# এক মুঠো রোদ .
# writer :নৌশিন আহমেদ রোদেলা
# পর্ব -৯
— তুমি?
— ওহহো মিষ্টার ভিলেন। সরাসরি আমার সামনে এসে গেলেন তো? নট বেড। এক্চুয়েলি, আমি না আপনাকে প্রচুর মিস করছিলাম বুঝলেন? এনিওয়ে,( পিচ্চিটির দিকে তাকিয়ে) এই বাবু? ওই সাহেবকে দুটো মালা দাও তো টাকা আমি দিয়ে দিচ্ছি কেমন?
পিচ্চিটা মাথা হেলিয়ে দুটো মালা এগিয়ে দিলো। রাফিন কিছু না বলে চোখ-মুখ লাল করে সামনের দিকে তাকিয়ে বসে রইলো। আরু পিচ্চিটিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
— ওই সিটের ওপরই মালাদুটো রেখে দাও ঝটপট। এই সাহেবটা না খুব অলস বুঝেছো? মুখও নাড়ায় না, হাতও নাড়ায় না সবকিছুতেই তার আলসেমী।
মেয়েটা ফিক করে হেসে দিয়ে পাশের সিটটাতেই মালা দুটো রেখে দিলো। আরু এতোক্ষণ পিচ্চিটিকে দু’হাতে উঁচু করে ধরে ছিলো। এবার তাকে নামিয়ে মাটিতে দাঁড় করিয়ে ব্যাগ থেকে বিশ টাকার একটা নোট বের করে তার হাতে ধরিয়ে দিলো। টাকা পেয়েই মেয়েটি দিলো এক ছুট। সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রাফিনের দিকে তাকাতে তাকাতেই রাফিন গাড়ি নিয়ে দৃষ্টির বাইরে। আরু পেছন থেকে কয়েকবার ডেকেই নিজের মনে বলে উঠলো- ” এই যাহ্, চলে গেলো?”
১৭.
পাশাপাশি হাঁটছে মৃন্ময়-রোজা। পায়ের নিচে নরম ঘাস। এই গ্রীষ্মের রৌদ্রমাখা দুপুরবেলায় নদীর পাড় ধরে গাছের ছায়ায় হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছে মৃন্ময়ের। কখনো এভাবে একজন সাধারণ মানুষের মতো মুক্ত হাওয়ায় হাঁটে নি সে। জন্মের পর থেকেই সেলিব্রেটি ট্যাগ লেগে গিয়েছিলো তার গায়ে। বাবার থ্রো বিখ্যাত হয়ে বাবাকে হারানোর আগেই সেই ছোট্ট বয়সেই নিজের মেধায় জনপ্রিয় শিশু শিল্পীর ট্যাগ লেগেছিলো গায়ে৷ তাই আর কখনো অন্য আট দশটা সাধারণ বাচ্চার মতো বাঁচা হয়ে উঠে নি তার। চারপাশের জাঁকজমকতা আর কৃত্রিমতার ভীরে রোজার এই সাধারণতা আর প্রাণোবন্ততা অসাধারণ লাগে তার। হঠাৎই হাতে টান অনুভব করলো মৃন্ময়। পাশে তাকাতেই রোজার হাসিমুখটা চোখে পড়লো তার। একহাতে মৃন্ময়ের হাত তো অন্যহাতে পায়ের জুতোজোড়া ধরে রেখেছে সে। মৃন্ময়কে তাকাতে দেখেই হাসিমুখে বলে উঠলো রোজা,
— জুতো খুলুন মিষ্টার হিরো।
রোজার কথায় ভ্রু কুঁচকালো মৃন্ময়। অবাক চোখে বলে উঠলো,
— কেনো?
— নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে হাঁটবো। তারপর সেই ভেজা পা নিয়ে হাঁটবো এই নরম ঘাসে।৷ ব্যাপারটা দারুন না?
