মনের মতো মন গল্পের লিংক
লেখিকা তোয়া ইসলাম
.
এই গল্পের সবগুলো লিংক একসাথে দেওয়া হলো……..
Part 1
ভাইয়া তারো আমাকে, আমি বেথা পাচ্ছি আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভাইয়া তারো তুমি কি আমাকে মেলে (মেরে) ফেলবে মামনি আমাকে বাতাও নানু নানু।
পাঁচ বছরের ছোটো মেয়েটি চিৎকার করে কান্না করছে। বাড়ির সবাই ওর কান্না শুনে ছোটে আসে বাগানে।
সাহেলা বেগমঃরাত কি হচ্ছে টা কি মেয়েটা তো মরে যাবে ছার ওকে ছার বলছি।
রাতঃছাড়বো না আমি ওকে আজ গলা টিপে মেরে ফেলবো ওর জন্য আমার বন্ধু কে আমি হারিয়েছি ওকে মেরে আমার বন্ধুর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিবো, ওকে আজ আমি মেরেই ফেলবো।
সাহেলা বেগম রাত কে জোড় করে ছাড়িয়ে আনে।
আমেনা বেগমঃমেঘলা নানু তুই ঠিক আছিস ইস কি মারটা মেরেছে আমার নানু মনি কে গলাটা দাগ লাল হয়ে গিয়েছে রাত তুই কি পাগল হয়ে গিয়েছিস এইটুকু মেয়েকে এইভাবে গলা টিপে ধরতে পারলি তুই ওর মতো ছোট না দশ বছর তোর বুঝার মতো বয়স হয়েছে তোর।
রাতঃ দিদুন আমি ওকে সত্যি মেরে ফলবো ওর জন্য আমার বন্ধু কে হারিয়ে ফেলেছি (কান্না করতে করতে)
সাহেলা বেগমঃ রাত তুমি অনেক বার বেরেছো তোমার বাবা আজ আসুক বাড়িতে তোমার একটা ব্যবস্থা করতে হবে তা নাহলে তুমি কোন দিন মেঘলার র কোনো ক্ষতি করে দেও ঠিক নেই।
আমেনা বেগমঃহে বউ মা ঠিক বলেছো।
মেঘলা কান্না করেই যাচ্ছে তার কান্না যেনো থামছে না, তার রাত ভাইয়া তাকে মেরেছে রাত ভাইয়া তো আগে এমন ছিলো না ভাইয়া এখন খুব পচা হয়ে গিয়েছে আমাকে শুধু মারে বকে।
আম্মুও আমাকে ছেরে চলে গিয়েছে নানু মনি বলে আম্মু আকাশের তারা হয়ে গিয়েছে।
আর কান্নায় ভেংগে পারে পাঁচ বছরের ছোটো শিশু মেঘ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মেঘ আজ ও কাঁদছে ১২ বছর আগের কথা মনে করে। সেই দিন ছিলো রাত এর সাথে শেষ দেখা এবং রাত এর থেকে শেষ মার খাওয়া।
সেইদিন এর পর থেকে আর রাত ভাইয়া কে দেখতে পাই নি আমি এতো বছর হয়ে গিয়েছে।
আগামীকাল ১২ বছর পরে ভাইয়া দেশে ফিরছে।
তার দেশে আসার কথা শুনেই মনে পরে গেলো সেই ১২ বছর আগের কথা। হে রাত ভাইয়া কে সে দিন মামা খুব বকেছিলো তারপর ভাইয়ার নানু বাড়ি পাঠিয়ে দেয় আর সেখান থেকে ভাইয়া পারি জমায় আমেরিকা।
আমি একা হয়ে যাই রাত ভাইয়া ছিলো আমার একমাত্র খেলার সাথী
, আমি যদি বেথা পেতাম আমার যতটা কষ্ট আমার হতো তার থেকে মনে হতো রাত ভাইয়া কষ্ট পেতো। এতো ছোট বেলার কথা মনে নেই কিন্তু নানুর মুখে শুনতাম।
আমার যখন ৩ বছর তখন মা আমাকে ছেড়ে চলে যায়, বাবা আমাকে রেখে যায় নানু মনির কাছে, বাবা আমাকে মাঝে মাঝে দেখে চলে যেতো, আমি এতো অসহায় যে মা বাবার কারো আদরি পেলাম না।
আমি মেঘলা ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আর রাত ভাইয়া আমার মামাতো ভাই আমি ছোট থেকে মামা বাড়ি বড় হয়েছি
কারন আমার বাবা মা নেই। কিন্তু কখনো মা বাবার অভাব বুজতে দেয় নি আমার মামা, মামি আর আমার কলিজার নানু মনি খুব ভালোবাসে আমাকে।
রাত ভাইয়া চলে যাওয়ার পর আমি খুব একা হয়েছে গিয়েছিলাম তারপর আমার যখন আট বছর তখন চলে আসে আমার ছোট মামনি।
যে আমাকে নিজের মেয়ের মতো করে বড় করে।
সবার ভালোবাসা পেয়েও কেনো জানি একটা শূন্যতা বিরাজ করে আমার মাঝে।
আমার যখন ৪ বছর ১১ মাস বয়স তখন আমি নানা ভাই আর রাত ভাইয়ার সাথে রাস্তায় ঘোড়তে যাই।আমি তখন খুব ছোটো এক বেলুন ওয়ালা মামাকে দেখে তার পিছু ছুটি।
হটাৎ একটা ট্রাক আমার দিকে দেয়ে আসছে আমি ছুটছি আমার মতো।
একটা সময় খুব জোরে শব্দ হয় আমি ছিটকে পরি রাস্তার এক পাশে মাথায় খুব বেথা পাই একটু কেটেও গিয়েছে।
হটাৎ রাত ভাইয়ার মুখে চিৎকার শুনি বন্ধু চিৎকার টা খুব জোরে আসেপাশের সব মানুষ ছোটে যায় রাত ভাইয়ার পিছু,,,,,,,
চলবে,
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১
(আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম নতুন গল্প জানি না কেমন লাগবে কেমন হবে গল্পটা যদি ভালো সারা পাই তো কনটিনিউ করবো)
Part 2
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২
হটাৎ রাত ভাইয়ার চিৎকার শুনি বন্ধু বলে রাত ভাইয়া চিৎকার দিয়ে রাস্তার দিকে ছোটছে আর রাত ভাইয়ার পিছু আসে পাশের লোক।
বন্ধু বন্ধু কি হয়ে গেলো তোমার বন্ধু কত রক্ত ঝরছে প্লিজ কেউ আমার বন্ধু কে বাঁচান রাত ভাইয়া কান্না করছে আর কথা গুলো বলছে।
__আমি বেথায় যেখানে ছিটে পরেছি সে খানে বসে কান্না করছি।
কিছু মানুষ নানা ভাই কে হসপিটাল এ নিয়ে গেলো আমি ঠিক একি জায়গায় বসে আছি।
হে আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার নানা ভাই এর মৃত্যু হয় সে দিন। নানা ভাই রাত ভাইয়ার সব থেকে কাছের মানুষ ছিলো নানা ভাই কে অনেক বেশি ভালোবাসতো রাত ভাইয়া,যদি কেউ বলে তোমার জীবন এর বদলে তোমার দা ভাই বেঁচে থাকবে রাত ভাইয়া তাই করতে রাজি ছিলো তার বন্ধুর জন্য,আর সে বন্ধুর আমার জন্য মৃত্যু হয়, এর পর থেকে রাত ভাইয়া আমাকে সয্য করতে পারে না।
তিন্নি বেগমঃ মেঘলা এই মেঘলা কিরে তুই সেই কখন থেকে ছাদে এসেছিস এখোনো নামার নেই (তিন্নি আমার ছোটো মামনি রাত ভাইয়া চলে যাওয়ার পরে তন্নি মামনি আমার সব থেকে কাছের মানুষ)
মামনির কথায় আমি ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসলান।
চোখের পানি মুছে নিলাম কারন মামনি যদি দেখে আমার চোখে জল তো হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।
আমি মামনির ডাকে সারা দিলাম।
এই তো মামনি আসছি।
তিন্নি বেগমঃ সন্ধ্যা হচ্ছে আয় নিচে তোর নানু মনি ডাকছে।
মেঘলাঃ আসছি মামনি।
সন্ধ্যায় পাখি দের আনা গুনা সূর্য মামা রক্তিম রং ধারন করেছে, তার যাওয়াার সময় হয়ে গিয়েছে, সে চলে যাবে তার গন্তব্যে,কোলাহল শহর আস্তে আস্তে শান্ত হতে যাচ্ছে, চারো দিকে আজান এর ধ্বনি বেজে উঠছে।
রুমে এসে ওজু করে নামাজ পড়ে নানু মনির কাছে গেলাম।
কি করছো নানু(নানুর কোলে মাথা রেখে)
এইতো বসে আছি তুই কোথায় ছিলি সারা বিকেল(আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)
____ছাদে ছিলাম নানু ভালো লাগছিলো না তাই।
_____কেনো তোর শরিল খারাপ নাকি কি হয়েছে বোন?
_____কিছু হয় নি নানু এমনি একটু সময় কাটালাম। চলো তোমাকে ড্রয়িং রুমে নিয়ে যাই।
____হে চল নানু ভাই একটু চা খবো কোন দিন তোর নানা ভাই এর কাছে চলে যাই।
—নানু (একটু দমক এর স্বরে চোখে পানি ছলছল করছে)
___আরে পাগলি মেয়ে এমনি বললাম চল নানু ভাই।
আমি নানুকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে এসে বসি।
সাথে আমার বিচ্চু দুইটা
আলিফ আর তোয়া
ছোটো মামার ছেলে মেয়ে আট বছর তৃতীয় শ্রেণিতে পরে।
সাহেলা বেগমঃকি রে মেঘ মা তোর কি শরিল ভালো না।
—হে মামনি ভালো কিন্তু কেনো বলো তো।
—-তোর চোখ মুখ কেমন যেনো ফেকাসে লাগছে।
_____না মামনি আমি ঠিক আছি (একটা হাসি দিয়ে)
তিন্নি মামনি চার কাপ চা এবং আলিফ তোয়ার জন্য দুধ এনে আমাদের পাশে বসলো।
মামনি মামারা আসে নি এখনো।
____না কাল রাত আসবে এতো বছর পরে তাই আগামীকাল অফিস যাবে না। কত বছর পরে আমার ছেলেটা আসবে (একটু মন খারাপ করে)
___রাত ভাইয়ার নামটা শুনে বুকের ভিতর মোচর দিয়ে উঠলো।
আমার জন্য এই মানুষ টা ছোটো থেকে সবার থেকে দূরে থাকে।
সবার সাথে কথা বলে মামারা আসলে ডিনার করে রুমে চলে আসি।
বারান্দায় বসে আছি, আজ কেনো জানি ঘুম পাচ্ছে না।
চাদের আপছা আলো এসে আমার গায়ে পড়ছে।
চারো দিক স্তব্ধ পরিবেশ বাগানে গাছ গুলো বাতাসে হালকা দোল খচ্ছে।
আচ্ছা রাত ভাইয়া দেখতে কেমন হয়েছে নিশ্চয় অনেক সুন্দর স্মার্ট কারন ভাইয়া তো ছোট বেলা থেকেই কিউট এর বস্তা।
ভাবতেই ঠোঁটের কোনে একটু হাসি ফুটে উঠলো।
————————
সকালে,
বড় মামনি আর ছোট মামনি খুব ব্যস্ত রান্না বান্না নিয়ে আজ সবার পড়াশোনা বন্ধ মামা বারন করছে আজ কারো স্কুল বা কলেজে যেতে হবে না।
বড় খালা মনি ছোট খালামনি এসেছে একটু আগে।
মামা আসতে বলেছে কারন বড় মামা আজ অনেক খুশি তার ছেলে আসছে
বড় মামা ছোট মামা দুজন ভাইয়া কে রিসিভ করতে গিয়েছে।
আমি আলিফ আর তোয়ার সাথে বসে বসে গল্প করছি
আলিফঃআচ্ছা আপু রাত ভাইয়া ছোটো বেলায় কেমন ছিলো??
আলিফ এর কথায় আমি আলিফ এর দিকে তাকাই।
রাত ভাইয়া দেখতে খুব সুন্দর ছিলো একদম একটা টমেটোর মতো।
বলে আমি হেসে দেই।
নীলাঃকিরে মেঘলা হাসছিস কেনো?(খালতো বোন আপু রাত ভাইয়া এক বছর এর বড়)
____এমনি আপু বসো কত দিন পরে আসলে।
নিলাঃহে রাত এর জন্য আসা সেই ছোট বেলায় দেখেছি এখন কেমন হয়েছে কে জানে।
আমার বুক টা কেমন যেনো দরফর করছে, খুব ভয় কাজ করছে রাত ভাইয়া কি আদো আমার সাথে কথা বলবে নাকি বলবে না।
নিলয়ঃকিরে পেত্নি কি ভাবছিস( নীলা আপুর ভাই ও আর আমি এক সাথে পরি কিন্তু ও গ্রামের কলেজে কারন নীলা আপুরা গ্রামে থাকে)
তোর বউ পেত্নী কুত্তা আমি কি ভাবছি তকে বলবো কেনো?
নীলয় কিছু বলতে যাবে তখনি গাড়ির হর্ন বেজে উঠে বুঝতে পারলাম রাত ভাইয়া চলে৷ এসেছে।
আমার হাত পা কাপছে হার্ট দ্রুত গতিতে চলছে মনে হচ্ছে আমি হার্ট ফেল করবো।।
বড় মামনি দরজা খোলে দিলো আমি চুপটি মেরে সোাফায় বসে আছি নীলা আপু, নিলয়,ছোটো খালামনি, বড় খালা মনি বাড়ির সবাই রতা ভাইয়ার দিকে এগিয়ে গেলো,আমি রাত ভাইয়ার দিকে তাকাতেই পারছি না কেমন যেনো লজ্জা লাগছে,।
কিন্তু মামনি আর নানু মনির কান্না শুনে তাকাতেই আমি ফিদা হয়ে গেলাম।
রাত ভাইয়া নানু আর বড় মামনি কে দু জন কে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে।
ভাইয়া সেই ছোটো বেলার মতো দবদবে সাদা ঠোঁট জোড়া একদম গোলাপি, চুল গুলা সিলকি, ব্লাক শার্ট ব্লাক পেন্ট,বুকে শার্ট এর মাঝে একাটা ব্লাক ব্রান্ডের চশমা জুলিয়ে রেখেছে এক কথায় অসাধারণ লাগছে আমি চোখ ফেরাতে পারছি না এ আমার রাত ভাইয়া কিন্তু ছোটো বেলার মতো গুলোমুলো না পারফেক্ট বডি হয়তো জিম করে।
ফুপি তোমরা কেমন আছো (রাত ভাইয়ার কথায় আমার ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসলাম)
মামনি আর নানু একটু আগে কান্না করলেও এখন তারা খুব খুশি রাত ভাইয়া সবার সাথে কথা বলছে শুধু আমি ছাড়া হয়তো আমাকে এখোনো চোখে পরে নি।
আলিফ,তোয়া,রাহাত ভাইয়াকে ঘিরে ধরেছে ভাইয়াও অদের আদর করছে।
নিজের কাছে কেমন যেনো একা লাগছে সবাই রাত ভাইয়া কে নিয়ে ব্যস্ত আমার কথা হয়তো সবাই ভুলে গিয়েছে তাই খুব খারাপ লাগলে তাই সবাইকে আরাল করে নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
রাতঃকিরে নীলা আপু তুই দেখি বুড়ি হয়ে গিয়েছিস।
নীলাঃআমাকে তোর বুড়ি মনে হলে কোন দিক দিয়ে বুড়ি মনে হলে আমাকে হুম আর তুই আমাকে আপু বলিস কবে থেকে?
রাতঃআজ থেকে শুরু করলাম যেহেতু এক বছর এর বড় তুই আমার (বলে হাহাহাহা করে হেসে দিলো)
নীলা আপুও ভাইয়ার সাথে হাসলো।
রাতঃ কিরে নীলয় কত বড় হয়ে গিয়েছিস?
নীলয়ঃহে ভাইয়া আমার সাথে মেঘলাও বড় হয়ে গিয়েছে।
মেঘলা নাম টা শুনে রাত এর মুখ থেকে হাসি চলে গেলো মুখটা গোমরা হয়ে গেলো।
নীলা বুঝতে পারলো।
রাত যা ফ্রেশ হয়ে নে সবাই একা সাথে দুপুর এর খাবার খাবো।
সাহেলা বেগমঃনীলয় রাত এর রুমে নিয়ে যা।
নীলয়ঃহে ভাইয়া আসো।
নীলয় আর রাত উপরে চলে যায়।
রাত এ বাড়িটা আগে দেখে নি ও আমেরিকা যাওয়ার পরে মামারা এই বাড়িতে উঠে, এর আগে আমারা সবাই গ্রাম এ থামতাম নানা ভাই নেই আর ব্যবসার জন্য মামারা চলে আসে শহরে।
তাই ভাইয়া এই বাড়ির কোনো জায়গাই চিনে না।
নানু মনি বসে আছে, মামনিরা খবার টেবিলে এনে রেখেছে আজ অনেক কিছু রান্না হয়েছে রাত ভাইয়ার জন্য সব রাত ভাইয়ার পছন্দের খাবার
নিচে সবাই কত খুশি আর আমি রুমে বসে আছি কেউ আমার খোজ ও নিচ্ছে না, তাই রাগ করে সাওয়ার এ চলে গেলাম।।
রাতও ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে এসে বসলো।
কত বছর পরে আম্মু তোমার হাতের খাবার খবো (রাত)
সাহেলা বেগম ছেলের মাথায় হাত ভুলিয়ে মন বরে খা বাবা এখন থেকে প্রতি দিনি খেতে পারবি।
নানু মনিঃনীলা মেঘলা কোথায়?
এতোসময় পরে মেঘলার কথা সবার মনে পরলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃহে আমার মেঘলা মা কোথায়? (রাতের বাবা)
তিন্নি বেগমঃ মেঘলা মেঘলার রুমে আছে দা ভাই।
রৌদ্র চৌধুরীঃনীলয় মেঘলা কে ডেকে নিয়ে আয়।
সবাই বুঝতে পারছে মেঘলা রাত এর জন্য এইখানে নেই।
নিলয় মেঘলাকে ডাকতে যায়।
মেঘলা সাওয়ার নিয়ে চুল ছেরে বেলকুনিতে বসে আছে।
নিলয় মেঘলা কে রুমে না পেয়ে বেলকনিতে গিয়ে দেখে মেঘলা বসে আছে।
এই পেত্নী তোকপ নিচে ডাকছে চল।
মেঘলা তুই যা আমি যাবো না
মামা ডেকেছে তাড়াতাড়ি আয়।
মামার কথা শুনে উঠে নিলয় এর সাথে যেতে লাগলাম।
রাত খাচ্ছিলো হটাৎ সিরির দিকে তাকাতেই রাত থমকে গেলো।
চলবে,
(ভুল ত্রুটি মাফ করবেন)
Part 3
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩
রাত খাচ্ছিলো হটাৎ সিরির দিকে তাকাতেই রাত থমকে গেলো।
নিলয় এর সাথে থাকা মেয়েটি দেখে, ঘন কালো চুল কোমড় ছারিয়ে পরছে,চোখ গোলো মাশাআল্লাহ এতো সুন্দর হরিনির চোখ কেও হার মানাবে,হলদে ফর্সা গায়ের রং, গোলাপি রং এর একটা থ্রিপিস, পায়ে একা জোড়া নুপুর, নুপুরের ঝনঝন শব্দ হচ্ছে।
রাত চোখ ফিরিয়ে আবার খাওয়ায় মন দিলো কারন এই খুনিকে দেখার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে রাত এর নেই কিন্তু প্রথম দেখায় থমকে গিয়েছিলো।
রোদ্দ চৌধুরীঃকিরে তুই রুমে বসে আছিস কেনো সবাই নিচে এক সাথে আমরা।
মামা এমনি বসে ছিলাম তুমি খেয়ে নেও।
তোরাও বস নীলা, নিলয় আয়।
মেঘলা তোমরা খেয়ে নেও আমি মামনিদের সাথে খেয়ে নিবো।
রাত বসে বসে খাচ্ছে আর সবার কথা শুনছে, কিন্তু কারো দিকে তাকাচ্ছে না।
ফাতেমা বেগমঃহে দা ভাই তোমরা খেয়ে নেও আমারা পরে খাবো।
আমি রাহাত, আলিফ,তোয়াকে নিয়ে সোফায় বসে পড়লাম।
ওরা ও আমার সাথে খাবে।
এই পিচ্চি গুলা আমাকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝে না শুধু মেঘলা আপু মেঘলা আপু।
নানু মনি আমার পাশে এসে বসলো।
নানু তুমি খেয়ে নেও।
তোর সাথে খবো তোর কি মন খারাপ।
আমি একটু ঘাবরে গেলাম কি বলো আমার তো মন খারাপ কিন্তু নানু মনি কে যে বলা যাবে না।
না নানু মন খারাপ থাকবে কেনো?
তুই কত বছর পরে রাত কে দেখছিস আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝি তোর মনের উপর দিয়ে কি যাচ্ছে।
নানুর কথায় আমি একটু চমকে গেলাম।
কি কথা হচ্ছে নানু আর নাতনির (নীলা আপু)
তোমার বিয়ের কথা আপু
পাকনি বুড়িটা আমার বিয়ে কথা তুই ভাবছিস।
হে আপু তোমার বিয়ে তে অনেক আনন্দ করবো (একটু এক্সছাইটেড হয়ে)
আমার বিয়ে তে তোকে দাওয়াতই করবো না।
তোমার দাওয়াত আমার লাগবে না আমি এমনি চলে যাবো।
নীলা আপু হাসে।
আমরা চলে যাবো বিকেলে।তুই যাবি আমাদের সাথে?
না আপু কলেজ যেতে হবে সামনে এক্সাম।
হে নিলয়র ও তাই তো চলে যেতে হবে।
নানু বসে বসে আমাদের দু বোন এর কথা শুনছিলো আর হাসছিলো।
রাত ভাইয়াদের খাওয়া শেষ হলে আমরা সবাই খেয়ে নেই।
_______________________________
বিকেলে,
মামা আজ বারন করেছে খালামনিদের যেতে তাই নীলা আপুদের আর যাওয়া হলো না আমি খুব খুসি হলাম।
আপুর সাথে সময় কাটাতে পারবো।
রাত ভাইয়া সোফায় বসে বসে ফোন টিপছে।
আমার অবাধ্য চোখ জোড়া বার বার এই পাজি মানুষটার দিকেই যাচ্ছে। সবার সাথে কি সুন্দর কথা বলে আর আমার সাথে আসার পর থেকে একবার ও কথা বলে নি।
তিন্নি বেগমঃ মেঘলা এই মেঘলা এই দিকে আয় তো( কিচেন থেকে মামনি ডাকছিলো)
আমি মামনির কাছে গেলাম।
নে এই কফিটা রাত কে দিয়ে আয়।
মামনি আমি?(অভাক হয়ে)
হে তাড়াতাড়ি যা (বলেই মামনি চলে গেলো)
আচ্ছা রাত ভাইয়া না হয় আমার সাথে কথা বলে নি আমি তো বলতে পারি এটাই সুযোগ।
আর কিছু না ভেবে চলে গেলাম রাত ভাইয়ার সামনে অবশ্য সেখানে নানু, নীলা আপু,নিলয়, আলিফ,তোয়া সবাই বসে।
আর খালামনিরা সবাই ছাদে বিকেলে গল্প করছে।
আমি রাত ভাইয়ার দিকে হাত বারিশে কফির কাপটা ধরে।
রাত ভাইয়া তোমার কফি।
ভাইয়া কিছু বললো না।
রাত ভাইয়া তোমার কফি।
এই বার মাথাটা উপরে উঠিয়ে
আমি কি তোকে বলেছি কফি দিতে?
মামনিকে বলেছো মামনি ছাদে চলে গিয়েছে।
ধরো তো (বলেই আমি ভাইয়ার হাত ধরে কফির কাপটা দিতপ নিলাম)
ভাইয়া রেগে কফির কাপটা ফেলে দিলো। আর সাথে সাথে আমার গালে খুব জোরে একটা চর বসিয়ে দিলো
নীলা আপু নানু নিলয় চমকে দাড়িয়ে পরলো।
নানু ঃরাত কি করলি তুই এইটা,মেঘলা কে থাপ্পড় দিলি কেনো।
ওর মতো খুনি মেয়ে আমার হাত ধরার সাহস হয় কি করে?
হটাৎ এমন কিছু হওয়াতে আমি অভাক হয়ে গেলাম সেই ছোটো বেলার জেদ এখোনো ধরে রেখেছে ভাইয়া কষ্টে আমার চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে।
নীলা আপুঃনীল তোর জেদ এখোনো কমেনি ও তখন ছোটো ছিলো, দা ভাই কি শুধু তোর একার নাকি আমাদের কি কষ্ট হয় না বা আজও কি হয় না আমরা সবাই ভুলে গেলে তুই কেনো ভুলতে পারিস নি।
কারন দা ভাই আমার কলিজা ছিলো আর সেই কলিজাটাকে এই বাজে অসভ্য মেয়েটার জন্য হারিয়ে ফেলেছি
ভাইয়ার প্রতিটা কথা আমার বুকে এসে লাগছে।
আমি এতো বছর পরেও তার কাছে খুনি হয়ে রইলাম।
এর মাঝে মামা আর মামনি রা চলে এলো।
রায়হান চৌধুরীঃ রাত৷ কি হচ্ছে কি আজ প্রথম দিনেই তুমি মেয়েটার গায়ে হাত তুললে(ছোটো মামা)
চাচ্চু আমি তোমাদের সবাইকে বলে রাখলাম এই মেয়ে যেনো আমার আশেপাশে না আসে আমি ওকে সয়্য করতে পারি না। আমি ওকে কিছু বলবো না কিন্তু ও যেনো আমার আশেপাশে না থাকে(কথা গুলো বলে রাত ভাইয়া হনহন করে চলে গেলো উপরে)
আমার কান্নার বেগ যেনো বেড়েই চলছে।
নানু মনি আনাকে বুকে জড়িয়ে নিলো।
আর মাথয় হাত ভুলাতে লাগলো
কাদিস না দি ভাই।
সবার মনটা খারাপ হয়ে গেলে
মন খারাপ করে সবাই সোফায় বসে আছে আমিও নানুর সাথে বসে আছি।
কিছুক্ষণ পরে নীলা আপু আমাকে নিয়ে ছাদে চলে আসে।
সন্ধ্যার আগ মূহুর্ত তখন।
নীলাঃ মেঘলা তুই এখোনো মন খারাপ করে আছিস?
না আপু আমি ঠিক আছি।
তুই মন খারাপ করিস না মেঘলা তুই তো জানিস নানা ভাই রাত এর কি ছিলো।
আমিও তো ছিলাম আপু রাত ভাইয়ার প্রান নানা ভাইয়াকে যতটা ভালোবাসতো আমাকেও তো ততটাই ভালোবসতো কত আদর করতো আমাকে আমি একটু বেথা ভাইয়া কেমন পাগল এর মতো করতো আর আজ সেই ভাইয়া আমাকে আঘাত করলো ((মনে মনে))
কি ভাবছিস
কিছুনা আপু চলো নিচে যাই
—_______________________
রাতে
সবাই খাবার টেবিলে এক সাথেই খেতে বসেছি কাজের খালা খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে
রোদ্র চৌধুরীঃতা রাত কি ভাবছো কি করবে তুমি অফিস এ জয়েন করো আমাদের বিজনেসটা দেখা শুনা করো
রাতঃনা বাবা এই সব বিজনেস এ আমি জড়াতে চাই না বিজনেস তোমরাই দেখা শুনা করো,।
রায়হান চৌধুরীঃতো কি ভেবেছো কি করবে?
আমি বন্ধুর মতো হবো
সবাই খাওয়া রেখে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো অভাক দৃষ্টিতে।
রাতঃঅভাক হওয়ার কি আছে সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে রইলে কেনো হে আমি বন্ধুর মতো হবো বন্ধুর সব থেকে প্রিয় পেশা ছিলো শিক্ষকতা আমি তাই করবো আমি একটা কলেজে জয়েন করবো আর সব কিছু রেডিও।
রোদ্র চৌধুরীঃতুমি তো সবে মাত্র আসলে আজ আর এতো কিছু কি ভাবে করলে?
আমি সব কিছু আমেরিকা থেকে ঠিক করে এসেছি যাতে দেশে আসার পরে আমি সাথে সাথেই জয়েন করতে পারি, আর আমি আগামীকাল থেকেই যাবো।
আমার খাওয়া শেষ হলে আমি আর নীলা আমার রুমে চলে আসি।
রৌদ্র চৌধুরীঃ তুমি তোমার দা ভাই এর মতোই জেদি রাত আর আমি প্রাউড ফিল করি যে তোমার মাঝে আমার বাবা বেচে আছে আই লাভ ইউ মাই সোন।
রাতঃ দিদুন তুমি খুশি না আমার এই কাজে।
আমেনা বেগম এর চোখে পানি ছলছল করছে।
আমি অনেক খুশি দাদু ভাই আজ যদি তোমার দা ভাই বেঁচে থাকতো তাহলে আরো খুশি হতো। কিন্তু রাত তুই মেঘ….
আর কিছু বলতে দিলো না রাত।
দিদুন ঐ নামটা আমার সামনে নিবে না।
দিদুন চুপ হয়ে রইলো।
বড় ফুপ্পি ফুপার শরীলটা কেমন এখন?
বেশি ভালো না হার্ট এর রোগি কিছু দিন পর পর অসুস্থ হয়ে যায়।
ঠিক মতো ডক্টর দেখাও।
রাতঃছোটো ফুপ্পি রাহাত কোথায়?
ও ঘুমিয়ে পরছে
আচ্ছা গুড নাইট এভরিবডি
সবাই রাতে খাবার শেষে নিজেদের রুম চলে যায়।
_____________________
সকালে,
আমি ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে যাই,নানা ভাই আমাকে আর রাত ভাইয়া কে সকালে ঘুম আসতে দিতো না।নানা ভাই বলতো সকালের আবহাওয়া টা খুব মিষ্টি, সতেজ হয় তাই ছোট থেকে সকালের আমেজ টা আমাদের উপভোগ করাতো নানা ভাই রাত আর নানা ভাই চলে যাওয়ার পর থেকে আমি একাই উঠে যেতাম আর বাগানে বসে অদের জন্য কান্না করতাম খুব বেশি মিস করতাম এই দু জন মানুষকে।
ফজরেরর নামাজ পরে আমি বাগানে চলি আসি।
শীতকাল আসবে আসবে বলছে সকালের হিমেল হাওয়া আর হালকা কুয়াশাছন্ন চারো পাশ বলেই দিচ্ছে শীতের আগমন গঠবে।
আমি বাগানের ফুল গুলো ছোঁয়ে দিচ্ছি।
ছোট বেলায় আমি আর রাত ভাইয়া এমনটা করতাম
এখোনো যদি ভাইয়া আমার পাশে থাকতো ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
হটাৎ একটি গাছের নিচে কি যেনো লরছে দেখার জন্য সামনে এগিয়ে যাই
দেখার সাথে সাথে আমি ভো দৌড়
সামনে পিছে কি আছে না দেখে কারন ঐটা ইদুর ছিলো।
হটাৎ মনে হলো আমি কিছুর সাথে ধাক্কা খেলাম
চলবে,
Part 4
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৪
হটাৎ মনে হলো আমি কিছুর সাথে থাক্কা খেলাম।
আমি চোখ খিচে বন্ধ করে আছি।
কিন্তু ধাক্কা খেলে তো পরে যাওয়ার কথা আমি পরছি না কেনো মনে হচ্ছে কেউ ধরে রেখেছে।
চোখ মেলে তাকাতেই দেখি রাত ভাই ।
আমার জান যায় যায় অবস্থা, রাত ভাইয়া আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাইয়ার টি শার্ট খামছে ধরে আছি ভয় এ মূহুর্তেই ছেরে দেই,ভাইয়াও আমাকে ছেরে দেয়।
কিন্তু খুব রেগে আছে,
সমস্যা কি তোর তোকে আমি বলিছি আমার থেকে দূরে থাকবি তারপরও তুই আমার আশেপাশে কেনো,আর এমন ঘোড়ার মতো দৌড়াচ্ছিস কেনো আরো ২-১ জন কে খাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি এমন ভাবে দৌড়ে। আমি নেক্সট টাইম যেনো আমার আশে পাশে তোর মতো খুনি মেয়েকে দেখতে না পাই,পৃথিবীতে যদি আমি সব থেকে বেশী ঘৃণা করি হ্যা সেটা হচ্ছিস তুই।
ভাইয়ার প্রতিটা কথা আমার বুকে এসে বিদলো আমি এতোটাই খারাপ ভাইয়ার কাছে। গাল ভেয়ে অঝোরে পানি পরছে,আচ্ছা আমার জীবনটা এমন কেনো, আমি যাদের আপন ভাবি তারাই কেনো আমার জীবন থেকে দূরে সরে যায়।আমার কপালটা এতো খারাপ কেনো আল্লাহ ।
আমি আর এক মুহূর্ত ঐ খানে দারালাম না দৌড়ে রুমে চলে আসলাম।
নীলাঃ মেঘলা কি হয়েছে তোর?
সবাই আমাকে দেখে থমকে গেলো কিন্তু আমি সবার সামনে থেকে নিজের রুমে এসে ওয়াশরুমে ডুকে পড়লাম।
নানু, খালামনিরা ডাকছে কিন্তু আমি কোনো সারা দিচ্ছি না।
খুব কাদঁলাম, ১০ মিনিট পরে মুখে ধোয়ে বের হলাম।
সবাই আমাকে ঘিরে ধরেছে কি হয়েছে আমার, কিন্তু রাত ভাইয়ার কথা তো বলা যাবে না তাহলে মামা আবার রেগে যাবে তাই বললাম,
খালামনি,নানু আমি বাগানে একটা ইঁদুর দেখেছিলাম
সবাই আমার কথা শুনে হতবাক।
নিলয়ঃতরে কি শুধু শুধু আমি এলিয়েন, পেত্নী, শাঁকচুন্নি বলি ইঁদুর দেখে এমন রিয়েক্ট হে খোদা আমাকে উঠায় নিয়ে যাও।
নীলাঃমেঘলা তুই আর বড় হবি না পাগল একটা।
সবাই হেসে চলে গেলো, খালামনিরা সকালেই চলে যাবে তাই একটু তারাহুরো করছে সকালের নাস্তার জন্য।
সকাল ৮ টা
আমি কলেজের জন্য রেডি হয়ে নিলাম কলেজ ড্রেস পরে।
মাথায় দুপাশে দু’টো জুটি করে নিলাম সামনের ছোট কাটা চুল গুলো কানের পাশে গুজে।
আমি যখন ছোটো ছিলাম রাত ভাইয়া সব সময় মামনি,নানুকে বলতো আমাকে এই ভাবে চুল বেঁধে দিতে ভাইয়ার নাকি আমাকে এই ভাবে ভালো লাগে,আমার ঠিক মনে নেই কিন্তু নানু বলতো।
ব্যাগটা নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।
নাস্তার টেবিলে সবাই বসে আছে,
আমিও গিয়ে একটু ভয় এ ভয় এ বসলাম কারন রাত ভাইয়া কে দেখলেই ভয় লাগে যদি আমাকে দেখে রেগে যায়।
রৌদ্র চৌধুরীঃমেঘলা আজ কলেজে যাবি নাকি?
হ্যা মামা যাবো
আচ্ছা সাবধানে যাস, আর বেশী দুষ্টামী করিস না কিন্তু বন্ধুদের সাথে।
রায়হান চৌধুরীঃহাহাহাহ দা ভাই কি যে বলো ও দুষ্টামি করবে না, তুমি বলবে আর ও শুনবে?
মামা আমি এতোটা খারাপ না হুম (একটু অভিনয় করে রেগে)
নিলয়ঃও তো পেত্নি ওর কাজি তো মানুষের সাথে লাগা
নিলয় এর দিকে চোখ গড়ম করে তাকালাম।
ভাইয়া চুপ করে বসে বসে খাচ্ছে, আমি এক পিস পাউরুটি খেয়ে উঠে খালামনিদের বিদায় জানিয়ে রওনা দিলাম কলেজের উদ্দেশ্য।
আমি কলেজ বাস এ যাই, এর জন্য অবশ্য অনেক কথা শুনতে হয় মামা মানির,কিন্তু আমার কলিজার বান্ধবী বন্ধু গুলা সবাই কলেজ বাসে করেই যায়।
বাসা থেকে পাঁচ মিনিট রাস্তা হেটে মোরে গিয়ে বাসে উঠতে হয়।
কিছুসময় দাড়িয়ে থাকতে হয়, বাস আসলে উঠে পরি আমি।
আমার শাকচুন্নি দুইটা আমাকে দেখেই চিল্লান দিয়ে উঠে দুজন এ সাথে
মেঘলাাাাাা……….
আমিও অদের জড়িয়ে ধরি।
আশাঃদুস্ত তুই না থাকলে আমাদের জমেই না গতকাল অনেক মিস করেছি।
তিথিঃহে দুস্ত ঠিক কথা বলেছিস মেঘলা ছাড়া আমরা অসহায়।
হইছে হইছে আর মূলা পাম দিতে লাগবো না।
সব কথার এক কথা আমাদের বাদর দুইটা কইরে।
ফোন দিলাম রিছিভ করলো না।
ওরা সামনে থেকে উঠবে কি কাজে যেনো মার্কেটে গিয়েছে।
ওহ আচ্ছা।
বাদর দুটি হচ্ছে আমাদের গ্রুপ এর জিহাদ এবং সাগর আমাদের ৫ জন এর গ্রুপ কলেজের নাম করা সয়তান তবে ক্লাস এ টপার স্টুডেন্ট আমরা।
ওরা সামনের রাস্তা থেকে উঠে পড়লো।
সাগরঃকি সয়তান এর রানী তুই কাল আসিস নি কেনো??
জিহাদঃহে কোন সহয়তান এর সাথে দেখা করতে গেছিলিরে?
তোদের দুই সয়তান এর সাথে কিন্তু তোরা সয়তান কই ছিলিরে পাইলাম না যে (দাঁতে দাত কেলিয়ে)
আাশা আর তিথি হো হো করে হেসে দিলো।
সাগরঃযাই বলিস মিস করছি দুস্ত
আমি করি নি কারন কাল আমার স্পেশাল মানুষটিকে দেখেছি।
সবাই হা হয়ে রইলো।
জিহাদঃআমি যত দূর শুনছি গতকাল তোর মামাতো ভাই আসছে সে কি স্পেশাল।
দূর ছাই সে হবে কে তোদের জন্য সারপ্রাইজ
এদের যদি এখন বলি সবাই প্রতিদিন আমাকে রাগাবে।
কথা বলতে বলতে কলেজে চলে আসলাম।
———————————
সবাই ক্লাস এ বসে আছি,
আজ নাকি ইংরেজি নতুন টিচার আসবে।
তো সবাই অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছি স্যার এর জন্য।
অপেক্ষার ইতি ঘটিয়ে স্যার যখন ক্লাস এ আসলো।
আমার চোখ দুটি রসগোল্লা হয়ে গেলো
চলবে
Part 5
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৫
অপেক্ষার ইতি ঘটিয়ে স্যার যখম ক্লাস এ আসলো।
আমার চোখ দুটি রসগোল্লা হয়ে গেলো।
সবাই স্যার কে দেখে হা হয়ে তাকিয়ে আছে, স্যার কে সম্মান জানানোর জন্য সবাই দাড়িয়ে পরি।
স্যারঃসিট ডাউন এভরিবডি।
সবাই বসে পড়লেও আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি স্যার এর দিকে,আমি পুরাই স্কট।
স্যারঃ What the hal,Why are you standing? (আমার সামনে এসে)
স্যার এর কথায় আমি কাচুমুচু খেয়ে
না স্যার না মানি ভা….
স্যারঃস্টপ সিট ডাউন (একটু রেগে)
ক্লাস এর সবাই হেসে দিলে আমার এমন কান্ড দেখে।
স্যারঃসাইলেন্ট।
আমি দপ করে বসে পরলাম।
কারন স্যার আর কেউ না আমার জম রাত ভাই যে আমাকে একটু ও দেখতে পারে না ।
রাতঃহায় আমি রাত, তোমাদের ইংলিশ টিচার।তোমাদের কারো নাম আমি জানি না তো সবার নামটা আগে জেনে নেই।
রাত ভাইয়া এক এক করে সবার নাম জেনে নিলো শেষ আমার পালা।
আমি দাঁড়িয়ে, কিন্তু রাত ভাইয়া তো আমার নাম জানে তো কি দরকার আর অযথা আবার নাম টা বলার ডং হুম
রাতঃকি হলো এমন হেভলা কাান্তর মতো দাঁড়িয়ে আছো কেনো।
রাত ভাইয়ার কথায় বললাম,
মেঘলা ইসলাম মেঘ।
মেঘ বলার কারনটা ভাইয়া কে একটু কষ্ট দেওয়ার জন্য কারন মেঘ বলে শুধু ভাইয়া আমাকে ডাকতো।
এই নাম এ অন্য কেউ ডাকতে পারতো না শুধু ভাইয়ার জন্য কারন ভাইয়া বলতো মেঘ বলে ডাকার অধিকার শুধুই তার।
রাতঃমেঘলা ইসলাম মেঘ না, মেঘ কোনো নাম হতে পারে না শুধু মেঘলা।
মেঘালঃহুম।
ভাইয়া ক্লাস করানো শুরু করলো।
আজ প্রথম দিন তাই বেশি সময় ক্লাস এ থাকলো না।
কিন্তু ভাইয়ার ক্লাস করবো কি করে আমি ভাইয়া কে দেখলে তো আমার হার্ট ভিট দুই গুন বেড়ে যায়।
সাগরঃকিরে মেঘলা তুই স্যার কে দেখে এমন করলি কেনো?(ক্লাস শেষ আমরা ক্যান্টিনে বসে খাচ্ছিলাম)
মেঘলাঃকই কেমন করলাম চোখে বেশি দেখিস নাকি?
জিহাদঃচোখে বেশি না আমিও খেয়াল করলাম এই তুই কি আবার ক্রাশ খাইছত।
মেঘলাঃ এই পাগল হয়ে গিয়েছিস ক্রাশ আর আমি তাও স্যার এর উপর (একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে কিন্তু রাত এর উপর ক্রাশ তো সেই ছোট বেলা থেকে)
আশাঃওও তো এলিয়েন ওর চোখ ছানি পরা ও কোনো ছেলের উপর ক্রাস খাবে পাগল তোরা?
মেঘলাঃওফ বাদ দে তো এতো পেচাল ভালো লাগে না।
সবার সাথে অনক সময় আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরলাম দুপুর দুইটা।
আজ বাসাটা খালি খালি লাগছে আপু খালা মনিরা চলে যাওয়াতে।
নানু আমার জন্য ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
কারন আমি ছাড়া নানু কখনো দুপুরের খাবার খায় না আমি কলেজ থেকে ফিরার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করে বসে থাকে ও এর ব্যাতিক্রম না।
নানুঃযা মেঘলা ফ্রেশ হয়ে আয়।
নানু কাজের মেয়ে কুসুম কে খাবার রেডি করতে বলে।
আমি রুমে গিয়ে জটফট সাওয়ার নিয়ে নিচে আসতে নেই।
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটছি আর ভাইয়ার কলেজ জয়েন করার কথা ভাবছি ভাইয়া কি আর কোনো কলেজ পেলো না শেষমেশ আমার কলেজে আল্লাহ জানে আমার অবস্থা কি হয়।
ভাবতে ভাবতে নামছিলাম নিচে।
ঠিক তখন কারো সাথে খেলাম এক দাক্কা।
তাকিয়ে দেখি ভাইয়া,ওফ আল্লাহ আমি আবার ভাইয়ার সামনে
ভাইয়া চোখ গড়ম করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমি কিছুটা দূরে গালে দু হাত দিয়ে সরে দাড়ালাম কারন গালে কখন পরে কে জানে।
ভাইয়া রেগে কিছু একটা বলতে যাবে তখনি
নানু মনিঃকি রে মেঘলা কি হলো আয়,রাত তুইও ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
তুন্নি বেগমঃহে রাত তুমিও তো কলেজ থেকে আসলে যাও ফ্রেশ হয়ে নেও।
রাতঃ জি কাকি মনি(বলে ভাইয়া হনহন করে চলে গেলো)
আর আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম এখন কি হতো শুধু মাত্র আল্লাহ জানে মামনি আর নানুর জন্য বেঁচে গেলাম
আমিও টেবিলে বসে খেতে লাগলাম নানুর সাথে।
____________________________
বিকেলে,
আমি,আলিফ, তোয়া ছাদে দাড়িয়ে আছি।
আলিফঃআপু একটু একটু শীত অনুভব হচ্ছে, আচ্ছা তোমার শীত কাল কেমন লাগে?
মেঘলাঃশীত কাল আমার ভিষণ ভালো লাগে, বিশেষ করে সকাল বেলা, শিশির বেজা ঘাসের উপর যখন খালি পায়ে হাটি।জানিস ছোটো বেলায় আমি আর রাত ভাইয়া এইরকম করতাম,রাত ভাইয়া তাার ঠান্ডা হাত আমার গালে ছোয়ে দিতো।আমরা এক সাথে গ্রামের ভেজা দূর্বা ঘাসে হাটতাম, বিকেলে ভাইয়া আমাকে সাইকেল দিয়ে ঘোড়তে নিয়ে যেতো,নানা ভাই আমাদের সাথে থাকতো।(কথা গুলো বলতে বলতে কখন যে গাল গড়িয়ে জল পরছে খেয়ালই করি নি)
তোয়া এসে আমার চোখের জল মুছে দিতেই আমি বুঝতে পারলাম আমি কান্না করছি।
তোয়াঃআপু তুমি কান্না করো না রাত ভাইয়া একদিন দেখো তোমাকে অনেক আদর করবে।
মেঘলাঃ এতো বছর পরেও যে মানুষ আমাকে ঘৃণা করে সে কখনোই আর আমাকে আদর করবে না
আলিফঃ হুম ভাইয়া পচা তোমাকে শুধু বকে।
মেঘলাঃ না আলিফ রাত ভাইয়া খুব ভালো।
ঠিক তখন কারো আগমন ঘটলো,
চলবে,
((গল্প পরে চলে যান লাইক কমেন্ট দেন না এতো কিপটা কেনো আপনারা))
((আমি একটু অসুস্থ তাই গল্প দিতে পাড়ি নি, আজও দিতাম না কিন্তু অনেকে নক করেছেন তাই গল্প টা দিলাম ছোটো করে ভালো হয় নি আজকের পার্ট টা, ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
Part 6
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৬
না আলিফ রাত ভাইয়া খুব ভালো।
ঠিক তখন কারো আগমন গঠলো।
পেছন তাকাতেই দেখি রাত ভাইয়া।
আমি রাত ভাইয়া কে দেখে একটু ভয় পেয়ে গেলাম যদি এখন আবার বকে দুপুরের ঘটনার জন্য।
আমি ভয় এ বসা থেকে উঠে দারালাম।
কিন্তু আমাকে ভুল প্রমাণিত করে ভাইয়া আমাদের এড়িয়ে ছাদের অন্য পাশে চলে গেলো।
ছাদটা অনেক বড় মামা খুব যত্ন করে এই বাড়িটা তৈরি করছে।
বাড়ির চারো পাশে নানান ধরনের ফুল গাছ, এ ছাড়া অন্য গাছ ও আছে আমার খুব পছন্দ এই বড়িটা। কিন্তু এই বাড়িতে রাত ভাইয়ার সাথে ছোটো বেলার কোনো স্মৃতি নেই।
রাত ভাইয়া ছাদের এক কোনে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।
বিকেলের হিমেল হাওয়া আমাদের ছোয়ে দিচ্ছে, শীত কালের এই ঠান্ডা হাওয়াটা খুব ভালো লাগে আমার,আর সব থেকে বেশি ভালো লাগছে আজ রাত ভাইয়া আর আমি একি ছাদে, দূরত্ব কিন্তু তারপরও একি ছাদে তাকে আমি দেখতে পাচ্ছি ভাবতেই আনমনে হেসে দিলাম।
কেনো জানি খুব ইচ্ছে করছে সেই ছোটো বেলার মতো চোখ বুঝে দু হাত মেলে এই পরিবেশ টা উপভোগ করতে।
নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না, নিজের খোপা করা চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে চোখ বুজে দু হাত মেলে অনুভব করতে লাগলাম।
আমাকে দেখে আলিফ আর তোয়াও ঠিক আমার মতো করে এই বিকেলের শীতল হিমেল হাওয়া অনুভব করছে।
বাতাসে সামনে ছোটো কাটা চুল গুলো আমার মুখে আছরে পরছে।পেছনের লম্বা চুল গুলো বাতাসে দুল খাচ্ছে।
রাত ফোনে কথা বলতে বলতে হটাৎ চোখ পরলো আলিফ,তোয়া আর মেঘলার দিকে।
মেঘলা কে এই ভাবে দেখে থমকে গেলো রাত, বুকের ভিতরটা কেমন যেনো উথাল-পাথাল করছে।
হটাৎ মেঘলার গালে ঠাস করে এক চর পরলো,মেঘাল তাল সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিলে ছাদের রেলিং ধরে নিজেকে সামলায়।
মেঘলার যেনো সব কিছু মাথার উপর দিয়ে গেলো।
আলিফ তোয়া চমকে গেলো চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রাত।
মেঘলা অভাক করা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাতের দিকে।
মেঘলাঃ আমি তো ভাইয়া কে বিরক্ত করি নি তার থেকে অনেকটা দূরে আমি। তাহলে কেনো আমাকে মারলো?
