#অনুপ্রভা_মেহেরিন
[পর্ব ৬]
গরমে দিশাহীন জনজীবন।উত্তপ্ত রোদে রুদ্বশ্বাস অবস্থা।রাতের দুইটা বাজতে চললো।উজ্জ্বলের চোখে ঘুম নেই।এই গরমে বউয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।এই যে একটা বউ থাকলে হাত পাখার বাতাস করতো,বউকে দেখলেই উত্তপ্ত চামড়া শীতল হতো এসব কি বাবা মা বুঝেনা?আশ্চর্য তারা চায় কি?রুমে ফ্যানের বাতাসে যেন আগুনের গোলা ছুটছে।গরম বাতাসে অতিষ্ঠ হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো ছেলেটা।ছাদে বসে শীতল হাওয়া উপভোগ করতে মন্দ লাগছে না।ছাদের জলচৌকিতে বসে গলা ছেড়ে অনেকক্ষণ যাবৎ গান গাইলো।ছোট বেলায় উজ্জ্বলের গানের হাতেখড়ি হয় এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে।নিঃসন্দেহে ছেলেটার গলার স্বর ভীষণ সুন্দর।এই গুনের ভাটা পড়ে সৈয়দ শামসুল হকের কাছে।তিনি চান না ছেলে গানে মনোনিবেশ করুক।বাবার অনাগ্রহে গান ছাড়লো উজ্জ্বল পরে অবশ্য এলাকার সেই বড় ভাই অন্য জেলায় চলে যান।আর বিশেষ ভাবে গান গাওয়া হয়নি উজ্জ্বলের।মাঝে মাঝে নিজের প্রশান্তির জন্য গায় তবে খুব কম।আজকের চাঁদটা তার পূর্ণ সৌন্দর্য ঢেলে আকাশের বুকে উঠে বসেছে।তার সৌন্দর্যে ঝলসে যাচ্ছে উজ্জ্বল।চাঁদের আলোয় আলোকিত ছাদটা।কি এক অপরূপ দৃশ্য!উজ্জ্বল আচমকা উঠে বসে।দ্রুত ফোন নিয়ে ভিডিও কল করলো রুমুকে।রাত জেগে সিরিজ দেখছিলো রুমু তাই উজ্জ্বল ভাইয়ের ফোন ধরতে তার সময় লাগলো না।তবে উজ্জ্বল ভাইকে বোকা বানাতে ঘুমের ভান ধরে বলে,
” উজ্জ্বল ভাই কোন সমস্যা?”
” বিরাট সমস্যা।বিশাল সমস্যা।”
“কি হয়েছে?”
” এত জ্বালিয়ে আবার বলছিস কি হয়েছে?”
” আমি আবার কি করলাম?”
” তুই ঘুমাচ্ছিস না কেন?”
” মাত্র চোখ লেগে এলো আপনিই তো ফোন করে তুলে দিলেন।”
” ফাইজলামি করছিস?বেয়াদব বেডি।”
” খবরদার বেডি বলবেন না।আমার একটা নাম আছে রুমু।”
” ওকে চুমু।”
” আশ্চর্য আমার নাম রুমু।”
” তুই দে একটা চুমু।”
” উফফ।এবার বলুন তো উজ্জ্বল ভাই রাত জেগে কি করছেন?আজ কার বাড়িতে চুরি করতে গেলেন?”
” তুই রাত জেগে আছিস কেন?সবচেয়ে বড় কথা তুই বাইরে কি করছিস?”
” বাইরে!”
” হ্যাঁ বাইরে।তোর সাহস দেখে অবাক হচ্ছি রুমু।”
” আমি আমার রুমে আছি।কি বলেন আমি বাইরে গেলাম কখন!”
” এখনো তুই বাইরে।এক্ষুনি যা আমাকে জ্বালানো বন্ধ কর।”
” উজ্জ্বল ভাই আমি আমার রুমে।”
” চালাকি করিস?তুই যে বাইরে আমার কাছে প্রমান আছে।”
“সত্যি করে বলুন, শুকনাটা খেয়েছেন নাকি ভেজাটা?”
