#প্রেমাতাল
পর্ব ৪১
লেখিকাঃ মৌরি মরিয়ম
গোয়াইনঘাটে নৌকার ঘাট থেকে কিছুটা আগে গাড়ি রেখেছিল মুগ্ধ। সাঁতরে সাঁতরে শরীর ক্লান্ত দুজনেরই। যা খেয়েছিল তা সব শেষ। এটুকু হেটে গাড়ির কাছে আসতেও খুব কষ্ট হলো। এসে মুগ্ধ বলল,
-“তুমি গাড়িতে ঢুকে চেঞ্জ করে নাও। তোমার হয়ে গেলে আমি ঢুকবো।”
-“এখানে আমি চেঞ্জ করবো?”
-“হ্যা কে আছে দেখবার জন্য? আশেপাশে তো কেউ নেই।”
-“তা ঠিক, তবুও।”
-“আরে মানুষ গাড়িতে সেক্স করতে পারলে তুমি চেঞ্জ করতে পারবে না?”
-“ছিঃ তুমি অলওয়েজ নোংরা কথা বলতে পছন্দ কেন করো?”
মুগ্ধ হেসে বলল,
-“আমি একটা নোংরা লোক যে তাই।”
তিতির গাড়ির মধ্যে ঢুকে গেল। মুগ্ধ বলল,
-“নিচু হয়ে চেঞ্জ করে নাও। চিন্তা করোনা কেউ আসতে নিলে আমি তোমাকে বলবো। আর আমিও তাকাবোনা।”
তিতির চেঞ্জ করে সামনে চলে গেল। তারপর মুগ্ধ ঢুকে চেঞ্জ করে গাড়ি স্টার্ট দিল। তখনও বাইরে তুমুল বৃষ্টি।
হাদারপাড় পৌঁছতেই মুগ্ধ বলল,
-“তিতির চলো ভাত খেয়ে নিই, এখানে ভাতের হোটেল আছে।”
-“এখন আবার নামতে ইচ্ছে করছে না। একেবারে রিসোর্টে গিয়ে খাই।”
-“ক্ষিদে পেয়েছে খুব।”
-“ও, আচ্ছা চলো তাহলে।
কয়েক কদম হেটেই ওরা একটা হোটেলে ঢুকলো। খেতে খেতে তিতির বলল,
-“এই ভাতগুলো এমন কেন?”
-“আতপ চালের ভাত যে!”
-“আমরা কোন চালের ভাত খাই তাহলে?”
-“সিদ্ধ চালের।”
-“ও। ধুর এগুলো আমার গলায় আটকাচ্ছে।”
-“আহারে আমার তিতিরপাখিটা রে। এইবেলাটা একটু কষ্ট করে খেয়ে নাও। রাতে রিসোর্টে খাব।”
-“অন্য কোনো হোটেলে খেতাম।”
-“লাভ নেই পুরো সিলেটে আতপ চালের ভাত হয়। রিসোর্টে আছি বলে যা চাচ্ছি তাই পাচ্ছি। ইভেন সিদ্ধ চালের ভাতও।”
-“ও।”
মুগ্ধ গপাগপ পেটপুরে খেয়ে নিল। কিন্তু তিতির কোনরকমে অর্ধেকটা ভাত খেল। তারপর বাইরে আসতেই দেখলো সন্ধ্যা নেমে গেছে। মুগ্ধ বলল,
-“এখানে মেলা হচ্ছে দেখলাম, যাবে?”
তিতির অবাক হয়ে বলল,
-“এই বৃষ্টিতে মেলা হচ্ছে?”
-“সিলেটে তো ডেইলিই বৃষ্টি হয়। তার জন্য কিছু থেমে থাকে না। আর স্টল আছে তাই কোন প্রব্লেমও নেই। ঢাকার বাইরের মেলাগুলো কিন্তু অনেক উপভোগ্য হয়।”
-“ও, আচ্ছা চলো যাই ঘুরে আসি।”
-“চলো। ভিজে যাব কিন্তু যেতে যেতে।”
-“ভিজলে ভিজবো। একেবারে রিসোর্টে গিয়ে চেঞ্জ করে নেব।”
-“আচ্ছা, চলো তাহলে।”
মেলায় ঘুরতে ঘুরতে তিতির বুঝলো মুগ্ধর কথা ঠিক, ঢাকা শহরের মেলার থেকে এখানকার মেলা বেশি সুন্দর। খুব ভাল লাগলো ওর। একটা দোকানে ঘুরতে ঘুরতেই মুগ্ধ ডাক দিয়ে বলল,
-“এই এদিকে এসো।”
তিতির মুগ্ধর কাছে গিয়ে বলল,
-“কি?”