আলিফঃভাইয়া তুমি আপু কে মারলে কেনো?
রাতঃতোর আপু ছেলে পটানোর ধান্দায় আছে। আমাকে পটাতে চাচ্ছে তাই তো আমি ছাদে আসার পর থেকে দেখিস না কেমন রং ডং করছে।সবে মাত্র ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী এখনি এমন অবস্থা। লজ্জা থাকা উচিত, তুই ভাবিস না তোর এমন রং ডং দেখে আমি তোর প্রেমে পরে যাবো।যদি এটা ভেবে থাকিস ভুল ভাববি।আর শুন কলেজে কেউ যেনো না জানে আমি তোর কিছু হই তাহলে খুব খারাপ হবে আমি চাই না কোনো খুনির পরিচিত কেউ হতে।নিজের বুকের উর্না সামলে রাখতে পারিস না তো এমন উর্না নেওয়ার কি দরকার ফেলে দে।
রাত কথা গুলো বলে হনহন করে চলে গেলো।
মেঘলা স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে, মনে হচ্ছে শরিল এর সমস্ত শক্তি সে হাড়িয়ে ফেলছে। বার বার রাত এর বলা কথা গুলো মস্তিস্কে বাড়ি খাচ্ছে। একটা সময় মেঘলা ছাদের রেলিং ধরে বসে পরলো। চোখ দিয়ে নিঃশব্দে জল গড়িয়ে পরছে।
আলিফ আর তোয়া মেঘলার পাশে গিয়ে বসে পরলো।
তোয়াঃআপু তুমি প্লিজ কেঁদো না তুমি তো জানো ভাইয়া খুব রাগি তুমি তো একটু আগে বললে ভাইয়া খুব ভালো।
আলিফঃহে আপু ভাইয়ার কথা শুনে তুমি কষ্ট পেয়েও না তুমি এইভাবে কাঁদলে আমাদের খুব কষ্ট হয়।
মেঘলাঃআলিফ তোয়া আমি কাঁদবো না কিন্তু তোরা এখন এই খান থেকে চলে যা প্লিম আমি একটু পরে নিচে চলে আসবো আর একটা কথা বলিস না চলে যা প্লিজ।
আলিফ আর তোয়া আর কিছু না বলে চলে গেলো।
মেঘলার যেনো কান্নার বাদ ভেঙে যাচ্ছে বুক ফেটে কান্না আসছে।
আমি আমি ভাইয়া কে পটাতে চাচ্ছি, ভাইয়া এমন কথা বলতে পারলো আামকে, আমি তো ভাইয়া কে উদ্দেশ্য করে করি নি ভাইয়া তো জানে আমি ছোট বেলা থেকে এমন অনেক কাজ আছে করি।
মেঘলা শব্দ করে কেঁদে দিলো।খুব খুব কষ্ট হচ্ছে, এই কষ্টের কথা কাউকে প্রকাশ করতে পারছে না মেঘলা।
(((মানুষের জীবনে এমন অনেক কষ্ট থাকে যা নিজেকে একা ভয়ে বেরাতে হয় সারা জীবন, না পারবেন আপনি কাউকে বলতে আর না পারবেন নিজে সয্য করে নিতে।এই কষ্টের তীব্রতা অন্য সব কষ্ট গুলো কে হার মানাবে।)))
চারো দিকে মাগরিব এর আজান এর ধ্বনি বেজে উঠছে, সূর্যি মা ডুবে গিয়েছে হালকা আপছা অন্ধকার। সন্ধ্যের পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। বিকেল থেকে এখন একটু বেশি ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে।
মেঘলা এখনো ছাদে দু হাঁটু বাজ দু হাত দিয়ে আকরে ধরে রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
আজানের ধ্বনি কানে পৌঁছাতেই নিজেকে ঠিক করে নামাজ এর জন্য নিচে চলে আসে।নানুর রুমে একটু উঁকি দিয়ে নানু নামাজ পড়ছে।
নিজের রুমে এসে ওজু করে নামাজ আধায় করে নেয়।
তন্নী বেগম ও সাহেলা বেগম বসে আছে ড্রয়িং রুমে।
আলিফ তোয়ার স্যার এসেছে পড়াতে তারা নিজেদের রুমে পড়াশোনা করছে।
নানু এখনো নিজের রুমেই তছবি গুনছে।
আমিও পড়ার টেবিলে বসে পড়লাম আগামীকাল এর পড়া কমপ্লিট করতে।
রাত ভাইয়া বন্ধদের সাথে আড্ডা দিতে বাহিরে চলে গেছে, রাত ভাইয়ার ছোট বেলার সব বন্ধদের সাথে যোগাযোগ আছে। তারা সবাই ঢাকায় পড়াশোনা বা চাকরি করছে।
আমি পড়া শেষ করে রাত নয়টায় ড্রয়িং রুমে গেলাম।
মামাারা অফিস থেকে চলে এসেছে
দুই মামনি আর কুসুম রাতের খাবার তৈরি করছে।
রৌদ্র চৌধুরীঃমেঘলা মা আয় বস পড়া শেষ।
রাত ভাইয়া ফোন টিপছিলো আমার নাম শুনে এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে আবার ফোন টিপায় ফোন দিলো।
মেঘলাঃহে মামা শেষ তোমরা কখন আসলে?
রায়হান চৌধুরীঃএই তো একটু আগে তোর পড়াশোনা ঠিক ভাবে চলছে তো।
মেঘলাঃহে মামা চলছে।
রৌদ্র চৌধুরীঃএই তোর চোখ মুখ এমন ফোলা লাগছে কেনো?
এই কথা শুনে আমি চমকে গেলাম এখন কি বলবো।
মামার কথা শুনে নানু ও উত্তেজিত হয়ে পরলো।
নানুঃকই কই দেখি আমার দিকে তাকা তো, নানু তার দু হাত দিয়ে আমার গাল চেপে ধরে দেখতে থাকে হটাৎ নানুর চোখ পরে রাত ভাইয়ার থাপ্পড় এর জায়গায়, ভাইয়া থাপ্পড় টা এতো জোরেই দিয়েছে যে দাগ হয়ে আছে হয়তো। আমি আগে খেয়াল করি নি নানুর কথায় বুঝতে পারলাম।
রায়হান চৌধুরীঃ কই দেখি,হ্যা তোর গালে এমন থাপ্পড় এর দাগ কেনো??
আমি কাচুমাচু খেয়ে গেলাম কি বলবো এখন এদের।
মেঘলাঃ না মামা আসলে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঐ বই এর দাগ হয়তো গালে পরে আছে।
রোদ্র চৌধুরীঃ ওফ মেঘলা মা তুই কবে বড় হবি বলতো।
এদের সব কথা বসে বসে রাত শুনছে আর মোবাইল টিপছে।
______________________
ডিনার রেডি হলে আমরা সবাই টেবিলে বসে পরি।
সবাই খাচ্ছে আর টুকটাক কথা বলছে।
হটাৎ রাত ভাইয়া একটা কথা বলে উঠলো…….
চলবে……..
(গঠনমূলক কমেন্ট করবেন)
বানান ভুল হলে একটু কষ্ট করে পরে নিবেন কারন রিপিট পড়তে ইচ্ছে করে না।
Part 7
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৭
হটাৎ রাত সবার উদ্দেশ্য একটা কথা বললো।
বাবা, চাচ্চু কাল আমি গ্রাম এ যেতে চাই বন্ধুর কবর জিয়ারত করতে।
রাতের কথা শুনে সবাই রাতের দিকে তাকালো।
আমার বুকটা দক করে উঠলো গ্রামের কথা শুনে।
রৌদ্র চৌধুরীঃতা তো ভালো কথা কিন্তু তুমি তো সবে মাত্র কলেজে জয়েন করলা।
রাতঃআগামীকাল বৃহস্পতিবার,,, আগামীকাল বিকেলে আমরা গ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দিবো তারপর দিন শুক্রবার কলেজ বন্ধ তো কোনো সমস্যা নেই।
রায়হান চৌধুরীঃ আচ্ছা ঠিক আছে তো আমরা আগামীকাল গ্রামে যাচ্ছি।
আমার তো খুব খুশি লাগছে কত বছর পরে গ্রামের বাড়িতে যাবো কত স্মৃতি আছে ঐ খানে,মনে মনে রাত ভাইয়া কে অনেক গুলো ধন্যবাদ দিলাম।
রাতে সবাই খেয়ে যে যার রুমে চলে যায়।
আমি নানুর রুমে নানুর ঘুম পাচ্ছে না তাই আমাকে ডেকেছে গল্প করার জন্য।
আমি নানুর কোলে মাথা রেখে সোয়ে আছি।
নানু আমার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।
মেঘলাঃ আচ্ছা নানু তোমার কেমন লাগছে কাল আমরা গ্রামে যাবো।
নানুঃকত স্মৃতি আছে গ্রামে মেঘলা, রাত চলে যাওয়ার পরে কেউ আর গ্রামে যাই নি আমরা আজ এতো বছর পরে যাবো, পুরনো সেই স্মৃতি গুলো আকরে দরছে মেঘলা।
আমার সেই সখের বাড়িটি কেমন হয়েছে কে জানে হয়তো খুব পুরনো হয়ে গিয়েছে। তুই সারা বাড়িতে ছোট ছোট পা দিয়ে হাটতি,নীলা আর নিলয় তো তেমন আসতো না তোরাই বাড়িটাকে মাতিয়ে রাখতি,সময়ের সাথে সাথে সব বদলে যায় রে মেঘলা।এই রাত তোর জন্য কত পাগল ছিলো আর আজ সেই রাত তকে সয্যই করতে পারে না।(নানু মন খারাপ করে কথা গুলো বলছে আমি চুপ করে শুনছি)
মেঘলাঃ আচ্ছা নানু ঘুমিয়ে পরো। অনেক রাত হয়ে গিয়েছে রাত জাগলে তোমার আবার শরিল খারাপ করবে,চিন্তা করো না তুমি।তোমার নাতি একটা রাক্ষস, একদম পচা ওর কপালে বউ জোটবে না দেখো।
নানু আমার কথায় হেসে দেয় আর বলে।
ও তো ছোট বেলায় তোকেই বউ বলতো বলতো আমার মেঘ বউ খুব ভালোবাাতো তোকে।
মেঘলাঃআচ্ছা নানু বাদ এই গুলে ভালো লাগে না কষ্ট হয় খুব তুমি ঘুম আসো আমি গেলাম বলে নানু রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে যাওয়ার জন্য হাটতে লাগলাম।
হটাৎ কেউ আমার বিনুনি করা চুল গুলো খপ করে টেনে ধরলো আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই দেয়ালে চেপে ধরলো আর এক হাত দিয়ে আমার গাল দুটো চেপে ধরলো।
আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম, চোখ দুটি টিপটিপ করে তাকিয়ে দেখতে নিলাম কে মানুষটি।
রাতঃএই তুই আমাকে কি বললি আমি রাক্ষস হে আমি জীবনে বউ পাবো না সাহস হয় কি করে আমাকে এই কথা বলার।
আমার গাল চেপে ধরাতে আমি কিছু বলতে পারছি না।
আর চুলে খুব বেথা পাচ্ছি মনে চুল গুলো সব ছিরে যাবে।
বেথায় চোখ দিয়ে পানি পরছে আমি চোখ খিচে বন্ধ করে আছি।
রাতঃ তোর মতো খুনি মেয়ের এতো সাহস আমার বাড়িতে থেকে আমাকেই বাজে কথা বলিস।
বেথা সয্য করতে না পেরে আমার দু’হাত দিয়ে ভাইয়ার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু এই হনুমানটার সাথে কোনো ভাবেই পেড়ে উঠছি না তারপরও হাত ধরে টানছি।ভাইয়া এক পর্যায় বিরক্ত হয়ে গাল ছেরে একটা হাত চেপে ধরে। আমি একদম দেয়াল এর সাথে ঠেকে গিয়েছি,আর ভাইয়া আমার উপরে, ভাইয়া আমার এতোটা কাছে যে তার নিশ্বাস টা আমার মুখে ছড়িয়ে ছিটে পরছে।ভাইয়ার এতো কাছে আমি কেমন যেনো আনইজি লাগছে।
মেঘলাঃ পিপ্লিজজ আআমাকে ছাছাড়ুন।
ভাইয়া আমাকে ছেড়ে হন হন করে চলে গেলো।
আমি বেকুব এর মতো দাঁড়িয়ে রইলাম এই লোকটার কি হয়, আর জানলো কি করে আমি এই সব কথা বলেছি ওফ মাথায় কিছু ডুকছে না রাক্ষস একটা (বলেই আমি রুমে চলে আসলাম)
অন্যদিকে রাত মাথার চুল দু হাত দিয়ে চেপে ধরে খাটে বসে পড়ে।
_______________________
সকালে,
একটা লেডিস ট্রাউজার, সাথে টি শার্ট গলায় স্কাফ পরে
আমি বাগানে হাঁটছি খালি পায়ে, গ্রামের মতো এইখানে এতো বেশি সবুজ ঘাস নেই তারপরও খুব ভালো লাগে ।
হটাৎ গেইট এর দিকে চোখ গেলো।
কানে একটা ইয়ার ফোন হাতে মোবাইল দেখতে দেখতে ভাইয়া বাড়ির ভিতরে ডোকছে।
ভাইয়াকে দেখে রাতের কথা মনে পড়তেই খুব ভয় লাগছে এখন যদি আবার মারে, নাহ কোনো কারন ছাড়া তো মারবে না
ভাইয়াকে পাত্তা না দিয়ে আমি আমার মতো হাঁটতে লাগলাম।
ভাইয়া আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
কত নিষ্ঠুর মানুষরে বাবা একটু ফিরেও তাকায় না হুম(রেগে ভেংচি কেটে)
আর এই সকাল সকাল পারফিউম লাগানোর কি আছে মেয়ে পটানোর ধান্দা লুইচ্চা বদমাশ পোলা ।
আরো কিছুক্ষণ হেটে আমি রুমে চলে আসি ফ্রেশ হয়ে কলেজের জন্য রেডি হয়ে চলে যাই নাস্তার টেবিলে আজ একটু লেট হয়ে গিয়েছে।
আমি একটা চেয়ার টেনে বসে পরি।
রেহান চৌধুরীঃএতো লেট হলো কেনো মেঘলা।
মেঘলাঃসকালে আজ বাগানে একটু সময় বেশি কাটিয়ে ফেলছি মামা, মামনি তাড়াতাড়ি দেও লেট হয়ে গিয়েছে।
মামনি আমাকে নাস্তা দিতে লাগলো।
মেঘলাঃকিরে আলিফ তোয়া পড়াশোনা কেমন চলছে।
আলিফ তোয়া এক সাথে বলে উঠলো
একদম তোমার মতো
ওদের রিয়াকশন দেখে সবাই হেসে দিলো।
রাতঃঃহে আবার খুনি কে অনুস্বরন করতে গিয়ে খুনি হয়ে যাস না আলিফ তোয়া।
ভাইয়ার কথাটা শুনা মাত্র আমার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো আর সবাই ভাইয়ার দিকে তাকালো।
সাহেলা বেগমঃরাত মেয়েটা খাচ্ছে তুমি এখনো নিজেকে সুদরাতে পারলে না।
একমুহূর্তেই আমার চোখে জল চলে আসলো, কলেজ বেগ টা নিয়ে দাড়িয়ে পড়লাম না খেয়ে চলে এক দৌড়ে বাহিরে চলে আসলাম, অবশ্য পেছন পেছন নানু মামনি মামা ডেকেছে কিন্তু আমি কোনো সারা দেই নি।
সবাই রাত ভাইয়ার উপর রাগ করলো।
রাতঃযাক বাবা কি এমন বললাম আমি (বলে নিজেও উঠে কলেজে চলে গেলো)
আমি বাসে বসে আছি বাস চলছে আপন মনে কিন্তু মনটাই খারাপ হয়ে গেলো।
আশাঃঐ তোর কি হয়েছে বল তো?
মেঘলাঃ আমার আবার কি হবে (ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
তিথিঃকিছু তো হয়েছে তোর মতো বাচাল এর মুখ অফ।
মেঘলাঃ তোদের দুজন এর মাথা শাঁকচুন্নি কোথাকার।
আশাঃআমরা শাঁকচুন্নি হলে তুইও আমাদের দলেই
সাগরঃকিরে পেত্নীর রানী কি হইছে তোর বয় ফ্রেন্ড এর সাথে মন মালিন্য হয়ছে বুজি( বত্রিশ পাটি দাত বের করে)
ওর কথা শুনে সবাই হেসে দেয়।
বাস কলেজ এর সামনে এসে থামলো।
আমরা ক্লাস এ চলে গেলাম এদের সাথে থাকলে মন যতই খারাপ থাকুক না কেনো নিমিষেই ভালো হয়ে যায়।।
তিথিঃমেঘলা এই রাত স্যার যে কত কিউট রে আমি তো একে ভুলতেই পারছি না।
মেঘলাঃ বিয়ে করে নে।
তিথিঃএই তুই সেটিং করে দে না।
মেঘলা ঃএই তোর কয়টা লাগে রে সব ছেলেই কি তোর ভালো লাগে।
তখনি রাত ভাইয়া ক্লাস এ আসলো।
সবাই দাড়িয়ে পড়লাম তাকে দেখে।
রাতঃসিট ডাউন। কেমন আছো তোমরা।
সবাই উত্তর দিলে ভালো আমি কিছু বললাম না চুপ হয়ে রইলাম।
গতকাল যে পড়া দিয়েছে সবার থেকে পড়া নিলো ক্লাস শেষে চলে গেলো।
আজ একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম।
এসে তো আমি অভাক প্রিতম ভাইয়া কে দেখে।
প্রিতম ভাইয়া আলিফ তোয়ার খালাতো ভাই খুব ভালো প্রিতম ভাইয়া।
রাত ভাইয়া আমার আগেই বাসায় চলে আসছে তো প্রিতম ভাইয়ার সাথে তার হয়তো পরিচয় হয়ে গিয়েছে।
তার বাবা মা সবাই ডুবায় থাকে ভাইয়াও ডুবাই কিন্তু হটাৎ দেশে মামনি তো কিছু বললো না।
প্রিতম ভাইয়া আমাকে দেখে এগিয়ে আসলো।
প্রিতমঃ হায় মেঘলা কেমন আছো? (হাত বাড়িয়ে)
মেঘলাঃ ভালো ভাইয়া আপনি কেমন আছেন? (ভাইয়ার সাথে হাত মিলিয়ে)
প্রিতমঃ হুম ভালো,আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নেও মাত্র কলেজ আসলে।
হে ভাইয়া
আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
আজ মামারা ও চলে এসেছে সবাই এক সাথে লান্স করতে বসলাম।
আমার পাশের চেয়ার এ প্রিতম ভাইয়া।
প্রিতমঃ কি খাচ্ছো তুমি এইটুকু খাও বলেই তো চেহারার এই অবস্থা।
মেঘলাঃআমার চেহারা কি খরাপ( একটু মন খারাপ এর ভাব করে)
প্রিতমঃ আমি কি তা বলেছি আপনি হচ্ছেন চিকনি চামিলি
মেঘলাঃ প্রিতম ভাইয়া ( নেকা কান্না করে)
আমাদের দুজন এর কথা শুনে সবাই হেসে দেয় শুধু রাত ভাইয়া ছারা।
ছোটো মামনিঃহে প্রিতম ও একদম খেতে চায় না তুই যত দিন থাকিস এই পাজি মেয়েটাকে খাইয়ে একটু মোটা বানিয়ে দিয়ে যাস।
প্রিতম ভাইয়া আমার প্লেটে এক চামচ ভাত দিয়ে বলে এই গুলো শেষ করে উঠবে যদি না শেষ করো তো তোমার গ্রামে যাওয়া বন্ধ।
মেঘলাঃ নাহ
প্রিতমঃ তো খাওয়া শেষ করো।
মেঘলাঃ কিন্তু
প্রিতমঃ কোনো কিন্তু না
মেঘলা বাধ্য মেয়ের মতো খেতে লাগলো।
রাত সবার আগেই খাওয়া শেষ করে রুমে চলে যায়।
_________________________
বিকেল ৩ টা
সবাই রেডি হচ্ছে গ্রামে যাওয়ার জন্য আমি খুব এক্সসাইটেড।
আমি একটা ব্লাক গাউন পড়লাম।সাথে ব্লাক কালো চুরি, কানে ছোট এক জোড়া ব্লাক এয়ার রিং, ঠোঁটে হালকা পিংক লিপস্টিক, আর আমার সব থেকে প্রিয় চুল গুলো ছেরে দিলাম।
রায়হান চৌধুরীঃ মেঘলা সবাই তৈরি তাড়াতাড়ি আয়।
মামার ডাকে আমি তারাহুরো করে দৌড়ে নিচে চলে আসলাম।
প্রিতম হা হয়ে তাকিয়ে আছে মেঘলার আসার দিকে।
মেঘলাঃ আমি চলে এসেছি।
মেঘলার কথা শুনে রাত মেঘলার দিকে তাকায়।
রাত যেনো তার সামনে একা কালো হুর পরি কে দেখতে পাচ্ছে।
চলবে,
(( কে হবে মেঘলার হিরো রাত নাকি প্রীতম))
Part 8
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৮
রাত যেনো তার সামনে একটা কালো হুর পরি কে দেখতে পাচ্ছে।
সবাই বাহিরে চলে যাচ্ছে, মেঘলা যেতে নিলে প্রীতম মেঘলার হাত ধরে।
রাত এর ধ্যান ভেঙে যায়,
রাত প্রীতম আর মেঘলার হাত এর দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রীতম মেঘলার নাক টেনে বলে
চিকনি চামিলি তোমাকে এত্তো গুলা কিউট লাগছে, একটা ছেলে পাগল হওয়ার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট।
মেঘলাঃ ভাইয়া আপনি সব সময় ফাজলামি করেন, আসেন সবাই চলে গিয়েছে (একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে)
রাত এর খুব রাগ হচ্ছে এদের কাহিনি দেখে।
নিজের রাগটা কে কন্ট্রোল করে গাড়ির সামনে গিয়ে ধারালো।
তিনটে গাড়ি নেওয়া হয়েছে।
এক গাড়িতে ছোটো মামা, মামনি আলিফ তোয়া বসে পড়েছে।
আর একটি তে বড় মামা,মামনি, নানু, আর কুসুম।
আমি দেরিতে বের হওয়াতে রাত ভাইয়ার গাড়িতে পরলাম।
যাক বাবা যে খানে বাঘ এর ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়।
অন্যদিকে নানু মামাদের গাড়ি এই মাত্র ছেড়ে চলে গেলো।
এই রাত ভাইয়ার সাথে যদি যাই মাজ পথে যদি আমাকে ফেলে দিয়ে যায়।
প্রীতমঃ কি হলো ম্যাম কি ভাবছেন উঠুন।
মেঘলা হাফ ছেরে বাচলো ওফ প্রীতম ভাইয়া আছে আমার আর কোনো প্রবলেম নেই
উঠে পড়লাম গাড়িতে,
আমাদের গাড়ি রাত ভাইয়া ড্রাইভ করছে প্রীতম ভাইয়া রাত ভাইয়ার পাশে।
আমি পেছনের সিটে একা বসেছি।
ভাইয়া একটু স্প্রিট এ গাড়ি চালাচ্ছে মামনিদের গাড়ি ধরার জন্য কারন ভাইয়ার গ্রামের রাস্তা জানা নাই।
অবশেষে ভাইয়া সফল হলো, তিনটি গাড়ি এক সাথে যেতে লাগলো।
এক ঘন্টা গাড়ি চালানোর পর আমরা গ্রামের রাস্তায় পৌছালাম।
গ্রামের রাস্তার চারো পাশে কি সুন্দর সবুজ ঘাস, জমিতে কৃষকেরা কাজ করছে,ধান গাছ গুলো কি সুন্দর সোনালি রং ধারন করছে।
অসম্ভব সুন্দর লাগছে চারো পাশটা।
আর শীতের ঠান্ডা হিমেল হাওয়া তো আছেই সাথে।
আমি জানারার পাশে মুখ এগিয়ে বসে পড়লাম।
আমার খোলা চুল গুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। কিছু চুল মুখে আচরে পরছে।।
আমি চোখ বুঝে মুখে হাসির রেখা টেনে গ্রামের বাতাস অনুভব করতে লাগলাম।
কিছু সময় হওয়ার পরে মনে হচ্ছে বাতাস আর লাগছে না।
চোখ মেলে তাকাতেই নীলা আপুকে দেখতে পেলাম।
সব কটা দাঁত বের করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
হে আমরা নীলা আপুদের বাসায় এসেছি কারন আমাদের পুরনো বাড়িটা তে কোনো মানুষ থাকে না তাই ঐ খানে থাকা যাবে না, পুরনো বাড়িটা আর আপুদের বাড়ি একি গ্রামে।
আমি গাড়ি থেকে নেমে নীলা আপুকে জড়িয়ে ধরলাম।
মেঘলাঃকেমন আছো আপু?
নীলাঃভালো, তুই কেমন আছিস?
মেঘলাঃ খুব খুব ভালো
নীলাঃ আচ্ছা ভেতরে চল।
মামনিরা এক এক করে আপুদের বাড়ির ভিতরে ডুকতে লাগলো।
আপুদের বাড়িটাও খুব সুন্দর, এক তলা বাড়িটা সুন্দর করে রং করানো।গেইট থেকে মোটা করে একটা রাস্তা দুই পাশে সবুজ ঘাস লাগানো মাঝে মাঝে আবার কিছু ফুল গাছ ও আছে এক কথায় অসাধারণ লাগছে আমার খুব পছন্দ হয়েছে আমি চারো দিকটা দেখতে লাগলাম।
নিলয়ঃ কিরে পেত্নী এমন ভাবে কি দেখছিস।
মেঘলাঃ দেখতেছি আসে পাশে তোর কুকুর আছে নাকি।
নিলয় রেগে আমার মাথায় একটা চাটি মেরে বো দৌড়
আমিও ওর পিছু নিলাম।
সবাই লিভিং রুমে সোফায় বসে ছিলো।
আমাদের দৌড়াতে দেখে।
খালামনি বললো,
আারে আরে কি হয়েছে দুই ফাজিল এমন ভাবে দৌড়াছিস কেনো?
মেঘলাঃখালা মনি তোমার ছেলে আমাকে মেরেছে কি বেথাটা না পেলাম আমি (দৌড়াতে দৌড়াতে)
অন্য দিকে আমাদের কাহিনি দেখে সবাই হাসছে।
নিলয় এই দিক থেকে ঐ দিক ছোটেই যাচ্ছে কিছুতেই ওর নাগলা পাচ্ছি না।
হটাৎ রাত ভাইয়া জোরে ধমক দিয়ে উঠলো।
রাতঃ কি হচ্ছেটা কি, এই খানে কি নাটক দেখার জন্য এসেছি( ভাইয়া খুব রেগে কথাটা বললো)
আমি ভাইয়ার কথায় থমকে গেলাম, স্টাচুর মতো ধারিয়ে পরলাম।
হাসান রহমান’ঃ আরে রাত তুমি রাগছো কেনো, বাচ্চা মানুষ এমন করবেই।((নিলয় এর বাবা))
রাতঃ ওকে বাচ্চা মনে হলো ফুপা,অসভ্য মেয়ে একটা।
রাত ভাইয়ার কথায় আমার খুব লজ্জা লাগলো এইখানে এসেও আমার সাথে এমন করছে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত সব জায়গায় সিনক্রিয়েট করবে না,মেয়েটা এমন কোনো অন্যায় করে নি।
আমি নানুর পাশে এসে বসে পড়লাম।
নানু আমার হাত,চেপে ধরলো।
আমি নানুর দিকে তাকিয়ে জোর করে একটা হাসি দিলাম।
খালামনি আমাদের বিকেলের নাস্তা দিলো।।
আমার খেতে ইচ্ছে করছে না তাই খেলাম না সবাই অনেক জোড়াজুড়ি করেছে কিন্তু ইচ্ছে করে নি।
রাত ভাইয়াও খেলো না উঠে চলে গেলো।
__________________________
বিকেলে ৫ঃ৩০
আমরা বের হলাম আমাদের পুরনো বাড়ির উদ্দেশ্য,
আপুদের বাড়ি থেকে বেশি একটা দূরে না ১৫-২০ মিনিট হাটলেই যাওয়া যায়।
মামা বলেছিলো গাড়ি নিয়ে যেতে কিন্তু আমি না বলাতে আর কিছু বলে নি।
সবাই সামনে হাঁটছে,
আমি আর নীলা আপু তাদের পেছন পেছন হাটছি।
বিকেলের গ্রামের পরিবেশ টা এত্তো সুন্দর যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
রাত ভাইয়া আর প্রীতম ভাইয়া এক সাথে হাঁটছে আর কথা বলছে।
কিছু সময় পর আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের গন্তব্যে।
কি সুন্দর এখনো দাড়িয়ে আছে সেই ছোট এক তলা বাড়িটা।
অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে চারো দিকে আগাছা দিয়ে লতাপাতা দিয়ে ঘেরা।
একটু দূরেই নানা ভাই এর কবর টি।
ঐ দিকে তাকাতেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
চোখে কোনে জল চলে আসলো,হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
সে দিন কেনো আমি ঐ রকম করতে গেলাম,যদি আমি ঐ রকমটা না করতাম আমার নানা ভাই আমাদের ছেড়ে না ফিরার দেশে চলে যেতো না।
আর রাত ভাইয়া আমাকে এতোটা পর করতো না
সবাই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আমি হাঁটার শক্তি টুকু পাচ্ছি না।
কেমন যেনো অবস হয়ে যাচ্ছি আমি।
রাত ভাইয়া নানা ভাইয়া, মামা, প্রীতম ভাইয়া, নিলয় এবং আংকেল কবর জিয়ারত করতে গেলো।
মামনি, নানু, খালা মনি,নীলা আপু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তাদের থেকে একটু দূরে একা দাড়িয়ে আছি।
রাত ভাইয়ার চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়ছে দূর থেকে দেখা যাচ্ছে তার ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে।
তাকে দেখে আমার বুকটা দুমড়ে মোচরে যাচ্ছে।
আমার পেছনে থাকা আমাদের সেই ছোট পুকুর পার ঘাট বাধানো যেখানে আমি আর রাত ভাইয়া বসে থাকতাম।
দৌড়ে আমি সেখানে চলে গেলাম ধপাস করে বসে পড়লাম।
নীল আপু আসতে চাইলে ছোটো মামনি হাত ধরে বাধা দেয়।
আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, অনবরত কাঁদতে লাগলাম আমি।
সবাই কেনো আমাকে ছেড়ে দূরে চলে যায়।
আমার ভাগ্য টা এতো কেনো খারাপ কেনো আল্লাহ।
হটাৎ আমার পাশে নানু এসে বসলো।
নানুকে দেখে নানুকে জড়িয়ে আমি হাউমাউ করে কেঁদে দিলাম।
নানু আমার কান্না দেখে নিজেও কান্না করে দিলো।
রাত ভাইয়ার জিয়ারত শেষে মামা, মামনি সবাই এসে আমাদের পাশে বসলো শুধু রাত ভাইয়া ছাড়া।
রাত ভাইয়া বাড়ির গেইট এর সামনে বসে পরলো।
চলবে,
(আজ শুক্রবার তাই সকালে একটা বোনাস পার্ট দিলাম,রাতে আর একটা দিবো)
Part 9
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৯
রাত ভাইয়া বাড়ির গেইট এর সামনে বসে পড়লো।
নানু মনি উঠে গেইট এর তালা খুলে দিলো।
আমরা সবাই বাড়ির ভিতরে গেলাম।খুব ভাজে অবস্থা ময়লা পড়ে। কসুম একটা ঝারু নিয়ে ঝার দিতে লাগলো অনেকটা জায়গা পরিস্কার করে নিলো
চারো দিকে সন্ধ্যার আগমন ঘটছে।
পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ, গ্রামের সন্ধ্যেটা একটু অন্যরকম সন্ধ্যা হলে কেমন স্তব্ধ হয়ে যায়,রাস্তা ঘাটে জনমানবশূন্য।
আমরা এই খানেই নামাজ আদায় করে নেই
রাত ভাইয়ারা মসজিদে নামাজ এ চলে যায়।
নামাজ শেষ এ নানু আবার দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
রৌদ্র চৌধুরীঃ চলো এবার যাওয়া যাক।
সবাই বাড়ির উদ্দেশ্য আবার রওনা দিলাম।
রাস্তায় ছোট ছোট দোকান, সে খানে গ্রামের মানুষেরা বসে বসে গল্প গুজব করছে। একদম সুনশান নিরবতা চারো পাশে হালকা বাতাস, ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে পরিবেশ টা অসাধারণ।
ইচ্ছে করছে এই খোলা আকাশের নিচে বসে এই হালকা ঠান্ডায় চা খেতে। কিন্তু ইচ্ছে হলেই তো সব ইচ্ছে পূরন হয় না
এখন যদি বলি রাত ভাইয়া যাবে রেগে।বলবে ডং করি রাক্ষস একটা।
হটাৎ রাত ভাইয়া বললো,
বাবা চলো চা খাই,
রৌদ্র চৌধুরীঃ ঠিক বলেছিস অনেক বছর গ্রামের লোকদের চা বানানো খাওয়া হয় না চল।
আমরা সবাই একটা চায়ের টং এ গিয়ে বসলাম
মেঘলাঃ উফ না চাইতেই বৃষ্টি, আমার ইচ্ছেটা পূরণ হয়ে গেলো থ্যাংক ইউ রাত ভাইয়া ( মনে মনে)
রাতঃ চাচা চা দেন সবাইকে।
আমি বসে আলিফ তোয়া কে জড়িয়ে ধরলাম, ওরা আমাকে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিলো।
সবাই কে চা দেওয়া হলে আমরা সবাই চা খেতে লাগলাম আমি একটু দূরে গিয়ে রাস্তার পাশে ঘাসের উপর বসে পরলাম,আমার পাশে এসে প্রীতম ভাইয়া বসলো।
আমি একটা হাসি দিলাম
মেঘলাঃ পরিবেশটা কতটা সুন্দর দেখেছেন।
প্রীতমঃ হে কিন্তু তুমি এই অন্ধকারে ঘাসে বসলে কেনো।
মেঘলাঃ ইচ্ছে হলো তাই আর অন্ধকার কোথায় জোসনা রাত।
সবার চা খাওয়া শেষ হলে আমরা বাসায় ফিরে যাই।
কিন্তু ভাইয়া কে দেখে মনে হচ্ছে ভাইয়া কোনো কারনে খুব রেগে আছে,যাক বাবা আমি তো আর কিছু করি নি।
রাতে সবাই ডিনার করে ঘুমাতে চলে গেলো।
আমি নীলা আপুর রুমে।
আমার কেনো জানি ঘুম পাচ্ছে না সবাই ঘুম সুনসান নির্বতা
ঘুম না আসার কারণ টা অজানা, মনে মনে রাত ভাইয়া কে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। যদি ভাইয়ার সাথে ছাদে যেতে পারতাম এই জোসনা রাতে ভাইয়ার কাঁধে মাথা রেখে সময় কাটাতে পারতাম কিন্তু এই সব কিছু আমার স্বপ্ন,কখোনো পূরণ হবে না।
ঘুম পাচ্ছে না তাই লিভিং রুমে এসে বসলাম, হটাৎ দেখতে পেলাম রাত ভাইয়াও লিভিং রুমে আসছে।
আমাকে দেখে চলে যেতে নিলে,
রাত ভাইয়া আমার সাথে কেনো এমন করো তুমি আমার খুব কষ্ট হয়।((সাহস নিয়ে কথটা বলে ফেললাম)
রাত ভাইয়া আমার দিকে ঘুরে।
তোর কষ্ট হলে আমি কি করবো,তোর কষ্টে আমার কিছু আসে যায় না,কারন আমি তোকে ঘৃণা করি আজ কিছু বললাম না এর পর থেকে আমার সাথে কথা বলার চেস্টা করবি না।
বলেই ভাইয়া চলে গেলো, আমি ভাইয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম চোখ দিয়ে দু ফোটা জল গড়িয়ে পরলো।
রাত দুইটা
রুমে এসে একটু ঘুম আসার চেস্টা করলাম।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না
___________________________
সকালে,
সূর্য্যি মামার আগমন ঘটলো,আমি জানারা মেলে দেখলাম অনেকটা সকাল হয়ে গিয়েছে, কিন্তু নীলা আপু এখনো ঘুমাচ্ছে তাই আপুকে আর না ডেকে গেইট খোলা পেয়ে বেড়িয়ে পরলাম বাহিরে।
আজ একটু বেশি ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে, হয়তো গ্রামের আবহাওয়া তাই।
আমি আপুদের বাড়ির রাস্তায় বের হতেই প্রীতম ভাইয়া কে দেখতে পেলাম।
প্রীতমঃ গুড মর্নিং মেঘলা।
মেঘলাঃ গুড মর্নিং, আপনি এতো সকালে।
প্রীতমঃ আমি এতো সকালে ঘুম থেকে উঠি না কিন্তু আজ উঠলাম গ্রামের আবহাওয়া উপভোগ করার জন্য।
মেঘলাঃ ওহ আচ্ছা, আমাকে একটু হেল্প করবেন?
প্রীতমঃ হে করবো না কেনো বলো।
মেঘলাঃ ভাইয়া চলুন না আমাদের পুরনো বাড়িটাতে যাই।
প্রীতমঃ এইটা একটা হেল্প হলো পাগলি চলো।
আমি সাথে সাথে পায়ে থাকা জুতো গুলা খুলে হাঁটা শুরু করলাম।
প্রীতমঃ এটা কি হলো
মেঘলাঃ আমার খালি পায়ে হাঁটতে ভালো লাগে।
আমরা দুজন হাঁটতে লাগলাম, একটু একটু রোদ দেখা মিলছে।
আজ যদি প্রীতম ভাইয়ার জায়গায় রাত ভাইয়া থাকতো কত না ভালো হতো।
আমি আর প্রীতম ভাইয়া চলে আসলাম,
কিন্তু এইখানে রাত ভাইয়া ও আছে ইস কেনে আসলাম যদি আবার বকা দেয়।
প্রীতম ঃ আরে রাত তুমি এইখানে?
রাতঃ হে একটু আগে এসেছি((এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে)
প্রীতমঃ ওহহ আচ্ছা মেঘলা আমাকে বললো নিয়ে আসতে তাই নিয়ে আসলাম।
রাতঃ হুম (গম্ভীর মুখে)
হটাৎ একটা বাতাস আসাতে আমার চোখে কিছু একটা পড়লো।
ওফ (চোখে হাত দিয়ে)
রাত ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রীতম ভাইয়া আমার কাছে এসে।
কি হলো?
মেঘলাঃ চোখে কিছু একটা পড়েছে (একটু নেকা কান্না করে)
প্রীতমঃ কই দেখি দেখি (৷ আমার হাত সরিয়ে)
প্রীতম ভাইয়া আমার চোখটি মনোযোগ সহকারে দেখতে লাগলো।
চোখে তো কিছু নেই তুমি এক কাজ করো চোখে পানি দেও।
প্রীতম ভাইয়া আমার হাত ধরে পুকুর পারে নিয়ে আসলো যে খানে পাকা করে ঘাট বাধানো।
আমি চোখে পানি দিতে লাগলাম।
প্রীতমঃ ঠিক আছো?
মেঘলাঃ হুম এখন ঠিক।
রাত ভাইয়া উপরে ধারিয়ে আছে।
কিন্তু তাকে দেখে আমার খুব ভয় লাগছে,আমি ছোটো বেলায় যখন অন্য কোনো ছেলে বন্ধুর সাথে মিশতাম রাত ভাইয়ার মুখটা ঠিক এমন হতো দেখতে, আমাকে খুব মারতো পরে আবার রাত ভাইয়াই খুব আদর করতো কান্না করতো।
আমার ভয় এ হাত পা কাপছে,ভাইয়া কি আবার আমাকে কিছু বলবে মারবে।
প্রীতম ভাইয়া তার হাত বাড়িয়ে দিলো আমাকে উপরে উঠানোর জন্য।
অন্য দিকে রাত ভাইয়ার দিকে তাকাতেই ভাইয়ার হাত মোঠো করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে, চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে এখোনি আগুন বেড়িয়ে আসবে।
আমি ভয় এ কাঁপতে লাগলাম, হটাৎ কি হলো জানি না পা পিছলে পরে গেলাম পানি।
আমি পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছি, দম বন্ধ হয়ে আসছে নাক মুখ দিয়ে পানি যাচ্ছে। পানিতে আমি সটফট করতে লাগলাম।
হটাৎ কেউ মেঘলা বলে চিৎকার দিলো।
চলবে,,
(কে বাঁচাবে মেঘলা কে)
(মেঘলার কি কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে জানতে চাইলে সবার টাইম লাইনে শেয়ার করুন গল্পটি)
,আর গল্প পরে চলে যান কোনো মন্তব্য করেন না তার মানে কি বুঝে নিবো গল্পটা কারো ভালো লাগছে না
Part 10
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১০
হটাৎ কেউ মেঘলা বলে চিৎকার দিলো।
আমার কোমড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম কেউ আমাকে কোলে করে উপরে উঠাচ্ছে।
যখন উপরে উঠলাম আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে রইলো, আমি কাশতে লাগালাম, কাশির মাঝে হটাৎ গালে পরলো এক থাপ্পড়।
হ্যা বজ্জাত রাত আমাকে উঠিয়ে এনে আবার নিজেই থাপ্পড় মেরে মুখের উপর নিজের জ্যাকেট টা ছুরে হনহন করে চলে গেলো।
কাশি থামিয়ে গালে হাত দিয়ে থ মেরে বসে রইলাম।
প্রীতমঃ মেঘলা তুমি ঠিক আছো,আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, চিৎকার করে ডাকছিলাম তোমাকে মেঘলা বলে কিন্তু রাত আমার আগেই জাপ দিলো তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে আসলো।কিন্তু বুঝলাম না ও তোমাকে মারলো কেনো?
আমি বসে বসে প্রীতম ভাইয়ার কথা শুনছিলাম।
প্রচুর ঠান্ডা লাগছিলো একে তো সকাল তার উপর শীত এর দিন।
ভাইয়ার দেওয়া জ্যাকেট টা গায়ে জড়িয়ে নিলাম,শালা খচ্চর একটা তোরে কইছি আমাকে বাচাইতে নিজে বাঁচিয়ে আবার নিজে থাপ্পড় মেরে চলে গেলো।আবার কত দরদ জ্যাকেট দিয়ে গেলো দয়া দেখাতে এসেছে।
এতো রাগার কারন টা কি সেইটাই বুঝলাম না,
প্রীতম ভাইয়া নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো আমি তার হাত ধরে উঠে দারালাম, বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলাম।
রাত ভাইয়া আমার আগেই বাসায় পৌঁছে গিয়েছে কিন্তু খুব রেগে আছে।
সবাই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো আর তখনি রাত ভাইয়া ভেজা শরিল এ রেগে মেগে সবার সামনে দিয়ে রুমে চলে গেলো আর খুব জোরে রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলো।
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো
সাহেলা বেগমঃ রাত কি হয়েছে তোর। ( দরজায় নক করে)
কিন্তু ভেতর থেকে কোনো উত্তর আসলো না।
তার কিছুক্ষণ পরেই আমি আর প্রীতম ভাইয়া গেলাম।
আমাকে দেখেও সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে।।
মনে হচ্ছে সবার সামনে ভুত দাঁড়িয়ে আছে।
আমি কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম, কারন প্রচুর ঠান্ডা লাগছিলো।
ওয়াশ রুমে চেঞ্জ করতে করতে ভাবতে লাগলাম,ভাইয়ার এমন রেগে যাওয়ার কারন কি?
আচ্ছা কোনো ভাবে কি ভাইয়া প্রীতম ভাই কে নিয়ে জেলাস ফিল করছে।মুহূর্তেই আমার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। পরক্ষণেই আবার চুপসে গেলো, নাহ এইটা কি ভাবে সম্ভব ভাইয়া তো আমাকে দু চোখে দেখতই পারে না আমি হাজার ছেলের সাথে কথা বললেই তার কি আসে যায়।
কিন্তু আমি ভাইয়ার মাঝে ছোট বেলার রাগ টা কে দেখতে পেয়েছি,আমার কোনো ছেলে বন্ধু থাকতে পারতো না ভাইয়ার জন্য।
ইয়েস ইস খুশি তে ডান্স করতে ইচ্ছে করছে মিস্টার রাত চৌধুরী , আজ থেকে আপনার দিন শেষ আমার দিন শুরু ইয়াহু।
অন্য দিকে প্রীতম সবাইকে বললো একটু আগের ঘটনা সবাই মেঘলার জন্য খুব ভয় পেয়েছিলো,কিন্তু সবার ঠোঁটের কোনে হাসি ও ফোটে উঠেছে।
কারন রাত মেঘলা কে বাঁচিয়েছে তার মানি মেঘলার জন্য আজ ও রাত এর মায়া আছে, ভাবতেই সবার খুশি লাগছে।
নীলাঃ এই মেঘলা কি করছিস বের হো।
আমি বের হয়ে আসলাম ওয়াশরুম থেকে চুলে টাওয়াল পেঁচাতে পেঁচাতে।
নীলাঃ তুই ঠিক আছিস মেঘলা।
মেঘলাঃ এক দম ঠিক ঠাক আছি আপু ( সব কয়টা দাত বের করে)
নীলাঃ এই তুই হাসছিস?
মেঘলাঃ তো আমি কাঁদবো আপু?
নীলাঃ একটু আগে কি হতে যাচ্ছিলো বুঝতে পারছিস রাত না থাকলে কি হতো?
