#রাহেলার রাত দিন
.
৪র্থ পর্ব
.
সন্ধ্যার হালকা অন্ধকার তখন নামতে শুরু করেছে। রাহেলা সেখানেই গম্ভীর হয়ে বসে নিজের চিন্তার জগতে বসে আছে। এমন সময় তার পাশে এসে বসলো একটা ছেলে। বয়স ৭-৮ বছর। পরনে ময়লা প্যান্ট , খালি গা। একটা পলিথিনের প্যাকেটে কোণ আকৃতির অনেকগুলো বাদামের পুটলা। রাহেলার দিকে এক পলক তাকিয়েই ছেলেটা পলিথিন পাশে রেখে মাটির দিকে তাকিয়ে বসে রইলো।
ছেলেটাকে দেখে সারাদিনে এই প্রথম মনুর কথা মনে পড়লো। মনু কী করছে ? তাকে ছাড়া আজ ঘুমাবে কী করে। ভাইয়া-ভাবি গ্রামের লোক তার বাড়ি থেকে পালানোর কথা জানার পর তাকে নিয়ে কী আলোচনা করছে জানার লোভ হয় তার। ছেলেটার দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে রাহেলা বলল :
কী নাম গো তোমার ?
ছেলেটা একবার তার দিকে তাকালেও কোনো কথা বলল না। আবার চুপ করে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকল। রাহেলার এই প্রথম মনে হলো তার যে মুখ ঢাকা! তাকে যদি আমজাদ দেখেও চীনবে কী করে। সে আমজাদকে খুঁজতে খুঁজতে নিজেকে প্রকাশ করতেই যে ভুলে গিয়েছিল এই ভেবে নিজের ওপর ক্ষোভ হলো। মুখের আবরণটা সরিয়ে আবার ছেলেটার দিকে তাকালো সে।
এ ধরনের ছেলেদের সাহসের কমতি নেই। এরা অপরিচিত মানুষ দেখলেই ঘাবড়ে যায় না। পথে থাকতে থাকতে নানা রকম মানুষ দেখে অবস্থ। বাদাম ফেরি করে বেড়ায়। অচেনা মানুষের সাথেই ব্যবসা। তবুও পুরো শরীর ঢাকা অপরিচিতা এই মহিলাটা যখন হঠাৎ তাকে নাম জিজ্ঞেস করলো তখন সন্ধ্যার এই পরিস্থিতির জন্য হোক সে একটু ভয় পেল।
কিন্তু পরক্ষণেই রাহেলা মুখোশ খুলতেই সন্ধ্যার ম্লান আলোয় অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলো সে। এত সুন্দর মায়াবী চেহারা , চোখ ছেলেটা এর আগে কখনই দেখেনি যেন। কেমন একটা মা মা চেহারা। তার মুখায়ব, তার চিন্তায় যে জটিলতার কোনো ছাপ নেই তা প্রকাশ করে। গ্রাম্য সরল নারী। ছেলেটা বিড়বিড় করে বলে :
রাব্বি।
তোমার বাপ-মা কী করে ?
ছেলেটা আবার চুপ করে গেল। রাহেলার মন খুব খারাপ হয়। এইটুকুন একটা ছেলে বাদাম বিক্রি করে খায়। আহা, পৃথিবীর সে কী বোঝে ! ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকার একটা নোট এগিয়ে দেয় ছেলেটার দিকে।
নাও , কিছু কিনা খাইয়ো।
ছেলেটা এবার হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে। এই নোটটা সে চেনে এবং মূল্য জানে । তবুও কেমন যেন সংকোচে হাত বাড়াতে পারে না। রাহেলা সিমেন্টের সিঁড়িতে টাকাটা রেখে দিতেই উড়ে যেতে পারে ভেবে টাকাটা হাতে নিয়ে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রাহেলার দিকে। রাহেলা বলল :
তোমার বাড়িতে কে কে থাকো ?
