নীল চিরকুট
লেখনীতে- নৌশিন আহমেদ রোদেলা
৬৯.
‘শ্যামলতা,
ঘড়িতে এখন দুটো বেজে বিশ মিনিট। তীব্র ঠান্ডার রাত। রুম হিটারের বদৌলতে কুঁকড়ে যাওয়া থেকে বেঁচে আছি কোনো রকম। বাইরে সন্ধ্যে থেকেই ভয়াবহ তুষারপাত। আলী আর এলিক্স কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছে। আমি ঘুমোতে পারছি না। চোখ বোজলেই রাজ্যের সব কষ্টগুলো চেপে ধরছে বুক। শান্তি পাচ্ছি না। ভয় করছে। ভীষণ ভয়। তোমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার আজ সাতশো ষাট তম দিন। তোমার নামে তিনশো চার নাম্বার চিঠিটা লিখতে বসে বুঝতে পারছি, তোমাকে ছাড়া আসলে আমার চলবে না। এই যে চিঠি পাওয়ার পরও একটা বার আমায় ফোন করার প্রয়োজনবোধ করলে না, এই অভিমানটা আমি ধরে রাখতে পারছি না। পুরুষিত সব ইগো পাশে রেখে বারবারই জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে, তুমি কী সত্যিই ভুলে গেলে আমায় শ্যামলতা? তাহলে আমি কেন পারছি না?
আমার খুব একা লাগছে আজ। এই বিশাল পৃথিবীতে বড্ড অসহায় একজন। মাস খানেক হলো বাবা মারা গিয়েছেন। মা যখন ফোন দিয়ে বলল, আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। ভিডিও কলে বাবার সাদা কাপড়ে মোড়া সেই প্রতিচ্ছবিটা এখনও চোখে ভাসে। গায়ে কাটা দেয়। আমার বাবাটা কত অভাগা দেখ? শেষ সময়ে এসে দুই ছেলের কারো কাঁধেই ভর ছাড়তে পারলেন না। বাবা আমাকে অসংখ্যবার কাঁধে উঠালেও আমি বাবাকে কাঁধে উঠাতে পারলাম না। এই কষ্টটা যে কিছুতেই ভুলে যাওয়া যাচ্ছে না, শ্যামলতা। এই ভিনদেশটাকে হঠাৎ ভীষণ বিষাক্ত ঠেকছে। অসহ্য ঠেকছে সব। বারবার মনে হচ্ছে, সব ছেড়েছুড়ে দেশে পাড়ি জমায় আবার। সেই দেশটাতে, যেখানে অপেক্ষায় আছে আমার অসহায় মা, অবুঝ নিদু আর তুমি। এলিক্সের ধারণা আমার এই চিঠি লেখা, অপেক্ষা এসব ভীষণ পাগলামো আলাপ। তবে আলীর মত ভিন্ন। সে তোমায় কী নামে ডাকে জানো? সে তোমায় বলে ‘ম্যাজিক এঞ্জেল’। তার ধারণা তুমি আমার মন ভালো করার ম্যাজিক। এই দীর্ঘ অপেক্ষার পর হুট করে একদিন ফিরে এসে আমার সব মন খারাপ ভাসিয়ে দেবার অভাবনীয় ম্যাজিক হবে তুমি। এই নিয়ে এলিক্স আর আলীর মাঝে সে-কী তর্ক!