মেঘলাঃ মরে যেতাম।
নানু মনিঃ মেঘলা ( খুব রেগে জুরে আমার নাম টা ডেকে উঠলো)
মেঘালঃ এরে বাবা বুড়ি রেগে গেছে (মনে মনে)
আরে নানু তোমার আাবার কি হলো
নানু মনিঃ তুই একটু আগে কি বললি।
মেঘলাঃ ককই কিছু না তো( তুতলিয়ে)
নীলাঃ নানু তোমার এই নাতনি কে সোজা করার জন্য রাত কেই প্রয়োজন।
মেঘলাঃ আরে আপু রাত আমাকে কি সোজা করবে আজ থেকে আমিই রাত কে সোজা করবো( মনে মনে)
সকাল৮ঃ৩০
সবাই নাস্তার টেবিলে বসে আছি,আমি আজ প্রীতম ভাইয়ার পাশে বসেছি।
সবাই নাস্তা করছে, আমি ইচ্ছে করে একটু খেয়ে উঠে যেতে নেই কিন্তু প্রীতম ভাইয়া আমার হাত চেপে ধরে বলে,
এই কোথায় যাচ্ছো?
মেঘলাঃ আর খাবো না ভাইয়া।
প্রীতমঃ আর খাবে না মানি তুমি মাত্র এইটুকু পরোটা খেলে এই জুস আর এই পরোটা + ডিম সম্পূর্ণ শেষ করে উঠতে হবে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে প্রীতম তুমি মেয়েটাকে একটু খাওয়া শিখাও তো একদম খেতে চায় না আর আমাদের কথা ও শুনে না।
প্রীতমঃ৷ শেষ করো তারপর উঠো।
মেঘলাঃ আমি খাবো না ভাইয়া আর একটু ও না।
প্রীতমঃ চুপ এই নাও ধরো।( নিজের হাতে খাবার নিয়ে আমাকে জোর করে খাইয়ে দিলো)
আমি মুখে নিয়ে নেকা কান্না করে খেতে লাগলাম কিন্তু আমি তো মনে মনে এমন কিছুই চেয়ে ছিলাম।
আমি চোখ বাঁকিয়ে রাত ভাইয়া কে দেখতে লাগলাম, তার চেহারাটা দেখার মতো ছিলো,আমি মুখ টিপে হাসতে লাগলাম। বুঝো এবার সোনা মেঘলা কে ইগনোর করা হুম সুদে আসলে হিসেব মিলাবে আর আমার তুরুপের দাস প্রীতম ভাইয়া
রাত ভাইয়া সবার আগে খেয়ে টেবিল থেকে চলে গেলো, রাত ভাইয়া চলে গেলে আমি খাওয়া বন্ধ করে দেই প্রীতম ভাইয়া কে ভুল বাল বুঝিয়ে।
বড় রা সবাই ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছে।
আমি, নীলা আপু,নিলয়,প্রীতম ভাইয়া ও রাত ভাইয়া আপুদের বাগানে বসে আছি।
বাগানে বসার মতো খুব সুন্দর একটা জায়গা আছে।
রাত ভাইয়া আমাদের সাথে আসতে চায় নি কিন্তু প্রীতম ভাইয়া জোড় করে বসিয়ে রেখেছে।
আমি কারনে অকারণে প্রীতম ভাইয়ার সাথে হেসে হেসে কথা বলছি আর মাঝে মাঝে তার হাত ও ধরছি।
হটাৎ রাত ভাইয়া উঠে বাড়ির বাহিরে চলে গেলো।
আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি, আমার যে কি খুশি লাগছে ইচ্ছে করছে ডিজে করি
____________________________
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না, সময় চলে নিজের গতীতে।
আমাদের ও যাওয়ার সময় হয়ে গেলো,খুব খারাপ লাগছে যেতে নানা ভাই কে বড্ড বেশি মিস করছি, যাওয়ার আগে ভাইয়া মামা আবার জিয়ারত করে আসলো,আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখলাম আর চোখের জল ফেললাম।
মনটা খুব খারাপ, আসার সময় এর মতো যে যে যার গাড়িতে বসে পড়লাম।
আমি এবার ও পিছনে বসলাম কিন্তু আসার সময় এর মতো আনন্দ টা পেলাম না।
সারা রাস্তা চোখের জল মুছতে মুছতে পারি জমালাম ব্যস্ত নগরীতে, এই খানে গ্রামের মতে প্রশান্তি নেই।
বাসায় আসতে আসতে সন্ধ্যা ৭ টা বেজে গেলো,
আজ মনটা ভালো করতে পারছি না কেনো যেনো বাবা,মা আর নানা ভাইকে খুব মিস করছি, বুকে একটা চাপা কষ্ট অনুভব হচ্ছে।
সবাই খুব ক্লান্ত, তাই মামা আসার সময় রেস্টুরেন্টে থেকে খাবার নিয়ে এসেছে।
মনটা ভালো লাগছে না তাই নানুর রুমে গেলাম সে খানে দেখি রাত ভাইয়া নানুর কোলে মাথা রেখে সোয়ে আছে।
রাত ভাইয়া কে দেখে আমি চলে আসতে নিলে নানু আমাকে ডাকে।
নানুঃ মেঘ যাচ্ছিস কেনো?
আমার বুকের ভেতরটা দক করে উঠলো নানুর মুখে মেঘ ডাকটা শুনে,আর রাত ভাইয়া সোয়া থেকে উঠে বসে পড়লো।
ভাইয়া নানুর দিকে তাকিয়ে আছে।
নানুঃ তুই উঠলি কেনো রাত দাদু ভাই?
রাতঃ না দিদুন এমনি, আমি আসছি।
বলে রাত ভাইয়া আর এক মূহুর্ত থাকলো না আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
ভাইয়া দ্রুত যাওয়াতে তার শরিল এর স্মেল আমার নাকে এসে লাগে যা আমি চোখ বুঝে অনুভব করি।
নানুর ডাকে আমি নানুর কাছে গিয়ে বসে পরি।
নানু তুমি আামকে মেঘ বলে ডাকলে কেনো??
চলবে,
Part-11
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১১
নানু তুমি আমাকে মেঘ বলে ডাকলে কেনো।
নানু মনিঃ রাত কে রাগানোর জন্য কিন্তু ও তো রাগলো না,আগের সময় হলে আমাকে ছেড়ে কথা বলতো না।
নানুর কথা শুনে আমার খুব খারাপ লাগলো,তাহলে কি রাত ভাইয়া সত্যি আমাকে ঘৃণা করে।
ভাবতেই চোখে জল এসে ভরে গেলো।
নানুর কোলে চুপটি করে সোয়ে পরলাম।
রাত ছাদে দাঁড়িয়ে আছে, অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।মনের ভিতর এক পাহাড় সমান অভিমান তার।এমন অনেক রাত কাটিয়েছে একা ছাদে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে।
অনেক রাত হওয়াতে মেঘলা নানুর রুম থেকে নিজের রুমে যেতে নিলো।হটাৎ দেখলো রাত ছাদের দিক থেকে আসছে। একবার তাকিয়ে আবার নিজের গন্তব্যে যেতে লাগলো।
সকালে,
প্রতিদিন এর মতো আজও মেঘলা বাগানে হাঁটছে।
কিন্তু আজ সাথে প্রীতম,
মেঘলা আর প্রীতম এক সাথে হাঁটছে
রাত প্রতি দিন এর মতো বাড়ির ভিতরে আসতে নিলে দেখে মেঘলা আর প্রীতম দুজন এক সাথে হাঁটছে আর মেঘলা খুব হেসে হেসে কথা বলছে।
রাত দেখে কিছু সময় এর জন্য চোখ বুঝে রইলো।
তারপর আবার হাঁটতে লাগলো।মেঘলা আর প্রীতম কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে।
প্রীতমঃ আরে রাত যে কোথায় গিয়েছিলে, তুমি সকালে উঠো নাকি?
রাতঃ হ্যা (দাঁতে দাত চেপে) বলে আবার হাঁটা শুরু করলো।
প্রীতমঃ রাত আমাদের সাথেও একটু হেঁটে যাও।
রাতঃ না তোমরা যাও।
আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে এদের কথা শুনছিলাম।
রাত ভাইয়া দ্রুত পায়ে হেটে চলে গেলো।
__________________________
আমি কলেজের জন্য রেডি হয়ে বেড়িয়ে পরলাম, হালকা একটু নাস্তা করে চলে আসলাম গাড়িতে।
তিথি, আশা,সাগর, জিহাদ আগে থেকেই ছিলো।
আমি গিয়ে তিথি আর আশারকে জড়িয়ে ধরলাম।
দুজন আমাকে দেখে খুব খুশি কারন এক দিন বন্ধ ছিলো।
সাগর আমার মাথায় একটা চাটি মেরে বললো
কেমন আছিস?
মঘলাঃ ভালো তোরা।
জিহাদ আর সাগর দুজন এক সাথে বললো ভালো।
আমি আসার কিছু সময় পর দেখলাম ভাইয়াও চলে এসেছে আর অফিস রুমে চলে গিয়েছে।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আবার ওদের সাথে আড্ডায় মন দিলাম।
ক্লাস এর সময় হলে সবাই রুমে চলে আসি।
তার কিছু সময় পর ভাইয়া আসে।
খুব রাগি রাগি ভাব দেখছি,
আমি তো আর কিছু করি নি রাগলেই কি না রাগলেই কি।
হটাৎ ভাইয়া বলে উঠলো,
সবার পড়া কমপ্লিট হয়েছে।
মেঘলাঃ এ আল্লাহ আজ তো কিছুই পাড়ি না।
তিথি ওরা সবাই বললো পাড়ে কয় এক জন পাড়ে না।
রাতঃ যারা পারো না তারা দাড়াও
আমি তো পাড়ি না তাই ভয় পেতে পেতে দাড়ালাম।
আর আমার সাথে আর ২ জন দাড়ালো।
ওদের ২ টা করে ৪ টা করে বেতের বাড়ি দিলো।
এবার আমার পালা,
তিথি সাগর, আাশা,জিহাদ আমার দিকে ভয় লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
রাতঃ বাসায় কি করো, আবার ক্লাস এর ফাস্ট হও কি করে বেয়াদব।
আমি ভাইয়ার কথায় হা হয়ে আছি,আরে ভাইয়া তো জানে আমি কি করেছি।তারপরও কেমন প্রশ্ন করেছে রাক্ষস একটা।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই ভাইয়া,
রাতঃ হাত বাড়াও সবার মতো তোমাকেও শাস্তি পেতে হবে।
মেঘলাঃ কিন্তু।……….
রাতঃ হাত বাড়াওওও………. (জোড়ে খুব রেগে)
আমি হাত বাড়ানোর সাথে সাথে খুব জোরে একটা বারি দেয়।
আমি হাত সরিয়ে নেই, খুব বেথা লাগছে, কান্না পাচ্ছে খুব।
ভাইয়া তো জানে আমি কেনো পড়া শিখতে পারি নি।
রাতঃ হাত সরালে কেনো তুৃমি কি বিআইপি নাকি যে তোমাকে ৩ টা কম দিবো,হাত বাড়ও।
কিন্তু আমার খুব ভয় লাগছে সবার তুলনায় আমাকে খুব জোড়ে দিয়েছে।
আমি চুপ করে দাড়িয়ে আছি হাত বাড়াচ্ছি না আর বারাবোও না দেখি ভাইয়া কি করতে পারে।
ভাইয়া বার বার আমাকে হাত বারাতে বলছে কিন্তু আমিও কম জেদি না আমি আমার মতো করেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
এক পর্যায় ভাইয়া রেগে আমার শরিল এ এক এর পর এক বেদ দিয়ে আগাত করতে লাগলো,মনে হচ্ছে নিজের গায়ের যত শক্তি আছে সব আমার উপর ছেড়ে দিয়েছে।
আমি চোখ খিচে বন্ধ করে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি,আমিও দেখবো সে আমাকে কত মারতে পারে।
সবাই আমাদের দুজন এর দিকে তাকিয়ে আছে।
সাগর আর জিহাদ সহ ক্লাস এর সবাই দাড়িয়ে পরেছে।
এক পর্যায় ভাইয়া বেত ফ্লোর ছুরে ফেলে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।
মাথা ঘুড়ছে,আশা আমাকে ধরে।
জিহাদ পানি দেয় মুখে আমি যেনো আমার সব শক্তি হাড়িয়ে ফেলেছি।
শুধু মাথায় একটা কথায়ই ঘোড় পাক খাচ্ছে আমার অন্যায়টা কি।
রাত নিজের রুমে গিয়ে দেয়ালে খুব জোরে একটা ঘুসি মারে।
মাথার চুল টেনে ধরে চেয়ার এ বসে পড়ে।
রাতঃ তোর এতো বড় সাহস হয় কি করে মেঘ অন্য ছেলের হাত ধরার, অন্য ছেলের সাথে কথা বলার এতো বড় সাহস কে দিয়েছে তোকে, এই অধিকার শুধু আমার আর তুই কিনা অন্য কাউকে এই অধিকার দিচ্ছিস,আমি তোকে মারবো কাটবো সব আমি করবো তোর সয্য করতেই হবে কারন তুই আমাকে কষ্ট দিয়েছিস,তুই আমার বন্ধু কে কেড়ে নিয়েছিস তোর থেকে আমাকে এতো বছর দূরে রেখেছিস আমি যতটা কষ্ট পেয়েছি তোর ও কষ্ট পেতে হবে,তোর থেকে দূরে রাখার শাস্তি তোর পেতে হবে, তুই যদি একবার আমাকে বলতি অথবা বাসায় বলতি তুই তোর রাত কে চাস আমি ছোটে চলে আসতাম তোর কাছে কিন্তু তুই আমাকে ভুলে গিয়েছিস তাই তো অন ছেলের সাথে মিশতে পারিস।( মনে মনে রাত কথা গুলো বলছে)
আশাঃ মেঘলা তুই যেতে পারবি তুই স্যার তোর সাথে এমনটা করলো কে কেনো?
সাগরঃ হ্যা এতো রেগে যাওয়ার কারনটা কি অশব্য একটা আজ যদি স্যার না হতো ( রেগে)
মেঘলাঃ আমি যেতে পারবো,তোরা চলে যা।
তিথিঃ কিন্তু….
মেঘলাঃ কোনো কিন্তু না যা বলছি…
ওরা কোনো কথা না বলে চলে গেলো।
আমি দাড়িয়ে আছি গাড়ির জন্য, আজ আর অন্য ক্লাস করবো না তাই আগেই বেড়িয়ে পরেছি।
আঘাতের জায়গায় খুব বেথা হচ্ছে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি পাচ্ছি না খুব কষ্ট হচ্ছে আজ আমার মন থেকে রাত নামের মানুষটাকে মুছে ফেলবো, কেনো আমি তার পিছু পরে থাকবো যার মনপ আমার জন্য বিন্দু মাত্র মায়য়া নেই, একবার দেখতে আসলো না আমি আদো ঠিক আছি কিনা। ( চোখের পানি মুছতে মুছতে)
হটাৎ কেউ আমার হাত চেপে ধরলো।
চলবে,
Part 12-13
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১২+১৩
হটাৎ কেউ আমার হাত চেপে ধরলো
আমি কিছু বলার আগেই সে আমাকে গাড়িতে বসিয়ে সিট বেল্ট লাগিয়ে দিয়ে ড্রাইভ করা শুরু করলো।
মেঘলাঃ কি মনে করেন নিজেকে,কেনো নিয়ে আসলেন আমাকে,আমি নামবো গাড়ি থামান।
রাত কোনো কথা বলছে না নিজের মতো করে ড্রাইভ করছে।
আমি রেগে সিট বেল্ট খুলে চলন্ত গাড়ি থেকে নামতে নিই,হটাৎ রাত আমাকে হেচকা টানে তার এক হাতের বাহু ডুরে আমাকে শক্ত করে চেপে ধরে।
আমি বুঝতেই পারছি না এই বজ্জাত লোকটা করছেটা কি,আমি তো আর তাকে ডিস্টার্ব করবো না তার থেকে দূরে থাকবো, তাহলে সে এখন কেনো আমাকে কাছে টানছে।
মেঘলাঃ ছাড়ুন আমাকে,আমাকে মেরে আপনি শান্তি পেয়েছেন তো,আমাকে না মারলে তো আপনার ভালো লাগে না, সব সময় আমার সাথে বাজে ব্যবহার করবেন, আমি মরে…..
সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক হয়ে যায়,
রাত ভাইয়া আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি কিছু বলার আগেই সে আমার গাল চেপে ধরে।
আবার কিছু না বলেই বেড়িয়ে পরে।
আমি ডুকরে কেঁদে দেই।
আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আমি বাড়িতে চলে এসেছি।
শরিল এ খুব বেথা কোনো রকম গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে গেলাম।
নানু, প্রীতিম ভাইয়া ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
প্রীতমঃ আরে মেঘলা তুমি এতো তাড়াতাড়ি চলে আসলে যে।
আমি কিছু বলতে পারছি না প্রচন্ড মাথা ঘুরছে।
চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, শরিল এর অসয্য যন্ত্রণা হচ্ছে, মনে মনে রাত ভাইয়ার জন্য এক রাশ ঘৃণা জন্ম নিতে লাগলো,খুব রাগ হচ্ছে তার উপর, মনে হচ্ছে আমি এখনি ফ্লোরে লুটে পরবো।
নানু মনিঃ মেঘলা দি ভাই তুই ঠিক আছিস।
আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসলো, হটাৎ কেউ আমাকে কোলে তোলে নিলো।
সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে রাত ভাইয়া আমাকে কোলে তোলে নিয়েছে।
সাহেলা বেগমঃ রাত মেঘলার কি হয়েছে?
নানু,প্রীতম ভাইয়া,মিন্নি মামনি সবাই পিছু পিছু আসছে।
সাহেলা বেগমঃ কি হলো রাত কিছু বলছিস না কেনো?
ভাইয়া আমাকে খাটে সোয়ে দিয়ে ডক্টর কে ফোন দিলো।
মিন্নী বেগমঃ রাত কি হলো তুৃমি কিছু বলছো না কেনো?
রাতঃ কলেজে পড়ালিখা ঠিক মতো করে না শুধু ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়ায়, তাই স্যার মেরেছে।
নানু মনিঃ স্যার মেরেছে মানি তুই জানলি কি করে?
রাতঃ কারন আমি ঐ স্যার তাই আমি জানলাম আর কেউ কিছু জিজ্ঞেস করবা না ( একটু রেগে)
প্রীতম দেখতে পেলো মেঘলার হাতে একটা আঘাত এর চিহ্ন।
আরে হাতে তো রক্ত জমাট বেধে আছে ( মেঘলার কাছে গিয়ে হাত ধরতে নিলো)
রাতঃ প্রীতম ডোন্ট টাচ
প্রীতম থেমে গেলো, কিন্তু
রাতঃ ডক্টর আসছে দেখে নিবে ঔষধ দিবে।
সাহেলা বেগম আর নানু মনি বুঝতে পারলো আসলে এর কারন কি?
কারন এই গুলো তারা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছে রাত কে আটকানোর সাধ্য তাদের নেই মেঘলার জন্য খুব খারাপ লাগছে কিন্তু কিছু করার নেই তাদের থেকে দ্বিগুণ কষ্ট রাত পাচ্ছে মনে মনে, কিন্তু ও কাউকে বুঝতে দিচ্ছে না।
ডক্টর আসে,
ডক্টরঃ সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে, হয়তো অতিরিক্ত কষ্ট পেয়েছে, আরে শরিল হাতে এমন রক্ত জমাট বেধে আছে কেনো?
নানু মনিঃ আপনি ঔষধ দিয়ে যান।ঐ গুলা আমরা দেখে নিবো।
ডক্টর ঔষধ এবং মলম দিয়ে গেলো, ক্ষত স্থানের জন্য।
নানু মনিঃ রাত তুমি আজ যা করেছো মুটেও ঠিক করো নি।
রাতঃ দিদুন আমি ঠিক ভুল কারো কাছে শিখবো না,আমার যেইটা ভালো মনে হবে আমি তাই করবো।
সাহেলা বেগম ঃ তাই বলে তুমি মেয়েটাকে এই ভাবে মারতে পারো না রাত ছোট বেলায় এর জন্য আমি মেঘলা তোমার থেকে দূরে রেখেছি আর যদি বেশি বারবারি করো আমি মেঘলা কে দূরে পাঠিয়ে দিবো।
বলে সাহেলা বেগম হনহন করে রেগে চলে গেলো।
নানু মনি মেঘলার কাছে গিয়ে বসলো,
প্রীতম এর ও খুব খারাপ লাগছে, প্রীতম মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে যা দেখে রাত রেগে আগুন।
রাতঃ দিদুন, কাকি মনি তোমরা বাহিরে যাও।
মিন্নিঃ তোমার মতো গুন্ডার কাছে আমি মেঘলা কে রেখে যাবো না।
রাত আর কিছু না বলে সোজা মেঘলা কে কোলে নিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলো।
মিন্নীঃ রাত মেঘলা কে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো।
রাতঃ আমার কথার অবাধ্য তোমরা হয়েছো আর শাস্তি মেঘ পাাবে।
নানু মনিঃ রাত মেয়েটা অসুস্থ দেখ মেয়েটাকে আর কষ্ট দিস না।
রাতঃ দিদুন তুমি অন্তত জানতে আমার কথার অবাধ্য হওয়ার ফল কি হবে তুমি কাকি মনি কে বললে না কেনো?
রাত মেঘলা কে নিয়ে নিজের রুমে খাটে সোয়ে দিলো।
প্রীতমঃ রাত তুমি যা করছো খুব খারাপ করছো।
রাতঃ প্রীতম আমি গেস্টদের সম্মান করি সো তুমি আমাদের পারিবারিক বেপারে মাথা ঘামাবে না তুমি তোমার রুমে যাও।
প্রীতম এর অপমান বোধ হওয়াতে প্রীতম চলে গেলো সাথে মিন্নী বেগম।
নানু মনি চলে যেতে নিলে রাত বলে,
দিদুন তুমি যেও না, বসো ওর পাশে। (বলে নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে যায়)
নানু মনি মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
রাতঃ এই গুলো মেঘ কে পড়িয়ে দেও।( একটা লং লেডিস শার্ট আর প্লাজু এনে নানু মনির কাছে রেখে)
নানু মনিঃ এই মেঘ বলে ডাকার অধিকার তুমি হয়তো আজ থেকে হারিয়ে ফেলবে রাত আমার মনে হয় না মেঘলা আর কখোনো তোমাকে মানতে পারবে।
রাতঃ চেঞ্জ করে দেও পরে দেখে নিবো। আর এই মলম টা লাগিয়ে দিও।( বলে রাত বাহিরে চলে যায়)
নানু মনি চোখের জল মুছতে মুছতে মেঘলার ড্রেস চেঞ্জ করে দেয়,অবশ্য নানু মনির খুব কষ্ট হয়েছে কারন সে নিজেরি চলতে কষ্ট হয়।
নানু মনিঃ কত না কষ্ট পেয়েছিস দি ভাই, তোর জীবনটাই কষ্টের রে ( চোখের জল মুছতে মুছতে)
মেঘালা প্রায় ১ ঘন্টা পরে চোখ মেলে তাকায় মাথাটা কেমন জিম জিম করছে, শরিল এ প্রচুর বেথা অনুভব হচ্ছে,
এমন লাগছে কেনো আমার।
পরমুহূর্তেই মনে পরলো কলেজের কথা আর বাসায় এসে সেন্সলেস হওয়ার কথা।
নানু মনিঃ দি ভাই তুই ঠিক আছিস?
আমি নানু মনি কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেই আর বলতে থাকি,
নানু মনি রাত ভাইয়া কখনো সুদরাবে না কখনো না, আমাকে কষ্ট দিতেই তার ভলো।
নানু মনিঃ কাঁদিস না দি ভাই শান্ত হো।
মেঘলাঃ নানু মনি আমি এই রুমে কেনো এইটা তো রাত ভাইয়ার রুম।
নানু মনি মেঘলা কে সব বললো।
মেঘলাঃ ছি রাত ভাইয়া এতোটা অভদ্র প্রীতম ভাইয়ার মতো ভালো মানুষকেও ছাড়ে নি,তাকেও কথা শুনিয়েছে।
তুমি এতো দিন আমার ভালোলাগা ছিলে রাত ভাইয়া আজ থেকে খারাপ লাগায় পরিনত হলো।
রাতঃ তোর মতো মেয়ের খারাপ ভালোতে রাত চৌধুরী কিছু আশে যায় না।( রুমে ডুকতে ডুকতে কথা গুলো বললো রাত)
নানু আর আমি রাত ভাইয়ার দিকে তাকালাম, আমি এক রাশ অভিমান নিয়ে ভাইয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।
কুসুমঃ ছোটো সাহেব এই যে খাবার।
রাতঃ রেখে যাও।
কুসুম খাবার টা রেখে চলে গেলো।
রাতঃ নানু তোমার নাতনি কে খাবার টা খাইয়ে দেও,আর শুনো তোমার নাতনি যেনো এইটা ভাবে না যে তার জন্য আমার মায়য়া হয়েছে তাই এমন করছি,শুধু তোমার জন্য তুমি কষ্ট পেয়েছো তাই একটু দয়া দেখালাম।
নানু মুচকি হাসলো নানুর হাসির কারন আমি খুজে পেলাম না।
নানুঃ মেঘলা খাবার টা খেয়ে নে।
মেঘলাঃ আমি খাবো না নানু।
বলে খাট থেকে নেমে চলে আসতে নেই।
রাতঃ এক পা যদি রুম থেকে বের হয় দিদুন পা ভেঙে টুকরো করে ফেলবো।
ভাইয়ার কথায় আমার বুকটা ধুক করে উঠলো,
নানুঃ মেঘলা আয় রাত যা বলেছে তা যদি করে আমি কিন্তু কিছু বলতে পারবো না।
আমার মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি আসলো আমি তো জানি রাত ভাইয়া আমাকে কেনো মেরেছে। রাতের বাচ্চা রাত তোর অবস্থা শেষ এর পর মার খেলে খাবো কিন্তু তোকে তো কষ্ট দিবো হুম
মেঘলাঃ নানু আমি খাবো, কিন্তু সবার সাথে এই খানে না,নিচে চলে আসো।( বলে আমি রুম থেকে বেড়িয়ে সোজা ডাইনিং টেবিলে চলে আসি)
সাহেলা বেগমঃ আরে মেঘলা তুই এইখানে তুই অসুস্থ, তোর খাবার না উপরে দিয়ে আসলাম তাহলে এই খানে আসলি যে।
নানুঃ ও এইখানে খাবে সবার সাথে তাই চলে আসলো পাগলি মেয়েটা।
মেঘলাঃ হে মামনি কোন দিন মার খেতে খেতে মরে যাই ঠিক তো নেই ( অভিনয় করে কষ্ট পাওয়ার মতো করে কথাটা বললাম)
মেঘলার কথায় রাত রেগে আগুন হয়ে গেলো।
মেঘলা মিটমিটিয়ে হাসছে
তখনি প্রীতম আসলো,রাত এর দিকে এক বার তাকিয়ে চেয়ার এ বসতে নিলে মেঘলা বলে,
আরে প্রীতম ভাইয়া আপনি ঐ খানে বসছেন কেনো,এই দিকে বসুন।
প্রীতম একটা হাসি দিয়ে মেঘলার পাশে এসে বসলো।
কুসুম আর সাহেলা বেগম টেবিলে খাবার দিতে লাগলো।
তখনি বড় মামা আর ছোট মামা চলে আসলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ মেঘলা মা তুই ঠিক আছিস?
মেঘলাঃ হে মামা ঠিক আছি( আমি ঠিক নেই শরিল এ প্রচুর বেথা কিন্তু আমাকে যে এই রাক্ষস টা কে শাস্তি দিতে হবে)
রায়হান চৌধুরীঃ রাত তুমি অনেক বেশি বারাবাড়ি করছো মেঘলার উপর।
রাত খাবার টেবিল থেকে উঠে পড়লো,
চাচ্চু আমি কোনো বাড়াবাড়ি করি নি এইটা আমার দায়িত্ব তাই আর তোমাদের মেয়ে একটু মারে এমন হয়ে গিয়েছে।
মেঘলাঃ রাক্ষস তুই আমাকে একটু মেরেছিস।(মনে মনে)
রায়হান চৌধুরীঃ আমি তো জানি তুমি একটু মারো কিনা,মেঘলা কাল থেকে তুমি ঐ কলেজে যাবে না আমি তোমাকে অন্য কলেজে ভর্তি করাবো।
মেঘলাঃ ওফ ছোট মামা তুমি তো আমার কাজ আরো সহজ করে দিলে গু।( মনে মনে)
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে রায়হান তুই ঠিকি বলেছিস।
রাত চেয়ার এ একটা লাথি মেরে বাহিরে বেড়িয়ে পরলো।
মেঘলাঃ যাক বাবা এতো চলে গেলো একে জ্বালাবো কি করে( মনে মনে হতাশ হয়ে)
যাক গে একদম ঠিক জায়গায় লাগছে, আমি তোমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিবো রাত চৌধুরী, আমাকে ইগনোর করা বুঝো ঠেলা
নানু মনিঃ রাত যাস না দাদু ভাই খেয়ে যা।
মিন্নী বেগমঃ এতো কথা এখন না বললেও হতো আপনাদের ছেলেটা না খেয়ে চলে গেলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ শাস্তি পাওয়ার দরকার আছে।
নানু মনিঃ আর কত শাস্তি পাবে?
রৌদ্র চৌধুরীঃ ও এমন হয়েছে কেনো মা ওকে আমরা কেউ কন্ট্রোল করতে পারি না শুধু বাবার কথা আর মেঘলার কথা শুনতো বাবা চলে যাওয়ার পরে মেঘলার কথা ও শুনছে না কি করবো?
সাহেলা বেগমঃ আচ্ছা সবাই খাও ওর রাগ কমলে চলে আসবে।
রাত ভাইয়াকে ছাড়া একটুও ইচ্ছে করছে না কিন্তু সবার জোড়াজুড়ি তে একটু খেয়ে ঔষধ খেয়ে নিলাম।
বিকেলে,
ছাদে দাঁড়িয়ে আছি, রাত ভাইয়া এখনো বাসায় আসে নি। কোথায় গেলো রাত ভাইয়া আমার জন্য সব সময় শাস্তি পায়।কিন্তু আমার তো দূষ নেই তার রাগ বেশি হুম এতো রাগ থাকবে কেনো ।তাকে তো কেউ বলে নি যেতে সেই চলে গিয়েছে।
হটাৎ আমার পাশে প্রীতম ভাইয়া এসে ধারালো।
প্রীতমঃ শরিল ঠিক আছে এখন?
মেঘলাঃ হুম ঠিক আছে।
প্রীতমঃ তুমি কি রাত কে ভালোবাসো মেঘলা?
প্রীতম ভাইয়ার কথায় আমি হকচকিয়ে গেলাম, কি বলবো বুঝতে পারছি না, আচ্ছা সত্যি তো আমি কি রাত ভাইয়া কে ভালোবাসি?
প্রীতমঃ চুপ কেনো মেঘলা?
মেঘলাঃ না মানি আসলে, ভালোবাসি কিনা জানি না কিন্তু তার জন্য সবার থেকে আলাদা অদ্ভুত একটা টান অনুভব করি। তাকে দেখতে ইচ্ছে হয় কথা বলতে ইচ্ছে হয় কিন্তু সে চায় না।
মেঘলার বলা কথা গুলোতে প্রীতম এইটুকু বুঝতে পারলো যে রাত যে তার মনে বিরাজ করে তা সে নিজেই বুঝে না অবশ্য এই বাচ্চা মেয়ে কি বুঝবে।( প্রীতম একটু হাসলো)
মেঘলাঃ আমি কি হাসির কথা বলেছি?
প্রীতমঃ একটু ও না, আমি কাল চলে যাবো।
মেঘলাঃ কেনো ভাইয়া আর কিছু দিন থেকে যান আপনি থাকলে আমার সুবিধা হয়।
প্রীতমঃ সুবিধা হয় মানি?
মেঘলাঃ না আসলে আরকি ভালো লাগে সেইটাই বুঝাতে চেয়েছি।
প্রীতমঃ পাগলি একটা।
মেঘলাঃ
হটাৎ নিচে দেখলো রাত গাড়ি নিয়ে ভিতরে ডুকছে।
মেঘলা একটু শান্তি পেলো যাক মহারাজা অবশেষে আসলো তাহলে
প্রীতম মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে হয়তো এই জীবনে তোমাকে পাওয়া হবে না মেঘলা কিন্তু খুব ইচ্ছে ছিলো পাওয়ার, এইটাই মেনে নিতে হবে সবাই সবার জন্য তৈরি হয় না। যেমন তুমি আমার জন্য না।
প্রীতম মেঘলাকে কিছু না বলেই মেঘলার পাশ থেকে চলে যায়।
সাহেলা বেগম রাত এর রুমে খাবার নিয়ে যায়।
রাত ওয়াশ রুম থেকে সাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে দেখে মা তার রুমে।
রাতঃ কিছু বলবা আম্মু?
সাহেলা বেগমঃ খাবার টা খেয়ে নে বাবা।
রাতঃ খাবো না নিয়ে যাও।
সাহেলা বেগমঃ প্লিজ বাবা রাগ করিস না খাবার এর উপর তুই মেঘলার সাথে এমন করিস তাই তো সবাই তোর উপর রাগ করে।
রাতঃ আম্মু তোমারা শুধু আমার দূষটা দেখো মেঘলা যে অন্য একটি ছেলে ( এইটুকু বলে থেমে যায়)
সাহেলা বেগমঃ কি অন্য কোনো ছেলে থেমে গেলি কেনো?
রাতঃ কিছু না খাইয়ে দেও।
সাহেলা বেগম মুচকি হাসলো আর মনে মনে বললো।
পাগল ছেলে আমার রাগ ও দেখাবে আবার ভালো ও বাসবে।
সাহেলা বেগম রাত কে খাইয়ে দিয়ে চলে যায়।
রাতঃ মেঘ এর কি বেথা কমেছে, এতো বেশি না করলেও হতো,দেত রাগ তো কন্ট্রোল করতে পারি না কি করবো।
শাস্তি তো অনেক হলো ওকে শাস্তি দিতে গিয়ে আমিও শাস্তি পাচ্ছি পাজি একটা।
ভাবতে ভাবতে রাত ছাদে গেলো,সেখানে একটা পরি কে দেখে থমকে গেলো রাত।
আলিফ তোয়ার সাথে হাসছে আর কথা বলছে,
রাতঃ ওফ সেই পিচ্চি টা আমার, কেনো যে এর সাথে এমন করি, ইচ্ছে করছে তাকে একটু ছোয়ে দিতে কিন্তু ( ভাবতে ভাবতে ছাদের এর গেইট এর সামনের দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বুকে হাত বাজ করে দারালো রাত)
হটাৎ মেঘলা দেখতে পেলো রাত তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, মেঘলা খুব লজ্জা পেলো আর ছাদ থেকে নেমে যেতে চাইলো।
তখনি রাত মেঘলার হাত ধরে আটকে দিলো।
মেঘলা ভয় পেয়ে কাঁপতে লাগলো
আবার কি আমাকে মারবে, আটকালো কেনো?
রাতঃ আলিফ তোয়া নিচে কাকি মনি ডাকছে তাড়াতাড়ি যা।
মেঘলাঃ ভাভাইয়া আমিও যাবো হাত ছাড়ো।
আলিফ তোয়া চলে যায়।
রাত মেঘলাকে এক টানে নিজের বুকের উপর ফেলে দিয়ে মেঘলার কোমড় জড়িয়ে ধরে।
মেঘলা ভেবাচেকা খেয়ে রাত এর দিকে তাকিয়ে আছে আর ভয় পাচ্ছে।
রাতঃ অনেক বেথা দিয়েছি তোকে মেঘ?
আমিঃ না না না আমি একটুও বেথা পাই পাই নি( তুতলে)
রাতঃ সরি মেঘ
রাত ভাইয়ার এমন বিহেভ এ আমি কি রিয়েক্ট করবো বুঝতে পারছি না, সব কিছু যেনো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
ভাভাইয়া ছারো।
রাত ভাইয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আমি টাল সামলাতে না পেরে একটু পিছিয়ে যাই।
রাতঃ ছোটো বেলায় আমার বুকে ঘুম আসতে খুব ভালো লাগতো আর এখন একটু টাচ করাতে এতো সমস্যা, ওহ এখন তো অন্য কেউ আছে এখন কেনো আমাকে ভালো লাগবে,এখন তো অন্য কেউ টাচ করলে ভালো লাগে, তার হাতে খেতে ভালো লাগে। ( রাত খুব রেগে কথা গুলো বলে হনহন করে চলে যায়)
মেঘলাঃযাক বাবা আমাকে আাবার কে ( ওফ প্রীতম ভাইয়ার কথা মিন করেছে হাহাহা)
মেঘলা হেসে দেয়, খুব আনন্দ লাগছে ওর।
দৌড়ে নানু মনির কাছে চলে যায় মেঘলা
নানু মনি ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো,
নানু মনি নানু মনি আজ আমার কেনো জানি খুব খুশি লাগছে (নানু মনি কে বসা থেকে উঠিয়ে নানু মনির হাত ধরে ঘোরাতে ঘোরাতে)
মিন্নী বেগমঃ আরে আরে কি করছিসটা কি মেঘলা পরে যাবে তো।
রাত মেঘলার কান্ড দেখে উপরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে।
রাতঃ পাগলিটা আমার।
সাহেলা বেগমঃ আচ্ছা এতো খুশির কারনটা কি হুম?
মেঘলাঃ জানি না মামনি কেনো জানি এত্তো এত্তো ভালো লাগছে।
সবাই মেঘলার পাগলামি দেখে হাসছে।
নেক্সট পার্ট পেতে আমার পেজটি ফ্লো করুন
______________________
চারো দিকে সন্ধ্যার আজানের ধ্বনি বাজতে লাগলো।
সবাই উঠে গিয়ে ওজু করে নামাজ আদায় করতে লাগলো।
নামাজ শেষে মেঘলা কলেজের পড়া কমপ্লিট করতে লাগলো।
কেনো জানি পড়ায় মন বসছে না মনটা কেমন যেনো সটফট করছে, বিকেলে তো খুব আনন্দ লাগছিলো তাহলে এখন কেনো এতো অস্থির লাগছে।
উঠে আলিফ তোয়ার রুমে গেলাম ওরা পড়ছে।
আমি গিয়ে ওদের খাটে বসলাম ওরা টেবিলে বসে পড়ছে।
তোয়াঃ আপু কিছু বলবা?
মেঘলাঃ না তোয়া আচ্ছা তোরা পর।
সেখান থেকে নানু মনির রুমে গেলাম।
নানু মনি খাটে বসে তসবিহ পরছে আমি নানু মনির পাশে গিয়ে বসলাম।
নানু মনিঃ কি হয়েছে দিদি ভাই?
মেঘলাঃ জানি না নানু কেমন জানি অস্থির লাগছে মনে হচ্ছে কিছু একটা হবে।
নানু মনিঃ মেঘলা আমার ও না ভালো লাগছে নারে কেমন জানি মনটা কু ডাকছে।
চলবে,
Part 14-15
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১৪+১৫
নানু মনিঃ মেঘলা আমার ও ভালো লাগছে না রে কেমন যেনো মনটা কু ডাকছে।
মেঘলাঃ আচ্ছা নানু মনি চলো নিচে যাই।
আমি নানু মনিকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে এসে বসি।
মিন্নীঃ মেঘলা চা দিবো?
মেঘলাঃ না মামনি তুমি আসো এখানে বসো।
মিন্নী মামনি আমার পাশে এসে বসলো।
মামনী সাথে কথা বলতে বলতে নয়টা বেজে গেলো।
রাত ভাইয়া বাহিরে গিয়েছিলো একটু আগে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসছে আমাদের দিকেই।
রাত ভাইয়া নানু মনির পাশে বসে নানু মনিকে জড়িয়ে ধরলো।
রাতঃ কি দিদুন কি করছো শরিল ভালো তো তোমার?
নানু মনিঃ হে শরিল ভালো কিন্তু দাদু ভাই মনটা ভালো লাগছে নারে।
রাতঃ বয়স হয়েছে হয়তো তাই।
নানু মনিঃ মেঘলার ও ভালো লাগছে না ওর নাকি কেমন অস্থির অস্থির লাগছে।
রাতঃ হাহাহা ও তো তোমার মতো বুড়ি তাই।
রাত ভাইয়ার কথায় আমার একটু রাগ হলো আমি বুড়ি।
তখনি দেখলাম প্রীতম ভাইয়া আসছে।
মেঘলাঃ হায় প্রীতম ভাইয়া আসুন এই খানে বসেন।
রাতঃ আবার প্রীতম ( মনে মনে)
প্রীতম গিয়ে মেঘলার পাশে বসলো কিন্তু একটু দূরত্ব রেখে।
মেঘলাঃ প্রীতম ভাইয়া আপনি আর কিছু দিন থেকে যান না, খুব মিস করবো আপনাকে। (একটু মন খারাপ এর ভাব করে)
রাতঃ তোর খবর আছে মেঘলা তুই মিস করবি হুম আমার বজ্জাত মেঘ বউ কুচি কুচি করবো তোকে( মনে মনে রাগে ফুঁসতে)
মেঘলা তো মনে মনে হাসতে হাসতে শেষ।
রৌদ্র চৌধুরীঃ কি হচ্ছে আজ সবাই এক সাথে?
নানু মনিঃ হে রৌদ্র বস।
রৌদ্র চৌধুরী বসার সাথে সাথে ফোন বেজে উঠলো।
সে ফোন রিছিভ করলো আর বললো,
হে নীলা মামনি বল কেমন আছিস?
নীলা কাঁদছে
রৌদ্র চৌধুরীঃ নীলা মা কাঁদছিস কেনো কি হয়েছে ( খুব উত্তেজিত হয়ে)
রৌদ্র চৌধুরীর কথায় সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে, নীলা কেনো কাঁদছে তা জানার জন্য।
রৌদ্র চৌধুরীর হাতটা হটাৎ নিচে পরলে গেলো।
রাতঃ বাবা কি হয়েছে, কি বললো নীলা??
