানুষটির সাথে যুক্ত সবকিছুই ভালোলাগতে থাকে। কিন্তু কারণ একটা থাকেই। কিছু কিছু মানুষ নিজের ভালোলাগার বিষয়গুলো নিয়ে নিজেরাই ক্লিয়ার নয় বলে নিজের অজ্ঞতা ঢাকতে বিষয়টাকে অসম্ভবের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।”
আলিফ ভাইয়া কৌতূহলী গলায় বললেন,
—” তাহলে তোমার ভালোবাসার পেছনের কারণটা কি শুভ্র ভাই।”
শুভ্র ভাই হাসলেন,
—” এখন তো ওর সবকিছুই ভালো লাগে। তবে ভালোলাগার একটা মৌলিক কারণ অবশ্যই আছে। তবে, সেই কারণটা তোদের বলা যাবে না।”
আলিফ ভাইয়া আর কথা বাড়ালেন না। তবে, রাফিয়া এক লাফে আমাকে ডিঙিয়ে উঠোনে গিয়ে দাঁড়ালো। উৎফুুল্ল হয়ে বলে উঠলো,
—” ‘এখন তো ওর সবকিছুই ভালো লাগে।’ এখানে এই ‘ও’ টা কে? জাতি জানতে চায়। বলুন…বলুন।”
শুভ্র ভাইয়ের মুখে ভাবান্তর দেখা গেলো না। উনি ভ্রু
বাঁকিয়ে একবার রাফিয়ার দিকে তাকালেন। পাশ থেকে রাতুল ভাইয়া ধমকে উঠে বললেন,
—” জাতি কিছু জানতে চায় না। থাপড়া না খেতে চাইলে চুপচাপ বস।”
রাফিয়া ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,
—” তুই সবসময় আমাকে ধমকাস কেন ভাইয়া? বাড়িতে একবার পৌঁছোতে দে শুধু, আব্বাকে যদি তোর গার্লফ্রেন্ডের কথা না বলছি। তুই যে সিগারেট খাস ওইটাও বলবো।”
রাতুল ভাইয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললেন,
—” বল গা যা। তোর এফবি পাস এখনো আমার কাছে আছে। পাস চেঞ্জ করে দিলেই কি? স্ক্রিনশটগুলো একদম সিকিউর করে রেখে দিয়েছি। আমিও আম্মাকে দেখাবো যে তার মেয়ে কোন ধরনের পোলাপানের সাথে কোন ধরনের চ্যাটিং করে।”
রাফিয়া এবার ধমে গেলো। চুপচাপ আমার পাশে এসে বসে পড়লো। তার প্রচন্ড দুঃখ দুঃখ অনুভূতি হচ্ছে। প্রথমত, শুভ্র ভাইয়ের “ও” নামক রহস্য সমাধান করতে পারলো না। দ্বিতীয়ত, এতোগুলো মানুষের সামনে ইজ্জতের ফালুদা হয়ে গেলো। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর, মিলাদ ভাইয়া আগের কথার রেশ টেনে নিয়ে বললেন,
—” ওসব বাদ দে। আগে আমাদের আলিফের ডিপ্রেশন কিভাবে কমানো যায় তাই ভাব। কি রে আলিফ? নতুন গার্লফ্রেন্ড লাগবে? আমাদের জামালপুরে কিন্তু মেয়ের অভাব নেই।”
মিলাদ ভাইয়ার কথায় সবাই হাসলেও আলিফ ভাইয়া চুপ করে বসে রইলেন। শুভ্র ভাই ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে সামনের দিকে ঝুঁকে বসলেন। গম্ভীর গলায় বললেন,
