#ক্যামেলিয়া পর্ব ৩৬
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব ৩৬
মাশহুদের পাশে এসে কুঞ্জ দাঁড়িয়েছে।তার ভিতরের অস্থিরতা বেশ বুঝতে পারছে কুঞ্জ।আজ পর পর দুটো কাজ করতে চলেছে মাশহুদ। প্রথমত তার দাদার সাথে প্রথম পক্ষের দেখা এবং দ্বিতীয় জাফরিনের সাথে সবার পরিচয়।জাফরিনকে একা না রাখার এক তীব্র ভয় মাশহুদের মনে বসেছে এটা তার বাবা কিংবা কুঞ্জ দুজনেই বুঝতে পেরেছে।সমুদ্রের মত গভীর স্বভাবের ছেলেটার ভিতরের অস্থিরতা পইপই করে টের পাচ্ছে ভদ্রলোক।চারিদিকে আলোক সজ্জায় ঝলমলে পরিবেশ।সন্ধ্যের মিঠে মিঠে পরিবেশে হাতে হাত রেখে শোবিজের সাংবাদিকদের দিকে এগিয়ে গেলেন মাশহুদের দাদা আনোয়ার সাহেব এবং তার স্ত্রী সোনিয়া শেখ। বিবাহিত জীবনের অর্ধ শতক পার করেছেন।হাতে হাত রেখে দুজন মানুষের হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল মাশহুদ।আর কিছু সময় পর কী থাকবে তার এই পরিবারের হাসিখুশি মুখশ্রী?
হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিল মাশহুদ।ঠিক সেই মুহুর্তে গেটের কাছে এসে দাঁড়ালো তার ব্যক্তিগত গাড়িটা।গাড়ির সামনের দরজা খুলে এমিলি দাঁড়িয়ে আছে।স্মিত হেসে মাশহুদ এগিয়ে গেল তার দিকে।পিছন থেকে শুভ্র সাদা পা জোড়া নেমে এলো বাড়িয়ে দেওয়া পুরুষালী শক্ত হাতটা ধরে।জাফরিন শাড়ি পরেছে?চুল গুলো খোলা কেন?
অস্বস্তিতে পড়ে গেল সে।এ যেন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা।শুভ্র সাদা শাড়ি কিংবা তার খোলা চুল,হাতের দুগাছি চুড়ি কিংবা কপালের বেহিসেবী চুলের গোছার প্রতি তীব্র আকর্ষন অনুভব করলেও মুখে কিছুই বলল না সে।বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।পাশাপাশি দুজনকে দেখে ভদ্রলোক হাসলেন।তার ইচ্ছে হলো এই মুহুর্তেই রেজিস্ট্রার ভবনে নয়ে দুজনের বিয়ে দিয়ে ছেলের ভয় দূর করে দিতে।মনে মনে সংকল্পবদ্ধ হলেন,প্রয়োজনে জাফরিনের মায়ের নিকট নিজে যাবেন প্রস্তাব নিয়ে তবুও ছেলের শান্তিকে ঘরে আনবেন।নিজে যেমন প্রতিনিয়ত ছটফট করেছেন সেটা হতে দিবেন না। আনোয়ার সাহেবের চারপাশে আজ মানুষের অভাব নেই।কিন্তু।মাশহুদ অপেক্ষা করছিল সবটা শেষ হওয়ার।ধীরে ধীরে মেহমানের ভীড় কমতে লাগলো।একটা সময় ক্লান্ত দম্পতি ফিরলেন বাস ভবনে।ব্যাক ইয়ার্ডে ব্যবস্থা করা হয়েছিল অতিথি আপ্যায়নের জন্য।জাফরিন চলে যায়নি। তাকে মাশহুদের দাদী সেই যে হাতের কাছে নিয়েছেন এক মুহুর্তের জন্য ছাড়েনি।তিনি এই প্রথম বাঙালি কাউকে এতোটা কাছাকাছি দেখছেন।মেয়েটার মুখে এত মায়া কেন?