রৌদ্র চৌধুরীঃ নীলার বাবা আর নেই হাসান ভাই মারা গিয়েছে ( বলে মাথায় হাত দিয়ে কান্নায় ভেঙে পরে)
সবাই একটা দাক্কা খেলো।
নানু মনিঃ আমি বলছিলাম মেঘলা আমার মনটা কু ডাকছে, দেখলি তো কি হয়ে গেলো আল্লাহ কেনো এমন করলো আমাদের সাথে। ( বলে হো হো করে কেঁদে দিলো)
সবার চোখে জল প্রীতম সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করছে
রায়হান চৌধুরীঃ রাত ১০ টা বাজে এতো রাতে গ্রামের রাস্তায় যাওয়া খুব রিস্ক, ভোর হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
সাহেলা বেগম আর মিন্নী বেগম এর ও খুব খারাপ লাগছে তারাও মন মরা হয়ে বসে রইলো।
মেঘলা তার নানু কে জড়িয়ে কাঁদছে।।
আর মনে মনে ভাবছে,
হাসান আংকেল একটু হলেও বাবার অভাব পূরণ করেছে নিলয় এর সাথে আমাকেও খুব আদর করতো, আর সেই আজ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো, আমার জীবন টা এমন কেনো আল্লাহ আমার সব প্রিয় মানুষ গুলোকে আমার জীবন থেকে কেড়ে নেও, হয়তো নিলয় আর নীলা আপু খুব কষ্ট পাচ্ছে,খালামনির কি অবস্থা তার প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে, তাদের সাথে কি কেউ আছে কি অবস্থায় আছে হাজার ও প্রশ্ন মাথায় ঘোর পাক খাচ্ছে মেঘলার র বুক ফেটে কান্না আসছে।
রাত বার বার মেঘলার দিকে তাকাচ্ছে কান্না করতে করতে ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে, চোখ জোড়ায় মনে হয় রক্ত জমাট হয়ে আছে, হাত দিয়ে বার বার চোখের পানি মুচ্ছে।
মেঘলার এমন অবস্থা দেখে রাত এর খুব খারাপ লাগছে।
ইচ্ছে করছে ওর পাশে বসে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত ভুলিয়ে দিতে।
সবাই স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।
রায়হান চৌধুরী এবং রৌদ্র চৌধুরী বার বার নীলাদের ফোন দিয়ে খবর নিচ্ছে, ওরা খুব কাঁদছে।
সময় যেনো শেষ হয় না কখন সকাল হবে সবাই সটফট করতে লাগলো,রাতে আর কারো খাওয়া হলো না, কারো চোখে ঘুম নেই।
মিন্নী বেগমঃপ্রীতম তুই তো কাল সকালে চলে যাবি তুই রুমে গিয়ে একটু ঘুম আস বাবা।
প্রীতমঃ সমস্যা নেই খালা মনি আমি ঠিক আছি।
রায়হান চৌধুরীঃ না প্রীতম তুমি যাও সকালের তোমার ফ্লাই।
সবার জোড়াজুড়ি তে প্রীতম রুমে চলে গেলো।
আসলে কথায় আছে বিপদ এর রাত নাকি অনেক বড় হয়, তেমনি মেঘলাদের পরিবার এ তাই হচ্ছে।
সময় কাটার নামি নিচ্ছে না সবার কাছে মনে হচ্ছে ঘড়ির কাটা থেমে থেমে চলছে একটা মিনিট একটা ঘন্টার মতো মনে হচ্ছে চৌধুরী বাড়ির প্রতিটা মানুষের কাছে।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে ফরজ এর আজান এর ধ্বনি বেজে উঠলো।
সবার কানে আজান এর ধ্বনি বাজতেই কোনো রকম নামাজ আদায় করে বেড়িয়ে পরলো তারা গ্রামের উদ্দেশ্যে।
প্রীতম ও তাদের সাথেই বেড়িয়ে পরে অবশ্য তার আর একটু পরে গেলেও কোনো সমস্যা হতো না কিন্তু খালি বাড়িতে থেকে কি করবে।
মেঘলার জন্য প্রীতম এর মনটা খুব খারাপ হলো।
কিন্তু কি আর করার আজ ওদের এমন একটা পরিস্থিতি রেখে চলে যেতে হচ্ছে।
গ্রামে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল সাতটা বেজে গেলো।
আপুদের বাসার গেইট এর সামনে যেতেই অনেক মানুষ এর ভির দেখতে পেলাম সবাই আংকেল কে দেখতে এসেছে বাড়ির ভিতরে ডুকতেই বড় খালা মনি,নিলয়,নিলা আপু আর আংকেল এর ভাই বোন এর কান্নার আহাজারি।
খালা মনি আমাদের দেখে আরো কান্নায় ভেঙে পরে নানু কে জড়িয়ে চিৎকার করে কান্না করছে।
আমি নীলা আপুকে জড়িয়ে ধরলাম নীলা আপু আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো, আপুর কান্নায় যেনো আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
নিলয় এর দিকে তাকিয়ে দেখি নিলয় এর বেহাল অবস্থা, মা যখন আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে তখন হয়তো আমি কিছুই বুঝতাম না মা হারানোর কষ্ট টা বুঝতে পারি নি, মামা, মামনি,খালা মনিরা বুঝতে দেয় নি,কিন্তু আজ বুঝতে পারছি মা বাবা কে হারানোর কষ্ট টা নীলা আপু আর নিলয় কে দেখে।
আমরা আসার কিছু সময় পর ছোট খালা মনি ও চলে আসলো।ছোট খালামনিও খুব কাঁদছে বড় খালা মনিকে জড়িয়ে।
অন্য আত্মীয় স্বজনদের কাছে জানতে পারলাম, আংকেল এর হার্ট এট্যাক করে মারা গিয়েছে ডক্টর এর কাছে নেওয়ার সময়টুকু পায় নি।
মসজিদ এ জানিয়ে দেওয়া হলো জানাজার সময়।
আংকেল কে কিছু লোক শেষ গোসল এ নিয়ে গেলো।
রাত ভাইয়া নিলয় কে নিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলো।কারণ নিলয় এর যে বাবার খাটিয়া কাঁদে নিতে হবে।
মনে হচ্ছে রাত ভাইয়া কেঁদেছে তার ফর্সা মুখটা লাল হয়ে আছে, সারা রাত ঘুম না আসাতে মুখটা ফেকাসে লাগছে।
আমার খুব অসুস্থ লাগছে শরিলটা কারণ আমি একটু কাঁদলেই ভিষণ মাথা বেথা ধরে যায়।
আজ ও তার ব্যতিক্রম নয়।কিন্তু আপুদের কষ্টে যে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
আংকেল এর গোসল শেষে তাকে জানাজার জন্য তৈরি করা হলো।বাড়িতে কান্নার আহাজারি, খালা মনি একটু পরপর সেন্সলেস হয়ে পরছে।
নীলা আপুও নিশতেজ হয়ে পড়ছে।
সময় হয়ে গেলো আংকেল কে শেষ বিদায় দেওয়ার।
সবাই আংকেল এর মুখটা শেষ বার দেখার সুযোগ পেলো।
খালা মনিকে রাত ভাইয়া নিয়ে গেলো শেষ বার তার প্রিয় মানুষটির মুখটি দেখার জন্য।
কিন্তু খালা মনি একটু দেখেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে।
রাত ভাইয়া খালা মনিকে কোলে করে রুমে নিয়ে সোয়ে দেয়।
কয়েকজন মহিলা খালামনির সেন্স ফেরানোর চেস্টা করছে।
আংকেল কে জানাজা দেওয়ার জন্য মসজিদ এর মাঠে নিয়ে যাচ্ছে।
নিলয় খুব ভেঙে পড়েছে যার ফলে তার বাবার শেষ যাত্রার খাটিয়া বহন করতে পারলো না।
রাত ভাইয়া নিলয় কে ধরে নিয়ে গেলো বাবার শেষ বিদায় এ।
বাড়িটা মানব শূন হয়ে গেলো।
চারো দিকে কেমন যেনো একটা স্তব্ধ হাহাকার।
খালামনি একটু পর পর চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠছে।
নীলা আপু খালামনিকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।
বাড়িতে শুধু মেয়ে মানুষ কেউ সোফায় তো কেউ ফ্লোরেই বসে আছি।
১ ঘন্টা পর রাত ভাইয়ারা ফিরলো আংকেল কে অন্ধকার কবরে রেখে।
সবাই যে যার মতো বসে আছে।
গতরাত থেকে কারো কিছু খাওয়া হয় নি আর সারা রাত জেগে থেকে প্রায় সবার শরিল দূর্বল লাগছে।
নীলা আপুর ফুপি,চাচা সবাই মন মরা হয়ে বসে আছে।
নীলা আপুর এক দল কাজিন এক সাথে বসে আছে এদের মাঝে মোটামুটি সবাই আমার চেনা।
ছোট মামা অনেক গুলো খাবার এনে ডাইনিং টেবিলে রাখলো।
মড় মামনি আর ছোট মামনি সবাইকে খাওয়ার জন্য রিকুয়েষ্ট করছে।
আমি কিছু খাবার এনে নীলা আপু আর নিলয় কে জোর করে একটু খাইয়ে দিলাম।
ছোট খালামনি বড় খালামনি কে খাওয়ানোর চেস্টা করছে।
যে চলে যাওয়ার সে তো চলেই গিয়েছে, সব আল্লাহর ইচ্ছে।
নীলাঃ মেঘলা তোরাও খেয়ে নে তোরাও রাত থেকে কিছু খাস নি আর ঘুম ও আসতে পারিস নি তুই তো এমনি আদমরা একটু কিছু হলেই অসুস্থ হয়ে যাস,অসুস্থ হয়ে পরবি যা বোন খেয়ে নে।( আপুর কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে কারন কান্না করতে করতে আপুর গলা বসে গিয়েছে)
রাত ভাইয়া একটা প্লেটে খাবার নিয়ে এসে খেতে খেতে আমার পাশে বসলো।
আমার মুখের সামনে নিজের হাতে করে খাবার বারিয়ে চোখের ইশারা করে খেতে বলছে।
আমি অবাক হয়ে ভাইয়ার দিকে আছি কি করছে ভাইয়া, মামনি, মামা আরো কত মানুষ এই খানে আর এই রাক্ষস টা এই ভাবে মুখের সামনে খাবার নিয়ে। আর ভাইয়া এতোটা চেঞ্জ কি করে?( আমি অভাকের শেষ সিমানায়)
নীলাঃ খেয়ে নে মেঘলা।
আপুর কথায় আমি ভাইয়ার হাত থেকে খাবার টা মুখে নিলাম।( আশে পাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ তাকিয়ে আছে নাকি কিন্তু না যে যার মতে বসে আছে)
ভাইয়া নিজেও খাচ্ছে আমাকে ও খাইয়ে দিচ্ছে।
(নেও তোমাদের রাত মেঘলাকে একটু এক করে দিলাম)
খাওয়া শেষে ভাইয়া আমাকে হাতে একটা ঔষধ ধরিয়ে দিয়ে বললো খেয়ে নে।
আরে এটা তো আমি মাথা বেথা হলে খাই ( মনে মনে অভাক হলাম কিন্তু ঔষধ তো খেতে একদম ভালো লাগে না যদি না কেউ বকা দেয় ঔষধ খাওয়ার জন্য তো আমি মোটেও ঔষধ খাই না)
মেঘলাঃ আমি ঔষধ খাবো না।
রাতঃ বেশি কথা আমি পছন্দ করি না, এই পরিস্থিতি পাকামো করলে মার একটাও মাটিতে পরবো না।।( চোখ গড়ম করে আমার কানের কাছে এসে)
আমি একটার পর একটা সক খাচ্ছি, এইটা কি সেই রাত ভাইয়া যে গতকল ও আমাকে বেদম পিটালো?
রাতঃ এমন ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছিস কেনে আমাকে কি কখনো দেখিস নি?
আমি চোখ সরিয়ে ঝটফট ঔষধ টা খেয়ে নিলাম,বমি চলে আসতে নিলে মুখ চেপে চোখ বন্ধ করে রাখলাম।
রাতঃ জীবনে আর বড় হবি না এতো ডং করতে পারিস( বলেই উঠে চলে গেলো)
আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
পাশে নীলা আপু দুই পা বাজ করে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে।
মেঘলাঃ আপু চলো একটু ঘুমাবে।
নীলাঃ ঘুম আসবে নারে মেঘলা।
মেঘলাঃ আপু তুমি চলো তো
আপু কে জোড় করে নিয়ে আসলাম রুমে।
নীলাঃ মেঘলা আমার ঘুম আসবে না।
মেঘলাঃ আপু তুমি সোয়ে পরো তো দেখি ঘুম আসে কিনা?
আপু কে এক প্রকার জোড় করে সোয়ে মাথায় হাত ভুলাতে লাগলাম।
আপু ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়লো।
আস্তে আস্তে বাড়ি খালি হয়ে গেলো।
বাড়িতে আমরা কয়েকজন।
আপুর চাচা,ফুপিরাও চলে গিয়েছে কিন্তু আমরা তো আর আপুদের এই অবস্থায় ফেলে চলে যেতে পারি না।
আমার খুব ঘুম পাচ্ছে, কিন্তু চোখ বুঝলে কেমন একটা ভয় কাজ করছে। ঘুমাতেও পারছি না।
বিকেল হওয়াতে আর সবাই খুব ক্লান্ত তাই সবাই ঘুম আসছে।
বাড়িটা আজ কেমন শোনসান নির্বতা।রুমে একা কেমন যে লাগছে, আপু তো ঘুম তাই নিজেকে একা মনে হচ্ছে।
তাই ড্রয়িং রুমে চলে আসলাম,কিন্তু এইখানেও কেউ নেই ভয় এর মাত্রা টা আরো বেরে গেলো।কারন আমি মৃত্যু মানুষ দেখতে পারি না।
ভয় এ সোফায় গুটিসুটি মেরে বসে পরলাম।
আর মনে মনে বলতে লাগলাম
নানু মনি তুমি তো জানো তোমার মেঘলা ভয় পায় তুমিও ঘুমিয়ে আছো, নানুরি বা কি করার আমি তো আপুর রুমে ছিলাম, নানু হয়তো ভেবেছে আমি আপুর সাথে ঘুমিয়ে আছি।
মনে মনে দোয়া দুরুদ পরতে লাগলাম।আর চিন্তা করছি রাতে কি ভাবে ঘুমাবো।
হটাৎ রাত ভাইয়া আমার পাশে এসে বসলো।
আমার অনেকটা কাছে, আমার পেছনে সোফার উপর হাত দিয়ে পায়ে পা তোলে।
রাতঃ এতো বড় হয়েছিস তারপরও ভয়টা দূর করতে পারলি না?
আমি অভাক হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
ভাইয়া জানলো কি করে আমি যে ভয় পাচ্ছি
রাতঃ এতো ভেবে কাজ নেই আমি জেগে আছি আপনি ঘুম আসেন মেম।
মেঘলাঃ আমার ঘুম পাচ্ছে না( ভাইয়ার কাছ থেকে উঠে যেতে নেই কথাটা বলে কিন্তু ভাইয়া আমার বাহু ধরে আটকে দেয়)
রাতঃ মেঘ বেশি বাড়াবাড়ি করবি না বলছি ঘুম আসতে ঘুম আস।
মেঘলাঃ কিন্তু (আমার ঠোঁটে তার এক আঙুল দিয়ে)
রাতঃ আমি আর একটা কথা শুনতে চাচ্ছি না মেঘ ঘুম আসতে বলেছি(নরম স্বরে ভাইয়াকে কেমন যেনো অন্যরকম লাগছে)
আমার বাহু চেপে ধরে মাথাটা তার হাত দিয়ে তার কাধে হেলান দিয়ে দিলো আর বললো।
এবার লক্ষি মেয়ের মতো ঘুৃম আস।
মেঘঃ এই রাক্ষসটার হলো টা কি( মনে মনে)
মেঘলার খুব ক্লান্ত থাকাতে ঘুমিয়ে পরলো।
রাত নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ মনে করছে এই মুহূর্তে কারন তার প্রিয় মানুষটি তার পাশে এতোটা কাছে।
তাকে আরো শক্ত করে আকরে ধরলো,মেঘ ঘুম এর মাঝে রাত এর হোয়াইট কালার শার্ট টি খামছে ধরলো,রাত হাতের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।
_______________________________
হটাৎ আমি ঘুম থেকে দরফরিয়ে উঠলাম।
নীলাঃ আরে কি হয়েছে আসতে উঠ।
মেঘলাঃ আমি এই খানে কি ভাবে আসলাম?
নীলাঃ তুই এইখানে কি ভাবে আসলি মানি?
মেঘলাঃ হে আমি এইখানে আসলাম কি করে?
নীলাঃ পাগল হয়ে গেলি নাকি আমি ঘুম থেকে জেগে তো তোকে তো আমার পাশে ঘুমিয়ে থাকতে দেখলাম, তুই ভয় পাবি তাই নানু বললো বসে থাকতে।
মেঘলাঃ তার মানে ভাইয়া আমাকে এইখানে সোয়ে দিয়ে গিয়েছে, ( নিজের অজান্তেই মেঘলার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো)
নীলা আপু আবার মন মরা হয়ে বসে আছে, আমার একটুও ভালো লাগছে না আপু কে দেখে।
মেঘলাঃ আপু সবাই কোথয়?
নীলাঃ ড্রয়িং রুমে।
মেঘলাঃ তুমি একটু বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নীলা আপু কে নিয়ে ড্রয়িং রুমে এসে বসলাম।
মামা, খালামনি, মামনিরা কথা বলছে, বড়খালা মনিকে শান্তনা দিচ্ছে।
নিলয় সোফার এক কোনে বসে আছে আমি ওর পাশে বসলাম,রাত ভাইয়াকে কোথাও দেখতে পেলাম না, কোথাও হয়তো গিয়েছে।
আমি নিলয় এর মন ভালো করার জন্য নিলয় এর সাথে কথা বলতে চাইলাম,
কিরে কুত্তা।
নিলয় আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নিলো।
মেঘলাঃ এমন মন খারাপ করে বসে থাকিস না ভাই ভালো লাগে না।
নিলয়ঃ ভালো লাগছে নারে মেঘলা, আব্বু এই ভাবে ( আর কোনো কথা বলতে পারলো না নিলয় কান্না করে দিলো)
আমি আর কোনো কথা বললাম না চুপ করে ওর পাশে বসে রইলাম।
হটাৎ রাত ভাইয়া খাবার নিয়ে আসলো।
ওহ তাহলে সে খাবার এর জন্য বাহিরে গিয়েছিলো।
রাত ভাইয়া খাবার টেবিলে রেখে আমার পাশে এসে বসলো।
সবাই চুপ হয়ে বসে আছে, এমন নিরবতা ভালো লাগছে না।
কি আর করবো সবার তো মন খারাপ।
রাতে আপু,খালামনি আর নীলয় কে জোড় করে খাওয়ানো হলো।
খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেলো।আমি, আপু আর রাত ভাইয়া বসে ছিলাম আপু উঠে রুমে চলে গেলো,আমিও চলে যেতে নিবো তখন রাত ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে আবার বসিয়ে দিলো।
মেঘলাঃ কি হলো এটা?
রাত মেঘলার কোলে মাথা রেখে সোয়ে পরলো।
মেঘলাঃ আরে ভাইয়া পাগল হয়ে গিয়েছো নাকি?
রাতঃ প্লিজ মেঘলা কথা বলিস না মাথাটা ভিষণ বেথা করছপ একটু চুল গিলো টেনে দে না( খুব অসহায় মুখ করে যা দেখে আমার খুব খারাপ লাগলো,ভাইয়া হতো ঝামেলার কারনে সারা দিন ও ঘুম আসতে পারে নি আর আমি কতটা স্বার্থপর)
আর কিছু না ভেবে ভাইয়ার মাথায় হাত ভুলাতে লাগলাম।
ভাইয়া চোখ উলটে একবার আমার দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে একটু হাসির রেখা টেনে আবার চোখ বুঝে নিলো।
আমি তো এমন রাত ভাইয়া কে চেয়েছিলাম, আমার সেই ছোট্ট বেলার রাত ভাইয়া কে আমি আবার ফিরে পেয়েছি ভাবতে মনটা আনন্দে বরে উঠছে।
ভাইয়া পশে থাকাতে ভয়টা ও কাজ করছে না।
প্রায় অনেক সময় ভাইয়ার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলাম, ভাইয়া গভীর ঘুমে আছন্ন।
কেমন বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে, পা সটান করে বুকে হাত দুটো বাজ করে।
রেড কালার টি শার্ট টিতে খুব মানিয়েছে রাক্ষসটা কে।
আমি ভাইয়াকে দেখছি আর মিটমিটিয়ে হাসছি।
____________________________
সকালে,
চোখ মেলে তাকাতেই ৪২০ বোল্ড এর দাক্কা খেলাম।
আমি আবার খাটে, ভাইয়া তাহলে আমি ঘুম আসলে আমাকে রেখে চলে যায়।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে খাট থেকে নেমে বারান্দায় গেলাম।
গ্রামে খুব ঠান্ডা, শহরে এখনো এতো শীত পরে নি,গ্রামের আবহাওয়া এমনিতেই একটু শীতল হয়।
আমি একটা চাদর মোরি দিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে পড়লাম।
গেইটের বাহিরে এসে দাড়ালাম,
কি সুন্দর হিমেল হাওয়া বইছে,হালকা কোয়াশা দেখা যাচ্ছে ঘাস গুলো ভিজে একাকার, দূরে ধান খেত দেখা যাচ্ছে।
এখনো তেমন কোনো মানুষ দেখা যাচ্ছে না।
আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে দেখছি।
হটাৎ কেউ পাশ থেকে বললো,
হাঁটবি?
কন্ঠটা আমার খুব চেনা তাই আর বুঝতে বাকি রইলো না কার কন্ঠ।
আমি না তাকিয়েই বললাম।
ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু একা ভয় লাগে।
রাতঃ আমার সাথে যাবি?
আমি ভাইয়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে ফেললাম, কেনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছে এতো বছর এর কথা মনে করে। কত মিস করেছি আমি ভাইয়াকে কিন্তু সে আমার সাথে একটি বার এর জন্যও কথা বলে নি।
দেশে আসার পরেও আমি আমার ছোট বেলার রাত ভাইয়া কে পাই নি পেয়েছি একটা রাক্ষস রাত ভাইয়া কে।
এখন আসছে আমকে মায়য়া দেখাতে লাগবে না রাক্ষস তোর মায়য়া।
আমি অভিমান করে চলে আসতে নেই।
রাত ভাইয়া আমার হাত ধরে বলে,
আমার সাথে যেতে ইচ্ছে করে না ঐ প্রীতম এর সাথে ঐ দিন যেতে ভালো লেগেছিলো তাই না?
রাত ভাইয়ার কথায় আমি কি বলবো বুঝে উঠতে পারলাম না।
তাই চুপ হয়ে রইলাম।
ভাইয়া রেগে একাই হাঁটা শুরু করলো।
ওফ রাক্ষসটা আমি যদি এখন না যাই তো পরে আমাকে মারবে।
তাই আমিও তার পিছু হাঁটা শুরু করলাম।
কিছু রাস্তা যাওয়ার পরে রাত ভাইয়া থেমে গেলো।
আর বললো
তুই পিছু পিছু আসছিস কেনো?
আমি দৌড়ে তার আগে হাঁটা শুরু করলাম।
তখন ভাইয়া আমার পিছু হাটছিলো আর বলছে এই তোকে কি জিজ্ঞেস করলাম?
ভাইয়া তুমি আমার পিছু হাটছো আমি তো আর এখন তোমার পিছু হাটছি না।
রাত ভাইয়া কপাল কুঁচকে
কি বললি তুই
মেঘলাঃ আমি তোমার পিছু হাটছি না তুমি আমার পিছু হাটছো।
আমার কথা শুনে ভাইয়া হেসে দেয় আর বলে,
তবে রে পাকনি বুড়ি দারা তোর পিছু হাটছি আমি ( কথটা বলেই আমার পিছু দৌড়াতে লাগলো,আমি ও ভয় পেয়ে দিলাম এক দৌড়)
রাতঃ মেঘ দারা বলছি।
আমি ভাইয়ার থেকে অনেকটা দূরে ছিলাম তাই ভাইয়া আমার নাগাল পেলো না।
একটা সময় আমি হাঁপিয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম আর দৌড়াতে পারলাম না আর তখনি ভাইয়া আমার হাত ধরে তার বুকে টেনে নিলো আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আমি কোনো রিয়েক্ট করলাম না কারন ছোট বেলায় এমনটাই হতো আমি ভাইয়ার সাথে দৌড়াতে দৌড়াতে যখন হাঁপিয়ে যেতাম ঠিক তখন ভাইয়া আমাকে বুকে জড়িয়ে নিতো,আজও ভাইয়া তাই করলো।
এই বুকের মাঝে কেমন যেনো একটা অজানা শান্তি লুকিয়ে আছে, মনে হয় সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
রাত মেঘলাকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে।
এতোটা বছর একজন কে দেখার হাহাকার এই বুকটা পাথর হয়ে ছিলো আজ যেনো তার সেই পাথর বরফ এর মতো গলে যাচ্ছে একটা প্রশান্তি পাচ্ছে রাত।
কিছু সময় পর এইভাবে থেকে আমি ভাইয়াকে ছেরে হাটতে লাগলাম, আমার উদ্দেশ্য পূরনো বাড়িতে যাওয়ার দার থেকে নানা ভাইয়ার৷ কবরটা দেখার।
আমি হাঁটছি ভাইয়া দ্রুত পায়ে হেটে আমার পাশে এসে আমার সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটছে।
হটাৎ হাতে স্পর্শ পেয়ে আমি চমকে গেলাম,
চলবে,
Part 16-17
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১৬+১৭
হটাৎ আমার হাতে স্পর্শ পেয়ে আমি চমকে গেলাম।
রাত ভাইয়া আমার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলো।
আমিও অন্য দিকে তাকিয়ে হাঁটছি।
কিছুক্ষণ পরে আমরা পুরোনো বাড়িতে চলে আসলাম রাত ভাইয়া আমার হাত ছেড়ে দিয়ে নানা ভাই এর কবরের সামনে চলে গেলো।
হয়তো জিয়ারত করবে তাই।
রাত ভাইয়া এতো সহজে এতোটা পালটে যাবে আমি ভাবতেও পারি নি কখনো।
কিন্তু সেই দিন এর আমি তাকে দূরে সরিয়ে দিতে চেয়েছি কিন্তু এই রাক্ষস টা এতো বাজে যে তার ভালোবাসা পেয়ে তার থেকে দূরে যেতে পারলাম না আচ্ছা রাত ভাইয়া আমাকে এতো আগলে রাখে কেনো সেই ছোট বেলা থেকে?
ভাবতে ভাবতে ভাইয়া আমার কাছে চলে আসলো।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
রাতঃ চল বাসায় যাওয়া যাক।(আমার হাত ধরে)
এই ভাবে কেটে গেলো দুটো দিন।
আগামীকাল আংকেল এর আত্মার মাগফিরাত কামনা করার জন্য একটা মিলাদ এর আয়োজন করা হয়েছে।
আজ বিকেল থেকেই আপুর ফুপ্পি, চাচা রা চলে আসছে এর মাঝে একদিন এসে আপুদের দেখে গিয়েছে।
আজ বাড়িটা একদম জমজমাট মানুষ এ।
আপুরা একটু স্বাভাবিক হয়েছে।
মানুষকে পৃথিবী ছেড়ে একদিন চিরতরে বিদায় নিতে হবে তা তো মানতেই হবে। আপুদের বেলায় ও তাই তারা মানতে বাধ্য।
অনেক বড় দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
যার কারণে রান্নার লোকরা বিকেলে চলে এসেছে।
আমি নানুর সাথে বসে আছি, নানু বসে বসে তছবিহ গুনছে।
আপু তার ফুপাতো বোনদের সাথে তাদের সাথে অবশ্য আপু বেশি কথা বলে না,এতো সময় আপু আমার সাথেই ছিলো।
রাত ভাইয়া কোথাও গিয়েছিলো এসেই আমার পাশে ধপাস করে বসে পড়লো।
আমি ভাইয়ার দিকে একটু রাগি লুক নিয়ে তাকালাম।
রাতঃ মেঘ একটু পানি দে তো।( কেমন যেনো অস্থির দেখাচ্ছে)
নানু মনিঃ কি হয়েছে দাদু ভাই এতো অস্থির দেখাচ্ছে কেনো?
রাতঃ একটু কাজ ছিলো দিদুন তাই আর কি।
নানু মনিঃ ওহ আচ্ছা মেঘ পানি দে তাড়াতাড়ি। ( কথাটা বলে উঠে চলে যায়)
আমি টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে ভাইয়া কে দিলাম।
ভাইয়া এক দমে গ্লাস এর সম্পূর্ণ পানিটুকু শেষ করে ফেললো যেনো কত বছর ধরে পানি পান করে না।
মেঘঃ কোন মহত কাজ করে আসলেন যে এতো অস্থির হয়ে গিয়েছেন।
ভাইয়া আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই।
নীলা আপু
রাত ওরা আমার কাজিন তোর কি মনে আছে ওদের কথা ছোট বেলায় যে আমরা এক সাথে খেলতাম?
রাতঃ এতো বছর আগের কথা কি করে মনে থাকবে?
নীলাঃ আরে দেখ ও লিমা সবসময় তোর বউ হতে চাইতো।
আর ও তাসফিয়া আর ও শান্তা আমার চাচার মেয়ে মনে নেই তোর। (আপুর দুই কাজিন কে দেখিয়ে লিমা আপু বউ বানাতে হতে চাইতো কথায় কেমন যেনো লজ্জায় লাল হয়ে গেলো,আগে ওরা গ্রামেই থাকতো সবার বাবা সেটেল হওয়াতে সবাই শহরে চলে গিয়েছে, কিন্তু আংকেল গ্রাম কেই বেশি ভালো বাসতো তাই উনি যায় নি)
এদের আমার একদম ভালো লাগে না সব সময় কেমন মোড নিয়ে থাকে,আপু যখন আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো কেমন যেনো একটা ভাব নিয়ে ছিলো আর এখন রাত ভাইয়ার সামনে কেমন হাসছে শাঁকচুন্নিরা
রাতঃ হে মনে আছে কিন্তু বড় হয়ে গিয়েছে কারো চেহারা তো আগের মতো নেই, আর এইটাও মনে আছে লিমা কে আমি বউ বানাতে চাইতাম না।( একটু হেসে)
যাই হোক কেমন আছো তোমরা
সবাই বললো ভালো তুমি কেমন আছো?
ভাইয়াও উত্তর দিলো
ভালো
এরা সবাই সমবয়সী আমি এদের মাঝে পিচ্চি
রাত ভাইয়া আর নীলা আপু কি সুন্দর গল্পে মেতে গেলো আর আমি চুপচাপ বসে আছি রাত ভাইয়ার পাশে,এদের এতো কথার মাঝে আমার কেমন যেনো বিরক্ত লাগছে
তাই আমি উঠে চলে আসতে নিলে ভাইয়া আমার হাত ধরে থামিয়ে দিলো।
রাতঃ কোথায় যাচ্ছিস?( আমার দিকে তাকিয়ে নরম স্বরে)
মেঘঃ নানু মনির কাছে এই খানে ভালো লাগছে না।
লিমাঃ হে তুমি ছোট বড়দের সাথে না থাকাই ভালো মেঘলা।
লিমা আপুর এমন কথায় আমার কেমন যেনো একটা অপমানবোধ হলো,আমি ছোটো তাই বলে কি তাদের সাথে থাকতে পারবো না। এই রাক্ষস টার জন্য কথাটা শুনতে হলো আমি চলে যেতে চাচ্ছিলাম আর আটকে দিলো না আটকালে আমি চলে যেতাম আর এই মেয়ে আমাকে বলতেও পারতো না।
নীলাঃ লিমা ও এতোটাও ছোট না।
শান্তাঃ আরে নীলা বাদ দে, তা রাত তুমি এখন কি করছো?
রাতঃ ভালোবাসার টিচার( কথাটা আমার দিকে তাকিয়ে বললো কিন্তু কেনো বুঝলাম না)
শান্তাঃ মানি?
রাতঃ আসলে আমি শিক্ষকতা পছন্দ করি তো তাই আরকি বর্তমান এ কলেজ টিচার।
আমার একদম ব্রয়িং লাগছে উঠতেও পারছি না কারন ভাইয়া পেছন দিয়ে আমার চুল টেনে রেখেছে শুধু শুধু কি আর রাক্ষস বলি হনুমান একটা( মনে মনে রেগে)
হটাৎ ৩-৪ টা ছেলে আসলো সবাই আমাদের সাথেই এসে বসলো আর নীলা আপুদের সাথে কথা বলতে লাগলো।
এইগুলো আপুর কাজিন আপু আমাকে এদের ছবি দেখাতো যার কারনে আমি চিনি এদের।
একটা ছেলে আমার পাশে জায়গা ফাকা থাকাতে আমার পাশে এসে বসলো।
ভাইয়া আমার চুল ছেরে দিলো আর বললো,
মেঘ যা দেখ নানু কি করে।
আমি হাফ ছেড়ে বাচঁলাম আর দ্রুত পায়ে হেটে ঐ খান থেকে কেটে পড়লাম।
রুমে এসে আলিফ তোয়ার সাথে বসে পড়লাম।
এই বাসায় আশার পর ওদের সাথে তেমন কথা হয় না।
নিলয় আজ একটু বাহিরে গিয়েছে ওর বন্ধুদের সাথে।
আলিফঃ আপু আমরা বাসায় যাবো কবে?
মেঘলাঃ জানি না তো।
তোয়াঃ আপু কাল আমাদের গ্রাম টা ঘুরতে নিয়ে যাবে?
মেঘলাঃ আমি কি ভাবে নিবো রে আমি তো চিনিই না।
ওরা দুজন মন খারাপ করে বসলো।
মেঘলাঃ আচ্ছা কাউকে বলে নিয়ে যাবো।
এভাবেই বিকেল টা কেটে গেলো।
__\___________________
সন্ধ্যা ৭ টা নীলা আপু আমাকে জোড় করে ছাদে নিয়ে গেলো।
ঐ খানে গিয়ে দেখলাম সবাই আপুর সব কাজিনরা মাদুর পেতে বসে আছে গোল হয়ে।
আপু আমাকে পাশে নিয়ে বসে পরলো।
নিহানঃ নীলা এইটা তোর খালাতো বোন মেঘলা তাই না?
নীলাঃ হে তুই চিনলি কি করে।
নিহানঃ দেখে বুঝতে পারলাম আর কি।ছোটো বেলা থেকে এখন অনেক বেশি কিউট হয়ে গিয়েছে। ( আমার দিকে তাকিয়ে)
এক পর্যায় আমিও তাদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠলাম তাদের কথায় আমি খুব হাসতে লাগলাম।
হটাৎ রাত ভাইয়ার আগমন ঘটলো।
রাতঃ কি হচ্ছে এইখানে?
লিমাঃ আরে রাত বসো কোথায় ছিলে তুমি?
রাতঃ ছিলাম একটু বাহিরে। মেঘ তুই এইখানে কি করছিস?
মেঘলাঃ আসলে ভাইয়া সবার সাথে বসে আছি একটু আড্ডা দিচ্ছি।
রাতঃ নিচে নানু মনি ডাকছে যা নিচে যা।
নিহানঃ আরে রাত পরে যাবে নে থাকুক সমস্যা কি।
রাতঃ না ওকে দিদুন ডাকছে।
মনটা খারাপ হয়ে গেলো সবাই মিলে কত কথা বলছিলাম রাক্ষস টা এসে শেষ করে দিলো
রাতঃ কি বলছি আমি?
নীলাঃ আচ্ছা মেঘলা তুই বস আমি দেখে আসছি।
রাতঃ না মেঘকে ডাকছে তুই গিয়ে কি করবি? মেঘ তাড়াতাড়ি যা।।
আমি বাধ্য হয়ে উঠে চলে আসলাম মন খারাপ করে।
কি সুন্দর কত দিন পরে একটু আনন্দ করছিলাম কিন্তু এই নানুর কি এমন দরকার পরে গেলো যে এই রাক্ষসটা কে দিয়েই ডাকতে হলো।
আমি রেগে মেঘে নানুর কাছে গিয়ে বললাম
কি হয়েছে তুমি ডেকেছো কেনো
নানু আমার দিকে ব্রু কুচকে তাকালো আর বললো,
আমি তোকে কখন ডাকলাম।
কেনো তুৃমি আমাকে ডাকো নি?
নানুঃ নাতো আমি তোকে ডাকতে যাবো কেনো?
মেঘলাঃ তার মানে রাক্ষস টা ( বলেই দ্রুত আবার ছাদে যেতে লাগলাম)
তিন সিরি পার হতেই রাত ভাইয়া,
রাতঃ আবার কোথায় যাচ্ছিস?
মেঘঃ তুমি আমাকে মিথ্যা বললে কেনো?
রাতঃ ছেলেদের সাথে বসে কথা বলতে অনেক আনন্দ লাগে ঐ ছেলে গুলো তোর দিকে ডেব ডেব করে তাকিয়ে থাকলে ভালো লাগে তোর অনেক তাই না?
মেঘঃ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে তোমার কি?
রাতঃ মেঘ আমার রাগ উঠাস না খুব খারাপ হয়ে যাবে তাহলে যা নানুর সাথে গিয়ে বসে থাক নেক্সট টাইম যেনো তোকে আমি কোনো ছেলের আশেপাশে না দেখি( খুব রেগে মনে হচ্ছে এখনি আমাকে ভর্স করে ফলবে)
আমি ভয় এ একটা ডোগ গিলে দ্রুত পায়ে হেটে নানুর কাছে এসে বসে পড়লাম।
বুঝি না আমি ছেলেদের সাথে কথা বললে সমস্যা কি
রেগে নানুর কাছে এসে বসে পড়লাম।
নানু মনিঃ কি হলো তোর তুই এমন করছিস কেনো?
মেঘঃ নানু কি মঝা করছিলাম ছাদে আপুর কাজিনদের সাথে তোমার রাক্ষস দাদু ভাই আমাকে পাঠিয়ে দিলো আর হুমকি দিলো আমি যেনো কোনো ছেলের আশেপাশে না যাই( নেকা কান্না করে)
নানু হাহাহাহা করে হেসে দিলো।
এইটা নতুন আর কি ছোট বেলা থেকেই এতো রাগার কি আছে পাগলি রাত যখন পছন্দ করে না তো সেই কাজ করিস না।
আমি মুখ গোমড়া করে বসে রইলাম।
হটাৎ রাক্ষস টা এসে আমার সামনে ফ্লোরে বসে পড়লো আর বললো মেঘ মাথায় একটু হাত ভুলিয়ে দে তো।
মেঘঃ পারবো না
রাতঃ কি বললি তুই?
মেঘঃ পাপারবো না( তুতলিয়ে)
রাতঃ দিদুন তোমার নাতনির কিন্তু অনেক সাহস বেড়ে যাচ্ছে আমি আবার আগের মতো হয়ে গেলে কিন্তু এবার আর রক্ষে নেই বলে দিলাম। তখন কিন্তু তোমার নাতনি কান্না করেও কোল পাবে না।
নানু মনিঃ মেঘ দিচ্ছিস না কেনো শুধু শুধু দাদু ভাই বকে না তোকে অনেক জেদ হয়ে গিয়েছে তোর।
মেঘঃ নানু মনি
নানু ঃ চুপ রাত যা বলছে কর।
আমি কপাল কুচকে গাল ফুলিয়ে মাথার হাত ভুলাতে লাগলাম।
মিন্নী মামনি এসে নানুকে নিয়ে গেলো।কোনো একটা কথার দরকার আছে তাই।
রাত ভাইয়া বসেই রইলো।
হটাৎ আমার কোলে মাথা রেখে চোখ উলটিয়ে বললো,
শরিলে কি শক্তি নেই।
মেঘঃ থাকবে না কেনো?
রাতঃ তো আর একটু জোড়ে দিতে পারিস না।
রাক্ষস টা চুল টেনে ছিড়ে ফেলবো শুধু আমাকে বকে।
এই সুযোগে দিলাম খুব জোড়ে চুল টেনে আর ভাইয়া বেথায় বলতে লাগলো,
মেঘ লাগছে ছার মার খাবি কিন্তু, আমি হেসে হেসে বললাম আমাকে শুধু বকো তার প্রতিশোধ নিচ্ছি বলে আরো জোড়ে টানতে লাগলাম
, এক পর্যায় ভাইয়া আমার দুই হাত তার এক হাতের মোঠয় খুব জোরে চেপে ধরে দাড়িয়ে পরলো।
আমি ভয় পেয়ে বলতে লাগলাম সরি রাত ভাইয়া ভুল হয়ে গিয়েছে সরি,
আর ছোটার জন্য হাত মোচড়াতে লাগলাম।
এমন মোচড়া মোচরি দেখে ভাইয়া আমাকে দাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে খুব দ্রুত একটা বালিশ নিয়ে আমার পেটের উপর বসে পরলো।
ভাইয়া কি করছো হাত দিয়ে তার পায়ে থাপ্পড় দিতে দিতে।
আমার গালে হালকা ভাবে থাপ্পড় দিয়ে
এতো সাহস কই থেকে পাস হে?
মেঘঃ ভুল হয়ে গিয়েছে ( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
রাতঃ কত বেথা পেলাম আমি এর শাস্তি এখন কি দিবো তোকে( আমার দুই পাশে তার দু হাতে বর করে আমার দিকে একটু জোকে)
আমি ফেল ফেল করে কেঁদে দিলাম।
কত শাস্তি তুমি আমাকে দেও এতো মারো আমাকে আমার জন্য তো তখন একটু ও মায়া লাগে না আমি না হয় একটু চুল টেনে দিয়েছি তাই বলে আমাকে শাস্তি দিবে( কাঁদতে কাঁদতে)
রাতের মেঘলার এমন বাচ্চামো দেখে খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু মেঘকে ভয় দেখানোর জন্য হাসি থামিয়ে রাখতে চাইছে মেঘ এর এমন বাচ্চা মার্কা ফেস দেখে আর হাসি থামিয়ে রাখতে পারলো না হাসতে হাসতে রাত ও মেঘের পাশে সোয়ে পড়লো।
রাতের থেকে মেঘ ছাড়া পেয়ে দরফরিয়ে উঠে চলে যেতে নিলে রাত মেঘলাকে এক টানে নিজের বুকে ফেলে দিলো।
হটাৎ এমন হওয়াতে মেঘ খুব ভয় পেয়ে গেলো আর রাত থেকে উঠে আসতে চাইলো কিন্তু রাত তার আগেই মেঘ এর চুলের ভাজে হাত দিয়ে চেপে ধরে তার চোখের পানি মোছে দিলো আলতো করে।
এমন হওয়াতে মেঘ যেনো পাথর হয়ে যাচ্ছে,
রাত নিজের এক হাত দিয়ে মেঘ এর গাল টেনে নরম স্বরে বললো,
কোনো ছেলের আশেপাশে যেনো না দেখি আর আগামীকাল বাসায় অনেক মানুষ আসবে এইটা শহর না গ্রাম so মাথায় গোমটা দিয়ে থাকবি কি বলেছি আমি বুঝতে পেরেছিস?
মেঘঃ হে ( কাঁপা কাঁপা স্বরে)
রাতঃ এখন লক্ষি মেয়ের মতো খাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়বি আমি যেনো ঘুমাতে দেখি বাহিরে যেনো না দেখি ( বলে রাত মেঘ কে ছেড়ে দেয় আর মেঘ দৌড়ে নীলার রুমে চলে যায়)
মেঘ হাঁপাতে থাকে রাত এর কাছে গেলেই কেমন যেনো অস্থির লাগে তার উপর এতোটা কাছে।
চোখ বন্ধ করে বড় বড় নিশ্বাস ফেলে, কেনো যেনো নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টানে মেঘ।
হয়তো রাত তার এতোটা খেয়াল রাখে তাই।
__________________________________
সকালে,
কম্বল মোরি দিয়ে ঘুমিয়ে আছি আমি আজ কেনো জানি খুব আলসেমি লাগছে উঠতে তাই সোয়ে রইলাম।
অনেক রাতে ঘুম এসেছি আমরা চার জন এক সাথে ঘুম এসেছিলাম এক খাটে।
আমি, নীলা আপু,তাসফিয়া আর লিমা আপু, শান্তা আপু এসেছিলো কিনু খাটে পাচজন এর জায়গা হবে না তাই বাধ্য হয়ে অন্য রুমে চলে গিয়েছে। লিমা আপু অবশ্য আমাকে অন্য রুমে যেতে বলেছে কিন্তু নিলা আপু যেতে দেয় নি।
তাসফিয়া আপু উঠে চলে গেলো।
জানারা গ্লাস দিয়ে একটু আলো আসতে লাগলো হয়তো সূর্য্যি মামা নীল আকাশে উঠে গিয়েছে।
আমি একটু তাকিয়ে আবার চোখ বুঝে রইলাম।
চোখে ঘুম থাকাতে মেঘ আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
হটাৎ রাত নক না করেই রুমে চলে আসলো।
মেঘ মেঘ ( কেমন যেনো অস্থির হয়ে).
রাত এর ডাকে আমি নীলা আপু আর লিমা আপু দরফরিয়ে উঠলাম
নীলাঃ কি হয়েছে রাত?
রাত ভাইয়া নীলা আপু কে কিছু না বলে আমার কপালে গালে হাত দিয়ে বলতে লাগলো,
কি হয়েছে তোর, মেঘ তোর কি শরিল খারাপ,বেশি খারাপ লাগছে বল আমাকে( কেমন যেনো অস্থির হয়ে)
আমি ভাইয়ার কাজে হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
আমি ভাইয়ার কপালে হাত দিয়ে বললাম,
তোমার কি জ্বর টর আসলো নাকি জ্বর এর তালে কি আবল তাবল বকছো ভাইয়া?
নীলাঃ হে রে রাত সকাল সকাল হইছেটা কি তোর?
রাতঃ মেঘ থাপ্পড় খাবি, তুই এতো সকাল পর্যন্ত ঘুম আসছিস কেনো?
মেঘঃ আমার আজ উঠতে ইচ্ছে করছে না তাই সোয়ে আছি চোখে ঘুম লাগছিলো।
লিমাঃ বুঝলাম না রাত তাতে কি হয়েছে?
রাত ভাইয়া লিমা আপুর কথায় কোনো উত্তর না দিয়ে আমাকে বললো ২ মিনিট এ ফ্রেশ হয়ে বাহিরে চলে আয় হাঁটবো।
বলে হনহন করে চলে গেলো।
আম বোকার মতো হা হয়ে বসে রইলাম।
নিলা আপু হো হো করে হেসে দিলো।
আমি আপুর দিকে বলদা মার্কা লুক নিয়ে তাকালাম।
আপু বললো যা বসে আছিস কেনো?
কিন্তু লিমা আপু কেমন বিরক্তিকর ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
মেঘঃ আপু তুমিও চলো আমরা এক সাথে হেঁট আসি।গতকাল আলিফ তোয়া আমাকে বলেছিলো গ্রামটা একটু ঘোড়ে দেখবে।
নিলাঃ এতো সকালে,আচ্ছা ঠিক আছে চল।
লিমাঃ আমিও যাবো বলে খাট থেকে নেমে গেলো।
বাহিরে আসার পরে আমাদের সাথে তাসফিয়া,শান্তা যোগ দিলো।
গেইট এর বাহিরে যেতেই দেখি ভাইয়া পেন্টের পকেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
আলিফ আর তোয়া দৌড়ে গিয়ে রাত ভাইয়া কে ধরলো আর ধন্যবাদ দিলো।
ভাইয়া চমকে গিয়ে বললো তোরা এইখানে আর ধন্যবাদ কেনো?
আলিফঃ তুমি আমাদের ঘোরতে নিয়ে যাবে তাই।
নীলাঃ আমারা ও চলে এসেছি হাঁটত।
রাত সবাই কে দেখে অভাক হয়ে গেলো।
রেগে মেঘলার দিকে তাকালো কিন্তু মেঘলা অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো।
নিলাঃ আচ্ছা চল রাত ধান খেত দিয়ে হাঁটা শুরু করি।
রাতঃ এই সকাল বেলা জমি দিয়ে হাঁটা অসম্ভব।
লিমাঃ প্লিজ রাত চলো ( রাতের হাত ধরে টেনে)
রাত ও লিমাকে নিয়ে একটা সুযোগ খজলো মেঘলা কে জেলাস করার জন্য কারন রাত চেয়েছিলো আজ মেঘ আর সে দুজন এক মনে হাত ধরে হাঁটবে কিন্তু তা তো আর হলো না তাই কারণ রাত খুব ভালো করে জানে মেঘলা সব সয্য করে নিলেও রাত কে অন্য মেয়ের সাথে মানতে কষ্ট হবে।
রাত লিমার হাত ধরে হাঁটতে লাগলো।
মেঘলা মনে মনে লিমা কে বকতে লাগলো,
শাঁকচুন্নি, ডাইনি বুরি ছেলেদের হাত ধরতে লজ্জা লাগে না, অশব্য নির্লজ্জ মেয়ে কোথাকার
মেঘ রাগে ফুসতে ফুঁসতে হাটতে লাগলো।
যা রাত খুব মঝা করে উপভোগ করতে লাগলো।
কিন্তু রাত তার মেঘ কে বেশি জেলাস করলো না কারন লিমার হাত ধরে হাঁটতে তার ভালো লাগছে না তাই লিমার হাত ছেড়ে দিয়ে তোয়ার হাত ধরে হাটতে লাগলো।
মেঘ একটা সস্তির নিশ্বাস ফেললো।
চারো দিকে সবুজ আর সোনালি রং এর ধান সকালের শিশির এ ভিজে গিয়েছে, হালকা বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছ গুলো।
রাত মনে মনে ভাবছে এরা যদি না থাকতো কত ভালো হতো আমি আর আমার মেঘ বউ একান্তে দুজন হাত ধরে হাঁটতে পারতাম, খুব রাগ হচ্ছে রাতের।
অনেক সময় হেঁটে ওরা বাসায় চলে গেলো এতো সময় এ রাত এর একটু ও ভালো লাগে নি। কারন সবার সামনে মেঘ এর কোমল হাতটা ধরতে পারে নি রাত।
মেঘ এসে নানু মনির সাথে বসে আছে।
সবাই মিলে সকালের নাস্তা শেষ করলো।
দুপুর হতে বাড়িতে মানুষের ভির জমতে লাগলো।
নীলার কাজিন নিহান,আসফি আর রিফাত ড্রয়িং রুমে বসে গল্প করছে।
তখনি মেঘ রুম থেকে বের হয় ছাদে যাওয়ার উদ্দেশ্য কারণ নীলা ওরা সবাই ছাদে মেঘলাকে ছাদে যেতে বলে গিয়েছে।
মেঘ আজ ব্লু কালারের একটা থ্রি পিস পরেছে, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক
নিহান মেঘলা কে দেখে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।
রিফাতঃ কি কি দেখছিস এমন করে?
নিহানঃ ভাই দেখ কি জোশ লাগছে দেখতে ইচ্ছে করছে
রাতঃ কি ইচ্ছে করছে নিহান?
নিহান কাচুমাচু খেয়ে বললো আরে কিছু না।
বলেই
আসফি আর রিখাত কে নিয়ে কেটে পরলো।
রাত রেগপ মেঘ এর হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।
রাতঃ তোকে না বলেছি ঘোমটা দিতে আর সেজেছিস কেনো
মেঘঃ আআমি সাজলাম কোথায়?
রাতঃ লিপস্টিক পড়েছিস কেনো?
মেঘঃ একটু দিয়েছি
রাত পকেট থেকে টিসু বের করলো।
চলবে,
Part 18-19
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ১৮+১৯
রাত পকেট থেকে টিসু বের করে নিলো।
মেঘ এর গাল চেপে ধরে ঠোঁটের দেওয়া লিপস্টিক মুছে দিয়ে, মাথায় ঘোমটা টেনে দিলো।
মেঘঃ ভাইয়া কি করছো এইসব?