আচ্ছা? এলিক্স আর আলীর পরিচয়টা এর আগে দিয়েছিলাম তোমায়? আমি ঠিক মনে করতে পারছি না। এলিক্স, আলী আমার ভিনদেশী বন্ধু। এখানে এসেই পরিচয়। এলিক্স আমেরিকান আর আলী তুর্কিশ যুবক। দুজনেই বন্ধু হিসেবে দূর্দান্ত।’
এটুকু পড়ে থামল নম্রতা। আরফান ইউএস থাকাকালীন তার জন্য লেখা পুরাতন চিঠিগুলো পড়তে বরাবরই ভালো লাগে নম্রতার। মনে পড়ে যায় হাজারও স্মৃতি। কিন্তু আজ ভালো লাগছে না। হঠাৎ করেই ভীষণ মন খারাপ লাগছে। আজকাল ভীষণ মুড সুয়িং-ও হচ্ছে। কখনও অযথায় ফুরফুরে লাগছে। কখনও-বা অযথায় কেঁদে কেটে চোখ ভাসাতে ইচ্ছে করছে। নম্রতা চিঠি হাতে বারান্দার দোলনায় ঠাঁই বসে রইল। বর্ষার শিরশিরে বাতাসে শীত শীত লাগছে। রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় ঝকঝক করছে চারপাশ। নম্রতা আশপাশে চেয়ে আবারও কোলের উপর রাখা চিঠির দিকে তাকাল। চিঠির পাতায় শূন্যদৃষ্টিতে চেয়ে থম ধরে বসে রইল কিছুক্ষণ। চোখ তুলে পাশে ঝুলানো ডাকপাখির খাঁচার দিকে চেয়ে বলল,
‘ আমার ভীষণ মন খারাপ লাগছে ডাকপাখি। তুই জানিস? প্রচন্ড মন খারাপ হলে কী করতে হয়? প্রচন্ড মন খারাপ হলে কেঁদে ফেলতে হয়। তুই আমাকে কেঁদে ফেলার মতো কোনো কষ্ট মনে করিয়ে দিতে পারবি?’
ডাকপাখি নম্রতার কথা বুঝলো-কী- বুঝলো না বুঝা গেল না। সে স্বভাবসুলভ তীক্ষ্ণ কন্ঠে চেঁচাতে লাগল,
‘ মন খারাপ। মন খারাপ। মন খারাপ।’
নম্রতা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। হঠাৎ করেই চোখদুটো টলমল করে উঠল তার। সেদিন নীরার খবরটা শুনেই থমকে গিয়েছিল নম্রতা। এতোবড় দূর্ঘটনা, শহর ছেড়ে যাওয়ার মতো এতোবড় ঘটনা তাকে জানানো হয়নি বলে মন খারাপ হলো। তার থেকেও মন খারাপ হলো, নীরার বাচ্চাটির জন্য। বাচ্চাটি কী তাদের এই মান-অভিমানের প্রগাঢ়তায় অভিমান করেই পৃথিবীতে আসার সিদ্ধান্ত পাল্টাল? নম্রতা বাড়ি ফিরে সারাটা দিন ফোন হাতে বসেছিল সেদিন। বারবার ডায়াল করতে নিয়েও ডায়াল করা হয়ে উঠেনি। ফোন দিয়ে কী বলবে সে? এতো বড় দূর্ঘটনার এতোদিন পর কী খবর নিবে নীরার? নীরা যদি ফট করে বলে ফেলে, বাচ্চাটা তো নষ্ট হয়েছে। এবার খুশি হয়েছিস? তবে কী সহ্য করতে পারত নম্রতা? সেদিন রাতে ঘুম হলো না নম্রতার। ডাকপাখির খাঁচাটা কোলে নিয়ে বারান্দার দোলনাটাতেই বসে রইল সারারাত। তারপর কীভাবে কীভাবে যেন কেটে গেল প্রায় তিন তিনটি বছর। হাজারও অস্বস্তি, অনিশ্চিয়তার বেড়াজালে পরিচিত নাম্বারটিতে আর ডায়াল করা হয়ে উঠল না। নিরুদ্দেশ নাদিমকেও আর ফিরে পাওয়া হলো না। কোথায় হারিয়ে গেল ছেলেটা? নাদিম হারিয়ে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন বেশ ভালোই যোগাযোগ রেখেছিল রঞ্জন। ওখানে থেকেই চেষ্টা করেছিল, চেষ্টা সফল হলো না। নাদিমকে খুঁজে পাওয়া গেল না। নম্রতা