#আমার তুমি পর্ব ৫
#তানিশা সুলতনা
আশিককে ঔষধ কিনতে পাঠিয়ে দেয় সায়ান। তুলতুল চোখ বন্ধ করে বেডে শুয়ে আছে। মনটা ভীষণ খারাপ। সায়ানকে কিছুতেই সয্য হচ্ছে না। কি পেয়েছে লোকটা? যা খুশি করবে?
“ভালোই হলো। এবার লাফালাফিটা বন্ধ হবে।
সায়ান তুলতুলের কেটে যাওয়া পা টানতে হাত বুলিয়ে বলে।
তুলতুল কোনো প্রতিক্রিয়া করে না। শুধু চোখ মেলে সায়ানের দিকে এক পলক তাকায়। আবার সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
” বাসায় ফিরতে হবে হবে।
সায়ান আলতো করে তুলতুলের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
তুলতুল সায়ানের হাতটা ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। সায়ান চোখ মুখ শক্ত করে ফেলে। একা একা উঠে বসে তুলতুল। বেড থেকে পা নামাতে যায়।
সাথে সাথে সায়ান কোলে তুলে নেয় তুলতুলকে। ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে তুলতুল। সায়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।
কি হয়েছিল বুঝতে কয়েক সেকেন্ড লেগে যায় তুলতুলের।
সায়ান তুলতুলকে বেশ খানিকটা উঁচু করে নেয়। নিশ্বাসের শব্দে বুঝতে পারে লোকটা খুব কাছে। তুলতুলের বুক টিপটিপ করছে। নিশ্বাসটা আটকে আটকে আসছে বিধায় ঘনঘন দম নিচ্ছে।
সায়ান একটু ঝুঁকে তুলতুলের কপালের কাছে ওষ্ঠদ্বয় নিয়ে আসে। তুলতুল ধপ করে চোখ খুলে। যতটা কাছে ফিল করেছিলো তার থেকেও বেশি কাছে।
তারাহুরো করে সায়ানের গলা ছেড়ে দিয়ে একটা হাত সায়ানের ওষ্ঠদ্বয়ের ওপর রাখে।
সায়ান কপাল টানটান করে তাকায় তুলতুলের দিকে। তুলতুল তাকিয়ে ছিলো সায়ানের দিকে বিধায় চোখাচোখি হয়ে যায়। সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নেয় তুলতুল।
“আমাদের বিয়ে হয় নি।
আমতাআমতা করে বলে তুলতুল।
সায়ান ভ্রু কুচকে ফেলে। সরু চোখে তুলতুলকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। লাল হয়ে গেছে মুখটা। সম্ভবত লজ্জা পাচ্ছে। কিন্তু এখানে লজ্জা পাওয়ার কি হলো?
” ইডিয়েট, যতসব স্টুপিট চিন্তা ভাবনা।
ফোঁস করে শ্বাস নিয়ে সায়ান হাঁটতে থাকে।
তুলতুল বোকাবনে যায়। লজ্জাটা বেরে যায়। স্পষ্ট দেখতে পেলো উনি চুমু খেতে আসছিলো। অবিবাহিত মেয়েকে চুমু খাওয়া ঘোর অন্যায় তাই তো বিয়ের কথাটা বললো। যাতে থেমে যায়। তাতে ওকে ইডিয়েট কেনো বললো?
অবশ্য বলতেই পারে। উনি নিজেই তো খারাপ মানুষ। যতসব খারাপ খারাপ চিন্তা ভাবনা। নেহাত তুলতুল এখন হাঁটতে পারবে না নাহলে কিছুতেই লোকটার কোলে উঠতো না।
মুখ বাঁকায় তুুলতুল। দৃষ্টি এড়ায় না সায়ানের।
হাসপাতাল থেকে বের হতেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। সায়ান আকাশের দিকে তাকায়। কিছুখনের মধ্যেই মুসল ধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে বেশ বুঝতে পারছে সায়ান।
বছরের প্রথম বৃষ্টি একটু না ভিজলে চলে?