রাতঃ আমি তোকে বলেছিলাম কিন্তু তুই শুনিস নি তাই আমি নিজেই করে দিলাম এই ঘোমটা যেনো না সরে মাথা থেকে।
এইটা কোনো পার্টি না যে স্টাইল করতে হবে।এইটা একটা দোয়ার অনুষ্ঠান so আর একটা কথাও না যা।
আমি মুখ ফুলিয়ে ভাইয়ার সামনে থেকে চলে আসলাম।
আর মনে মনে হাজার গালি দিতে লাগলাম।
অন্যদিকে রাত মেঘ এর রিয়াকশন দেখে দাত কেলিয়ে হাসলো।
মেঘ ছাদে গিয়ে দেখে নীলা আপু এক কোনে একটা চেয়ার নিয়ে বসে আছে, চোখ দুটি অসম্ভব লাল হয়ে আছে আর লিমা,শান্তা, তাসফিয়া আরো কিছু মেয়ে হাসাহাসি করছে।
আমি ওদের দিকে তাকিয়ে আপুর পাশে গিয়ে বসলাম।
আমি আপু কে ডাকলাম,
আপু
নীলা মেঘ কে জড়িয়ে হাও মাও করে কেঁদে দিলো।
মেঘঃ প্লিজ আপু এমন করে কেঁদো না আংকেল এয়র জন্য প্রার্থনা করো।( আপু কে জড়িয়ে শান্তনা দিতে দিতে)
আপুর কান্না শুনে লিমা, শান্তা আর তাসফিয়া এগিয়ে আসলো।
ওরাও আপুকে অনেক কথা বলে শান্তনা দিতে লাগলো।
নিচে মানুষ এর ঢল পরে গিয়েছে,সবাই আংকেল এর জন্য দোয়া করে খাবার খেয়ে চলে যাচ্ছে।
গেস্ট দের খাওয়া হলে আমরা সবাই এক সাথে খেতে বসি।
খালামনিও বসেছে কিন্তু কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলে আছে।
আমার পাশে রাত ভাইয়া বসেছে।
রাতঃ কালকের পড়া কিন্তু তোর হয় নি আজ তো চলে যাবো তো কাল থেকে তো কলেজ পড়া দিবি কি করে?(মুচকি হেসে)
মেঘঃ না পারলে আবার মারবে কারন পড়া তো কমপ্লিট করা সম্ভব না।আমাকে আঘাত করতে তো তোমার আবার অনেক ভালো লাগে।
রাত কোনো কথা বললো না মেঘ এর দিকে এক পলক তাকিয়ে খেতে লাগলো।
সবার খাওয়া শেষে আমরা সবাই মানি আপুর কাজিনরা এবং আমি, রাত ভাইয়া, নিলয় এক সাথে বাগানে বসে আছি।
ভেতরে মামা, মামনিরা খালামনি কে আমাদের সাথে ঢাকায় যাওয়ার জন্য রাজি করাচ্ছে কিন্তু খালামনি আংকেল এর এই বাড়ি ছেরে যেতে রাজি না আর মামা ও খালামনিদের এই খানে রেখে যেতে রাজি না।
সবাই সবার মতো করে কথা বলছে আমিও বলছি আর হাসছি।
অন্যদিকে রাত মেঘ এর হাত নিয়ে খেলছে,আর মাঝে মাঝে মেঘ এর দিকে তাকিয়ে তার মিষ্টি হাসি দেখছে।
সবার সামনে ভাইয়া আমার হাত ধরে রাখছে কেমন যেনো একটা আনইজি ফিল করছি।
হাত টেনে ছাড়িয়ে আনতে চাইলেও ভাইয়া ছারছে না।
মেঘঃ ভাইয়া কি হচ্ছে হাত ছারো।
রাতঃ কেনো?
মেঘঃ সবাই দেখছে, কি ভাববে।
ভাইয়া আমার হাত এক প্রকার রেগে ছুড়ে ফেলে দিয়ে হনহন করে উঠে বাড়ির গেইট এর বাইরে চলে গেলো।
মেঘঃ যাক বাবা কি করলাম আমি, যাক গে শুধু শুধু রাগ হুম।
আমি আবার সবার সাথে আড্ডায় মন দিলাম।
কিন্তু ভাইয়া কে ছাড়া কেমন যেনো ফাকা ফাঁকা লাগছে।
নীলঃ মেঘলা রাত কোথায় গেলো?
মেঘলাঃ আমি আপুকে সবটা বললাম।
নীলাঃ আচ্ছা তুইও যা দেখ আবার কোথায় গেলো,পরে আবার তোর উপর রাগ করতে পারে আর ও রাগলে তুই মার খাবি।
মার এর ভয় আমিও উঠে বাহিরে আসলাম।
দেখি রাক্ষস রাজা পাঞ্জাবির পকেটে দু হাত রেখে এক মনে তাকিয়ে আছে।
আমি ভাইয়ার পাশে গিয়ে দাড়ালাম।
ভাইয়া এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে আবার আগের মতো করে দাড়িয়ে রইলো।
মেঘঃ তুমি চলে আসলে কেনো ভাইয়া( ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
রাতঃ আমি তোর পাশে থাকি সেইটা তুই চাসনি তাই।
মেঘঃ তুমি জানো আমি কি তোমাকে একবারও বলেছি।
রাতঃ বলিস নি আবার বাকিও রাখিস নি বলার তুই তো বললি হাত ছেড়ে দিতে।
মেঘঃ আমি শুধু হাত ছেড়ে পাশে বসে থাকতে বলেছি।
ভাইয়া কথার কোনো উত্তর না দিয়ে আমার হাত ধরে হাঁটা শুরু করলো।
মেঘঃ ওফ ভাইয়া তোমার মাথায় কি কোনো গন্ডগোল আছে?
রাতঃ কেনো কি মনে হয় তোর( হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে)
মেঘঃ এই যে কথা নেই কিছু নেই হাত ধরে হাটা শুরু করলে।
রাতঃ আমি যা ইচ্ছে করবো এখন চুপ আমার সাথে হাট।
রাত আর মেঘলা এই পরন্ত বিকেলে দুজন হাত ধরে হাঁটছে।
মেঘ রাতের পাশে থাকলে মনে হয় রাতের আর কিছু চাই না, এই পাগলিটা যে ওর সব।
মেঘঃ কোথায় যাবে?
রাতঃ বন্ধুর কাছে।
কথাটা বলার সাথে সাথে আমার মন খারাপ হয়ে গেলো।
দুজন হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম।
ভাইয়া আমার হাত ধরেই নানা ভাই এর কবর এর সামনে চলে আসলো।
মুহূর্তেই রাত ভাইয়ার চোখ জোড়া লাল হয়ে গেলো।চোখে পানি ছলছল করছে,এই হয়তো জল গড়িয়ে পরবে।
হটাৎ রাত ভাইয়া আমাকে এক টানে তার বুকের সাথে খুব জোড়ে চেপে ধরলো।
আর বলতে লাগলো,
মেঘ তুই আমাকে কখনো ভুল বুঝিস না লক্ষিটি, আমি যত তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করি তুই কখনো তোর মনে অভিমান লুকিয়ে রাখিস না, মেঘ তোকে ছাড়া আমি মরে যাবো তুই ছাড়া আমার দম বন্ধ হয়ে আসে,খুব ভালোবাসি তোকে আমি খুব বেশি ভালোবাসি।
হটাৎ ভাইয়ার এমন কথার কোনো আগা মাথা কিছু বুঝলাম না আমি,ভাইয়া এমন কথা কেনো বলছে?
আমি ভাইয়ার বুকের থেকে মাথাটা উঁচু করতে চাচ্ছি কিন্তু পারছি না ভাইয়া খুব শক্ত করে ধরে আছে।
মেঘঃ কি হয়েছে তোমার এমন করছো কেনো ভাইয়া?
রাত মেঘলা কে একটু ধাক্কা দিয়ে ছেড়ে দিলো আর চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো না কিছু না।
আবার আমার হাত ধরে হাঁটতে লাগলো।
এই রাক্ষস এর হটাৎ হটাৎ কি হয় কে জানে পাগল একটা।
কিন্তু একটা কথা আমার কানে এসে বার বার বারি খাচ্ছে মেঘ আমি তোকে খুব ভালোবাসি।
কথাটা মনে করতেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো।
_____________________________
বিকেল ৫ঃ৩০
একটু পরেই আমরা ঢাকার উদ্দেশ্য বের হবো।
আপুরা ও আামাদের সাথে যাবে।
খালামনি যেতে চায় নি কিন্তু মামার জোড়াজুড়ি আর নানু মনির কান্নাতে রাজি হতে বাধ্য হয়েছে।
আপুদের সব কিছু ঘুছিয়ে নিয়েছে একটু পরেই আমরা বের হয়ে পড়লাম।
বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ৮ টা বেজে গেলো।
আমি আমার রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম,
আজ থেকে আমার রুমে আপুও থাকবে।
আমি ফ্রেশ হয়ে বসে রইলাম আপুর জন্য আপু বের হলে দুজন এক সাথে নিচে যাবো।
কিছুক্ষণ পরে আপু আসলে আমি আর আপু নিচে গেলাম।
ড্রয়িং রুমে সবাই বসে আছে।
আমি নিলয় এর পাশে বসলাম,
কিরে কাল থেকে তুই আমার কলেজে পড়বি আমার না ভালো লাগছে দুজন এক সাথে যাবো।
নিলয়ঃ আমার ভয় লাগছে, একটুও ভালো লাগছে না।
মেঘলাঃ কেনো রে
নিলয়ঃ কি ভাবে ভালো লাগবে বল পেত্নী ডাইনির সাথে প্রতি দিন যেতে হবে ভাবতেই আমার আত্মা কেঁপে উঠছে।
মেঘলাঃ কুত্তা বিলাই গরু ( বলেই আমি নিলয় কে থাপ্পড় কিল ঘুসি দিতে লাগলাম।)
বড় খালামনিঃ ঐ যে শুরু হইছে টম এন্ড জেরি, আল্লাহ এই দুইটা একটা মিনিট ও এক সাথে থাকতে পারে না।
মেঘলাঃ খালা মনি তোমার ছেলে আমাকে কি বললো তুমি শুনতে পেরেছো
নিলয়ঃ ডাইনি তুই আমাকে এতো জোড়ে মারলি কেনো?( আমার চুলের মুঠি ধরে সোফায় উঠে)
মেঘলাঃ আ আ মামা দেখো আমার চুল গুলো ছিরে ফেলছে (নেকা কান্না করে)
রাতঃ আরে কি হচ্ছে টা কি নিলয় ছার ( আমার চুল থেকে নিলয় এর হাত সরিয়ে)
নিলয় ছেড়ে দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো।
নিলয়ঃ ভাইয়া তুমি কেনো ছাড়ালে ডাইনির চুল টানতে ভালোই লাগছিলো।
আর এইদিকে আমি কান্না করতে লাগলাম।
সবাই আমাদের ঝগড়া দেখে হাসছিলো।
রাত ভাইয়া আমার পাশে বসে পরলো আর নিলয় যে স্থানে চুল টেনে ধরে রেখেছিলো সে খানে চুলের ভাজে হাত রেখে আলতো করে হাত ভুলাতে লাগলো, মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো।
আর আমি নিলয় কে বকছিলাম আর কান্না করছিলাম।
রাতঃ মেঘ চুপ কি হচ্ছে টা কি কান্না থামাবি ( ধমক দিয়ে খুব রেগে)
ভাইয়ার ধমক এ আমি চুপ হয়ে রইলাম।
ভাইয়ার সাথে অভিমান করে উঠে ছোট খালামনির পাশে এসে বসে পড়লাম।
ভাইয়া আমাকে তার পাশে রাখতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি হটাৎ উঠে আসাতে ভাইয়া আটকে রাখতে পারে নি।
আমি রাহাত কে কোলে নিয়ে বসে রইলাম।
রাত ১০ টায় সবাই ডিনার করে নিলাম।
বড় খালা মনি নানুর সাথে ঘুমাবে নিলয় এর জন্য আলাদা রুম আর নীলা আপু তো আমার সেথেই।
যে যার রুমে চলে গেলো,আমি আর আপু এক সাথে কথা বলতে বলতে রুমে যাচ্ছিলাম,
হটাৎ কেউ আমার মুখ চেপে ধরলো।
নীলা পেছন ঘুরে তাকিয়ে দেখে মেঘলা নেই।
নীলাঃ যাক বাবা মেঘলা কোথায় গেলো?
এদিক সে দিক তাকিয়ে ভাবলো হয়তো নিচে গিয়েছে তাই একাই রুমে চলে গেলো নীলা।
অন্যদিকে মেঘলা উম উম শব্দ করতে লাগলো কারন সে কথা বলতে পারছে না কেউ তার মুখ চেপে ধরে রেখেছে।
রাতঃ মুখ থেকে হাত সরাবো চিৎকার দিলে গলা টিপে মেরে ফলবো।
মেঘঃ উম উম।
রাত মেঘ এর মুখ থেকে হাত সরিয়ে দিলো
মেঘ হাঁপাতে লাগলো।
মেঘঃ তুমি কি আমাকে মেরে ফেলবে আর একটু হলে আমি মর,( মেঘ আর কিছু বলতে পারলো না রাত তার আগেই মেঘ এর চুল এর ভাজে হাত চেপে ধরে ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে।)
মেঘ বড় বড় চোখ করে রাতের দিকে তাকিয়ে রইলো।
রাতঃ এই কথাটা আমি একদম পছন্দ করি না মেঘ এই কথাটা আমার সামনে বলবি না ( নরম স্বরে)
মেঘঃতুতুমি যে ভাবে মুখ চেপে ধরে রেখেছিলে আমার ধম বন্ধ হয়ে আসছিলো। তুমি এই ভাবে আমাকে এইখানে নিয়ে আসলে কেনো?
রাতঃ তুই তখন আমার পাশ থেকে উঠে চলে গেলি কেনো?(মেঘ এর দু পাশে হাত রেখে মেঘ এর দিকে ঝুকে)
মেঘঃ তুমি সবসময় আমাকে বকো তখন আমি কান্না করছিলাম তখনও তুমি আমাকে বকা দিলে।( নেকা কান্না করে)
রাতঃ তোর কান্না আমার সয্য হয় না তাই সরি।( কানে ধরে)
মেঘঃ এহ কান্না সয্য হয় না আবার নিজেই কাঁদায় (মনে মনে)
আচ্ছা সরে দাঁড়াও আমি রুমে যাবো,আপু কি ভাবছে কে জানে।
রাতঃ আচ্ছা যা আর কাল থেকে কলেজ গাড়িতে যেনো না দেখি নিলয় এর সাথে যাবি বাসার গাড়িতে।
মেঘঃ কিন্তু
রাতঃ কোনো কিন্তু না আমি যা বলছেছি তাই শেষ কথা গুড নাইট ( বলে মেঘ কে ছেড়ে নিজের রুমে চলে আসলো)
মেঘ মুখ ভেংচি কেটে রুমে চলে গেলো।
রুমে ডুকতেই নীলা,
মেঘ তুই কোথায় গিয়েছিলি হটাৎ?
মেঘঃ আপু কে এখন কি বলবো?( মনে মনে)
আসলে আপু ঐতো একটু নিচে গিয়েছিলাম দরকার ছিলো আমার খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুম আসি গুড নাইট। (তারাহুরো করে সোয়ে পড়লাম)
_______________________________________
সকালে উঠে নামাজ আদায় করে বেড়িয়ে পড়লাম প্রতিদিন এর মতো।
বাগানে হাঁটছি, আর এ দিক সে দিক তাকাচ্ছি রাত ভাইয়া কি বেড়িয়ে পড়েছে ( মনে মনে ভাবছি)
কিন্তু না ভাইয়া মাত্র বের হলো আমি দৌড়ে ভাইয়ার কাছে গেলাম।
ভাইয়া আমিও তোমার সাথে যাবো।
রাত কোনো কথা বললো না কানে হেডফোন লাগাতে লাগাতে গেইট এর বাহিরে বেড়িয়ে পড়লো।
আমি ভাইয়ার পিছু ছুটলাম।
ভাইয়া আমি যাবো।
রাতঃ বাড়ির ভেতরে হাট।
মেঘঃ আমি তোমার সাথেই যাবো।
রাতঃ মেঘ বেশি কথা আমি পছন্দ করি না যা বলেছি তাই আমি তোর সাথে হাঁটতে চাই না।
মেঘঃ আমি তোমার সাথেই যাবো।
রাত ঠাস করে মেঘ এর গালে একটা চর বসিয়ে দিলো।
মেঘ গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে রাত এর দিকে তাকিয়ে রইলো( কি এমন বললাম আমি,শুধু তার সাথে হাঁটতে যেতে চেয়েছি তাই বলে আমাকে থাপ্পড় মারবে?)
রাতঃ আমার সাথে এতো বেশি ঘ্যান ঘ্যান করবি না মেঘলা, সব সময় তোকে আমার ভালো লাগবে এমন কোনো কথা না। কি মনে করিস তুই নিজেকে যতসব ফালতু।( বলেই রাত দ্রুত পায়ে হেঁটে চলে গেলো)
মেঘ এর চোখ দিয়ে অনবরত জল পরতে লাগলো।
তার মানে রাত ভাইয়া এই কটা দিন আমার সাথে শুধুই অভিনয় করেছে,সব মিথ্যা আর আমিও কি বোকা যে ছেলে আমাকে একদম সয্য করতে পারে না তার সামান্য একটু কেয়ার এ আমিও গলে গেলাম।( কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে মেঘ এর)
মেঘ দৌড়ে ছাঁদে চলে গেলো কারন এই চোখের জল সে কাউকে দেখাতে চায় না।
ছাঁদের রেলিং ধরে মেঘ বসে পড়লো শব্দ করে কাঁদতে লাগলো।
কেনো এই কয়টা দিন আমার সাথে অভিনয় করলে রাত ভাইয়া, আমি কি এমন ভুল করেছি, নানা ভাই এর মৃত্যুর জন্য কেনো আমাকে দাই করো, আর সেই রাগ এখনো তোমার আমার উপর । তাহলে কেনো এই কয়টা দিন আমাকে কাছে টেনে নিয়েছিলে,কালকের বলা সব কথা মিথ্যা।
অনেক সময় পর ছাদ থেকে নেমে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে নিলয় এর পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লাম।
নিলয়ঃ কিরে পেত্নী তোর মুখটা এমন পেত্নীর মতো করে রেখেছিস কেনো?
মেঘ কোনো কথা বললো না, একটা পাউরুটি নিয়ে খেতে লাগলো।
নিলয়ঃ পেত্নী তোর কি হয়েছে কথা বলছিস না কেনো।
তখন রাত এসে মেঘ এর পাশের চেয়ার এ বসলো।
রাতকে দেখে মেঘ এর খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।
মেঘ উঠে চলে আসতে নিলে রাত মেঘ এর হাত ধরে আবার বসিয়ে দেয়।
রাতঃ খাওয়া শেষ করে উঠ( মেঘ এর হাত ধরে খেতে খেতে)
মেঘঃ আমার খাওয়া শেষ পেট বরে গিয়েছে।
সাহেলা বেগমঃ মাত্র একটু খাবার মুখে দিয়েছিস পোরাটা শেষ কর তারপর উঠবি, তানাহলে মার একটা ও মাটিতে পরবে না।
মেঘঃ হে তোমাদের যখন ইচ্ছে হবে আদর করবে আবার যখন ইচ্ছে হবে না মারবে ( কান্না করে রাত এর হাত থেকে নিজের হাত ঝারা দিয়ে ফেলে দৌড়ে বাহিরে চলে আসে)
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত তুই কিছু বলেছিস মেঘলা কে।
রাতঃ না আসলে বাবা একটু ধমক দিয়েছিলাম তাই আর কি রাগ করেছে, আচ্ছা আমি খাইয়ে নিবো চিন্তা করো না।
নীলাঃ তুইও রাত মেয়েটা কে শুধু বকিস।
রাত আর খাবারটা খেলো না, কলেজে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়লো।
মেঘ গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
নিলয় আসলে দুজন এক সাথে যাবে,
রাত মেঘ এর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
মেঘ অন্যদিকে তাকিয়ে আছে চোখের পানি লোকাতে চাচ্ছে চোখ টিপে।
রাত মেঘের গালে হাত দিতে যাবে মেঘ রাত এর হাত সরিয়ে অন্য দিকে চলে যেতো নিলে রাত মেঘ এর হাত ধরে নিজের বুকে টেনে নিয়ে আসে।
মেঘ ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করতে লাগলো।
রাতঃ মেঘ স্টপ( খুব জোরে ধমক দিয়ে)
মেঘঃ ছাড়ুন আমাকে আর কখনো আমার কাছে আসার চেস্টা করবেন না,আমি আর কখনো আপনার পিছু যাবো না।
রাতঃ সরি ( মেঘ এর গালে হাত দিয়ে নাকে নাক লাগিয়ে)
মেঘ এর খুব রাগ হচ্ছে সকালে শুধু শুধু মেরে এখন আবার সরি বলা খুব জোরে একটা ধাক্কা মারে রাত কে।
রাত তাল সামলাতে না পেড়ে একটু পিছিয়ে যায়।
মেঘ গাড়িতে উঠার জন্য পা বাড়ালে রাত মেঘ এর দু হাত গাড়ির সাথে চেপে ধরে মেঘ এর উপর ঝুকে বলে
মেঘ আমি তোকে মারবো কাটবো ভালোবাসবো সব আমি করবো তুই রাগ করতে পারবি না, আমার যখন মন চায় আমি তোকে কাছে টেনে নিবে আর যখন মন চায় দূরে রাখবো সবটা আমার উপর নির্ভর করবে, তুই শুধু আমার সম্পত্তি, তোর নিজের কাছে নিজের কোনো অধিকার নেই বুঝতে পেরেছিস।( রাগে চোখ লাল হয়ে আছে ফর্সা মুখ এ মনে হচ্ছে রক্ত জমে গিয়েছে)
আমি ভয়ে কুকরে গেলাম,চুপচাপ তার বলা কথা গুলো শুনছিলাম।
হটাৎ আমার এক হাত ছেরে গাল চেপে ধরে বলে,
কলেজে গিয়ে খাবার খেয়ে নিবি আমি পাঠিয়ে দিবো আমি যেনো দেখি খেয়ে নিতে যদি না শুনিস কথা একদম খারাপ হয়ে যাবে,
কথটা বলে আমার গালে একটা চুমু একে চলে যায়।
আমি পুরো স্কট হয়ে দাড়িয়ে রইলো এতোক্ষণ কি বললো আর এখন কি করে গেলো সব যেনো আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো এইটা ভালোবাসা নাকি টর্চার তাই বুঝলাম না
চলবে,
Part 20-21
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২০+২১
আমার সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে এতোক্ষণ কি বললো আর এখন কি করে গেলো,এইটা ভালোবাসা নাকি টর্চার সেইটাই বুঝলাম না
আমি থ মেরে দাড়িয়ে রইলাম,গালে হাত দিয়ে।
নিলয় এসে মেঘাকে ঘোড়ে ঘোড়ে দেখছে চোখ বড় বড় করে।
মেঘলা লক্ষ্য করে দেখে নিলয়কে।
তারপর থতমত খেয়ে বলে,
এই এই তুই আমাকে এই ভাবে দেখছিস কেনো?
নিলয়ঃ দেখতাছি তরে আসলেই কি পেত্নীর আত্মা বর করলো নাকি তোর উপর।
মেঘলাঃ কিহহ(জোড়ে চিল্লিয়ে নিলয় এর দিকে বড় বড় চোখ করে)
নিলয়ঃ তুই এই ভাবে গালে হাত দিয়ে চোখ গুলো এমন রসগোল্লার মতো করে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো রাত ভাইয়া কি তকে থাপ্পড় মেরে গেলো নাকি?
মেঘলাঃ যদি থাপ্পড় মারতো তাহলে কাঁদতে পারতাম কিন্তু এখন যা করেছে কাঁদতে ও পারছি না হাসতেও পারছি না আর কিছু বলতেও পাড়ছি না রাক্ষস একটা (মনে মনে)
নিলয়ঃ ঐ তুই যাবি নাকি?
মেঘলাঃ হে, হে হে যাবো তো।( তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে উঠে বসলো)
নিলয়ঃ আজ নতুন কলেজ তাও প্রথম দিন আবার গিয়ে ভর্তি হতে হবে ভাইয়া তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে তোর সাথে পেচাল পেরে লেট হয়ে গেলো।
মেঘলাঃ তো আমার সাথে না এসে ভাইয়ার সাথেই যেতি।
নিলয়ঃ তোর সাথে যাওয়ার সখ আমার নেই কিন্তু ভাইয়া তার গাড়িতে নিবে না আমাকে।
মেঘলাঃ তোর মতো বজ্জাত কে গাড়িতে না নিতে চাওয়াই ঠিক।
নিলয় রেগে গিয়ে মেঘলা কে মারতে হাত বাড়ালে মেঘলা বলে,
আমাকে এখন মারলে আমি চিৎকার করবো।
নিলয় থেমে যায়( কারন এই পেত্নী কে দিয়ে কোনো বিশ্বাস নেই)
কিছুক্ষণ পরে ওরা কলেজ চলে আসলো, ড্রাইভার ওদের নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
নিলয় এই কলেজে প্রথম বার এসেছে তাই তেমন কিছুই চিনে না।
নিলয়ঃ মেঘলা ভাইয়া কে কোথায় পাবো?
মেঘলাঃ খোজে দেখ তোর ভাইয়া কোথায়?
নিলয়ঃ আমি জানলে তোর মতো পেত্নী কে জিজ্ঞেস করতাম না।
সাগর, জিহাদ, আশা এবং তিথি দূর থেকে মেঘলা কে দেখলো কোনো একটা ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
ওরা দ্রুত পায়ে হেটে মেঘলার সামনে এসে দাঁড়ালো।
সাগরঃ মেঘলা তুই আজ বাসে আসলি কেনো? আর এতো দিন পরে আসছিস আমাদের সাথে দেখা না করে এই ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
মেঘলাঃ কারন তোরা তো সয়তান তোদের জন্য আর একটা সয়তান নিয়ে আসলাম।
সবাই মেঘলার কথায় রেগে গিয়ে বলে,
কিহহহ
মেঘলাঃ না মানে আমিও তো তোদের দলেই আছি আমিও সয়তান,
তিথিঃ এই বলতো ছেলেটা কে?
মেঘলাঃ আমার সয়তান খালাতো ভাই এই কলেজে পড়বে আমাদের সাথে মেঘলা ওদের সবটা বললো।
শুনে সাগর আর জিহাদ বলে,
জিহদঃআরে এই বেপার আমাদের একটা বন্ধু হলো নতুন চলো স্যার এর কাছে নিয়ে যাই।
নিলয়ঃ আমাকে রা (আর কিছু বলতে পারলো না)
মেঘলাঃ না ( জোড়ে একটু চিল্লিয়ে)
মেঘলার এতোক্ষণ মাথায় ছিলো না যে রাত ভাইয়া এই কলেজে তার পরিচয় দিতে না বলেছে যে সে মেঘলার কিছু হয়।
মেঘলা নিলয় কে টেনে নিয়ে গেলো।
নিলয়ঃ আরে হলো টা কি তোর?
মেঘলাঃ ভাইয়া শুন
নিলয় হা হয়ে গেলো মেঘলা ওকে ভাইয়া বলছে।
মেঘলাঃ ভাইয়া শুন রাত ভাইয়া তো আমাকে সয্য করতে পারে না তুই জানিস, ভাইয়া আমাকে বলেছে কলেজে তার পরিচয় দিতে না, সে যে আমার কাজিন যেনো কেউ না জানতে পারে,প্লিজ তুই ওদের কিছু বলিস না তাহলে আমাকে খুব বকবে ভাইয়া
নিলয়ঃ তকে বকলে আমার কি আমি বলে দিবো( একটা সয়তানি হাসি দিয়ে)
নিলয় বলেই সাগরদের কাছে চলে আসলো।
মেঘলা নিলয় এর পিছু,
নিলয়ঃ সাগর চলো আমরা রাত ভা রাত স্যার এর কাছে যাই, সে আমার পরিচিত আমার আপুর বন্ধু সেই সব কিছু ঠিক করে রেখেছে ( মেঘলার দিকে তাকিয়ে কেমন ভয়টা পেয়েছে পেত্নী টা)
মেঘলা বুকে হাত দিয়ে হাফ ছেড়ে বাচলো।
সাগর, জিহাদ আর নিলয় চলে গেলো রাত এর উদ্দেশ্য।
তিথিঃ চল আমরা ক্লাস এ যাই ওরা ক্লাসে চলে আসবে।
আশাঃ হে চল।
তিন জন ক্লাস এ চলে গেলো।
মেঘলা ক্লাস এ যেতেই একটা ব্লাক কালার এর টি শার্ট পড়া লোক এসে মেঘলার কাছে দাড়ায়,লোকটার জুতো থেকে শুরু করে সব ব্লাক।
মেঘলা একটু অভাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
লোকটিঃ ম্যাম আপনার খাবার ক্যান্টিন এ রাখা আছে, আপনি না খেয়ে এসেছেন খেয়ে আসুন।
মেঘলাঃ কিন্তু আপনি কে?
লোকটিঃআপনি খেয়ে আসুন তা না হলে রাত স্যার রেগে যাবে( কথাটা মেঘলাকে খুব আস্তে বলে)
মেঘলা রাত এর কথ মনে করতেই তাড়াতাড়ি ক্যান্টিন এ চলে যায় সাথে আশা আর তিথি লোকটির কথা ওরা দুজন শুনতে পায় নি।
ওদের বলেছে ওর মামা লোক পাঠিয়েছে সকালে নাস্তা করে আসি নি তাই।
তিথি আর আশা বসে আছে মেঘলা খাচ্ছে আশা আর তিথি খাবেনা মেঘলার ও ইচ্ছে ছিলো না কিন্তু রাত এর ভয় এ একটু খেয়ে ক্লাস রুমে চলে আসলো।
এসে দেখলো রাত ক্লাস এ চলে এসেছে,
তিথিঃ মে আই কাম ইন স্যার
রাতঃ কাম
তিনজন নিজেদের জায়গায় বসলো।
রাতঃ তোমরা তিন জন কোথায় গিয়েছিলে?
আশাঃ আসলে স্যার একটু ক্যান্টিনে।
রাতঃ সকাল সকাল ক্যান্টিনে কি আর যেনো না দেখি।
মেঘলাঃ খচ্চর তোর জন্যই তো গিয়েছি আবার এখন ভাব নেওয়া হচ্ছে অশব্য বেয়াদব( মনে মনে রেগে)
রাতঃআচ্ছা সবার পড়া কমপ্লিট তো?আমি এই ক দিন আসতে পারি নি একটা সম্যার কারনে।আর সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই একজন কে নিলয়
নিলয় দাঁড়ালো
রাতঃ ও আমার ভাই নিলয় আজ থেকে নতুন এসেছে এই কলেজে।
রাত ক্লাস করিয়ে চলে যায়।
কলেজ ছুটির সময় সাগর, মেঘলা,জিহাদ, তিথি,নিলয়,আশা এক সাথে দুষ্টমি করতে করতে যাচ্ছে।
মেঘলা সাগর এর সাথে খুব ক্লোজলি হাঁটছে তাও আবার সাগর এর হাত ধরে।
দূর থেকে রাত তা দেখে রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে।
মেঘ তোকে বলেছিলাম ছেলেদের সাথে বেশি মিসতে না আর তুই হাত ধরে হাঁটছিস ( মনে মনে)
ওরা সবাই কলেজের গেইট থেকে বেড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে
সবাই কোনো বিষয় নিয়ে খুব হাসছে এক পর্যায় তিথি মেঘলাকে দুষ্টমি করে ধাক্কা দেয় যার ফলে মেঘলা কারো উপরে যায়।
মেঘলা কিছু বুঝে উঠার আগেই ঠাস করে এক চর পরে মেঘলার গালে,
মেঘলা গালে হাত দিয়ে মানুষটির দিকে তাকিয়ে আছে কারন মানুষটি আর কেউ না রাত চৌধুরী।
সাগরঃ স্যার ও তো আপনার উপর দেখে পরে নি ( কিছুটা রেগে)
রাতঃ জাস্ট স্যাট আপ,এসব মেয়ে আমার চেনা আছে ইচ্ছে করে ছেলেদের গায়ে পড়া।
নিলয়ঃ ভাইয়া
রাতঃ নিলয় চুপ থাকো কি হয় এই মেয়ে তোমার।
নিলয়ঃ বোন
রাতঃ যতসব ( বলে হনহন করে চলে যায়)
মেঘলার চোখ গাল গড়িয়ে চোখের জল পড়ছে।
ড্রাইভার চাচাঃ মেঘলা মামনি চলো অনেক সময় দাঁড়িয়ে আছি।
নিলয়ঃ হুম চল মেঘলা( মন খারাপ করে)
তিথি,সাগর, আশা,জিহাদ ওদের দিকে তাকিয়ে রইলো মন খারাপ করে।
মেঘলা সারা রাস্তা কান্না করলো
নিলয়ঃ বুঝি না ভাইয়া এতো কেনো রিয়েক্ট করে তোর সাথে এই রোদ এই বৃষ্টি অন্য কেউ কিছু বললে রেগে যাবে আর সে যে এতো কিছু করবে তা কিছু না।কাঁদিস না মেঘলা এবার কান্না থামা।
মেঘলাঃ কলেজের কত মানুষের সামনে আমাকে অপমান করলো আমাকে তার মানুষ মনে হয় না ( আর কাঁদতে লাগলো)
দুজন বাসায় পৌঁছে যে যার রুমে চলে গেলো।
নীলা আপু রুমে বসে আছে আমাকে দেখে এগিয়ে আসলো।
নীলাঃ কি হয়েছে মেঘলা তোর মুখটা এমন দেখাচ্ছে কেনো।
মেঘলাঃ এমনি আপু
নীলাঃ এমনি তো না কি হয়েছে বল
মেঘলা কলেজের কথা বললো
নীলাঃ ওফ এই রাতটা আর কখনো ভালো হবে না ভেবে ছিলাম সুদের গিয়েছে কিন্তু আবার শুরু করেছে।
আচ্ছা লক্ষি বোন আমার ফ্রেশ হয়ে নে, লান্স করবি।
আমি ফ্রেশ হয়ে ব্লাক কালার এর একটা টি শার্ট এর সাথে
স্কার্ট, চুল ভেজা তাই ড্রাই করতে আয়নার সামনে বসতেই আপু বললো,
মেঘলা খুব খিদে পেয়েছে চল চল।
ভেজা চুলেই নিচে চলে আসলাম।
নানু মনিঃ মেঘলা তোর ভেজা চুল ঠান্ডা লেগে যাবে তো। এই ঠান্ডার মাঝে কেউ ভেজা চুল নিয়ে থাকে?
মেঘলাঃ কিছু হবে না নানু মনি।
খালামনিঃ লাগলে বুঝবা
সবাই খাবার টেবিলে শুধু রাত ভাইয়া ছাড়া ভালো হয়েছে আসে নাই।
কুসুম মেঘ এর রুম থেকে টাওয়াল এনে ওর চুলে পেচিয়ে দে।( চেয়ার এ বসতে বসতে)
ভাইয়ার কথায় আমি হা হয়ে গেলাম।
কসুম টাওয়াল এনে আমার চুলে রাখতেই আমি উঠে দাড়ালাম।
আমার প্রয়োজন নেই।(রেগে)
রাত ভাইয়া আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মামনিঃ মেঘলা ভেজা চুল এ ঠান্ডা লাগবে বেশি কথা বলিস না ( বলে নিজেই টাওয়াল পেচিয়ে দিলো)
কি একটা অবস্থা টাওয়াল নিয়ে খেতে বসেছি রাক্ষসটার জন্য।
সবার খাওয়া শেষে আপু, মামনি ড্রয়িং রুমে বসে রইলো।
আমি যাইনি কারন ঐ খানে রাক্ষসটা আছে এর আশেপাশে ও আর আমি থাকবো না।
______________________________
বিকেলে,
আপু রুমে কারো সাথে কথা বলছে।
তাই আমি ছাঁদে চলে আসলাম।ছাঁদে কেউ নেই।
দিন যাচ্ছে আর শীতের আমেজ বাড়ছে,শীতের বিকেলটা আমার আবার একটু বেশি ভালো লাগে।
দাড়িয়ে দাড়িয়ে ব্যস্ত নগরীতে চোখ বুলচ্ছি।
হটাৎ কারো কথার শব্দ পেলাম,
আমি যে ভাবে বলেছি সে ভাবেই যেনো চলে সব কিছু।
আমি কোনো প্রকার রিস্ক নিতে চাই না তর উপর ও ( এইটুকু বলেই রাত থেমে যায় কারন মেঘ কে দেখে)
আচ্ছা রাখছি পরে কথা হবে।
রাত ভাইয়া কার সাথে কথা বললো কিসের রিস্ক এর কথা বললো( মনে মনে)
যাই হোক আমার কি এই রাক্ষসটা ছাদে এসেছে আমি চলে যাবো এখন,
বলেই আমি ভাইয়া কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে,
ভাইয়া আমার হাত ধরে নেয়।
মেঘঃ ভাইয়া ছাড়ুন আমাকে।
রাতঃ তুই একদম ছোট বেলার মতো আছিস রাগ করলে আমাকে আপনি করে বলিস।
মেঘঃ প্লিজ ভাইয়া আমার হাত ছাড়ুন আমি নিচে যাবো।
মেঘ কে কাছে টেন কোমড় জড়িয়ে রাত বলে,
ছাড়বো না কি করবি তুই?
মেঘ রাত এর বুকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়াতে চাচ্ছে কিন্তু রাত এর সাথে তো মেঘ এর মতো একটা মশা কখনোই পারবে না।
রাতঃ ওফ মেঘলা শুধু শুধু কেনো সটফট করিস তুই ভালো করে জানিস আমি না ছাড়লে তুই যেতে পারবি না তারপরও, একদম চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।
মেঘঃ ছাড়ুন আমাকে কেনো এমন করেন আমার সাথে আমি কি আপনার খেলার পুতুল যে যখন ইচ্ছে হয় কাছে টেনে নিন আমার যখন ইচ্ছে হয় অপমান করেন রাস্তার সবার সামনে। আমি তো ইচ্ছে করে আপনার গায়ে পড়ি তো এখন কেনো আমাকে ধরে রেখেছেন,ছাড়ুন আমাকে।( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
রাতঃ আমি তো সকালে বললাম তুই আমার সম্পত্তি, আমি তোকে মারবো কাটবো আদর করবো তুই কিছু বলতে পারবি না।( এক হাত দিয়ে মেঘ এর বাধা চুল গুলো খোলে তারপর মেঘ কে ঘুড়িয়ে পেছন থেকে মেঘ এর দু হাত নিজের দু হাত দিয়ে পেটের উপর চেপে ধরে,)
মেঘ যেনো এমন কিছুর জন্য একদম প্রস্তুত ছিলো না।
এমনি ঠান্ডা তার উপর রাত এর স্পর্শে যেনো আরো বেশি ঠান্ডা অনুভব করছে শরিল কাঁপতে শুরু করলো।
রাতঃ মেঘ আমি যত কষ্ট দেই তোকে প্লিজ একটু সয্য করে নিস লক্ষিটি আমার থেকে দূরে থাকবি না বাসায়।তোকে ছাড়া আমার কেমন যেনো দম বন্ধ হয়ে আসে ইচ্ছে করে তোকে আমার বুক কেটে এই বুকের ভিতর লুকিয়ে রাখি।
মেঘলাঃ এই ছাড়ো তো তোমার এই অভিনয় এ আমি আর গলছি না ছারো, আমাকে একটুও ভালোবাসো না, যদি একটু ও ভালোবাসতে তো আমাকে কষ্ট দিতে পারতে না ছারো এখন তোমার স্পর্শ আমার একদম সয্য হচ্ছে না।
মেঘ এর কথায় রাত রেগে গেলো টেনে চিলেকুঠার দেয়ালে নিয়ে দু’হাত চেপে ধরলো।
কি বললি আমার স্পর্শ তোর সয্য হয় না।
মেঘ ভয় এ চোখ খিচে বন্ধ করে আছে এই হয় তো আবার মার খাবে।
(নেক্সট পার্ট আমার পেজে আছে)
রাত হটাৎ মেঘ এর মুখের দিকে তাকালো খুব গভীর ভাবে।
চোখ জোড়া বন্ধ করে আছে ঠোঁট জোড়া ভয় এ কাপছে।
ইচ্ছে করছে এই কম্পিত ঠোঁট জোড়া ছোয়ে দিতে।
রাতঃ ওফ এই মেয়ে আমাকে পাগল করে ছারবে এমনি সেই ছোটো বেলা থেকে পাগল হয়ে আছি নিজের থেকে এই পাগলিটাকে বেশি ভালোবাসি আর এখন তো আমি শেষ ( মনে মনে)
মেঘ রাত এর কোনো রেসপন্স না পেয়ে চোখ টিপ টিপ করে তাকিয়ে দেখে রাত তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
রাতঃ একে ছেড়ে এখন আমার চলে যেতে হবে তা নাহলে ভুলা কিছু হয়ে যাবে এর সামনে থাকলে কন্ট্রোললেস হয়ে যাবো।(মনে মনে ভেবে মেঘ কে ছেড়ে দেয় আর এক মূহুর্ত তার সামনে থাকে না ছাঁদ থেকে নেমে যায়।)
মেঘ দেয়াল ঘেসে সে খনেই বসে পড়ে,
আর মনে মনে ভাবে,
এই ছেলে কি পাগল হয়ে গিয়েছে, এমন কেনো করে আমার সাথে, আমি নাকি তার সম্পত্তি, আবার আমাকে কষ্ট দিবে রাক্ষস একটা, সাইকো হয়ে গিয়েছে, জানি না এর মনে কি আছে।
ওফ ভাবতে পারছি কখনো কাছে টেনে নেয় তো কখনো দূরে কেনো এমন করে আমার সাথে আর একে আমি দূরেও রাখতে পারি না যখন এই রাক্ষস টা আমার কাছে আসে সব কিছু কেমন উলট পালট হয়ে যায়।
আমি সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইলাম, আজ একটু বেশি ঠান্ডা লাগছে, চারো দিকে সন্ধ্যের পাখির আনাগুনা।আপছা অন্ধকার এ ডেকে গিয়েছে।
আমি নিচে নেমে আসলাম, আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম রাক্ষসটা কোথায় আছে , কিন্তু কোথাও দেখতে পেলাম না নিজের রুমে এসে নামাজ আদায় করে নিলাম,আমার সাথে নীল আপুও। তারপর দুজন ড্রয়িং রুমে আসলাম।
শীতের আগমনে হয়তো আজ সবারি খুব শীত লাগছে গায়ে।
নিলয় বসে বসে মোবাইলে গেমস খেলছে আমি ওর পাশে গিয়ে একটু ধাক্কা দিলাম।
নিলয়ঃ পেত্নী এখন ডিস্টার্ব করবি না ভালো ভাবে বললাম।(মোবাইল এর দিকে তাকিয়ে)
মেঘলাঃ ডিস্টার্ব করলে কি করবি তুই। (
নিলয়ঃ তোর মাথার চুল একটাও রাখবো না বলে দিলাম।
নানু মনিঃ মেঘলা দিদি ভাই জ্বালাস না ছেলেটাকে এইদিকে আয়।
মেঘলাঃ যা তোর উপর মায়য়া করলাম একটু হুম( একটা ভাব নিয়ে)
তারপর নানুর পাশে গিয়ে বসলাম।
কুসুম গড়ম গড়ম কফি নিয়ে আসলো।
মামনি,খালা মনি তিনজন তাদের মতো করে গল্প করছে,মামারা এখনো অফিস থেকে আসে নি।
আলিফ তোয়া টিভিতে কার্টুন দেখছে।
নীলা আপু, আমি, নানু মনি তিন জন এক সাথে বসে আছি।
আমি আর আপু কফি খাচ্চি নানু মনি খাবে না সে তছবিহ গুনছে।
হটাৎ আপুর ফোন আসাতে আপু মোবাইল নিয়ি রুমে চলে যায়।
আমিও উঠে আলিফ তোয়ার কাছে গিয়ে বসলাম।
আমিও ওদের সাথে কার্টুন দেখছি আর কফি খাচ্ছি।
কফিটা খেতে আর ইচ্ছে করছে না তাই টেবিলে রেখে দিলাম।
রাক্ষসটা কোথা থেকে এসে আমার পাশে এসে দপ করে বসে পড়লো।
এই রাক্ষসটা এতো কি কাজ করে যে যখনি বাহির থেকে ফিরে তখনি দেখি খুব অস্থির দেখায় আজ প্রচুর ঠান্ডা তাই ঘামে নি কিন্তু এর আগে ঘেমে নেয়ে এককার হয়ে যেতো।
আমি ভাইয়ার পাশ থেকে উঠে চলে নিতে নিলে আমার হাত ধরে টেনে ধপাস করে আবার বসিয়ে দেয়।
আমি কপাল কুঁচকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
রাতঃ তাকিয়ে আছিস কেনো?
মেঘঃ তুমি আমাকে এই ভাবে বসালে কেনো?
রাতঃ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।
মেঘঃ আমি তোমার পাশে বসতে চাই না আমি নানু মনির কাছে যাবো।
রাতঃ মার খাবি এখন বেশি কথা বললে, আমার পাশে কিছুক্ষণ বসে থেকে পড়তে যা।( আমার এঠো কফিতে চুমুক দিয়ে)
মেঘঃ ইয়াক থু তুমি কি বাজে ভাইয়া তুমি আমার এঠো কফি খাচ্ছো
রাতঃ তো সমস্যা কি তোর এঠো কফি খাওয়া যাবে না।( আবার কফিতে চুমুক দিয়ে)
মেঘঃ নাহ কেউ কি কারো এঠো খাবার খায়?
রাতঃ তোর এঠো টা খেতে আমার কোনো সমস্যা নেই বুজলি আমার পাগলি।
মেঘঃ হুম খান আপনি আমি গেলাম আটকাবেন না।
রাতঃ এক পা এগোবি পা ভেঙে আমার রুমে ঝুলিয়ে রাখবো।
মেঘঃ পড়তে বসবো।
রাতঃ আর একটু পরে প্লিজ ( করুন স্বরে)
মেঘঃ উফ বুঝি না আমি তোমার পাশে থাকলে কি হবে তুমি তো আমাকে বকো মারো আবার ডং করো।
রাতঃ তোর এই ছোট মাথায় ডুকবে না।
এই ভাবে কেটো গেলো প্রায় এক মাস এই এক মাসে ভাইয়া আমার সাথে এমনি করতো, কলেজে বা রাস্তায় সবসময় রাগারাগি করতো কিন্তু বাসায় তার বিপরীত।
বিকেলে আমি আর আপু ছাদে বসে আছি।
আপুর ফোন এ বার বার ফোন আসছে। কিন্তু আপু কেটে দিচ্ছে, ফোনটা রিছিভ করছে না।
মেঘঃ আপু রিছিভ করছো না কেনো?
নীলঃ এমনি এতো দরকার না।
মেঘঃ আরে কে ফোন দিচ্ছে কথা বলো।
নীলাঃ না মানি পরে করবো।
আমার কেমন যেনো একটা সন্দেহ হলো কে ফোন দিচ্ছে আপু আমার সামনে রিছিভ করতে ধিদা বোধ করছে।
মেঘঃ আপু কে ফোন দিচ্ছে বলো
নীলাঃ কেউ না
মেঘঃ আপু আমার কেমন যেনো লাগছে তুমি আমার কাছে লুকাচ্ছো।
নীলাঃ না মানি মেঘ কি ভাবে বলবো কিন্তু একদিন তো বলতেই হবে।
মেঘঃ কি বলো আপু।
নীলাঃ আসলে আমি একজন কে ভালোবাসি ওর নাম আকাশ, ও ফোন দিচ্ছে আমাকে বিয়ের জন্য খুব প্রেশার দিচ্ছে কিন্তু আমি কি ভাবে বাসায় বলবো ওর কথা
মেঘঃ আপু এই কথা হাহাহাহা, তুমি কাউকে ভালোবাসো কিন্তু আমাকে বলতে লজ্জা হয় তোমার হাউ ফানি আপু খুব হাসি পাচ্ছে।
নীলাঃ মেঘলা আমি কি করবো বাসায় মামা আম্মুর কাছে কি ভাবে বলবো, তারা যদি আকাশ কে মেনে না নেয়,আমি আকাশ কে ছাড়া বাঁচবো না আর আকাশ ও আমাকে খুব ভালোবাসে ও একটা কোম্পানি তে জব করে।ও আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে কিন্তু বাসা থেকে কি ভাবে বের হবো কি বলে বের হবো।
মেঘঃ চিন্তা করো না আপু আমার ও ভাইয়া কে খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে ইস আমার আপুর বরটা দেখতে কেমন হবে?
