#ভ্যাম্পায়ার বর
পর্ব ১৯
#M_Sonali
চাঁদনীর কথা শুনে চাঁদনীর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে চাঁদনীর মুখামুখি বসে শ্রাবন বলতে শুরু করল,,,
— ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের কিং অ্যারিক আর রাণী আরিশার একমাত্র ছেলে আর মেয়ে হলাম আমি আর শ্রাবণী। আমরা ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের রাজকুমার এবং রাজকুমারী। আর আমাদের বেষ্ট ফ্রেন্ড আকাশ।ও আমাদের আব্বুর বন্ধুর ছেলে। ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের মধ্যে আমার, শ্রাবণী ও আকাশের শক্তি সবচাইতে বেশি। আকাশের সাথে শ্রাবনীর বিয়েও ঠিক করা আছে।ওরা দুজন দুজনকে ভালবাসে। আমরা কখনই আমাবস্যা রাতে শক্তিহীন হই না। আমাদের মত অন্য সব ভ্যাম্পায়ারেরা অমাবস্যার রাতে শক্তিহীন হয়ে যায়। তবে শয়তান ভ্যাম্পায়াররা হয় ভীষণ শক্তিশালী। কিন্তু কোন একটা কারণে আমাদের শক্তি একটুও ক্ষুন্ন হয় না। কিন্তু এই কথাটা আমরা কেউ আগে জানতাম না। কালকে রাতেই বুঝতে পেরেছি। আমরা তিনজন ভ্যাম্পায়ার হলেও আমাদের তিনজনের মাঝে আলাদা একটা ধরন ছিল। অন্য ভ্যাম্পায়ার থেকে আমরা একটু ভিন্ন। আমরা তিনজন নিজেদের ইচ্ছামত থাকতে পারতাম। আমরা যে ভাবে মানুষের সাথে মিশতে পারি আমাদের সহ পাঠি ভ্যাম্পায়ারটা সেটা পারে না। মানুষ দেখলে ওদের মনে রক্তের নেশা জেগে ওঠে। ওরা নিজেদের কন্ট্রোলে রাখতে পারেনা। রোদের মধ্যেও বের হতে পারতাম আমরা যেটা অন্য ভ্যাম্পায়ারেরা পারেনা।। আমাদের হার্ট আছে সেটা বিট করে। যেটা অন্যসব ভ্যাম্পায়ারদের নেই। আমরা কান্না করলে আমাদের চোখ দিয়ে মানুষের মতো পানি বের হয়। যেটা অন্যসব ভ্যাম্পায়ারদের ক্ষেত্রে রক্ত বের হয় চোখে কান্না করলে। আমরা মানুষের মত ঘুমাতে পারি। কিন্তু অন্য সব ভ্যাম্পায়ারেরা ঘুমায় না। ওরা ঘুমাতে জানেনা। আমরা নিজেরাও জানিনা আমাদের মধ্যে এমন ডিফারেন্স হওয়ার কারণটা কি?
এক নিঃশ্বাসে এতোটুকু বলে থামল শ্রাবণ। শ্রাবণ এর কথা শুনে চাঁদনী অবাক হয়ে বললো
— তাহলে আপনারা যদি ভ্যাম্পায়ারই হন তাহলে আপনারা মানুষের রাজ্যে এসে পড়াশোনা করার জন্য কেন কলেজে ভর্তি হলেন শ্রাবণ? আমি জানতে চাই এটার কারণ?
