কলমে: নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি
( ১১)
পুষ্পিতার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা! ফর্সা মুখবিবর ভ*য়ে,আত*ঙ্কে আরও সাদা হয়ে এসেছে। বুক কাঁপছে! দ্রিম দ্রিম শব্দটাও স্পষ্ট। এই মুহুর্তে ও দাঁড়িয়ে আছে নুহাদের সদর দরজার সামনে। দেয়ালে পিঠ ঠেসে রাখা। হাঁপিয়ে গিয়েছে দৌড়ে আসায়৷ নিঃশ্বাসের দুঃসহ ধারা!
তীব্রকে দেখে ডানে-বামে না চেয়েই উল্কার বেগে পালিয়ে এসেছে ও। আশ্রয়স্থলে এসে লুকিয়েছে। অবচেতনায় ভাবল,
“ হয়ত আর ভয় নেই এখন!”
অথচ বোকা মেয়ে জানেই না,এই ঘাঁটির খোঁজ আরও আগেই নখদর্পণে রেখে দিয়েছে কেউ একজন।
কাঁধের ওপর হঠাৎ একটা উষ্ণ হাতের পতন হয়। ওমনি দুরুদুরু বক্ষঃস্থল ছ্যাত করে উঠল পুষ্পিতার। অর্ধসজ্ঞান ধরেই বসল ভিন্ন কারো কথা। পুরোনো বিপদের নব্য নব্য আঁচ।
গুন্ডাটা কী এখানেও চলে এসেছে?
পুষ্পিতা ভ*য়ে চেঁচিয়ে ওঠে। ত্রস্ত ঘাড় ফিরিয়ে চায়। নুহার পিলে চমকে উঠল তার চিৎকারে। বুকে হাত দিয়ে এক পা পিছিয়ে গেল ত্রাসে। বাজারের ব্যাগটা খসে পড়তে পড়তেও কোনও রকম সামলাল।
বিস্ময়ে একাকার হয়ে বলল,
“ কী হোলো কী?”
পুষ্পিতার বড় বড় অক্ষিকূট ওকে দেখে নিভে আসে। চোখ বুজে মাথা নামিয়ে শ্বাস নেয়।
স্বস্তি পেয়ে বলে,
“ ওহ তুই! ভ*য় পেয়ে গেছিলাম। “
নুহা উদ্বিগ্ন,
“ ভয় কেন পেয়েছিস? আর এভাবে আমাকে রেখে, না বলে চলে এলি কেন? কতক্ষণ তোকে খুঁজেছি জানিস?”
পুষ্পিতা চিবুক নামাল। নিম্নাষ্ঠ চেপে চুপ করে রইল। ভীষণ রকম দ্বিধাদ্বন্দ্বে তলিয়ে গেল মস্তক।
নুহাকে সবটা বলবে কি না! বলা ঠিক হবে কী না!
এমনিতেই আয়েশা রাহমান, এ বিষয়ে আগে থেকে নেতিবাচক ভেবে বসে আছেন। সেদিনের সব কথাই সে পরিষ্কার শুনেছিল। প্রতিটা কথায় বিট্টু মাস্তানের প্রতি ভয়। মেয়েকে নিয়ে আশঙ্কা। আর সেই ভয়ের অর্ধেকটাই যখন ফলছে, শুধু শুধু নুহাকে জড়ানো কী উচিত হবে?
নুহা তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে। পুষ্পিতার চেহারার একটা অংশও বাদ যায়নি তার নিরীক্ষণ থেকে। মেয়েটার প্রতিটি দৃষ্টি সে চেনে। প্রতিটি নিশ্চুপতাকে জানে। ছোট বেলার বন্ধুকে পরতে পরতে না চিনলে,তা কেমন বন্ধুত্ব!
পুষ্পিতা বারবার ঢোক গিলছে। ফ্যাসফ্যাসে শ্বাসের গতি। আদল জুড়ে গ্রাসের ছাপ। কিছু নিয়ে ভয় পেয়েছে পরিচ্ছন্ন বোঝা যায়। জ্বিভে ঠোঁট ভিজিয়ে কথা খুঁজতে চাইছে। নুহার হাসি পেলো।
পুরু কন্ঠে বলল,
“ একদম কথা লুকানোর চেষ্টা করিস না পুষ্পিতা। তুই বানিয়ে বানিয়ে কিছু একটা বলে দিলেই বিশ্বাস করে নেব,এত বোকা আমি নই।”
পুষ্পিতা হা করতে গেলেই হুশিয়ারি দিলো,
“ উহু! মিথ্যে তো একেবারেই বলিস না। যেটা পারিস না সেটা জোর করে,করার তো কোনও দরকার নেই। তোর মুখটাই আমার কাছে উত্তর হিসেবে যথেষ্ট। চোখ গুলোও স্পষ্ট বলে দিচ্ছে, কিছু একটা ঘটেছে,ঘটেছেই। ভালোয় ভালোয় বলবি, নাকি আমি রেগে কথা বন্ধ করে দেব? ”
অসহায় নেত্রে চাইল পুষ্পিতা। নূহার দৃঢ়তার ভিড়ে নিজের মনঃদ্বিধা আরো অধিক নিঃসহায় হয়ে পড়ছে।
আচমকা নুহা নিবিড় ভাবে গালে হাত রাখে। মোলায়েম কণ্ঠে শুধায়,
“ কী হয়েছে আমাকে বল! এত ভয় পেয়ে আছিস কেন?কোনও ছেলে কিছু বলেছে?”