নীলাঃ মেঘ এখনো বর হয় নি।
মেঘঃ হবে হবে এই মেঘলা থাকতে কিসের চিন্তা তোমার আপু।( একটা ভাব নিয়ে)
নীলাঃ আচ্ছা কি ভাবে বের হবো আমরা?
মেঘঃ শুনো আমি বাসায় বলবো আমার এক বান্ধবীর বাসায় যাবো।আর সাথে তোমাকে নিয়ে যাবো আমি প্রায় সময় যাই তো বাসায় কেউ না বলবে না, তুমি ভাইয়া কে বলে দেও তুমি কাল ভাইয়ার সাথে দেখা করবে।
নীলা খুশি হয়ে মেঘ কে জড়িয়ে ধরলো।
থ্যাংক ইউ মেঘলা এর জন্যই তো তোকে এতো এতো ভালোবাসি।
মেঘঃ হুম কিন্তু আমাকে ট্রিট দিতে হবে।
নীলাঃ তুই যা চাস তাই পাবি
মেঘঃ সত্যি?
নীলাঃ হুম
মেঘঃ তো আমাকে ফোসকা আর আইসক্রিম খাওয়াতে হবে।
নীলাঃ কিহহ?
মেঘঃ হুম
নীলাঃ রাত আমাকে বকবে ও জানতে পারলে কারন জ্বাল তুই একদম খেতে পারিস না আইসক্রিম খাওয়াবো কিন্তু ফোসকা না তাহলে রাত আমাকে পিস পিস করবে।
মেঘঃ আপু আমি তোমার এতো বড় একটা কাজ করে দিবো আর তুমি এইটুকু করতে পারবে না।
নীলাঃ আচ্ছা যদি রাত রাজি হয়।
মেঘঃ রাক্ষস রাজিও হবে না আর আমিও খেতেও পারবো না।
রাতঃ কে রাজি হবে না আর তুই কি খেতে পারবি না?
রাত এর কথায় মেঘ আর নীলা রাতের দিকে তাকায়।
নীলাঃ না কিছু না ( কাচুমাচু খেয়ে)
রাতঃ তুই এমন তুতলিয়ে কথা বলছিস কেনো?
নীলাঃ ককই।।
রাতঃ এই কি লুকাচ্ছিস বলতো?
নীলাঃ আসলে রাত মেঘ
রাতঃ কি মেঘ?
মেঘ ভয় এ দৌড় দিতে নিলে রাত মেঘ এর হাত ধরে আটকে দেয়।
নীলাঃ মেঘ ফুসকা খেতে চায়।
মেঘঃএরে আপু তো বলেই দিলো আমি জ্বাল একদম খেতে পারি না জ্বাল এ আমার শ্বাসকষ্ট হয়ে যায় তাই ভাইয়া ছোট বেলা থেকে আমাকে জ্বাল খাবার খেতে দিতো না আর খুসকা তো জ্বাল ছাড়া চলেই না এর আগে কলেজে গিয়ে খেয়েছিলাম অবশ্য সে দিন নিলয় আমাকে অনেক বার বারন করেছে কিন্তু আমি শুনি নি অনেক অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম ঐ দিন ভাইয়া বাসায় এসে নিলয় কে অনেক বকেছে কেনো আমাকে খেতে দিয়েছিলো।এর পর সবাই কে ভাইয়া করা ভাবে বলে দিয়েছিলো আমাকে যেনো জ্বাল এর আশে পাশে না দেখে।কিন্তু ফোসকা বলে কথা লোভ তো সামলানো যায় না।
নীলা আপু কথা বলেই বো এক দৌড় কারন আপু এই খানে থাকলে আপু ও বকা খাবে।
রাত ভাইয়া আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মেঘঃ এএমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো, আআমি তো শুধু বলেছি খেতে ইচ্ছে করছে বলি নি তো খাবো।( ভয় এ তুতলিয়ে)
কিন্তু আমাকে ভাইয়া ভুল প্রমানিত করে বললো,
রাতঃ মেঘ দেখ তোর কোনো বেপারে আমি রিস্ক নিতে চাই না।প্লিজ উলটো পালটা কাজ করিস না তাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।আর শুন আমাকে না বলে বাড়ির বাহিরে যাবি না।আর জ্বাল খেলে তোর খুব কষ্ট হয় যা আমি সয্য করতে পারি না তুই কেনো এমন করিস।
মেঘঃ আমি তো কোথাও যাই না, আমি তো বাড়িতেই থাকি।আর আমার কষ্ট হলে তোমার কষ্ট কেনো হয়?
রাত মেঘ এর গালে হালকা একটু থাপ্পড় দিয়ে এক টানে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বললো বললো,
তুই যে আমার মেঘ বউ, তোর মাঝে আমার প্রান লুকিয়ে আছে, তুই কি একটুও বুঝিস না?
মেঘঃ তুমি আমাকে একটু ভালোবাসো না ছারো শুধু বাসায় একটু ডং দেখাও।
রাতঃ দেখালে দেখাই তোর কি আমি আমার মেঘ এর সাথে যা ইচ্ছে তা করবো তাতে তোর কি এই তোর কি হিংসে হয়?
মেঘঃ কিহ পাগল হয়ে গিয়েছো?
রাতঃ হুম তোর পাগল।
মেঘঃ ওফ ছারো তো
রাতঃ ফুসকার আশেপাশে যেনো না দেখি তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে ছেড়ে দিলাম। ( মেঘ কে ছেড়ে দিলো আর মেঘ ও ছাড়া পেয়ে দৌড়ে চলে গেলো)
কিন্তু মেঘ এর মুখে হাসি রাত যখন মেঘকে এমন কথা বলে ওর খুব ভালো লাগে অজানা এক আনন্দ কাজ করে মনে।
রাতও মেঘ এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
________________________________________
সকালে,
মেঘ আর নিলয় কলেজে,
সাগর, জিহাদ, তিথি,আশা, মেঘ এবং নিলয় কলেজ এর মাঠে দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
হটাৎ মেঘ এর চোখ আটকে যায় অফিস রুমের সামনে শায়লা মেডাম এর দিকে।
কারন মেডাম রাত এর সাথে খুব হেঁসে হেঁসে কথা বলছে।
রাত ও কি সুন্দর মেডাম এর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
অন্যদিকে মেঘ রাগে ফুসছে কেনো জানি খুব হিংসে হচ্ছে ইচ্ছে করছে দুজন এর মাথা ফাটিয়ে দিতে।
রাক্ষস তোরে ভালো ভেবেছিলাম তুই এক নাম্বার লুচু তুই তুই একটা আর কিছু না বলতে পেরে রেগে জোড়ে একটা চিৎকার দেয়।
রাত মেঘ এর কাছাকাছি থাকাতে মেঘ এর চিৎকার এর শব্দ শুনে, মেঘ এর চিৎকার এ যেনো রাত এর বুকটা কেঁপে উঠে।
মেঘ এর কাছে ছোটে আসে পাশে থাকা শায়লা মেডাম বেস অভাক হলো রাত এর এমন কাজে।
মেঘ এর কাছে এসে রাত,
মেঘ কি হয়েছে চিৎকার দিলি কেনো?
সাথে নিলয় ওরাও খুব অভাক হলো হটাৎ মেঘ চিৎকার এ।
তার থেকে বেশি অভাক হলো রাত এর বলা কথায় নিলয় বাদে সবাই বেশ অভাক হয়ে রাত এর দিকে তাকিয়ে আছে।
মেঘঃ কিচ্ছু হয় নি স্যার শায়লা মেডাম দাঁড়িয়ে আছে। ( দাঁতে দাঁত চেপে, কথাটা বলে হনহন করে চলে গেলো মেঘ)
তার পিছু নিলয়, তিথি,আাশা,সাগর আর জিহাদ।
রাত হা হয়ে রইলো মেঘ এর কাজে,পরক্ষণেই মনে পরলো মেডাম জেলাস হয়েছে।
রাত হেঁসে দিলো আর বললো পাগলি।
খুব রেগে আছে কিন্তু আমার পাগলিটা আমার উপর রেগে থাকবে তা তো আমি হতে দিতে পারি না।
নিলয় কে একটা টেক্স করে নিলয় মেসেজ দেখে মুচকি হেসে মেঘ কে বললো।
মেঘলা আমার সাথে চল একটা জায়গায়।
মেঘঃ কোথায়?
নিলয়ঃ আরে গেলেই দেখতে পাবি।( বলে হাত টেনে নিয়ে যায়)
কলেজের একটা ফাঁকা রুমে মেঘ কে রেখে নিলয় বলে
তুই ধারা আমি আসছি বলে মেঘ চলে যায়।
আমি জানাড়া দিয়ে কলেজের পেছনের দিকে তাকিয়ে আছি।
হটাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
আমি চমকে যাই আর পেছনে তাকিয়ে দেখি রাত ভাইয়া।
ভাইয়া কে দেখে আমার রাগ ৪২০ ডিগ্রি বেরে গেলো নিজেকে ছাড়ার জন্য সটফট করতে লাগলাম।
রাতঃ ওফ মেঘ একটা থাপ্পড় খাবি( একটু রেগে)
মেঘঃ এইটা আবার নতুন কি থাপ্পড় তো প্রতিদিনই খাই।
রাতঃ আচ্ছা সরি আর মারবো না প্রমিজ।এখন বল তখন এমন চিৎকার দিলি কেনো?
মেঘঃ এমনি দিয়েছি,এইখানে আসছেন কেনো যান না শায়লা মেডাম এর কাছে।
রাতঃ হিংসে হয় তোর?
মেঘঃ একটুও না আর আমাকে ছাড়ুন কেউ আসবে।
রাতঃ কেউ আসবে না, আচ্ছা সরি রেগে থাকবেন না মেডাম আমি আর কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবো না।
মেঘঃ আচ্ছা আমি কি একবার ও বলেছি আমি রেগে আছি?
রাতঃ আমি তো জানি আমার মেঘ রেগে আছে।
মেঘঃ আমি রেগে নেই ছাড়ুন।
রাতঃ ওকে মেডাম যান
মেঘ একটা মুখ ভেংচি কেটে রুম থেকে বেড়িয়ে পরে।
ক্লাস এ গিয়ে নিলয় কে ইচ্ছে মতো কিল ঘুসি দেয়।
_______________________________________
বিকেলে মেঘ আর নীলা বেড়িয়ে পড়ে তিথিদের বাসার কথা বলে।
রেস্টুরেন্টে মেঘ আর তিথি বসে আছে।
একটু পর হোয়াইট কালার এর একটা শার্ট পরা ছেলে এসে ওদের টেবিলে বসলো, দেখতে শুনতে মাশাল্লাহ।
নীলাঃ মেঘলা ও আকাশ।
মেঘঃ হায় ভাইয়া।
আকাশঃ হ্যালো মেঘলা কেমন আছো?
মেঘলাঃ ভালো।
তিনজন কফি খেতে খেতে কিছুক্ষণ কথা বললো।
মেঘ নীলা আর আকাশ কে একটু সুযোগ করে দেওয়ার জন্য
নীলা কে বললো,
আপু তুমি কথা বলে আসো আমি বাহিরে অয়েট করছি।
নীলাও আর বাঁধা দিলে না
প্রায় ১৫ মিনিট পার হলো হটাৎ নীলার ফোনে রাত এর ফোন।
নীলার বুক কাপছে হটাৎ রাত ফোন দিলো কেনো?
আকাশঃ কি হলো ফোনটা ধরো।
নীলাঃ আকাশ রাত ফোন দিয়েছে।
আকাশঃ তো ধরো।
নীলাঃ আকাশ আমি আর মেঘলা রাত কে না বলে এসেছি আর ও মেঘলা কে না দেখতে পেয়ে ফোন দিয়েছে।
অন্যদিকে রাত ওফ নীলা ফোনটা তুলছিস না কেনো?
রেস্টুরেন্টে আকাশ,
নেক্সট পার্ট পেজে)
তুমি ধরো অন্যকোনো প্রয়োজন ও তো হতে পারে।
নীলা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
হ্যালো রাত,
রাতঃ নীলা মেঘ, মেঘ কি তোর সাথে আছে প্লিজ তাড়াতাড়ি বল মেঘ ঠিক আছে।
নীলা রাত এর কথায় কেঁপে উঠলো।
তারাহুরো করে রেস্টুরেন্টের বাহিরে চলে আসলো কিন্তু আশেপাশে কোথাও মেঘ নেই মেঘ কোথায় গেলো।
আকাশ আর নীলা আশেপাশে খোজে দেখলো কিন্তু মেঘ কে কোথাও পেলো না।
নীলাঃ রাত রাত মেঘ মেঘ কে কোথাও দেখছি না ( কেঁদে কেঁদে)
রাত এর মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরলো
চলবে,
Part 22-23
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২২+২৩
রাত এর মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরলো।
নীলাঃ রাত এখন কি করবো কি থেকে কি হয়ে গেলো মেঘলা কোথায় গেলো।
রাত কিছু না বলে ফোন কেটে দিলো।
রাত এর ফোন এ ফোন আসলো,রাত ফোনটা সাথে সাথে রিছিভ করলো।
আর বললো,
দেখ মেঘ এর যদি কোনো ক্ষতি করিস আজ সব কয়টা কে শেষ করে ফেলবো আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস ধ্রুব মেঘ কে ভালো ভাবে ছেরে দে রাগ তোর আমার সাথে তোর বাবা কে আমি মেরেছি মেঘ কে ছেড়ে দে।
ধ্রুবঃ হাহাহাহা হাসালি রাত অবশ্য তুই খুব ব্রিলিয়ান্ট তুই মেঘ কে খুব আগলে রেখেছিস আমার লোকরা এতো দিনও বুঝতে পারে নি তোর কলিজা কে, কিন্তু আমাদের চোখের সামনে দিয়ে ঘুড়েছে আমরা বুঝতেই পারি নি। ভালোই করেছিস গতকাল বিকেলে ছাদে মেয়েটার সাথে মঝা করে।
রাতঃ দ্রুব আমি মেঘ কে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চাই নি ওর গায়ে যদি একটু আচ লাগে শেষ করে ফেলবো।
ধ্রুবঃ আগে তোর প্রিয়সি কে খোজে বের কর এতোক্ষণ এ আমি একটা মঝা নেই কি নাম বললি যেনো মেঘ হাহাহাহা।
বলে ধ্রুব ফোন কেটে দেয়।
রাতের মাথায় কিছু কজ করছে না, ওর মাথা হ্যাংগ হয়ে আসছে কি করবে ও এখন কোথায় রেখেছে দ্রুব মেঘ কে।
নীলা বাসায় পৌঁছে কান্না করতে লাগলো আর সবাই কে সবটা বললো,নীলার মা নীলা কে খুব বকতে লাগলো,নানু মনি কাঁদছে।
রৌদ্র চৌধুরী আর রায়হান চৌধুরী বাসায় চলে আসলো আর রাত কে ফোন দিতে লাগলো কিন্তু রাত ফোন ধরছে না।
স্যার ধ্রুব কোথায় আছে জানতে পেড়েছি।( রাত এর লোক)
রাতঃ তোদের সব কটা কে শেষ করে ফেলবো কতবার বলেছি মেঘ এর উপর নজর রাখবি কিন্তু তোরা রাকিস নি।
লোকটিঃ স্যার ম্যাডাম তো বাসা থেকে বের হয় না তাই আমরা বুঝতে পারি নি কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি মেডাম কে কোথায় রেখেছে।
রাতঃ দ্রুব আজ তোর জীবনের শেষ দিন তুই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস।
অন্যদিকে মেঘ কে দ্রুব হাতে পায়ে বেদে রেখেছে মুখ লাল কাপড় দিয়ে আটকে রেখেছে কপালে খুব আঘাত পেয়েছে যার ফলে কপাল ভেয়ে রক্ত ঝরছে।
ধ্রুবর লোকঃ বস রাত চৌধুরী যদি একবার পৌঁছে যেতে পারে আমাদের এইখানে তো আজ সব শেষ হয়ে যাবে, আমার খুব ভয় করছে কারন রাত চৌধুরী একটা মানুষকে খুন করতে দুইবার ভাবে না।ও বাংলাদেশ এ এসে ওর পরিবার থেকে ওর আসল রুপ লুকিয়ে রেখেছে ওর পরিবার কে জানতে দেই নি ওর সম্পর্কে।
ধ্রুবঃ তুই আমার হাতেই মরবি শালা রাত কেনো রাত এর বাপ ও খোজে পাবে না আমাদের আর যখন পাবে তখন পর প্রান বোমরা শেষ ও তখন শেষ হয়ে যাবে কারন এই মেয়েকে ছাড়া রাত চৌধুরী অসহায়।
হটাৎ ধ্রুবর সামনে এক রক্তাক্ত লোক এসে পরলো আর বললো রাত বলেই লোকটি মাটিতে লুটে পরলো।
ধ্রুবর সাথে থাকা লোকটি বললো,
বস বলেছিলাম আপনাকে রাত চৌধুরীর সাথে পাংগা নিয়ে পারবেন না ও আমাদের ঠিকি খোজে বের করবে, আর তাই হলো।
ধ্রুবঃ রাত এসেছে ভালো করেছে ওর সামনেই ওর কলিজাকে মারবো। যে ভাবে আমার সামনে আমার বাবা কে মেরেছে।
রাতঃ হে আজ তোর সামনেই তোর কলিজা শেষ হবে।
রাত এর কথা শুনে ধ্রুবর বুক কেপে উঠে।
রাত কি বলতে চাচ্ছে আমার কলিজাকে মারবে মানি।
ধ্রুবঃ কি বলতে চাচ্ছিস তুই?
রাতঃ হে যা বলছি ঠিক বলেছি আমি সে দিন তোর বাবাকে মারি নি তুই তো তোর বাবাকে মারতে দেখেছিস কিন্তু লাস দেখিস নি, তোর বাবা বেঁচে আছে। কিন্তু আজ আর বেঁচে থাকবে না আজ শেষ হয়ে যাবে।
ধ্রুবঃ না না রাত আমার বাবার কিছু করিস না সত্যি আমার বাাবা বেঁচে আছে বল কই আমার বাবা?
রাতঃ দেখাবো আমার মেঘ কে নিয়ে আয় আগে।
ধ্রুব এই মেয়েটাকে নিয়ে আয়।
রাত সাথে সাথে ধ্রুবর পায়ের কাছে একটা গুলি মারলো।
ধ্রুব ভয় এ পিছিয়ে পড়লো।
রাতঃ তোর সাহস হয় কি করে এই লোকদের দিয়ে আমার মেঘ কে টাচ করানোর মেঘ কোথায় আছে আমাকে বল।
ধ্রুব ঐ যে ঐ রুমে ( হাত দিয়ে একটা রুম এর দিকে দেখিয়ে)
রাত আর এক সেকেন্ড ও দেরি করলো না দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খোলে ভেতরে ডুকে গেলো।
মেঘ কে দেখে রাত এর বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো কারন মেঘ এর কপাল ভেয়ে রক্ত ঝরছে।
মেঘ এর হাতের বাদন মুখের বাদন খুলে দিয়ে ইচ্ছে মতো মেঘ এর কপালে গালে চুমু খেলো রাত,এতো সময় যেনো ওর দেহের ভেতর প্রানটা ছিলো না। এখন যেনো ওর প্রানটা ও ফিরে পেয়েছে।
মেঘকে কোলে করে বেড়িয়ে পড়লো আর ধ্রুব ছোটে রাত এর কাছে আসলো।আর বললো,
আমার বাবাকে আমার কাছে দিয়ে দে এবার।
রাত মেঘ কে সোফায় সোয়ে দিলো,কারন মেঘ এর সেন্স নেই।
রাত এবার অগ্নি দৃষ্টিতে ধ্রুবর দিকে তাকালো।
আর বললো,
কি মনে হয় তোর ধ্রুব রাত চৌধুরী এতো পাগল যে তার শত্রুকে সে বাচিয়ে রাখবে।
ধ্রুবঃ কি বলতে চাচ্চিস তুই?
রাতঃ হাহাহা তোর বাবাকে আমি সে দিন মেরে ফেলেছি এখন শুধু মিথ্যা বললাম আমার মেঘ এর জন্য কারন আমি ভালো ভাবে বললে তুই মেঘ এর কথা বলতি না আর মেঘ কে নিয়ে আমি কোনো রিস্ক নিতে চাই নি।
ধ্রুব খুব রেগে গেলো আর রাত এর কলার চেপে ধরলো।
ধ্রুবঃ তোকে আর তোর মেঘ কে এখনি শেষ করে দিবো।
এই ঐ মেয়েটাকে শেষ করে দে।
কিন্তুু কোনো লোকি ধ্রুবর কথা শুনলো না।
ধ্রুব চেচিয়ে বললো,
কি বলছি তোদের?
রাতঃ ওরা কেউ তোর কথা শুনবে না আর ওরা আজ থেকে তোর সাথে থাকবে না ওদের আমি কাজ দিয়ে দিয়েছি তাই ওরা আজ থেকে কোনো খারাপ কাজ করবে না কিন্তু আজ তোর শেষ দিন আমার মেঘ কে তুই কষ্ট দিয়েছিস দা ভাই আর মেঘ আমার প্রান এর থেকে একজন কে কেরে নিয়েছিস আর একজন কে আজ কষ্ট দিয়েছিস তাই আজ তোকে শেষ করে তোর বাবার কাছে পাঠিয়ে দিবো।
ধ্রুবঃ না না তুই এইটা করতে পারিস না।
রাত আর কোনো কথা বলো না ধ্রুব কে ইচ্ছে মতো মারতে লাগলো চাকু দিয়ে এক এর পর এক আঘাত করতে লাগলো মুহূর্তে ধ্রুবর শরিল রক্তাক্ত হয়ে গেলো।
হটাৎ মেঘ চোখ মেলে তাকিয়ে রাত এর এমন হিংস্র রুপ দেখে খুব ভয় পেয়ে যায়, চিৎকার দিয়ে বলে।
রাত ভাইয়া তুমি একটা মানুষকে কি ভাবে মারছো তুমি তুমি খুনি লোকটা মরে যাচ্ছে এতো রক্ত বলে মেঘ আবার সেন্সলেস হয়ে পড়ে।
রাত মেঘ এর কাছে ছোটে যায়।
কোলে নিয়ে রাত এর লোককে বলে ধ্রুব কে শেষ করে মাটি চাপা দিয়ে দিতে অবশ্য দ্রুব এমনি শেষ হয়ে গিয়েছে।
রাত মেঘ কে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যায়।
হসপিটাল এ এডমিন করে নিজের ফোন হাতে নেয় বাসায় বলার জন্য।
রাতঃ ওফ সিট টেনশনে বাসার ফোন রিছিভ করি নি সবাই কত ফোন দিয়েছে।
রাত তরিগরি করে রৌদ্র চৌধুরীর কাছে ফোন দেয়।
রাত ১০ টা
সবাই হসপিটালে চলে আসে।
রায়হান চৌধুরীঃ রাত মেঘ আমাদের মেঘ কোথায় ও ঠিক আছে তো?
রাতঃ ও ঠিক আছে কিন্তু এখনো সেন্স ফিরে নি।
নানু মনিঃ আমার মেঘ এর কি হয়েছিলো কারা ওকে কিডনাপ করেছে কেনো করেছে আমাদের শত্রু কবে থেকে হলো?
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে রাত কারা ওকে কিডনাপ করেছিলো কেনো করেছিলো?
রাত চুপ হয়ে আছে কি বলবে নিজের পরিবার কে
সাহেলা বেগমঃ কি হলো রাত চুপ হয়ে আছিস কেনো বল?
রাতঃ মেঘ কে আমার জন্য কিডনাপ করা হয়েছিলো আমাকে শেষ করার জন্য।
সাহেলা বেগমঃ মানি কি কি বছিস তুই এসব?
রাতঃ হে মা আমি আমি আরিফ চৌধুরী কে খুন করেছি আর আজ তার ছেলে ধ্রুব চৌধুরী কে।
সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলো রাত খুন করেছে কি বলছে এসব।
রৌদ্র চৌধুরীঃ তুই আরিফ চৌধুরীকে খুন করেছিস মানি কোম আরিফ?
রাতঃ দা ভাই এর বন্ধুর ছেলে আরিফ, কারন এই আরিফ চৌধুরী আমার দা ভাই কে খুন করেছে।
রায়হান চৌধুরীঃ পাগল হয়ে গিয়েছিস তুই বাবা কার এক্সছিডেন্ট এ মারা গিয়েছে।
রাতঃ না দা ভাইকে ইচ্ছে করে মারা হয়েছে সবাই যেনো বুঝতে পারে দা ভাই কে মারা হয়েছে। আমি একদিন স্কুল এ যাওয়ার সময় আরিফ চৌধুরী কে কাউকে বলতে শুনেছি আর সে দিন এর পর আমার মিশন একটায় ছিলো আরিফ চৌধুরী কে মারার তারপর আমার কলিজা মেঘ এর উপর অত্যাচার করি কারন ওকে অত্যাচার করলে তোমরা আমাকে দূরে সরিয়ে দিবে।আর আমার কাজটা করতে ভালো হবে কারন আমি তোমাদের মাঝে থেকে ঐসব কাজ করতে পারবো না, যখন তোমরা আমাকে দূরে সরিয়ে দিলে আমার খুশি লেগেছিলো আবার মেঘ এর জন্য খুব কষ্ট হয়েছিলো।আর আমি বড় হওয়ার সাথে সাথে টাকা খাইয়ে বাংলাদেশে একটা গ্যাং তৈরি করি শুধু ঐ জানোয়ারটা কে মারার জন্য আমার লোকেরা সবসময় ওর খোজ খবর রাখতো, তাছাড়া অনেক রাজনীতিবিদ মানুষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিলো তোমাদের অজান্তেই আমি অনেক বার দেশে এসেছি তোমাদের লুকিয়ে দেখেছি আর আমার মেঘ কে,সুযোগ বুঝে একদিন ঐ আরিফ চৌধুরী কে আমি মেরে ফেলি কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো ওর ছেলে ধ্রুব চৌধুরী।সেদিন আমাকে মারতে দেখেছে তার বাবা কে প্রতিসুদ এর জন্য ও আমার পিছে পরে থাকে, কিন্তু আমার অনেক পাওয়ার থাকায় আমার ধারের কাছেও ঘেসতে পারপ নি,এর পর ও আমাকে কষ্ট দিয়ে মারতে চায় আর আমাকে কষ্ট দেওয়ার মতো সুযোগ খুজছিলো কি ভাবে আমাকে কষ্ট দিবে।এমন কোনো অপশন খোঁজে বের করতে চেয়েছিলো যে খানে আমি তিল এ তিল এ শেষ হবো আর আমার এক মাত্র দূর্বল জায়গা আমার মেঘ, আমি থাকতে মেঘ এর কিছু হতে দিতাম না কিন্তু তারপরও ওকে নিয়ে আমি রিস্ক নিতে চাই নি তাই রাস্তা ঘাটে কলেজে ওর সাথে বাজে ব্যবহার করতাম।কিন্তু বাসায় পারতাম না ওকে দূরে রাখতে অনেক সময় কাছে টেনে নিতাম যার ফলে ধ্রুবর লোকেরা জানতে পেরে গিয়েছিলো আমার দূর্বল জায়গা মেঘ তাই ওকে কিডনাপ করে নিয়ে যায়।আর আমার মেঘ কে কষ্ট দেওয়ার কারনে আজ আমি ধ্রুব কেও শেষ করে দিয়েছি কিন্তু ধ্রুব কে মারার সময় মেঘ দেখে ফেলে আর ও ভয় এ সেন্সলেস হয়ে পড়ে এখনো সেন্স ফিরছে না ওর।(কাঁদো কাঁদো স্বরে)
সবাই রাত এর কথায় স্তব্ধ হয়ে বসে পড়ে রাত কাউকে খুন করেছে, তারা মানতেই পারছে না।
রৌদ্র চৌধুরীঃ কাউকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আইন ছিলো তুই আমাদের জানাতে পারতি আমরা ব্যবস্তা নিতাম।
রাতঃ জেল খাটলে কি আমার বন্ধু আমার কাছে ফিরে আসতো?
রৌদ্র চৌধুরীঃ এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।
তাদের কথার মাঝে এক নার্স এসে তাদের বলে মেঘ এর সেন্স ফিরেছে।
রাত সবার আগেই দৌড়ে মেঘ এর কাছে যায়।
মেঘ এর দুগাল ধরে বলতে থাকে,
মেঘ মেঘ তুই ঠিক আছিস, অনেক কষ্ট হয়েছে তাই না?
মেঘ রাত কে দেখে খুব ভয় পেতে লাগে।
নানু মনিঃ মেঘ দি ভাই তুই এমন করছিস কেনো?
মেঘঃ নানু নানু রাত রাত ভাইয়া খুখুনি ও একটা মানুষ কে মেরে ফেলেছে তুমি আমাকে ধরবে না আমাকে টাচ করবে না।মামা ভাইয়া কে যেতে বলো এখান থেকে।
মেঘ ভয় এ খুব উত্তেজিত হয়ে পরে,।
নার্সঃ আরে প্রেসেন্ট এমন করলে অসুস্থ হয়ে যাবে তো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত তুই চলে যা আমারা মেঘ কে নিয়ে বাসায় ফিরছি,আর তুই মেঘ এর আশেপাশে থাকবি না এইটাই তোর এতো বছর এর শাস্তি।
রাতঃ কিন্তু বাবা মেঘ কে ছাড়া ( রাত আর কিছু বলতে পারলো না)
রৌদ্র চৌধুরীঃ আমি আর একটা কথা শুনতে চাই না মেঘ তোমাকে ভয় পাচ্ছে ওর পাশে তোমাকে চাচ্ছে না যাও তুমি।
রাত মেঘ এর দিকে তাকিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বেড়িয়ে গেলো।
মেঘ মুহূর্তেই শান্ত হয়ে গেলো,
নার্সঃ উনাকে নিয়ে যেতে পাড়েন স্যার বলেছে কোনো সমস্যা নেই অতিরিক্ত ভয় এ সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে, সাবধানে রাখবেন আর এই ঔষধ গুলো খাওয়াবেন।
মেঘ কে নিয়ে সবাই বাসায় পোঁছাল রাত তখন ১২ টা,
রাত এখনো বাসায় ফিরে নি কোনো এক নির্ঝন জায়গায় গাড়ি রেখে এক এর পর এক সিগারেট খাচ্ছে।
আর ভাবছে,
আমার মেঘ আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে, আমি ওর সামনে গেলে ও ভয় পায়, যেই মেঘ কিনা আমার পাশে সব থেকে বেশি শান্তশিষ্ট ভাবে থাকতো।যতই অসুস্থ থাকতো না কেনো আমি ওর পাশে থাকলে ও সুস্থ হয়ে যেতো, সেই মেঘ আমাকে দেখলে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। আমি তো ধ্রুব কে মারতাম না শুধু তোর গায়ে হাত দিয়েছে তাই মেরেছি তোকে কষ্ট দিয়েচি তাই মেরেছি এইটা আমার অপরাধ?
আজ রাত এর খুব কষ্ট হচ্ছে শুধু একটা কথা ভেবে মেঘ এর থেকে দূরে কি ভাবে থাকবে মেঘ কে সারাদিন এ একবার জড়িয়ে না ধরলে যে রাত এর কিচ্ছু ভালো লাগে না। সেই মেঘ থেকে কি ভাবে দূরে থাকবে ও।
বাসায়,
সাহেলা বেগমঃ রাত এখনো বাসায় ফিরে নি( রৌদ্র চৌধুরী কে উদ্দেশ্য করে)
রৌদ্র চৌধুরীঃ আমি ফোন দিচ্ছি।
রৌদ্র চৌধুরী রাত কে ফোন দিচ্ছে।
রাত এর ফোন বাজচ্ছে রাত তা দেখেও রিছিভ করছে নিজের বাবার উপর অভিমান করে।
বাবা তুমি তো জানো আমি মেঘ এর থেকে দূরে থাকতে পারবো না তো কেনো এমন করলে আমার সাথে?
বার বার ফোন বাজাতে রাত ফোনটা রিছিভ কটে হ্যালো বললো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত তুই কোথায় এতো রাত হয়ে গিয়েছে তুই এখনো বাসায় ফিরিস নি বাসায় আয় বাবা।
রাতঃ আমার এখন ইচ্ছে করছে না বাবা পরে আসবো।
সাহেলা বেগম রৌদ্র চৌধুরীর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে,
রাত জেদ করিস না বাবা বাসায় আয় আমি জানি তুই মেঘ থেকে দূরে থাকতে পারবি না কষ্ট হবে কিন্তু মেঘ তোকে ভয় পাচ্ছে ওর ভয়টা একটু কাটুক তারপর না হয় ওকে বুঝিয়ে বলবো এখন বাসায় আয়।
রাতঃ আসছি ( অভিমানি স্বরে)
নীলা মেঘকে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়।
নানু মনি মেঘ এর পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
নীলাঃ নানু মনি তুমি যাও ঘুমিয়ে পড়ো।
বাড়ির সবাই ডিনার করেঔ নিয়েছে,শুধু সাহেলা বেগম নিজের ছেলের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে।
রাত প্রায় ১ টা কলিং বেল বাজলে সাহেলা বেগম দরজা খুলে দেয়।
রাত এর দিকে তাকাতেই সাহেলা বেগম এর বুকের ভিতর টা কেপে উঠে, তার গুছানো পরিপাটি ছেলেটি কেমন অগোছালো লাগেছে, চুল গুলো কেমন উসকো খুসকো।
শার্ট টা কেমন এলোমেলো ভাবে পরে আছে।
রাত কোনো কথা না বলে ভিতরে ডুকে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো।
সাহেলা বেগমঃ রাত খেয়ে যা
রাতঃ খিদে নেই আম্মু।
সাহেলা বেগমঃ আমার খিদে আছে তুই না খেলে আমিও খাবো না আমিও তোর জন্য না খেয়ে থাকবো।
রাত মায়ের দিকে ঘোরে বললো,
তুমি খাও নি?
সাহেলা বেগমঃ আমার ছেলেটা কষ্টে থাকবে আর আমি খাবো কি করে?
রাত মা কে এসে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো আর বলতে লাগলো,
মা তুমি তো জানো আমি মেঘ কে ছাড়া থাকতে পারবো না ওর থেকে দূরে আমি কি করে থাকবো?
সাহেলা বেগমঃ চিন্তা করিস না বাবা মেঘকে একটু সুস্থ হতে দে সব ঠিক হয়ে যাবে।চল আমি তোকে খাইয়ে দেই।
সাহেলা বেগম রাত কে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়।
রাত একটা চামচ নিয়ে মা কে খাইয়ে দেয়।
দুজন খাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে যায়।
রাত রুমে গিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,আজ সারা দিন খুব দকল গিয়েছে।
ফ্রেশ হয়ে একটা থ্রি কোয়াটার পেন্ট আর হোয়াইট কালার এর একটা টি শার্ট পরে খাটে বসে।
খুব অস্থির লাগছে আর এই অস্থিরতার কারন কি তা রাত খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারছে।
রাত আর এক সেকেন্ড দেরি না করে মেঘ এর রুমের দিকে পা বাড়ালো।
কিন্তু গেইট ভেতর থেকে লক করা।
গেইটের সামনে দাড়িয়ে নীলা কে ফোন দেয়।
নীলা ঘুম ঘুম চোখে হ্যালো বলে।
রাতঃ গেইট খোল।
নীলাঃ কেনো?
রাতঃ তুই খোল তো তাড়াতাড়ি।
নীলা গেইট খোলে দিলে রাত তারাহুরো করে ভিতরে ডুকে মধ্যে মেঘ এর কাছে হাঁটু ঘেরে বসে পরে।
রাত মেঘের গালে এক হাত আর চুলের ভাজে এক জাত রেখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
নীলা রাত কান্ড দেখে মুচকি হেসে বেলকনিতে গিয়ে আকাশ কে ফোন দিয়ে কথা বলতে থাকে।
রাত যেনো এই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে তার আর অন্য কিছু দেখার সাধ জাগে না।এই মুখটিতে তার সব সুখ লুকিয়ে আছে।১০ মিনিট মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকে নীলা বেলকনিতে তাই ওর কথা চিন্তা করে মেঘ এর কপালে একটা গভীর চুমু একে চলে যায়।
___________________________
সাকালে মেঘ এর ঘুম ভাংতে মাথাটা কেমন জিম জিম করছে, প্রচন্ড বেথা অনুভব হচ্ছে,উঠতে গিয়েও উঠতে পারছে না।
নীলাঃ আরে তুই কি করছিস আমি হেল্প করছি, চল ওয়াশরুমে নিয়ে যাই।
নীলা মেঘকে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়।
ফ্রেশ হয়ে মেঘ খাটে এসে বসে, কিছুক্ষণ পরে কুসুম খাবার নিয়ে আসে।সাথে সাহেলা বেগম, মিন্নী বেগম এবং নীলার মা।
সাহেলা বেগমঃ মেঘ মা খাবার টা খেয়ে নে।
মিন্নী বেগমঃ আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
আফিল তোয়া দৌড়ে এসে মেঘ এর পাশে বসে।
মিন্নী বেগম মেঘকে খাবার খাইয়ে দেয় আর নীলা ঔষধ খাইয়ে মেঘকে খাটে বসিয়ে তারা ড্রয়িং রুমে চলে আসে।
মেঘ গতকাল এর কথা চিন্তা করতে লাগলো, রাত ভাইয়া একটা মানুষ খুন করতে দুই বার ভাবলো না কি ভাবে পারলো ভাইয়া এমনটা করতে। ভাইয়া তো আামকেও এতো বকে মারে যদি কখনো রাগের মাথায় আমাকে মেরে ফেলে।
তখনি রাত মেঘ এর রুমে আসলো।
রাত কে দেখে মেঘ ভয় এ পিছিয়ে বসে আর বিছানার চাদর খামছে ধরে।
রাতঃ মেঘ
মেঘঃ তুমি চলে যাও আমার সামনে আসবে না তুমি পচা তুমি তুমি আামকে মেরে ফলবে।
রাতঃ মেঘ পাগল হয়ে গিয়েছিস তোকে আমি মারবো কেনো?
মেঘঃ তুতুমি ঐ লোকটাকে কি ভাবে মারলে ঐ লোকটা মরে গিয়েছে কি ভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে ছিলো।
রাতঃ মেঘ ও তোকে কষ্ট দিয়েছে তাই মেরেছি।
মেঘলাঃ তুমি চলে যাও আমার সামনে আসবে না,নানু মনি নানু মনি।
রাতঃ মেঘ প্লিজ এমন করিস না আমি তোর থেকে দূরে থাকতে পারবো না প্লিজ মেঘ এমন করিস না।
মেঘ কান্নার বেগ বাড়িয়ে দিলো।
রাত এক প্রকার বিরক্ত হয়ে বেড়িয়ে গেলো।
মেঘ এর এমন বিহেভ রাত কে খুব কষ্ট দিচ্ছে।
ড্রয়িং রুমে সোফায় গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো।
সবাই রাত এর দিকে তাকিয়ে রইলো।
নানু মনিঃ কি হয়েছে দাদু ভাই?
রাতঃ কিছু না।
নানু মনিঃ মেঘ এর কাছে গিয়েছিলি?
রাত দিদুন এর দিকে তাকালো আর বললো,
দিদুন মেঘ নয় মেঘলা বলো।
নানু মনি একটু হাসলো।
কুসুম রাত এর জন্য কফি নিয়ে এসে বললো,
ছোট স্যার এই নেন কফি।
রাতঃ খাবো না নিয়ে যাও।
দিদুনঃ দাদু ভাই খেয়ে নে তুই এমন মন খারাপ করছিস কেনো মেঘলা ঠিক হয়ে যাবে।
রাতঃ দিদুন ওর ইগনোর আমার খুব কষ্ট হয়।
রাত দিদুন এর কোলে মাথা রেখে সোয়ে পড়লো।
দিদুন মাথায় হাত ভুলিয়ে দিলো।
হটাৎ রাত এর গতকাল এর কথা মনে পড়লো মেঘ তো নীলার সাথে গিয়েছিলো কেনো গিয়েছিলো?
রাত নীলাকে ডাকলো,
রাতঃ আচ্ছা কাল মেঘ তোর সাথে কোথায় গিয়েছিলো?
নীলা চুপ হয়ে আছে।
দিদুনঃ আসলে রাত নীলা একাটা ছেলের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো,ছেলেটাকে নীলা ভালোবাসে গতকাল নীলাকে ঐ ছেলেটাই দিয়ে গিয়েছিলো।
রাতঃ মানি?
দিদুনঃ ছেলেটাকে নীলা ভালোবাসে গতকাল ছেলেটি এসেছিলো নীলা কে দিতে।
রাতঃ নাম কি?
দিদুনঃ আকাশ।
রাতঃ নীলা তোকে কি বলবো ইস্টুপিট একটা, তুই আমাকে না বলে মেঘ কে বলেছিস ইডিয়ট, তোরা দুজনি ইস্টুপিট।
রৌদ্র চৌধুরীঃ নীলা ছেলেটিকে আসতে বলো তার পরিবার কে নিয়ে।
নীলার হাত পা কাপছে মামার কথা শুনে।
নীলা তাদের সামনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না।
হনহন করে উপরে চলে গেলো।
রুমে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে ধপ করে বসে পড়লো।
মেঘলা নীলাকে দেখে কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো।
কি হয়েছে আপু?
নীলাঃ মামা আকাশের পরিবার কপ আসতে বলেছে।
মেঘঃ সত্যি (উত্তেজিত হয়ে যার ফলে মাথায় হালকা বেথা অনুভব করে)
নলীঃ মেঘ আসতে আসতে।
মেঘঃ যাক আমি কিডনাপ হওয়াতে ভালোই হয়েছে আমাদের কষ্ট করে বলতে হলো না আকাশ ভাইয়ার কথা ।
নীলাঃ কিন্তু মেঘ তুই রাত এর সাথে এমন করিস না ও তোকে খুব ভালোবাসে , রাগের বসে একটা ভুল করে ফেলেছে ও খুব কষ্ট পাচ্ছে।
মেঘঃ আপু তুমি জানে কি ভাবে মেরেছে লোকটাকে। আমার এখন খুব ভয় লাগে আপু রাত ভাইয়া কে দেখলে।
নীলাঃ ও ছোট বেলা থেকে তোর কষ্ট সয্য করতে পারে না, নীলা রাতের সব কথা খুলে বললো কেনো রাত ঐ লোকটাকে মেরেছে।
নেক্সট পার্ট পেজে পাবেন
মেঘলা শুনে অভাক হয়ে গেলো।
ভাইয়ার মাথায় এতো বুদ্ধি?
নীলাঃ হুম ও এমনি প্লিজ তুই ওকে ইগনোর করিস না।
মেঘঃ করবো না কিন্তু ভাইয়া কে তো একটি শাস্তি পেতেই হবে, আমাকে অনেক বকেছে মেরেছে প্রতিশোধ তো আমি একটু নিবো তাই না।
চলবে,
Part 24-25
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২৪+২৫
মেঘঃ করবো না কিন্তু ভাইয়া কে তো একটু শাস্তি পেতে হবে। আমাকে অনেক বকেছে মেরেছে, প্রতিশোধ তো আমি একটু নিবো তাই না।
নীলাঃ ফাজিল দেখিস শাস্তি দিতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়ে যেনো না যায়।
মেঘঃ আচ্ছা তুমি আকাশ ভাইয়া কে বলো।
নীলাঃ হুম।
নীলা আজ অনেক খুশি, তার ভালোবাসার মানুষটিকে সে পেতে চলছে।
নীলা ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো।
মেঘ নীলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
আর মনে মনে রাত এর কথা বলতে লাগলো,অনেক ভাগ্য করে এমন ভালোবাসা পাওয়া যায়,সত্যি আমি খুব ভাগ্যবতী।
সারা দিন এইভাবেই কেটে গেলো,
বিকেলে আকাশদের বাড়ি থেকে লোক আসবে,তাই খাবার এর আয়োজন করা হচ্ছে।
নীলা খুব এক্সসাইটেড,তার আনন্দ দেখে কে।
মেঘঃ আপু তুমাকে আজকেই দিয়ে দিবো ভাইয়ার সাথে তুমি যে খুশি হচ্ছো আল্লাহ।
নীলাঃ মেঘ আমি কখনো ভাবি নি আকাশ কে আমি এতো সহজে পেয়ে যাবো।
মেঘঃ তাই, আচ্ছা রেডি হয়ে নেও ভাইয়ারা চলে আসবে।
নীলাঃ হুম, তোর শরিলটা কেমন এখন?
মেঘঃ এখন ভালো বেথাটা কমেছে।
নীলাঃ আচ্ছা আমি রেডি হয়ে নেই।
বিকেল ৪ঃ৩০ মিনিট কলিং বেল বাজলে রায়হান চৌধুরী গেইট খোলে দেয়।
আকাশ আর তার পরিবার এসেছে।
আকাশ রায়হান চৌধুরী কে সালাম দিলো এবং রায়হান চৌধুরী তাদের ভেতরে আসার জন্য বললো।
আকাশ, আকাশের বাবা-মা আর ছোট ভাই আসফি এসেছে।
আকাশের ভাই আসফিও আকাশের মতোই স্মার্ট।
কুসুম এবং মামনিরা তাদের খাবার দিলো।
তারা বড়রা কথা বলছে।
রাতও আছে রাত আকাশ এবং আসফির সাথে কথা বলছে।
সাহেলা বেগমঃনিলয় নীলা আর মেঘ কে ডেকে নিয়ে আয়।
নিলয় নীলা এবং মেঘ কে ডেকে নিয়ে আসলো।
নীলা একটা জামদানী জলপাই রং এর একটা শাড়ি পরেছে।
হালকা একটু সেজেছে।
মেঘ নীল রং এর একটা সেলোয়ার-কামিজ পরেছে সাথে কয় একটা চুরি হাতে,কোনো সাজুগুজু করে নি মাথায় বেন্ডেজ, চুল গোলো বেনি ঘাথা।
কিন্তু তারপরও মেঘ কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
রাত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেঘ এর দিকে।
রাতঃ এই মেয়েটা সত্যি আমাকে পাগল করে দিবে,অসুস্থ তারপরও এতো সুন্দর কেনো লাগে তোকে মেঘ?
আসফি নীলাকে আগে থেকেই চিনে কিন্তু মেঘকে না।
রৌদ্র চৌধুরী মেঘ আর নীলাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
আকাশের মা নীলাকে তার কাছে টেনে তার পাশে বসিয়ে দিলো।
অন্যদিকে আসফি মেঘ এর দিকে তাকিয়ে আছে।
আর মনে মনে ভাবছে যাক এতো কিউট একটা বেয়ান পেয়েছি, তাহলে গতকাল এই বেয়ান কিডনাপ হয়েছে।
এতো কিউট হলে তো কিডনাপ হওয়ারি কথা।
মেঘ নানু মনির পাশে গিয়ে বসলো।
আকাশের বাবাঃ আমাদের বউ মা কে আমরা যত তাড়াতাড়ি পারি আমাদের বাসার লক্ষি করে নিতে চাই।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে অবশ্যই যে খানে ছেলে মেয়ে রাজি সে খানে আমরা আর কি বলবো? নীলা যখন আকাশ কে পছন্দ করেছে ওর পছন্দের উপর নির্ভর করে আমরাও রাজি।
বড়রা বিয়ে নিয়ে কথা বলছে তাই রাত বললো আকাশ কে।
আকাশ চলো আমরা ছাদ থেকে ঘোড়ে আসি নীলা চল।
নীলা মেঘ এর হাত ধরে নিয়ে গেলো।
আকাশ আর রাত সামনে হাঁটছে সাথে আসফি।
আর নীলা মেঘ ওদের পেছনে।
ছাঁদে গিয়ে রেলিং এর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো ওরা।
রাতঃ আকাশ যাও তোমার বউ এর সাথে সময় কাটাও।
রাত এর কথায় নীল এবং আকাশ দুজনি লজ্জা পেলো।
রাত বার বার মেঘ এর দিকে তাকাচ্ছে।
মেঘ ও বললো,
হে আপু ভাইয়া তোমরা কথা বলো।
আসফিঃ হে ভাইয়া তোমরা যাও আমি আমার বেয়ান এর সাথে পরিচয় হই।
আসফির কথায় রাত আসফির দিকে তাকালো।
(নেক্সট পার্ট পেজে পাবেন)
মেঘ ও একটা সুযোগ পেলো।
মেঘঃ হে চলুন আমরা ঐ দিকটায় গিয়ে কথা বলি চলেন।
নতুন গেস্টদের সামনে রাত কিছু বলতেও পারছে না একা একা রাগে ফুসছে।
মেঘ আর আসফি ছাদের অন্যপাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
আর খুব হেসে হেসে কথা বলতে লাগলো আসফির সাথে
রাত নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে রেলিং ধরে চোখ বুঝে আছে।
নীলা আকাশের কথায় ব্যস্ত এই দিকে কি হচ্ছে সে খেয়ালি করি নি।
আকাশ দেখতে পেলো রাত একা দাঁড়িয়ে আছে।
আকাশ নীলা কে বললো,
রাত একা ঐ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে কেনো?
