- পুরুষের কষ্ট কবিতা
- অবহেলিত পুরুষ কবিতা
- প্রেমিক পুরুষ কবিতা
- কবিতা তুমি পুরুষ
- পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না
- বিশ্বাস নিয়ে কবিতা
১.পুরুষের কষ্ট কবিতা
পুরুষদের নাকি কষ্ট হয় না,
হওয়ার তো কথাও নয়,বাস্তবতায় তারা বাঁচতে জানে,কান্না লুকিয়ে পুরোদমে হাসতে জানে।
পুরুষদের আবার মন ভাঙ্গা কী,
পাজর ভাঙ্গার কষ্ট কেবল হাড় গুলোই জানে
চামড়ার বাহিরে আর ক্ষতর দরকার কী?
পুরুষদের তো মন নেই,
প্রেম নিয়ে খেলেই কেবল
অথচ দায়িত্বের বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে
হয়না পাওয়া ভালোবাসা যাযাবর।
পুরুষ মানেই তো প্লেবয়,
পুরোদমে ভালোবেসে অযুহাত দিয়ে ছেড়ে যায় কেবল,অথচ তাদের কষ্টটাও মেয়েদের মতই প্রখর।
পুরুষ মানেই শক্ত সার্মথ,
খুশিতে চকচক করা চোখ থাকলেও
কান্নায় জ্বল জ্বল করা চোখ থাকতে নেই
ও হ্যা পুরুষদের তো আবার কাঁদতেও নেই।
কেননা, পুরুষদের তো ইনকাম, দায়িত্ব আর নিজের ছোটবড় শখ চাওয়া পাওয়া ইচ্ছের বির্সজনেই বড় হতে হয়, তাদের আবার কান্না কী,তারা তো পাষাণ।
কেননা এই জগৎ এ বির্সজন মানেই নারী,
পুরুষের আর কি হলেই হলো
কোন এক সুন্দরী রমনী আর বিলাসিতায় মোড়ানো বিশাল একটা বাড়ী।
তবুও কখনো কখনো পুরুষেরাও অবহেলিত,প্রতারিত, এমনকি দিনশেষে তারাও বহন করে আকাশ সামান অসহায়ত্ব ।
#পুরুষ।
উম্মে_হাবিবা_কথা।
২.অবহেলিত পুরুষ কবিতা
তোর কষ্ট হয় না?
—না!
এতোটা ভালোবেসেও তুই প্রতারিত হলি;
সত্যিই তোর কষ্ট হয় না? অনুশোচনাও হয় না?
—না!
তুই পাগল। একটু না পুরোটা!
—হয়ত!
ধুর, তোকে কিছু বলেও লাভ নেই!
—দেখ, সবাই সবটা দিয়ে ভালোবাসতে পারে না।
যদি সবাই নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসত তাহলে
ভালোবাসা এত সুন্দর হত না, ভালোবাসার মূল্য থাকত না!
পৃথিবীতে দুইএকজনই এমন করে ভালোবাসতে পারে।
বাকী সব ভালোবাসা-তো দেনা পাওনার মতই, তাই না?
~ সবুজ আহম্মদ মুরসালিন
৩.প্রেমিক পুরুষ কবিতা
হে পুরুষ!
তুমি আর প্রেমিক হলে কই?
যেখানে মুখের ব্রনের দাগটা তোমার কাছে মূখ্য বিষয়!
ব্রনের ব্যাথাটা নয়।
হে পুরুষ!
তুমি আর প্রেমিক হলে কই?
যেখানে চোঁখের নিচের ডার্ক সার্কেল তোমার কাছে মূখ্য বিষয়!
ক্লান্ত শরীররে নির্ঘুম রাতটি নয়।
হে পুরুষ!
বলো! তুমি আর প্রেমিক হলে কই?
যেখানে শাসকের মতো শাসনই মূখ্য বিষয়!
স্বধীনতা নয়।
হে পুরুষ!
বলো! তুমি আর প্রেমিক হলে কই?
যেখানে রোজ ‘ভালোবাসি’ বলাটা মূখ্য বিষয়!
শতাব্দী পর্যন্ত অপেক্ষা করাটা নয়।
হে পুরুষ!