বাপ আর মা।
মায় চিন্তা করে না , রাইত হইয়া যায় বাড়ি যাও না!
সৎ মা।
ওয়!
ছেলেটার সমস্ত দুঃখ যেন চোখের সামনে দেখতে পায় রাহেলা। ছেলেটা এবার অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে বলে :
আপনি বাইতে যাবেন , না ? কই ?
রাহেলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সারাদিনে এই প্রথম কোনো একজন মানুষ পেল মন খুলে কথা বলার। সে তার জীবনের ইতিবৃত্ত সমস্ত ছেলেটার কাছে প্রকাশ করলো। আমজাদ , তার গ্রাম , আলম মামা , কেন শহরে আসা সব। সে ছোট্ট ছেলেটার কাছে এর কোনো সমাধান চায় না। সে যে কথা বলার জন্য একটা মনোযোগী শ্রোতা পেয়েছে এতেই সে আনন্দিত।
কোনো কারণ ছাড়াই বলা যায় না , রাহেলার চেহারা , আচরণ , সে ছোট হলেও তার ব্যক্তিত্বকে সম্মান করে যে তাকে রাহেলা সব কথা খুলে বলেছে সব মিলিয়ে প্রথম থেকেই এই অচেনা মহিলার জন্য একটা শ্রদ্ধা কাজ করলো রাব্বির মনে। নাহলে , কোথাকার কোন মহিলা বিপদে পড়েছে , রাতে থাকার জন্য জায়গা নেই এতে তারও চিন্তা হয় নাকি ! সে চলে গেলে মহিলাটি একা এখানে বসে থাকবে ! সারারাত ? রাব্বি বলল :
আপনে আমার লগে আসেন।
কই ?
রাব্বি আর কোনো কথা না বলে হাটতে শুরু করে। রাহেলা কয়েক সেকেণ্ড শুধু চিন্তা করে , তারপরেই ব্যাগ নিয়ে ছেলেটার পিছু নেয়। রাব্বি , মহিলাকে তার বাড়িতে নেবে না দুটি কারনে। এক. তাদের ঘরে পর্যাপ্ত জায়গা নেই, দুই তার বাপ-মা এই সহজ সরল মেয়েটাকে পেলে তার সর্বস্ব লুট করে তাকে পথে নামিয়ে দেবে। বোঝাই যায় মহিলাটির কাছে অনেক টাকা আছে। রাহেলাও কিছুটা আশার আলো দেখতে পেল যেন। রাতটা কাটানোর জন্য ভাগ্যই বুঝি এই ছেলেটার সঙ্গে তাকে মিলিয়ে দিয়েছে।
রাব্বি হাটছেতো হাটছেই। সে নিজেও জানে না কোথায় যাচ্ছে। শুধু জানে একে একটা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। তার পক্ষে সম্ভব না। কার সাহায্য নেবে সে ? হঠাৎ ফয়সাল ভাইয়ের কথা স্মরণ হলো। তিনি এখানকার একটা কলেজে পড়ে আর এই জায়গার আশেপাশেই তার বাড়ি। পথশিশুদের সঙ্গে তার সম্পর্ক বেশ ভালো। সন্ধ্যায় পার্কের গেটের উল্টোদিকের রাস্তায় চায়ের আড্ডায় প্রায়ই বন্ধুদের সাথে বসেন তিনি।
গেট থেকে বেরিয়ে একটা জায়গায় অভিভাবকের সুরে রাহেলকে বসতে বলল রাব্বি। তারপর বড় রাস্তা পেরিয়ে একটা গলির ভেতর ঢুকে গেল সে। প্রায় আধা-ঘন্টা বসে থাকলো রাহেলা। এরমধ্যেই অন্ধকার নেমে গেছে পুরোপুরি। কিন্তু শহরে অন্ধকারের বালাই নেই। ইলেকট্রিক লাইট জ্বেলে আলো দিয়ে ভরা চারদিক। রাহেলার একবার মনে হলে ছেলেটা আর আসবে না। তবে আশ্রয় পাওয়ার এই ক্ষীণ আশাটা সে ছাড়তে পারছে না ।