সোফায় টান টান হয়ে বসে আছে আরমান সাহেব।কুঞ্জ দাঁড়িয়ে আছে ইনায়াতের সাথে।এই মুহূর্তে কেবল পরিবারের মানুষেরা উপস্থিত।আনোয়ার সাহেবের ভাই মনির সাহেব শয্যাশায়ী। আসতে পারেন নি তাই তার ছেলে আমিনের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে দরজার দিকে চোখ গেল আনোয়ার সাহেবের।দরজায় যেন দাঁড়িয়ে আছে তার অতিব পরিচিত কেউ।না আজ অবধি তাকে কখনো দেখেনি কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যেন বিশ -বাইশ বছর পূর্বের আনোয়ার সাহেব নিজেই দাঁড়িয়ে আছেন।ধীরে ধীরে রুমে প্রবেশ করলো মধ্য বয়সী একজন নারী, একজন যুবতী এবং একজন বৃদ্ধা।
উঠে দাঁড়ালেন আনোয়ার সাহেব।মাশহুদের হাতে ভর দিয়ে যে এগিয়ে আসছে সে আর কেউ নয় তার স্ত্রী।তার প্রথম স্ত্রী আয়েশা।যাকে সে আলতাবানু বলে ডাকতো।বেশ শক্ত মানসিকতা অধিকারী বলেই হয়তো বৃদ্ধ এখনো দাঁড়িয়ে আছেন।এগিয়ে গেলেন না তবে চোয়াল শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইলেন।এক অজানা অভিমান না কী সানিয়া শেখের ভালোবাসা বাধা হয়ে দাঁড়ালো?
জাফরিনের বুঝতে বাকী নেই এখানে কী হতে চলেছে।তার একবার মনে হলো পারিবারিক বিষয়টা সমাধা হলে সে এগুবে কিন্তু তাকে চমকে দিলো তার বুদ্ধিমত্তা।পইপই করে জানান দিলো আজকেই সেই দিন।তাকে প্রস্তুতি নিতে হবে।মাশহুদ একে একে সব ঘটনা খুলে বলল তার দাদা-দাদীকে।সানিয়া শেখ অসহায় ভঙ্গিতে বসে রইল এক পাশে।বিয়ের পঞ্চাশ বছর পর সতিনের সংসার?
আয়েশা বেগম ধীরে ধীরে এসে দাঁড়ালেন স্বামীর সামনে।কোনো মান অভিমান নেই তার দুই চোখে।ছেলের হাত ধরে সামনে এনে বললেন,
“আমানত রেখে গেছিলেন শেখ সাব।এই যে ফিরায় দিলাম।কুনু দিন তো কন নাই আমি আপনার এতটা অপছন্দের ছিলাম?বাপে জোর কইরা বিয়া দিছিল তাই এত ঘেন্না আমার প্রতি ছিল?”
“আয়েশা, তুমি সত্যি আয়েশা? বেঁচে আছো?”
বৃদ্ধা হাসলেন।যেন তাচ্ছিল্য চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে সেই হাসিতে।আঁচলে মুখটা ঢেকে বললেন,
“মরনের কথা ছিল বুঝি?হয়, মইরাই গেছিলাম।অল্প বয়সে বাচ্চা হইলো,দেশে যুদ্ধ লাগলো।আঁতুড়ঘর থেইকাই পোলাডা নিয়া ছুটলাম।শ্বশুর আব্বায় কেমনে কেমনে আগলায় রাখলো।অথচ পোলা হওয়ার পর সে কী ক্ষিধা!ওই ক্ষিধায় যখন বাইচ্যা ফিরলাম তখন বুঝলাম আমার বাঁচতে হইব পোলার জন্য।স্বামীর জন্য।আশায় আশায় পার করলাম বিশ বছর। ফিরে নাই সে।তাই তার নামে বিধবার কাপড় পইরা ঘুরতে হয়।এই যে দেখেন।”
“কিন্তু মনির তো বলছিল তুমি আব্বা সবাই মইরা গেছ যুদ্ধে।”
“মরলেও শান্তি হইতো।আজ শেষ বয়সে সতিনের মুখ দেখতে হইতো না।আমার সব উজাড় কইরা দিয়া আপনি এইখানে সুখের ঘর পাতছেন?”
“এই ভাবে বলিও না।তুমি বোসো।আমি তোমার কাছে মাফ চাইতেছি বৌ।আমি জানি না কিন্তু মনির বলছিল তোমরা মরে গেছ।আমি দেশে ফিরি নাই।ও একা ওদেশে কি করব?তাই তো ওরেও নিয়ে আসলাম।এই যে মনিরের ছেলে আমিন।”
“মিথ্যাবাদী একটা।কত কইছি একটা চিঠি দিতে দেয় নাই।লিখে দেয় নাই।ঠিকানা চাইছি দেয় নাই।মিথ্যাবাদী রাইতের আন্দারে কই গেল আর ফিরল না।”
কথোপকথনের সময় কারোর বুঝতে বাকী রইল না এসবের পিছনে রয়েছে মনির সাহেবের হাত।সে স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য এতবড় মিথ্যে নাটক সাজিয়েছিল।আনোয়ার সাহেব সেই মুহুর্তেই তার কাছে যেতে চাইলে আয়েশা বেগম বললেন,
“এখন কি লাভ?আপনারে দেখবার স্বাদ ছিল দেখলাম।এই আপনার পোলা, পোলার বৌ আর নাতনী।তাদের দেখাইলাম।আজ আমরা যাই।”
“এখানে থাকো।কোথায় যাবে?”
