বজ্জাত বউ .
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ৪
রাতে পরশ আফিস থেকে বাড়ির ফিরে নিজের রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে পোকাশ চেন্জ করার জন্য আলমারি খুলতেই পরশের রাগ মাথায় উঠে গেলো।
পরশ:আম্মু আম্মু কোথায় তুমি ( চিৎকার করে)
আম্মু: পরশ এতো চিৎকার করছে কেনো। মিষ্টি তুই যেয়ে দেখ তো কি হয়েছে ( রান্না রুমে রান্না করতে করতে বললো)
মিষ্টি: তোমার কে ডেকেছে তুমি যাও।
দিশা: ভাবি সত্যি করে তুমি কি করেছো। আমার কিন্তু ভয় করছে ( ফিস ফিস করে বললো,)
মিষ্টি: ওয়েট করো ননদিনী একটু পর সব জানতে পারবে।
পরশ: আম্মু তোমাকে এতো করে সারা দিচ্ছো না কেনো।( সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো)
আম্মু: কি হয়েছে এতো চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তুলছিস কেনো।
পরশ: কি হয়েছে দেখো তোমার গুনোধর বউমা কি করেছে দেখো।
আম্মু: তোর হাতে তো জামা দেখছি। জামা নিয়ে কি করলো মিষ্টি।
পরশ: তোমার গুগোধর বউমা জিঙ্গাসা করো সে কি করেছে।
আম্মু: কি করেছিস।
মিষ্টি: আসলে মামনি ( মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
পরশ: থাক আমি বলছি তোমার গুনোধর বউ মা আমার সবগুলো জামা- কাপুড় কেটে দেখো কি করেছে।
মিষ্টি: যা করেছি বেশ করেছি। মামনি আজ আমি আমার পোশাক গুলো আলমারিতে রাখতে গিয়ে দেখি ওনার যবতীয় পোকাশ শুধু সাদা আর কালো রঙের। তাই আমি ভাবলাম পোশাকগুলো রঙিন করা উচিত । তাই কেচি আর আটা দিয়ে কাপুড় কেটে ওনার শার্টে বসিয়ে রঙিন বানিয়েছি। তবে হ্যা এর জন্য আমার দামি দুইটা শাড়ি কাটতে হয়েছে।
পরশ: আম্মু তুমি হাসছো।
আম্মু: ঠিক আছে আমি হাসবো না। তবে পরশ শার্ট গুলো দেখতে কিন্তু বেশ লাগছে। তোকে মানাবে খুব।
পরশ: আমি তোমাকে ছাড়বো।
মিষ্টি: আমি চাই না সোয়ামী তুমি আমাকে ছাড়ো।
আম্মু: কোথায় যাচ্ছিস খেয়ে যা।
পরশ: আমি খাবো না তোমরা খাও।
মামনি: মিষ্টি তুই কিন্তু কাজটা মোটে ঠিক করিস নি। ছোটো বেলায় থেকে ও সাদা কালো রঙ ছারা কিছু পড়েনি।
মিষ্টি: মামনি ছোটো বেলায় পড়েনি তো কি হয়েছে এখন পড়বে। ( বলে হাসতে লাগলো)
দিশা: তবে ভাইয়া খুব রেগে গেছে।
মিষ্টি: এই গোখরা সাপকে আমি দেখে নেবো। মামনি চলো রান্না ঘরে ক্ষুধা পেট চোচো করছে।
মামনি: তোরা টেবিলে বসে পড় আমার খাবার নিয়ে আসছি।
তারপর মামনি, দিশা, আর মিষ্টি মিলে রাতের ডিনার শেষ করলো। মামনি আর দিশা কথা বলছিলো। আর মিষ্টি একটা প্ল্যাটে কিছু খবার সাজিয়ে উপরে চলে আসলো। ঘরে দরজায় কাছে এসে দেখতে পায় পরশ আলমারিতে মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা খুজছে । মিষ্টি খাবার গুলো টেবিলে রেখো বললো
মিষ্টি: এটা খুজছেন ( হাত বারিয়ে ওড়না নিয়ে বললো)
পরশ: মিষ্টির দিকে তাকিয়ে এই তো সেই ওড়না।
মিষ্টি: এটা কার ওড়না ( মন খারাপ করে)
পরশ: তোমাকে বলতে বাধ্য নয়।
মিষ্টি: ভালো যেদিন যানবে ওড়নাআলি আমি সেদিন দেখবে অনেক দেরি হয়ে গেছে ( মনে মনে)
পরশ: এ ভাবে দাড়িয়ে না থেকে যাও।
মিষ্টি: দেখবেন একদিন সত্যি চলে যাবো।
পরশ: এখনি যাও না কেনো।
মিষ্টি: টেবিলের পর খাবার টা রেখে গিলাম। খেয়ে নিয়েন। পেটে ক্ষুদা থাকলে মাথায় বুদ্ধি আসে না । বলে মিষ্টি বিছানাতে শুয়ে পড়লো।
পরশ: খাবো না আমি বলে ওড়না টা নিয়ে বেলকোনি তে চলে গেলো।
মাঝরাতে হঠ্যৎ মিষ্টি পছন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হলো।
মিষ্টি: এই ব্যাথা টা আবার শুরু হলো কেনো। অ: অসহ্য কর ব্যাথা। ভাইয়া দেওয়া ওষুধটা কোথায় যেনো রেখেছিলাম। হ্যা মনে পড়েছে আমার ব্যাগে। ব্যাগ থেকে ওষুধ টা নিতে বসে আমার ধাক্কা তে পানির গ্লাসটা ভেঙে যেতে ওনার ঘুমটা ভেঙে গেলো।