এমন সময় ছেলেটাকে একজন বড় মানুষ নিয়ে রাস্তা পার হয়ে আসতে দেখে সংকুচিত হয়ে গেল রাহেলা। মুখের খোলা মুখোশটা পরে নিল।
ফয়সাল এখানের একটা কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে। এই আড্ডার সময়ে কোন মহিলার জন্য তাকে ঢেকে আনায় রাব্বির ওপর সে বিরক্ত। কিন্তু না এসে উপায় ছিল না , রাব্বি নাছোড়-বান্দার মতো ঘ্যানঘ্যান করে বিরক্ত করে মারছিল। মহিলাটির বিপদের সমস্ত কথা আগা-গোড়া কয়েক বার শোনায় তাকে। এই ধরণের স্বপ্ন নিয়ে শহরে আসা মহিলাদের প্রায়ই দেখা যায় বলা না গেলেও , এই ধরনের মহিলাদের দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। স্বামীর সন্ধানে একটা মেয়ের শহরে ছুটে আশাটা তাই অস্বাভাবিক লাগলো না ফয়সালের কাছে।
সে তবুও আরেকবার প্রশ্ন করে রাহেলার কাছ থেকে সব কথা জেনে নিল। এই পর্যন্তই ঠিক ছিল। হয়তো সে অচেনা একটা নারীর জন্য কিইবা করতে পারে ভেবে এখনই চলে যেতে পারতো। কিন্তু সে উৎসাহিত হয়ে মহিলাটির মুখ দেখতে চাইল।
রাহেলা সংকুচিত হয়ে মুখোশ ছড়াতেই রাহেলার মুখের দিকে মুগ্ধ নেত্রে তাকিয়ে রইলো এই ছেলেটাও। কালো বর্ণের চেহারায় এই মায়া , এই তীব্র মায়া ভরা চোখ , মুখায়ব নির্দেশ করছে রাহেলার জীবনের সরলতা। করুন মুখ দেখেই বোঝা যায় এটা কোনো ছল না , এই মেয়েটি আসলেই বিপদে পড়েছে। একে এই রাতে শহরের মাঝে ফেলে যেতে ইচ্ছা করলো না ফয়সালের। কিন্তু রাতে কোথায় রাখবে একে ? টুনু আপাদের বাসায়? এই অপরিচিতা মেয়েটিকে এই প্রথম কিছু সম্বোধন করে কথা বলল ফয়সাল :
আমার সাথে চলেন , আপা।
রাহেলা বুঝতে পারছে না ভাগ্য তাকে কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটা হয়তো তাকে একটা আশ্রয় খুঁজে দেবে এই আশা মনে জাগলেও অজানা একটা ভয় তাকে গ্রাস করলো। আর কিছু করার নেই তাই রাব্বির মাথায়, মুখে হাত রেখে তাকে বিদায় দিয়ে ফয়সালের সাথে রাস্তা পার হলো।
রাহেলার আন্দাজ নেই। পনেরো-বিশ মিনিট এই নতুন লম্বা ছেলেটার সাথে অলিতে গলিতে হাটলো সে। তারপর একটা গেটের বাইরে রাহেলাকে দাঁড়াতে বলে গেটের ভেতরে ঢুকলো সে। দশ মিনিট পর হতাশ ভাবে বের হয়ে এলো। বলল :
আপা , চলেন । হাটতে অসুবিধা হচ্ছে নাতো?