তখনই অবাক হয়ে খেয়াল করল, নাদিমের দাদাবাড়ি বা আত্মীয় স্বজন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র তথ্য তাড়া জানে না। অন্তুর বিয়ের সময় ‘বড়মামা’ নামে কারো কথা শুনেছিল কিন্তু সেই বড় মামার বসতি সম্পর্কেও কোনো রকম সন্ধান তারা জানে না। রঞ্জনের ধারণা ময়মনসিংহের কোথাও হবে। কিন্তু ময়মনসিংহ তো ছোট শহর নয়। অতোবড় বিভাগ থেকে নির্দিষ্ট একটা মানুষকে খুঁজে পাওয়া আদৌ সম্ভব? তারওপর নাদিম সত্যিই সেখানে আছে কি-না তারই তো কেনো নিশ্চয়তা নেই। কীসের ভিত্তিতে খুঁজে বেড়াবে তারা? নাদিমের মুখে শুধু একজনের কথায় শুনা যেত। সে হলো নাদিমের বোন। নাদিম কথার ফাঁকে মাঝে মাঝে বলত, তার একটা বোন আছে। কিন্তু সেই বোনের নাম-ধাম, ঠিকানা কিছুই বলতে শুনেনি তারা। বোনটা আদৌ বেঁচে আছে কি-না কে জানে? নাদিম নিখোঁজ হওয়ার দ্বিতীয় দিন মৌশির কাছেও খোঁজ নিয়েছিল অন্তু। মৌশি অবাক চোখে চেয়েছিল। হঠাৎ ডুকরে কেঁদে উঠেছিল কিন্তু কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। নম্রতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বারান্দার লতানো গাছে হাত বুলাল। ভেজা পাতার স্পর্শ পেতেই টপ করে গড়িয়ে পড়ল এক ফোঁটা জল। দোলনায় মাথা ঠেকিয়ে উদাস চোখে চেয়ে রইল মেঘাচ্ছন্ন আকাশে। নম্রতা জানে নাদিমকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিজ ইচ্ছেই হারিয়ে যাওয়া মানুষকে কখনও খুঁজে পাওয়া যায় না।
‘ তোমার শরীর খারাপ, আম্মু?’
বারান্দার দরজা থেকে শাশুড়ী মায়ের কন্ঠ ভেসে আসতেই সোজা হয়ে বসল নম্রতা। ঠোঁটে হাসি টেনে নিয়ে বলল,
‘ না মা। মাত্র বিছানা ছাড়লাম। মাথাটা একটু ভার ভার লাগছিল, এই যা। তেমন কিছু নয়। পাশে বসো।’
ভদ্রমহিলা মৃদু হাসলেন। দোলনায় নম্রতার পাশে বসতে বসতে বললেন,
‘ অফিস নেই আজ? নাস্তাও করোনি এখনও। নিষ্প্রভ ফোন দিলে কিন্তু আমি একদম মিথ্যা বলতে পারব না।’
নম্রতা হাসল। শাশুড়ী মাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে বলল,
‘ অফিস আপাতত বাদ। ভাবছি রান্নাঘরে তোমার এসিস্ট্যান্ট হব আজ। মা? আজ তোমার পছন্দের খাবারগুলো রান্না করলে কেমন হয়?’
ভদ্রমহিলা অবাক হয়ে বললেন,
‘ আমার পছন্দের খাবার কেন?’
নম্রতা হেসে বলল,
‘ কারণ তুমি মা।’
ভদ্রমহিলা হেসে ফেললেন। নম্রতা হঠাৎ গম্ভীর কন্ঠে বলল,
‘ শুনো মা? তুমি কিন্তু নিদ্রা আপুর কাছে যাওয়ার চিন্তাও করবে না। তুমি ওখানে গেলেই নিদ্রা আপু তোমাকে চার পাঁচ মাসের জন্য রেখে দেয়। এসব কী? আমি তোমাকে যেতে টেতে দিচ্ছি না, ব্যস। তার থেকে বরং নিদ্রা আপুকে চলে আসতে বলো। আমি তাকে তার পছন্দের খাবারগুলো রান্না করে খাওয়াব। আমি অলরেডি অনেকগুলো রান্না শিখে ফেলেছি। নিদ্রা আপুর সবচেয়ে প্রিয় খাবার কী মা?’
