ভাবীর সংসার সিজন ২ পর্ব ৩
মনিটর মেশিনের দিকে জাহিদ তাকিয়ে, আছে। হার্ট বিট এবং অক্সিজেন সেচুরেশন আজকে অনেক ভালো। তবুও যখন হালকা উঠা নামা করে, তখনই জাহিদের ভয় লাগে।
গতকাল রাতেও সে সি.সি.ইউ এর বাইরে ছিল, দিনে তিন থেকে চার বার আসে ভিতরে। দুই বার খাওয়ানোর জন্য, আর দুইবার ভিজিটিং আওয়ারে। এখন ভিজিটিং আওয়ার চলছে!
জাহিদ বললো ভাইজান,
আজ কেমন লাগে?
– ভালোই লাগে। এই তোর কষ্ট হয়ে যাচ্ছে!
– না, না ভাইজান।
– শাহিদ কাল এক নজর দেখেই চলে গেল!
– ওর বাড়িতে কত কাজ! মেয়ে দুটিও আছে, আম্মার ও যত্ন আছে।
– কেন, তোদের বউরা করেনা? বউ শাসন করবি তো!
জাহিদের হাসি আসছে, নিজে কখনো বউকে শাসন করতে পারলেন না, এখন অন্যের বউকে শাসন করছেন!
নাহিদ কে একবার আসতে পারলো না!
– ওর হঠাৎ করে হেড অফিস থেকে অডিট আসছে। ছুটি পায়নি।
– ছুটি কেউ পায় না!
– আসবে, ভাইজান।
– আসলে ভালো।
রাতের বেলা, ডাক্তার জাহিদ কে ডাকলেন, কিন্তু শারমিন বললেন আমি, ডাক্তারের সাথে কথা বলার জন্য গাড়ীতে করে হাসপাতালে এসেছি। আমি কথা বলছি!
জাহিদ পা বাড়ায় নি আর!
ডাক্তার সাবরিনা সুবেহীন হলেন, এই হাসপাতালের সবচেয়ে সিনিয়র ডাক্তার। তিনি, শারমিন কে বললেন, রোগী কে হোন আপনার?
– আমার হাজবেন্ড।
– আচ্ছা, উনি এখন একদম ভালো আছেন বলতে পারেন।
তখন, নাহিয়ান বললো, ম্যাম উনি আমার রিলেটিভ!
শারমিন বেশ পাত্তা দিলেন না!
সাবরিনা সাথে সাথে বললেন, নাহিয়ান থাকতে আর চিন্তা কি! ও ডিটেইলসে সব বলে দিবে। এই নাহিয়ান আজ মনিটর মেশিন খুলে দাও, আর আজই কেবিনে ট্রান্সফার কর!
– ম্যাম আজ রাতে থাকুন। কাল আপনি দেখে, কেবিনে দিবেন।
– এম.আর.আই কি করানো হয়েছে।
– না, একটু স্টেবল হওয়া দরকার। রোগীর হার্ট ও দূর্বল। ইসিজি তাই প্রুভ করে।
– ওকে, তাহলে তুমি উনাকে স্টাডি করে, রিপোর্ট কর! মিসেস সাঈদ, প্লিজ টক টু হিম।
শারমিন বেশ বিরক্ত হয়ে জাহিদ কে বললেন, ডাক্তারের চেয়ে সে এক ইঞ্চি বেশি বুঝে।
– ভাবী ও তো ডাক্তার!
– জানা আছে।
– ভাবী, আজ আপনি, থাকেন। আমার রাতে একটু ঘুমাতে হবে। আজ তিন রাত ধরে ঘুম নেই।
– সব দোষ এই ছেলের। আজ কেবিনে দিলেই ঝামেলা শেষ। আমার রাত জাগলেই, প্রেশার লো হয়ে যায়।।
-তাহলে?
– পলির বড় ছেলেকে বলে দাও আজ থাকবে এই খানে!
– ও কিভাবে থাকবে!
– আমি পলিকে বলছি!
জাহিদ কথা বলার আগেই শারমিন পলিকে কল দিলেন।
পলি সব শুনে, তানিম কে বললেন তুই বাবা থাকতে পারবি?
– মা, মামী থাকতে সমস্যা কি! আমার প্রফের জন্য ইমপরটেন্ট ক্লাস চলছে।
পলিও ছেলেকে জোড় করছেনা, কারণ তার যাওয়ার ইচ্ছে নেই তাই তাঁকে এক পর্যায় বলে থেমে যায়।
চলবে….
আন্নামা চৌধুরী।
ধন্যবাদ