মুগ্ধ ওকে একটা লাল মনিপুরী শাড়ি দেখিয়ে বলল,
-“দেখো, শাড়িটা সুন্দর না?”
-“হ্যা সুন্দর।”
-“তোমার জন্য নিই।”
-“এই না। এমনিতেই যেটা কাল কিনেছো ওটা বাসায় নিতে পারবো না। আরেকটা নিয়ে কি হবে?”
-“আজকে রাতে পড়বে। আমি হা করে দেখবো। দেখোনা শাড়িটা কত্ত সুন্দর লাল। তোমাকে খুব ভাল দেখাবে এটাতে।”
-“লাল শাড়িতে তো কত্ত দেখেছো! আচ্ছা কালকের শাড়িটাও তো অর্ধেকটা লাল। রিসোর্টে গিয়ে ওই শাড়িটা পড়বোনে তখন দেখো। এটা কিনে শুধু শুধু টাকা নষ্ট করোনা।”
-“টাকা নষ্ট বলছো কেন? এসব শাড়ির দাম বেশি না। তাছাড়া, আমি দেখবো। সেটার কি দাম নেই? এজন্যই আমি কোনকিছু কেনার আগে বলিনা। বলে কিনতে গেলেই তুমি এরকম উল্টাপাল্টা কথা বলে মুড নষ্ট করে দাও। এরকম করলে তোমার সংসার ভেসে যাবে কিন্তু।”
-“আচ্ছা আচ্ছা, সরি খুব ভুল হয়েছে আমার। যাও কেনো।”
মুগ্ধ শাড়িটা কিনে নিল। তারপর বলল,
-“তিতির, আমি একটু ওয়াশরুমে যাব। ৫ মিনিটে আসছি, তুমি এই দোকানটাতেই দাঁড়াও। অন্য কোথাও যেও না। ফোন কিন্তু গাড়িতে। পরে হারিয়ে গেলে খুঁজে পাবনা।”
-“তুমি চিন্তা করোনা, আমি এখানেই থাকবো।”
তিতির শাড়ির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ চোখে পড়লো পাশেই একটা লোক কিছু একটা বিক্রি করছে। মানুষ খুব খাচ্ছে। তিতির লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো,
-“মামা, এগুলো কি?”
লোকটা উত্তর দিল,
-“ভাং এর শরবত।”
তিতিরের মনের ভেতরটা নেচে উঠলো.. ভাং এর শরবত! শুধু শুনেই এসেছে, জীবনে খায়নি। এখন দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু মুগ্ধ এলে কিছুতেই খেতে দেবে না। বলবে, ‘নেশা হয়ে যাবে।’ আরে বাবা হোক না, একটু আধটু নেশা হলে কি হয়!
সাতপাঁচ ভেবে মুগ্ধ আসার আগেই এক গ্লাস খেয়ে ফেলল তিতির। পরে আরেক গ্লাস দিতেই মুগ্ধ চলে এল। ওকে দেখতে পেয়ে বলল,
-“তিতির, কি খাচ্ছো এগুলো?”
-“ও তুমি চলে এসেছো? অনেক মজার জিনিস, খাওনা।”
একথা বলেই গ্লাস টা মুগ্ধর দিকে ধরলো।
-“আগে বলবে তো কি এটা?”
-“সারপ্রাইজ! খাও না।”
মুগ্ধ খেয়ে বলল,
-“এটা তো ভাং, তুমি এটার আগেও খেয়েছো?”
-“এক গ্লাস মাত্র।”
-“সর্বনাশ করেছো।”
তারপর ভাং এর দাম মিটিয়ে তিতিরকে টানতে টানতে নিয়ে গেল। গাড়িতে উঠেই তিতির বলল,
-“এই তুমি রাগ করেছো?”
মুগ্ধ ঝারি দিয়ে বলল,
-“নাহ, আনন্দে নাচছি।”
-“এত রাগ কেন করছো? ভাং তো অনেক মজা।”
-“কিছুক্ষণের মধ্যেই নেশা হয়ে যাবে, তখনকার পাগলামিগুলো কে সামলাবে?”