পুষ্পিতা দুদিকে মাথা নাড়ে৷ কিছুক্ষণ চুপ থেকে জানায়,
“ ওই গুন্ডা টা এখানে অবধি চলে এসেছে।”
নুহা বোঝেনি। ভ্রু কুঁচকে বলল,
“ গুন্ডা? কোন গুন…
পরপর নিজেই টানটান হয়ে তাকাল। কণ্ঠ শৃঙ্গ তুলে বলল ,
“ বিট্টু মাস্তান?”
পুষ্পিতার আনন জুড়ে সংকীর্ণতার প্রতাপ। উত্তর দিতে গিয়ে প্রকট হলো সেটা। ওপর নিচ মাথা ঝাঁকাতেই, মাথায় যেন বাঁজ পড়ল নুহার। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল কিয়ৎক্ষণ।
ওর বিলম্ব হয় ধাতস্থ হতে। হূলস্থুল বাঁধিয়ে বলে,
“ তুই,তুই কীভাবে জানলি? কথা হয়েছে? তোকে দেখেছে? কিছু বলেছে কী? আমি,আমিই বা কোথায় ম*রে গেছিলাম। হায় আল্লাহ!”
সে হাহাকার করে মাথায় হাত দিলো। অস্থির ভঙিতে এদিক- ওদিক গেল।
নুহার উৎকণ্ঠা দেখে পুষ্পিতার ভয়*ডর শেষ। দীঘল পল্লব ঝাপটে, বোকা বোকা নজরে চেয়ে রইল ওর দিক।
নুহা বাজারের ব্যাগটা কেমন অশান্ত ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখে। ওড়না দিয়ে,মুখে বাতাস করতে করতে পায়চারি শুরু করে। তার অবস্থা দেখে,পুষ্পিতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা নাড়ল দুদিক।
নুহা ওর মতো নয়। ধীরস্থির,ভীতু! বোকাসোকা! বরং চালাক, স্পষ্টবাদী,যা বলে গুছিয়ে। সে মেয়ে এত ভয় পেয়ে গেল?
পুষ্পিতার আরেকবার মনে হোলো,বিট্টু আসলেই যে সে মাস্তান নয়। নাহলে, যে নুহা কোনও দিন তাকে দেখেনি সেও এত ঘাবড়ে যাবে কেন?
আর অমন ভয়া*নক এক লোকের খপ্পর থেকে সে একবার অক্ষত ভাবে ফিরেছে। নির্ঘাত ওইদিন আল্লাহর অশেষ রহমতের সাথে সাথে, ওর চৈতন্যও জেগেছিল। কিন্তু সেই দূর্লভ চৈতন্য তো সব সময় হবে না। তাই জেনেবুঝে, দ্বিতীয় বার অমন ভীতিপ্রদ মানুষের ছায়াও সে মাড়াতে চায়না। কখনওই না।
পুষ্পিতা, নুহার অবস্থা দেখল কিছুক্ষণ। ওকে শান্ত করতে বলল,
“ তুই এত উত্তেজিত হোস না। গুন্ডাটা এসেছিল ঠিকই, তবে কিছু করার আগেই আমি ওখান থেকে পালিয়ে এসেছি।”
নুহা শুনল কী না বোঝা যায়নি। তার পদযূগল অস্থির।
কিন্তু উত্তেজনার কারণ ভিন্ন! সে যে মায়ের কথা অমান্য করে বাইরে পা রেখেছিল,বিপদ কী এখানেই বাড়তে সুযোগ পেয়েছে? এখন কী হবে! অজান্তেই পুষ্পিতার ক্ষ*তি করে ফেলল না তো!