‘ সরিষা ইলিশ। ঝাল ঝাল কলিজা ভূনা। ছোট মাছ ভাজি।’
নম্রতা গল্প করতে করতেই দোলনায় পা তুলে বসল। খুব উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল,
‘ সরিষা ইলিশ? নীরা খুব ভালো সরিষা ইলিশ করতে পারত। ওর লাইফে ও একটাই খাবার ঠিকঠাক রান্না করতে পারতো সেটা হলো সরিষা ইলিশ। একবার কী হলো জানো? নীরা বাড়ি থেকে ফেরার সময় বাটি ভর্তি সরিষা ইলিশ রান্না করে আনল। জীবনের প্রথম রান্না করেছে, প্রচন্ড উচ্ছ্বসিত। আমরা ক্যাফেটেরিয়াতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ দৌঁড়ে এসে বাটিটা বের করতে করতে বলল, জানিস আজ আমি কী এনেছি? নীরার কথা শেষ হওয়ার আগেই হাতের বাটি উধাও। আমি আর ছোঁয়া অবাক হয়ে চেয়ে আছি। নিরীহ বাটিটা নাদিমের হাত থেকে টানা-হেঁচড়া করতে করতে চলে গেল অন্তুর দখলে। অন্তুর হাত থেকে রঞ্জন। আমি আর ছোঁয়াই বা বসে থাকব কেন? লেগে পড়লাম ভয়াবহ যুদ্ধে। সবার টানাহেঁচড়াতে তরকারির বাটি উল্টে সাধের সরিষা ইলিশ গিয়ে পড়ল মাটিতে। নীরার সে-কী রাগ। অন্তু, নাদিম, রঞ্জনকে পুরো ভার্সিটি দৌঁড় করিয়েছিল সেদিন।’
এটুকু বলেই খিলখিল করে হেসে ফেলল নম্রতা। ভদ্রমহিলা মৃদু হেসে বলল,
‘ নীরা কে? তোমার বন্ধু বুঝি?’
হঠাৎ হাসি মিইয়ে গেল নম্রতার। চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
‘ আমার বেস্টফ্রেন্ড।’
কথাটা বলেই চুপ করে রইল নম্রতা। শাশুড়ী মা সরল মনে প্রশ্ন করলেন,
‘ তোমার বিয়েতে এসেছিল? আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দাওনি তো? এখন কোথায় ওরা? একদিন নিয়ে এসো বাসায়। নীরার হাতে সরিষা ইলিশ খাব।’
নম্রতা নিরুত্তর চেয়ে রইল শাশুড়ী মায়ের মুখে। বুকের ভেতর চাপা পড়ল তপ্ত দীর্ঘশ্বাস।
পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম নিয়মগুলোর একটি হলো হারিয়ে যাওয়া। আলো হারিয়ে যায় অন্ধকার রাতে। বর্তমান হারিয়ে যায় অতীতে। অতীত হারিয়ে যায় প্রগাঢ় কোনো অতীতে। মানুষ হারিয়ে যায় সময়ের বেড়াজালে। কিন্তু বন্ধুত্ব হারায় না। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সুন্দর স্মৃতি হয়ে হঠাৎ চাড়া দিয়ে উঠে মনে। প্রকাশ করে নিজের প্রগাঢ় অস্তিত্বের। মায়ার সুতো টেনে ধরে কাতর কন্ঠে বলে, ‘তোমরা আমাকে হারাতে দিয়েছ। মলিন হতে দিয়েছ। অথচ আমি এখনও যৌবনে ছুটছি। তোমার স্মৃতির পাতায় হাস্যোজ্জল যৌবন হয়েই ফুটে রয়েছি আজীবন!’
