#অবন্তিকা_তৃপ্তি
#পর্ব_২৮
সকল রীতি-নিয়ম শেষ করে তুলিকে শুভ্রর রুমে এনে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে শুভ্রর দাদাবাড়ির কিছু মেয়েরা। যাবার আগে এক গ্লাস দুধ আর দুটো মিষ্টি প্লেটে রেখে সাফসাফ বলে গেছে: শুভ্র রুমে এলে প্রথমে সালাম করে তারপর এগুলো খাওয়াতে। তুলি ঘোমটা টেনে হাটুভেঙে বসে আছে বিছানায়। অনেকক্ষণ হয়েছে, বাইরে শুভ্রর কথা শোনা যাচ্ছে। বাসর ঘরে ঢোকার জন্যে বেচারার পকেট কা টা হচ্ছে। তুলি ওপাশে শুভ্রর একেকটা ঝগড়া করা শোনে হাসে। একসময় দরজা খোলার আওয়াজ আসে। শব্দ পেয়ে ঘোমটা টেনে মাথায় তুলে তুলি। শুভ্র তুলিকে দেখে দরজা সিটকিনি তুলে বললো – ‘ঘোমটা টেনে আর কী করবে? গরম লাগলে খুলে ইজি হও।’
তুলি শুনলো না। মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে রইলো। তুলি চাইছে; শুভ্র নিজে এসে তুলির ঘোমটা খুলে দিয়ে মুখটা দেখুক. . মুগ্ধ হয়ে বলুক ‘মা সা আল্লাহ’
শুভ্র এসি অন করে দিল। তারপর এগিয়ে এসে বিছানায় তুলির মুখোমুখি বসলো। তুলি একবার আড়চোখে শুভ্রকে দেখে চোখ ফিরিয়ে নিল। শুভ্র হাত বাড়িয়ে তুলির ঘোমটা খুলল। তুলি ধীরে ধীরে এবার শুভ্রর দিকে চোখ তুললো। দুজনের চোখে চোখ পড়ল। শুভ্র হালকা হেসে তুলির ডান হাতটা হাতে নিয়ে হাতের পিঠে চুমু খেয়ে বললো – ‘জান্নাতের হুর শুভ্র যে দুনিয়াতেই দেখে ফেললো- কী ভাগ্য।’
তুলি হেসে বললো – ‘ফ্লার্ট করা কী নতুন শিখেছেন?’
শুভ্র হেসে বললো – ‘বৌ আমার মহা সুন্দরী, ফ্লার্ট শেখা লাগে না। তাকে দেখলি অটোমেটিক আসে।’
তুলি হালকা হাসল। লজ্জা পেয়েছে খুব। শুভ্র হাজারগুণ সুন্দর তুলির থেকে। তুলি শ্যামা, অথচ শুভ্র যেভাবে তুলির রুপের প্রশংসা করলো, তুলি এখন বিশ্বাস করে ও পৃথিবীর সেরা সুন্দরী নারী। শুভ্র একটুপর বলল- ‘কোলে মাথা রাখি?’
নিঃসংকোচ আবদার, তুলি হাসলো। হাত দিয়ে ইশারা করে কোল দেখিয়ে ঘুমাতে বললো। শুভ্র তুলির কোলে মাথা রাখলো। তুলি হালকা হাতে ম্যাসাজ করছে শুভ্রর কপাল। শুভ্র বললো- ‘তোমার কথামতো একটা বুক শেলফ কিনেছি! দেখেছো? ওখানে। এই শেলফে তোমার সব রোমান্টিক বই রাখবে। আর শিখবে কিভাবে বরকে রোমান্টিক পদ্ধতিতে ইমপ্রেস করতে হয়, উহুম উহুম।’
শুভ্র হালকা কাশার ভান করলো। তুলি শুভ্রর কপালে দু আঙুল ঠেসে বলল -‘ খুব শখ, না?’
শুভ্র চোখ উঁচু করে তুলির মুখের দিকে তাকালো। বললো – ‘শখই তো। আমি হচ্ছি খাঁটি পুরুষ। সকল শখ আহ্লাদ বিয়ের পরের জন্যে তোলা রেখেছি। তোমার আগে বা পরে কোন সতীন আসার চান্স নেই। তোমার তো খুশি হওয়া উচিত?’