সত্যি সত্যি যদি বিট্টু মাস্তান এখানে আসে,পুষ্পিতার কাছেই আসে,তবে যে সবটার অন্য মানে দাঁড়ায়। না, সে নিঃসন্দেহে পুষ্পিতাকে বিশ্বাস করে। নিজের চেয়েও বেশি করে । বিট্টুর সাথে ওর সম্পর্ক এই কুৎসিত ভাবনা সে কস্মিনকালেও ভাবেনি। এখনও ভাবছে না।
কিন্তু মূল ভ*য়টা অন্য কোথাও। ছেলেটা কোনও ভাবে পুষ্পিতার পেছনে পড়েনি তো? ভাবতেই নুহার মাথা ফাঁকা হয়ে আসে। তৎপর পায়চারি থেমে যায়। মায়া মায়া পূর্ণ চোখদুটো নিক্ষেপ হয় পুষ্পিতার মলিন মুখে।
এই মেয়েটা কী আদৌ একটু স্বস্তি পাবে না জীবনে? খচ্চর খালুর জ্বা*লা থেকে বেঁচে এখানে এসেছে,অথচ ঠিক একটা না একটা লেজ জুটে গেল পেছনে!
নুহা ঘনঘন মাথা নাড়ে। না না,যা ভাবছে, যেরকম ভাবছে সব যেন মিথ্যে হয়৷
হঠাৎ হুশ ফিরল ওর। ভাবল, সে নিজেই যদি এমন উদ্বীগ্নতা দেখায়,পুষ্পিতা কী করবে? মেয়েটা যে আরও কয়েকশ গুণ বেশি ভীতু!
নুহা ভেতরের সকল অস্থিরতা, নিমিষে চাপা দিয়ে ফেলে। কাছে এসে শান্ত-সহজ ভাবে বলে,
“ আচ্ছা কী হয়েছিল সবটা বল তো শুনি। দাঁড়ি,কমা কিচ্ছু বাদ দিবি না কিন্তু ।”
পুষ্পিতা বাধ্য মেয়ের মতোন পুরো ঘটনার বিবৃতি দেয়। তীব্রর কাছে এসে দাঁড়ানো, ধমকে কিছু বলতে চাওয়া,আর শেষে পালিয়ে আসা ওর। সব বলে থামল ও। দম ফেলল।
চিন্তিত কন্ঠে বলল,
“ আমার মনে হয় মণি পুলিশে জিডি করেছেন। আর মাস্তানটা সেজন্য ক্ষেপে গেছে আমার ওপর। ঝাঁঝ মেটাতে আবার তুলে নিতে এসেছে আমাকে। গতবার এই হুমকিটাই তো দিয়েছিল ।”
নুহা সবটা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। পুষ্পিতার কথার পিঠে জবাব দিলো না৷ দাঁত দিয়ে ঠোঁট কা*মড়ে,সে গভীর ভাবনায় মগ্ন। এখন তো আশি-ভাগ মনে হচ্ছে ওর ধারণাই সঠিক। বখাটেটা নির্ঘাত উল্টোপাল্টা ছক কষছে মনে।
আর যাই হোক, তুলে নিতে এলে কেউ পালাতে সুযোগ দেয় না। তাছাড়া,পুষ্পিতাকে যেখানে দাঁড় করিয়ে রেখে গেছিল, সে জায়গা থেকে এই দালানের দুরুত্ব কয়েক কদম। ও বাড়ির ভেতর ঢুকলে তো,মাস্তানটার দেখার কথা।
নুহা এবার একশ শতাংশ নিশ্চিত, বিট্টু দেখেছেও। তাহলেও তো থেমে থাকার কথা নয়। দাপুটে কোনও মাস্তান মেয়ে তুলতে এলে এমন সময় নষ্ট করবে কী?
মাথার ভেতর দপদপ করে উঠল নুহার। শিরা গুলোয় কেমন ব্য*থা ধরে গেল। ইচ্ছে করল নিজের চুল খাম*চে ধরে ছিড়তে। হা-হুতাশ করল মনে মনে,
“ পুষ্পিতারে,এ তুই কার নজরে পড়লি!”
কিন্তু পারল না!
তার স্তব্ধ ভাবমূর্তি দেখে হৃৎকম্প আকাশচুম্বী পুষ্পিতার। ফ্যাকাশে চেহারায় র*ক্তসঞ্চালন কমছে। শঙ্কায় ভেজা কণ্ঠে বলল,
“ তুইও ভ*য় পেয়েছিস তাইনা?”
নুহা চটক কাটার মতোন চাইল। অভিশ*ঙ্কা চটজলদি গিলে ফেলে বলল,
“ হু? হ্যাঁ পাব না? দুপুর একটা ছাড়িয়ে গেল, আমার এখনও রান্না হোলো না। ওদিকে বুয়াকেও পাঁকামী করে কিছু রাঁধতে দেইনি। আম্মুর আজ হাফ ডে। ফিরে খাবে কী!”
ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল পুষ্পিতা। হতভম্ব হয়ে বলল,
“ রান্না? এখানে রান্না এলো কোত্থেকে?”
