বজ্জাত বউ .
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ১২
মিষ্টি: আম্মু
আম্মু: বল না মা
মিষ্টি: আম্মু তোমার মেয়ে আর তোমাদের মাঝে বেশিদিন নেই( আম্মুকে শক্তকরে জরিয়ে ধরে বললো)
আম্মু: কি বলছিস এসব চুপ একদম এসব কথা বলতে নেই মা। নেই মানে তোর আম্মু তোকে কোথায় যেতে দেবো না।(মিষ্টিকে জরিয়ে ধরে বললো)
মিষ্টি: জানো আম্মু তোমার মেয়ে ব্রেন ক্যান্সার হয়েছে। তোমার মিষ্টি তোমার মাঝে অল্প কিছু দিন আছে।
আম্মু: আমি বিশ্বাস করি না। উপর আল্লাহ আমার থেকে আমার মেয়েকে কেড়ে নিতে পারে না বলে মিষ্টির আম্মু অঝোড়ে কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: এটা তোমার উপর আল্লাহ বিধান আম্মু( বলে মিষ্টি কাঁদতে লাগলো)
আম্মু: আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না মা বলে মিষ্টি মুখে গালে কপালে চুমো দিতে লাগলো
মিষ্টি: আমিও তোমাদের ছেড়ে যেতে চাই না তবুও আমাকে যেতে হবে।
আম্মু: আমি তোর বাবাকে বলে তোর ভালো চিকিৎসা করাবো।
মিষ্টি: কোনো লাভ হবে না আম্মু
আম্মু: হ্যা মা পরশ জানে
মিষ্টি: না আমি চাই না ওনি জানুক।
আম্মু: কেনো
মিষ্টি:আমার অসুখে কথা জানলে ওনি খুব কষ্ট পাবে। আমি ওনাকে খুব ভালোবাসি। ওনি আমাকে পাগলে মতো ভালোবাসে। আমি যেকয়দিন আছি ওনার হাসি মুখটা দেখতে চাই। এর জন্য ওনাকে বলি নি।
আম্মু: আমার মেয়েটা
মিষ্টি: আরে আম্মু দেখি দেখি একদম কাঁদবেনা ( চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো) তুমি আম্মু না আমার আম্মুকে চোখের পানি মানাই আম্মু।
আম্মু: আমার সেই ছোটো মেয়েটা আজ বড় হয়ে গেছে। এতো বড় হয়েছে যে আমাকে একা ফেলে চলে যাবো। বলে আবার কাঁদতে লাগলো
মিষ্টি: কে বলে চলে যাবো আমি তো শুরু চোখের আড়াল হবো মাএ। কিন্তু তোমার মনে মধ্যে সবসময় থাকবো।
আম্মু: আমি কি বাঁচবো মা
মিষ্টি: আবার কাঁদে। কাঁদলে আমি কথা বলবো বলে মিষ্টি আম্মুকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলো।আর মনে মনে বলতে লাগলো আম্মু আমি তোমাকে, বাবাকে, ওনাকে ছেড়ে যেতে চাই না আমি বাঁচতে আমি বাঁচতে চাই বলে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো
আম্মু: মিষ্টি আমার মেয়ে
মিষ্টি: আম্মু দেখি মুখ তলো। আম্মু বাবাকে কিন্তু কিছু জানাবে না। আমার মাথায় হাত রেখে বলো।
আম্মু: জানাবো বা ( মাথায় হাত রেখে বললো)
বাবা: কউ আমার মা কউ( দরজায় সামনে দাড়িয়ে বললো)
মিষ্টি: আম্মু স্বাভাবিক
আম্মু: হ্যা বলে চোখে পানি মুছলো