রাহেলা না সূচক মাথা নাড়ায়। আবার হাটতে থাকে তারা। এমন করে হাটতে হাটতে আরো ৩টা বাড়িতে যায় ফয়সাল। প্রতিবারই হতাশ হয়ে গেট দিয়ে বেরিয়ে আসে। রাহেলা বুঝতে পারে তার মতো অপরিচিত একটা মেয়েকে কেউই থাকতে দিতে চায় না। নিজের বিপদে ছেলেটাকেও এভাবে বিপদে ফেলায় ভেতরে ভেতরে লজ্জ্বা পায় রাহেলা।
রাত প্রায় ৯ টার মতো বাজে। ছেলেটা বলে:
দেখেন আপা , আমি কী করবো নিজেও বুঝতেছি না। আমি একটা ম্যাসের মতো জায়গায় থাকি। এক রুমে ৩ বন্ধু , এটাচ বাথরুম আর রান্নাঘর। আমার বাকি ২ রুমম্যাট গ্রামে গেছে অবশ্য। আপনে চাইলে রাতে রান্নাঘরে থাকতে পারেন।
রাহেলা হ্যাঁ, সূচক মাথা নাড়ে। আর কিবা করার আছে তার! রাহেলাকে নিয়ে সে তার বাড়িতে উপস্থিত হলো।
এমনিতেই সারাদিনের এই অদ্ভুত ভ্রমন , হাটায় ক্লান্তির চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল রাহেলা। ঘরে ঢুকার পর ছেলেটার অনুরোধে আগে থেকেই রান্না করা ভাত-তরকারি খেল তারা দুজন। এবার শরীর যেন অবশ হয়ে এলো পুরোপুরি। দুই চোখে ঘুমের জন্য কিছু দেখতে পাচ্ছে না সে। রান্নাঘরে কাঁথা বিছিয়ে বালিশ ফেলে শুতেই তাই ঘুমের জগতে যেতে সময় লাগলো না তার। গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
গভীর রাতে তার পুরো শরীরের ওপর আরেকটা শক্ত শরীরের স্পর্শ অনুভব করতেই শিউরে উঠলো রাহেলা। বিহ্বলভাবে চোখ মেলতেই পাশের ঘরের ডিমলাইটের মৃদু আলোতে তার ওপরে চেপে বসা ছেলেটাকে চিনতে পারলো সে। মুখটা পরিচিত হলেও এই চেহারা সম্পূর্ণ নতুন লাগলো রাহেলার কাছে। সন্ধ্যার পর থেকে যে ছেলেটা তাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরেছে , তাকে আপা বলে ডেকেছে সেই ছেলেটার দৃষ্টি এটা না। পৃথিবীর কোনো ভাই তার বোনের দিকে এভাবে তাকাতে পারে না , এই আচরণ করতে পারে না। রাহেলার দুনিয়া উল্টে গেল তার সঙ্গে কী হচ্ছে বুঝতে পেরে। তার ঘুম এখনো কাটেনি , স্বপ্ন নাকি এটা। শরীর এতই ক্লান্ত ছিল যে ধাক্কা দিয়ে ছেলেটাকে সরিয়ে দিতে পারলো না। মুখ দিয়ে শব্দ করতে যাবে এক হাত দিয়ে মুখটা চেপে ধরলো ছেলেটা। সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে ছেলেটা দিনে আপা বলে ডাকে সে রাতে এতটা হিংস্র হতে পারে। বড়বড় চোখ করে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে রইলো সে। ছেলেটা ম্লান আলোতে তার দু-চোখ বেয়ে পড়া পানি দেখলই না বা দেখার সময়ও পেল না। এখনো তার সাথে এসব ঘটছে সে বিশ্বাস করতে পারছে না। চিৎকার করার শক্তি নেই তার। আতঙ্কে জ্ঞান হারালো রাহেলা।
