#আঠারো_বছর_বয়স
#লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-৩
রুহির মতো ভীতু একটা মেয়ে যে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে পারে, সেটা ওর নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছেনা। আবার কতগুলো ছেলের মাঝে ও একা একটি মেয়ে। এখন যদি কোনো বিপদে পড়ে তাহলে কি হবে! রুহি ঘামতে শুরু করলো। বুঝতে পারছে, এভাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসাটা মোটেও ঠিক হয়নি। কিন্তু এটা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না রুহির।
‘নিশীথে যাইও কন্যা জোনাকবনে।’
গানটি জোরেশোরে গাইছে আবির। কালো হলেও গলায় সুর আছে বেশ। কিন্তু স্বভাবটাই বেপরোয়া, খারাপ। দীর্ঘ একঘন্টা যাবৎ হুজুরের বাড়িতে বসে আছে বিভোররা। বুঝতে পারছেনা এই হুজুর দিয়ে কি করাতে চায় আবিরের লোকেরা।
হুজুরের নাম রশিদ শেখ। তার দো’তলা বাড়িটি বেশ সুন্দর। কিন্তু এই গন্ডগ্রামে একটা হুজুরের এতো বড় বাড়ি কীভাবে থাকতে পারে সেটা ভেবে বিভোর অবাক। হুজুর কোনো একটা কাজে বাজারে গিয়েছে। রাত দশটায় বাজারে কোন কাজ থাকতে পারে ভেবে পাচ্ছেনা ও। আবিরের লোকদের কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে ওদের খুব পরিচিত এই হুজুর। ইতিমধ্যেই হুজুরের নাতি ওদেরকে চা-নাস্তা, কোকাকোলা জাতীয় পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। চায়ের সঙ্গে কোকাকোলাটা মিশিয়ে খাচ্ছে আবির। স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতন আবিরকে এভাবে খেতে দেখে বিভোর চেঁচিয়ে বলল,
‘ এটা আপনি কী করছেন? এভাবে খাওয়া হেলথের জন্য ভালো নয়।’
বিরক্ত হয়ে আবির বলল,
‘ তোর হেলথের গুল্লি মারি। বাঁচমুই ক’দিন, হেলথ দিয়া হইবো কি।’
‘ এটা ক্ষতিকর।’
‘ হায়াত-মউত সব আল্লাহর হাতে। তুই তোর বউয়ের খেয়াল রাখ।’
বিভোর রুহির দিকে তাকালো। মেয়েটা ঘুমিয়ে কাদা। বিভোরের কাঁধে মাথা রেখে এমনভাবে ঘুমুচ্ছে যেন সত্যিই রুহি বিভোরের হবু বউ। কতোটা বিশ্বাস করেছে মেয়েটা ওকে, ভেবেই বিস্মিত হলো বিভোর।
আবির একটা সিগারেট ধরালো। বিভোরের ইচ্ছে করছে ওকে লাথি মেরে ফেলে দিতে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও এটা করতে পারবেনা। কারণ রুহির না কোনো ক্ষতি করে দেয়। তাছাড়া নয়জনের সাথে ওর এই শক্তি কাজে আসবেনা।
আবির ওর উদ্দেশ্যে বলল,
‘ নাম কিরে তোর?’
‘ বিভোর।’
‘ এইডা আবার কেমন নাম!’
বিভোর হাসলো।
‘ তর বউয়ের নাম কী?’
বিভোর মনে করার চেষ্টা করলো। কিন্তু কিছুতেই রুহির নামটা মনে করতে পারলোনা। মানসপটে লালচে জবার কথা মনে হতেই রুহির মুখখানা ভেসে উঠলো। অগত্যা বলে ফেললো,
‘ রক্তজবা।’
আবিরের হাত থেকে সিগারেট পড়ে গেলো। সালেক, আপনসহ বাকিদের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো। চোয়াল ঝুলে পড়লো কয়েকজনের।
‘ রক্তজবা আবার কেমন নাম?’