তিতির দুষ্টু দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল,
-“কেন তুমি।”
-“একটা কথাও বলবেনা আমার সাথে।”
মুগ্ধ এমন ব্যবহারে তিতিরও রাগ করলো। কি এমন করেছে ও! এক গ্লাস ভাং ই তো খেয়েছে। তার জন্য এমন ব্যবহার? তিতির সত্যিই আর একটা কথাও বলল না।
রিসোর্টে ফিরে তিতিরের দিকে তাকাতেই মুগ্ধ দেখতে পেল তিতির ঘুমাচ্ছে। ওর গায়ের কাপড় খানিকটা শুকিয়ে গেছে। ওর নিজের গায়ের কাপড়েরও পানি ঝরে গেছে। কখন ঘুমিয়ে পড়লো মেয়েটা? ইশ এভাবে বকাটা উচিৎ হয়নি। কিন্তু মাঝেমাঝে এমন বোকামি করে মেয়েটা!
পাড়ি পার্ক করে তিতিরকে কোলে নিয়ে রুমে চলে গেল। ভেতরে ঢুকে ওকে কোলে নিয়েই দরজাটা লক করে দিল। তারপর ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে উঠে যাচ্ছিল এমন সময় তিতির ওর কলার টেনে ধরে মিষ্টি একটা হাসি দিল। মুগ্ধ হেসে বলল,
-“ঘুমের ভান করা হচ্ছিল?”
-“এত বকলে কি করবো তাহলে?”
তিতিরের গলা শুনেই মুগ্ধর বুঝতে বাকী রইলো না যে ওর নেশা হয়ে গেছে। আর হবেই বা না কেন ওরই তো মাথাটা ঝিমঝিম করছে। বলল,
-“এত বকলাম কোথায়? কিন্তু এত বকার মতই কাজ করেছো তুমি।”
-“একটু ভাং ই তো খেয়েছি। খেলে কি কয়?”
-“নেশা হয়রে বাবা।”
তিতির মুগ্ধর কলার ধরে টেনে আনলো নিজের কাছে, একদম কাছে। তারপর বলল,
-“নেশা হলেই তো ভাল। নিজেকে কেমন হালকা হালকা লাগে। দুনিয়াটা ঘুরতে থাকে বেশ লাগে আমার।”
মুগ্ধ মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো। তিতির আচমকা ওর ঘাড়ে হাত রেখে আরো কাছে এনে ওর ঠোঁটে উথাল পাথাল চুমু দিতে লাগলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইন্টারকমে ফোন এল। মুগ্ধ উঠে যেতেই তিতির চিৎকার করে বলল,
-“কে ফোন করেছে? আমি ওর চাকরি খাব।”
মুগ্ধ একথায় হেসে দিল। তারপর ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ম্যানেজার বলল,
-“স্যার আপনার ওয়ালেট টা পড়ে গিয়েছিল রিসিপশানে। আমি কি এটা এখন পাঠিয়ে দেব? নাকি পরে?”
-“ওহ! থ্যাংকস আ লট। প্লিজ পাঠিয়ে দিন।”
কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই কেয়ারটেকার ছেলেটি ওয়ালেট নিয়ে এল। মুগ্ধ সেটা কালেক্ট করে ভেতরে আসতেই তিতির ওর গলাটা জড়িয়ে ধরে বলল,
-“আমি ওই শাড়িটা পড়বো।”
-“ওহ হো। ওটা তো গাড়িতে। তোমাকে কোলে করে নিয়ে এলাম না? ওগুলো তো আনা হয়নি। দাঁড়াও নিয়ে আসছি।”
তিতির মুগ্ধকে আরো শক্ত করে ধরে বলল,
-“না তুমি যেতে পারবে না, ওই বদ ছেলেটাকে বলো দিয়ে যেতে। তাহলে মাফ করে দেব একটু আগে যে ডিস্টার্ব করেছে সেজন্য।”
মুগ্ধ তিতিরের কোমর জড়িয়ে ধরে হেসে বলল,
-“ওর কাছে কি গাড়ির চাবি আছে? পাগলী! তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি নিয়ে আসছি।”
মুগ্ধ শাড়ি, ভেজা কাপড় সব নিয়ে এসে ঘরে ঢুকে বলল,
-“আমি ভেজা কাপড়গুলো বারান্দায় মেলে দিয়ে আসি। তুমি শাড়িটা পড়ে নাও।”
তিতির শাড়ি পড়ে বারান্দায় গিয়ে দেখলো মুগ্ধ ডিভানে বসে আছে। তিতির মুগ্ধর সামনে গিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখালো আর বলল,
-“কেমন লাগছে আমাকে?”