তুমি যে আমার প্রেমিক নও,
মিষ্টি মিষ্টি কথা বললে যে প্রেমিক হওয়া যায় না।
তুমি বরং আমার একজন শাসক যে আমার মনকে শাসন করে স্বাধীনতাকে কেড়ে নিয়েছে।
‘ হে পুরুষ ‘
নুসরাত শর্মি
৪.কবিতা তুমি পুরুষ
পুরুষ মানুষ খারাপ;
কেননা,তাদের জন্মই হয়,ঘরের সকল মহিলাদের দায়িত্বের ভারত্ব বইতে।
পুরুষ মানুষ ভালোনা;
কেননা, মাধ্যমিক পাশ করে তাদের ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে চাকরী খুজতে হয়,অফিসের চক্করে কখনো কখনো হয়তো অভুক্ত থাকতে হয়।
পুরষ মানুষের আবার মন আছে নাকী?
নাহ্,পুরুষদের মন নেই,কারণ চিৎকার করে কাদলেঁ যাদের ভীষন আহমিকায় শুনতে হয় “হিজরা” তাদের আবার মন থাকার প্রয়োজন আছে নাকী,অন্তত সম্মান টা থাকলেই হয়।
পুরুষ মানেই বিশ্বাস ঘাতক ;
কেননা, নারীরা তাদের মন নিয়ে ইচ্ছেমতন পুতুল খেলা খেললেও তাদের নামের পাশে অসহায়ত্ব জুড়িয়ে দেয়া যায়,পুরুষের লোহমর্ষ্কক শরীরে কাঠামোতে প্রতারিত হওয়া চিন্হ কই?তাহলে পুরুষ মানেই তো হলো প্রতারক।
পুরুষ মানুষ মানেই ধর্ষক;
কেননা,এক পুরুষ ধর্ষন করে উন্মুক্ত করে মুখ,বাকী পুরুষদের নারীরা ধর্ষক বলেই জানুক৷ কিন্তু সব পুরুষ ধর্ষক নয়, কিছু পুরুষ বিভিন্ন ভাবে ধর্ষিত ও হয়৷
পুরুষ মানেই কামুক?
কিন্তু নামের সাথে জুড়ে দেয়া ভাইয়া,আর বাবা বলে সম্বোধন করা পুরুষটাও কিন্তু বিশ্বস্ততার আর নির্ভরতার মানুষ৷
পুরুষ মানুষ বড়ই সুযোগ-সন্ধানী ;
কেননা,তারা মাঝরাতেও টাকার জন্য ওভার ডিউটি খেটে বউয়ের সম্ভ্রম রক্ষাকরে বাজে মেয়েদের পিছে ফেলে,বেলীফুল হাতে ঘরে ফিরতে জানে।
পুরুষ মানেই লোভী ;
কেননা,তারা বাড়িতে শান্তি রক্ষার্থে, টাকার অর্থ মেটাতে বউ বাচ্চা পরিবার রেখে বিদেশে করে খাটে, মাস শেষে টাকা পাঠিয়ে নিজের জন্য কিছুই না থাকে৷
কত লোভ পুরুষের মনে।
পুরুষের বিপরীত নামই হলো,প্রতারক ধন্ধাবাজ আর মেয়েবাজ ;
অথচ প্রতারক,ধান্দাবাজ আর মেয়েবাজ না কী এসবের কিন্তু কোন মেয়েলী শব্দ নেই, কিন্তু প্রতারণা,ধান্ধাবাজীতে মেয়েরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই, তাহলে সত্যিই তো পুরুষ প্রতারক আর বড় মাপের ধান্ধাবাজ৷
সব পুরুষ যেমন ধর্ষক হয় না, তেমনি সব পুরুষ আবার ভালোও হয় না৷
বিশ্বাসের আরেক নাম যদি,
ভালোবাসার প্রমান দিতে নির্দিধায় মেয়েরা নিজেদের বিলিয়ে দেয়, তবে সে নারী ধর্ষিত নয় বরং সেই হলো নিজ সত্বার ধর্ষক।
সমাজে ভালো খারাপ মানুষের অভাব নেই,কেবল আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষানিক টা অভাব। সব পুরুষ বাজে হয়না, চোর ডাকাত হয় না, ধর্ষক হয়না,মেয়েবাজ,প্রতারক ও হয়না, অথচ একজন দুজনের জন্য এক পুরুষের নাম হয়ে যায় সব পুরুষ প্রতারক।
কিন্তু এই পুরুষের জন্য, আমরা নারীরা সম্মান পাই।
ভালো থাকুক সকল ভালো পুরুষ। ভুল থাকলে মার্জনীয়।
উৎস্বর্গঃপৃথীবিতে আজও যারা নারীদের সম্মান দিয়ে, বিশ্বস্ততা দিয়ে নারীদের মনে নির্ভরতা জাগিয়ে তোলে তাদের জন্য।
#পুরুষ।
#উম্মে_হাবিবা_কথা।
৫.পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না