— ছোটবেলা থেকেই আমার, শ্রাবণীর আর আকাশের মানুষের প্রতি আগ্রহ একটু বেশি ছিল। আমরা কোন মানুষের ক্ষতি করতাম না। হ্যাঁ আমরা মানুষ মারেনি তা কিন্তু নয় আমরাও মানুষ মারতাম। কিন্তু শুধুমাত্র তাদেরই মারতাম যারা খারাপ মানুষ, মানুষের ক্ষতি করত তাদের। আমার এই মানুষের প্রতি আগ্রহ থাকার কারণে আমি আব্বু আম্মুকে রাজি করিয়ে মানুষের রাজ্যে চলে আসি। মানুষের রূপে কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করার জন্য। আমার পিছু পিছু শ্রাবনীও আসতে চায় আমার সাথে। কেননা আমার মত ওরও ছিল মানুষের প্রতি আগ্রহ। শেষে আমাদের জেদের কাছে হার মেনে নিয়ে আব্বু আম্মু রাজী হয়ে যায় আমাদের মানুষের দুনিয়ায় পাঠাতে। আমরা চলে আসি, আমাদের সাথে আকাশও আসতে চেয়েছিল কিন্তু কোন একটা কারণে আকাশকে আটকে দেয় ওরা। আসতে দেয় না ওকে। কিন্তু দেখো কালকে শ্রাবণীর ভালবাসার টানে চলে এসেছে আকাশ। আকাশ ঠিক সময় না আসলে হয়তো আমার জীবনটা শেষ হয়ে যেত কালকে। আকাশ ঠিক সময় না আসলে আমারও হয়তো মৃত্যু ঘটে যেত। আকাশই কালকে আমায় বাঁচিয়েছে।
শ্রাবণের কথা শুনে যেন বুকের মধ্যে কেঁপে উঠল চাঁদনীর। চাঁদনী গিয়ে শ্রাবনকে জড়িয়ে ধরল। জড়িয়ে ধরে বলল
— প্লীজ আপনি এমন কথা বলবেন না শ্রাবন, আপনার কিছু হবেনা। আপনি না থাকলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো বলুন। আমি আপনাকে ভালোবাসি। এই কথা বলবেন না আমার সামনে আর কখনো। আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না শ্রাবণ।
চাঁদনীর কথা শুনে চাঁদনীকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল শ্রাবণ। তারপর চাঁদনীর মাথায় হাত বুলিয়ে শ্রাবন আস্তে আস্তে বলল
— এই পাগলি তুমি এত উত্তেজিত হচ্ছো কেন বলতো? দেখতো আমি তোমার সামনে একদম সুস্থভাবে বসে আছি কিছু হয়নি আমার। আর আমি থাকতে তোমারও কিছু হবে না চাঁদ পাখি। একদম টেনশন করবেনা তুমি বুঝলে।
শ্রাবণের কথা শুনে শ্রাবনকে ছেড়ে দিয়ে চাঁদনী বলল
— আচ্ছা শ্রাবণ আপনারা তাহলে কি খান? আমিতো আপনাকে বা শ্রাবণীকে কখনো কিছু খেতে দেখিনি? শ্রাবনীকে সব সময় কিছু খাওয়ার কথা বললে এড়িয়ে চলত। আপনিও ঠিক একই কাজ করেন। আপনারা কি খান আসলে আমি জানতে চাই?
চাঁদনীর কথা শুনে মাথা চুলকাতে চুলকাতে শ্রাবন বলল
— এটা কি না শুনলেই নয় চাঁদ পাখি?
শ্রাবণের কথা শুনে চাঁদনী কোমড়ে হাত দিয়ে রাগি গলায় বললো
— না শুনলে নয় মানে, জলদি বলো বলছি ব্যাটা শ্রাবইন্না কি খাও তুমি?
চাঁদনী কে এমন রাগ করতে দেখে মুচকি হাসলো শ্রাবণ। তারপর চাঁদনীকে হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কোলের মধ্যে বসিয়ে চাঁদনীর কানে কানে বলল
— আমরা খারাপ মানুষের এবং জীবজন্তুর রক্ত খাই চাঁদ পাখি। কারন এটাই হলো ভ্যাম্পায়ারদের আসল খাবার।
শ্রাবণের কথা শুনে ভয়ে চোখ বড় বড় করে শ্রাবণের দিকে তাকালো চাঁদনী। তারপর দুইবার শুকনো ঢোক গিলে বলল
— তা তা তার মানে আপনি আমার রক্তও খাবেন?
চাঁদনীর কথা শুনে মুচকি হাসলো শ্রাবণ। তারপরে চাঁদনীর কানে কানে আস্তে করে বললো
— উহু আমি তোমার রক্ত নয় বরং তোমায় খাব সুইটহার্ড।
কথাটা বলেই চাঁদনী কে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার রাজ্যে ডুব দিল শ্রাবণ।
,
,
কেটে গেছে সাতটা দিন
আজকে চাঁদনী ফিরে যাবে ওর নিজের বাসায়। তাই সকাল থেকেই শ্রাবণের মনটা খুব খারাপ। ওর কিছুই ভালো লাগছেনা চাঁদনীকে আজকে দিয়ে আসতে হবে এটা ভেবে। এই সাতটা দিন যেন স্বপ্নের মত কেটেছে চাঁদনী আর শ্রাবণের। দুজনেই সারাক্ষণ ভালোবাসার রাজ্যে যেনো ডুবে থেকেছে সব সময়। দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া ভালোবাসা খুনসুটিতে ভরে ছিল ওদের এই সাতটা দিন।
চাঁদনী ব্যাগের মধ্যে সবকিছু গোছগাছ করছে হঠাৎ শ্রাবন দৌড়ে এসে চাঁদনী কে জড়িয়ে ধরলো। জড়িয়ে ধরে ধরা গলায় বলতে লাগলো
— চাঁদ পাখি আর কয়েকটা দিন কি আমার কাছে এখানে থাকা যায় না? যেতেই হবে তোমায়? আমার যে তোমায় যেতে দিতে ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে করছে না তোমাকে তোমার বাসায় দিয়ে আসতে। থাকো না প্লিজ আর কয়েকটা দিন আমার কাছে।
শ্রাবণের কথা শুনে মুচকি হেসে শ্রাবনের দিকে তাকিয়ে চাঁদনী বলল
— এই পাগল, তোমার কি মনে হয় আমার ভালো লাগছে বাসায় যেতে তোমাকে ছেড়ে? কিন্তু কি করবো বলো বাসায় তো আমাকে যেতেই হবে। আর তাছাড়া তুমি তো রাতে রাতে বাসায় যাবেই আমার কাছে। কি যাবে না আমার কাছে?