মুগ্ধ তিতিরের সামনে দাঁড়িয়ে কোমর জড়িয়ে বলল,
-“পরী, আমার পরী।”
তিতির তার সেই মিষ্টি হাসিটা দিল। মুগ্ধ বলল,
-“চোখ বন্ধ করো।”
তিতির চোখ বন্ধ করলো। মুগ্ধ মেলা থেকে কেনা একপাতা টিপ বের করলো পকেট থেকে। তারপর একটা লাল টিপ পড়িয়ে দিল তিতিরের কপালে। তিতির চোখ খুলতেই বলল,
-“শাড়ির সাথে টিপ না হলে চলেই না।”
তিতির মুগ্ধর গলাটা ধরে পায়ের বৃদ্ধাঙুলের উপর ভর দিয়ে উঁচু হয়ে মুগ্ধর একদম কাছে চলে গেল। ও চাইছে মুগ্ধ ওকে আদর করুক। মুগ্ধও বুঝতে পারলো। তিতিরের কোমরটা আরো শক্ত করে ধরে চুমু খেল ওর ঠোঁটে। অনেকক্ষণ ধরে। তারপর হঠাৎ ই বিদ্যুৎ চমকালো। বৃষ্টি নামলো। তারপর আচমকাই তিতিরকে কোলে তুলে নিয়ে ঘরে ঢুকলো মুগ্ধ। তিতির বলল,
-“চলোনা, ভিজি।”
-“ভিজবো। সারাদিন তো প্রাকৃতিক বৃষ্টিতে ভিজেছিই। এবার অন্য বৃষ্টিতে ভিজবো।”
-“কোন বৃষ্টি?”
-“দেখাচ্ছি।”
মুগ্ধ তিতিরকে কোলে করে হেটে হেটে নিয়ে বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিল। যতক্ষণ কোলে ছিল তিতির ততক্ষণই মুগ্ধর গলাটা জড়িয়ে ধরে মোহময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ওর দিকে। তেমনি মুগ্ধও তাকিয়ে ছিল তিতিরের ঠিক চোখের দিকে।
তিতিরকে বিছানায় শুইয়ে দিতেই ওর আঁচলটা পেটের উপর থেকে সরে গেল। এই দৃশ্য দেখামাত্রই মুগ্ধ যেন সব কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলল। নাভিতে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিল কতক্ষণ। তারপর ঠোঁট না সরাসরি জিহ্বা দিয়ে আদর করতে লাগলো ওর নাভিতে। তিতির মুগ্ধর চুলগুলো খামচে ধরে সাপের মত মোড়ামুড়ি করতে লাগলো। উফফ কি করছে মুগ্ধ! ও তো সুখে মরেই যাবে! কিছু বলতে গিয়েও তিতির একটা কথাও বের করতে পারলো না। হঠাৎ মুগ্ধ ওর খোঁচা খোঁচা দাড়িগুলো ঘষে দিল তিতিরের পেটে। তিতির ব্যাথায় একটা চিৎকার দিল। মুগ্ধ ওর ঠোটে চুমু দিয়ে চিৎকার থামালো। তারপর তাকিয়ে রইলো তিতিরের দিকে। কি মায়া! আল্লাহ কি পৃথিবীর সব মায়া ওর মুখটাতে দিয়ে রেখেছে? তিতির চোখ খুললো। মুগ্ধর চোখে চোখ পড়তেই লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিল। মুগ্ধ তিতিরের মুখটা ধরে কপালে একটা চুমু দিল। তিতির আবেশে চোখদুটো বন্ধ করে ফেলল। মুগ্ধ বোঁজা চোখদুটিতেও চুমু দিল। তারপর গালে চুমু দিল, তারপর ঠোঁটের আশেপাশে। তারপর আবার ঠোঁটে চুমু খেল। এরপর নেমে গেল গলায়। অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিল। তিতির ততক্ষণে মুগ্ধর কান কামড়াতে শুরু করে দিল।
