বজ্জাত বউ .
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ৫
পরশ: আমি আফিসে ডুকতে আফিসের সব কর্মচারী গুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওদের তাকিয়ে থাকাতে আমার একটু বিরক্তি লাগছে। আমি কিছু না বলে নিজের আফিস রুমে চলে আসলাম। একটু পর আসলাম সাহেব এসে দরজায় নক করতে
আসলাম সাহেব:may I come in sir
পরশ: আসলাম সাহেব আসুন ভেতরে আসুন।
আসলাম সাহেব: স্যার আজ আপনাকে দারুন লাগছে। আফিসে সবাই আপনার দিক থেকে চোখ ফিরাতে পারছিলো না।
পরশ: আজেবাজে কথা বাদ দিয়ে কাজের কথা বলুন
আসলাম সাহেব: সত্যি বলছি স্যার। আপনাকে আজ সালমান খানের মতো লাগছে। স্যার একটা প্রশ্ন করবো?
পরশ: কি প্রশ্ন?
আসলাম সাহেব: স্যার শার্ট টা কি আপনাকে ভাবী দিয়েছে।
পরশ: হ্যা।
আসলাম সাহেব: সত্যি স্যার ভাবীর পছন্দ আছে।
পরশ: আসলাম সাহেব আপনার বলা হয়েছে। যদি হয় তাহলে ফাইলটা নিয়ে কথা বলি।
আসলাম সাহেব: sorry স্যার আসলে আপনাকে এতো সুন্দর লাগছে যে না বলে থাকতে পারছিনা।
পরশ: হয়ছে।
আসলাম সাহেব: জি স্যার।
পরশ: তাহলে কাজ করুন। বলে পরশ ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে লাগলো।
এদিকে মিষ্টির হঠ্যৎ করে মাথা ব্যাথা বেশি হতে লাগলো।
মিষ্টি: এতো মাথা ব্যাথা হচ্ছে কেনো। ভাইয়া কে একবার ফোন দিয়ে বলবো। হ্যা ভাইয়া কে ফোন দেই বলে ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন করলাম।
আহাদ( মিষ্টির চাচাতো ভাই): হ্যালো মিষ্টি কেমন আছিস।
মিষ্টি: ভাইয়া তুমি এখন কোথায়?
আহাদ: আমি রেডি হচ্ছি মেডিকেলে যাবো।
মিষ্টি: ভাইয়া তুমি একবার আমার শশুড় বাড়িতে আসতে পারবে।
আহাদ: মিষ্টি তুই ঠিক আছিস তো। তোর মাথা ব্যাথা বেরেছে না। তোকে কতো বার বলেছি একবার আমার এখানে এসে টেষ্ট করাতে।
মিষ্টি: ভাইয়া তুমি আগে বলো আসবে কিনা। না আসলে তোমার সাথে কথা বলবো না।
আহাদ: ঠিক আছে আমি আজ সন্ধ্যায় আসছি।
মিষ্টি: thank you ভাইয়া।
আহাদ: পাগলী একটা।
অপর দিকে
দিশা আর দিশার বন্ধবীরা মিলে মেডিকেল কলেজে ক্যাম্পসের বসে আছে।
দিশার বন্ধুরা : কি রে দিশা আজ তোর হিরো আর আমাদের আহাদ স্যার তো দেখায় যাচ্ছে না। আচ্ছা দিশা তুই স্যারকে বলতে পারিস য়ে তুই স্যার কে ভালোবাসিস।
দিশা: তোরা চুপ করবি।
বন্ধুরা : ওই দেখ আহাদ স্যারে গাড়ি গেটে ডুকছে।
দিশা একবার গাড়ির দিকে তাকালো। তারপর বললো তোরা সবগুলো একটা।
বন্ধুরা : আমরা সবগুলো কি বল
দিশা: বেল পড়ে গেছে চল ক্লাস রুমে যাই। তারপর সবাই মিলে ক্লাস রুম গিয়ে ক্লাস করলো। সারা ক্লাসে দিশা শুধু আহাদে দিকে তাকিয়ে আছে। আহাদ সেটা খেয়াল করেছে। ক্লাস শেষ করে সবাই বের হয়ে চলে গেলো। দিশা আর দিশা বন্ধুরা পরে বের হতেই পেছন থেকে আহাদ দিশা কে ডাকলো