বিভোর ওদের অবস্থা দেখে মনে মনে হাসলো। তারপর গম্ভীর গলায় বলল,
‘ জবা ফুলের মতো সুন্দরী বলেই রক্তজবা।’
‘ এই তুই আর তর বউ কোন গ্রহের প্রাণী? এমন নাম তো এই ত্রিশ বছরেও হুনিনাই। যত্তসব আলতো-ফালতু নাম।’
সালেক বলল,
‘ বেশি আদিক্লামি!’
বিভোর বিরক্ত হলো। হঠাৎই হুজুরের নাতিটা এসে জানালো হুজুর এসে গিয়েছে। অফিসঘরে অপেক্ষা করছে। ওদেরকে যেতে বলেছে।
আবির বললো,
‘ এই তোর বউরে উঠা ঘুম থেইকা।’
‘ কেন?’
‘ এইহানে কী তোরারে ঘুমাইতে নিয়া আসছি? কামে আইছি, উঠা!’
বিভোর রুহিকে আস্তে করে ডাকলো। কিন্তু ও উঠলো না। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে চিৎকার করে ডাকতেই রুহি ধরফরিয়ে উঠলো। ভয়ার্ত চোখে জিজ্ঞেস করলো,
‘ কী হয়েছে?’
আবিরই কথা বললো প্রথমে।
‘ তোমারে তো কামে নিয়া আইছি মামুনি। ঘুমাইতে না।’
কটমট করে বললো আবির। তারপর ওদেরকে নিয়ে হুজুরের অফিসঘরে চলে গেলো। বাড়ির মধ্যেই অফিস, বাহ! হোমিওপ্যাথি ডাক্তার হুজুর। শেলফগুলোতে ঔষধ সাজিয়ে রাখা, একপাশে বড় একটা টেবিল। তার সামনে দুটো চেয়ার রাখা। হুজুর আবিরের সাথে কথাবার্তা বলে জিজ্ঞেস করলো,
‘ এখানে পাত্র-পাত্রী কে?’
বিভোরের সাথে সাথে রুহিও চমকে উঠলো।
আবির বলল,
‘ ওই যে এরা। নিন শুরু করুন বিয়ে পড়ানো। এই তোরা চেয়ারে বস!’
বিভোর অবাক হয়ে বলল,
‘ পাত্র-পাত্রী মানে?’
‘ তোরাই তো কইলি তোরা হবু স্বামী-স্ত্রী। এখন তোদের বিয়া দিমু।’
‘ আর ইউ মেইড? কীসব বলছেন আপনি?’
‘ ওই বেশি ইংলিশ ছাড়স কেন? একদম চুপ কইরা যা কইছি তা কর।’
‘ আমি এটা করতে পারবোনা।’
‘ কেন পারবিনা?’
‘ আমি এভাবে কাউকে না জানিয়ে কিছু করতে পারবনা।’
আবির হলুদ দাঁতের ফাঁকে সিগারেট চাপালো। কর্কশ গলায় বলল,
‘ বিয়া তো করবিই তোরা। আমাগো সামনেও এর প্রমাণ হইয়া যাক, যে তুই সত্য! মানুষরে জানাইবার দরকারই বা কী!’
‘ এতবড় ঘটনা, আর আমি কাউকে জানাবোনা? আজব তো!’
‘ হুম!’
