- বউকে আদর করার কবিতা
- মিষ্টি বউ কবিতা
- বউকে নিয়ে রোমান্টিক কবিতা
- মিস করা নিয়ে কবিতা
১.বউকে আদর করার কবিতা
**দাম্পত্য ভালোবাসা**
সকাল বেলায় ঘুমের চোখে,
তার বুকে মাথা রেখে
বললাম, বলো… ভালোবাসি বলো ।
সে তখন আলসেমিতে
চুমু খেয়ে আমার চোখে
বলে, হচ্ছে দেরী এবার উঠে পরো ।
অফিস যাওয়ার বড্ড তাড়া
ঘড়ি, রুমাল, চশমা এগিয়ে
টাই টা ধরে টানলাম, বললাম-
বলো…. ভালোবাসি বলো ।
সে তখন মৃদু হেসে, আদর
দিল কপাল ঘেঁষে
বলল- সাবধানে থেকো।
দুপুরে ফোনে বাজলো রিং
নিয়মমত ধরলাম,খেয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেই,
আবার আমি বললাম-
বলো….ভালোবাসি বলো ।
সে বলল ওদিক থেকে-
খাওনি কেন ? যাও তাড়াতাড়ি লাঞ্চটা সারো,
অনেক তো বেলা হলো
।
ঘড়িতে যখন আটটা বাজে
কলিং বেলের সুরের মাঝে
দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলি,
সুযোগ বুঝেই আবার বলি –
বলো….ভালোবাসি বলো।
সে বলে নাও ধরো-ধরো…দেখছ? ঠান্ডা হয়ে গেল,
ফিসফ্রাইটা তোমার না বড্ড বেশি প্রিয়।
এবার রাতে বিছানাতে, হাতটা রেখে তার হাতে
শক্ত করে ধরে বলি- এবার তুমি বলো….ভালোবাসি আমায় তুমি একটিবার বলো ।
সে বুকে জড়িয়ে নিলো, আলতো হাতের ছোঁয়া দিল,
কানে কানে বলল ধীরে,
এমনি করে সারাজীবন আগলে রেখে দেবো ।
পাগলী আমার ঘুমিয়ে পরো, অনেক রাত হলো ।
আমি ভীষণ অভিমানে পাশ ফিরে শুই, চোখটা মুদি
অবুঝ মনে প্রেম খুঁজি,
সকাল থেকে সকল কথা মনের মধ্যে আওড়াই,
শুধুই ভালোবাসি..ভালোবাসি… ধ্বনি শুনতে পাই ।
চোখের চুমু, কপালের আদর, লাঞ্চের খবর, ফিসফ্রাই এর ঘ্রাণ, বুকের মধ্যে সজোরে টান…..
সবই তো বলছে চিৎকারে, শুনলামনা তা কেমন করে !
সব বুঝে তার গা ঘেঁষে রই আমি ভালোবাসায় দুলে,
হৃদ সাগরে সুখের ভেলায় যত্নে পাল তুলে ।।
তিতাস মণ্ডল
২.মিষ্টি বউ কবিতা
তুমি বউ নয়, বরং বই হও, রহস্যময় কোন
উপন্যাস।
আমি তোমাকে পড়তে চাই,
প্রতিটি মুহূর্ত তোমাকে পড়তে
চাই।
রহস্যে বিমোহিত হতে চাই।
রহস্যময় তোমাতে হারিয়ে গিয়ে
চিরদিনের মত ফেরার পথ ভুলতে
চাই।
তুমি রহস্যঘেরা প্রাচীর তুললে,
আমি রহস্যের জোট খুলতে চাইবো
না, তোমাতে সারাজীবন
ঘুরেফিরে বিলীন হতে চাই।
৩.বউকে নিয়ে রোমান্টিক কবিতা
কৃষাণ বউ,
সেই কাক ডাকা ভোরে ঘুম ঘুম চোখে
ঘর/উঠোন, গোয়াল ঝাঁট,
গরু গাভীর মুখে খড়কুটো তুলে দিয়েই
স্নান সেরে হেঁসেলে উনুন ধরিয়ে চাল ফুটোতে
দিতে দিতেই পুবের আকাশ খানিকটা ফর্সা হয়ে
ওঠে।
ও মা ওমন হাঁ করে দেখছো কি, আমায় চিনলে না?
