অরোনী,তোমার জন্য~৮
লিখা- Sidratul Muntaz
অরোনী গোসল শেষ করে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে কাজল দিচ্ছিল। উর্মি এসে বলল,” ভাবী তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।”
উর্মির দুইহাত হাত পেছনে গুটানো। অরোনী হেসে বলল,” কি সারপ্রাইজ? দেখি!”
” আগে বলো সারপ্রাইজটা পেয়ে আমাকে কি দিবে?”
” তুমি কি চাও?”
” আজকে সন্ধ্যায় আমরা দু’জন ফুচকা খেতে যাবো।”
অরোনী একটু ভেবে বলল,” ওকে যাবো। এখন দেখাও সারপ্রাইজ।”
উর্মি দুইহাতে ধরা প্যাকেটটা অরোনীর সামনে এনে চিৎকার করে বলল,” ট্যানট্যানা!”
অরোনী খুলে দেখল সেই ঐতিহাসিক শাড়িটা। শাড়ি দেখে অরোনীর চোখ ছানাবড়া।
” এই শাড়ি তুমি কোথায় পেলে?”
উর্মি মুখের কাছে হাত নিয়ে ফিসফিস করে বলল,” চুরি করেছি।” এই কথা বলেই সে চোখ মারল। যেন খুব বীরের মতো কাজ করেছে। অরোনী রেগে বলল,” এটা একদম ঠিক হয়নি। শাড়িটা যেখান থেকে এনেছো সেখানে রেখে আসো।”
উর্মি ভ্রু কুচকে বলল,” কেন? এটা তো তোমার শাড়ি। তুমি পছন্দ করে কিনেছো। রুমা আর তানজু আপু ইচ্ছে করে শাড়িটা নিয়ে গেছে। তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।”
অরোনী তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,” একটা শাড়ি নিয়ে যদি ওরা নিজেদের বিজয়ী মনে করে তাহলে করতে দাও।”
উর্মি জেদ ধরল,” না ভাবী। এই শাড়ি আমি ওদের পরতে দিবো না৷ এটা তোমার শাড়ি তুমি পরবে।”
অরোনী চোখ রাঙিয়ে উর্মির দিকে তাকাল।
” যা বলছি তাই করো উর্মি। নাহলে কিন্তু আমি তোমাকে বকবো এখন।”
উর্মি মনখারাপ করে শাড়িটা নিয়ে বের হয়ে গেল।রুমা এই শাড়ির প্যাকেট বিছানায় রেখে গোসলে ঢুকেছিল। তখন রুমে কেউ ছিল না। উর্মিও সুযোগ বুঝে শাড়িটা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন আবার রেখে আসতে গেলে সে নিশ্চিত ধরা খাবে। উর্মি শাড়িটা নিয়ে রুমার ঘরে গেল না। নিজের ঘরেই ফিরে এলো।
পড়ার টেবিলে শাড়িটা রেখে বিছানায় শুয়ে ভাবতে লাগল কি করবে? নিলীমা আপুর সাথে ব্যাপারটা আলোচনা করা যায়। সে একটা বুদ্ধি বের করতে পারে। কিন্তু মাঝে মাঝে উর্মির মনে হয় নীলিমা আপুও রুমা আপুদের দলে। সেও ভাবীকে দুই চোখে দেখতে পারে না। আসলে অরোনী ভাবী দেখতে অনেক সুন্দর। একেবারে চোখ ধাঁধানো রূপ যাকে বলে। শুধুমাত্র এই কারণেই তাকে নিয়ে সবার এতো হিংসা।
সবাই ভাবে অরোনী রূপের অহংকারেই এতো চটাং চটাং কথা বলে। সবই তার রূপের বড়াই। কিন্তু উর্মি জানে, অরোনী ভাবী রূপের বড়াই করে না। সে মানুষটাই এমন, রগচটা ধরণের। যে যেমন অরোনী ভাবী তার সাথে ঠিক তেমন। এইযে উর্মি, সে তো অরোনী ভাবীকে খুব পছন্দ করে। তাই অরোনীও উর্মিকে কত ভালোবাসে! উর্মির মা আশা মেয়ের ঘরে বিছানা ঝারতে এসেছিলেন। তখন পড়ার টেবিলে শাড়ির প্যাকেট দেখেই হাতে নিলেন। প্যাকেট খুলে শাড়িটা দেখে অবাক হয়ে বললেন,” এটা রুমার শাড়ি না? তুই কোথায় পেলি উর্মি?”