পুরুষ মানুষ আবার কাঁদে নাকি? পুরুষদের আবেগ মানায় না।পুরুষদের মন খুব শক্ত।পুরুষরা কঠোর হয়ে থাকে।পুরুষ রা কর্তৃত্ব খাটিয়ে চলে। পুরুষরা প্রমাণ ছাড়া সহজে কথা বিশ্বাস করতে চায় না।
পুরুষ জাতি বেশিরভাগ সময় খালি বাস্তবতা বাস্তবতা করে।
হ্যাঁ, পুরুষরা এমন ই। পুরুষ জাতিটাই এমন।এরা কথা লুকিয়ে রাখে, কাঁদে না। হতাশার ভিড়ে আশার আলো খুঁজতে ভোররাতে একাই বের হয়। মেয়ের স্কুলের বেতন ভরতে হবে, তাই রাত সোয়াতিনটায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভাড়ার সিএনজি নিয়ে পাম্পের লাইনে দাঁড়ায়। পুরুষরা ঝুলে ঝুলে লোকাল বাসে করে অফিস করে। বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সময় পেট,পিঠ টান করে রাখে।গত সপ্তাহে ইস্ত্রি করা শার্টটা যদি কুঁচকে যায় সেই ভয়ে।লন্ড্রী খরচ টা বড্ড বাড়তি মনে হয়।ওই টাকায় ছোট্ট মেয়ের জন্য এক প্যাকেট নুডলস নিয়ে যাবে।
অফিসে বসে এক ধ্যানে কাজ করে, এবার প্রমোশন টা নিতেই হবে।বউটাকে সাধের একটা শাড়ি কিনে দিবে সে।সারাদিন কাঠফাটা রোদ আর বর্ষার জলে সমঝোতা করে চলা রিকশাচালক টা জুতো খুলে ঝুলিয়ে রেখে রিকশা চালায়।পড়ে চালালে দু’দিনেই ক্ষয়ে যাবে যে।নতুন জুতো কেনার টাকা দিতে সে রাজি নয়।বউয়ের অষুধ কিনতে হবে তার সাথে কেজিখানেক চাল, ডাল আর দুটো মসল্লা।
সারাদিন ভার্সিটির ক্লাস করে মেসে এসে ছেলেটা খাবার পায় না। মিলের টাকা যে বাকি।তাই তার ভাগের চালটা আর হাঁড়িতে পরে নি।পকেট ফাঁকা,টিউশনির টাকা শেষ। মাত্র পনেরো’ শ টাকা আছে।সে খালি পেটে উঠে গিয়ে টাকাটা পাঠিয়ে দিলো ছোট বোনের ফর্ম ফিলাপের জন্য। অনাহারে থাকবে নাকি অর্ধাহারে সে চিন্তার অবসর নেই।
অভাবের তাড়নায় সাত বছরের ছোট্ট ছেলেটাকে গ্যারেজে কাজে নামিয়ে পঙ্গু বাবা লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে। পুরুষদের যে কাঁদতে মানা!
বিয়ের বয়েস বয়ে যাচ্ছে, সরকারি চাকুরির আশা টা বোধহয় জলাঞ্জলি দিতে হবে এবার।চারপাশের নানান কটু কথার ভিড়ে চাকরি-বাকরি ছাড়া ছেলেটা বেকার নামে পরিচিত আজ। হাতে ভালো সিজিপিএ আর চকচকে সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও কিছু উপঢৌকন দিতে না পারায় নিয়োগকারীর মলিন মুখে শুনে যায় ” ঠিক আছে, আপনি আসুন।”
নিজের প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে অফিস থেকে অফিসে নির্বিঘ্নে ছুটে চলে একটু উপার্জনের ঠাঁই খুঁজতে। আবেগ কে বিবেকের মাটিতে কবরস্থ করে সংসার চালানোর পথ খুঁজতে ব্যাকুল সেই পুরুষ।
মেয়ের বাবার কঠিন কিছু আবদার পূরণ করতে গিয়ে নতজানু হয়ে প্রেয়সীকে দু’হাত পেতে চাওয়া প্রেমিকটাও পুরুষ।
ছোটবেলা থেকে একটা বাইকে চড়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হওয়া ছেলেটা চার বছর টানা টিউশনি করিয়ে, বাইকের শো রুমে গিয়েও জমানো টাকা নিয়ে ফিরে আসে। তার আত্মায় কুলোয় না বাইক টা কিনতে! বোনটার একটা বিয়ে দিতে হবে যে! বিয়ের জন্য সেই জমানো টাকায় কেনা বাইকের স্বপ্ন টা হাসি মুখে উড়িয়ে দিয়ে নিজেকে স্বান্তনার বাণী শোনায় ” বাইক কেনা যাবে না, তেলের এত দাম , এক্সিডেন্টও হয় প্রচুর! কি দরকার!