আশিক সায়ানের বাইকে বসে ছিলো। ওদের আসতে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।
“তুই বাইক নিয়ে চলে যা। আমি আর ও বৃষ্টি বিলাস করবো।
তুলতুলের দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে সায়ান। তুলতুল দাঁতে দাঁত চাপে।
” না কি বিয়ে না হলে এক সাথে বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না?
দুষ্টু করে বলে সায়ান।
আশিক ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। তুলতুল লজ্জায় নুয়িয়ে পড়ে। এভাবে লজ্জা দেওয়ার কোনো মানে হয়। সায়ানের শার্টের এক পাশে মুখ লুকায়।
সায়ান তুলতুলের থেকে চোখ সরায়।
“দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
আশিকের দিকে শক্ত চোখে তাকিয়ে বলে সায়ান।
” ভাইয়া আমাকে নিয়ে যান। আমি আপনার সাথে যাবো।
তুলতুল সায়ানের কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করতে করতে বলে। সায়ান চোখ বড়বড় করে আশিকের দিকে তাকায়। ঢোক গিলে আশিক। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ভর্স করে দেবে।
“আমি তেমন ভালো বাইক চালাতে পারি না। মাএ শিখছি তো। তোমাকে নিয়ে যদি এক্সিডেন্ট করি। তাহলে আমার আর বিয়ে হবে না। বিয়েহীন জীবন কি করে পার করবো আমি?
কপালে হাত দিয়ে কান্নার ভঙ্গিমায় বলে আশিক।
সায়ান তুলতুলকে শক্ত করে ধরে। মেয়েটার সাহস মারাক্তক বেশি। আজকে বারবার অপমান করছে সায়ানকে। এর মূল্য তো একে দিতেই হবে।
তুলতুল ব্যাথা পাচ্ছে।
আশিক সায়ানের চোখ মুখ দেখে আর এক সেকেন্ডও দেরি করে না। তারাহুরো করে চলে যায়।
” আমি বাসায় যাবো।
শক্ত গলায় বলে তুলতুল।
সায়ান কিছু বলে না। আবার হাঁটতে থাকে।
বৃষ্টির বেগ বেরেই যাচ্ছে। বড়বড় ফোঁটায় ভিজে যাচ্ছে দুজন। সায়ানের মুখের পানি গুলোই পড়ছে তুলতুলের মুখে।
তুলতুলের খুব কান্না পাচ্ছে। ডাক্তার বারবার বলে দিয়েছে পা যেনো না ভেজে। কিন্তু এই সাইকোটার জন্য পা টাই ভিজে গেলে। এবার নিশ্চয় ঘা শুকাবে না। আরও বেশি কষ্ট হবে তুলতুলের। তাছাড়া বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লেই জ্বর হয় তুলতুলের।
নাক টেনে কান্না করে ফেলে তুলতুল। সায়ান সামনের দিকে তাকিয়ে হেঁটেই যাচ্ছে। মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই মনের মধ্যে কি চলছে।
“আপনি খুব খারাপ। ভীষণ খারাপ আপনি। আপনাকে আমার সয্য হয় না। চলে যাবো আমি। থাকবো না আপনাদের বাড়িতে।
হেঁচকি তুলে বলে তুলতুল।
সায়ান বেশ বিরক্ত হয়। কথায় কথায় কি করে কান্না করতে পারে এই মেয়েটা? ডিসগ্রাসটিং।
” আমি ভালো হই খারাপ হই তোকে বাকিটা জীবন আমার সাথেই থাকতে হবে। মাইন্ড ইট
চোয়াল শক্ত করে বলে সায়ান।
“ইম্পসিবল। আমি তো আর একটা দিনও থাকবো না। দেখি কি করে আটকে রাখেন আমায়।
বেশ রেগে গেছে তুলতুল। এরকম অত্যাচার কেনো সয্য করবে ও?