উর্মি নির্বিকারচিত্তে বলল,” রুমা আপু না, এটা ছোটভাবীর শাড়ি।”
আশা চোখ বড় বড় করে বললেন,” সেটা তো বুঝেছি। কিন্তু এই শাড়ি তো রুমা নিয়ে গেছিল না?”
উর্মি শোয়া থেকে উঠে বসে বলল,
” আমি রুমা আপুর ঘর থেকে শাড়িটা চুরি করে এনেছি মা। ভাবীকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ভাবী শাড়িটা নেয়নি। ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন এটা আবার রুমা আপুর ঘরে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে না আমার।”
আশা কিছুক্ষণ শাড়িটার দিকে চেয়ে থেকে বললেন,” ভালোই হয়েছে। রুমা তো আর জানে না তুই নিয়েছিস। অরোনীও ভাববে তুই শাড়ি ফেরত রেখে এসেছিস। কিন্তু শাড়িটা থাকবে আমাদের কাছে।”
এই কথা বলেই আশা আলমারী খুলে শাড়ি ঢুকিয়ে রাখলেন। উর্মি অবাক হয়ে বলল,” আরে,এটা কি করছো? রুমা আপু যদি শাড়ি খোঁজে?”
” খুঁজবে না। ও এই শাড়ি এমনিই অরোনীকে ফেরত দিয়ে দিতো। রাফাত তাকে চড় মেরেছে তাও অরোনীর জন্য। এরপরেও কি অরোনীর শাড়ি ও পরবে?”
” তাহলে তো ভালোই হলো। এই শাড়ি রুমা আপুকে দিয়ে আসি। রুমা আপু ভাবীর শাড়ি ভাবীকে ফিরিয়ে দিক।”
” তুই-ই না মাত্র বললি অরোনী শাড়ি নেবে না? তাহলে ফিরিয়ে দেওয়ার দরকার কি? শাড়িটা তোর ছোট খালার বিয়েতে উপহার দেওয়া যাবে।”
উর্মি বিস্মিত কণ্ঠে উচ্চারণ করল,” মা!”
আশা এড়িয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বললেন,” পড়তে বস, পড়তে বস। বিকালে না তোর কোচিং-এ পরীক্ষা? ভালো করে পড়।”
আশা রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। উর্মির এতো মেজাজ খারাপ হচ্ছে! সে বুঝতে পারছে না সামান্য একটা শাড়ির প্রতি সবার এতো লোভ কেন? শেষমেষ তার নিজের মা পর্যন্ত! ধ্যাত!
সারাদিন স্টোর-রুম পরিষ্কার করতেই সময় লেগেছে। বিকালে মিস্ত্রী এনে চুলা সেট করা হলো। গ্যাসের মিটার বসানো হলো। রাফাত সুপার শপ থেকে ফ্রাইপেন, প্লেট, গ্লাস আরও বিভিন্ন জিনিস কিনে আনল। বাজারও আনা হলো। অরোনীদের বেডরুমে ফ্রীজ আগে থেকেই ছিল। সেই ফ্রীজ এনে নতুন রান্নাঘরে সাজানো হলো।
একটা কিচেন র্যাক লাগবে। সেটাও আনা হবে। আপাতত টেবিলের উপর সরঞ্জাম রেখে কাজ চালানো হচ্ছে। দুপুরের খাবার তারা এখনও খায়নি। মিস্ত্রী চলে যাওয়ার পর অরোনী দ্রুত ভাত বসালো। ডিম ভাজার জন্য তাড়াহুড়ো করে পেঁয়াজ কাটতে নিয়ে তার হাতের আঙুল কেটে গেল। রক্তে মাখামাখি সবকিছু। রিতু জলদি নিচে থেকে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে এলো। অরোনীর হাতে ব্যান্ডেজ করে দিতে লাগল। অরোনী বলল,” দ্রুত করো। ক্ষিদেয় মরে যাচ্ছি। রান্না না হলে খাবো কখন?”