নীলা দেখতে পেলো মেঘ আসফির সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলছে।
নীলাঃ এই পাজি মেয়েটা যা করে কি দরকার ছেলেটাকে কষ্ট দেওয়ার।
নীলা আকাশের দিকে তাকাতেই বুঝে গেলো আকাশ রেগে আছে।
নীলাঃ আচ্ছা চলো আমরা পরে কথা বলো।
আকাশ আর নীলা রাত এর সামনে এসে ধারালো।
নীলাঃ চল আকাশ নিচে চল।
রাতঃ নীলার দিকে তাকালো আর বললো,
তোদের কথা শেষ।
নীলা একবার মেঘ এর দিকে তাকিয়ে আর এক বার রাত এর দিকে তাকিয়ে বললো,
হে শেষ।
আচ্ছা তোরা নিচে যা।
নীলাঃ তুই?
রাতঃ আসছি মেঘ কে আমার কথা শুনে যেতে বলিস।
নীলাঃ মেঘরে তুই শেষ।
নীলা আর আকাশ মেঘলা আর আসফি কে ডাকলো।
মেঘ আর আসফি নীলা আকাশের সামনে আসলো।
নীলা বললো আসফি চলো আর মেঘ আকাশ যেনো তোকে কি বলবে শুনে আসতে বললো।
মেঘ চোখ গুলো রসগোল্লার মতো করে নীলার দিকে তাকালো।
আকাশ আর আসফি হাটতে লাগলো।
নীলাঃ দেও শাস্তি এবার বুজো( মেঘ এর কানের কছে গিয়ে)
মেঘঃ আমি যাবো না চলো তো।
হাঁটতে শুরু করলে তখনি রাত মেঘ এর হাত খপ করে ধরে ফেলে।
রাতঃ নীলা তুই যা
নীলাঃ রাত
রাত’ঃ যেতে বলেছি
মেঘ এর হার্ট বিট দ্রুত চলছে ভয় এ হাত পা কাপছে।
নীলা দ্রুত পায়ে হেটে চলে গেলো।
অন্যদিকে রাত মেঘ কে চিলেকোঠার দেয়াল এর সাথে দু হাত দিয়ে মেঘ এর দু হাত চেপে ধরলো।
রাতঃ মেঘ খুব বেশি হয়ে যাচ্ছে, যা আমি পছন্দ করি না তুই তাই করছিস।( চোখ দুটি লাল হয়ে গিয়েছে রাগে)
মেঘ চোখ মুখ খিচে দাড়িয়ে আছে।
রাতঃ তোর থেকে দূরে থাকতে পারবো না কেনো বুঝতে পারছিস না তুই।
মেঘঃ ভাভাইয়া ছারো আমার খুব ভয় হচ্ছে বেথা লাগছে। ততুমি আমার কাছে আসবে না তুমি পঁচা।
মেঘ এর এমন কথা রাত এর হজম হলো যদি মেঘ সুস্থ থাকতো কশিয়ে চর বসিয়ে দিতো কিন্তু অসুস্থ তাই কিছু বলতেও পারছে না আবার খুব রাগ ও হচ্ছে।
রাত মেঘ কে ছেড়ে রাগের মাথায় দেয়াল এ খুব জোরে ঘুসি মারে যার ফলে হাতের কিছু অংশ থেতলে যায় আর বিন্দু বিন্দু রক্ত জমে।
মেঘ মুখে হাত দিয়ে জল বরা চোখ নিয়ে রাত এর হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো।
ভাইয়া রেগে ছাদ থেকে নেমে চলে যেতে নিলে,
ভাইয়া যেও না তোমার হাতে বেথা পেয়েছো।
কিন্তু ভাইয়া আমার কথা না শুনে চলেই গেলো আমিও ভাইয়ার পিছু নিলাম।
নিচে নেমে কারো সাথে কোনো কথা না বলে গাড়ি নিয়ে কোথায় যেনো চলে গেলো।
আমি মন খারাপ করে নীলা আপুর দিকে তাকালম।
নীলাঃ যা ভেবে ছিলাম এই মেয়ে গন্ডগোল বাদাবেই কি দরকার ছিলো আসফির সাথে ভাব নেওয়ার এখন বুঝো।( মনে মনে)
বড়দের কথা শেষ হলে আকাশরা চলে যায়।
নীলা রুমে এসে শাড়ি চেঞ্জ করে নেয়।
মেঘলা এখনো ড্রয়িং রুমেই বসে আছে, রাত এর জন্য খুব মন খারাপ লাগছে,
তাকে শাস্তি দিতে গিয়ে এখন আমি নিজেই শাস্তি পাচ্ছি।
কিন্তু ভাইয়ার হাতেও তো খুব বেথ পেয়েছে কোথায় গেলো?
নীলা এসে মেঘ এর পাশে বসলো,
নীলাঃ বলে ছিলাম আমি বারাবাড়ি করিস না কিন্তু শুনলি না।
মেঘঃ আচ্ছা আমি কি তার জন্য কারো সাথেই কি কথা বলতে পারবো না?
নীলাঃ মেঘ ভালোবাসা এমনি হয়, ভালোবাসা মানুষের পাশে অন্য কোনো ছেলে বা মেয়েকে সয্য করা যায় না,আমি যেমন আকাশের পাশে অন্য কোনো মেয়েকে সয্য করতে পারি না ঠিক তেমনি আকাশ ও তোর পাশে অন্য কোনো ছেলেকে সয্য করতে পারে না,ও তকো ছোট বেলা থেকে খুব ভালোবাসে।
মেঘঃ আচ্ছা আপু আমিও কি রাত ভাইয়া কে ভালোবাসি?
নীলাঃ কেনো তুই বুঝিস না ভালোবাসিস কিনা?
মেঘঃ জানি না আমি বুঝতে পারছি না কিন্তু তার জন্য আমার আলাদা একটা অনুভূতি লাগে, সে পাশে থাকলে সব কিছু কেমন সুন্দর লাগে।ভাইয়া যখন আমাকে স্পর্শ করে আমার হার্টভিট বেরে যায়।সে আমাকে যতই আঘাত করুক কষ্ট দেক কিন্তু তার থেকে আমি দূরে যেতে পারি না, তাহলে কি এই গুলোই ভালোবাসা?
নীলাঃ পাগলি একটা ভালোবাসা এমনি হয়।
মেঘঃ কিন্তু আমি কেনো বলতে পারি না ভাইয়াকে যে আমি তাকে ভালোবাসি, এতো ভয় হয় কেনো তাকে ভালবাসি বলতে?
নীলাঃ ঠিক হয়ে যাবে।আচ্ছা আমি রাত কে ফোন দেই দেখি কোথায় আছে।
নিলয়ঃ কিরে দুই পেত্নী কি করিস তোরা?
মেঘঃ তোর বিয়ের কথা বলছি
নিলয়ঃ বিয়ে আর আমি জীবনেও তোদের মতো পেত্নী কে বিয়ে করবো না, মেয়ে মানুষ শুধুই পেরা।
মেঘঃ তোর মতো সয়তান কে কোন মেয়ে বিয়ে করবে রে তোকে বিয়ে করার থেকে কচু গাছ এর সাথে ফাসি দেওয়া ভালো।
নিলয় মেঘ এর চুল টেনে ধরলো,
মেঘ বেথায় নেকা কান্না করতে লাগলো।
নীলার মাঃ আরে তোদের সমস্যা টা কি বলতো ৫ মিনিট কি এক সাথে থাকতে পারিস না?
মেঘঃ তোমার ছেলে শুধু আমাকে মারে।
নিলয়ঃ তুই যে ভালো তাই তোকে মারি।
রাত ১০ টা রাত এখোনো বাসায় আসে নি,
রাত এর বাবা রৌদ্র চৌধুরী বার বার ফোন দিচ্ছে ছেলেকে কিন্তু রিছিভ করছে না।
রৌদ্র চৌধুরীঃ কোথায় গেলো ছেলেটা ফোন ও রিছিভ করছে না।
রায়হান চৌধুরীঃ আরে চিন্তা করো না দা ভাই হয়তো বন্ধুদের সাথে আছে।
সাহেলা বেগমঃ ও তো এতো রাত পর্যন্ত বাহিরে থাকে না।
রাত ১১ টা সবাই খুব দুশ্চিন্তায় পরে গেলো রাত ফোন রিছিভ করছে না, তার উপর বিকেলে হুট করে বেড়িয়ে পরা কেমন যেনো লাগছে সবার।
মেঘ মন খারাপ করে সোফায় বসে আছে।
মিন্নী বেগমঃ আচ্ছা মেঘ তোর সাথে কিছু হয়েছে রাত এর?
মেঘ কি বলবে বুঝতে পারছে না। তাই চুপ করে বসে রইলো মামনির কথার উত্তর দিলো না।
নীলাঃনীলা ও আর কিছু বললো না
রাত ১২ টা ভাজে কলিং বেল বাজে।
মেঘ এক মুহূর্তের জন্য দেরি না করে দৌড়ে কোনো কিছু না ভেবে গেইট খোলে দিলো।
সবাই দ্রুত পায়ে হেটে গেইট এর সামনে যায়।
হে রাত এসেছে,
সাহেলা বেগম ছেলেকে দেখে জড়িয়ে ধরে।
কই ছিলি তুই বাবা সবাই কত চিন্তা করছে।
রাতঃ কেনো মা আমি কি বাচ্চা?
রৌদ্র চৌধুরীঃ তুমি বাচ্চা না কিন্তু তারপরও তোমার জন্য আমাদের চিন্তা হয়।কত বার ফোন দিয়েছি তোমাকে রিছিভ করো নি কেনো?
রাতঃ বাবা ফোনটা বাসায় রেখে গিয়েছিলাম।
রৌদ্র চৌধুরীঃ কাজটা তুমি একদম ঠিক করো নি তুমি কখনো সুদরাবে না।
রৌদ্র চৌধুরী রেগে নিজের রুমে চলে গেলো।
সবাই রাত উপর রাগ করে চলে গেলো।
রাত ও রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রইলো কারন তার ঘুম পাচ্ছে না।
শুধু মেঘ এর কথা মাথয় ঘোরপাক খাচ্ছে।
মেঘ বিকেলে দেখলো আমার হাতে আঘাত লেগেছে তারপরও একটাবার ফোন দিলো না,আমার ফোন তো আমার সাথেই ছিলো সবাই ফোন দিয়েছে কিন্তু মেঘ দেয় নি তাহলে কি ও আামকে ভালোবাসে না? আমি কি ওর উপর বেশি অধিকার খাটাচ্ছি?
অন্য দিকে নীলা আর মেঘ।
নীলাঃ আজ তুই যদি সব ঠিক না করে নিস তো আমি তোর সাথে এই জীবনে আর কথা বলবো না, অনেক কষ্ট দিয়েছিস ছেলেটাকে,এতো যা কিছু হয়েছে শুধু তোর জন্য। এখন তুই ওর রুমে যাবি আর বলবি তুই রাত কে ভালোবাসিস।
মেঘঃ ইম্পসিবল আপু কখনো না এইটা আমার ধারা সম্ভব না আপু প্লিজ জোর করো না।
নীলাঃ ওকে ফাইন গেলাম আমি তোর রুম থেকে আজকের পর থেকে আমার সাথে তুই কথা বলার চেস্টাও করবি না।
মেঘঃ আপু ( কান্না করে)
নীলাঃ বায়( রুম থেকে চলে যাওয়ার ভান করে)
মেঘঃ আপু যাচ্ছি।
নীল থেমে গিয়ে মেঘ কে বললো,
যা
মেঘঃ আপু দেখো রাত ১ঃ৩০ বাজে এতো রাতে না গেলে হয় না কাল সব ঠিক করে নিবো প্রমিজ।
নীলাঃ কোনো কথা হবে না
মেঘঃ যাচ্ছি যাচ্ছি ভাই এর জন্য দরদ আমার জন্য কিচ্ছু নাই, গেলাম মরে না গেলে দেখা হবে।
নীলাঃ মুচকি হাসলো।
মেঘ আবার রুমে ডুকে পরলো আর নীলা কপাল কুঁচকে তাকালো আর বললো,
কি হলো?
মেঘঃ আপু না গেলে হয় না।
নীলাঃ ওকে বায় থাক তুই।
মেঘঃ যাচ্ছি তো।
বলে এক বুক সাহস নিয়ে পা বাড়ালো রাত এর রুমের দিকে
মেঘ এর হার্টভিট বাড়তে লাগলো, অন্য সময় রাত এর কাছে যেতে এমন লাগে না কিন্তু আজ মনে হচ্ছে মেঘ এর হার্টটা বেড়িয়ে যাবে।
মেঘ রাত এর রুমের সামনে দাড়িয়ে রইলো কিন্তু ভেতরে ডুকার সাহস পাচ্ছে না।
আপু আজ আমি মরেই যাবো।।
বলে চোখ বুঝে রুমে ডুকে পরলো দরজা লক করা ছিলো না।
মেঘ সম্পূর্ণ রুমে চোখ বুলিয়ে দেখলো কিন্তু রাত নেই।
বারান্দায় চোখ যেতে রাত কে দেখতে পেলো, এক পা দু পা করে বারান্দায় গিয়ে রাত এর পাশে দাঁড়ালো।
রাত অনেকটা অভাক হলো কিন্তু মেঘ কে বুঝতে না দিয়ে একবার মেঘ এর দিকে তাকিয়ে দেয়াল এ হেলান দিয়ে বুকে হাত বাজ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
মেঘ কি বলবে বুঝতে পারছে না মাথা নিচু করে হাত কচলাচ্ছে।
মেঘ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো
রাত ভাইয়া সরি
রাতঃ কেনো? আর এতো রাতে তুই আমার রুমে কেনো, আমাকে তো তুই ভয় পাস তাই না?
মেঘঃ আর এমন করবো না।
রাতঃ তো আমি এখন কি করতে পারি, ওহ আমার কাছে কেনো এসেছিস নতুন বেয়াই আছে ভাব জমা যা।
মেঘঃ আসফি ভাইয়া তো চলে গেছে আবার আসলে ভাব জমাবো।
রাতঃ কি বললি তুই
মেঘঃ না মানে তুমি বললে তাই আর কি।
ততোমার হাতটা দেখি এতো রাগ কেনো তোমার? ( একটু তুতলিয়ে)
রাতঃ আমার হাত দেখতে হবে না ঘুমাতে যা।
মেঘঃ হে হে ঘুমাবো একদম চিরতরে ঘুমিয়ে পড়বো।
মেঘ এর কথায় রাত এর প্রচন্ড রাগ উঠে গেলো
এই মেয়ে কে বার বার বলি এমন বাজে কথা বলবি না তারপরও,
মনে মনে ভেবে রাগের মাথায় বারান্দার দেয়ালে খুব জোরে দু হাত দিয়ে চেপে ধরে।
মেঘ খুব ভয় পেয়ে যায়।
সাথে খুব বেথাও পায়,
ভাইয়া লাগছে ছারো।
রাতঃ লাগুক অনেক বার বেড়েসিছ তুই আমার ভালোবাসার কোনো দামি নেই তোর কাছে। আমি এতো সময় বাহিরে ছিলাম একবারও তুই ফোন দিস নি। আবার এখন আসছিস মায়া দেখাতে কেনো এমন করিস মেঘ কেনো বুঝিস না আমাকে?বড্ড বেশি ভালোবাসি যে আমি তোকে খুব ভালোবাসি, প্লিজ একবার বল না শুধু একবার বল তুই আমাকে ভালোবাসিস প্লিজ মেঘ।( হাতের বাদন আলগা করে করুন স্বরে)
মেঘ রাত এর কথায় বরফ হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবছে আমিও তো ভালোবাসি কিন্তু ভাইয়ার মতো এতো সহজ ভাবে কেনো বলতে পারি না যে আমিও তাকে ভালোবাসি।
রাতঃ তুই আমাকে চাস না , ভালোবাসিস না আমাকে?
মেঘঃ,,,,,,
রাতঃ কি হলো বল( নিজের দু হাত দিয়ে মেঘ এর দু গালে হাত দিয়ে)
মেঘঃ ভাভা
রাতঃ কি ভাবছিস প্লিজ বল শুধু একবার মেঘ একবার শুনতে চাই তোর মুখ থেকে ভালোবাসি কথটা প্লিজ লক্ষটি বল।
মেঘঃ ভালোবাসি আমি তোমাকে ( বলেই রাত কে দাক্কা দিয়ে এক দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে হাঁপাতে লাগে)
চলবে…..
Part 26-27
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২৬+২৭
মেঘঃ ভালোবাসি তোমাকে,( কথাটা বলেই রাত কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজের রুমে দরজা লাগিয়ে হাঁপাতে লাগলো)
নীলাঃ কি হয়েছে তোর এমন করছিস কেনো?
মেঘঃ আপু আপু ( নীলা কে ধরে ঘোরাতে ঘোরাতে)
নীলঃ আরে পাগল হয়ে গেলি নাকি?
মেঘঃ আপু আমি বলে দিয়েছি পেরেছি আমি।
নীলাঃ হাহাহা পাগলি একটা যা এবার ঘুমিয়ে পর অনেক রাত হয়েছে।
মেঘ নীলা কে একটা হাগ করে সোয়ে পড়লো।
অন্যদিকে রাত খুশি তে আত্মহারা তার মেঘ তাকে ভালোবাসি বলেছে ভাবতেই রাতের খুশি লাগছে।
রাতঃ পাগলি একটা এই সামান্য একটা কথা তাতে তার কত বাহানা হাহাহা।
মেঘ এ পাশ ওপাশ করছে ঘুম আসছে না রাত এর ও একি অবস্থা এতো রাত হয়ে গিয়েছে কিন্তু চোখে ঘুম নেই চোখ বুঝলেই মেঘ এর মিষ্টি চেহারা টা ভাসছে।
দুজন দুজনের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে সেটা তারা জানে না।
_________________________________
সকালে,
৭ টা
নীলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে চলে গিয়েছে।
মেঘের যখন ঘুম ভাঙলো ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো ৭ঃ১৫ লাফ দিয়ে উঠে পড়লো।
মেঘঃ ইস কত সকাল হয়ে গিয়েছে আজ নামাজ ও পরা হলো না আর সকালের পরিবেশ টা উপভোগ ও করা হলো না।
মেঘ ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে আসে দেখে নীলা আর নানু মনি বসে আছে, আর নিলয় অন্য পাশে বসে মোবাইল দেখছে আমিও তাদের পাশে বসলাম।
নানু মনিঃ কি অবস্থা এখন মেঘলা দিদি ভাই?
মেঘঃ ভালো নানু মনি
নীলাঃ হে নানু তোমার নাতনি তো ভালো থাকবেই আজ থেকে।
মেঘ নীলার দিকে কপাল কুঁচকে তাকায়।
নীলা মেঘ এর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।
তখনি রাত আসে।
রাত কে দেখে মেঘ এর হার্টভিট দ্রুত চলতে থাকে সাথে কেমন যেনো লজ্জা লাগছে।
রাত মেঘ এর পাশে এসে বসে মেঘ সাথে সাথে উঠে দ্রুত সরে চলে আসে আর নিলয় এর সাথে এসে বসে।
রাত মেঘ এর দিকে একটা রাগি লুক নিয়ে তাকায় মেঘ বুঝেও না বুঝার অভিনয় করে।
রাত এর পাশে সে বসতেই পারবে না ভালোবাসি কথাটা বলার পর থেকে কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে।
সকাল ৮ সবাই নাস্তার টেবিলে নাস্তা করার জন্য বসে এখানেও মেঘ রাত এর পাশে বসে নি প্রতি দিন রাত এসে বসে কিন্তু আজ মেঘ নিলয় এবং নীলার মাঝে বসেছে যার কারনে রাত আর বসতে পারলো না মেঘ এর পাশে।
ছোট মামা বড় মামা অফিস চলে যায়।
আমি কলেজ যাওয়ার জন্য রেডি হতে রুমে চলে আসি।
রাত ভাইয়া কলেজ এর জন্য রেডি হয়ে বেড়িয়েছে তাই সে ড্রয়িং রুমে বসে আছে সাথে নীলা আপু,মামনিরা সবাই।
আমি রেডি হয়ে নিচে আসি।
মেঘঃ এই চল বদমাশ জিনদের আত্মা।
নিলয়ঃ পেত্নী আমার হাতের মার না খেলে তোর ভালো লাগে না তাই না?
মেঘঃ চুপ বেয়াদব পোলা।
নিলয় মেঘ এর বিনুনি টেনে ধরে মেঘ বেথায় চিৎকার দিয়ে উঠে।
মেঘঃ কুত্তা ছার ( নেকা কান্না করে)
রাত এদের কাহিনি দেখছে যখন মেঘ বেথায় চিৎকার দেয় বুকটা ধক করে উঠে।
নিলয় ছার আর তাড়াতাড়ি চল।
রাত এর কথায় নিলয় মেঘ কে ছেড়ে দেয়।
মেঘ ছারা পেয়ে নিলয় এর পিঠে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। আর বো এক দূর দিয়ে গাড়ির কাছে চলে আসে।
নিলয়কে রাত আটকে দেয়।
রাতঃ নিলয় একদম ওর পিছু নিবি না চল আজ আমার সাথে কলেজ যাবি।
নিলয় রাত এর কথার অবাধ্য হলো না।
মেঘ দাড়িয়ে আছে,
নিলয় রাত এর গাড়িতে উঠে বসলো।
রাতঃ মেঘ তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বস।
মেঘ প্রতিদিন যে গাড়িতে যায় সে গাড়িতে বসতে নিলে রাত মেঘ এর হাত ধরে আটকে দেয়।
আর একটা সয়তানি হাসি দিয়ে বলে আমার বউ আমার সাথে যাবে আমার পাশে বসে।
মেঘ রাত এর কথা শুনে চোখ দুটি রসগোল্লা করে তাকিয়ে থাকে।
রাত একটা মুচকি হেসে মেঘ এর হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।
____________________________
কলেজে আশা, তিথি,সাগর, জিহাদ মেঘকে দেখে হা হয়ে আছে কারন ওরা কলেজ গেইট এর সামনে দাড়িয়ে আছে।
তিথিঃ এই মেঘ রাত স্যার এর গাড়ি তে
সাগরঃ স্যার এর গাড়িতে মেঘ যে স্যার মেঘ কে দুচোখে দেখতে পারে না
জিহাদঃ আরে নিলয় আছে সাথে হয়তো ওর জন্য নিয়ে আসছে।
ওরা কথা বলছে মেঘ গাড়ি থেকে নেমে তিথি আর আশা কে জড়িয়ে ধরে।
আশাঃ দুস্ত তুই ঠিক আছিস?
মেঘঃ একদম ফিটফাট।
তিথিঃ আচ্ছা চল ভেতরে যাওয়া যাক।
ওরা সবাই ভেতরে চলে আসলো রাত আগেই চলে এসেছে।
সাগরঃ কিরে নিলয় তুই আসিস নি কেনো?
নিলয়ঃ পেত্নীর লিগা পেত্নী যে অসুস্থ ছিলো তাই রা
মেঘঃ নিলয় কুত্তা
নিলয়ঃ মেঘলা কুত্তী
সাগর ওরা সাবাই হেসে দেয় এদের দুজন এর কাহিনি দেখে।
ক্লাস শুরু হলে রাত ক্লাস এ আসে।
আজ রাত কে খুব শান্ত লাগছে সব স্টুডেন্ট অভাক হচ্ছে এই ভেবে রাত আজ মেঘ এর সাথে খুব ভালো ভাবে কথা বলছে।
রাত বার বার মেঘ এর দিকে তাকাচ্ছে দু পাশে দুটি বেনুনি কলেজ ড্রেসে তার মেঘ কে একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে।
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাত মেঘ এর দিকে।
নিলয় রাত এর দিকে খেয়াল করে মেঘ এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে।
নিলয় রাত এর কাছে এসে বলে।
ভাইয়া যে ভাবে তাকিয়ে আছো মনে হচ্ছে আজকেই কলেজের সবাইকে বলে দিবা মেঘ তোমার ছোট বেলার বউ।
নিলয় এর কথায় রাত এর ঘোর কাটে।
রাতঃ কি বললি তুই( একটু রাগি ভাব নিয়ে)
নিলয়ঃ না মানি ঐ আর কি বাসায় গিয়ে সামনে বসিয়ে যত মন চায় দেখো এখন ক্লাস করো
নিলয় নিজের জায়গায় চলে যায় রাত নিলয় এর কথায় একটু মুচকি হাসে।
ক্লাস শেষ মেঘ আর নিলয় সবাই কে বিদায় জানিয়ে চলে যায় রাত এর সাথে।
বাসায় গিয়ে তিনজন ফ্রেশ হয়ে লান্স করে নেয়।
বিকেল ৪ টা নীলা আর মেঘ প্রতিদিন এর মতো আজও ছাদে শীতের বিকেলটা অনুভব করছে আর কথা বলছে।
নীলা খুব খুশি কারন আগামি শুক্রবার তারা সবাই আকাশ এর বাড়িতে যাবে আর ঐদিন বিয়ে ডেট ফিক্সড করা হবে।
নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়া ভাগ্যের বেপার যে ভাগ্য সবার থাকে না কিন্তু নীলা সে ভাগ্য নিয়ে জন্মিয়েছে।
মেঘঃ আপু তুমি এতো দিন ছিলে খুব ভালো লেগেছে কিন্তু তুমি চলে গেলে আমি আবার একা হয়ে যাবো।
নীলাঃ কই একা নিলয় আছে রাত আছে
মেঘঃ ওরা কি তোমার অভাব পূরন করতে পারবে?
নীলাঃ আমি যতটুকু জানি আমাদের মেঘ রানীর রাত পাশে থাকলে আর কাউকে লাগে না।
মেঘ একটু লজ্জা পায় নীলার কথায়।
মেঘঃ হুম বলছে তোমাকে ঐ রাক্ষস টা কে আমি দেখতেই পারি না, রাক্ষস একটা হনুমান একটা আমাকে শুধু বকে এত্তো এত্তো ভয় লাগে। (অন্যদিকে মুখ করে কথা গুলো বলে)
আচ্ছা নীলা আপু আকাশ ভাইয়া কি( কথাটা বলার আগেই মেঘ এর চোখ দুটো রসগোল্লা হয়ে গেলো।
রারাত ভাইয়া
রাতঃ হুম এতোক্ষণ কি বললি( ব্রু নাচিয়ে)
মেঘঃ ককই আমি কিছু বলি নি তো নীলা আপু কোথায় গেলে তুমি আসছি আমি( বলে দৌড় দিতে নিলে রাত খপ করে মেঘ এর হাত ধরে নেয়)
রাত ভাইয়া সরি তুমি খুব ভালো কে বলেছে তুমি রাক্ষস রাক্ষস তো নীলয় ঐ আর কি ভুলে বলে ফেলেছি এবার এর মতো ছেরে দেও।
রাত মেঘ কে এক টানে নিজের বুকে ফেলে দেয়।
মেঘ হুমড়ি খেয়ে রাত এর বুকে এসে পরে আর দু হাত দিয়ে রাত এর টি শার্ট টি খামছে ধরে।
রাতঃ আমি কি শুধু তকে বকি মেঘ বউ?(নরম স্বরে মেঘ এর সামনের চুল গুলো কানের পাশে গুজে দিয়ে)
মেঘঃ না না মানে হুম বকো।
রাতঃ এখন থেকে আর বকবো না শুধু ভালোবাসবো আমার মেঘ কে ( মেঘ কে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
মেঘ এর হার্টভিট ক্রমশ বেড়ে চলছে।হাত পা বরফ এর মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। রাতের থুতনি মেঘ এর ঘাড়ে এতে যেনো মেঘ বরফ এর মতো গলে যাচ্ছে।
মেঘঃ ভাভাইয়া ছারো।
রাতঃ উমহু ছারবো না চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক একটাও কথা বলবি না। তুই আমার সাথে থাকলে এতো ভালো লাগে কেনো মেঘ আমার দুঃখ কষ্ট সব ভুলে যাই।সত্যি তোর মাঝে আমার প্রান পাখি লুকিয়ে আছে, তকে ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারি না মেঘ।
মেঘঃ যদি কখনো আমি হারিয়ে যাই?
রাতঃ আমি পাগল হয়ে যাবো মেঘ তুই ছাড়া আমার লাইফ ইম্পসিবল ( মেঘ কে আরো শক্ত করে জড়িয়ে)
মেঘঃ একটু ও ভালোবাসো না ভালোবাসলে এতো বকা যায় না।( অভিমানী স্বরে)
রাতঃ আচ্ছা আজ থেকে আর বকবো না কিন্তু কোনো ছেলের সাথে কথা বলা যাবে না তো একদম শেষ করে ফেলবো।
মেঘঃ কোনো ছেলের সাথে বলবো না শুধু আয়াশ ভাইয়ার সাথে বলবো।
রাতঃ কি বললি তুই?( মেঘ কে ছেড়ে দিয়ে)
মেঘঃ হাহাহাহা মঝা করে বললাম।
রাতঃ তবে রে( বলেই মেঘ এর পিছু ছোটে)
মেঘ রাতর হাতে যেনো ধরা না পরে তাই সেও ছোটছে।
এক পর্যায় মেঘ হাঁপিয়ে গিয়ে দাড়িয়ে পরে।
আর প্রতিবার এতো মতো রাত মেঘ কে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে।
কারণ রাত জানে তার মেঘ তার বুকে থাকলে মেঘ এর সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
ছোটো বেলায় এমনটাই হতো।
রাতঃ পাগলি আমার সেই ছোটো বেলার মতো দৌড়ে হাঁপিয়ে যাস।
মেঘঃ তোমার বুকে মাথা রাখার জন্য
রাতঃ কিহহ?
মেঘঃ কিছু না ( বলে রাত এর থেকে সরে রেলিং এর পাশে চলে আসে)
রাত মেঘ এর পাশে গিয়ে মেঘ এর বাঁধা চুল গুলো খুলে দেয়।
মেঘ ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো কি হলো এটা?
রাতঃ আমার ইচ্ছে হলো আমার মেঘ কে খোলা চুলে দেখার তাই।
মেঘঃ খোলা চুল আমার একদমি ভালো লাগে না বিরক্ত লাগে।
রাতঃ তকে বিরক্ত করাই তো আমার কাজ।
মেঘঃ হুম রাক্ষ……..
রাতঃ কি বলতে চাইলি।
মেঘঃককই কিছু না তো।
রাতঃ আমি রাক্ষস?
মেঘঃ নাহ কে বলেছে তুৃৃমি রাক্ষস তুমি আমার মেঘ ভাইয়া।
রাতঃ আচ্ছা মেঘ ভাইয়া না বললে কি হয় না?
মেঘঃ তো তোমাকে ভাইয়া বলবো না কি বলবো?
রাতঃ শুধু রাত বলে ডাকবি
মেঘঃ অস্তাগফিরুল্লাহ তুমি আমার কত বড় আর আমি তোমাকে রাত বলে ডাকবো ছি।
রাতঃ ভালোবাসার মানুষের নাম ধরে ডাকে সবাই( মেঘ কে কাছে টেনে কোমড় জড়িয়ে)
মেঘঃ পারবো না আমি, তোমাকে আমি ভাইয়া বলে ডাকবো।
রাতঃ ওকে ম্যাম ডাকেন আপনি ভাইয়া আপনি এ যোগ এর মেয়ে না আপনি আমার বুড়ি দিদুন।
মেঘঃ ভাইয়া আমি বুড়ি মা হুম
রাতঃ আচ্ছা আপনি বুড়িও না আমার বউ আমার কলিজা,
আমার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল, যাকে ছাড়া আমি একটা মুহূর্ত ভাবতে পারি না, আমার নিশ্বাস তুই,খুব ভালোবাসি তোকে মেঘ খুব বেশি।
মেঘঃ আচ্ছা সন্ধ্যে হচ্ছে আমি নিচে যাই।
রাতঃ হুম ( মেঘ কে ছেরে দিয়ে)
মেঘ চলে যেতে নিলে আবার রাত মেঘ কে এক টানে নিজের বুকে ফেলে দেয় দু হাত দিয়ে মেঘ এর দু গাল চেপে ধরে কপালে একটা গভির চুমু একে দেয়।
মেঘ চোখ বুঝে তা অনুভব করলো।
রাতঃ এবার যা
মেঘ দৌড়ে নেমে গেলো ছাদ থেকে।
রাত একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ভাবতে লাগলো এই দিনটার জন্য তাকে কতটা বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই মেঘ কে ছাড়া সে কতটা বছর দূরে ছিলো প্রতিটা দিন তার কতটা কষ্টপ পার করেছে। অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয় আজ তাই হলো।
নীল আকাশের সূর্যটা লাল বর্ন ধারণ করেছে। আকাশে লালচে একটা ভাব পরেছে সূর্য ডুবার আগে পরিবেশ টা এমনি হয়। মৃদু হাওয়া এসে গায়ে লাগছে সাথে শীত এর তাপমাত্রাও বাড়ছে।পরিবেশটাও যেনো ফুরফুরে হয়ে উঠছে।
পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ, ব্যস্ত নগরী এই ব্যস্তার শেষ নেই। চারো দিকে গাড়ির হর্নের শব্দ অবশ্য গ্রামের পরিবেশটাই সব থেকে ভালো,সারা দিনের কাজ করে সবাই ঘড়ে ফিরে যায়।সন্ধ্যে বেলা ফাকা ফাঁকা রাস্তা শুনসান জনমানব শূন্য রাস্তা থাকে হিমেল হাওয়া, আর চারো দিকে সবুজের খেলা।যা ঢাকা শহরে খোজে পাওয়া যায় না।
রাত ভাবছিলো কথা গুলো এক পর্যায় চারো দিকে আজানের ধ্বনি বেজে উঠলো রাত ছাঁদ থেকে নেমে চলে গেলো মসজিদ এ নামাজ আদায় করতে।
মেঘ নানু মনির রুমে ছিলো সেও নানু মনির রুম থেকে বেড়িয়ে নিজের রুমে গিয়ে ওজু করে নামাজ পরতে শুরু করলো।
আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করলো মেঘ, তাকে এমন একটা ভালোবাসার মানুষ দেওয়ার জন্য। যে তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।
সন্ধ্যা সাতটা,
সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে,
ছোটো মামা,বড় মামা একটু আগে অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে সন্ধ্যার নাস্তায় যোগ দেয়।
কুসুম সবাইকে গড়ম গড়ম কফি দিয়ে যায়।
শীতের সকাল সন্ধ্যা কফি বা চা না হলে দিনটাই মাটি।
( লেখিকা তো এই গড়মেও চা খায়)
মেঘ গরম কফিতে চুমুক দিয়ে চোখ বুঝে কফির সাধ নিচ্ছে।
সবাই যখন কফি খাওয়াতে ব্যাস্ত রৌদ্র চৌধুরী তখন নীলার মাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
শুক্রবার আমরা তো আকাশের বাড়িতে যাচ্ছি, তা বিয়ের ডেট কি তারপরে সপ্তাহে দিয়ে দিবো দি ভাই কি বলিস তুই।
নীলার মাঃ আমি আর কি বলবো নীলার বাবা বেঁচে নেই তোরা যা ভালো মনে করিস তাই কর।
নীলার বুকটা ধুক ধুক করছে, আকাশ কে সে সারা জীবন এর জন্য পেতে চলছে ভাবতেই নীলা খুশিতে আত্মহারা কিন্তু সবাই তো তা বুঝে দেওয়া যাবে না।
রায়হান চৌধুরীঃ দা ভাই আকাশের বাড়ির লোক তো চায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা নীলা কে ঐ বাড়ির বউ করে নিয়ে যেতে, তো পরের সপ্তাহে দিয়ে দিলেই ভালো হবে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ আচ্ছা দেখি আগে ঐ বাড়ির লোক কি বলে।
এই ভাবেই কেটে গেলো কয়টা দিন আজ শুক্রবার বিকেলে সবাই আকাশের বাসায় যাবে।
নীলা খুব এক্সসাইটেড,প্রথমবারের মতো আকাশের বাড়িতে যাবে।কিন্তু কি পরবে বুজতেই পারছে না, তাই মেঘ কে জিজ্ঞেস করলো ড্রেস পরবে নাকি শাড়ি, প্রথম যাচ্ছে শাড়ীটাই ভালো হবে কিন্তু কোন শাড়ীটা পরবে।
নীলাঃ মেঘলা মেঘলা শুন না।
মেঘঃ কি হলো আপু হয়েছেটা কে তোমার?
নীলাঃ আচ্ছা আমি কোন শাড়ীটা পরবো?
মেঘঃ তুমি চুজ করে নেও।
নীলাঃ না তুই বল না প্লিজ।
মেঘঃ ওফ আপু তুমিও না।
মেঘ সবকটা শাড়ীতে চোখ বুলিয়ে একটা মিষ্টি কালার শাড়ী চুজ করে দিলো।
আপু তোমাকে এই শাড়ীটাতে খুব ভালো মানাবে।
নীলাও খুশি মনে শাড়িটা নিয়ে নিলো।
আচ্ছা তুইও শাড়ী পররা না মেঘ।
মেঘঃ আমি শাড়ী ইম্পসিবল শাড়িতে পেচিয়ে পড়ে গিয়ে মান সম্মান শেষ করতে চাই না গু আপু তোমার শশুড় বাড়ি।
নীলা মেঘ এর কথায় হাহাহাহা করে হেসে দিলো আর বললো পাগলি।
নীলা শাড়ি পরতে চলে যায়।
মেঘ একটা ব্লাক ড্রেস পরে নেয়, হাতে ব্লাক কাচের চুড়ি, চোখে কাজল,আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক এতেই মেঘকে মাশাল্লাহ লাগছে।
নীলাও খুব সুন্দর করে শাড়ী পরে সাজুগুজু করে নিলো নীলা কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে, মেঘ তাকিয়ে আছে নীলার দিকে।
নীলাঃ এই তুই আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
মেঘঃ কি লাগছে তোমাকে আপু ওফ ইচ্ছে করছে ভাইয়ার আগে আমি তোমাকে চুমু খাই।
নীলাঃ কি বললি তাই ফাজিল মেয়ে এই তোকে সুন্দর লাগলে কি রাত ও তোকে চুমু খায়।
মেঘঃ ইয়াক ছি কি বলো আপু তুমি?
নীলা হাহাহা করে হেসে দেয়।
সবাই রেডি হয়ে নিচে অয়েট করছে বাড়ির দুই রাজ কন্যার জন্য।
নিলয় গরুর মতো চিল্লিয়ে দুই পেত্নিকে ডাকছে।
কিরে তোরা কি আজ বের হবি নাকি সাজতে সাজতে আজ বিকেল কাবার দিবি, তোরা এমনি পেত্নি তোদের সাজলে আরো পেত্নি লাগবে এবার বের হ প্লিজ।
নীলয় এর কথায় আলিফ তোয়া হু হু করে হেসে দেয়
আলিফ আর
আর নানু মনি বলে তুই সবসময় মেয়ে দুইটার পিছে লেগো থাকিস সয়তান একটা।
রাত সহ সবাই নীলয় এর কথায় মিটি মিটি হাসছে।
রাত ও আজ ব্লাক পরেছে ব্লাক শার্ট ব্লাক পেন্ট সাথে ব্লাক ব্লেজার, আর তার স্পেশাল সানগ্লাস তো আছেই।
একদম একটা হিরোর মতো লাগছে, হিরোরাও হার মানবে রাতের স্মার্টনেশ এর কাছে।
নীলা আর মেঘ নিচে নামছে সবাই ওদের দুজন এর দিকে তাকিয়ে আছে খুব সুন্দর লাগছে মেয়ে দুইটা কে মেঘ বেশী না সাজলেও মেঘ কে অসম্ভব কিউট লাগছে।
রাত তার মেঘকে দেখছে এইটুকু সাজাতে এতো সুন্দর লাগছে ইচ্ছে করছে ওফ কন্ট্রোল রাত কন্ট্রোল। (চোখ বুঝে)
সাহেলা বেগমঃ মাশাল্লাহ আমাদের মেয়ে দুজনকে কি সুন্দর লাগছে।
বড় খালামনিঃ হে কারো নজর যেনো না পরে।
নানু মনিঃ আজ ছোট মেয়েটা আসতে পারলো না আসলে ভালো হতো।
মিন্নী বেগমঃ হে মা আয়শা কে তো কতবার বললাম কিন্তু কি জানি কাজ আছে বাসায় বলেছে বিয়েতে আসবে।
রায়হান চৌধুরীঃ আচ্ছা চলো সবাই।
মেঘ গেইট এর সামনে যেতে রাত মেঘ এর হাত ধরে
মেঘ পেছনে তাকিয়ে রাতের দিকে ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো কি হলো আটকালে কেনো?
সবাই বাহিরে যেতে থাকে। যখন সবাই চলে৷ যায় রাত মেঘ কে দেয়ালে চেপে ধরে বলে,
তোকে না লিপস্টিক দিতে না বলেছি?
মেঘঃ ঐ দিন তো দোয়ার অনুষ্ঠান ছিলো তাই বলেছো কিন্তু আজ তো,
রাতঃ যা ইচ্ছে তা হোক কখনো দিবি না, মেঘ বুঝাতে পারছি না তোকে আমি কন্ট্রোললেস হয়ে পরি তোকে একটু সাজলে অসম্ভব সুন্দর লাগে যা আমাকে মাতাল করে দেয়।
রাত এর কথায় মেঘ লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
রাত তা বুঝতে পেরে মেঘ এর গাল টেনে বলে।
ইস আমার মেঘ বউ লজ্জা ও পেতে পারে
মেঘ আরো লজ্জায় পরে যায় অন্যদিকে তাকিয়ে বার বার চোখের পলক ফেলে কি একটা পরিস্থিতি।
মেঘ এর অবস্থা দেখে রাত মিটিমিটি হাসে তারপর টিসু দিয়ে আলতো করে মেঘ এর লিপস্টিক মুছে দেয়।
মেঘ কোনো বাঁধা দেয় না।
রাত মেঘকে ছেরে দেয় মেঘ গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
বড়রা আলাদা গাড়িতে চলে যায়।
রাত,মেঘ, নীলা,নিলয় চার জন এক গাড়িতে যায়।
নীলয় ড্রাইভার এর সাথে বসে মেঘ,রাত, নীলা পেছনে বসে।
রাত জানারার পাশে বসে এবং মেঘ রাত এর সাথে তারপর নীলা।
গাড়ী চলছে আপন গতিতে,
রাত মেঘ এর আঙুল এর বাাজে নিজের আঙুল দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে।
আর একটু পর পর মেঘ এর দিকে তাকাচ্ছে।
একটা সময় গাড়ি এসে থামলো আকাশ এর বাড়ির সামনে।
আকাশ গেইট এর সামনেই দাড়িয়ে ছিলো।
সবাইকে সালাম দিয়ে ভেতরে নিয়ে যায়।
অবশ্য নীলা কে দেখে একদফা ক্রাশ খেয়েছে কিন্তু সবার সামনে তা তো আর প্রকাশ করা যাবে না।
সবাই ভিতরে ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলো।
আয়াশ সবার সাথে কথা বললো শেষে মেঘ এর কাছে আসলো।
আয়াশঃ কি বেয়ান কেমন আছেন??
মেঘঃ ভালো আপনি?( একটু ভয় এ ভয় এ কারন পাশে রাত আছে)
(নেক্সট পার্ট পেজে পাবেন)
[[sorry, এই অংশটা collect করতে পারি নাই!]]
আকাশের দুটি মেয়ে কাজিনও আছে আছে সাথে।
সবাই রাত কে দেখে ফিদা হয়ে গিয়েছে।
রাইমাঃ পুরাই হিরো বইন আমি তো ফিদা হয়ে গেলাম। (আকাশের খালতো বোন)
শুপ্তিঃ হুম খুব সুন্দর কিন্তু আমার তো বয় ফ্রেন্ড আছে তাই তোকে দিয়ে দিলাম( হেসে হেসে)
খাবার পরিবেশের পরে বড়রা কথা বলতে বসে আর রাত ওদের ছাদে নিয়ে যায় আকাশ সাথে আয়াশ এবং রাইমা আর শুপ্তিও।
রাত এতো মানুষের সামনেও মেঘ এর হাত ধরে রেখেছে যা রাইমার একদম ভালো লাগছে না।
চলবে,
Part 28-29
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ২৮+২৯
রাত এতো মানুষের সামনেও মেঘ এর হাত ধরে রেখেছে যা রাইমার একদম ভালো লাগছে না।
রাইমাঃ বুঝলাম না এই মেয়েটার হাত ধরে রাখার কি হলো?( মনে মনে)
অন্যদিকে আয়াশ ও বার বার মেঘ রাত এর হাত এর দিকে তাকাচ্ছে।
নীলা এবং আকাশ ওদের থেকে একটু দূরে গিয়ে দারালো।
আায়াশঃ মেঘ আসো তোমাকে আমাদের ছোটো বাড়িটা দেখাই।
মেঘঃ না আসলে আমি দেখেছি আসার সময় (রাত এর দিকে এক পলক তাকিয়ে)
মেঘঃ ওহ আচ্ছা, রাত মেঘ এ হচ্ছে আমার কাজিন রশ্মির এবং শুপ্তি।
রশমি রাত এর দিকে হাত বাড়িয়ে
হায়,
রাত রশ্মির সাথে হেনচেক করে।
মেঘ রেগে রাত এর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নেয়।
শুপ্তি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
রশ্মিঃ রাত আপনি খুব স্মার্ট কিউট।
রাতঃ থ্যাংক ইউ আপনিও সুন্দর।
মেঘঃ ছি কেমন বেহায়া মেরে বাবা
শুপ্তিঃ হে রশ্মি সুন্দর বলেই তো কত ছেলে ওর পিছু ঘোরে কিন্তু ও কাউকে পাত্তা দেয় না।
শুপ্তির কথায় রশ্মি একটু মোড নিয়ে হাসি দিলো।
আয়াশঃ হে ওর পেছনে তো ছেলে ঘোরবেই বাবার টাকা আবার স্মার্ট সুন্দরী বলে কথা।
রাতঃ ওহ আচ্ছা তাই?
রশ্মিঃ হুম অবশ্য আমি কাউকে পাত্তা দেই না।
মেঘঃওহ আচ্ছা রশ্মি আপু কিন্তু সব স্মার্ট ছেলেদের উপর ক্রাশ খাও বার বার মনে হয়।
রশ্মিঃ মানি?