চাঁদনীর কথা শুনে কান্না করে দিয়ে শ্রাবন বলল
— তোমার কাছে যাবো না তো কার কাছে যাবো পাগলী? তোমাকে ছাড়া যে আমার একটা মুহূর্ত থাকা অসম্ভব হয়ে পরেছে। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে আমার কি করে থাকবো তোমায় ছেড়ে?
শ্রাবণের কথা শুনে চাঁদনী আবার মুচকি হেসে শ্রাবনকে জড়িয়ে ধরে বললো
— বাব্বাহ একটা পিওর ভ্যাম্পায়ার, হিংস্র একটা বাম্পারের চোখেও পানি আসে তাও আবার আমার জন্যে? ভাবতেই অবাক লাগছে, আমি কি সৌভাগ্যবতী ভাবা যায়।
চাঁদনীর কথা শুনে শ্রাবন চাঁদনীকে জড়িয়ে ধরে মুচকি হাসলো। তারপর দুজনেই বেশ কিছুক্ষন খুনসুটি দু্ষ্টুমি করে তারপর রেডি হয়ে নিলো বাসায় ফেরার জন্য। রেডি হয়ে চাঁদনী বলল
— এখন বাসায় যাব কিভাবে আর এটা কোন জায়গা আমি তো সেটাও জানিনা শ্রাবণ?
চাঁদনীর কথা শুনে হাসি দিয়ে শ্রাবন বলল
— এটা একটা দ্বীপ, আমরা এখন সমুদ্রের মাঝখানে একটা দ্বীপের উপরে আছি। এই জায়গাটার খবর শুধু আমরা তিনজন ভ্যাম্পায়ার ছাড়া আর কেউ জানে না। শ্রাবণী আমি আর আকাশ মিলে এই বাড়িটা তৈরি করেছি আমরা। এখানে শুধু আমরা তিনজন ছাড়া আর কেউ আসতে পারবে না। আর আমরা ছাড়া এই জায়গাটার খবর কেউ জানেও না। এখানে থাকার জন্যই আমরা জায়গাটা তৈরি করেছি আর এই জায়গাটা এখন হয়ে গেছে তোমার আর আমার বাড়ি। ভবিষ্যতে হয়তো আকাশ আর শ্রাবণীও এখানে আমাদের সাথে থাকবে। কেন জায়গাটা তোমার ভালো লাগেনি চাঁদপাখি?
— হুমম, জায়গাটা অনেক সুন্দর শ্রাবণ। আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। কিন্তু এখানে এসে থাকা আমার সম্ভব নয়। আপনি তো ভালো করেই জানেন আমি আমার আব্বু আম্মুকে অনেক ভালোবাসি। তাঁদের ছেঁড়ে আমি এখানে এসে কোনদিনও আপনার কাছে থাকতে পারবো না। আর তাছাড়া আমি বুঝতে পারছি না এবার বাসায় গিয়ে কি বলবো আমি। আব্বু যদি আমার অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চায় তখন আমি কি করবো শ্রাবণ। আপনি তো আমাদের বিয়ের কথা আব্বু আম্মুকে বলতে দেবেন না।
চাঁদনীর বিয়ের কথা শুনেই রেগে আগুন হয়ে গেল শ্রাবণ। শ্রাবণ হুংকার দিয়ে বলে উঠল
— কক্ষনো না তোমার বিয়ে অন্য কোথাও হতে পারেনা চাঁদ পাখি। তুমি শুধু আমার আর আমারই থাকবে। অন্য কেউ যদি আমাদের মাঝে আসার চেষ্টা করে আমি তাকে শেষ করে দেব। একেবারে মেরে ফেলবো তাকে আমি। দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দেবো সেই মানুষটাকে। তুমি শুধু আমার আর আমারই থাকবে চাঁদ পাখি।
শ্রাবনের এমন হিংস্র রূপ দেখে চাঁদনী হালকা ঘাবড়ে গেল। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে শ্রাবনকে বুকে জড়িয়ে বলল
— আমিও আপনাকে ছাড়া অন্য কারো কথা চিন্তাও করতে পারিনা শ্রাবণ। আমিও শুধু আপনাকেই ভালোবাসি আর আপনার হয়ে থাকতে চাই। কিন্তু আপনি তো আব্বু আম্মুকে আপনার আর আমার বিষয়ে কোন কিছু বলতে দেবেন না তাহলে আমি কি করবো বলুন। আব্বু যদি আমায় জিজ্ঞেস করে আমি কেন বিয়ে করতে চাই না তখন আমি তাদের কি বলবো?