—” দেখ আলিফ? এতো ডিপ্রেশড হওয়ার কিছু নেই। একটা সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখার জন্য দুটো মানুষকে সমান শ্রম দিতে হয়। তুই একা একা আর কতো টানতি, বল? অনিমা কেমন মেয়ে ছিলো সেটা আমি যাচাই করতে যাচ্ছি না। আমার মতে, সব মেয়েই ভালো কিন্তু সবার জন্য সবাই সঠিক চয়েজ নয়। অনিমা হয়তো তোর জন্য পার্ফেক্ট চয়েজ ছিলো না। তাই এই পরিণতিটা যত তাড়াতাড়ি এসেছে সেটা তোর জন্য ততটাই ভালো হয়েছে। অনিমার পেছনে সময়, টাকা সবই প্রচুর পরিমাণে উড়িয়েছিস তুই। ওকে কিভাবে খুশি করা যায়, ওর প্রয়োজন কিভাবে মেটানো যায়, ওর থেকে নিজের দুর্বলতাগুলো কিভাবে লুকানো যায় এসব নিয়েই পড়ে থেকেছিস সবসময়। কিন্তু সত্যিই কি এটাকে ভালোবাসা বলে? একটা মানুষকে কনটিনিউয়াসলি
সুখী করার চেষ্টাকে ভালোবাসা বলে না। দু’জন মিলে সুখী হওয়ার চেষ্টাকে ভালোবাসা বলে। যাকে ভালোবাসা যায় তার কাছে এতো সংকোচ, এতো ভয় থাকে না আলিফ। মানুষ ভালো থাকতে চায় বলেই ভালোবাসে। ভালোবাসাটা যখন মাথায় বোঝ হয়ে যায় তখন সেটা আর ভালোবাসা থাকে না।
যার সামনে যাওয়ার আগে তাকে খুশি করার বা ইমপ্রেস করার জন্য হাজার ভাবনা ভাবতে হবে না, নিজেকে বেস্ট প্রমাণ করার জন্য হাজারো প্ল্যান সাজাতে হবে না তাকেই তুই সত্যিকারে ভালোবাসিস। যার কাছে তোর দুর্বলতাগুলো, তোর কষ্টগুলো লুকাতে হবে না সেই-ই হবে তোর ভালোবাসা। যে মেয়ে তোকে ভালোবাসবে তাকে কখনো গিফ্ট দিয়ে খুশি করতে হবে না। তোকে এক ঝলক দেখতে পেলেই অটোমেটিক খুশি হয়ে যাবে সে। যার চোখের দিকে তাকিয়ে নির্ভয়ে চিন্তা করতে পারবি, “হ্যাঁ। এই মেয়েটা শেষ পর্যন্ত তোর।” ভালোবাসা একটা প্রশান্তির নাম, আতঙ্কের নাম নয় রে।
তাকে এটা/ওটা গিফ্ট না করলে আমায় ছেড়ে চলে যাবে এই উদ্ভট চিন্তাটা ভালোবাসায় আসবে কেন? শোন, মেয়েরা প্রচন্ড ভালোবাসতে জানে। শুধুমাত্র নিজের মনের মতো কাউকে খুঁজে নিতে হয়। হাজারের মধ্যে বেস্ট কাউকে নয়। শুধুমাত্র তোর জন্য বেস্ট কাউকে খোঁজ। সারাদিন বাবু,বেবি, ভালোবাসি বলে চেঁচালেই তা সত্যিকারের ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসাটা অনুভূতির বিষয়। যে অনুভূতি মুখে না বললেও অপরজনকে বুঝিয়ে দিবে তাকে তুই চাইছিস। তাকে ছাড়া তোর চলছে না। অনিমার সাথে ছয়মাসের রিলেশনে কখনো মনের শান্তিটা পেয়েছিলি?