উজ্জ্বলের ভ্রু কুচকে গেল।সন্দিহান স্বরে বলে,
” ভেজা শুকনো মানে?”
” বুঝতে পারছেন না?”
” একদমি না।”
” উজ্জ্বল ভাই গাজা আপনাকে খেয়েছে নাকি আপনি গাজাকে খেয়েছেন?”
“তুই কথা ঘুরাচ্ছিস কেন?ফাজিল মেয়ে তুই বাইরে কি করিস?”
রুমু বিরক্তে মুখ কুচকে ফেললো।উজ্জ্বল ভাই এবার বাড়াবাড়ি করছেন।আজকাল কি তিনি নেশাপানি খান?রুমু নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রেখে বলে,
” উজ্জ্বল ভাই আমি নিজের রুমে আছি। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না আমি অন্ধকারে।রুমের লাইট অফ।”
” কিন্তু এই যে তুই অন্ধকার আকাশে এক টুকরো আলো হয়ে জ্বলছিস।”
উজ্জ্বল ফোনের ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে চাঁদের দিকে ধরলো।রুমুর কুচকে থাকা ঠোঁটটা এক চিলতে হাসিতে প্রসারিত হলো।সেই সাথে হাসলো উজ্জ্বল নিজেও।
” আমার চাঁদ তুই।চাঁদকে দেখে বারবার তোর কথা মাথায় আসছে।”
উজ্জ্বল ভাইয়ের গলার স্বরটা দমে গেল।মিহিয়ে গেল মুহূর্তে।আবহাওয়াটা কেমন যেন প্রেম প্রেম ঠেকলো রুমুর কাছে।ফোনটা ওড়নায় চেপে দ্রুত জানলা খুললো সে।অন্ধকার আকাশে মস্ত বড় চাঁদটা দেখে নিঃশব্দে হাসলো।
” রুমু উঠ জানলা খুলে চাঁদটা দেখ।”
” পাগলের প্রলাপ বকবেন না উজ্জ্বল ভাই এই রাতে জানলা খুলে চাঁদ দেখবো!আমি পাগল নাকি।আপনার মতো চোরেরা যদি আমার জানলার শিক কেটে চলে আসে।”
” তুই আমার কথা রাখবি না?”
” একদম না।”
উজ্জ্বল চুপসে গেল।বেচারা উজ্জ্বল ভাই জানলোই না রুমু জানলা খুলে চাঁদটাকে দেখছে।দুজন দু’দিকে অথচ একটা চাঁদকে অবলোকন করছে মুগ্ধতা নিয়ে।নিরবতা ছিন্ন করে উজ্জ্বল ভাই বলেন,
” রুমু গান ছেড়ে দিয়েছি কাউকে তো শুনাই না।তুই আমার গান শুনবি?তোকে গান শোনাতে ইচ্ছে করছে।”
উজ্জ্বল ভাইয়ের নিঃসংকোচ আবদার।রুমু এই আবদার ফেলবে কি করে?তাছাড়া উজ্জ্বল ভাইয়ের গান শোনা হয়নি অনেকটা মাস কেটেছে।
” উজ্জ্বল ভাই শুরু করুন আমার ঘুম পাচ্ছে।”
” আচ্ছা গানটা শুনে ঘুমিয়ে যা।বিয়ের পর তোর ঘুম হারাম করতে আমি আছি।”
” কেন কি করবেন রাত জেগে?আমাকে সঙ্গে নিয়ে চুরি করতে যাবেন?”