তুলি এবার মুগ্ধ হল। শুভ্র এভাবে মায়া লাগিয়ে কথা বলে কেন? তুলির বুক কাপে? পা ষণ্ড পুরুষ সেটা কী বুঝে? তুলি মাথা নিচু করে শুভ্রর প্রশস্ত কপালে চুমু খেয়ে ধরা গলায় বললো – ‘থ্যাংক ইউ আমার আগে কাউকে ভালো না বাসার জন্য।’
শুভ্র চোখ বন্ধ করলো। তুলি মুখ সরিয়ে আনলো। শুভ্র চোখ খুলে বললো- ‘আগের জন্যে থ্যাংক ইউ দিলে। পরেরজন্যে দিবে না?’
তুলি মুখটা অন্যদিকে সরিয়ে ঠোঁট টিপে হেসে বললো- ‘ ওটা ভবিষ্যৎ। পুরুষ মানুষের বেলায় গ্যারান্টি নেই। কবে পিছলে যায়।’
শুভ্র এ কথা শুনে চট করে উঠে বসলো। তুলির দিকে চেয়ে বললো – ‘মানে? তুমি ভয় পাচ্ছো আমি তোমার সতীন আনবো বা কোন পরকীয়া করব কী না? How could you think like that, তুলি?’
শুভ্র আহত ভঙ্গিতে বললো। তুলি তাকালো। আগের ন্যায় ভাবলেশহীন ভাবে বলল – ‘আমি বললাম তো ভবিষ্যৎ ওটা। পুরুষ মানুষ পিছলে না? শুনেন নি কখনও?’
শুভ্র তুলির থুতনি চেপে মুখটা নিজের দিকে ফেরাল। তুলি তাকালো, শুভ্র শান্ত স্বরে বললো – ‘শুনেছি। সঙ্গে এমন পুরুষও দেখেছি যারা একজনকে ভালোবেসে জীবন পাড় করে দিয়েছে।’
তুলি কিছু বললো না। শুভ্র তুলিকে ছেড়ে দিল। রাগ করে বাথরুমে গিয়ে শেরওয়ানি পাল্টে ট্রাউজার-টিশার্ট পরে বিছানায় এসে সোজা শুয়ে পড়ল। তুলি হা করে শুভ্রর রাগ দেখছে। আজ বাসর রাতে ওরা ঝগড়া করলো? এই রাত নিয়ে এত পরিকল্পনা করে এটাও দেখার ছিল? তুলি ছোট্ট করে শ্বাস ফেললো। টি-টেবিল থেকে দুধের গ্লাসটা নিয়ে শুভ্রর দিকে এগিয়ে বললো- ‘উঠুন, এসব খেয়ে ঘুমান। সকালে আপনার কাজিনরা দেখলে কিন্তু আমাকে প্রশ্ন করবে।’
শুভ্র কাঁধ ঝকিয়ে বললো – ‘তুমি খাও। আমি সুগার খাই না।’
তুলি বললো – ‘তাহলে দুধটুকু খেয়ে ঘুমান।’
শুভ্র উত্তর দিলো না। তুলি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে হাল ছেড়ে দুধের গ্লাস আবার জায়গায় রাখলো। গরম লাগছে। ভারী লেহেঙ্গা গায়ে শরীর ঢলে পড়তে চাইছে। তুলি উঠে লেহেঙ্গা খুলে শাড়ি গায়ে জড়াল। এবার বসলো চুলের ক্লিপ খোলায়। ক্লিপ মনে হচ্ছে হাজার ডজন লাগিয়েছে পার্লারের মেয়েরা। কোথায় কোথায় লাগানো সেটাও খুঁজে পাচ্ছে না। তুলি আয়নায় দেখলো: শুভ্র শুয়ে আছে বিছানায়। তুলি শুভ্রকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো- ‘বাসর রাতের গল্প কত পড়লাম। হাসবেন্ড-ওয়াইফ গল্প করে, আদর করে চুলের ক্লিপ খুলে দেয়, বুকে নিয়ে ঘুমায়। আর আমার কপাল দেখো। বিবাহিত জীবনের শুরুটাই ঝগড়া দিয়ে হলো। শুরুতেই এই অবস্থা. . বাকি জীবন তো পরেই আছে। ও বাবা, এটা কার সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে দিলে আমার।’