“কার সংসারে? সতীনের?”
সানিয়া শেখের কথা এই মাত্র মনে হলো মাশহুদের।নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে সে।আয়েশা বেগমের কথা জানতো তবে মৃত কাউকে স্বামীর ভাগ দেওয়া যায়, সেই মৃত ব্যক্তি ফিরে এসে স্বামীর ভাগ চাইলে তাকে কী মেনে নেওয়া যায়?
দাদীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে তার বাবা।পিছন ফিরলেন আনোয়ার সাহেব।পিছনে তার বর্তমান, সামনে না পাওয়া অতীত।কাউকে অস্বীকার করা যায় না। আনোয়ার সাহেব দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললেন,
“কী চাও তুমি?”
“আমার অপেক্ষার বায়ান্ন বছর।”
“আমি কীভাবে ফিরিয়ে দিব?”
“যেভাবে কেড়ে নিছিলেন।না পারেন তো আমাদের যেতে দেন।মনে করবেন আমি মরেই গেছি আর আপনার কোনো।সন্তান ছিল না।যেমনটা আজ অবধি করেছেন।”
“পাগলামি করো না।বায়ান্ন বছর ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় তবে তুমি যা চাইবে তাই হবে। কথা দিচ্ছি।”
“যদি বলি সতীন তালাক দিতে?”
আনোয়ার সাহেব অসহায় হয়ে তাকালেন।আয়েশা বেগম স্মিত হেসে বললেন,
“ডর নাই।তা কমু না।আমি চাই আপনার নাতীর সাথে আমার চিত্রার বিয়াডা দেন।আমার নাতনীর সুখ দেখতে চাই।”
“মাশহুদের সাথে?কিন্তু..
” আমি এইডাই চাই।না পারলে আমাকে আটকানোর অধিকার আপনার নাই।কথা দিছেন।”
“বেশ তবে তাই হবে।মাশহুদের সাথে বিয়ে হবে।”
মাশহুদ প্রতিবাদ করতে যাচ্ছিল কিন্তু তার দাদী হাত ধরে ফেলল।সেই মুহুর্তে জাফরিন বলল,
“যদিও এই সময়টা আপনাদের পারিবারিক তবে আমার কিছু কথা ছিল।”
চিত্রা দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বলল,
“জাফরিন আজ নয়। তুমি আমার স্বপ্ন,সুখের উপর পা রেখে এগিয়ে যেও না।”
“আমি এখানে কারোর স্বপ্ন ভাংতে আসিনি।আমার বাবার মৃত্যু রহস্য আমার জানা দরকার।”
আরমান সাহেব এবং আমিন সাহেব এগিয়ে এলেন।জাফরিনকে দেখে আমিন সাহেব বললেন,
“কে তোমার বাবা?”
“আজমল শিকদার।আমি তার মেয়ে জাফরিন শিকদার।আমার বাবার মৃত্যু দিনের সিসিটিভি আমার চাই।”
“নিছক হৃদযন্ত্র অচল হয়ে মারা গেছেন।”
“আমার বাবার হৃদরোগ ছিল না।সে সুস্থ ছিল।”
“যার তোমার মত মেয়ে থাকে তার হৃদরোগ লাগে না।”
মাশহুদ দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বলল,
“কাকা লিমিট রেখে কথা বলবে।তুমি কার সাথে কথা বলছো ভেবে বলবে।”
“শুনো মাশহুদ।তুমি ভাবছো আমি জানি না?আমি সব জানি।তুমি ভেবেছো এই মেয়ে তোমাকে সব ইনফরমেশন এনে দিতে পারবে?তুমি ভুল করছো।”
“সেটা আমি করছি।আর জাফরিন চলুন এখান থেকে।আসুন আমার সাথে।”
“আমার বাবা খুন কেন হলো?আমার খুনীকে চাই।”
“জাফরিন শান্ত হোন আপনি অসুস্থ। আমি খোঁজ নিবো তো।কথা দিচ্ছি।”
“আমার বাবার খুন কেন করলেন আপনারা?সে সুস্থ ছিল।বুঝতে পেরেছিল তার পিছনে শত্রু লেগেছিল।ফিরতে চেয়েছিল কেন ফিরতে দেননি?”