” হুহ যাব অন্য কোথাও।এখন এসব বলতে ইচ্ছে করছে না।রাতে এসব বলা ঠিক নয়।আমি আবার তার ছেঁড়া কন্ট্রোললেস।কন্ট্রোল হারিয়ে বলা তো যায় না তোকে এক্ষুনি বিয়ে করে ফেলবো।”
রুমু ঠোঁট চেপে হাসে।উজ্জ্বল কিয়ৎক্ষণ চুপ থেকে গান ধরে,
“অবাক চাঁদের আলোয় দেখো
ভেসে যায় আমাদের পৃথিবী
আড়াল হতে দেখেছি তোমার
নিষ্পাপ মুখখানি।
ডুবেছি আমি তোমার চোখের অনন্ত মায়ায়…”
” উজ্জ্বল ভাই আপনি তো সাতার পারেন না প্লিজ ডুবে যাবেন না ডুবে গেলে আপনার মতো হাতি আকৃতির দেহটাকে তুলবে কে?প্লিজ ঘুমিয়ে যান আমাকে ঘুমাতে দিন।”
আবেগে জল ঢেলে রুমু ফোনটা কেটে দিল।বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো উজ্জ্বলের।এভাবে তার ভালোবাসাকে প্রত্যাখ্যান করছে!মেজাজটা প্রচন্ড গরম হলো উজ্জ্বলের।এই মেয়ের কি ভালো কথা সহ্য হয় না?এভাবে চললে প্রেম হবে কি করে?প্রেম না হলে বিয়ে হবে না।বিয়ে না হলে রোমান্স হবে না।রোমান্স না হলে বাচ্চা হবে না।বাচ্চা না হলে উজ্জ্বল বাপ হবে না।বাপ না হলে… বাপ না হলে..আর কিছু মাথায় এলো না উজ্জ্বলের।প্রচন্ড জেদ নিয়ে পাইচারি শুরু করলো সে।বেচারা বিড়বিড় করে বলে,
” একে তো গরম,তার উপর আমার মাথা গরম।”
.
আজ কলেজে গেল না রুমু।ভাবীর সাথে টুকটাক কাজ সামলে নিজের কক্ষে ফিরলো সে।এখনো সকালের নাস্তা খাওয়া বাকি।কাজের লোক রহিমা আজ আসতে পারিনি।তার নাকি ভীষণ জ্বর সব মিলিয়ে সংসারের বাড়তি কাজ পড়েছে পরিবারের সবার ভাগে।প্রচন্ড গরমে রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে থেকে ঘেমে একাকার রুমু দ্রুত হাত মুখ ধুয়ে ফোনটা হাতে নিল সে।আচমকা পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরতে কেঁপে উঠে মেয়েটা।শরীর ঘুরানোর আগে দুহাত পেচিয়ে ধরে তার পেট।অচেনা পুরুষালি হাতের ছোঁয়ায় কেঁপে উঠে রুমুর সর্বাঙ্গ।কিছু বুঝে উঠার আগে তার ঘাড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিটি থুতনি রাখে।
” কেমন আছো কিউটি?”
হিমল ভাই!সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠলো মেয়েটার।দ্রুত নিজেকে ছাড়াতে নিলে হিমেলের ছোঁয়া ক্রমশ গভীর হয়।
” ছোটাছুটি করছো কেন?কতদিন পর তোমার দেখা পেলাম।অনেক চেঞ্জ হয়েছে ,যতটা ভেবেছিলাম তার থেকেও বেশি আকর্ষনীয় হয়ে গেছো।”
দেহের সর্ব শক্তি দিয়ে হিমেলকে ধাক্কা দিল রুমু।মেয়েটার শরীর থরথর করে কাঁপছে।ধরধর ঘাম ঝরছে জুলফি বেয়ে।তীব্র ঝাঝালো গলায় রুমু বলে,
” আপনি অনুমতি ছাড়া আমার রুমে কি করছেন?”
” আর কিছুটা সময় এরপর এটা আমারো রুম হবে।”
” মানে?”
” তুমি জান না?”
” কি জানবো?”
রুমুর অবাক হয়।সে কি জানবে?হিমেল কি বলছে?
” আপনি কথা বলছেন না কেন?কি জানবো আমি?”
