বজ্জাত বউ
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ৬
মিষ্টি পরশের সামনে এসে দাড়াতেই পরশ বললো
পরশ: এই রকম সঙের মতো সামনে এসে দাড়ালে কেনো। দেখছো একটা কাজ করছি।
মিষ্টি: আমার ঘর আমি যেখানে খুশি সেখানে দাড়াবো। তাতে আপনার কি। আর দুনিয়া সব কাজ যেনো ওনি একাই করে হুহ্।
পরশ: আচ্ছা কি করো কোনো কাজ তো করো না। সারাদিন শুধু মাথায় দুনিয়ার যতো খাবাপ বুদ্ধি আছে তা ঘুরপাক করে। আর পড়াশুনা বলবো না তিন বার ইংরেজীতে ফেল করে বসে আছে।
মিষ্টি: এই শুনুন পড়াশুনা নিয়ে কোনো কথা বলবেন না কিন্তু। আর ফেল করেছি বেশ করেছি এতো পড়ে কে খাবে। যতোসব পড়াশুনা। আর আমার বিয়ে হয়ে এখন পড়াশুনা করে কোনো লাভ নেই।
পরশ: তোমার সাথে ফালতু কথা বলায় কেনো ইচ্ছে নেই সামনে থেকে সরে যাও।
মিষ্টি: কি এমন রাজ কাজ করছেন। মনে হচ্ছে এই কাজ করলে ওনাকে নোবেল পুষ্কার দেবে। বলে বিছানাতে শুয়ে
পড়লো।
পরশ: এই মেয়েটা কবে যেনো আমাকে পাগলা গারোতে পাঠানো। এতো কথা বলে।
রাত ১২ টা
মিষ্টি: এই গেখরা সাপটা কি ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু দেখিতো। না ঘুমিয়ে পড়েছে ( নাকে হাত দিয়ে) মিষ্টি এখন তোর কাজ কর । কোথায় রাখলো ফাইলটা। ওতো ফাইল.। এসব কি একেছে যতো সব আজেবাজে নকশা। এর থেকে আমি ভালো করে আকতে পারি। পেন্সিলটা পেয়েছি এবার দেখ আমি কি সুন্দর করে আকি। তারপর মিষ্টি ফাইলটা নিয়ে আকতে লাগলো। আকা শেষ করে বিছানা তে এসে পরশের দিক তাকিয়ে বললো
মিষ্টি: একে একটু আকি। বলে মারকার দিয়ে পরশের মুখ আকলো। এবার সকালে দারুন মজা হবে। এখন ঘুমিয়ে পড়ি।
পরেদিন সকালে পরশ ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে দাড়াতেই পরশের মাথায় যেনো রাগ উঠে গেলো।
পরশ: মিষ্টি( চিৎকার করে)
মিষ্টি: আমি এখানে
পরশ: কি করেছো এটা।
মিষ্টি: বাঘ একেছি। ( মুচকি হেসে)
পরশ: কেনো করেছো।
মিষ্টি: আসলে আপনাকে রাতে বাঘের মতো লাগছিলো তাই একেছি।
পরশ: তোমাকে আমি পরে দেখে নেবো। বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো। তারপর সবাই বেক ফাস্ট করে পরশ আফিসে আর দিশা কলেজে চলে গেলো।
মিষ্টি: মামনি আমি একটু বের হবো।
মামনি: কোথায় যাবি।
মিষ্টি: একটু কাজ আছে আমি আসি মামনি। বলে বাড়ির থেকে বের হয়ে সারাসরি হাসপাতালে গিয়ে আহাদকে ফোন করলো।
মিষ্টি: হ্যালো ভাইয়া আমি এসেগেছি।
আহাদ: তুই দাড়া আমি আসছি।
মিষ্টি: ঠিক আছে।
একটু পর আহাদ এসে বললো
আহাদ: মিষ্টি চল সব ব্যস্থায় হয়ে গেছে তুই শুধু আজ টেষ্ট করাবি কাল রিপোট দেবো।
মিষ্টি: চলো। তারপর মিষ্টি টেষ্ট করিয়ে বাড়ি ফিরে আসলো।
সন্ধ্যায় পরশ বাড়ি ফিরতে পরশের আম্মু বললো
আম্মু: কি রে আজ এতো তারাতারি আসলি।
পরশ: কাল একটা গুরুত্বপূন আফিসে কাজ আছে বলে আজ তারাতারি চলে আসলাম। বলে পরশ নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে ফাইলটা হাতে নিয়ে ফাইলটা খুলতেই মিষ্টিকে ডাকতে লাগলো
পরশ: মিষ্টি মিষ্টি ( ডাকতে ডাকতে নিচে চলে আসলো)
আম্মু: মিষ্টিকে ডাকছিস কেনো।
পরশ: আগে বলো মিষ্টি কোথায়।
মিষ্টি: এই তো আমি সোয়ামী বলতেই ঠাস করে একটা থাপ্পার বসিয়ে দেয় পরশ। থাপ্পর খেয়ে মিষ্টি নিচে পড়ে যাই।
আম্মু: পরশ তুই ওর গায়ে হাত তুললি।