‘ আপনার কথা শুনতে আমি বাধ্য নই।’
‘ অবশ্যই বাধ্য।’
‘ আমাকে রাগালে এর ফল ভালো হবেনা।’
কথা কাটাকাটির একসময়ে বিভোরের সাথে আবির আর ওর লোকেরা ঝামেলা শুরু করলো। ধস্তাধস্তি, হাতাহাতির একপর্যায়ে হঠাৎ বিভোর রেগে ঘুসি দেয় আবিরের মুখে। নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরিয়ে যায় ওর। এসব দেখে আবিরের লোকেরা বিভোরকে ধরে ফেলে। এতগুলো লোকের সাথে কিছুতেই পেরে উঠছেনা ও। বিভোরের পেটে লাথি দিলে ব্যথায় কঁকিয়ে উঠে ও। হুজুর একপাশে দাঁড়িয়ে আছে অসহায় চোখে, কিছু করার নেই ওনার। আবিরের কর্মকাণ্ড ওনার জানা আছে। এই গন্ডগোল দেখে রুহি এক কোণায় দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপছে। সবকিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
আবির নাকে হাত চেপে ধরলো। হিংস্র গলায় বলল,
‘ এইডারে ইচ্ছামত মার। শালা আমার গায়ে হাত তোলার সাহস দেখায়।’
বিভোরকে সবাই মিলে মারতে থাকে। রুহি চিৎকার করে বলল,
‘ ওনাকে ছেড়ে দিন প্লিজ, মারবেন না।’
‘ এইডা সত্যিই তোর হবু জামাই? হাছা কইরা বল!’
রুহি কাঁদতে থাকে। কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছেনা। যদি “না” বলে তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে পারে। উপায়ন্তর না পেয়ে বলল,
‘ জ্বি!’
‘ তাইলে তোরে বিয়া করতে চায়না কেন?’
‘ জানিনা।’
আবির রেগে যায়। বিভোরকে একের পর এক আঘাত করেই যাচ্ছে সবাই মিলে। রুহি ভাবছে ওর জন্যই বিভোরের এই অবস্থা, ও সত্যিই পোড়াকপালি। বিভোরের ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে। রুহি এই দৃশ্য নিতে না পেরে আবিরের পায়ে ধরে বলল,
‘ ওনাকে মারবেন না। আপনি যা বলবেন তাই হবে!’
মেয়েটা কী পাগল হয়ে গেলো নাকি? ও একথা মানতে নারাজ। কিছুতেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে পারবেনা ও। বিভোর চেঁচিয়ে বলতে লাগলো ও বিয়ে করবেনা।
বিভোরের কথাশুনে আবির মুখচোখ খিঁচিয়ে বলল,
‘ এই ছেড়া তোরে বিয়া করবেনা, শর্ত অনুযায়ী তুই আজ রাইতে আমাদের! হা হা।’
রুহির হাত ধরে টানতে লাগলো আবির। রুহি যেতে চাচ্ছেনা। বিভোরের দিকে অসহায় চোখে তাকাচ্ছে আর কাঁদছে।
‘ তোরে আইজ ছাড়ছিনা সুন্দরী! হাত-পা নাড়াইয়া কোনোই লাভ নাই!’
বিভোর চমকে তাকালো। কিছুতেই মেয়েটির সাথে এমন অন্যায় হতে দেওয়া যাবেনা। কি করা যায় ভাবতে লাগলো, পালানোর পথও নেই। অতএব, কিছুই করা যাবেনা। অবশেষে বিভোরের অবস্থা দেখে রুহি নিজেই রাজি হয়ে যায় বিয়ে করতে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একপ্রকার হুমকি, ভয় দেখিয়ে রুহির সাথে বিভোরের সারাজীবন এক সুতোয় জুড়ে দিলো। রুহি কবুল বলার সময় কান্না করে দিলো এবং শব্দটা বলেই অজ্ঞান হয়ে গেলো। বিভোর ধরলোও না। ওর ভয়ংকর রাগ হচ্ছে, পুরো শরীর জুড়ে কিলবিল করছে আগুনের হলকা।
বিভোরের সব রাগ পড়লো গিয়ে রুহির উপর। ও কেন বেশি বাড়াবাড়ি করতে গেলো? এখন কীভাবে কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা।
‘ এই তোর বউ অজ্ঞান হইয়া গেছে দেখছিস না?’