— হ্যা দারুন। বাট ওখানে তো কাঁদা মিস. রোজা। পা নোংরা হয়ে যাবে তো।
— আপনার পা’ দুটো কি জাদুঘরে তুলে রাখবেন নাকি? যে ময়লা হলে ঝামেলা। মিষ্টার হিরো?এই পৃথিবীটাই একটা ময়লা ভর্তি নোংরা জায়গা। এতো এতো ময়লার মাঝে থেকেও কি ময়লাকে ভয় পেলে চলে? চলুন না…ভালো লাগবে আপনার। এই নষ্ট পৃথিবীর ময়লা গায়ে মেখে একদিন এই মাটির ঘ্রানটা নিয়েই দেখুন না, দেখবেন কতোটা আপন লাগে সেই ঘ্রান।
মৃন্ময় মিষ্টি হাসলো। জুতো দুটো খুলে হাতে নিয়ে রোজার সাথে নেমে গেলো নদীর কাঁদাময় জলে। কিছুটা এগিয়েই ছোট ছোট জোড়া ঝিনুক কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো রোজা। শাড়ির গোলাপী আঁচল আর লম্বা বেনুনী উভয়ই ভাসছে নদীর জলে। কি অদ্ভুত দৃশ্য! মৃন্ময় নিজের অজান্তেই বেশ কিছু ছবি তুলে নিলো রোজার। টোল পড়া হাসির সাথে ভেসে যাওয়া আঁচল, কি মারাত্মক মায়াতেই না জড়াচ্ছে এই বাতাসটাকে, এই নদীটাকে আর সামনে দাঁড়ানো ওই সুদর্শন পুরুষটাকে। বেশ কিছু ঝিনুক মুঠোয় পুড়ে মৃন্ময়ের পাশে এসে দাঁড়ালো রোজা। হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠলো সে,,
— এই ঝুনুক গুলোতে রোদ জমাবো।
রোজার কথায় অবাক চোখে তাকালো মৃন্ময়। রোদও আবার জমানো যায় নাকি? কি আশ্চর্য! মৃন্ময়ের দৃষ্টিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে গভীর উৎসাহ নিয়ে বলে উঠলো সে,
— আচ্ছা রোদ ধরেছেন কখনো?
মৃন্ময় আগের থেকেও অবাক হয়ে বলে উঠলো,
— রোদ ধরা যায় বুঝি?
— হুম ধরা যায়। ( আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে) ওই দেখুন একটা নৌকা। চলুন না নৌকায় উঠি। আমার সাথে নৌকায় উঠলে আপনাকে আমি “এক মুঠো রোদ” উপহার দিবো নায়কসাহেব। কি উঠবেন?(ভ্রু নাচিয়ে)
মৃন্ময় হাসলো। ডানহাতে সিল্কি ঝাঁকড়া চুলগুলো ঝাঁকিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,
— অবশ্যই।
নৌকার পাটাতনে আধশোয়া হয়ে বসে আছে মৃন্ময়। চোখ দুটো আকাশে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কতদিন মনখুলে মুক্ত আকাশ দেখা হয় না তার। কতো দিন নিশ্বাসের স্বাদটা নেওয়া হয় না তার। কথাগুলো ভেবে চোখ বন্ধ করতেই পাশ থেকে ফিসফিস করে বলে উঠলো রোজা,
— এইযে শুনুন না? (চোখ মেলে তাকাতেই) নৌকায় না একটা চুলো আছে। মাঝিরা সেখানে রান্না করে খায়। চলুন না আজ আমরাও ওদের সাথে লাঞ্চ করি। গরম ভাতের সাথে আলু ভর্তা আর ঘি। সাথে নদী থেকে তোলা ফ্রেশ মাছের ভাজি। ইয়াম্মি!!