রাফাত বলল,” হয়েছে থাক। আর রান্না করার দরকার নেই। ফুডপান্ডায় পিজ্জা অর্ডার করেছি।”
অরোনী আঁড়চোখে তাকিয়ে বলল,” এই কাজটা আর পাঁচমিনিট আগে করলে আমার হাতটা কাটতো না।”
রিতু কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠল। রাফাত বলল,” তুই হাসছিস কেন? ভাবীকে পেঁয়াজ কাটতে না দিয়ে নিজে কাটতে পারলি না?”
” আমি তো কইসিলামই। ভাবীই আমারে দিল না।”
রাফাত বিড়বিড় করে বলল,” সব জায়গায় খালি পাকনামি। “
অরোনী চোখ রাঙিয়ে বলল,” এই তুমি কথাটা কাকে বললে?”
রাফাত উত্তর না দিয়ে চলে যাচ্ছিল। তখন রিতু ডেকে বলল,” ছোটভাইয়া, বড় আম্মা আজকা সারাদিন কিছু খায় নাই।”
রাফাত অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,” খায়নি মানে? কেন?”
” আফনে আর ভাবী বলে উনার সাথে বেয়াদবি করছেন। যতক্ষণ এই বেয়াদবির বিচার না হইবো ততক্ষণ উনি কিচ্ছু খাইবো না। এইটাই বলতাছে।
রাফাত দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল৷ এই ঝামেলা কি থামবে না? রিতু একটু চুপ থেকে আবার বলল,” আমার মনে হয় সকালের ঘটনার লাইগাই বড় আম্মা এমন করতাছে।”
অরোনী কৌতুহলী কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,” সকালে কি হয়েছিল?”
রিতু সকালের কাহিনী বিস্তারিত বলল। অরোনী রাফাতের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল,” তুমি সত্যি রুমার পায়ে ধরে মাফ চেয়েছো নাকি?”
রাফাত অবজ্ঞার স্বরে বলল,” আরে নাহ।”
” কিন্তু এখানে মায়ের ভাত না খেয়ে থাকার মতো কি হলো? তিনি কার উপর রেগে আছেন?”
রাফাত শান্ত স্বরে বলল,” মনে হয় তোমার কাছে মাফ চাওয়ার কথা বলেছিলাম তাই।”
অরোনী আফসোসের হাসি হাসল,” কেন যে বলতে গেলে? তোমার মাকে তুমি চেনো না? এখন দেখো, আবার কি নতুন ড্রামা শুরু হয়!”