“ কোত্থেকে মানে? তোকে বলিনি আজ দুপুরে আমি ইটালিয়ান ডিশ রান্না করব? আম্মু ফিরে যদি দেখে আমি কিছুই করিনি তবে তো খুব রেগে যাবে। আমি এমনিতেই ওনাকে ভয় পাই। আম্মুর বকাকে তো আরো ভ*য়। তাই ভাবছিলাম কী থেকে কী করা যায়!”
পুষ্পিতা বিহ্বলিত আওড়াল,
“ তুই এতক্ষণ এই নিয়ে ভাবছিলি?”
নুহা কপাল গোটায়,
“ হ্যাঁ। তো আর কী নিয়ে ভাবব?”
“ আমি এতসময় যা যা বললাম, সেসব?”
নুহা নিরুদ্বেগের নাটক করে বলল,
“ ওসব কী ভ*য় পাওয়ার মতোন কথা?”
“ ভ*য় পাওয়ার মতোন কথা না?”
নুহা কাঁধ উঁচিয়ে বলল,
“ মোটেই না। পৃথিবীতে এর চেয়েও অনেক ইন্টারেস্টিং বিষয় আছে ভয় পাওয়ার জন্য। মনে কর তুই চাইলেই আমি লিপস্টিক আর কাজল মেখে,আলিফ লায়লার ভূত সেজে তোর রুমে ঢুকলাম,আর তুই চেঁচাতে গিয়ে টের পেলি তোর গলার লিগামেন্ট ছিড়ে গেছে। কিংবা রাতে তুই ওয়াশরুমে গেলি আর আমি লাইট বন্ধ করে বাইরে থেকে দরজা আটকে দিলাম, তুই অন্ধকারে হার্ট অ্যাটাক করে ফেললি। এসব হচ্ছে আসল ভয়। কিন্তু এই ব্যাপারে তো তুই সম্পূর্ণ সুস্থ।
অ্যাটাক ফ্যাটাক কিছুই হয়নি।
এখানেই প্রমাণিত, এ ইস্যুটা আদৌ ভয় পাওয়ার কোনও যোগ্যতাই রাখেনা। ”
পুষ্পিতা হতবুদ্ধি হয়ে শুনে গেল। একেকটা লজিকে মাথা ঘুরছে ওর। একটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে নুহার প্রতিক্রিয়া এরকম?
মুখ কালো করে বলল,
“ তুই বুঝতে পারছিস না ব্যাপারটা! ওই গুন্ডাটা কত সাংঘাতিক আমি জানি। সে যত সহজে জ*বাই করবে বলে দেয়,অত সহজে তো আমি জ*বাই কথাটা খাতাতেও লিখতে পারি না।”
“ আরে পাগল, তুই বেশি বেশি ভাবছিস! হতে পারে ও এমনি এসেছিল। ওরাতো এখানে প্রায়ই আসে শুনেছি। এলাকার লোকজনের মুখে মুখে এদের নাম। আর হয়ত এখানে এসে, সে তোকে দেখে হালচাল জিজ্ঞেস করতে গিয়েছে। বখাটে হলে কী হবে ভেতর ভেতর এরা সমাজ সেবক হয়।”
পুষ্পিতা নাক-চোখ কুঁচকে বলল,
“ তোর মাথাটা গেছে নুহা! ছাড় এসব, ভাগ্যে যা আছে হবে। চল ভেতরে চল।”
“ আহা তুই অহেতুক এত ভাবছিস! আচ্ছা বেশ,মেনে নিলাম ও তোকে তুলে নিতেই এসেছিল। এখন নিয়ে তো যায়নি। আর যেতেও পারবে না। কারণ আমরা তো পরশুদিন ঢাকা থেকে চলে যাব। তখন ও তোকে খুঁজে পাবে কী করে? তার আধিপত্য ঢাকার মূল শহরে। ওরকম প্রত্যন্ত জায়গায় না। সবচেয়ে বড় কথা, বখাটেদের কত কাজ জানিস? চাঁদাবাজি করা ,মারপিট করা, মেয়ে দেখলে পেছনে লাগা এত কিছু রেখে সে নিশ্চয়ই তোকে তুলে আনতে গাজীপুর যাবে না!”