” তোমার আমার বিয়ে ঠিক তুমি জান না?”কালকেই তো বিয়ে।”
বিয়ে!কই সে তো জানে না।কবে ঠিক হলো বিয়ে?এত তাড়াতাড়ি বাবা মা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো!অথচ তাকে কিছুই জানালো না।তার বিয়ে তাকেই জানালো না!প্রচন্ড রাগ হলো রুমুর।হিমেলের দিকে তাকিয়ে হিসহিসিয়ে বলে,
” আপনার মতো ছেলেকে বিয়ে করার চাইতে অবিবাহিত থাকা অনেক ভালো।”
” তাই নাকি?তা আছে নাকি কেউ?”
” কে থাকবে?”
” প্রেমিক।”
” সরুন সামনে থেকে।আপনার মুখ দেখতেও আমার বিরক্ত লাগে।”
” শুনো এই যুগে বিয়ের আগে ওসব একটু আধটু হয় ব্যপার না।রুম ডেট পর্যন্ত না গড়ালেই চলবে।”
বিতৃষ্ণায় ভরে গেল রুমুর মন।দ্রুত কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে দেখা পেল রাবেয়ার।মেয়েটা রাগ সামলাতে না পেরে চেচিয়ে বলে,
” আম্মা কোন সাহসে তুমি আমাকে না জানিয়ে আমার বিয়ে ঠিক করেছো?”
” সাহস!তোর বিয়ে ঠিক করতেও আমার সাহস লাগবে?”
” আমার জীবনের এত বড় সিদ্ধান্ত নেবে অথচ আমাকে জানাবে না?”
রুমুর চিৎকারে রাশেদ এগিয়ে গেল।কড়া গলায় শাসন সুরে সে বলে,
” রুমু আম্মার সাথে এভাবে কথা বলছিস কেন?”
” তোমরা আমার বিয়ে ঠিক করলে অথচ আমার মতামত নিলে না?”
” আম্মা সেদিন বলেই দিয়েছিল তোর বিয়ে হিমেলের সাথেই হবে।”
” আমি এই বিয়ে করবো না যা ইচ্ছা তাই করো।”
” এমন মার মারবো গলা তুলে কথা বলার সাহস পাবি না।হিমেলের মতো একটা ছেলেকে রিজেক্ট করার সাহস তোর হয় কি করে?তোর কোন যোগ্যতা আছে?বেয়াদবি করার জন্য আগের বিয়ের সম্বন্ধ ভেস্তে গেল এখন….”
হিমেল রাশেদকে থামিয়ে বলে,
” ভাইয়া রুমু বাচ্চা মেয়ে।না বুঝে সিনক্রিয়েট করছে।বিয়েটা হয়ে গেলে সব মেনে নিবে।আপনারা ওকে বকাবকি করবেন না।”
রুমু বুঝতে পারলো এই বাড়িতে কেউ তার কথা শুনবে না।সাহস করে চলে গেল তার বাবা কাছে।সৈয়দ ইসমাইল তখন কপালে হাত ঠেকিয়ে শুয়ে আছেন।রুমের বাইরে যে মেয়ের চিৎকার চেচামেচি করছিল সবটাই শুনেছেন তিনি।রুমু চটজলদি বাবার মুখোমুখি দাঁড়ালো।বাবাকে ভীষণ ভয় পায় সে বাবার সাথে সম্পর্কটা খুব বেশি সহজ নয়।মেয়েটা সাহস নিয়ে বলে,
” আমি এই বিয়ে করবো না আব্বা।”
“জানি।”
” তুমি কিছু বলছো না কেন?”
” বলার মতো মুখ নেই।তোর মা সেদিন গলায় দড়ি দিয়েছিল জানিস?তুই তো কলেজে ছিলি।তোর বিয়েতে রাজি হইনি বলেই এমনটা করেছে।তোর ভাই রাজি মা রাজি আমি আর কি বলবো?কিচ্ছু বলার নেই আমার কথায় কারো গুরুত্ব নেই।”
সৈয়দ ইসমাইল কিয়ৎক্ষণ থামলেন।বড় শ্বাস ছেড়ে বলেন,
” হিমেল শিক্ষিত ভদ্র ছেলে।ভালো জব করছে তুই তাকে কেন বিয়ে করবি না?”