সায়ান দাঁড়িয়ে যায়।
রাস্তার পাশে থাকা ব্রেঞ্চে বসিয়ে দেয় তুলতুলকে। তারপর তুলতুলের পাশে বসে।
কপাল টানটান করে তুলতুলকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে থাকে সায়ান।
তুলতুল নিজের দিকে তাকায়। সাথে সাথে চমকে ওঠে। সাদা ড্রেসটা ভিজে একাকার। শরীরের প্রতিটা ভাজ বোঝা যাচ্ছে।
লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে তুলতুলের।
ওড়না টেনে শরীর ঢাকার চেষ্টা করে।
সায়ান তাচ্ছিল্য হাসে।
” সাদার সাথে আকাশী। মানাই নি তো? মেচিং করে পড়বি তো।
চোখ টিপে বলে সায়ান।
সারা শরীর রিরি করে ওঠে তুলতুলের। লজ্জায় চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়। ছি ছি কথা বলার ধরন কি।
হাত পা রীতিমতো কাঁপছে লজ্জা রাগ আর অস্বস্তিতে।
জীভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় তুলতুল। লোকটার দিকে তাকানোর বিন্দু মাএ ইচ্ছে নেই। বেহায়া ছেলে একটা। বয়সে ছোট আর একটু সাহস থাকলে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিতো লোকটার গালে।
পাতলা ওড়নাটা দিয়েই ঢাকার প্রচেষ্টা চালায় তুলতুল।
“যেসব ড্রেস পড়লে লজ্জায় পড়তে হয় সেসব ড্রেস পড়িস কেনো?
তুলতুলকে স্বাভাবিক করতে বলে সায়ান। যে হারে কাঁপা-কাঁপি শুরু করে দিয়েছে যে কোনো মুহুর্তে বেঞ্চ থেকে পড়ে যাবে।
ঢোক গিলে তুলতুল। এটা কোনো প্রশ্ন? বেহায়া লোক একটা। মুখে কোনো লাগাম নেই৷ যখন তখন যা খুশি বলে ফেলে। কিন্তু এই লোকটার সামনে গলে গেলে চলবে না। শক্ত হতে হবে। নাহলে না জানি আরও কি কি বলে ফেলবে।
” আপনার থেকে শুনে নেবো আমি কি পড়বো না পড়বো?
আমার যা ইচ্ছে তাই পড়বো।
কাঠ কাঠ গলায় জবাব দেয় তুলতুল।
সায়ান ধপ করে চোখ বন্ধ করে ফেলে। হাত মুঠ করে নিজেকে শান্ত করার প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু এবার ও ব্যর্থ। মুখে মুখে তর্ক করার একট বিহিত করতেই হবে। এই মেয়ের এই চটর চটর কথা আর সয্য হচ্ছে না।
ঠাস করে একটা চর বসিয়ে দেয় তুলতুলের গালে। তুলতুল এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো। ও জানতো এমনটাই হবে। তবুও কান্না পায়। শব্দ করে কেঁদে ফেলে। থাপ্পড়টা খুব জোরে দেয় নি। খুব বেশি ব্যাথাও পায় নি। কিন্তু এই মুহুর্তে প্রচন্ড রাগ লজ্জা অস্বস্তি সব মিলিয়েই কান্না পায় তুলতুলের।
সায়ান দুই হাতে মাথা চেপে বসে থাকে। রাগটা বরাবরই বেশি ওর। কিন্তু এই মেয়েটা আশেপাশে থাকলে অদ্ভুত সব কান্ড আর কথাবার্তায় রাগটা তরতর করে বেরে যায়।
“চলে যাবি বলছিলি না? তো যা না। এখনই চলে যা। দেখি আমাকে ছাড়া তুই কতোটা পথ যেতে পারিস।
চিৎকার করে বলে সায়ান।
তুলতুল নিজেও জানে কারো সাহায্য ছাড়া ও এক পাও এগোতে পারবে না। আশেপাশে একটা লোক তো দুর একটা পানিও নেই।
তাই চুপচাপ কেঁদে যাচ্ছে।