তারপর মুগ্ধ উঠে বসলো। তিতিরের কোমরটা ধরে ওকেও উঠিয়ে বসিয়ে আঁচলটা ফেলে দিল। আবার চুমু দিতে যাচ্ছিল এমন সময় তিতির ওকে বাধা দিল, টি-শার্টটা খুলতে বলতে চাইলো। কিন্তু সমস্ত আবেগ যেন গলার মধ্যে আটকে গেছে। বলতে না পেরে নিজেই খুলে ফেললো, মুগ্ধও হেল্প করলো। তারপর তিতির পাগলের মত কামড় দিতে লাগলো মুগ্ধর বুকে। মুগ্ধর খুব ব্যথা লাগছিল কিন্তু বাধা দেয়নি কারন একই সাথে ওর ভালও লাগছিল। আস্তে আস্তে তিতির কামড়ানো থামালো। এবার চুমু দিতে শুরু করলো। বুক থেকে চুমু দিতে দিতে উপরে উঠতে লাগলো। গলায় চুমু দিল তারপর গালে চুমু দিতেই মুগ্ধ তিতিরের ঠোঁট কামড়ে ধরলো। তারপর চুমু দিল। তিতিরও চুমু দিল। যেন প্রতিযোগিতা লেগেছে কে কার থেকে বেশি আর নিবিড়ভাবে চুমু দিতে পারে! ততক্ষণে মুগ্ধর হাত চলে গেল তিতিরের কোমরে। শাড়ির কুচিগুলো ধরে কোমর থেকে খুলে পুরো শাড়িটাই ছুড়ে ফেলে দিল ফ্লোরে। তারপর মুগ্ধ তিতিরকে উলটো ঘুড়িয়ে ভেজা চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ে চুমু দিল। একটা, দুটো, অসংখ্য। প্রত্যেকটা চুমুতে তিতির কেপে কেপে উঠছিল। ওর ব্লাউজের ফিতাটা মুগ্ধ একটা টান দিয়ে খুলে ফেলল। ব্লাউজের পিছনের হুকগুলো খুলে পিঠে চুমু দিল। তারপর ব্লাউজটা টেনে খুলবার সময় বাধা দিল তিতির। কোনরকমে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,
-“লাইট টা বন্ধ করে নাও প্লিজ।”
অস্থির মুগ্ধ বলল,
-“না, কেন?”
-“আমার লজ্জা লাগবে নাহলে।”
-“হুম, লাগুক। আমি তো তোমার লজ্জাটাই দেখতে চাই। আই লাভ ইট।”
-“না প্লিজ, আমি তাহলে মরে যাব।”
-“আমি তো তাহলে কিচ্ছু দেখতে পারবো না।”
-“দেখা লাগবে না। আরেকদিন দেখো। আজ লাইটটা বন্ধ করো। পায়ে পড়ি তোমার।”
বাইরে তখন তুমুল বর্ষন। বাতাস আর বৃষ্টির তোড়ে বারান্দার দরজার পর্দা ভেতরে এসে উড়ছে। মুগ্ধ গিয়ে লাইট টা বন্ধ করে ফিরে এল। তবু বাগানের লাইটের যতটুকু আলো আসছে তাতে সব স্পষ্ট না হলেও আবছা দেখা যাচ্ছে সবই। তারপর ব্লাউজটা খুলে ফেললো। তিতির লজ্জায় উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো। কি করবে ও? একদিকে মুগ্ধ কাছে আসতেই লজ্জায় মরে যায় অপরদিকে নিজের সর্বস্ব তুলে দিতে ইচ্ছে করে ওর জিম্মায়। মরতে ইচ্ছে করে মুগ্ধর হাতে। মুগ্ধ উপুর হয়ে শুয়ে থাকা তিতিরের সারা পিঠে চুমু দিতে লাগলো। তারপর তিতিরকে নিজের দিকে ফেরাতেই তিতির মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরলো। মুগ্ধও ধরলো। কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর মুগ্ধ তিতিরকে আবার শুইয়ে দিল। ঠোঁটে চুমু খেল। তারপর চুমু খেল গলায়, বুকে, পেটে। তিতিরের কাঁপতে কাঁপতে বেহুশ হয়ে যাবার অবস্থা। কিছু ভাললাগা থাকে না অসহ্যকর? সেরকমই কিছু ছিল।
তিতির চোখ বন্ধ করে ছিল। হঠাৎই মুগ্ধর ঠোঁটের স্পর্শ পেল পায়ে। লাফিয়ে উঠে নেশাভরা কন্ঠে বলল,
-“ছিঃ ছিঃ কি করছো?”