চুলের ক্লিপগুলো তুলি আসলেই খুলতে পারছে না। চুল ছিঁড়ে হাতে আসছে বারবার। তুলি কাঁদোকাঁদো মুখে হাল ছেড়ে দিতে চাইলে হঠাৎ চুলে কারো হাতের স্পর্শ লাগে। শুভ্র তুলির পেছনে দাঁড়িয়ে চুলের ক্লিপ খুলে দিচ্ছে। মুখভঙ্গি ভয়াবহ গম্ভীর। হাসছেও না একদম। তুলি কিছুক্ষণ থম হয়ে শুভ্রকে দেখলো। তারপর ভয়েভয়ে বললো- ‘আ’ম সরি না, শিশু ডক্টর। আর বলবো না এমন।’
শুভ্র তুলির দিকে একবার চেয়েই চোখ ফিরিয়ে নিল। একে একে আস্তে ধীরে সবগুলো ক্লিপ খুলে রাখলো টেবিলে। তারপর গিয়ে আবার শুয়ে পড়লো। তুলি দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বাতি নিভিয়ে নিজেও শুভ্রর পাশে শুয়ে পড়লো। শুভ্র তুলির দিকে পিঠ করে আছে। তুলি থমথমে মুখে শুভ্রর চওড়া পিঠের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুসময়। হঠাৎ শয়তানি বুদ্ধি মাথায় চড়ল তুলির। উঠে গিয়ে শুভ্রর সামনে গেলো। শুভ্র ভ্রু কুঁচকে তাকালো, তুলি শক্তি দেখিয়ে জোর করে শুভ্রর দুহাতের মধ্যে ঢুকে জড়িয়ে ধরলো শুভ্রকে। শুভ্র হা হয়ে গেলো। তুলিকে সরাতে চাইলে তুলি শুভ্রর গালে চুমু খেয়ে বসলো। মিষ্টি করে বললো- ‘সরি।’ তারপর মাথা উঁচু করে কপালে চুমু খেলো, আবারও একই ভাবে বললো- ‘সরি।’ শুভ্র থমকে আছে। তুলি এগিয়ে এসে শুভ্রর খাড়া নাকে চুমু খেল, মিষ্টি করে আবারো বললো- ‘সরি’
পরপর কয়েকটা চুমু খেয়ে একই কথা বললো-‘সরি,সরি,সরি।’ তুলির অনবরত চুমুর জ্বালায় একসময় অতিষ্ট হয়ে গেলো শুভ্র। একপর্যায়ে রাগ ধরতে না পেরে হেসে উঠে তুলির দুগাল ধরে তুলিকে থামালো। বললো- ‘আর কত, তুলি? চুমু খাওয়ার তো আর কোনো জায়গা বাকি রাখো নি।’
তুলি শুভ্রর চোখের দিকে চেয়ে কানে আঙুল ছুঁয়ে আবার মিষ্টি করে বললো- ‘সরি, আর বলবো না এমন।’
শুভ্র হালকা হেসে তুলির কপালে চুমু খেলো। বললো- ‘রাগ নেই আমি আর। শান্ত হও।’
তুলি হালকা হাসলো। শুভ্র কিছুসময় তুলিকে ওভাবেই বুকে জড়িয়ে রাখল। তুলিও মাথাটা শুভ্রর বুকে ঠেকিয়ে আরামে পরে আছে। শুভ্র তুলির পিঠে হাত বুলিয়ে বললো- ‘ঘুমাও, সারাদিন অনেক দখল গেছে।’
তুলি অবাক হয়ে মাথাটা তুলে শুভ্রর দিকে তাকালো। শুভ্র এভাবে তুলির তাকানো দেখে ভ্রু নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল- ‘কী?’