আমিন সাহেব এগিয়ে এলেন,মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,
“যার তোমার মত মেয়ে থাকে তাকে খুন করতে হয় না।তুমিই তোমার বাবার জন্য দায়ী।তুমি তাকে চিন্তায় রেখেছিলে।তোমার বিয়ে নিয়ে চিন্তায় থেকে থেকে আজ সে নেই।যদি মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হয় সেটা তুমি।”
জাফরিন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।তার চোখের সামনে ভেসে উঠলো বাবার লাশ নেওয়ার আগের সব ঘটনা।সবাই কেমন তাদের দোষ দিচ্ছিল।তবে কী সত্যি জাফরিন দায়ী?হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল সে।চিত্রার সাথে মাশহুদকে দেখে তার বুকের ভিতর হতে থাকা যন্ত্রণা এবার সুযোগ পেল বেরিয়ে আসার।কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি তুলে ফেলল।ঘেমে একাকার হয়ে গেছে মেয়েটা।গলার কাছটায় চুল আটকে আছে।কাজল লেপ্টে যাওয়া জাফরিনের মুখ দেখে দুনিয়া ভুলে গেল মাশহুদ। নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরার পূর্বেই ইউভান এসে হাজির।জাফরিন কে এমন অবস্থায় দেখবে কল্পনায় আনেনি।বোনকে বুকে আগলে নিয়ে ডাক দিতেই সে বলল,
“আমি বাবাকে মারিনি ভাই।আমি দায়ী না।”
ইউভান তাকে সামলালো।মাশহুদকে বলল,
“আমি ওকে দেশে নিয়ে যেতে এসেছি।ওর মা ওকে দেখতে চেয়েছিলেন তাছাড়া বাকী লেখাপড়া দেশেই করুক।আপনাদের সহোযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।”
“ক্যামেলিয়া কোথাও যাবে না।”
“ওকে ফিরতে হবে। কেউ ওর জন্য অপেক্ষা করছে।”
জাফরিন ফিরে আসার পূর্বে মাশহুদের হাতে একটা পেনড্রাইভ দিয়ে এলো।ফিসফিস করে বলল,
“বাবার দেওয়া ঘড়ির নাম্বারটাই পাসওয়ার্ড ছিল।সব তথ্য এখানে পাবেন।”
জাফরিন অপেক্ষা করেনি।ইউভান সময় দেয়নি।অনেকটা টাকা খরচ করে প্রাইভেট ফ্লাইট এরেঞ্জ করে তাকে নিয়ে দেশে ফিরছে সে। মেয়েটা যে সত্যি আরো এতিম হয়ে গেছে।মা সম বড় আপার মুখটা শেষবার তাকে দেখাতেই এতো আয়োজন।বড় আপা মারা গেছেন।সি এনজি এক্সিডেন্ট করেও তিন দিন জীবিত ছিলেন কিন্তু শেষ অবধি হার মেনে চলে গেছেন।
মাশহুদ যাওয়ার সময় তাকিয়ে ছিল।সে তার বাবার মতোন নয়। মনে মনে বার বার আওড়াতে লাগলো
“তোমাকে ফিরতে হবেই।ক্যামেলিয়া, তোমাকে ফিরতে হবে।”
পরিশিষ্টঃ
পাসওয়ার্ড দিতেই ফাইলটা খুলে গেল। কাঙ্ক্ষিত সেই ডকুমেন্টস কিছু সময়ের মাঝেই এসে হাজির হবে তাদের সামনে।কয়েক মুহুর্ত স্ক্রিনটা খালি থেকে ধীরে ধীরে দেখা মিলল দুটো লাইনেই।
“মাশহুদ সাহেব,আমার বাবার খুনীকে এনে দিন,
বিনিময়ে আমি আপনাকে আমার ইহজন্ম দান করিব।”
সাথে সাথে স্ক্রিন বন্ধ হয়ে গেল।চেষ্টা করেও আর অন করা গেল না।পাসওয়ার্ড অটোমেটিক পরিবর্তন হয়ে গেছে।সেদিকে মাশহুদের কোনো খেয়াল নেই।তার মুখে ফুটে উঠেছে এক ভালোবাসার দ্যুতি।প্রসারিত অধরে স্মিত হাসিটা ঝুলিয়ে সে মনে মনে আওড়ালো
“ক্যামেলিয়া”………..
.