কথাটা বলেই চোখ বন্ধ করে খাবারটা কতো মজা হতে পারে তা ভেবে নিলো রোজা। মৃন্ময় অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ডায়েটের বাইরে একটা দানাও খায় না সে। কিন্তু বাচ্চাদের পাল্লায় পড়ে অলরেডিই অনেক কিছু খেয়ে ফেলেছে সে। তারওপর আবার খেতে চাইছে রোজা? তাও আবার মাঝিদের সাথে? তাছাড়া এসব খাবারে তো অভ্যস্তও নয় সে তবুও কেনো জানি মানা করতে পারলো না মৃন্ময়। রোজার মতো প্রাণখুলে বাঁচতে ইচ্ছে করছে তার। রোজাও হার মানার পাত্রী নয় সে মৃন্ময়কে রাজি করিয়েই ছেড়েছে। শুধু রাজি করিয়েই ক্ষান্ত হয় নি, মৃন্ময়কে টেনে নিয়ে বসিয়েছে চুলোর পাশে। প্রথমে বিরক্ত হলেও কিছুক্ষণ পরই ব্যাপারটায় বেশ মজা পেতে লাগলো মৃন্ময়। মাছ ভাজি করতে গিয়ে গরম তেলে মাছের লাফিয়ে উঠার সময় ভয় পেয়ে মৃন্ময়কে রোজার পেছনে গিয়ে লুকাতে দেখে রোজার সে কি হাসি। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাওয়ার মতো অবস্থা তার। রোজার সেই খিলখিল হাসি মৃন্ময়ের বুকটাকে ঝাঁঝড়া করে চলেছে ক্রমাগত। মৃন্ময়ের ইচ্ছে করছে মেয়েটিকে বলে, ” এভাবে হাসবেন না প্লিজ। বুকে ব্যাথা হয় আমার। ” কিন্তু বলাটা আর হয়ে ওঠে না। মৃন্ময় নীরব চোখে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে কিছু কথা নাহয় রয়ে যাক না বলা। রোজার হাসির তুড় থামলে খেতে বসে ওরা। যে মৃন্ময়ের চারদিকে বিলাসিতার চাঁদর আটা সে আজ মাঝিদের টিনের থালায় খাবার খাচ্ছে। কি পরম তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে। যেন এসবে কতো অভ্যস্ত সে। আচ্ছা? লোকটির অহংকার বলে কি কিছু নেই? এতো সহজে কিভাবে মিশে যায় সে? রোজা ভাবে আর অবাক হয়। তারসাথে বাড়ে কৌতূহল। মৃন্ময়কে জানার কৌতূহল। খাওয়া দাওয়া শেষ করে নৌকা থেকে যখন ওরা নামলো তখন সন্ধ্যা প্রায়। চারদিকে বিকেলের শেষ আলো ম্লান হয়ে বিদায় জানানোর অপেক্ষায়। নৌকা থেকে নামার পর থেকেই চুপ করে আছে রোজা। একটা বিষয় খুবই মুগ্ধ করেছে তাকে। নৌকা থেকে নামার সময় প্রত্যেকটি মাঝিকেই জড়িয়ে ধরেছে মৃন্ময়। কি নিঃসংকোচে তাদের ময়লা জামাগুলোর সাথে নিজের দামী পোষাক, দামী শরীরের পার্থক্য ঘুচিয়েছে সে। তারথেকেও আশ্চর্যের একটি বিষয় লক্ষ্য করছে রোজা। জড়িয়ে ধরার সময় প্রতিটি মাঝির পকেটেই খুব সাবধানের সাথে টাকা চালান করেছে সে। রোজা বুঝতে পারছে না মৃন্ময়ের টাকা দেওয়ার হলে এমনিই দিতে পারতো ওভাবে লুকিয়ে দিতে গেলো কেন? রোজাকে চুপচাপ দেখে আড়চোখে তাকালো মৃন্ময়। ঠান্ডা গলায় বলে উঠলো,
— আর ইউ ওকে মিস রোজা? হঠাৎ এতো চুপচাপ?
— আপনাকে একটা প্রশ্ন করি?
— হুম করুন।
— আচ্ছা? মাঝিদের তো আপনি এমনিও টাকা দিতে পারতেন তাহলে ওভাবে লু্কিয়ে টাকা দিতে গেলেন কেন ?