-“ছিঃ বলছো কেন?”
-“আমার পায়ে মুখ দিচ্ছো কেন?”
-“তো কি হয়েছে?”
-“আমার পাপ হবে।”
-“কিচ্ছু হবেনা। তোমার পায়ের উপর লোভ আমার কতদিনের জানো? একটু আদর করতে দাও।”
তিতির আর কিছু বলল না। জানে আর কিছু বলেও লাভ নেই, মুগ্ধ শুনবে না। দুইপায়ে মন ভরে চুমু খেয়ে মুগ্ধ উঠে এল। তিতিরের নাভির দু’ইঞ্চি নিচে চুমু খেতে খেতে মনে হলো কি করছে ও! আর তিতিরও আজ কিছুতেই বাধা দিচ্ছে না। ও তো ভাং খেয়ে আউট অফ মাইন্ড হয়ে গিয়েছে। কাল ঘুম থেকে উঠে যদি এসবের জন্যই আফসোস করতে থাকে? তাহলে মুগ্ধ নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবে না। মুগ্ধ সরে গিয়ে শুয়ে পড়লো তিতিরের পাশে। তিতির মুগ্ধর হাতটা সরিয়ে বাহুতে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরলো ওকে। মুগ্ধও ওকে একহাতে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইলো। কিচ্ছুক্ষণ পর তিতির ওর উপড়ে উঠে শুয়ে ওর বুকে মাথা রাখলো। মুগ্ধ বুঝতে পারছে তিতির আরো আদর চাইছে। ওরও যে ইচ্ছে করছে। কি করবে? তিতিরের চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
-“তিতিরপাখি?”
-“হুম।”
-“আমাদের এখানেই থেমে যাওয়া উচিৎ না?”
তিতিরের বলতে ইচ্ছে করলো, ‘না থামা উচিৎ না’ কিন্তু পারলো না। বলল,
-“জানিনা।”
-“উচিৎ, কারন এটা পাপ।”
তিতির মুগ্ধর বুকের উপর থেকে মাথা না তুলেই বলল,
-“পাপ কেন হবে? আমরা তো দুজন দুজনকে ট্রু লাভ করি। প্রায় গত ৬ বছর ধরে তো তোমাকে আমি আমার বর বলেই মেনে এসেছি। আর তুমিও তো আমাকে বউই ভাব।”
-“শুধু ভাবিই না। মনেপ্রাণে মানিও সেটা। কিন্তু আমাদের বিয়ে তো হয়নি না?”
-“আমার ফ্যামিলির জন্য হয়নি। আমার বাবা মা রাজী হলে অন্তত দু’বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়ে যেত।”
-“হ্যা, কিন্তু হয়নি তো বাবা। আর এর থেকেও ইম্পরট্যান্ট কথা হলো তোমার আমার বিয়ে কখনোই হবে না তাই তোমার ভার্জিনিটি নষ্ট করার কোনো রাইট আমার নেই। যখন অন্যকারো সাথে তোমার বিয়ে হয়ে যাবে, আজকের ভুল টাই তোমার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে সেদিন। তাই কোন ভুল করতে চাচ্ছি না।”
তিতির আর কিছু বলল না। মনে মনে বলল, ‘মুগ্ধ তুমি এতটা ভাল না হলেও পারতে।’ কখন ওর চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল তা ও টের না পেলেও মুগ্ধ পেল। কিন্তু কিছু বলল না। শুধু জড়িয়ে ধরে রইলো। মনে মনে বলল, ‘তিতির, জানি আমাদের বিয়ে অসম্ভব। তবু যদি কখনো কোনভাবে এই অসম্ভবটা সম্ভব হয় তাহলে এই মুহূর্তে যতটা কষ্ট তোমাকে দিলাম তার হাজার গুন সুখ তোমার পায়ের কাছে এনে দেব।’
To be continued…