‘কিছু না।’— তুলি আবারও শুভ্রর বুকে মাথা রাখলো। মনেমনে তুলি কিছুটা হতাশ। আজ প্রায় ছ মাস পর তারা একসঙ্গে থাকছে। শুভ্র এতদিন বাসর রাত নিয়ে কতকিছু শোনাল, এখন একদম ভালো মানুষ সাজছে। ‘ঘুমাও’-কেন ঘুমাবে তুলি? আজকের রাত ঘুমানোর রাত? তাদের বিয়ে অরেঞ্জ ম্যারেজ হলেও, এখন দুজনের মনে ডুবন্ত ভালোবাসা উপচে পড়ছে। বলা যায়- লাভ কম অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তাদের। এই বিয়ের রাতটা কেউ ঘুমিয়ে কাটায়? তুলি শুভ্রর বুক নাক ঘষলো। চোখ বন্ধ করা অবস্থায় শুভ্র বললো- ‘কিছু বলবে? ঘুম আসছে না?’
‘না।’ তুলি ছোট্ট করে জবাব দিলো।
‘মাথা ম্যাসাজ করে দেই?’
‘হু।’
শুভ্র একটা হাত দিয়ে তুলির পিঠ আগলে অপরহাতে তুলির চুলে বিলি কাটতে লাগলো। চুলে বিলি কাটায় তুলির মনে হলো- সারাদিনের ক্লান্তি এক নিমিষেই হাওয়া হয়ে গেছে তার। এখন মনে হচ্ছে- সত্যি আজকের দিনটায় অনেক দখল গেছে। বিশ্রাম দরকার। শুভ্ররও হয়তো বিশ্রাম দরকার। একমাত্র সন্তান হওয়ায় বিয়ের সমস্তটাই শুভ্র নিজে দেখাশোনা করেছে। একটা মিনিট বসারও সুযোগ পায়নি। শুভ্রর জন্যে মায়া লাগলো তুলির। বেচারা বিয়েতে কতো কষ্ট করেছে। তুলি তো ঘুমিয়েই কাটিয়েছে। বউ দেখে কোন কাজ করতে দেওয়া হয়নি তাকে। তুলি কিছুসময় শুভ্রর দিকে চেয়ে থেকে তারপর হালকা হাসলো। একপর্যায়ে শুভ্রর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।
_____________
ভোর সকালের আলো অনেক আগেই ফুটেছে। শুভ্র এখনও ঘুমিয়ে আছে। চুলগুলো এলোমেলো, গাল ফুলে আছে ঘুমে। তুলি গোসল করে বের হয়। দু কাপড়ের উপর টাওয়াল জড়িয়ে বের হয়েছে। বাথরুমে শাড়ি পরতে পারেনি তুলি। তাই রুমে এসে আগে দেখলো শুভ্র গভীর ঘুমে কী না। শুভ্রকে ভালো করে দেখে নিয়ে রুমের একপাশে শাড়ি পড়তে লাগলো। শাড়ি পরায় এখনও বড্ড কাঁচা তুলি। কোনদিক থেকে কোনদিক চেপে ধরবে বুঝতেই পারছে না। আঁচলটা গায়ে জড়িয়ে কুচি ধরতে লাগলো।
-‘শাড়িটা আমি পড়িয়ে দেই?’
ঘুমঘুম কণ্ঠে এ কথা শুনে তুলি চোখ তুলে তাকালো। এলোমেলো চুলে শুভ্র মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে আছে। তুলি শুভ্রর চাওনি দেখে শাড়ির আঁচলটা ভালো করে গায়ে জড়াল। শুভ্র বোধহয় এতে ভ্রু কুঁচকালো। হতাশ হয়ে বললো- ‘আমার সামনে এভাবে অপ্রস্তুত হওয়ার কী আছে? আমি তোমার হাসবেন্ড, তুলি। বারবার তুমি এটা ভুলে যাও।’
তুলি হেসে ফেললো। শুভ্র তুলির অনুমুতির অপেক্ষা করলো না। এগিয়ে এসে শাড়ির কুচি ধরলো। কুচি যত্ন নিয়ে ভাঁজ করতে লাগলো। তুলি বললো – ‘আপনি না ঘুমাচ্ছিলেন? এত দ্রুত উঠে গেলেন? আমি তো শব্দও করিনি কোনো।’
শুভ্র উত্তর দিলো- ‘তুমি যখন গোসল করে বাথরুম থেকে বের হয়েছো, তখনই উঠে গিয়েছিলাম।’
‘তাহলে কেনো ঘুমের ভান করলেন? আমি তো-‘
‘দেখছিলাম কিছু।’
‘কী দেখছিলেন?’