বলেই আবির আর ওর দলের ছেলেরা উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো। তারপর বেরিয়ে গেলো। ওরা বেরিয়ে গেলে হুজুর লোকটার নাতনি, একটা মহিলা ধরাধরি করে রুহিকে একটা রুমে নিয়ে শুইয়ে দিয়ে চলে গেলো। বিভোরকেও আসতে হলো। পাঁচ মিনিট পরে ওর কাছে এসে হুজুরটি বলল,
‘ আজ রাতটা এখানেই থেকে যাও বাবা। মেয়েটা তো অসুস্থ হয়ে পড়েছে!’
বিভোর চুপ। হুজুর বিষন্ন ভঙ্গিতে বলল,
‘ ওরা অনেক খারাপ বাবা। এই এলাকায় ওরা যতবার আসে ততবারই কিছু না কিছু ঘটিয়ে যায়।’
বিভোর কিছুই বলছেনা দেখে হুজুর আবারও বলল,
‘ কিন্তু এখন আর কিছুই করার নাই, বিয়ে তো হয়েই গিয়েছে। এই মেয়েটাই এখন আপনার স্ত্রী!’
বিভোর রেগে হাতের কাছে থাকা একটা ফুলদানি মেঝেতে ছুঁড়ে মারলো। হুজুরের পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে বলল,
‘ এই বাক্যটা সেকেন্ড টাইম আর উচ্চারণ করবেন না।’
হুজুর লোকটা কোনোমতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিভোরের কাছ থেকে দূরে সরে গেলো। বিভোর ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। চোখমুখে হিংস্রতা বিদ্যমান। ওর এই রুপ দেখে হুজুর ভয়ে চুপসে গেলো। রুহির দিকে দৃষ্টি পড়তেই তাড়াহুড়ো করে বোতলের পানি ছিঁটিয়ে দিলো ওর চোখেমুখে।
কিন্তু রুহির সেন্স ফিরলো না। এটা দেখে না চাইতেও বিভোর এসে ওকে ধরলো। বোতলের সবটা পানি ছিঁটিয়ে দিলো কিন্তু সেন্স আসলো না। বিভোর ওর ব্যাকপ্যাক খুঁজতে লাগলো। সোফার উপর পড়ে আছে। ব্যাকপ্যাক খুলে ডাক্তারির প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম বের করে পালস চেক করলো, চোখগুলো টেনে দেখলো। গায়ে জ্বর। অতিরিক্ত স্ট্রেসে এমন হয়েছে, তাছাড়া শরীরও বেশ দুর্বল। মনে হয় মেয়েটা কিছু খায়নি।
মুহূর্তেই রাগ উবে গেলো। আসলে মেয়েটা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলো। মনে হতেই বিয়েটিয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের মাথা ঠান্ডা করলো বিভোর। হুজুরকে পানি আনতে বললে ওনি মাঝারি আকারের একটা বালতি ভর্তি করে পানি নিয়ে আসেন। বিভোর রুহিকে ঠিকঠাক করে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মাথায় পানি দিতে লাগলো। এর বেশিকিছু ওর মাথায় আসছিলোনা। হুজুর নিজের আয়ুবের্দিক ঔষধ নিয়ে আসলো। কিসব শেকড়-পাতা বেটে ওটার রস বাটিতে করে বিভোরের হাতে দিয়ে বললো,
‘ মেয়েটাকে ওটা খাইয়ে দাও!’
‘ এসব কী?’
‘ ঔষধ বাবা।’
‘ এসব কোনো কাজে আসবেনা, রোগীর জন্য এটা বেশ ক্ষতিকর হতে পারে।’
‘ কোনো ভয় নেই বাবা।’
‘ দেখুন, আমি একজন ডাক্তার। আপনি বললেই আমি বোকার মতো এটা মেয়েটাকে খাওয়াতে পারবোনা।’
হুজুর অবাক হয়ে বলল,
‘ আপনি ডাক্তার?’
‘ হুম।’
‘ তাহলে আপনিই কিছু করুন।’
‘ কী করবো? এতো রাতে এখানে তো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বা ঔষধ কিছুই পাওয়া যাবেনা। তাই চাইছি আপাতত জ্বরটা কমুক!’