হ্যাঁ, এটাও একজন পুরুষ।
পুরুষ রা প্রিয়জনের লাশ কাঁধে নিয়েও কাঁদে না। পুরুষরা বাস্তবতায় বিশ্বাসী হতে বাধ্য। এরা মনের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ। এরা একটু সাপোর্ট চায়, একটু পাশে থাকার মানুষ চায়। প্রতিটা নারীর সদিচ্ছা থাকলে প্রতিটা পুরুষ হয়ে উঠবে একেকটা সফল যোদ্ধা।
পুরুষ কখনো নারীর প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে না।নারীর একজন রক্ষক, একজন নিরাপদ আশ্রয় হলো পুরুষ। পুরুষরা বাইরের জগৎ টা বেশি চেনে বলেই নারীদের আগলে রাখতে কঠোর হয় তারা। পুরুষদের কঠোরতার শক্ত খোলসের ভেতর লুকিয়ে থাকা অদৃশ্য কোমলতা কেবল কতিপয় নারীরা উপলব্ধি করতে পারে। সেইসব পুরুষ এবং নারী দু’জনেই ভাগ্যবান ও ভাগ্যবতী।
#পুরুষ
লেখনীতে ~ নাসরিন শুচি
৬.বিশ্বাস নিয়ে কবিতা
“পুরুষ”
~~মোহনা জাহ্নবী
পুরুষ মানুষকে ঠিক বিশ্বাস করা যায় না?
– আমার বাবা’র অসুস্থতার সময় আমার যে পুরুষ বন্ধুটি রাতের পর রাত আমার সাথে জেগে ছিলো, তাকে আমি অবিশ্বাস করতে পারবো না কোনোদিনই!
পুরুষ মানুষ খুব সুযোগসন্ধানী?
-যে পুরুষ বন্ধুর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাতে ঘুমাতে আমি ঢাকা থেকে সুদূর বগুড়া পর্যন্ত গেলাম, সারারাত ট্রেনে একসাথে থাকলাম। সে চাইলেই তো সুযোগ নিতে পারতো। নেয়নি তো!
পুরুষ মানুষ কখনো সৎ হতে পারে না?
-আমার বাবা প্রকৌশলী ছিলেন। প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরি করতেন। কোটি কোটি টাকার প্রোজেক্ট করেছেন। অথচ জীবনে এক টাকাও ঘুষ খান নি। যার ফলশ্রুতিতে মৃত্যুর আগে তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমাদের মানুষের কাছে হাত পাততে হয়েছিলো। সেই বাবা নামক পুরুষটিকে আমি অসৎ ভাবি কি করে!
পুরুষ মানুষ মানেই দুঃশ্চরিত্র?
-একদিন ঝুম বৃষ্টির ভেতর এক পুরুষ বন্ধুর সাথে বাসায় ফিরছিলাম। ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন এগারোটা। নীল স্যালুফিনে রিক্সার সামনের অংশ ঢেকে বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছি। ঐ বৃষ্টির রাতে আমার নিঃশ্বাস দূরত্বে বসা পুরুষ বন্ধুটা চাইলেই তো আমার শরীরে হাত চালিয়ে দিতে পারতো। দেয়নি তো!
পুরুষ মানুষরা স্বার্থপর?
-কতোবার কতো পুরুষ পাবলিক ট্রান্সপোর্টে নিজের জায়গা ছেড়ে দিয়ে অনুরোধ করে আমাকে বসতে দিয়েছে। যে অচেনা অজানা একটা মানুষের জন্য নিজের জায়গা ছেড়ে দেয়, সেই পুরুষকে আমি স্বার্থপর ভাবি কিভাবে বলুন!
পুরুষ মানুষকে ঠিক ভরসা করা যায় না?
-আমার বাবার এ্যাকসিডেন্টের পর মৃত্যুর আগপর্যন্ত সাত আট বছর চাকুরি ছিলো না। টানাপোড়েনের সংসারে বাবার কাছে যখনই টাকা চাইতাম, চোখবন্ধ করে জানতাম নিজে না খেয়ে থাকলেও আমাকে যেভাবেই হোক টাকা যোগাড় করে দেবে। সেই বাবা নামক পুরুষটা কি ভরসার অযোগ্য!