পরশ: হ্যা তুললাম। যানো তোমার গুনোধর বউমা কি করেছে। এই দেখো এই ফাইলটা । ( ফাইল দেখিয়ে বললো) কাল এই ফাইলটা আমাকে আফিসে জমা দিতে হবে। এই ফাইলটা আমি আজ কয়দিন ধরে করছি। কাল যদি ফাইলটা না দিতে পারি তাহলে আফিসে অনেক লোকসান হয়ে যাবো আর আমাকে আপমানিত হতে হবে। তাতে এর কি আমি আপমানিত হলো তো ও খুশি হয়। এই মেয়ে টা যেদিন থেকে আমার লাইফে এসেছে সেই দিন আমার লাইফটা নষ্ট করে দিয়েছে। কাল ১০ টা মধ্যে আমি কি করবো জানি না বলে পরশ বাড়ির থেকে বের হয়ে গেলো।
মামনি: ওঠ মা ওঠ। আজ তুই কাজটা ঠিক করিস নি মা ঠিক করিস নি। বলে মামনি চলে গেলো।
মিষ্টি মেজেতে বসে অঝোরে কাঁদতে লাগলো।
দিশা: ভাবি ওঠো। ইশ তোমার মুখ ফুলে গেছে বরফ দিতে হবে দাড়াও আমি বরফ নিয়ে আসি।
মিষ্টি: না দিশা বরফ লাগবে না তুমি শুধু একটা পেন্সিল এনে দাওব।
দিশা: কি করবে তুমি।
মিষ্টি: আনতে বলছি নিয়ে আসো।
দিশা: আনছি বলে ঘর থেকে একটা পেন্সিল এনে দিলো। মিষ্টি পেন্সিল টা নিয়ে সরাসরি ছাদে চলে গেলো। ছাদে গিয়ে সারারাত ধরে ফাইলটা কমপ্লেট করলো। ফাইলটা করার পর মিষ্টির মাথায় ব্যাথা দিগুন বেরে গেলো।
মিষ্টি: আমার এতো কষ্ট হচ্ছে কেনো ( মাথা হাত দিয়ে ধরে) আমি ঠিক থাকতে পারছিনা কেনো। আঃ আমি সয্য করতে পারছিনা। আম্মু তুমি কোথায় আমি পারছিনা। অসয্য জ্বালা। আঃ ওষুধ কোথায় ওষুধ আঃ আঃ হ আম্মু হে আল্লাহ তুমি আমাকে শক্তি দাও আমি ওনার আপমান হতে দিতে পারি না বলতে ফজরে আযান পড়তে লাগলো। হে আল্লাহ আঃ আঃ আমাকে পাড়তে হবে। মিষ্টি তুই হারতে পারিস না তোকে ফাইলটা করতেই আফিসে দিয়ে আসতে হবে। আঃ আঃ মাথায় হাত দিয়ে টেবিলে পর শুয়ে পড়লো।
সকাল ৮ টা
পরশ রেডি হয়ে নিচে নামতে আম্মু বললো
আম্মু: বেক ফাস্ট করবি না।
পরশ:না করবো না।
আম্মু: কাল রাতে সেই গিলি আর ফিরলি শেষ রাতে সারা রাত খাওয়া নেই এখন তো কিছু খা।
দিশা: আম্মু তুমি ভাবিকে দেখেছো।
আম্মু: কেনো ওর ঘরে নেই।
দিশা: না আম্মু আমি ভাইয়া ঘর আমার ঘর এমন কি ছাদে দেখেছি কোথায় নেই।
আম্মু: সে কি মেয়েটা কোথায় গেলো।
দিশা: আম্মু কাল রাতে ভাবি ছাদে গিয়েছিলো এখন তো ছাদে নেই।
পরশ: এই মেয়েটা তো রাতে ঘরে দেখি নাই কোথায় গেলো ( মনে মনে)
আম্মু: বাড়িতে তো যাইনি। তুই ফোন করে দেখেছিস।
দিশা: আম্মু আমি ফোন করেছি কিন্তু ভাবির ফোনতো বন্ধ বলছে।
পরশ: আম্মু আমি আসি বলে পরশ গাড়ি নিয়ে আফিসে চলে আসলো। আফিসে এসে নিজের রুমে চোয়ার পর হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলো।
আসলাম সাহেব: may I come sir
পরশ: আসুন
আসলাম সাহেব : স্যার আপনাকে ডেকেছে।
পরশ: আপনি যান আমি আসছি।
আসলাম সাহেব: ঠিক আছে স্যার বলে পরশের রুম বের হয়ে আসলো।
পরশ: কি বলবো স্যার যে আমি ফাইলটা করতে পারি নাই। না আর পারছিনা এই মেয়ে আমার জীবনটা হেল করে দিলো। না যাই যা হওয়ার তাই হবে বলে পরশ স্যারের রুমে সামনে এসে বললো
পরশ:may I come in sir
স্যার: এসো
পরশ: আসলে স্যার আমি ফাইল
স্যার: আরে পরশ তুমি তো যা করেছো তাতে আমাদের কোম্পানী অনেক লাভবান হবে। বিশেষ করে তিন নাম্বর চিএটা ডানদিক টা ডিজাইন টা দারুন হয়েছে। আরে পরশ আমারা ডিলটা পেয়ে গেছি।
পরশ: ফাইলটা তো মিষ্টি নষ্ট করেছিলো আর আমিও করে নি তাহলে ফাইল আসলো কোথায় থেকে। ( মনে মনে) স্যার ফাইল টা দেখি। আর স্যার ফাইলটা তো আমি আপনাকে দেইনি তাহলে দিলো কে
স্যার: আসলাম সাহেব। ওনি বললেন তোমার আসতে দেরি হবে তাই তুমি পাঠিয়ে দিয়েছো।
পরশ: আসলাম সাহেব। স্যার আমি আসছি বলে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম সাহেব কে নিজের রুমে ডাকলো।
আসলাম সাহেব: কিছু বলবেন স্যার।
পরশ: ফাইলটা কে দিয়েছে আপনাকে।
আসলাম সাহেব: আসলে স্যার
পরশ: সত্যি কথা বলুন
আসলাম সাহেব: স্যার আপনার wife .