আমি শুদ্র পাড়ার কৃষাণ বউ গো,
কৃষাণ আমার মাঠে যাওয়া আগে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত
আর মোরলা মাছের ঝোল পাতে না পেলে বেজায় চটে,
এরপর আমার খানিকটা ফাঁকা সময়,
পুরোনো কাপড়ের একটা নতুন কাঁথা জুড়েছি।
কাঁথায় ফোঁড় তুলতে তুলতে পুকুরের পুব পাড়ের
জাম গাছটার ফাঁকে সূর্য ওঠা দেখি,
সূর্য যখন জাম গাছটার মাথায় আসে, আমি গিয়ে দাঁড়াই
পুকুরের উত্তর পাড়ের ঝাকড়া আমগাছ টার নীচে,
এখান থেকে রেল লাইন টা স্পষ্ট দেখা যায়,
কতো শত লোকের প্রতিদিন আনাগোনা।
আজ রেল থামতেই
নীলাম্বরী শাড়ী পড়া এক নতুন বউ নেমে এলো, কি সুন্দর
দেখতে, সাথে ওটা ওর বর বুঝি?
কতো সময় তাকিয়ে ছিলাম কি জানি,
চোখে আর মনে নিজেকে নীলাম্বরী পড়া স্বপ্ন চনমন।
এবার ফসল উঠলে, কৃষাণ কে বায়না জানাবে,
ভাবতে ভাবতে আবার কাঁথায় ফোঁড় তোলা,
হঠাৎ চোখে ভেসে ওঠে কৃষাণের শত ছিন্ন মলিন
কাপড়, দুটো গামছা ও না হলে নয়।
বুক চিড়ে বেরিয়ে আসে দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
মীরা।
৪. মিস করা নিয়ে কবিতা
কতদিন হলো আমাদের দেখা হয়না
হাতে হাত রেখে আমরা একসাথে হাটিনা
রাস্তার মোড়ের টংয়ের দোকানে বসে চা খাইনা
কেউ একজন অভিমান করলে,
হাতে একটা চকলেট দিয়ে বলিনা, “এই ভালোবাসি তো”
কতদিন হলো আমাদের কথা হয়না
গভীর রাত অবধি কেউ কারো ফোনের অপেক্ষায় থাকিনা
ফিসফিস করে কেউ আর বলিনা, “তোমাকে মিস করছি অনেক”
অথচ একটা সময় প্রতিদিন আমাদের দেখা হতো
হাতে হাত রেখে চন্দ্রিমা উদ্যান, টিএসসির মোড়,
বেইলি রোড়ে কত হেঁটেছি আমরা।
ক্যাম্পাসের সামনের ছোট্ট টংয়ের দোকানে বসে
চায়ের চুমুকে তুলেছি গল্পের ঝড়।
কেউ একজন অভিমান করলেও সাথে সাথেই
হৃদয় ছুঁয়েছি ভালোবাসায়।
একটা সময় কত নিদ্রাহীন রাত কেটেছে আমাদের
ঘন্টার পর ঘন্টা ভালোবাসার মিষ্টি আলাপে
কখন যে গভীরে তলিয়ে গেছি, কেউ বলতে পারিনি।
সত্যি, আমাদের কিছুই আর আগের মত নেই
না তুমি, না আমি, না আমাদের ভালোবাসা।
আচ্ছা, সময় গড়ালেই ভালোবাসার রঙ এমন ফিকে হয় কেন?
কেন লোহায় মরিচা পড়ার মত একটা মজবুত সম্পর্কও
দিনদিন একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়?
তবে কি ভালোবাসার বৈশিষ্ট্য এটাই,
নাকি সময়ের সাথে সাথে শুধু আমরাই বদলে যাই?
…পরিবর্তন
এ. এম. মনোয়ার