আহাদ: দিশা তুমি থাকো আর বাকিরা আসতে পারো।
দিশার বন্ধুরা আমারা আসি দিশা ( দিশাকে ধাক্কা দিয়ে বললো)
আহাদ: দিশা তুমি আমার একটা help করবে।
দিশা: কি help স্যার।
আহাদ: আসলে আমার মেয়েদের gifts সম্পকে ধরনা নেই। তুমি একটাgifts কিনতে সাহায্য করবে।
দিশা: স্যার কি কোনো মেয়েকে পছন্দ করে ( মনে মনে) কেমন মেয়ে স্যার।( মন খারাপ করে বললো)
আহাদ: একটু চনচল। তবে দেখতে অনেক সুন্দর।
দিশা: ঠিক আছে চলুন।
আহাদ: হ্যা চলো।
তারপর আহাদ আর দিশা মিলে একটা শপিং মলে গেলো।
আহাদ: দিশা তুমি ওদিক টা দেখো আমি কিছু চকলেট কিনে আনি।
দিশা: চকলেট কেনো স্যার।
আহাদ: কারন আমার ছোটো বোনটা চকলেট খুব পছন্দ।
দিশা: ছোটো বোন মানে।
আহাদ: ও তোমাকে তো বলা হয়নি আসলে আমি আজ আমার ছোটো বোনের শশুড় বাড়ির তে যাবো তাই ওর জন্য কি gifts কিনবো বুঝতে পারছিলাম এর জন্য তোমারকে আর কি
দিশা:ছোটা বোন আগে বলবেন তো আমি মনে করেছিলাম আপনার girl
আহাদ: কি
দিশা: কিছু না স্যার আপনি চকলেট কিনে আনুন আমি ততো সময় শাড় দেখতে থাকি।
আহাদ: ঠিক আছে বলে চলে গেলো।
একটু পর
আহাদ: পছন্দ হয়েছে।
দিশা: এই দুটো পছন্দ হয়েছে কোনটা যে সিলেট করবো বুঝতে
আহাদ: আপনি বরং দুটো শাড়ি দুটা প্যাকেট করে দিন।
দোকানদার: ok স্যার
দিশা: দুটা শাড়ি দুটা প্যাকেট কেনো স্যার।
দোকানদার: এই নিন স্যার আমার শাড়ি।
আহাদ : thank you
দোকানদার: ধন্যবাদ।
আহাদ: দিশা এটা ধরো।
দিশা: ok স্যার
আহাদ: এখন যাওয়া যাক বলে দুজনে গাড়িতে উঠে বসলো। আহাদ গাড়ি চালাতে লাগলো।
দিশা: স্যার এখানে রাখুন
আহাদ: এখনে( গাড়ি থামিয়ে)
দিশা: আসলে স্যার আমি এখানেই নামবো।( বলে গাড়ি থেকে নেবে পড়লো)
আহাদ: দিশা
দিশা: কিছু বলবেন স্যার
আহাদ: এটা তোমার জন্য ( একটা শাড়ির প্যাকেট দিয়ে)
দিশা: কিন্তু
আহাদ: কোনো কিন্তু না তোমাকে নিতে হবে
দিশা: ঠিক আছে ( প্যাকেটটা হাতে নিয়ে)
তারপর দিশা বাড়ি এসে নিজের রুমে গিয়ে শাড়ির প্যাকেট টা খুলে শাড়িটা আয়নার সামনে নিয়ে গিয়ে দেখছিলো।
মিষ্টি: কি দিয়েছে আমার ননদাই( দরজায় সামনে দাড়িয়ে)
দিশা: ভাবি তুমি
মিষ্টি: হু আমি কে দিয়েছে।
দিশা: স্যার দিয়েছে।
মিষ্টি: তাহলে তো শাড়িটা পড়তেই হবে
দিশা: ভাবি তুমি ও না
মিষ্টি: আ( মাথা ধরে)
দিশা: ভাবি কি হয়েছে।
মিষ্টি: কিছু না তুমি শাড়িটা পড়ো আমি আসছি বলে মিষ্টি চলে গেলো।
সন্ধ্যায় বাড়ির কলিং বেল বাজতেই দিশা দরজায় খুলতে আবাক
দিশা: স্যার আপনে