সন্ধ্যায় সত্যিই বাড়িতে একটা বিশাল ঝড় হলো। রাফাতের বড়ভাই রাহাতকে ডেকে আনা হয়েছে। সে তার বউ নিয়ে উত্তরায় থাকে। মায়ের কাঁদুনী শুনে অফিস থেকেই ছুটে এসেছে বড় ছেলে। এমনিতে সপ্তাহে একবারও মায়ের খোঁজ নেয় না। আর আজকে সেজেছে মায়ের বীরপুরুষ। রাফাতকে ডেকেই ধমকানো শুরু করল।
” মায়ের সাথে তুই এমন ব্যবহার করার সাহস কিভাবে পেলি? মা তোর বউয়ের কাছে মাফ চাইবে? এই কথা তুই বললি কিভাবে? ছেলে নামের কলঙ্ক তুই।”
রাবেয়া কেঁদে-কেটে একাকার হয়ে যাচ্ছেন। সিঁড়ির উপর থেকে উঁকি মেরে দৃশ্যটা দেখছে অরোনী। মহিলার চোখে এতো পানি কোত্থেকে এলো? বড় ছেলেকে দেখেই মেলো ড্রামা শুরু করেছেন। অরোনী মনে মনে বলল,” হে আল্লাহ, আমাকে ধৈর্য্য দাও।”
রাফাত মাথা নিচু করে বলল,” আমি ভুল কিছু বলিনি। মা অরোনীর গালে চড় মেরেছেন। তোমার বিচারে কি বলে ভাইয়া? কাজটা ঠিক?”
” তাই বলে তুই মাকে তোর বউয়ের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বলবি?”
” পায়ে ধরার কথা আমি একবারও বলিনি।”
” যাই বলেছিস। মিনিং তো একটাই। মাকে তোর বউয়ের কাছে মাথা ঝোঁকাতে হবে।”
” মাথা ঝোঁকালে কেউ ছোট হয়ে যায় না। ক্ষমা চাওয়া মানেই অপমান না। তাছাড়া মা যেটা করেছে সেটা যথেষ্ট অন্যায়। মায়ের উচিৎ ছিল নিজে থেকেই ক্ষমা চাওয়া।”
রাবেয়া চোখ মুছে বিলাপ করতে লাগলেন,” শুনেছিস তোর ছোটভাইয়ের জবাব? আমার কথা তো বিশ্বাস করিসনি। এখন দ্যাখ কত অধঃপতন হয়েছে ওর।”
রাহাত কপালে হাত দিয়ে বলল,” দিস ইজ জাস্ট ইম্পসিবল। রাফাত তুই এতো বদলে গেছিস? মা, তোমার আর এখানে থাকার দরকার নেই। তুমি আমার সাথে আমার বাড়িতে চলো।”
রাবেয়া বললেন,” না। আমি আমার নিজের সংসার ছেড়ে কেন যাবো? গেলে অন্যকেউ যাবে। আমি না।”
রাহাত রাফাতের সামনে এসে বলল,” দ্যাখ রাফাত, আমি এতোকিছু বুঝি না। তুই মাকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে অপমান করেছিস। তিনি আমাদের মা! আমাদের মাথার ছায়া। তার সাথে এমন ব্যবহার করার আগে তোর একবার চিন্তা করা উচিৎ ছিল। এখন তুই চুপচাপ নিজের অপরাধের জন্য মায়ের কাছে ক্ষমা চাইবি। আর অরোনীকেও বলবি ক্ষমা চাইতে।”
রাফাত মাথা তুলে বলল,” আমি একবার কেন? একশোবার ক্ষমা চাইবো। ছেলে হয়ে নিজের মায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে লজ্জা কিসের? কিন্তু অরোনী ক্ষমা চাইবে না। কারণ মা আসলেই তার সাথে অন্যায় করেছে। প্রথমত তার পরিবার নিয়ে কথা শুনিয়েছে তারপর তার গায়েও হাত তুলেছে। এতোকিছুর পরেও যে অরোনী এই বাড়িতে আছে এটাই অনেক বড় ব্যাপার। ভাবীর সাথে এমন হলে তুমি তখনি ভাবীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। তাই মায়ের অবশ্যই উচিৎ অরোনীর কাছে ক্ষমা চাওয়া।”
রাহাতের মাথার রক্ত টগবগিয়ে উঠল।
” আমার মা ক্ষমা চাইবে?তুই আবার এই কথা বললি?”