রোজার কথায় ভ্রু কুঁচকালো মৃন্ময়। তারপর স্মিত হেসে বলে উঠলো,
— লুকিয়ে আর হলো কোথায়? আপনি তো দেখেই ফেলেছেন মিস.রোজা।
— জার্নালিস্ট বলে কথা! জার্নালিস্টের চোখ ফাঁকি দেওয়া অতো সহজ নয় নায়কসাহেব! (ভাব নিয়ে)
মৃন্ময় হাসলো। এক আঙ্গুলে ভ্রু চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠলো সে,
— হুম। তাই তো দেখছি।
— আচ্ছা, এবার তো বলুন। কেন করলেন ওমন?
— আপনি উনাদেরকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন শুনেছিলাম। আমি অবাক হয়েছি এটা দেখে যে, যেখানে মানুষ দিনরাত টাকার পেছনে ছুটে সেখানে সারাদিনের ভাড়া হিসেবে লোকগুলো আপনার কাছ থেকে মাত্র একশ টাকা নিলো। তবু আপনার জোড়াজোড়িতে। উনারা চাইলেই কিন্তু অনেকটা টাকা রোজগার করতে পারতো আজ কিন্তু করেনি। বরং দারুন একটা যুক্তি দিয়েছে। তাদের যুক্তিমতে এটা কোনো যাত্রীবাহী নৌকা না। উনারা এই নৌকায় মাছ ধরে বেড়ান, আমরা না থাকলেও নৌকাটা নদীতেই থাকতো তাই টাকা দিতে হবে না। আর দু’জনের খাবার তো বেশি কিছু নয়। তাছাড়া আমরা আজকের দিনটির জন্য তাদের নৌকায় অতিথি। এই সাধারণ যুক্তিটাও আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমাদের গ্রাম বাংলায় এখনও এমন অতিথিপরায়ণ আর সহজ-সরল মানুষ থাকতে পারে ভাবতেই পারি নি আমি। কারণ যেখানে আমার বসবাস সেখানে এসব কিছু দেখি নি কখনো। সেখানে মানুষ নিজের স্বার্থ ছাড়া চোখ মেলেও তাকায় না।। ” বাঙালিরা অতিথিপরায়ণ ” কথাটা উনারা ধরে রেখেছেন বলে টাকাটা উনাদের প্রাপ্য। এমনিতে দিলে নিতেন না তাই ওভাবে দিয়েছি। হঠাৎ টাকাটা পেয়ে চোখে-মুখে যে চমকটা ফুটে উঠবে সেটা দেখতে পেলে বেশ হতো মিস.রোজা।
রোজা কোনো উত্তর দিলো না। চুপচাপ হাঁটছে সে।পায়ের নিচে নরম ঘাস। রোজার চোখ দুটো আটকে আছে মৃন্ময়ের পায়ে। খালি পায়ে হাঁটছে মৃন্ময়। জুতোগুলো নৌকোতেই ভুলে এসেছে সে। সবুজ ঘাসে মৃন্ময়ের সাদা মসৃণ পা’দুটোকে খুব মানিয়েছে।। পায়ের নখগুলো একদম সমান করে কাঁটা যেনো পায়ের নখগুলো কাঁটতে পারাটাও একধরনের শিল্প আর সেদিক বিচারে মৃন্ময় একজন নিখুঁত শিল্পী! রাস্তায় এসে থেমে গেলো দু’জনের পা। নীরবতা কাটিয়ে রোজায় বলে উঠলো প্রথম,
— তো? মিষ্টার হিরো এবার যাবেন কি করে? গাড়ি তো ফেলে রেখে এসেছেন?এবার?