মিষ্টি: বাবা তোমার পর আমার একটু রাগ হয়েছে
বাবা: এই ভালো কথা নয় আমার মায়ে রাগ হয়েছে ( মিষ্টি পাশে বসে বললো)
মিষ্টি: হুহ্
বাবা: প্যাকেটে কি যেনো আছে বলে প্যাকেট হাত দিলো
মিষ্টি: চকলেট
বাবা: চকলেট এই নে। বলে চকলেট হাতে দিলো।
মিষ্টি: I love you.বাবা
বাবা: I love you 2 বলে মিষ্টি কপালে চুমো দিলো।
আহাদ: মেয়েকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছে কতো সময় ধরে দরজায় সামনে দাড়িয়ে আছি খেয়ালি নেই।
মিষ্টি: আম্মু ভাইয়া না
আহাদ: কি ভাইয়া কি
মিষ্টি: আম্মু ভাইয়া না এবার বউ দরকার। ভাইয়া লজ্জায় কাউকে বলে না ( খাটের উপর দাড়িয়ে বললো)
আহাদ: একদম মিথ্যা বলবি না
মিষ্টি: আম্মু দেখো ভাইয়া মুখ লাল হয়ে গেছে
আহাদ: কি আমার মুখ লাল হয়ে গেছে তবে রে বলে মিষ্টিকে ধরতে গেলো
মিষ্টি: আম্মু বলে খাট থেকে নেমে পড়লো
আহাদ: তকে একবার ধরি তারপর দেখছি
মিষ্টি: তাই আগে আমাকে ধরে দেখা
আহাদ: কি আমি তোকে ধরতে পারবো না বলে মিষ্টির পেছনে ধরতে গেলো
মিষ্টি: পারে না ভাইয়া ধরতে পারে না বলে মিষ্টি দৌড়ে বড় মা কাছে গেলো পেছন পেছন আহাদ গেলো
বাবা: পাগলী মেয়ে আমার চলো আমরা নিচে যাই
আম্মু: চলো
মিষ্টি: বড় না তোমার ছেলে খেপেছে
আহাদ: আম্মু তুমি সরে যাও আজ আমি ওকে ধরবো
বড় মা : কি করছিস বলে হাসতে লাগলো
মিষ্টি: তোমার কে তারাতারি বিয়ে দাও। এমনি মাথা গেছে এবার বউ না আনলে পুরোটা যাবে।
আহাদ: আম্মু ওকে চুপ করতে বলো
বড় মা: চুপ করবে কেনো ওতো ঠিক বলেছে এবার তোর আমি বিয়ে পএ ঠিক করা হয়ে গেছে
আহাদ: পএ ঠিক করা হয়েছে মানে কে
বড় মা : দিশা। দিশাকে আমাদের দু জ্যার পছন্দ আর আমি চাই দিশা বাড়ির বউ হক
আহাদ: এসব তুই করেছিস না ( মিষ্টির দিকে তাকিয়ে বললো) এখানে দাড়া
মিষ্টি: না দাড়বো না বলে দৌড় দিতেই আহাদ মিষ্টিকে ধরে ফেললো।
আহাদ: তুই আমাকে হাকি লাগিয়ে দিয়ে ছিস।
মিষ্টি: আর জালাবো না বলে আহাদ দিকে তাকালো
আহাদ: কি দেখছিস
মিষ্টি: দেখছি আমার হিরো টাইপের ভাইয়া কে বর সেজে কেমন দেখাবে।জানিস তোদের বিয়েটা দেখায় বড় শখ রে
আহাদ: বোন বলতে আহাদে ফোনটা বাজতে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে দিশার ফোন
মিষ্টি: কার ফোন ভাইয়া দিশার। কথা বল আমি আসি বলে মিষ্টি চলে গেলো।
আহাদ: হ্যালো দিশা( ফোন রিসিভ করে)
দিশা: আসলে স্যার ভাবির ফোনের অনেক বার কল করেছি কিন্তু না ধরাতে টেনশন হচ্ছিলো তাই আপনাকে ফোন
আহাদ: বুঝতে পেরেছি। মিষ্টি ভালো আছে।
দিশা: তাহলে রাখি স্যার