পরশ: what কি বলছেন আপনি
আসলাম সাহেব: আজ সকালে আপনার wife মানে ভাবি আমাকে ফোন করে রাস্তা মোড়ে আসতে বলে। আর ফাইলটা দিয়ে আমাকে বলতে বারুন করেছে যে ফাইলটা ভাবি দিয়েছে। তবে স্যার ভাবিকে দেখে মনে হলো খুব অসুস্থ সারারাত ঘুমাই নি। স্যার আপনি বড় লাকি এ রকম wife কয়জন পায়। আর একটা কথা স্যার ভাবি দেখো এটুকু বুঝেছি ভাবি আপনাকে খুব ভালোবাসে। আমার একটা কথা রাখবেন স্যার
পরশ: কি কথা
আসলাম সাহেব: আপনি ভাবিকে কোনো কষ্ট দিয়েন না। কারন এ রকম মেয়ে লাখে একটা হয়। আমি আসি স্যার বলে আসলাম সাহেব চলে আসলেন।
পরশ: মিষ্টি করেছি। ও এতো সুন্দর ডিজাইন করেছে। আর আমি ওকে না আজ আমি মিষ্টির কাছে ক্ষমা চাইবো।
এদিকে মিষ্টি সরাসরি মেডিকেল কলেজে এসে আহাদের। আফিস রুমের। সামনে দাড়িয়ে বললো
মিষ্টি: আসবো ভাইয়া।
আহাদ: হ্যা আয় ভেতরে আয়।
মিষ্টি: ভাইয়া আজকে রিপোট দেওয়া কথা।
আহাদ: তোর মুখ চোখ এ রকম হয়েছে কেনো। দাড়া আমি তোর প্রিয় খাবার পিজা অডার করি।
অপর দিকে
দিশার বন্ধু: দিশা তুই এখানে আর তোর ভাবিকে আহাদ স্যারে রুমে দেখলাম।
দিশা: তুই ঠিক দেখছিস। ভাবি এখানে
দিশা বন্ধু: আমি স্যারে আফিরে রুমে আসতে পরে দেখছি।
দিশা: তোরা বস আমি আসছি বলে দিশা উঠে আসলো।
এদিকে
মিষ্টি: ভাইয়া রিপোটটে কি এসেছে।
আহাদ: তুই এতো তারাহুরা করছিস কেনো।
মিষ্টি: আমি আমার ভাইকে চিনি সে খুড়েফিরে কথা বলতে পারে না।
আহাদ: তুই এ রকম ভাবছিস কেনো বলতে আহাদে চোখে পানি চলে আসলো।
মিষ্টি: ভাইয়া তোমার বোন দুর্বল নয়। সে সবকিছু শুনতে প্রস্তুত।
আহাদ: মিষ্টি তুই বলতে আহাদ মিষ্টিকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: এই ভাইয়া তুই কাঁদছিস কেনো হ্যা। ভাইয়া এই ভাইয়া দেখ তোর বোনের তেমন কিছু হবে নাই না। আর হলে কি আছে আমার ভাই আমাকে সুস্থ করবে না।
আহাদ: আমি পারবো না।
মিষ্টি: আরে বল না কি হয়েছে আমার আহাদ কে ধাক্কা দিয়ে বললো
আহাদ: আমি বলতে পারবো না।
মিষ্টি: বলতে তোকে হবে বল কি হয়ছে আমার। আহাদে শার্টের কলার ধরে বললো
আহাদ: না
মিষ্টি: বল ভাইয়া বল বলছি আহাদকে ঝাকিয়ে বললো
আহাদ: মিষ্টির তোর
মিষ্টি: কি
আহাদ:…… (
চলবে)