গলা ধরে এলো রুমুর।সে বাবাকে কি করে বলবে হিমেল ভালো ছেলে নয়।সৈয়দ ইসমাইল মেয়ের নিরবতা দেখে বলেন,
” তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?”
” না আব্বা বিষয়টা তা নয়।ছোট বেলা থেকে দেখছি হিমেল ভাইয়ের স্প….”
” বাপের কাছে কেন গেলি?আমার নামে বিচার নিয়ে?তোর বাপের সাধ্য নেই এই বিয়ে ভাঙার।”
রুমু কথা শেষ করার আগে রাবেয়ার ঝাঁঝালো ধমকে কেঁপে উঠলো সে।এখনি সুযোগ ছিল বাবাকে সত্যটা জানানোর কিন্তু রাবেয়ার ধমকে চুপসে গেল মেয়েটা।
রুমু মিনমিনিয়ে বলে,
” আম্মা তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো আমি এই বিয়ে করবো না।”
” তুইও বাড়াবাড়ি করছিস।এই বিয়ে তোকে করতেই হবে।আমার বোনের ছেলের মতো ছেলে হয় না লাখে একটা।তুই সেই ছেলেকে বিয়ে করবি না?নিশ্চয়ই বাইরে তোর চক্কর চলছে।”
রুমু রাগ দেখালো কাউকে কিছু না বলে চলে গেল নিজের কক্ষে।ওয়ারড্রপ থেকে সব জামা কাপড় নিয়ে একটা ব্যাগে ঢুকাতে শুরু করে।ভাবি আনিকা চুপচাপ সব দেখছিল রুমু এমন কেন করছে?হিমেল ভীষণ ভালো ছেলে অথচ এই মেয়েটা কি না বোকার মতো কাজ করছে।মেয়েকে ব্যাগ গুছাতে দেখে পুনরায় ঝগড়া বিবাদে লেগে যায় রাবেয়া।রুমুর এতটা জেদ দেখে মারতে শুরু করেন তিনি।চোখের পলকে সবটা কেমন এলোমেলো হয়ে যায়।
.
গায়ে হলুদ শাড়ি জড়িয়ে বসে আছে রুমু।মেয়েটার সারা শরীরে মারের দাগ।গালটা কেমন ফুলে আছে।সৈয়দ ইসমাইল ঘরোয়া এই বিয়ের আয়োজনে ঘুরেও তাকালেন না।তিনি নিজেকে রুমে বন্দি করলেন।আশেপাশের কেউ জানলো না আজ রুমুর হলুদ সন্ধ্যা।মূলত রাশেদ চায় না কেউ জানুক।আগের বার যে উজ্জ্বল বিয়েটা পণ্ড করেছে সে বেশ ভালো করেই জানে এবারো নিশ্চয়ই বিয়েটা ভাঙতে উঠে পড়ে লাগবে।
আগামীকাল রুমুর কাবিন।রুমুর খালা হালিমার পরিবারের কেউ আজ বাড়ি ফিরলো না সবাই রুমুদের বাড়িতেই রইলো।ঘরোয়া আয়োজনে রুমুর গায়ে হলুদের ব্যবস্থা হলো।
রক্তের জমাট বাঁধা মুখে হলুদের ছোঁয়া বেমানান।কাঁদতে কাঁদতে রুমুর চোখ মুখ ফুলে বীভৎস অবস্থা।
ভবিত্যবে যা আছে তাই হবে না চাইতেও মানতে প্রস্তুত হলো রুমু।
.
সারাটা দিন রুমুর ফোন অফ ছিল।অপরদিকে রহিমা আজ কাজে না যাওয়ায় রুমুর খোঁজ দিতে পারলো না উজ্জ্বল।রুমুর বাড়িতে এই মুহূর্ত যাওয়াও সম্ভব নয়।উজ্জ্বলের সারাটা দিন কাটলো হতাশায়।গভীর রাতেও ছেলেটার চোখে ঘুম ধরা দিল না।বিছানার এপাশ ওপাশ ছটফট করতে করতে অশান্ত হয় মন।অপন মনে সে বলে,
” বুকটা খাখা করছে কেন?”
চলবে…