— তাহলে আমি তোমাকে আর কোথাও যেতে দেবোনা চাঁদপাখি। তুমি এখানেই থাকবে তোমার যেতে হবে না তোমার বাবা-মার কাছে। তুমি এখানেই থাকবে সবসময় আমার কাছেই থাকবে। তোমাকে আর আমি নিয়ে যাব না ফেরত তোমার আব্বু আম্মুর কাছে।
— এ আপনি কি বলছেন শ্রাবন, আমি এভাবে কখনোই আপনার সাথে থাকতে পারব না। আপনি ভুলে যাবেন না আপনার সাথে বিয়ে হওয়ার আগে আমি আব্বু আম্মুর একমাত্র মেয়ে।তাই আমি তাদের কাছে যাবো তাদের অনুমতি ছাড়া আপনার সাথে থাকতে পারবো না আমি। আর তা ছাড়া আপনাকে আমি কথা দিচ্ছি শ্রাবণ, আমি আপনাকে ছাড়া অন্য কারো হবো না। কাউকে বিয়ে করব না আমি। কিন্তু আমাকে একটু সময় দিন আমি যে কোনোভাবে হোক কোন কিছু করে আব্বু আম্মুকে মানিয়ে নেব। তবে এতটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন যে আপনার জায়গাটা আমার কাছ থেকে আর কেউ পাবে না।
এভাবে আরো বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করে রেডি হয়ে নিল চাঁদনী বাসায় আসার জন্য। প্রাসাদ থেকে বাইরে বের হতেই শ্রাবণ বললো
— এখন তুমি চোখ বন্ধ করো চাঁদ পাখি আমি তোমায় নিয়ে যাচ্ছি।
চাঁদনী শ্রাবনের কথা শুনে মুচকি হেসে বলল
— নাহ শ্রাবন, আজকে আমি চোখ বন্ধ করে আপনার সাথে যাব না। আমি দেখতে চাই আপনি কিভাবে আমাকে এখানে নিয়ে আসেন, আবার নিয়ে যান। আজ আমি চোখ খোলা রেখে আপনার সাথে যেতে চাই আমার ভ্যাম্পায়ার বরের সাথে।
চাঁদনীর কথা শুনে মুচকি হেসে চাঁদনীকে কোলে তুলে নিল শ্রাবণ। তারপর বলল
–ঠিক আছে আজকে আমার বউটার আব্দার না হয় রাখলাম। তুমি আমার কোলে চলে বুকের সাথে মিশে থেকে চলো যাই।
— কেন, আমি আপনার কোলে নয় বরং আপনার কাঁধে উঠে যেতে চাই শ্রাবণ।
— না চাঁদ পাখি তুমি আমার কাঁধে নয়, আমার বুকের সাথে মিশে আমাকে জড়িয়ে ধরে যাবে। কেননা তোমার স্থান একমাত্র আমার বুকে তুমি শুধু আমার বুক জুড়ে থাকো সবসময়।
শ্রাবনের কথা শুনে লজ্জা মাখা মুখ করে শ্রাবণের গলা জড়িয়ে ধরলো চাঁদনী। আর এক মুহূর্ত দেরি না করে চাঁদনী কে নিয়ে উড়াল দিলো শ্রাবন।চাঁদনী অবাক চোখে চারিদিকটা দেখতে লাগলো। কি সুন্দর বরের কোলে চলে উড়ে বেড়াচ্ছে ও। কিছুক্ষণ সময়ের মধ্যেই চাঁদনীকে নিয়ে চাঁদনীর বাসার সামনে পৌছে গেলো শ্রাবন।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,