আহাদ: একদম ফোন কাটবে না আমি তোমাকে আজকে প্রশ্ন করেছিলাম। তার উওর জানতে চাই।
দিশা: আসলে
আহাদ: কি পছন্দ করো আমাকে
দিশা: হ্যা করি
আহাদ: হুম। অনেক দিন আগে থেকে করো
দিশা: আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম সেই দিন থেকে।
মিষ্টি: ভাইয়া হলো কথা বলা ( পেছন থেকে এসে বললো)
আহাদ: তুই
মিষ্টি: হুম। ভাইয়া বড় মাকে তারাতারি শশুড় বাড়িতে পাঠাবো এবার ফোনটা রাখ আর খেতে চল আমার খুব ক্ষিধে পেয়েছে। দিশা তোমার সাথে কথা বলবে। চল
আহাদ: যাচ্ছিতো চল বলে আহাদ আর মিষ্টি খাবার টেবিলে গিয়ে বসলো।
বড় মা : ভাই বোন কোথায় গিয়েছিলে
মিষ্টি: বড় মা ছেলে এই মাএ তোমার বউ ম বলতে আহাদ মিষ্টির মুখ চেপে ধরলো
আহাদ: কিছু না আম্মু। তুই খাবি মুখ থেকে হাতটা ছেড়ে দিয়ে বললো
মিষ্টি: খাচ্ছি
তারপর সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে গল্প করতে বসলো। গল্প করতে করতে একে একে সবাই উঠে গেলো শুরু আহাদ আর মিষ্টির আম্মু বসে আছে।
আহাদ: মিষ্টি তুই আমার রুমে চল
মিষ্টি: ইনজেকশন দেবো তো আম্মু সামনে দাও
আহাদ: কিন্তু
মিষ্টি: আম্মু সব টা জানে
আম্মু: আহাদ কোনো ভাবে কি আমার মেয়ে বলতে কেঁদে ফেললো।
আহাদ: ছোটো মা আমি চেষ্টা করছি কিন্তু
মিষ্টি: কিন্তু আমি বাঁচবো না। ভাইয়া দাও তো ইনজেকশন টা। এই রে আমি তো ভুলে গেছি
আম্মু: কি
মিষ্টি: তেমার জামাই খেপে গেছে। ভাইয়া তুই দে তারাতারি ইনজেকশন টা
আহাদ ইনজেকশন দিতেই মিষ্টি দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে বললো
মিষ্টি: সর্বোনাশ ৫০ বার কল। মিষ্টি তুই কপালে আজ কি যে আছে বলে ফোনটা নিয়ে পরশের কাছে কল দিলো
পরশ: কোথায় ছিলে এতোক্ষন। আমি কতো বার তোমাকে কল করেছি। ( ফোন রিসিভ করে বললো)
মিষ্টি: sorry. আসলে বাড়িতে এসে ফোনের কথা ভুলে গিয়েছিলাম।
পরশ: ফোনের কথা নয় বলো বরের কথা ভুলে গিয়েছি।
মিষ্টি: আমার উপর রাগ দেখাছে। যখন আমি থাকবো না তখন দেখবো কার উপর রাগ দেখাও।
পরশ: থাকবো মানে তোমাকে আমি কোথায় যেতে দেবো না। তুমি জানে তুমি যখন ফোন ধরছিলে না আমার টেনশন হচ্ছিলো
মিষ্টি: sorry
পরশ’ : কি করছো
মিষ্টি: বরের রাগ ভাঙাচ্ছি।
পরশ: ভাঙলো বরের রাগ
মিষ্টি: সেরা বর ভালো বলতে পারবে
পরশ: বরের রাগ ভাঙবে যদি একটা কাজ করো।
মিষ্টি: কি
পরশ: একটা কিস করো
মিষ্টি: আমি তো ভুত না যে উড়ে গিয়ে কিস করে আসবো
পরশ: ভুত আসলো কোথায় থেকে
মিষ্টি: আপনিতো বললেন কিস করতে ভুত না হলেতো এখন থেকে কিস করা যাবো না।
পরশ: করা যাবে