সারারাত ফোনে কথা বললেই কি শান্তি পাওয়া যায়? যায় না। তোর অসুস্থতায় বাবু, বেবি বলে চেঁচিয়ে করা নাটকীয় চিন্তার চেয়ে অপর পাশের মানুষটির মুখ কালো করে চুপ করে থাকাটা যে কতোটা প্রশান্তির তোরা সেটা এখনও অনুভবই করতে পারিস নি। এতোকিছুর পরও যদি মনে হয়, অনিমার দুঃখে তোর সিলিং এ ঝুলে পড়া উচিত। তাহলে ঝুলে পড়তেই পারিস। কিন্তু, ঝুলে পড়ার পর তোর সবচেয়ে বড় আক্ষেপ কি থাকবে জানিস? এই ক্ষুদ্র জীবনে শুধুমাত্র তোর জন্য বরাদ্দকৃত চমৎকার মানুষটিকে তোর পাওয়া হলো না।”
এটুকু বলে উনি থামলেন। এতোক্ষন সবাই মহোন্নত হয়ে উনার কথাগুলোই শুনছিলেন। উনার কথায় এমন কিছু ছিলো যা ঘুরে ঘুরে বারবারই কানে এসে লাগছিলো। প্রতিটি শব্দ যেন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছিলো,”সত্যিই তাই” সবার এই নীরবতা ভেঙে ফুস করে নিঃশ্বাস ছাড়লেন মিথিলা আপুর হাজবেন্ড চয়ন ভাইয়া। শুভ্র ভাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
—” ডোন্ট মাইন্ড শুভ্র। বাট এখন রাফিয়ার মতো আমারও জানতে ইচ্ছে করছে যে তোমার রমনীটা কে?মাস্ট বি, শী ইজ আ লাকি গার্ল।”
শুভ্র ভাই হাসলেন,
—” কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমি আর সে দু’জনেই বিশ্বাস করি, ‘মাস্ট বি, শী ইজ এন আনলাকি গার্ল।’
চয়ন ভাইয়া ভ্রু কুঁচকালেন। অবাক হয়ে বললেন,
—” কেন?”
—” কারণ? আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে একরকম, কাজিনদের সাথে একরকম, ফ্যামিলির সাথে একরকম এবং ওর সামনে টোটালি ভিন্ন রকম।”
চয়ন ভাইয়া কপাল কুঁচকে বললেন,
—” ধুর মিয়া। বার বার ‘ও’ ‘ও’ না বলে নামটা বলে দিলেও তো পারো। আলিফ,অদুদ, রাতুল এদের কথা শুনে মনে হয় ওরা সবই জানে তাহলে বোন এবং বোন জামাইদের কেন বঞ্চিত করছো?”
অদুদ ভাই ফোঁড়ন কেটে বললেন,
—” বোনদের পেট পাতলা আর বোনের জামাইদের পকেট পাতলা। এসব পাতলা-পুতলা মানুষদের সিকরেট কিছু বলা চলে না চয়ন ভাই। তবে, পাতলাগিরি কমিয়ে শালাদের পেট ভরানোর ব্যবস্থা করলে আমার গার্লফ্রেন্ডের নামটা বলেও দিতে পারি।”
চয়ন ভাইয়া হেসে বললেন,
—” তোমার গার্লফ্রেন্ডের নাম ট্রিট দিয়ে জানতে হবে? মিথিকে যেদিন দেখতে গিয়েছিলাম সেদিনই তো জেনে গিয়েছি।”
অদুদ ভাই অবাক চোখে তাকালেন। বিস্মিত কন্ঠে বললেন,
—” আমার প্রেম কাহিনি যে গলিতে গলিতে প্রচারিত হয় এটা তো জানা ছিলো না। শালার কপাল, মহল্লায় ভাই ভাই বললে কি হবে? ভাই-বোনদের কাছেই তো ইজ্জত পাইলাম না।”
অদুদ ভাইয়ার কথায় আবারও হেসে উঠলো সবাই। চয়ন ভাইয়া আবারও আগের কথার রেশ ধরে বললেন,
—” শুভ্র? শালামশাই? বোন আর বোনজামাইদের এভাবে অধিকার বঞ্চিত করতে পারো না তুমি। এটলিস্ট নাম তো বলো।”