” হ্যাঁ বলেছি। মাকে ক্ষমা চাইতেই হবে। নাহলে আজকের পর থেকে আমি মায়ের সাথে আর কোনোদিন কথা বলবো না।”
রাহাত ঠাস করে রাফাতের গালে চড় মারল। গরম কণ্ঠে বলল,
” তুই সেই কুলাঙ্গার, যারা বউকে খুশি করার জন্য মায়ের সম্মানহানী করতেও পিছপা হয় না। ছিঃ! ধিক্কার তোকে।”
এইবার অরোনী আর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না। মাথায় ঘোমটা টেনে নেমে এলো সিঁড়ি থেকে। বরফশীতল কণ্ঠে বলল,” আর আপনি কোথাকার কোন বীরপুরুষ? এতোই যদি মায়ের প্রতি দরদ তাহলে থাকেন না কেন মায়ের কাছে? মা নাকি মাথার ছায়া! তাহলে মাথার ছায়া ফেলে চলে গিয়েছেন কেন?
ও যদি কুলাঙ্গার হয় তাহলে আপনি হবেন অধম! যেই ছেলে বউ নিয়ে মায়ের সাথে একটাদিনও থাকতে পারে না তার মুখে এতো বড় বড় কথা মানায় না। এতোই যখন মায়ের প্রতি সম্মান, তাহলে নিজে এসে পাহারা দিন। বউকে এনে মায়ের সেবা-যত্ন করান। আর সেটা যদি না পারেন তাহলে খবরদার মায়ের হয়ে তরফদারি করতে আসবেন না।”
অরোনী রাফাতের হাত ধরে তাকে টেনে সেখান থেকে নিয়ে এলো। রাহাত অরোনীর মুখের উপর একটা জবাবও দিতে পারল না। কেমন যেন পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে গেল। অরোনী রাফাতকে নিয়ে রুমে ঢুকেই দরজা আটকে দিল। রাফাত বিছানায় বসে দুইহাতে মাথা চেপে ধরল। এসব কি হয়ে যাচ্ছে বাড়িটায়? অরোনী সোফায় এসে বসল। রাগে তার বুক এখনও ধপধপ করছে। চোখ-কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। রাফাত একটু পর দূর্বল গলায় বলল,” তুমি কেন ওখানে গিয়ে কথা বললে অরোনী? এখন আবার সবাই তোমার পেছনে লাগবে।”
অরোনী হুংকার ছাড়ল,” তো আমার কি করা উচিৎ ছিল? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোমার মার খাওয়া দেখবো? আমার স্বামীর গায়ে কেউ হাত তুলবে আর আমি সেটা নীরবে সহ্য করবো?”
রাফাত হতবাক হয়ে গেল। অরোনী এইজন্য এতো রেগে আছে! তার নিঃশ্বাস নেওয়া দেখে রাফাতের নিজেরই ভয় লাগছে। রেগে থাকলে অরোনীকে ভয়ংকর দেখায়। অরোনীর চোখ দু’টো খুব বড়। রেগে গেলে আরও বড় হয়ে যায়। ওই দৃষ্টিতে কারো দিকে তাকালে সে হার্ট অ্যাটাকও করে ফেলতে পারে। রাফাত কিছুক্ষণ থম মেরে থেকে বলল,” তুমিও তো আমাকে কথায় কথায় চড় মারো।”
অরোনী ফুঁসে উঠল,” আমার চড় মারা আর মানুষের চড় মারা কি এক? আমার চড় খেয়ে কি তুমি মরে যাও? তাছাড়া আমি তোমাকে মারবো, কাটবো, যা ইচ্ছা তাই করবো। কিন্তু অন্যকেউ যদি ফুলের টোকাও দেয় তাহলে আমি সেটা সহ্য করবো না। এবার সে যেই হোক, তাকে আমি ছেড়ে কথা বলবো না!”
রাফাত কি বলবে বুঝতে না পেরে হেসে দিল। হাসিও পাচ্ছে আবার দুশ্চিন্তাও হচ্ছে। এরপরে কি হবে?
চলবে…..