নুহা হড়বড়ে ভঙিতে বলে থামল। একটা সুবিশাল শ্বাস টানল। ঠোঁটে ঝোলাল মেকি নিশ্চিন্ত হাসির সাইনবোর্ড।
পুষ্পিতা ভাবনায় পড়েছে। খুব মন দিয়ে ভাবার পর,আবিষ্কার করল সব কথা ঠিক। এখান থেকে চলে গেলে তো আর কোনও সমস্যাই থাকল না। তৎক্ষনাৎ নিভু দৃষ্টিযূগল তার চকচকিয়ে ওঠে।
মৃদূ হেসে বলে “ তাইত! আচ্ছা ঠিক আছে।”
কিন্তু হাসিটার দিকে মমতা নিয়ে চেয়ে রইল নুহা। চাউনীতে তার এক পৃথিবী দুঃখ।
খুব করে প্রার্থনা করল,
“ তার অনুমান ভুল হোক। ওরকম একটা মাস্তান পেছনে পড়লে,পুষ্পিতার জীবন শেষ হতে আর কাউকে দরকার হবে না।”
*****
কিছুদিন কেটেছে। নৈসর্গে তখন পুরোদস্তুর জৈষ্ঠ্যের হুড়োহুড়ি। সূর্য মেতেছে উগ্রতায়।
প্রচন্ড খরতাপেও,আ*গুন রূপী সৌন্দর্যে তার দারুণ গর*ম। জ্ব*লন্ত রঙে,জ্বল*ছে পৃথিবী।
সেদিন হঠাৎ করেই, নুহাদের বিল্ডিং-য়ের সামনে হাজির হলো শাফিন। তীব্রর ন্যায় মুখ ঢেকে নয়, তার নিজস্ব,সাবলীল রূপে।
সে গেটের কাছে এসে দাঁড়ায়। এক যোগে চেয়ে রইল তিন তলার বারান্দার দিকে। যেই বাসাটা
সেদিন তীব্র দেখিয়েছে ওদের। ওখানেই তো পুষ্পিতা থাকে!
বারান্দার দরজা বন্ধ। জানলার কাচগুলোও টানা। ভেতরের কোনও কিছুই ভালো করে বোঝার উপায় নেই। শাফিন ক্রমাগত উঁকিঝুঁকি মা*রছে। ঘাড় ঘুরছে দিগবিদিক।
পেছন থেকে ওকে দেখেই দারোয়ান ছুটে এলেন। খ্যাক করে বললেন,
“ এই ছেলে, এখানে কী চাই?”
শাফিন ফিরে চাইল। বিরক্ত হয়ে বলল,
“ কী হয়েছে?”
ঘাবড়ে খেলেন তিনি। তৎপর সালাম ঠুকে বললেন,
“ ভাই আপনি! একদম বুঝতে পারিনি। মাফ করবেন ভাই।”
সে কিছু বলেনি। কিন্তু বারবার তাকাচ্ছে তিন তলার দিকে। দারোয়ান লক্ষ্য করলেন। রয়ে সয়ে শুধালেন,
“ ইয়ে, ভাই কী বাসা খুঁজছেন? ভাড়া নেবেন না কি? না মানে এই বাড়ির সব গুলো ফ্ল্যাট সুন্দর তো তাই বললাম। আবার তিনতলা খালিও আছে এখন।”
শাফিন শশব্যস্ত তাকাল।
“ তিনতলা খালি হয়েছে কেন? ওখানে না লোক থাকে?”
“ জি থাকতো । কিন্তু কদিন হলো বাসা ছেড়ে চলে গিয়েছে। ”
শাফিন চমকে তাকায়। ধৈর্য্যহীন আওড়ায়,
“ চলে গিয়েছে, কোথায় গিয়েছে? ”
“ তা জানিনা। তবে শহরের বাইরে। যে মহিলা বাসা নিয়ে থাকতেন, ওনার ব্যাংক ট্রান্সফার হয়েছে সেখানে । এইতো পরশুদিনই, সব গোছগাছ করে শিফট হয়ে গেল।”
শাফিনের মুখে মেঘ ছড়াল। কুচকুচে কালো রঙ ছেঁয়ে গেল আনাচে-কানাচে।
ব্যথিত দৃষ্টিযূগলে আরেকবার দেখে নিলো বারান্দাটা। ছোট করে বলল,
“ ও।”
*****
ঘরের সামনে আসতেই, ভকভকে সিগারেটের গন্ধে
গা গুলিয়ে উঠল লুৎফার। তৎপর শাড়ির আঁচল চেপে ধরলেন নাকে। দীর্ঘ পায়ে গিয়েই চাপানো দোর ঠেললেন দুহাতে।
“ কী রে বিট্টু, ঘ….”
বলতে বলতে মেঝের দিক চোখ পড়ল। সহসা আঁ*তকে উঠলেন তিনি।
বিছানার কাছ ঘেঁষে, ফ্লোরের সবটুকু স্থানে আধপো*ড়া সিগারেট। এদিক-সেদিক ছড়ানো-ছেটানো ছাই। এস্ট্রেটা ভর্তি হয়ে উলটে পড়ে আছে পাশে।
লুৎফা আর্তনা*দ করে বললেন,
“ এ কী! ঘরের কী অবস্থা করেছিস!”
মায়ের নিনাদ তীব্রর কানে গেল না বোধ হয়। আধশোয়া থেকে এক ফোঁটা নড়ল-চড়ল না। একবার তাকালো না পর্যন্ত।
মুখায়বে অগোছালো চিহ্ন। গায়ের স্যান্ডো গেঞ্জি থেকে পেশীবহুল হাত সদর্পে বেরিয়ে আছে। সোনালী চুল বড় দ্বিধা নিয়ে দাঁড়িয়ে। শান্ত,লাল চক্ষুকোটরে অন্যরকম উদাসীনতা!