তুলি প্রশ্ন করলো। শুভ্র মাথা তুলল এবার। চোখ টিপে বললো- ‘গোসল করে বের হওয়া শাড়ি ছাড়া সদ্য নববধূকে। অস্থির দেখাচ্ছিল তোমায়। আমি তাকালে লজ্জা পেতে, তাই একটু ঘুমানোর ভান করেছিলাম।’
তুলি অবাক হয়ে তাকালো শুভ্রর দিকে। পরপর লজ্জায় শুভ্রর হাতে থাপ্পড় বসিয়ে বললো- ‘আপনি এতটা অসভ্য, ছিঃ।’
শুভ্র হাসলো। কুচি ভাজ করা শেষ করে বললো- ‘আমি গুঁজে দেই?’
তুলি ‘না’ করবে তার আগে শুভ্র নিজে নিজেই বললো- ‘আমি গুজবো না তো কে গুজবে? হাসবেন্ড হই তোমার।’
শুভ্র এ কথা বলে কুচিগুলো একসঙ্গে করে তুলির পেটিগোটে গুঁজে দিলো। পেটে শুভ্রর হাতের স্পর্শে তুলি শিউরে উঠে হাত চেপে ধরল শুভ্রর। তুলি জোরেজোরে শ্বাস ফেলছে। শুভ্র তুলির মসৃণ পেটে ছোট্ট চুমু বসিয়ে উঠে দাঁড়ালো। শুভ্র তুলির শাড়ির আঁচল ঠিক করে দিলো। তুলি অন্যপাশে চেয়ে রইলো। শাড়ি পরানো শেষ করে শুভ্র একটু দূরে গিয়ে তুলিকে আপাদমস্তক দেখলো। তারপর থাম্বস অ্যাপ দেখিয়ে বললো- ‘পারফেক্ট।’
তুলি হেসে আঁচল ঠিক করলো। শুভ্র এগিয়ে এসে তুলির কোমর দুহাতে আগলে ধরে ঘনিষ্ঠ হলো। তুলি শুভ্রর বুকে দুহাত রেখে ভ্রূ নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো- ‘কী চাই এখন আবার?’
শুভ্র বাম গালটা দেখিয়ে বললো- ‘মর্নিং কিস।’
তুলি ভ্রু বাকালো- ‘খুব শখ না?’
শুভ্র হালকা হেসে জবাব দিল- ‘বউ পেলে শখ আহ্লাদ বাড়ানো উচিত। এই তুমি না রোমান্টিক বই পড়ো? বইয়ে পড়ো নি?’
তুলি শুভ্রর বুকে আঙুল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বললো- ‘আমার রোমান্টিক বইয়ে এসব আজগুবি কথা লেখা নেই।’
শুভ্র বললো- ‘লেখা উচিত। লেখা উচিত যে স্বামী একটা কিস চাইলে তাকে দুটো কিস দিতে হবে, স্বামী শাড়ি পরাতে চাইলে তাকে সুন্দর করে হ্যাঁ বলতে হবে, আর স্বামী আদর করতে চাইলে তাকে মানা করা যাবে না।’
তুলি হেসে উঠে বললো- ‘সবকিছুতে নিজের লাভ খুঁজেন, না?’
শুভ্র তুলির কপালে চুমু খেয়ে বললো- ‘শুধু আমার লাভ? তোমার লাভ হয়না?’
তুলি লজ্জা পেয়ে গেল। শুভ্রর বুকে আলতো করে থাপ্পড় বসিয়ে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললো- ‘বাজে কথা না বলে ছাড়ুন, বাইরে যাব। অলরেডি নয়টা বাজে। আম্মু একা একা নাস্তা বানাবেন?’
শুভ্র তুলিকে আরো কিছুসময় জ্বালাতন করে তারপর ছেড়ে দিল। তুলি শাড়ির আঁচল মাথায় তুলে রুম থেকে বের হলো।
#চলবে
বিশাল পর্ব|১৭০০ শব্দ|