শুভ্র ভাই এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে তাকালেন। আমিও নিচের ঠোঁট কামড়ে নিঃশ্বাস আটকে বসে রইলাম। উনি আমার নাম বললেই কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। টেপ রেকর্ডার রাফিয়া দুই মিনিটে সারা দুনিয়ায় ঢোল পিটিয়ে নিজ দায়িত্বে খবর পৌঁছে দেবে। শুভ্র ভাই গম্ভীর মুখেই বললেন,
—” বোনেরা আমার জন্য খুব স্পেশাল চয়ন ভাই। বোনের জামাইরা তো স্পেশাল স্কয়ার। এই এতো এতো স্পেশাল মানুষদের কি যেনতেন সময়ে কিছু বলা যায়? তাদের জন্য স্পেশাল সময়ের অপেক্ষায় থাকতে হয়। আমিও তাই আছি। আমার লাইফের সবচেয়ে স্পেশাল দিন হবে, প্রথমত বিয়ের দিন। দ্বিতীয়ত, বাবা হওয়ার দিন। তাই ভাবছি একটু কষ্ট হলেও বিয়ে অব্দি ওয়েট করি। কি আর করা? বোনদের তো একটা রেসপেক্ট আছে নাকি? আর বোন জামাইদের জন্য আরো ভালো পরিকল্পনা আছে। বিয়েটা করি। বাচ্চাকাচ্চা হোক। বাচ্চার জন্মদিনে সব দুলাভাইকে বাচ্চার মার নামটা জানিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ।”
শুভ্র ভাইয়ের কথায় হোহো করে হেসে উঠলো আলিফ- রাতুল ভাইয়ারা। তাদের হাসির মাঝেই, ভাইয়ার কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে উঠলেন অদুদ ভাইয়া,
—” রাহাত ভাই? তুমিও একটু প্রাণ খুলে হাসো। ”
ভাইয়া অদুদ ভাইয়ার পেটে গুঁতো দিয়ে দাঁত বের করে বললেন,
—” এই নে হাসলাম।”
কথাটা বলেই ঝাপসা অন্ধকারে একবার আমার দিকে তাকালো ভাইয়া। সাথে সাথেই ওঠে দাঁড়ালাম আমি। এই সম্পর্কে ভাইয়া কিছু জানে কি না তার বিন্দুমাত্র ধারনা আমার নেই। তবুও সারা শরীরে যেন বিশ্রী অস্বস্তি ভর করলো আমার। শরীর খারাপের বাহানা দিয়ে দ্রুত তার চোখের আড়াল হলাম। আমাদের জন্য বরাদ্দকৃত রুমে বিছানায় গা এলিয়ে মুখে বালিশ চেপে পড়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর ঝড়ের গতিতে রুমে ঢুকলো রাফিয়া। একটানে মুখের ওপর থেকে বালিশটা সরিয়ে নিয়ে বললো,
—” ওই? ঘুমিয়েছিস? চয়ন ভাইয়া সবাইকে খাওয়াবে। চল জলদি…”
আমি হালকা গলায় বললাম,
—” তোরা খা। আমি খাবো না।”
রাফিয়া আমার ডানহাত টেনে ধরে বললো,
—” কেনো খাবি না? চল জলদি।”
এবার বেশ বিরক্ত হলাম আমি। বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে বললাম,
—” উফ! বললাম তো খাবো না। সর না প্লিজ….আমি ঘুমুবো। তোরা গিয়ে খা।”
কথাটা বলে আবারও বালিশ দিয়ে মুখ ঢাকলাম আমি। রাফিয়া কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। কয়েক সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকেই একরকম ছুঁটে বেরিয়ে গেলো। আকাশ-পাতাল চিন্তা করতে করতে ঘুমটা যখন চোখে ধরা দিবে দিবে এমন সময় দরজায় তুমুল শব্দ তুলে ভেতরে ঢুকলো কেউ। মুখ থেকে বালিশটা সরিয়ে চোখ পিটপিট করে তাকাতেই ছোট ছোট পায়ে দৌড়ে বিছানায় ওঠে এলো আদিবা। আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,
—” এখনও ঘুমুও নি তুমি? আর হাতে এগুলো কি? কে দিলো?”