এতখন বৃষ্টি থাকলেও এখন বাতাস বইছে। কেঁপে উঠছে তুলতুল। কাচুমাচু হয়ে বসে আছে।
সায়ান পরপর কয়েকটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে তাকায় তুলতুলের দিকে। ঠকঠক করে কাঁপছে মেয়েটা। এটা সেই লজ্জায় কাঁপা না ঠান্ডায় কাঁপছে।
সায়ান নিজের শার্টটা খুলে তুলতুলের কোলের ওপর রাখে।
” এটা পড়ে নে।
শান্ত গলায় বলে।
তুলতুল শার্টটা ফেলে দেয়।
সায়ান গাল চেপে ধরে তুলতুলের বেশ শক্ত করে।
“আমার সাথে ত্যাড়ামি করবি। চিনিস আমায় তুই? থাপ্পড়ে গাল ফাটিয়ে দেবো। ইডিয়েট
ছেড়ে দেয় সায়ান। গাল দুটো ব্যাথা হয়ে গেছে তুলতুলের। গালে হাত দিয়ে চুপচাপ চোখের পানি ফেলে তুলতুল।
কিছুই বলবে না বেহায়া লোকটার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই ওর।
” এই অবস্থায় তোর হয়ত লজ্জা করছে না। কিন্তু আমার ফিলিং হচ্ছে। যতই ভালো ছেলে হই না কেনো এভাবে চোখের সামনে টলিউডের হিরোইন হয়ে ঘুরে বেড়ালে চোখ তো নিষিদ্ধ জায়গায় যাবেই। আর ইচ্ছে গুলোও বেহায়া হয়ে
তুলতুল সায়ানের হাত খামচে ধরে। সায়ান থেমে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে চোখ বন্ধ করে আছে মেয়েটা। বাঁকা হাসে সায়ান।
শার্টটা তুলে এনে পড়তে সাহায্য করে তুলতুলকে। তুলতুল আর চোখ খুলে নি। ইচ্ছে করছে কানটাকেও কোনোভাবে বন্ধ করে দিতে। যাতে এই লোকটার লাগামহীন কথাবার্তা আর শুনতে না হয়।
“ইউ আর লুকিং সো হট
তুলতুলের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে সায়ান। জমে যায় তুলতুল। ঢোক গিলে গলা ভেজানোর চেষ্টা করে। সায়ান তুলতুলের মুখে ফু দিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়।
তুলতুলের শ্বাস গুনতে পারছে সায়ান। মেয়েটা ভয় পেলেও জোরে শ্বাস টানে লজ্জা পেলেও জোরে শ্বাস টানে।
” যেমনই হস না কেনো তুই তো আমারই #আমার তুমি
কাল রাতে আশিবার কল করেছে সুমু আশিককে সাথে দুইশত চারটা মেসেজ। একটারও উওর দেয় নি আশিক। একটা ফার্মেসির দোকান ছিলো ওর। ভালোই চলছিলো। ছোটখাটো রোগের চিকিৎসা করতো। ইচ্ছে ছিলো একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে। ফার্মেসি থেকে যা ইনকাম করতো তাই দিয়ে মেডিকেলের পড়ার টাকা হয়ে যেতো।
হঠাৎ করে দোকানের ওপর দিয়ে ব্রিজ হওয়াতে দোকানটা ভেঙে দিতে হয়েছে। কাল থেকে চাকরি খোঁজ করছিলো। ইচ্ছে করেই সুমুর কল ধরে নি। নিজের সমস্যার কথা কাউকে বলতে চায় না আশিক। আর সুমু কন্ঠ শুনেই বুঝে যেতো। আর লুকোতে পারতো না আশিক। নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করতে চাই। তাই তো মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বাবার থেকে একটা টাকাও নেয় নি। আর নেবেও না বলে পণ করেছে।
আর আজকে সকাল থেকে দুটো ইন্টারভিউ দিয়েছে। কল ব্যাক করার সময় পায় নি।