লুৎফা চটজলদি ভেতরে ঢুকলেন। সারা ঘরে চোখ বুলিয়ে হতাশ শ্বাস ফেললেন। পরপর উঁচু কন্ঠে হাঁক ছুড়লেন কাজের মেয়েটিকে।
মেয়েটি সেকেন্ডে ছুটে আসে। ধোঁয়ার গন্ধে শ্বাস আটকে আসে তারও। লুৎফা নাক-মুখ চেপে রেখেই বললেন,
“ তাড়াতাড়ি করে ঘরটা পরিষ্কার করে দে তো!”
মেয়েটি ঘাড় হেলায়। যেতে নিলেই, তীব্র মুখ খুলল এবার। আটকে দিয়ে বলল,
“ না। আমার এখনও খাওয়া হয়নি। শেষ হলে ডেকে নেব। তুই যা।”
লুৎফা হতবাক হয়ে বললেন,
“ কী বলছিস কী? একবারে এত সিগারেট কেউ খায়? শরীরের দিকে একটু তাকাবি তো?”
“ সময় নেই। আপাতত খুব চিন্তায় আছি।”
লুৎফা উদগ্রীব হয়ে বললেন,
“ কী রকম চিন্তা? সেই ক্লাস নাইন থেকে সিগারেট ধরেছিস। এখন খাচ্ছিস একেবারে নেশাখোরের মতন। হৃদয়টাকে ছাই না বানিয়ে ছাড়বি না তাইনা? একবারও ভাবছিস না যে, তোর কিছু হলে মায়ের কী হবে?”
তীব্র নিরুত্তর বসে রয়। কোথাও একটা চেয়ে থেকে সিগারেটে ঠোঁট বসায়। লুৎফা মর্মে মর্মে আশাহত হলেন।
এই সিগারেট নিয়ে এক সময় জামশেদের কী মা*রটাই না খেয়েছিল ছেলেটা! অথচ তাও ছাড়ানো গেল না। ভদ্রলোক ক্লান্ত হয়ে একটা সময় বকাবকি করাও ছেড়ে দিলেন। আর এখন,ছেলে কাউকেই মানে না। কী সুন্দর, সাবলীল ভাবে মায়ের সামনে ধোঁয়া ছাড়ছে! জড়োতা নেই,সঙ্কোচ নেই,একটুখানি সম্মানও নেই সম্পর্কের প্রতি। এতটাও বেপরোয়া কেউ হয়?
“ এখন কি কথার জবাবও দিবি না?”
তীব্র ঠান্ডা স্বর,
“ খুব চিন্তায় আছি বললাম না? ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছি। এই মুহূর্তে আমাকে ডিস্টার্ব করা তোমার উচিত হচ্ছে না মা।”
ছেলের শীতল অবজ্ঞায় মুখ থমথমে হয়ে গেল লুৎফার। মাতৃসুলভ নয়ন ছলছল করে উঠল। ভেজা কণ্ঠে বললেন,
“ তুই এরকম হয়েছিস কেন বলতো! আগে মনে হতো তোর বাপ একটা পাথর। এখন দেখছি তুই তাকেও ছাড়িয়ে গেছিস। মা সারাদিন মাথা ঠুকে ম*রে গেলেও, কিছু এসে যায় না তাইত?”
তীব্র ‘চ’ সূচক শব্দ করে বলল,
“ এখন যাও মা। এসব নিয়ে পরে কথা হবে।”
“ পরে? পরে তোকে পাই আমি? কখন বাড়িতে আসিস,কখন বের হোস,নিজেই জানিনা। তোদের বাবা -ছেলের হাতে আমাকে দেওয়ার মতো সময় কোথায়!”
সত্যি করে বলতো বিট্টু, তুই কী আমাকে একটুও ভালোবাসিস না?”
এতক্ষণে ফিরে চাইল তীব্র। ঠোঁট একদিকে উঁচু করে হেসে বলল,
“ হ্যাঁ বললে বিশ্বাস করবে, না বললে মেনে নেবে?”
লুৎফা বললেন,
“ এত কঠিন কঠিন কথা বলছিস কেন? উত্তর দে। কিছু একটা বল। যাতে অন্তত মনে শান্তি পাই।”
তীব্র নিরুৎসাহিত জানাল,
“ আমি কখনো কারো মনে শান্তি দেওয়ার জন্য কিছু করতে পারি না। তোমার জন্য এই নিয়ম পাল্টানো উচিত হবে না।”
লুৎফা বুকভা*ঙা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
“ বাপের রক্ত কড়ায়-গণ্ডায় ফলছে তাইনা? পুরোটা ওনার মত শক্ত মানুষ হচ্ছিস!”