আদিবা হাতে রাখা পলিথিন ব্যাগটা আমার পাশে রাখলো। তাতে দুটো আইসক্রিম আর একটা চানাচুরের প্যাকেট। পলিথিনটা পাশে রেখেই আবারও ঝটপট বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো আদিবা।
—” কি ব্যাপার? কোথায় যাচ্ছো? এগুলো রেখে যাচ্ছো কেন?”
আদিবা যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। যেতে যেতে বললো,
—“ওটা দাদাভাই দিয়েছে। বলেছে, রোদাপু খাবে।”
আমি অসহায় মুখ নিয়ে আদিবার যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলাম। আদিবা দরজার আড়াল হতেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে পলিথিনটির দিকে তাকালাম। আমার কাঁচা ঘুম ভেঙে আইসক্রিম, চানাচুর খাওয়ানোর মতো মহান কাজ সম্পন্ন করার জন্য লোকটিকে কি করা উচিত? অবশ্যই ব্রহ্মপুত্র নদে চুবানো উচিত।
একঘন্টার মাথায় রাফিয়া আর আপু এসে শুয়ে পড়লো বিছানায়। আমি বিছানায় কিছুক্ষণ এপাশ-ওপাশ করে ওঠে বসলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম নেটওয়ার্কের অবস্থা খুবই বাজে। বিছানা থেকে নেমে রুমের পেছনের দরজাটা হালকা খুলে দরজার কোণায় গিয়ে বসলাম। আমার থেকে একটু দূরেই লাইটের আলোর নিচে বসে আছেন শুভ্র ভাই, চয়ন ভাইয়া, আলিফ ভাইয়া, অদুদ ভাইয়া আর রাতুল ভাইয়া। ওদেরকে দেখতে পেয়ে ফোনের আলোটা নিভিয়ে দেয়ালে ঠেস দিয়ে চুপচাপ বসে রইলাম। এরই মধ্যে বলে উঠলেন চয়ন ভাইয়া,
—” এটলিস্ট তোমার লাভ স্টোরিটা তো আমাদের শোনাও শুভ্র।”
শুভ্র ভাই হেসে বললেন,
—” আমার কোনো লাভ স্টোরি নেই চয়ন ভাই।”
চয়ন ভাইয়া বাঁকা চোখে তাকালেন। অবিশ্বাস্য সুরে বললেন,
—” প্রেম করো অথচ লাভ স্টোরি নাই? এটা কেমন কথা হলো শালামশাই?”
শুভ্র ভাই হেসে ফেললেন। জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বললেন,
—” আমি প্রেমও করি না। এদের সবকটাকে জিগ্যেস করুন। আমাদের কাজিনদের জীবন্ত নিউজবোর্ড রাফিয়াকেও জিগ্যেস করতে পারেন। তাছাড়া, আপনিই বলুন… কখনো আমাকে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলতে দেখেছেন? ঘন্টার পর ঘন্টা ম্যাসিজিং করতে দেখেছেন? প্রেমে করার মতো কোনো লক্ষ্মণ কি চোখে পড়েছে আপনার?”
চয়ন ভাইয়া কিছুক্ষণ ভাবলেন। তারপর বললেন,
—” ব্যাপারটা নিরাশাজনক হলেও এমন কিছু চোখে পড়ে নি আমার। ভাবছি, একটা হ্যাকারের সাথে কন্ট্রাক করবো। তোমার এফবি আইডি হ্যাক করে ইনফরমেশন পাওয়া যেতে পারে।”
শুভ্র ভাই শব্দ করে হাসলেন। কপালের চুলগুলো পেছন দিকে ঠেলে দিতে দিতে বললেন,
—” প্রায় আট/নয় মাস হতে চললো এফবি আইডি ডিয়েক্টিভ আমার। হোয়াটসঅ্যাপে একটু আধটু ঢুকা হয় যা….”