ভার্সিটির গেটের সামনে হাঁটু মুরে বসে আছে সুমু। কোথাও একটা মনে হচ্ছিলো আশিক আসবে। তাই তো শানকে কাজের বাহানায় পাঠিয়ে দিয়ে একাই রয়ে গেছে এখানে।
আশিক নিঃশব্দে এসে সুমুর পাশে বসে। সুমু নিজের ভাবনায় বিভোর ছিলো। তাই আশিক এসেছে সেদিকে ওর খেয়াল নেই।
মুচকি হাসে আশিক।
নিজের মাথাটা সুমুর কাঁধে রাখে। চমকে ওঠে সুমু। পাশ ফিরে আশিককে দেখে রাগটা তিরতির করে বাড়তে থাকে। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আশিককে।
খানিকটা দুরে সরে যায় আশিক।
“কেনো এসেছিস তুই এখানে? চলে যা তুই? পাগল পেয়েছিস আমাকে তুই? মানুষ মনে হয় না আমাকে? কোনো কথা নেই তোর সাথে। কোনো সম্পর্ক নেই।
চিৎকার করে বলতে বলতে কেঁদে ফেলে সুমু। দুই হাতে মুখ চেপে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে।
আশিক অপরাধীর মতো সুমুর মুখটা দিকে তাকিয়ে থাকে।
কোনো এক্সকিউজ দিতে চায় না ও। এটা ওর অপছন্দের।
আশিক সুমুর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। হাত সরিয়ে দেয় সুমু।
” চলে যাবো আমি?
আশিক বলে। সাথে সাথে সুমু তাকায় আশিকের দিকে। আশিককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মারতে শুরু করে। কাঁদার মধ্যে শুয়ে পড়ে আশিক। সুমুও এলোপাতাড়ি মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে আশিকের বুকের ওপর ঢলে পড়ে।
এতোখনে সুযোগ পেয়ে সুমু কেও কাঁদায় শুয়িয়ে দেয়।
দুজনই কাঁদায় গড়াগড়ি খেয়ে কাদাময় হয়ে গেছে।
হাঁপিয়ে যায় দুজন। সোজা হয়ে বসে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
“পরিটা তোমার কে হয়?
সুমু প্রথমে বুঝতে পারে না। পরে বুঝতে পারে।
” মামাতো বোন। এই ভার্সিটিতেই ভর্তি হয়েছে। আমাদের বাড়িতেই থাকবে।
“তোমার ভাই তো পাগল হয়ে গেছে।
” তাই তো দেখছি।
“আই লাভ ইউ জান। ভীষণ ভালোবাসি তোকে
সুমুকে এক হাতে জড়িয়ে বলে আশিক।
” তোমার থেকে আমি একটু বেশি ভালোবাসি।
বাড়িতে ফিরে তুলতুলকে ওর রুমে নিয়ে যায়।
“সুমুকে ডেকে দিন
তুলতুল দাঁত কাঁপিয়ে বলে।
” বাসায় কেউ নেই। কি লাগবে আমাকে বল।
সায়ান ওয়াশরুমের নামিয়ে দেয় তুলতুলকে।
“আমি ড্রেস দিয়ে যাচ্ছি। একা পাড়বি?
তুলতুলের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে।
বিরক্ত হয় তুলতুল।
” নাহহহ পারবো না। আপনিও আসেন।
ফোঁস করে শ্বাস নিয়ে বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে বলে তুলতুল।
সায়ান বাঁকা হাসে।
“ওকে এক মিনিট আসছি
তুলতুল চোখ বড়বড় করে তাকায়। এ কাকে আমি কি বললাম? এই লোকটাতো সাইকো। এ তো রাগ বিরক্ত কিছুই বোঝে না। এবার যদি সত্যি সত্যি চলে আসে?
ভয়ে শরীরের লোম জাড়িয়ে যায় তুলতুলের।
দুই কানে হাত দেয়।
” ফফফফফফফফফফফফফফফফফেুপিিিিিিিিিিি
গলা ফাটিয়ে এক চিৎকার দেয় তুলতুল।
চলবে
.