তীব্র অনীহ কণ্ঠে বলল,
“ মন্ত্রী মশাইয়ের মতন হলে তো, অন্তত শখের বশে বখাটে হতাম না। সংসদে গিয়ে ভাষণ দিতাম।”
লুৎফা কিছু বলার মতোন খুঁজে পেলেন না আর।
নম্র গলায় অনুনয় করলেন,
“ জানি শুনবিনা,তাও বলছি। পারলে সিগারেট খাওয়াটা ছাড়। মায়ের একটা কথা রাখ বাবা। মা কখনও খারাপ চায়না সন্তানের।”
“ আচ্ছা।”
আচ্ছা, শুনে লুৎফা খুশি হয়ে গেলেন। গদগদ হয়ে বললেন,
“ সত্যি ছেড়ে দিবি?”
“ হু। কাল থেকে।”
সহসা হাসিটা কমে এলো ওনার। কিছুক্ষণ ভগ্নহৃদয় নিয়ে চেয়ে রইলেন তীব্রর মুখের দিক। এই কাল দিনটা আর কোনও দিন আসবেনা তিনি জানেন। এত বছরে এটুকু অন্তত আয়ত্ব হয়েছে। এর আগে যতবার অনুরোধ করতেন,একই কথা বলে তীব্র সান্ত্বনা দেয়,ক্ষনিকের জন্য থামিয়ে রাখে ওনাকে। কিন্তু সত্যিকারের সিগারেট ছাড়তে পারে না।
লুৎফা আর কথা বাড়ালেন না। এক বুক ব্য*র্থতা নিয়ে পা বাড়ালেন যেতে।
তীব্র তক্ষুণি পেছন থেকে ডাকল,
“ মা।”
লুৎফা ফিরলেন,সে বলল,
“ মনে করো একটা কিছু আমার ভালো লেগেছে,কিন্তু সেটা আমাকে ভালো চোখে দেখছে না। কী করা যায়!”
ভদ্রমহিলা বিস্মিত হয়ে বললেন,
“ এই কথা তুই জিজ্ঞেস করছিস? যে ছোট থেকে অন্যের জিনিস পছন্দ হলেও,কেড়ে নিয়ে আসতো!”
তীব্র বা হাতে থুত্নী চুলকে চুপ করে রইল। লুৎফা আগামাথা বুঝলেন না কোনও কিছুর। অল্প সময় অপেক্ষা করলেন,হয়ত ছেলে কিছু বলবে! কিন্তু বলল না দেখে, ঘর থেকে নিশ্চুপ বেরিয়ে গেলেন।
*****
শাফিন মনম*রা হয়ে বসে আছে। চেহারার কোথাও, একটুখানি উজ্জ্বলতা নেই। পাশে বন্ধুদের নিরন্তর হাসাহাসি, আড্ডা,হাতে চায়ের কাপটাকে অবধি সে ঘোষণা করল বিষাদ,বিষাদ এবং বিষাদ।
মিরাজ, মুশফিক,আরমান, নাহিদ বিভ্রান্ত! তারা বেশ অনেকক্ষণ ধরে খোঁ*চাচ্ছে ওকে। কী হয়েছে জানতে চাইছে। কিন্তু শাফিনের ঠোঁটে যেন তালা ঝোলানো। ‘কিছু না’এর পর আর একটাও বাক্য উচ্চারণ করল না।
শেষে হাল ছাড়ল ওরা। মন দিলো নিজেদের কাজে। একবার তীব্রর ফোনে কল করল আরমান। আজকে আসতে একটু বেশিই দেরী হচ্ছে ওর।
তীব্র এলো আরও আধঘন্টা পর। ঘোলা দুই চোখে রাজ্যের ক্লান্তি। কোটরের শ্বেতাংশ জবার মত টুকটুকে লাল। রাত জাগা, নির্ঘুমতার ছাপটা পরিষ্কার!
এতক্ষণে নড়েচড়ে উঠল শাফিন। তীব্র মাত্র এসে বসতেই,উঠে পাশে গিয়ে বসল ওর।
খুব মন খারাপ নিয়ে বলল,
“ জানিস কি হয়েছে?”
মিরাজ, মুশফিক, আরমান কটমট করে একে অন্যকে দেখল।
মুশফিক রেগে রেগে বলল,
“ শালা আমরা এতক্ষণ ধরে জিজ্ঞেস করছি, এই ব্যাটা মুখই খোলেনি। কিন্তু দ্যাখ, যেই বিট্টু এসছে সুরসুর করে বলে দিচ্ছে?”
মিরাজ খটমটে গলায় বলল, “ আস্ত একটা বখাটে!”