পাশ থেকে হালকা কাশলেন অদুদ ভাইয়া। দাঁত কেলিয়ে বললেন,
—” চয়ন ভাই? আমাকে ঘুষ দিলে আমি একটা ইনফরমেশন দিতে পারি।”
চয়ন ভাইয়া ভ্রু নাচিয়ে বললেন,
—” কি ইনফরমেশন?”
—” আগে ঘুষ তো দিন। আগে বললে কেমনে চলবে?”
—” আগে বলো। তারপর ঘুষ। ইনফরমেশন আমার কাজের না এলে তো ঝামেলা।”
পাশ থেকে খুকখুক করে কেশে উঠলেন আলিফ ভাইয়া। অদুদ ভাইয়া থেকে খানিক তফাৎ এ বসে বললেন,
—” চয়ন ভাই? এর কথা বিশ্বাস করবেন মানে ঠকবেন। তার থেকে ইনফরমেশনটা আমিই দিয়ে দিচ্ছি, শুভ্র ভাইয়ের আরেকটা আইডি আছে। যে আইডিতে বছরে একবারও ঢুকে না শুভ্র ভাই । পোষ্ট, টোষ্ট বহুত দূরের কথা। ওই আকামের আইডির খোঁজ দিয়ে টাকা মারার ধান্দা করছে ভাইয়া।”
অদুদ ভাইয়া জুতো খুলে, আলিফ ভাইয়ার দিকে ছুঁড়ে মেরে বললেন,
—” এই তুই আমার ভাই কেমনে হইলি রে? শালার বড় ভাইরে কখনো ইজ্জত দিতে পারলি না। যা ফুট।”
উনাদের কান্ডে সবাই পেট ফাটা হাসিতে ফেঁটে পড়লো। চয়ন ভাইয়া আফসোসের শিষ তুলে বলে উঠলেন,
—” শুভ্র? তোমার এই প্রেম সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানাটা এখন আমার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। না জানলে রাতে ঘুম হবে না ভাই। সত্যি করে বলো তো, কেমনে করো এসব?”
শুভ্র ভাই ভ্রু কুঁচকে বললেন,
—” কিসব?”
চয়ন ভাইয়া বাঁকা হেসে বললেন,
—” ওসব।”
শুভ্র ভাই সন্দিগ্ধ চোখে তাকালেন। হালকা কেশে বললেন,
—” ভাই? আপনি তো দেখি খুবই কড়া জিনিস। আমি ভদ্র একটা ছেলে। আমাকে উদ্দেশ্য করে এসব ভয়ানক সব কথা বলা কি ঠিক?”
চয়ন ভাইয়া শুভ্র ভাইয়ের পিঠ চাপড়ে হাসলেন। ফোঁড়ন কেটে বললেন,
—” তুমিও তো কম না। একটা বললে অন্যটা বুঝো। আমি তো জিগ্যেস করছিলাম যে, তোমাদের যোগাযোগটা কিভাবে হয়? এই যুগের মেয়েরা একদিন দু’মিনিট কম কথা বললেই তো রেগে ফায়ার। তুমি সামলাও কেমনে?”
শুভ্র ভাই এবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন। ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
—” আমি কিছুই সামলাই না চয়ন ভাই। যা সামলানোর তা নিজে নিজেই সামলে যায়। আমাকে নিয়ে এতো ইনভেস্টিগেশন করার মতোও কিছু নেই ভাই। না আছে কাউকে বলার মতো কিছু। এ পর্যন্ত সরাসরি কখনো ভালোবাসিটাও বলি নি ওকে। কখনো “কেমন আছো?”