পুরুষ মানুষ মাত্রই বদনজরে তাকায় মেয়েদের দিকে?
-একদিন নীল শাড়ি পরে এক পুরুষ বন্ধুর সাথে সন্ধ্যেবেলায় রিক্সা চড়ে যাচ্ছিলাম। সে হঠাৎ করে বললো, তোমাকে এক মিনিট দেখতে দিবে? আমি জানি, আজ অবধি এমন তুমুল মুগ্ধতা নিয়ে কোনো পুরুষ আমার দিকে তাকায় নি। সব পুরুষের চোখে কাম লালসা থাকে না আমি বিশ্বাস করি!
পুরুষ মানুষ মেয়েদের সম্মান করতে জানে না?
-এক পুরুষ আমাকে ভালোবাসে, একতরফাভাবেই ভালোবাসে। তাকে কোনোভাবেই আমার জীবন থেকে তাড়াতে পারছিলাম না বলে খুব অপমান করেছিলাম। সে মাথা পেতে সব অপমান সহ্য করেছিলো। তখন আমার রাগ আরো বেড়ে গেলো। কেনো সে আমার কোনো কথার প্রতিবাদ করছে না? সে আমাকে চমকে দিয়ে বললো, নারীরা তো দেবী হয়, দেবীর সামনে কখনো উঁচু গলায় কথা বলতে নেই!
পুরুষের কাছে কোনো মেয়ে নিরাপদ নয়?
-সেদিন ছিলো একুশে ফেব্রুয়ারি। এতো ভীড় বইমেলায়। আমার সাথে যে পুরুষ বন্ধুটা ছিলো, সে আমাকে না ছুঁয়েই আমার দুই পাশে হাত রেখে ভীড় থেকে আমাকে বের করে আনলো, যাতে অন্য কোনো পুরুষের সুযোগসন্ধানী নোংরা হাত আমাকে ছুঁতে না পারে! সেই পুরুষ বন্ধুর কাছে কি আমি নিরাপদ ছিলাম না!
পুরুষ মাত্রই ডোমেনেটিং স্বভাবের?
-আমার এক পরিচিত পুরুষ, বিবাহিত জীবনে খুব সুখী। সে কখনো তার সহধর্মিণীর চলার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না, তার স্বপ্নগুলোকে সম্মান করে। সহধর্মিণীর চেয়ে সে তাকে সহমর্মী ভেবেছে খুব। দু’জন সহযোদ্ধা হয়ে সংসারে টিকে থাকার জন্য স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে বন্ধু হয়ে উঠেছে ঢেড় বেশি। সেই পুরুষের রক্তে তো ডোমিনেটিং স্বভাব নেই!
পুরুষ মাত্রই ধর্ষক?
– যখন কোনো স্ত্রী ভীষণ আত্মতৃপ্তি নিয়ে বলে “আমার স্বামীর ভেতর আমি আমার বাবার ছায়া দেখতে পাই”, সেই পুরুষ আর যাই হোক ধর্ষক হতে পারে না কখনোই!
পুরুষ মানুষ কথা দিয়ে কথা রাখে না?
-প্রেমিকার কথা রাখবে বলে যে প্রেমিক সিগারেট ছেড়ে দেয়, সে কি কথা রাখে নি!
পুরুষ মানুষ কঠিন হৃদয়ের অধিকারী?
-আদরের বোনকে হাস্যজ্জ্বল মুখে শ্বশুরবাড়িতে
পাঠিয়ে যে ভাই আড়ালে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলে, সেই ভাই নামক পুরুষটা কি কঠিন!
এ পৃথিবীতে যেমন ধর্ষক পুরুষ আছে,
দুঃশ্চরিত্র, সুযোগসন্ধানী, স্বার্থপর,
নোংরা পুরুষ আছে,
তেমনই আছে ভরসা করার মতো
‘বাবা’ নামক পুরুষ,
বিশ্বাস করার মতো
‘প্রেমিক’ নামের পুরুষ,
বিপদে পাশে পাবার মতো
‘বন্ধু’ নামক পুরুষ,
প্রচন্ডভাবে আগলে রাখার মতো
‘ভাই’ নামের পুরুষ!
অবিশ্বাসী পুরুষদের মহামিছিলে যেনো
এইসব সত্যিকারের পুরুষেরা হারিয়ে না যায়,
তাই কবিতায় থেকো ঋদ্ধ পুরুষ,
থেকো আমার শ্রদ্ধায়,
মননে আর তুমুল ভালোবাসা ও ভরসায়!!