_
বৃষ্টিহীন চমৎকার রাত। ছাদ জুড়ে হালকা ঝিরিঝিরে বাতাস। আরফান অযথায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরল আজ। বারান্দায় দাঁড়াতেই ডাকপাখির স্বভাবসুলভ ডাক কানে এলো। কিন্তু নম্রতার সাড়া পাওয়া গেল না। আরফানের কুঞ্চিত চোখ প্রথমেই গিয়ে পড়ল ডাকপিয়নের গায়ে। ডাকপিয়নের উপর তাজা বেলীফুলের মালা। আরফান বুঝল চিঠির নিমন্ত্রণ। হাতের ব্যাগটা দোলনার উপর রেখে ডাকপিয়ন থেকে উদ্ধার করে আনল নীল রঙের মোটা খাম। খামটা খুলতেই বেরিয়ে এলো আরও একটি খাম। আরফান ভ্রু কুঁচকাল। দ্বিতীয় খাম থেকেও একইরকম খাম বেরিয়ে আসতেই ব্যাপারটাকে নম্রতার বাচ্চামো বলে ধরে নিল আরফান। খুব অবহেলা ভরেই চতুর্থ খামটা খুলতেই চমকে উঠল সে। মসৃন হয়ে গেল কুঞ্চিত ভ্রু। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে চেয়ে রইল হাতে থাকা খামটির ভেতর। এমন সময় নুপুর বাজল। মলিন অথচ স্নিগ্ধ চেহারার নম্রতা এসে দাঁড়াল দরজা জুড়ে। আরফান বাকরূদ্ধ চোখে চেয়ে থেকে আবারও খামের দিকে তাকাল। খামের ভেতরে থাকা প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপে জ্বলজ্বল করছে পাশাপাশি রঙিন দুটো লাইন। আরফানের শরীর কাঁপছে। খামটা আলতো হাতে ডাকবাক্সের উপর রেখে দোলনায় বসে পড়ল আরফান। বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে বলল,
‘ সত্যি?’
নম্রতা হাসছে। ডাকপিয়নের উপর থাকা বেলীফুলের মালাটা হাতে জড়াতে জড়াতে মজা করে বলল,
‘ আমায় কী দিবেন বলুন? বিয়ের রাতের উপহারও কিন্তু নেওয়া হয়নি এখনও। ডাবল উপহার চাই এবার।’
আরফান হাসল। দোলনা থেকে উঠে নম্রতার সামনে এসে দাঁড়াল। হাতে-পা এখনও মৃদু কাঁপছে তার। অতিরিক্ত আনন্দে দিশেহারা হয়ে ন্যূনতম আনন্দটুকু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। নম্রতাকে পৃথিবীর সকল সুখ,আনন্দটুকু উপহার দিতে ইচ্ছে করছে হঠাৎ। আরফান ডানহাতটা নম্রতার মাথায় রেখে নরম কন্ঠে বলল,
‘ কী চান?’
নম্রতা ছলছল চোখে তাকাল। আনন্দসিক্ত কন্ঠে বলল,
‘ চিরকুট। নীল চিরকুট। এমন একটি চিরকুট যে চিরকুটে জীবনের সবচেয়ে সুন্দর প্রতিচ্ছবিগুলো থাকবে। থাকবে আমার খুশি। যে চিরকুট পেয়ে হাসি-আনন্দ গুলিয়ে ফেলে হাউমাউ করে কাঁদব! সুখ সুখ ব্যথা নিয়ে দুঃখ বিলাস করব। হবে? হবে কি এমন চিঠি?’
#চলবে…..
[ গল্প শেষের দিকে চলে এসেছে। ধীরে ধীরে সব চরিত্রের পরিণতিই দেখানো হবে ইন-শা-আল্লাহ। যাদের কাছে পর্বটি পৌঁছাচ্ছে তারা প্লিজ রিয়েক্ট করবেন। পেইজ জনিত জটিলতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত পাঠকদের সরব হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, আমার এই একটাই পেইজ। আমি আপনাদের অসংখ্যবার বলেছি। আবারও বলছি। আমার একটাই পেইজ। আমার প্রোফাইল দিয়েই ফেইক একটা পেইজ খোলা হয়েছে৷ আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। পাঠকদের বুঝা উচিত, আমি আমার পেইজে কোনোরূপ ছবি আপলোড করি না। নিজের ছবি তো কখনোই না। পাঠকরা বিভ্রান্ত না হয়ে সচেতন হোন। ধন্যবাদ।]