— সোহেলকে ম্যাসেজ করেছি। গাড়ি পাঠাচ্ছে। আর মিনিট খানিক পরই পৌঁছে যাবে।
— ওহ! তাহলে তো ভালোই। (ঘড়ি দেখে নিয়ে) সন্ধ্যা তো হয়ে এলো আই থিংক আমার যাওয়া উচিত৷
— যাওয়া উচিত মানে? আপনি একা যাবেন নাকি? এই সন্ধ্যায় আপনার একা যাওয়া সেইভ নয় মিস.রোজা। একটু ওয়েট করুন আমি আপনাকে পৌঁছে দিবো।
— ইটস্ ওকে মিষ্টার হিরো। আই উইল ম্যানেজ। কতো মেয়েরা রিস্ক নিয়ে চলাচল করছে সেখানে আমি তো কিছুই না। আসছি!
কথাটা বলে হাঁটা দিতেই পেছন থেকে হাত চেপে ধরলো মৃন্ময়। রোজা তাকাতেই হাতটা ছেড়ে দিয়ে অপরাধী কন্ঠে বলে উঠলো,
— সরি! বাট একজন পুরুষ হিসেবে আপনাকে একা ছাড়াটা কাপুরুষতা হবে মিস. রোজা। আপনাকে পৌঁছে দেওয়াটা আমার দায়িত্ব।
— মিষ্টার হিরো? আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আপনি একজন সেলিব্রিটি। আমাকে আপনার পৌঁছে দেওয়াটা মানায় না৷ তবে চাইলে…আমাকে রিক্সা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারেন। আমি কিন্তু মাইন্ড করবো না।(মুচকি হেসে)
মৃন্ময়ও হাসলো। একসাথে হাঁটতে লাগলো আবারও৷ এতোক্ষণ সমস্যা না হলেও খালি পায়ে রাস্তায় হাঁটতে খুব সমস্যা হচ্ছে মৃন্ময়ের। ছোট ছোট পাথরগুলো পায়ে বিঁধছে খুব৷ রাস্তার মোড়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই রিক্সা পেয়ে গেলো রোজা। রিক্সায় উঠতেই মৃন্ময় ফোন বের করে ঝটপট রিক্সাওয়ালার কিছু ছবি তুলে নিলো। তারপর গম্ভীরমুখে রিক্সাওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো সে,
— এই যে মামা? ম্যাডামকে ঠিকঠাকভাবে বাসায় পৌঁছে দিবেন। নয়তো আপনার এই ছবি ডিরেক্ট পুলিশ স্টেশনে চলে যাবে, মনে থাকবে?
মৃন্ময়ের কাজে রিক্সাচালক যেনো ভরকে গেলেন। কিছুটা ভয় পাওয়া গলায় বলে উঠলেন,
— জি আইচ্ছা স্যার।
মৃন্ময়ের কাজে রোজা মুখ চেপে হাসছে। লোকটা এতো অদ্ভুত কেন বুঝে না সে। রিক্সা ছাড়ার আগে রিক্সা চালকের আগে এক হাজার টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিলো মৃন্ময়। রোজা চোখ বড় বড় করে বলে উঠলো,
— আরে আরে, এতো টাকা দিচ্ছেন কেন? পাগল নাকি আপনি?
মৃন্ময় মুচকি হেসে বললো,
— ব্যাপার না। আঁচলটা ঠিক করুন। চাকায় লেগে যাবে। আর একটা কথা….
রোজা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সামনের চুলগুলো পেছনে ঠেলে দিয়ে বলে উঠলো মৃন্ময়,
— থেংকিউ মিস রোজা ! মারাত্মক সুন্দর একটা দিন উপহার দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।
রোজা হাসলো। তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রিক্সা চলতে লাগলো আপন গতিতে। রোজা পেছন ফিরে তাকিয়ে আছে। ফাঁকা রাস্তায় সন্ধ্যার হালকা আলোয় সাদা শার্ট আর কালো জিন্সে পড়া এলোমেলো চুলের ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে। চারপাশের ঘাড় সবুজ গাছপালার ছায়া আর পিচ ঢালা রাস্তায় নগ্ন পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা কি আশ্চর্য সুন্দর!!
# চলবে..