নাহিদ বুঝদার। বলল,
“ বিষয়টা সোজা ভাবে দেখলেই হয়। হয়ত শাফিন আমাদের থেকেও বিট্টুর কাছে বলে শান্তি পায় তাই।”
আরমান বলে,
“ হয়েছে পন্ডিত মশাই,আপনি আপনার জ্ঞান আপনার গোয়ালে রাখুন।”
“ তোরা সব সময় আমার সাথে এমন করিস কেন?”
মিরাজ বলল,
“ কারণ আপনি অনেক ভদ্র ছেলে। আর আমাদের মত বখাটেদের ভদ্রতে এলার্জি।”
নাহিদ অসহ্য ভঙিতে কপাল কোঁচকাল। তবু পালটা তর্কে গেল না।
তীব্র চাইল ওর দিক। মুখের করুণ দশা দেখে কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,
“ কী হয়েছে?”
সুপ্ত আহাজা*রিটা ভেতরে কোনও রকম চাপা দিলো শাফিন। মনঃক*ষ্টে বলল,
“ পুষ্পিতারা না কি বাসা ছেড়ে চলে গেছে।”
খুব জোরদার একটা প্রতিক্রিয়া আশা করেছিল শাফিন। গত দিনগুলোর পর এমন প্রত্যাশা ভুল কিছু? কিন্তু এবারেও তাকে নিরাশ করতে, তীব্রর নিষ্প্রভ উত্তর,
“ ও।”
“ তুই অবাক হোসনি?”
“ কী নিয়ে?”
“ এই যে ওরা বাসা ছাড়ল তাতে।”
তীব্র কোকের ক্যানে গলা ভেজাল। খুব সাবলীল তার স্বর,
“ অবাক হওয়ার মতো ঘটনা হলে হোতাম। ভাড়া বাসায় থাকে যখন, বাসা পাল্টাবে স্বাভাবিক না?”
“ তা স্বাভাবিক। কিন্তু ওরা নাকী শহরের বাইরে চলে গিয়েছে।
তীব্র প্রখর নেত্রে চাইল। তাকানোর ধরণে, একটু আগ্রহ পেলো শাফিন। ভাবল, হয়ত এবার বিট্টু আমোলে নিয়েছে।
অথচ সে চোখ সরু করে বলল,
“ তুই কী করে জানলি?”
এতক্ষণ বাকীরা ওদের কথাবার্তা শুনছিল। প্রশ্নটায় শশব্যস্ত চাউনী গুলো ঘুরে গেল শাফিনের দিক। থতমত খেল সে।
মিরাজ ভ্রু উঁচিয়ে উঁচিয়ে বলল,
“ হু হু, কী করে জানলি বল!”
মুশফিক নাক টেনে বলল,
“ উম,কেমন একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি।”
শাফিন আমতা-আমতা করে বলল,
“ আসলে উত্তরায় কাজ ছিল একটু… তখন আর কী…”
তীব্র প্রশ্ন করল,
“ মেয়েটার বাসার সামনে, তোর কী কাজ?”
“ না না। বাসার সামনে আসলে মানে…. ”
জ্বিভের ডগায় যুতসই উত্তর না পেয়ে নিজেই থেমে গেল শাফিন। তার চুপসে যাওয়ায় বন্ধুরা মজা পেয়ে গেল। হুহা করে হেসে, একে-অন্যের গায়ে গড়াগড়ি খেল।
তীব্র একভাবে শাফিনের মুখের দিক চেয়ে রইল। ও ভীষণ অস্বস্তিতে গাঁট হয়ে বলল,
“ এ..এভাবে কী দেখছিস?”
“ তোর কী মেয়েটাকে পছন্দ হয়েছে?”
শাণিত স্বরটায় কী যেন মিশে। অজান্তেই কেমন ঘাবড়ে গেল শাফিন। ত্রস্ত মাথা নেড়ে বলল,
“ না না।”
তীব্র একপেশে হেসে বলল,
“ গুড।”
তারপর চোখ ফিরিয়ে সামনে তাকায় সে। নিখাদ বাক্য ছাড়ে,
“ কিন্তু আমার পছন্দ!”
পাঁচজোড়া ব্যগ্র দৃষ্টি। চোখে-মুখে বিমুঢ়তা! শাফিন ধুকপুকে মন নিয়ে শুধাল,
“ পছন্দ? ককাকে?”
তীব্রর সঙ্কোচশূন্য, দৃঢ় জবাব,
“ পুষ্পিতাকে!”
চলবে…
সদ্য মা হয়েছি ভাই। বাচ্চা সামলে গল্প লেখা যে কত কষ্টের! যেখানে খাওয়ার সময়টাও হচ্ছে না। তাই অধৈর্য পাঠকগণের কাছে অনুরোধ একটু আমার ইনবক্স থেকে দূরে থাকবেন।