পরশ: এতো রাতে কি তোমার গ্লাস ভাঙার ইচ্ছে হলো। না আমার ঘুম ভাঙ্গতে লেগেছো।
মিষ্টি: sorry আসলে আমার খুব মাথা ব্যাথা হচ্ছিলো তাই ওষুধটা খেতে বসে গ্লাসটা ভেঙে গেছে।
পরশ: সারাদিন মাথায় মধ্য আজেবাজে চিন্তা করলে এই রকম মাথা ব্যাথা তো হবে বলে পরশ শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
মিষ্টি: ভাইয়া কথা মতো কি একবার টেষ্ট করাবো না থাক সামান্য মাথা ও এমনিতে সেরে যাবে।
পরেদিন সকালে পরশ ঘুম থেকে ওঠে চিন্তা পড়ে গেলো।
পরশ: আজ কি পড়ে যাবো আমি আফিসে। কালকে রাগে শপিং মলে যাই নাই। আর এতো সকালে শপিং মলতো খুলা থাকে না বলেতে হঠ্যৎ ডেসিং টেবিলে চোখ যেতেই দেখতে পেলো ডেসিং টেবিলে কাচে ওপর লাল রঙের লিপিস্টিক দিয়ে বড় করে লেখা টেবিলে উপরে একটা প্যাকেট আছে আপনার জন্য। প্যাকেট আর আমার জন্য বলতে আমি টেবিলে উপর তাকিয়ে দেখি লীল রঙের কাগজ দিয়ে মোড়ানো একটা প্যাকেট। আমি টেবিল থেকে প্যাকেট টা নিয়ে খুলে দেখি এটা তো একটা শার্ট তাও আবার ব্লু রঙের। আমি কখনো সাদা কালো ছাড়া শার্ট ছারা পরি না। অম্ভব আমি পড়তে পারবো না তাছাড়া আমাকে এই রঙের শার্ট পড়লে জোকার জোকার লাগবে। এদিকে তো আফিসে টাইম হয়ে যাচ্ছে। আফিসে দেরি হয়ে গেলেতো বস বকবে কি করবি এখন পরশ। না আর কেনো উপায় নেই এটাই পড়তে হবে এই মেয়েটা আমার লাইফে আসার পর একটা একটা কান্ড ঘাটাছে। যাই ফ্রেস হয়ে নেই বলে শার্টা টা নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ডেসিং টেবিলের সামনে দাড়াতেই
পরশ: শার্ট টা পড়ে আমাকে খারাপ লাগছে না। তবে শার্টটা সুন্দর। মেয়েটার পছন্দ আছে। এই যা আফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে।
মিষ্টি: মামনি তুমি এই চেয়ারে শক্ত করে বসোতো।
মামনি: শক্ত করে বসবো কেনো
মিষ্টি: কারন আর ২ মিনিট পর তুমি ৩৬০ ডিগ্রি শট সাকিট খাবে।
মামনি: কি বলিস না তুই শর্ট খাবো কেনো।
মিষ্টি: 5.4.3.2.1 সামনে দিকে তাকাও।
মামনি: একি দেখছি আমি। নিজের চোখকে যে বিশ্বাস হচ্ছে না। সত্যি আমি শর্ট খেয়েছি।
পরশ: কি সব বলছো মা। তুমি না এই মেয়েটা সাথে থেকে থেকে না এরকম হয়ে যাচ্ছো।
আম্মু: না রে আমি সত্যি বলছি। দেখি ভালো করে ছেলেকে। আমার ছেলেটাকে আজ একদম অন্যরকম লাগছে।
দিশা: ভাইয়া দেখি দেখি তোকে না আজ দারুন লাগছে। ভাবি তুমি না ফাটিয়ে দিয়েছো ভাইয়াকে এরকম শার্ট পড়িয়ে। ভাইয়া তোকে আজ রাস্তায় কোনো মেয়ে দেখলে একদম ফিট খেয়ে যাবো।
পরশ: মার খাবি এবার। আম্মু আমার ব্রেক ফাস্ট টা দাও ( চেয়ারে বসে বললো)
আম্মু: নিলুফা খাবার নিয়ে আয়।
নিলুফা: ভাই জান সত্যি সত্যি আজকে আপনাকে অনেক সুন্দর। লাগতাছে। একদম হিরো কি যেনো হিন্দি ছবি করে
মিষ্টি: সালমান খান
নিলুফা: সালমান খানের মতো লাগতাছে।
পরশ: আমি মিষ্টি কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও একধারে আমর দিকে তাকিয়ে আছে। একবারও চোখের পলক ফেলছে না। ওর ঠোটের কোনে মনে হচ্ছে একটু হাসি ফুটে আছে। তবে মেয়েটার হাসিটা অনেক সুন্দর।
মিষ্টি: ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেনো।
পরশ: এই মেয়েটা মুখে এক রকমে মায়া আছে। একবার তাকালে চোখ ফিরাতে ইচ্ছা করে না।
মিষ্টি: কি দেখছেন
পরশ: কিছু না ( চোখ নামিয়ে) আম্মু খাবার দাও।
সবাই বেক ফাস্ট করে
দিশা: আমি আসছি আম্মু, আসছি ভাবি
পরশ: আম্মু আমি ও আসি বলে দরজা সামনে যেতে
মিষ্টি: মামনি তোমার ছেলে কে তুমি thank you বলতে শোখাও নি।
পরশ: আম্মু আসি। বলে চলে এলাম। আফিসে ডুকতেই……………
(চলবে)