মিষ্টি: কি ভাবে
পরশ: ফোনের উপার থেকে কিস আমি এপার থেকে অনুভাব করে নিচ্ছি।
মিষ্টি: আমার না ঘুম পাচ্ছে। হাই তুলে মুচকি হাসি দিয়ে বললো
পরশ: আমার পারছেনা। কিস করো।
মিষ্টি: আর জেগে থাকতে পারছিনা।
পরশ: ন্যাকামি করো না। আগে কিস করো।
মিষ্টি:good night বলে মিষ্টি ফোন কেটে দিয়ে হাসতে লাগলো।
পরশ: ফোন কেটে দিলো। আমি দেশে ফিরে সুদে- আসলে তুলে নেবো।বলে পরশ শুয়ে পড়লো
আম্মু: কিরে হাসছিস কেনো
মিষ্টি: তোমার জামাই না
আম্মু:কি
মিষ্টি: বলে কি কিস করতে। তুমি বলে এখান থেকে কিস করা যায়।
আম্মু: তোর মুখে কিছু আটকাই না। নে শুয়ে পড়
মিষ্টি: আম্মু তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দাওতো
আম্মু:তুই ঘুমা আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি
মিষ্টি:ঠিক আছে আম্মু কোলে মাথা রেখে চোখ বুজতেই দেখি দাদি আমার সামনে সুন্দর শাড়ি পড়ে দাড়িয়ে আছে আছে আর হাসছে।আর আমাকে হাত ইশারা করে ডাকছে। আমি দাদির হাত ধরে চলে যাচ্ছি।হঠ্যৎ করে খুলে দাদি কে খুজতে লাগলাম। কিন্তু দাদিকে পেলাম। আম্মু দিকে তাকিয়ে দেখি আম্মু ঘুমিয়ে পড়ছে। আমি বিছানাতে ওঠে নিচে নেমে পানি গ্লাসটা নিতে যাবো হঠ্যৎ সেই ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো। একদিন করে আমার জীবন থেকে চলে যাচ্ছি আর মৃত্য আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আঃ আঃ ও আম্মু আমি সহ্য করতে পারছিনা আজ ব্যথা টা অনেক বেশি মনে হচ্ছো। আমি খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি ব্যাথা সহ্য না পেরে মেঝেতে বসে পড়লাম। মেঝে দিকে মাথা টা নিচ করতে মেঝেতে রক্ত পড়তে লাগলো। আমি নাকে হাত দিতেই আমার হাতে রক্ততে ভিজে গেলো। মৃত্য এতো যন্তনা। আঃ আঃ আল্লাহ তুমি আমাকে কষ্ট দাও। করন এর বড় কষ্ট হলো আমার পরশকে ছেড়ে চলে যাওয়া। আঃ আঃ আরো ব্যাথা বাড়ছে কেনো। আঃ আঃ
আম্মু: কিসে শব্দ (ঘুম ভাঙতে) মিষ্টি। মিষ্টি কোথায়। আমার কোলেতো শুয়ে ছিলো। মিষ্টি বলে বিছানাতে থেমে নামতে মেঝেতে রক্ত। মিষ্টি মা আমার কি হয়েছে( মেঝেতে বসে মিষ্টিকে জরিয়ে ধরে) মা আমার। তোর নাক দিয়ে রক্ত
মিষ্টি: আম্মু আমাকে শক্ত করে ধরে আমি সহ্য করতে পারছিনা।
আম্মু: এই তো মা আমি ধরছি। বলে শক্ত করে ধরলো।(কাঁদতে লাগলো)
মিষ্টি:আম্মু
আম্মু: আমি একবার আহাদকে ডেকে আনি
মিষ্টি: না আম্মু আমাকে ধরোআঃ আঃ
আম্মু: আহাদ । আহাদ মিষ্টি আমি একখনি আসছি বলে মিষ্টির আম্মু দরজায় সামনে যেতেই দাড়িয়ে গেলো…..(চলবে……….