আহাদ: বাহ্ মেয়েটাকে শাড়িটা বেশ সুন্দর লাগছে ( দিশার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো))
দিশা: স্যার
আহাদ: sorry তুমি এখানে
দিশা: স্যার এটা আমার বাড়ি
মিষ্টি: ভাইয়া ( সিড়ি দিয়ে নামতে)
আহাদ: মিষ্টি
মিষ্টি: ভাইয়া ( আহাদকে জরিয়ে ধরে)
আহাদ: আমার বোনটাকে ভালো করে দেখি
মিষ্টি: ভাইয়া তুমি আগে বসোতো নিলুফা চা মিষ্টি নিয়ে আয়। ভাইয়া এটা আমার শাশুড়ি মা, এটা আমার ননদিনী
আহাদ: দিশা তাইতো
মিষ্টি: তুমি চিনলে কি করে
দিশা: ভাবি স্যার
মিষ্টি: স্যার দিশা
আহাদ: এ সব বাদ দে আগে বল পরশ কোথায়।
মিষ্টি: কোথায় আবার আফিসে
।মামনি: ভালো আছো বাবা।
আহাদ: হ্যা অ্যান্টি আপনি ভালো আছেন তো।
মামনি: আল্লাহ রহমতে ভালো আছি। বাবা তুমি আজ না খেয়ে যাবে না কিন্তু। আর মিষ্টি তুই কথা বল আমরা খাবার তেরি করি দিশা আয়।
মিষ্টি: ঠিক আছে মামনি।
আহাদ: তুই ঠিক আছিসতো বোন।
মিষ্টি: চারদিকে তাকিয়ে ভাইয়া আমার মাথা ব্যাথা বেশি হচ্ছে। যখন তখন ব্যাথা করছে।
আহাদ: কি বলছিস। তুই পরশকে বলেছিস
মিষ্টি: না ভাইয়া।
আহাদ: তুই বরং কাল একবার আমার হাসপাতালে আয়।
মিষ্টি: ঠিক আছে ভাইয়া
দিশা: ভাবি খাবার রেডি স্যারকে নিয়ে এসো।
মিষ্টি: ভাইয়া তুমি বিয়ে করবে না।
আহাদ: কেনো।
মিষ্টি: না আমার কাছে একটা ভালো পাএ আছে তো তাই।( দিশার দিকে তাকিয়ে বললো)
আহাদ: কে
দিশা: ভাবি চলো স্যার আসুন
বলতে আবার কলিং বেল বেজে উঠলো।
মিষ্টি: এসে গেছে।
দিশা: আমি দরজায় খুলে দিচ্ছি। বলে দিশা দরজায় খুলে দিলো।
আহাদ: hi আমি ডাক্তার আহাদ রহমান ( হাত এগিয়ে দিয়ে বললো)
পরশ: আমি আরফিন ইসলাম পরশ। আসলে আপনাকে তো চিনলাম না।
আহাদ: দুটো পরিচয় আছে কোনটা দেবো সেটা বলো।
পরশ: ঠিক বুঝলাম না।
আহাদ: আসলে আমি মিষ্টির চাচাতো ভাই। আমি তোমাদের বিয়ে সময় ছিলাম না তাই চিনতে পারো নি। আর একটা হলো আমি দিশার স্যার।
পরশ: sorry আসলে আমি
আহাদ : প্রথম না চিনলে এই রকম হয়। আগে বলো আমার বোনটা তোমাকে কেমন জ্বালাই।
পরশ: বলে শেষ করা যাবে না।
আম্মু: তোমরা শুধু কথা বলবে এদিকে যে খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলো।
পরশ: ভাইয়া আপনি বসুন আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
পরশ ফ্রেস হয়ে আসার সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া শেষ করে গল্প করতে লাগলো।
আহাদ: অনেক রাত হয়েগেছে আজ আমি আসি বলে আহাদ ওঠে দাড়ালো। তারপর সবাই কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
আহাদ চলে যাওয়া পর পরশ নিজের রুমে এসে বই পড়ছিলো। পরশের সামনে মিষ্টি এসে দাড়াতে পরশ বললো……..
(চলবে……