হুজুর চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
‘ গ্রামগঞ্জে এটাই সমস্যা।’
‘ প্যারাসিটামল পাওয়া যাবে?’
‘ না। তবে আমার বানানো ঔষধটাও খাওয়াইতে পারেন, ওটা প্যারাসিটামলের চেয়ে বেশি কাজে দেবে।’
‘ এর কোনো শিওরিটি আছে? যদি হিতে বিপরীত হয়? আপনি তখন কী করবেন?’
‘ এটা ১০০% কাজে দিবে। গ্রামের মানুষদের অসুখ বিসুখ হলে তো আমিই ঔষধ দিই। কই কখনো তো খারাপ কিছু হয়নাই!’
হুজুরের কথাগুলো বিভোরের অসহ্য লাগছে। পেশেন্টের কাছে উচ্চ গলায় কথা বলা ঠিক না, এটা মানুষ বুঝতে চায়না কেন? কিন্তু এখন লোকটার কথা অনুযায়ী মেয়েটাকে কি ঘাসপাতার ঔষধটা খাইয়ে দেখবে? জ্বর তো ক্রমশই বাড়ছে! একটা চান্স নিয়ে দেখাই যাক। কিন্তু হুজুরের সামনে ওর অস্বস্তি হচ্ছে, সেটা বুঝতে পেরেই হুজুর ওর সামনে বাটিটা রেখে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
চামচে একটু ঔষধ নিয়ে খুব সাবধানে রুহিকে খাইয়ে দিলো বিভোর। ভেজা চুলগুলো গামছা দিয়ে মুছে দিলো। বেশ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে রুহিকে। কেমন একটা ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছে আশেপাশে। রুহির মুখটা নিষ্পাপ, চোখের উপরে কালো তিলটা নজর কাড়ে বারবার। সারারাত এই চেহারার দিকে তাকিয়ে যে-কেউ কাটিয়ে দিতে পারবে, একটুও ক্লান্তি আসবেনা। এই মেয়েটা নাকি বিভোরের বউ! ও মানবে নাকি কোনোদিন?
শেষ রাতের দিকে বিভোরের ঘুমটা ভেঙে গেলো। একটু দূরেই বিছানার উপর বসে রুহি কাঁদছে। কান্নার শব্দটা ওর কানে নুপূরের রিনঝিন ধ্বনির ন্যায় লাগছে। মেয়েরা কাঁদলে কি এতো সুন্দর শব্দ হয়? জানতো না তো কোনোদিন।
‘ কাঁদছো কেন রক্তজবা?’
কান্নাভেজা গলায় রুহি বলল,
‘ আমি বাড়ি যাবো।’
বিভোরের অক্ষিকোটর থেকে ওর চোখদুটো বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। এখনো ভোর হয়নি, তাছাড়া মেয়েটা বাড়ি থেকে পালিয়েছে একদিনও হয়নি এর মধ্যেই একদম সোজা হয়ে গিয়েছে। মেয়েটা বাড়ি ফিরে গেলে তো ভালোই হয়। কিন্তু.. এটা কি ঠিক হবে? উচিৎ-অনুচিত বোধটা কাজ করছেনা কেন? কি করবে বিভোর এবার! মাতাল ছেলের সাথে যারা একটা মেয়ের বিয়ে দিতে চায়, সেই লোকগুলো নিশ্চয় ভালো হবেনা! বোধহয় মেয়েটার ফিরেই যাওয়া উচিৎ।
গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। সবাই গল্প পড়েন, কিন্তু মন্তব্য করেননা। আমিতো সময় ব্যয় করে লিখি, আপনারা মন্তব্য জানালে ভালো লাগে। কিন্তু ভালো লিখতে পারিনা বলেই হয়তো মন্তব্য পাইনা। ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
চলবে…ইনশাআল্লাহ!