ছেলেটা চলে গেল যখন, তখন তার জ্ঞান ছিল। শরীর এত ক্লান্ত হওয়ার পরও বাকি রাত সে দুচোখ বন্ধ করতে পারলো না। চোখ বন্ধ করলেই ছেলেটার হিংস্র চেহারা তার চোখের সামনে ভাসে আর সে কেঁপে ওঠে। দরজা খুলে কেউ যে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল টের পায় সে। এক অচেনা ছেলের সাথে এই বাড়িতে আশাটাই তার ভুল ছিল। একবিন্দু নড়ার শক্তিও তার নেই। একজন পুরুষের মানুষ আর পশু দুই রূপের সঙ্গে এই নারীর পূর্বে পরিচয় হওয়ার কথা না। বিষাদে পুরো মন রাতের মতোই আধার হয়ে গেল তার।
সকাল বেলা যখন সে উঠে জামা জড়িয়ে পাশের ঘরে গেল, দেখল কেউ নেই। সে বাথরুমে চলে গেল। নিজের শরীরের প্রতি এক ঘৃণা অনুভব করলো। এখনো ঘোরের মধ্যে কাটছে তার চিন্তা। এই চিন্তায় আমজাদ নেই , আছে শুধু নিজে। হাঁটছে , বসছে কেঁপে কেঁপে।
ফ্রেস হয়ে ঘরের বাইরে বেড়ল না রাহেলা। পাথরের মূর্তির মতো বিছানার ওপর বসে রইলো।
প্রায় দুপুরের দিকে ঘরে ফিরলো ফয়সাল নামের ছেলেটা। এসেই রাহেলার পায়ের কাছে হাটু গেড়ে বসে কান্নায় ভেঙে পড়লো :
আমারে মাপ করে দেন , আপা! আমার নিয়ন্ত্রণ ছিল না নিজের ওপর। প্লিজ আপা। এইসব আশেপাশের লোকজন জানলে সব শেষ হয়ে যাবে আমার। আমি গরিব। আমার গ্রামে পরিবার পথে বসে যাবে । আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। আপনে আমার বড় আপা, আমারে মাপ করে দেন।
রাহেলা বিহ্বল দৃষ্টিতে ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। এই চেহারার সাথে সেই চেহারা কিছুতেই মেলাতে পারছে না। তার ভেতর কোনো প্রাণ নেই । তাই সে কোনো কথা বলতে পারলো না।
ছেলেটা যে তার পা চেপে ধরে ফুপিয়ে কাঁদছে ছেলেটাকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও তার নেই। ছেলেটা আবার ফুপিয়ে উঠে বলল :
প্লিজ আপা! এইবারের মতো আমারে ক্ষমা করেন। আপনি যা বলবেন তাই আমি করবো। প্রয়োজনে আপনার স্বামীরে যেখান থিকা পারি খুঁজে এনে দিব। আপনারে কাজের ব্যবস্থা করে দিব। আপনি চাইলে গ্রামে পৌছাইয়া দিব। প্লিজ আমারে মাপ করেন!
রাহেলা তবুও কথা কথা বলে না। ছেলেটা এবার পকেট থেকে কয়টা পাঁচশ টাকার নোট বের করে রাহেলার পাশে রেখে বলল :
এই টাকা কয়টা রাখেন । লাগলে আরো দিব। আপনি চলে যান।
এবার রাহেলার হুস ফিরলো। চলে যান ! চলে যান! বিড়বিড় করে বলল সে। ফয়সাল ভয় পেয়ে গেল উদ্ভ্রান্তের মতো এই কন্ঠ আর দৃষ্টি শুনে। টাকার দিকে সে ফিরেও তাকালো না। তার এক সেট জামা বাথরুমে পড়ে রইলো। সে রান্নাঘর থেকে নিজের ব্যাগটা তুলে নিয়ে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে এলো। বোরকা পড়েনি সে। বোরকাও রান্না ঘরে পরে রইলো। চুল উস্কোখুস্ক। বিড়বিড় করে বলছে ” চলে যান ! চলে যান ! ” আর হেটে চলেছে ভয়ংকর এই শহরের একটি গলির রাস্তা দিয়ে। ……………………………
.
.
. . . . . চলবে . . . . .
.
.
লেখা: #Masud_Rana