জিগ্যেস করি নি। কখনো ভিডিও কলে কথা বলি নি। ফোন কলে আবেগময় কথা বলাও আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে নি। বছরের বেশিরভাগ সময়ই ওর থেকে অনেক দূরে থাকি আমি। তবুও কখনো কল করে জানতে চাই নি, কি হচ্ছে তার সাথে? কেন হচ্ছে? ব্লা ব্লা। নিতান্তই যখন মনে হয়েছে শরীরটা আর চলছে না। তখন সব কাজ ফেলে ক্লান্ত শরীরে ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। সাধারণ পরিচিত মানুষের মতোই একটু আধটু কথা হয়েছে। আমি আবারও ফিরে গিয়েছি।”
এটুকু বলে থামলেন শুভ্র ভাই। ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
—” সবাই বলে আমার নাকি প্রচুর রাগ। কিন্তু একটা ভয়ানক সত্য হলো, আমার মতো রাগী বান্দাও তার রাগের কাছে অসহায়। অনেক সময় দেখা গিয়েছে দু-তিন মাস অন্তর আমাদের দেখা হয়েছে কিন্তু দেখা হওয়া মাত্রই ম্যাডাম রাগে বোম। কেন বোম? সেটা তিনি আমায় বলবেন না। তার রাগের কারণ আমাকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। নয়তো কথা বন্ধ। এমনকি সামনে আসাও বন্ধ। আমাদের কোনো গল্প নেই, চয়ন ভাই। এতো কাঠখড় পুড়ানোরও কোনো প্রয়োজন নেই।”
চয়ন ভাইয়া উত্তেজিত হয়ে বললেন,
—” অদ্ভুত! ভালোবাসি বলো নি তো সে বুঝে কেমনে তুমি তাকে ভালোবাসো? সে প্রোপোজ করেছে নাকি আগে?”
—” আমিই প্রোপোজ করি নি আর সে করবে? মরে গেলেও স্বীকার করবে না।”
—” তাহলে?”
শুভ্র ভাই হাসলেন। ডানচোখ টা টিপে দিয়ে বললেন,
—” চোখে চোখে কথা বল
হৃদয়ে রাখ হৃদয় ।
মনে মনে ভাসি চল
হয়ে যাক না প্রণয় ।
বুকের ভেতর তোমার জন্য
মাতাল হাওয়া বয় ।
অনুভবে না বলা কথা
বুঝে নিতে হয় ।”
স্ট্রং কানেকশন চয়ন ভাই। অটোমেটিক বুঝে যাই….হার্ট টু হার্ট।”
চয়ন ভাইয়া আমোদিত গলায় বললেন,
—” তোমরাই হলে নেক্সট জেনারেশনের লায়লা-মজনু শালামশাই। চালিয়ে যাও….চালিয়ে যাও।”
উনাদের মধ্যে একের পর এক ভিন্ন ভিন্ন টপিক নিয়ে আড্ডা চলতে থাকলো। আর আমি অন্ধকারে বসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম উনার মুখে। মাতাল করা হাসিতে মেতে আছে উনার ঠোঁট । সেই হাসির সাথেই মিশে আছে আমার একগুচ্ছ আবেগ। একগুচ্ছ ভালোলাগা আর একগুচ্ছ বিশ্বাস। সত্যিই তো…কি করে মনের সুপ্ত অনুভূতিগুলো মিলে গেলো দুজনের? সত্যিই কি উনাকে কখনো ভালোবেসেছিলাম আমি? কখনো যেচে খবর নিয়েছিলাম উনার? শখ করে হাসিমুখে দুটো কথা কি আদৌ বলেছিলাম? কি জানি? মনেই পড়ছে না। এভাবে ভুলে ভুলেই কিভাবে কেটে গেলো তিনবছর ছয়মাস দুই দিন!
#রোদবালিকা
রোদ শুভ্রর প্রেমকথন সম্পূর্ণ গল্পের লিংক
https://kobitor.com/rodsuvro/
[ দু’দিন ধরে অসুস্থ খুব। সেইসাথে ভীষণ চাপ। ফেসবুকেই আসা হয় নি ঠিকঠাক। তারওপর গল্প লেখার পর পোস্ট করার আগমুহূর্তে ডিলিট হয়ে যাওয়ায় আর লিখতে বসতে মন চায় নি। তাই গল্প দেওয়া হয় নি। জানিয়ে দিই নি বলে দুঃখিত।”