মেঘঃ না আসলে রাত ভাইয়া কে বললে তো ভাবলাম ভাইয়ার উপর ক্রাশ খেলে নাকি তাই আর কিছু মনে করো না।( মুখে হাসি টেনে কিন্তুু মনে মনে রেগে রাক্ষসী আমার রাত কে স্মার্ট সুন্দর বলা কত বড় লুচি একটা)
রাত মেঘ এর কথায় মিটিমিটি হাসছে।
অন্যদিকে রশ্মি কি বলবে বুঝতে পারছে না সত্যি তো রাত এর উপর সে ক্রাশ খেয়েছে।
আলিফ এবং তোয়া দৌড়ে এসে বললো রাত ভাইয়া তোমাদের চাচ্চু নিচে ডাকছে।
আলিফ এবং তোয়ার কথা শুনে সবাই নিচে চলে আসলো।
মেঘ রাত কে হাত ধরতে দিচ্ছে না।
রাতঃ কি হচ্ছে টা কি মেঘ?( একটু রেগে)
মেঘঃ কিছু হয় নি তো
রাতঃ হাত দে।
মেঘঃ যাও না ঐ রশ্মির হাত ধরো ( একটু রেগে মুখ ভেংচি কেটে দ্রুত পায়ে হেঁটে নীলার পাশে চলে যায়।
নিচে বড়রা সবাই বসে আছে রাতদের দেখে বড়রা মুখে হাসির রেখা টেনে তাদের দিকে তাকালো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত আগামী সপ্তাহে বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে চাচ্ছে আকাশের পরিবার তুমি কি বলো?
রাতঃ এক সপ্তাহে বিয়ের আয়োজন কি ভাবে সম্ভব?
আকাশের বাবাঃ আসলে বাবা আমরা দেরি করতে চাচ্ছি না তাই আর কি।
রাতঃ আচ্ছা ঠিক আছে আংকেল।
কথা শেষ এ সবাই বাড়ির উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পরে আকাশের পরিবার কে বিদায় জানিয়ে।
মেঘের গাড়িতে উঠার সময় কেমন যেনো মাথাটা চিনচিন বেথা অনুভব করে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে মেঘ।
মেঘের মাথায় হাত দিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রাত অস্থির হয়ে পরে।
মেঘ কি হয়েছে মাথায় হাত কেনো?
মেঘঃ এমনি একটু বেথা করছে।
রাতঃ একটু বেথা মানি আচ্ছা গাড়িতে উঠে বস।
নীলা আর নিলয় গাড়িতে বসে আছে মেঘ আর রাত ও বসলো।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে অন্যদিকে রাত মেঘ এর মাথাটা নিজের কাঁধে চেপে ধরলো।
মেঘ সরে আসতে নিলে রাত বলে,
মেঘ কোনো সিনক্রিয়েট আমি করতে চাচ্ছি না আমি মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছি চুপচাপ বসে থাক।
এদের ভালোবাসা দেখে নীলা জানারার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে, আসলে সত্যিই মেঘ খুব ভাগ্যবতী যে রাত এর মতো একটা ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে।।
রাত পরম যত্নে মেঘ এর মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।
মেঘ তার ভালোবাসার মানুষটির কাঁধে খুব শান্তি ঘুমিয়ে পরে।
গাড়ি বাসায় এসে থামে কিন্তু মেঘ তা বুঝতেই পারছে না সে ঘুমের রাজ্যে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।
নীলা ডাকতে চাইলে রাত বারন করে কারণ রাত চায় না।
বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে তারা প্রায় আদ ঘন্টা মেঘ কে নিয়ে এখনো রাত গাড়িতে।
মেঘ এর মুখের দিকে তাকিয়ে রাত একটা প্রশান্তির হাসি দেয়।
কপালে একটা চুমু একে পাগলি বউটা আমার।
মেঘ একটু নরেচরে উঠে চোখ টিপ টিপ করে তাকায়।
আশেপাশে দেখে হুড়মুড়িয়ে উঠে।
রাতঃ আরে রিলাক্স পাগলি।
মেঘঃ আমরা গাড়িতে কেনো?
রাতঃ কারন আমার ঘুম পরিটা ঘুমাচ্ছিলো।
মেঘঃ তুমি আমাকে ডাকলে না কেনো?
রাতঃ ইচ্ছে করছিলো না আমার কলিজাটার ঘুম ভাংগাতে।
মেঘঃ এহ আসছে যাও না ঐ রশ্মির হাত ধরতে।
রাতঃ হাহাহা ওকে যাচ্ছি মেয়েটা কিন্তু খুব সুন্দর ( গাড়ি থেকে নামতে নামতে)
মেঘ ও রাগে ফুসতে ফুঁসতে গাড়ি থেকে নামে।
রাতঃ আচ্ছা তো আমি যাই মেঘ তুই ভিতরে চলে যা।
মেঘ রাগে কিছু বলতে পারছে না এতো রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে না পারার কারনে চোখে পানি টলমল করছে, গাল দুটি অসম্ভব লাল হয়ে আসছে।
রাতঃ কি হলো?
মেঘ রেগে রাত এর কলার চেপে ধরে।
একদম খুন করে ফলবো অন্য মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকালে, অনেক ভালো লেগেছিলো হাত ধরতে তাই না?( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
রাত মেঘ এর কোমর চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে বলে,
আমার তো কাউকে ভালো লাগে শুধু আমার মেঘ ছাড়া আমার কারো হাত ধরতে ভালো লাগে না শুধু আমার মেঘ পাগলির হাত ছাড়া, শুধু আমার কলিজাটাকে ভালো লাগে।
কিন্তু মেয়েটা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো যদি আমি না মিলাতাম তো মেয়েটাকে অপমান করা হতো, আর ভাবতো আমি মোড নিয়ে চলি তো আমার পাগলি টাকি চায় যে তার রাত কে কেউ খারাপ ভাবুক হুম?
মেঘঃ না ( রাতের বুকে মুখ লুকিয়ে)
রাত একটা হাসি দিয়ে মেঘ কে শক্ত করে বুকে চেপে ধরে।
আচ্ছা মেম চলেন ভিতরে যাওয়া যাক।
মেঘ রাত এর বুক থেকে মাথা তুলে একটা হাসি দিয়ে দুজনি ভেতরে যায়।
ড্রয়িং রুমে কেউ নেই রাত আর মেঘও যে যার রুমে চলে যায়।
নীলা ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে ছিলো মেঘ কে দেখে একটা হাসি দিয়ে বলে।
ঘুম কেমন হলো?
মেঘঃ আপু
নীলাঃ হাহাহা ভালো তো ভালো না দেখলাম তো রাত এর বুকে কি ভাবে ঘুমিয়ে ছিলি।
মেঘঃ আপু আমি কি চেয়েছিলাম ঘুমাতে তোমার রাক্ষস ভাই তো জোর করে,
নীলাঃ হুম দেখেছি যা ফ্রেশ হয়ে নে।
মেঘ ফ্রেশ হয়ে নেয়,
রাত ৮ টা মেঘ একটু পরতে বসে নিলয় ও নিজের রুমে পরতে বসে আগামীকাল কলেজে যাবে দুজন।
রাত নিজের রুমে বসে মোবাইল দেখছে।
নীলা আকাশের সাথে কথায় ব্যস্ত।
রাত ১০ টা সবাই ডিনার করছে।
রায়হান চৌধুরীঃ দিদি ভাই তুমি এক কাজ করো নীলার ফুফি চাচাদের বলে দিও আসতে আর যা লাগে সব আমরা করবো। আগামীকাল থেকে তো কাজ শুরু করতে হবে চৌধুরী বাড়ির মেয়ের বিয়ে বলে কথা।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে রায়হান ঠিক বলেছিস তুই।
সবাই ডিনার শেষে ঘুমাতে চলে যায়।
মেঘ সন্ধ্যে বেলা ঘুম আসাতে এখন আর ঘুম পাচ্ছে না।
তাই বেলকনিতে বসে বসে আকাশের চাঁদ দেখছে।
হটাৎ পাশে থাকা মোবাইলে একটা মেসেজ টুন ভেজে উঠে।
মোবাইলের দিকে তাকাতেই দেখে রাত এর মেসেজ।
রাতঃ আমার পাগলিটা কি ঘুম? আমার তো ঘুম পাচ্ছে না পাগলিটাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
মেসেজটা দেখে মেঘ এর ঠোঁটে হাসি চলে আসে।
মেসেজ এর রিপ্লে,
আমার ও ঘুৃম পাচ্ছে না, বেলকনিতে বসে আছি, তুমি ঘুমিয়ে পড়ো সকালে কলেজ যাবা আর আমি তো সন্ধ্যে বলে ঘুমিয়েছি তাই ঘুম আসছে না।
রাতঃ আমার মেঘ কে না দেখলে ঘুম হবে না একটু ছাদে আয় না মেঘ।
মেঘঃ পাগল তুমি এখন রাত কয়টা দেখো ১১ঃ৪৫ এতো রাতে ছাদে যাওয়া যাবে না আর কেউ দেখলে খারাপ ভাববে।
রাতঃ ওকে তোর আসতে হবে না আমি ছাদেই থাকবো ঘুমাবো না।
উফ রাক্ষস একটা এতো রাতে ছাদে দেখার আর সময় নেই।
বিরক্তি নিয়ে একটা চাদর মোড়ি দিয়ে ছাদের দিকে পা বাড়ায়।
রাত একটা ব্লাক জ্যাকেট পরে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
চারো দিকে সাদা কুয়াশা রাতের অন্ধকারে লাইট এর আলোতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছপ খব ঠান্ডা হাওয়া।
মেঘ দু’হাত দিয়ে চাদর জড়িয়ে রাত এর পাশে দাঁড়ালো।
রাত একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেঘকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
এই হিম শীতের মাঝে দুজন ভালোবাসার মানুষ আকাশের নিচে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। দুজন এর মাঝে নির্বতা কেউ কোনো কথা বলছে না।
নির্বতা ভেঙে রাত বললো।
মেঘ তোর ছোট বেলার কথা মনে আছে?
সকাল বেলা তুই আর আমি খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটতাম দুজন মিলে।
(নেক্সট পার্ট গুলো আমার পেজে আছে)
তোর যখন পা খুব ঠান্ডা হয়ে যেতো আমি তোকে কোলে নিয়ে আসতাম, আর এই দেখে বন্ধু খুব হাসতো, আমি কখনো তোর কষ্ট সয্য করতে পারি না কেনো মেঘ?
মেঘঃ আমার সব মনে আছে, তুমি মাঝে সব ভুলে গিয়েছিলে।
রাতঃ আমি কিছু ভুলি নি পাগলি সব মনে আছে।
মেঘঃ আচ্ছা এখন ঘুমাতে যাও।
রাতঃ উহুমু একটু পর, এখনো কি ভাইয়া বলতে হবে, একবার রাত বলে ডাক না মেঘ।
মেঘঃ ইস পারবো না।
রাতঃ প্লিজ শুধু একবার।
মেঘঃ না না না।
রাতঃ ওকে তো আমিও সারা রাত এ আর আপনাকে ছারছি না।
মেঘঃ আমার শীত লাগছে।
রাতঃ মিথ্যা কথা আমি তোকে জড়িয়ে রেখেছি তোর শীত লাগার কথায়ই না।
মেঘঃ কিন্তু আমি বলতে পারবো না।
রাতঃ প্লিজ মেঘ একবার, শুনতে ইচ্ছে করছে আমার ভালো লাগার জন্য এইটুকু বলতে পারবি না।
মেঘঃ লজ্জা লাগে।
রাতঃ হাহাহা পাগলি একটা আচ্ছা বলতে হবে না
মেঘঃ তো ছেরে দেও
রাত মেঘ কে ছেড়ে দু গাল ধরে মেঘ এর কপালে একটা গভীর চুমু একে দেয়।
মেঘ পা বাড়ায় রুমে যাওয়ার উদ্দেশ্য চিলেকোঠার সামনে গিয়ে আবার পেছন ফিরে তাকায় রাত এর দিকে।
রাত দুহাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বলে, কি হলো?
মেঘ মুখে একটা হাসির রেখা টেনে হালকা একটু জোরে বলে উঠে।
রাত আমি তোমাকে ভালোবাসি, খুব বেশি ভালোবাসি আই লাভ ইউ রাত।
কথাটা বলে মেঘ আর এক মুহূর্ত দাঁড়ালো না দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।
অন্য দিকে রাতের কানে বার বার মেঘ এর বলা কথাটা বাজতে লাগলো,
রাতঃ পাগলিরটা আমার ওফ কি লাগছে আমার মেঘ নাম ধরে বলেছে, খুশিতে রাত আত্মহারা।
সকালে,
মেঘ নামাজ পরে বেলকনিতে বসে আছে বাহিরে এখনো আপছা অন্ধকার, নীলা নামাজ পরে ঘুমিয়ে আছে।
কনকনে শীত মেঘ বসে আছে বেলকনিতে, শীতের হিমেল হাওয়া চারো দিকে কোয়াশার বৃষ্টি, আপছা অন্ধকার আর কোয়াশা মিলে একটু বেশী অন্ধকার লাগছে।
মেঘ এর মোবাইল বেজে উঠে ফোন স্কিনে তাকিয়ে দেখে রাত, মেঘ একটা হাসি দিয়ে ফোনটা রিছিভ করে।
হ্যালো
রাতঃকি করিস?
মেঘঃ বেলকনিতে বসে আছি।
রাতঃ হাঁটতে যাবি বাহিরে আমার সাথে?
মেঘঃ হুম।
রাতঃ আচ্ছা তো বেড়িয়ে আয় আমি গেইট এর সামনে অপেক্ষা করছি।
মেঘঃ আচ্ছা।
রাত ফোনটা কেটে দিলো।
মেঘ মুখে এক রাস হাসি নিয়ে গায়ে ঝরানো চাদর রেখে ব্লু রং এর একটা ফুল স্লিভ টি শার্ট চুল গুলো উপর করে জুটি বেধে একটা উরনা গলায় পেচিয়ে বেড়িয়ে পরলো।
রাত গেইট এর সামনে দাড়িয়ে আছে ব্লাক রং এর একটা জ্যাকেট, সাথে গলায় হোয়াইট মাফলার, ব্লাক ট্রাউজার এবং ব্লাক জুতো।
মোবাইল টিপছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আর মেঘ এর জন্য অপেক্ষা করছে।
মেঘ রাত এর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
রাত মেঘ এর দিকে এক পলক তাকিয়ে মোবাইল পকেটে রেখে দেয়।
রাতঃ ঘুম কেমন হলো মেডাম
মেঘঃ ভালো।
রাতঃ জেগেছিস কখন।
মেঘঃ আদ ঘন্টা নামাজ পরে বেলকনিতে বসে ছিলাম।( পকেটে হাত দিয়ে)
রাতঃ হাত লুকিয়ে রেখেছিস কেনো?
মেঘঃ হাত লুকাবো কেনো?
রাতঃ হাত বের কর।
মেঘ বাধ্য মেয়ের মতো পকেট থেকে হাত বের করে দাঁড়িয়ে রইলো।
রাত মেঘ এর আঙুল এর বাজে নিজের আঙুল ডুকিয়ে মেঘ কে নিয়ে হাঁটতে লাগলো।
চারো দিকে শুনসান নির্বতা,দু একজন লোক বের হয়েছে মর্নিং ওয়াল্ক এর জন্য।
রাতঃ মেঘ
মেঘঃ হুম
রাতঃ আই লাভ ইউ
মেঘঃ………
রাতঃ কি হলো?
মেঘঃ কিছু না
রাতঃ আই লাভ ইউর বিপরীতে কি বলতে হয় জানিস না?
মেঘঃ নাহ জানি না।
রাতঃ হুম এতো লজ্জাবতী কেনো আপনি মেডাম?
মেঘঃ আমাকে লজ্জায় ফেলতে তো আপনার খুব ভালো লাগে স্যার।
রাতঃ অনেক কথা শিখে গিয়েছেন আপনি।
মেঘ আর রাত দুজন একমনে হাঁটছে।
সামনে একটা চায়ের দোকান দেখায়,রাত মেঘ কে বলে,
মেঘ চল না চা খাই।
মেঘঃ চলো,,,,
রাত চাওয়ালা চাচাকে দু কাপ চা দিতে বলে দুজন চায়ের টং এ বসে।
রাত এখনো মেঘ এর হাত ধরে আছে।
রাত হটাৎ মেঘ এর হাত নিজের কাছে এনে একটা ছোট চুমু বসিয়ে দেয়।
হটাৎ এমন হওয়াতে মেঘ চমকে উঠে।
রাত এমন ভান ধরছে যেনো সে কিছুই করে নি মেঘ এর হাত ছেড়ে দিয়ে চা নিতে উঠে যায়।
রাত এর কান্ড দেখে মেঘ অন্যদিকে ফিরে মুচকি হাসতে লাগে।
রাতঃ মেডাম চা।
মেঘ রাত এর হাত থেকে চাটা নিয়ে খেতে লাগে
রাত ও মেঘ এর পাশে বসে।
একটা অন্যরকম পরিবেশ কোনো কোলাহল নেই একটু পরেই এই শুনসান পরিবেশটা কোলাহল এ পরিনত হবে।
দুজন চা খেয়ে আবার হাঁটতে লাগে তবে এবার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
বাসায় পৌঁছে যে যার রুমে চলে যায়।
বাসার সবাই উঠে পরেছে, বড় মামা ছোট মামা খবরের কাগজ হাতে নিয়ে বসে বসে চা খাচ্ছে।
মামনিরা তিনজন একসাথে সকালের নাস্তা তৈরি করছে নীলা আপু আর নিলয় চায়ের কাপ হাতে নিয়ে ফোন টিপছে।
কিচেনে কুসুম নাস্তা তৈরি করছে।
আমিও এসে আপুদের সাথে বসে পড়লাম।
সাহেলা বেগমঃ কুসুম মেঘলা কে চা দিয়ে আয় তো।
মেঘঃ মামনি আমি চা খেয়ে আবার থেমে বললো খাবো না।
নানু মনি কে রাত ভাইয়া হাত ধরে নিচে নিয়ে আসছে।
নানু মনি এসে আমার পাশে বসলো
কুসুম এসে নানু কে চা দিয়ে যায়।
সকাল ৮ টা সবাই নাস্তার জন্য বসেছে টেবিলে,
কুসুম সবাইকে নাস্তা দিচ্ছে।
আমার পাশে রাত ভাইয়া।
নিলয়ঃ পেত্নী তুই তো খেয়ে খেয়ে মুটি হয়ে যাচ্ছিস কম খা
বড় খালামনিঃ নিলয় আবার শুরু করলি মেয়েটার সাথে?
নিলয়ঃ ( খেতে খেতে একটা হাসি দিলো)
মেঘঃ কুত্তা
নিলয়ঃ কুত্তী
রাতঃ হুম কুত্তা কুত্তী আর একটা কথাও না খাবার খা।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত তুই কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে নিস।
রাতঃ কেনো বাবা?
রায়হান চৌধুরীঃ কেনো মানি বাড়িতে বিয়ে তাই।
রাতঃ ওহ নীলার বিয়ে ওর বিয়ের জন্য আমি ছুটি নিবো কেনো?
নীলাঃ আমার বিয়ের জন্য তুই ছুটি নিবি কেনো মানি?
রাতঃ হুম তোর বিয়ে তাতে আমার কি?
নীলা মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো খাওয়া বন্ধ করে।
মিন্নী বেগমঃ রাত দিলে তো মেয়েটার মন খারাপ করে।
নীলা না খেয়ে উঠে চলে যেতে নীলা রাত
আমি তো ছুটি নিয়ে নিয়েছি সাথে নিলয় আর মেঘ এর ও বুড়ি নানির বিয়ে আর আমরা থাকবো না তা কি করে হয়, শপিং করবো বিয়ের আয়োজন কত কি বলে কথা
রাতের কথা শুনে নীলা খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে সাথে নিলয় আর মেঘ ও খুব খুশি এই পুরো এক সপ্তাহ পড়ালেখার কোনো ঝামেলা নেই ইয়াহু।
মেঘঃ আপু আমি তোমার সাথে থাকতে পারবো কি মঝা তোমার সাথে সময় কাটাবো তুমি চলে গেলে তো আমি একা হয়ে যাবো ভাবতেই খারাপ লাগে।
নীলা মেঘলে জড়িয়ে ধরে আর বলে আমার সাথে তোকেও নিয়ে যাবো।
নিলয়ঃ হে আসফি ( কথাটা বলার আগেই রাত এর দিকে তাকিয়ে থেমে যায় কারন এখন এই কথাটা বললে নিলয় আর আস্ত থাকবে না রাত ওকে শেষ করে ফেলবে)
থাল বাবা আমার বলতে হবে না আসফি ভাইয়ার বউ বললে রাত ভাইয়া আমাকে টুকরো টুকরো করবে।
রাতঃ কিন্তু ছুটি আগামীকাল থেকে আজ কলেজ যেতে হবে কুত্তা এবং কুত্তি রেডি হয়ে নেন।
নিলয় আর মেঘ এর মনটা খরাপ হয়ে যায় ভেবে ছিলো আজ থেকেই ছুটি।
দুজন কলেজের জন্য তৈরি হয়ে নেয়।
মেঘ আর নিলয় গাড়িতে গিয়ে বসে।
দুজন এর মুখ দেখে রাত মুচকি হাসছে আর মনে মনে বলে পাগল দুইটা।
কলেজে গিয়ে আাশা,তিথি,সাগর, জিহাদ এর সাথে আড্ডা জমিয়ে দেয় দুজন।
রাত চলে যায় নিজের রুমে।
নিলয়ঃ এই তোদের সবার আমার আপুর বিয়েতে দাওয়াত রইলো।
জিহাদঃ ওফ দুস্ত সেই লেভেলের মজা করবো আমরা।
তিথিঃ হে তা তো অবশ্যই।
ক্লাস এর সময় হলে সবাই ক্লাস রুমে চলে যায়।
রাত ক্লাসে আসে।
ক্লাস করানোর পাশাপাশি মেঘকে দেখছে।
রাতঃ এই পাগলিটাকে না দেখলে ভালোই লাগে না ইচ্ছে করে সারাক্ষণ পাগলিটার দিকে তাকিয়ে থাকি।
তিথিঃ এই তোর দিকে রাত স্যার দেখ কি ভাবে তাকিয়ে আছে।
মেঘঃ ককই আমার দিকে তালাবে কেকেনো দেখ তোর দিকে তাকিয়ে আছে।
( এই রাক্ষসটা ও না এইখানে ও কি তাকিয়ে থাকতে হয়)
আশাঃ হে আমিও খেয়াল করছি স্যার কে অনেকক্ষণ ধরে।
রাত এদের বেপার টা বুঝতে পারে তাই,
এই কি হচ্ছে এইখানে ( জোড়ে দমক দিয়ে)
তিনজন চমকে উঠে এবং নরেচরে বসে।
রাত মনে মনে হাসে।
ক্লাস শেষ হলে রাত চলে।
সব ক্লাস শেষ এ সবাই মিলে দাড়িয়ে আছে।কারন অনেক দিন দেখা হবে না।
সবাই যখন কথা বলে মেঘের চোখ আটকে যায় সামনের দিকে।
চলবে,
Part 30-31
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩০+৩১
সবাই যখন কথা বলে মেঘের চোখ আটকে যায় চোখের সামনে।
আর রাগে কটমট করতে লাগলো।
আজকেও মেডাম এর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে, আর আমাকে নাকি কত ভালোবাসে বেয়াদব পোলা লুচু কোথাকার।
তিথিঃ কিরে কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলি?
মেঘঃ কোথাও না বাসায় যাবো।
নিলয়ঃ ভাইয়া আসুক।
মেঘঃ তুই যা তোর ভাইয়ার সাথে। ( বলে হন হন করে চলে গেলো)
সবাই হা হয়ে রইলো মেঘ এর ব্যবহার এ।
নিলয় মেঘ এর পিছু পিছু চলে গেলো ।
গাড়ির সামনে গিয়ে মেঘ পেছনে বসে পড়লো সবসময় রাতের সাথে বসে কিন্তু আজ নিলয় এর পাশে বসলো।
নিলয়ঃ কিরে তোর কি হলো আজ এইখানে বসলি কেনো ভাইয়া তো রাগ করবে।
মেঘঃ তোর সমস্যা কি আমি পাশে বসেছি বলে তোর কি ভালো লাগছে না?
নিলয়ঃ তোর যা মন চায় কর ভাই।
একটু পরে রাত চলে আসলো কিন্তু মেঘকে পেছনে দেখে রাত গাড়িতে উঠতে উঠতে বললো মেঘ সামনে আায়।
মেঘ কিছু বললো না চুপটি মেরে বসে রইলো।
রাত আবার বললো,
মেঘ কিছু বলেছি তোকে?
মেঘঃ আমি এইখানেই বসবো।
রাতঃ আমি বেশি কথা শুনতে চাচ্ছি না আর কি হয়েছে তাও শুনতে চাচ্ছি না যা বলেছি তা কর।
মেঘঃ আমি যানো না মানি যাবো না, যাও না মেডাম কে এনে পাশে বসাও।
নিলয় আর রাত মেঘ এর দিকে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।
নিলয়ঃ ওহ আচ্ছা তাহলে কেশটা এইখানে।
রাত আর কিছু বললো না কারন সে জানে মেঘ রেগে আর এখন মেরে ফেললেও আসবে না, আর এতো মানুষের সামনে কোনো সিনক্রিয়েট ও করা যাবে না তাই ড্রাইভ করতে লাগলো।
বাসায় পৌঁছে মেঘ নিজের রুমে চলে গেলো।
রাত তিনটার দিকে একটু গাড়ি নিয়ে বের হলো।
মেঘ মন খারাপ করে বেলকনিতে বসে আছে, রাত যখন গাড়ি নিয়ে বের হয় মেঘ রাতকে দেখে,
আমি তার সাথে রাগ করে আছি আর আমার রাগ না ভাংগিয়ে সে বাহিরে চলে গেলো মেঘ এর আরো মন খারাপ হয়ে যায়।
বিকেল ৫ টা রাত বাসায় ফিরে আর নিলয় কে বলে সবাই কে নিয়ে গেইট এর সামনে আসতে।
হটাৎ রাত এর ডাকার কারন কেউ খোজে না পেয়ে সবাই খুব অভাক হলো আর তারাহুরো করে বাহিরে গেলো।
সাহেলা বেগমঃ কি হয়েছে রাত কোনো সমস্যা হলো নাকি।
রাতঃ না মা কিছু হয় নি, নিলয় এই দিকে আয়।
নিলয় খুব ভয় পেয়ে গেলো সে কি ভুল কোনো কিছু করলো নাকি।
নিলয় রাত এর সামনে গেলো রাত নিলয় এর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে হাত দিয়ে সামনের দিকে তাকাতে বললো।
নিলয় সামনের দিকে তাকিয়ে খুশি হয়ে যায় তার স্বপ্নের বাইক কিন্তু ভাইয়া হয়তো কিনেছে তাই আবার মন খারাপ করে ফেলে।
রাতঃ মুখটা পেচার মতো করলি কেনো?
নিলয়ঃ না ভাইয়া এমনি।
রাত নিলয় এর হাতে বাইকের চাবি দিয়ে বললো তোর বাইক এটা।
নিলয় সহ নীলা এবং তার মা অভাক হয়ে রাতের দিকে তাকিয়ে রইলো।
নিলয়ঃ মানি?
রাতঃ কি মানি মানি করছিস এইটা তোর বাইক।
সাহেলা বেগম, মিন্নী বেগম আর দিদুন এর মুখে হাসি।মেঘ সবার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
নিলয় খুশিতে রাত কে জড়িয়ে ধরে।
থ্যাংক ইউ ভাইয়া থ্যাংক ইউ খুশিতে নিলয় আত্মাহারা।
রাতঃ হুম হইছে এর পর থেকে কিছু প্রয়োজন হলে নিজের মা কে না আমাকে না হয় বাবা চাচ্চু কে বলবি তুই এই বাড়ির ছেলে বুঝতে পেরেছিস।
রাতের কথা শুনে নিলয় এর চোখে জল চলে আসে।
নিলয়ঃ ভাইয়া সত্যি তুমি আমার বড় ভাই।
রাতঃ তো আমি কি তোর ছোট ভাই নাকি?
সবাই খুব খুশি।
বড় খালামনিঃ তুই জানলি কি করে ও আমার কাছে বাইক চেয়েছিলো?
রাতঃ তোমাকে যখন বলেছে আমি শুনতে পেয়েছিলাম আর তুমিও ফুপ্পি আমাদের কি পর ভাবো হে নিলয় কিছু চাইবে আর আমরা দিবো না, যখন যা লাগবে সব নিবে।
রাতের এমন কাজে সবাই খুব খুশি মেঘও খুব খুশি কিন্তু রাতের উপর অভিমান করে আছে।
রাত সবাই কে এক চিলতে হাসি উপহার দিয়ে মেঘ কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আবার থেমে যায়।
মেঘ এর সামনে এসে কোনো কথা না বলে সোজা মেঘকে কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।
মেঘ ভুত দেখার মতো একবার রাত এর দিকে আর একবার বাড়ির সবার দিকে তাকায়।
আর রাতের কান্ড দেখে বাড়ির সবাই মুখ টিপে হাসছে।
নিলয় তো দাত কেলিয়ে হাসছে।
অন্যদিকে রাত আর মেঘ,
মেঘঃ কি হলো এটা ছাড়ুন আমাকে লজ্জা নেই আপনার বাড়ির এতো মানুষের সামনে কাজিন কে কোলে নিয়ে চলে আসতে।
রাতঃ নাহ লজ্জা নেই কারন কাজিন এর সাথে প্রেম করতে যাচ্ছি না ছাদ থেকে ফেলে মার্ডার করবো।
মেঘঃ কিহহ ( রাত এর শার্ট দু হাত দিয়ে খামছে ধরে)
নামিয়ে দেও আমি এতো তাড়াতাড়ি মরতে চাই না আর তোমার সাথে রাগ করবো না। তুমি তুমি মেডাম এর সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলো আমার খুব কষ্ট হয় প্লিজ ছেড়ে দেও।
রাত ছাদে গিয়ে মেঘকে কোল থেকে নামিয়ে দেয় আর হো হো করে হাসতে থাকে কতটা বোকা মেয়ে।
মেঘ ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আর কোমড়ে দু হাত দিয়ে বলে,
তুমি হে হে করে হাসছো কেনো?
রাতঃ আমার পাগলির কথা শুনে।
মেঘ এবার রেগে বলে,
দেত যাও যাও তুমি ( বলে চলে আসতে নেয় তার আগেই রাত মেঘকে এক ঝটকায় নিজের বুকে নিয়ে আসে)
প্রথম রাত মেঘ এর কোমড় ছাড়িয়ে বাধা চুল গুলো খোলে দিলো।
মেঘ নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেস্টা করতে লাগলো কিন্তু রাত ঐ দিকে পাত্তা না দিয়ে মেঘ এর সামনের ছোট চুল গুলো কানের পাশে গুজে দিলো,এবার শক্ত করে কোমড় জড়িয়ে মেঘ এর কপালে একটা গভীর চুমু একে দিলো।
মেঘ সাথে সাথে ছুটোছুটি বন্ধ করে দিলো।
রাতঃ পাগলি চাকরির সুবাদে আমাকে তো অনেকের সাথে কথা বলতে হয় বুঝিস না কেনো তুই,আর আমি কলেজ এ জব করি শুধু মাত্র আমার মেঘ পাগলির জন্য, আমার পাগলিটাকে যেনো সবসময় আমার চোখে চোখে রাখতে পারি এর জন্য,তুই কি ভাবিস আমি কলেজ থেকে সেলারি নেই আমি উলটো কলেজ ফাউন্ডেশন এ টাকা দেই।আমার কলেজে যাওয়ার এক মাত্র কারন আমার মেঘ বউ এর জন্য।আমার কলিজাটাকে না দেখে আমি থাকতে পারি না। কিন্তু তারপরও সরি আর কোনো মেয়ের সাথে আমি কথা বলবো না আমি চাই না আমার পাগলিটা কষ্ট পাক খুশি এবার?
মেঘ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রাত এর বলা কথা গুলো শুনছিলো আর পলকহীন দৃষ্টিতে রাত এর দিকে তাকিয়ে আছে।
আর ভাবছে সত্যি আমি খুব ভাগ্যবতী রাত এর মতো ভালোবাসার মানুষ পেয়ে।
রাতঃ কি গলো হ্যাপি তো বলবো না আর কারো সাথে কথা কান ধরছি এবার একটু হাস গোমড়া মুখটা দেখতে ইচ্ছে করছে না।( মেঘ কে ছেড়ে দিয়ে দু হাত দিয়ে গাল ধরে)
মেঘ এর চোখে জল ছলছল করছে রাত তা দেখতে পায় রাত কিছু বলার আগেই মেঘ রাতের বুকে ঝাঁপিয়ে পরে, আর শব্দ করে কাঁদতে শুরু করে।
রাত মেঘকে খুব শক্ত করে বুকে চেপে ধরে রাখে।
আর বলে লক্ষিটি তুই কাঁদছিস কেনো? তোর কান্না আমার ভালো লাগে না বুঝিস না তুই। এই পাগলি মেঘ এর মাথা উঁচু করে চোখের জল মুছতে মুছতে একদম চুপ কান্না থামা।
কান্নার কারনটা কি?
মেঘঃ তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো কেনো?
রাত এতোক্ষণে মেঘ এর কান্নার ভাষা বুঝতে পারে
রাত একটা হাসি দিয়ে আবার মেঘ কে বুকে জড়িয়ে বলে।
তুই যে আমার পাগলিটা তাই,আমার প্রাণটা তোর শরীল এ রাখা, তাই এতো ভালোবাসি আমি তোকে ভালোবাসি না আমি আমার প্রানটাকে ভালোবাসি পাগলি খুব বেশি ভালোবাসি আমার মনটা তোর কাছে।
মেঘঃ আর আমার মনটা তোমার কাছে একদম #মনের_মতো_মন
মেঘ এর কথায় রাত হেসে আরো শক্ত করে মেঘকে বুকে জড়িয়ে ধরে।
রাতঃ ওফ পাগলি আমার তো মনেই নেই।
মেঘঃ কি?
রাতঃ চোখ বন্ধ কর
মেঘঃ কেনো?
রাতঃ যা বলেছি তা কর তারপর দেখিস
মেঘ বাধ্য মেয়ের মতো চোখ বন্ধ করে নিলো।
রাত নিজের পকেট থেকে একটা পায়েল বের করে মেঘ এর পা নিজের হাঁটুতে রাখলো মেঘ চমকে গিয়ে চোখ মেলতে নিলে রাত বাধা দেয়,
মেঘ একদম না
মেঘ আবার চোখ বন্ধ করে নেয়।
রাত মেঘের পায়ে পায়েলটা পড়িয়ে পায়ে একটা ডিপ কিস করে।
মেঘ সাথে সাথে চোখ মেলে পা সরিয়ে নেয়।
মেঘঃ কি করছো তুমি?
রাত পায়ের দিকে ইশারা দিয়ে দেখতে বলে।
মেঘ পায়ে পায়েলটা দেখে অভাক হয়ে যায় এত্তো সুন্দর পায়েলটা যা বলার বাহিরে।
মেঘ এর খুশি দেখে রাত পকেটে হাত দিয়ে মেঘ এর দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগে।
মেঘঃ অনেক সুন্দর পায়েল টা ( রাতের দিকে তাকিয়ে)
রাতঃ পায়েল টা সুন্দর না আমার মেঘ এর পাটা সুন্দর তাই পায়েলটা এতো সুন্দর লাগছে।
মেঘ একটু লজ্জা পেলো লজ্জা পেয়ে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো।
চারোপাশে সন্ধ্যার আগমন ঘঠছে,সূর্য্যি মামা জানান দিচ্ছে সে এখন ঘুমি পড়বে, চারো দিকে আপছা অন্ধকার হচ্ছে,
রাতঃ আচ্ছা আজান দিবে নিচে চলে যা।
মেঘ একটা হাসি দিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য পা বাড়ালো আবার চিলেকোঠার সামনে গিয়ে আবার থেমে গেলো।
রাতঃ হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বললো কি হলো?
মেঘ একটা হাসি দিয়ে বললো
ভালোবাসি
মেঘ এর মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনে রাতের বুকটা ধক করে উঠলো ইচ্ছে করছে মেঘকে আবার জড়িয়ে ধরতে।
কিন্তু তার আগেই মেঘ দৌড়ে নিচে চলে যায়।
রাত হেসে বললো পাগলি একটা
মেঘ নিচে গিয়ে আগে নানুর রুমে গেলো।
কি করো নানু মনি?
নানু মনিঃ বসে আছি দিদি ভাই আজান দিবে নামাজ পরবো আয় বস।
আমি গিয়ে নানু মনিকে জড়িয়ে ধরে বসে পরলাম।
নানু মনিঃ কি দি ভাই এতো খুশি কেনো?
মেঘঃ কোথায় খুশি।
নানু মনিঃ হুম আমি বুঝি তো তাহলে রাত এর সাথে ভাব হয়ে গিয়েছে।
মেঘঃ নানু মনি ( একটু লজ্জা পেয়ে)
নানু মনিঃ হাহাহা আমার লজ্জাবতী দি ভাই এতো লজ্জা পাস কেনো?
এমন সময় চারো দিকে আজানের ধ্বনী বেঝে উঠে।
নানু মনিঃ যা মেঘলা নামাজ পরে নে।
মেঘলাঃ আচ্ছা নানু মনি
মেঘলা নিজের রুমে দিকে পা বাড়ায় সামনে রাতকে দেখতে পায় রাত মসজিদ এ যাচ্ছে।
মেঘলা রাত এর দিকে একটু তাকালো রাত মেঘ কে দেখে একটা হাসি দিলো।
তারপর দুজনি নামাজে চলে গেলো।
নামাজ শেষে নীলা
মেঘলা কি রোমান্টিক দৃশ্য রাত তোকে সবার সামনে কোলে নিয়ে চলে গেলো আমার তো সেই ভালো লাগছে
মেঘলাঃ তোমার ভাই একটা অশব্য আপু।
নীলাঃ আমার ভাই মোটেও অশব্য না কি রোমান্টিক।
মেঘলাঃ আপু রাত ভাইয়া আমাকে আজ এই পায়েলটা নিজে পড়িয়ে দিয়েছে।
নীলাঃ ওয়াও মেঘলা তুই খুব লাকি তোদের এই ভালোবাসা যেনো সারা জীবন অটুট থাকে ( মেঘ কে জড়িয়ে ধরে)
মেঘলাঃ আপু তুমি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে খুব খারাপ লাগে মনে হলে।
নীলাঃ আমার ও খুব খারাপ লাগে মেঘ আমি চাই নি এতো তাড়াতাড়ি তোদের থেকে দূরে যেতে কিন্তু আকাশ পাগল হয়ে গিয়েছে।
মেঘলাঃ ওফ আপু আকাশ ভাইয়া তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছে না তাই তোমাকে যত তাড়াতাড়ি পারছে তার কাছে নিয়ে যাচ্ছে
নীলাঃ ফাজিল মেয়ে একটা।
মেঘলাঃ
রাত নামাজ পরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।
প্রতিদিনি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরে, আজও তার ব্যতিক্রম নয়।
রৌদ্র চৌধুরী এবং রায়হান চৌধুরী বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে বসে।
মিন্নী বেগমঃ আলিফ তোয়া খুব খারাপ হয়ে যাবে বলছি যা তাড়াতাড়ি পরতে বস।
তোয়াঃ আমরা পরবো না পরবো না আগামী এক সপ্তাহ পরতে বসবো না।
দুজন মিলে সারা ড্রয়িং রুম দৌড়াছে আর তার পিছু মিন্নী বেগম।
আর এই কান্ড দেখে রৌদ্র চৌধুরী এবং রায়হান চৌধুরী হাসছে।
তখনি রাত বাসায় ফিরে,
আলিফ আর তোয়াকে এই ভাবে দৌড়াতে দেখে রাত জোরে বলে উঠে,
কি হচ্ছে কি আলিফ তোয়া।
রাতের গর্জন শুনে আলিফ তোয়া থেমে যায়।
রাতঃ এমন দৌড়াচ্ছ কেনো কাকিমনি ডাকছে শুনছো না কেনো বেয়াদব।
আলিফ তোয়া রাত কে খুব ভয় পায় তারা চুপটি করে দাড়িয়ে রইলো।
মিন্নী বেগমঃ এখন থামলি কেনো দৌড়া এখন ( দুজন এর কানে ধরে)
আলিফঃ ওফ আম্মু লাগছে।
রাতঃ কাকি মনি ছারো কি হয়েছে বলো।
মিন্নী বেগমঃআজ থেকে আগামী এক সপ্তাহ ওনারা পরতে বসবে না
রাতঃ কেনো?
মিন্নী বেগমঃ নীলার বিয়ে তাই।
রাতঃ মানি কি আলিফ তোয়া বিয়ের পাঁচ দিন বাকি আর তোমরা আজ থেকে পরতে বসবে না।
আলিফ তোয়া চুপ হয়ে আছে কিছু বলছে না ভয় এ।
রাতঃ আগামী এক সপ্তাহ আলিফ আর তোয়া পরড়তে
এইটুকু বলে রাত থেমে গেলো
আলিফ তোয়া রাতের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো
রাত আবার বলতে শুরু করলো
আগামী এক সপ্তাহ আলিফ তোয়া পরতে বসবে না ( হেসে)
আলিফ তোয়া খুশিতে
ইয়াহু বলে লাফাতে লাগলো।
মিন্নী বেগমঃ রাত তুমি এইটা কি বললে?
রাতঃ আচ্ছা কাকি মনি কয়েকটা দিন পরতে না বসলে তেমন কিছু হবে না।
মামনি আর কিছু বললো না।
রাত গিয়ে রৌদ্র চৌধুরী এবং রায়হান চৌধুরীর সাথে গিয়ে বসলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত কাল থেকে সব আয়োজন শুরু করে দিস সব দায়িত্ব কিন্তু তোর উপর আমরা অফিস এর ফাঁকে যা করতে পারি তা করবো তোর বন্ধু বান্ধব সবাইকে ইনভাইট করিস।
রাতঃ হুম ঠিক আছে।
রাতে আসেপাশে তাকিয়ে মেঘ কে খুজছে না পেয়ে মেঘ কে মেসেজ করে।
মেঘ কই তুই?
মেঘ রুমে নীলার সাথে কথা বলছিলো মেসেজ দেখে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে রাতের মেসেজ।
নীলাঃ বাববা বাসায় থেকেও মোবাইলে মেসজ কি প্রেম রে।
মেঘঃ আপু তোমার ভাই যে পাগল তাই।
নীলাঃ আচ্ছা দেখ কি বলে।
মেঘ রাতের মেসেজ এর রিপ্লে দিলো
রুমে কেনো কি হয়েছে?
রাতঃ নিচে আয় দেখতে পারছি না কেনো?
রাতের মেসেজ দেখে মেঘের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো আর মনে মনে বললো পাগল একটা
মেঘ নীলাকে নিয়ে নিচে আসলো।
সবাই বসে আছে নানু মনিও আছে।
নিলয় বাইক পেয়ে এখনো বাসায় ফিরে নি।
রাত মেঘ কে দেখে মেঘ এর দিকে তাকিয়ে রইলো আর ইশারায় রাত এর পাশে এসে বসতো বললো মেঘ ইশারায় না বললো।
নানু মনির পাশে বসলো মেঘ।
সবাই মিলে বিয়ের শপিং গেস্টদের বেপারে কথা বলছে।
নিলয় বাসায় ফিরে কলিং বেল বাজলে কুসুম গেইট খুলে দেয়।
বড় খালামনিঃ ঐ যে আসছে নবাবজাদা রাত কেনো যে বাইক টা কিনে দিলি।
নিলয়ঃ তুমি আমার মা হয়ে আমার সাথে এমন কোরো কেনো শত্রুতার ও তো একটা লিমিট আছে আম্মু।
নিলয় এর কথা শুনে সবাই হেসে দেয়।
মেঘঃখালা মনি সয়তান কে বাদর হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
নিলয়ঃ পেত্নী তোরে কিন্তু
মেঘঃ কি আমাকে বাদর ( ভেংচি কেটে)
রৌদ্র চৌধুরীঃ মেঘলা নিলয় চুপ
মামার কথায় দুজনেই চুপ হয়ে গেলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ আচ্ছা তো আগামীকাল সবাই শপিং এর জন্য তৈরি থেকো দুপুরের দিকে বের হবো আর দি ভাই তুই নীলার ফুফি চাচাদের বলে দিস।
রাতের ডিনার করে যে যার রুমে চলে গেলো।
কিন্তু নিলয়,রাত,মেঘ আর নীলা ড্রয়িং রুমে বসে রইলো।
ওরা বসে গল্প করছে,রাত মেঘের পাশে বসে মেঘের কাঁদের দিক দিয়ে সোফায় হাত দিয়ে রেখেছে।
নিলয় কথা বলছে আর কারো সাথে মেসেজ করছে।
নীলার ফোনে আকাশের ফোন আসলে নীলা ওদের মাঝ থেকে উঠে চলে যায়।
নিলয়ও মেসেজ করতে করতে চলে যায়
দুজন চলে যাওয়াতে মেঘ ও উঠে আাতে নিলে রাত হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো।
মেঘঃ কি হলো?
রাতঃ কিছু না আর একটু পরে যা।
মেঘঃ রাত ১১ টা বাজে তুমি থাকো আমি যাই।
রাতঃ না মাথায় হাত ভুলিয়ে দে।( মেঘ এর কোলে সোয়ে)
মেঘঃ পাগল তুমি এতো রাতে এই ড্রয়িং রুমে বসে আমি তোমার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিবো।
রাতঃ হুম তোর জন্য পাগল একটু দে তারপর চলে যাস।
মেঘ বাধ্য মেয়ের মতো রাত এর মাথায় হাত ভুলাতে লাগলো।
রাতঃ কাল শপিং এ যাবি তুই?
মেঘঃ হুম যাবো না কেনো?
রাতঃ না গেলে হয় না?
মেঘঃ সবাই যাবে আমি যাবো না?
রাতঃ হুম আপনার তো যেতেই হবে যাবেন তবে হিজাব পরে আর লং ড্রেস পরে।
মেঘঃ আমি কখনোই শর্ট পরে বাহিরে যাই না কিন্তু হিজাব।
রাতঃ কিন্তু হিজাব পরতেই হবে যদি না পরিস তো বাহিরে যেতে পারবি না।
মেঘঃ ঠিক আছে ( কপাল কুঁচকে)
রাত এতো সময় চোখ বুঝে ছিলো মেঘ এর ঠিক আছে কথাটা কেমন যেনো লাগলো তাই চোখ মেলে মেঘের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উঠে বসে পরলো।
আর মেঘ কে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে বললো,
আমি চাই না আমার মেঘ এর সুন্দরয্য অন্য কেউ দেখুক তুই সেজেগুজে গেলে অনেক ছেলে তোর উপর ক্রাস খাবে আর সেইটা আমার ভালো লাগবে না আমি বুঝাতে পেরেছি মেড্যাম
মেঘঃ হুম
রাতঃ ঘোমড়া মুখে হাসি নেই
মেঘ এবার একটা হাসি দিয়ে বললো হুম।
রাত মেঘের কপালে একটা চুমু একে দিয়ে বললো আচ্ছা এবার যা রুমে।
মেঘ রাত কে একটা হাসি উপহার দিয়ে ঘুমাতে চলে গেলো।
চলবে,
Part 32-33
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩২+৩৩
মেঘ রাত কে একটা হাসি উপহার দিয়ে ঘুমাতে চলে গেলো।
রাত ও নিজের রুমে চলে গেলো।
সকালে,
গতকাল এর মতো আজও মেঘ রাত হাঁটতে বের হয়েছিলো।
আজ থেকে কলেজ নেই তাই কলেজ যাওয়ার জন্য কোনো টেনশন নেই।
সবাই নাস্তার টেবিলে বসে আছে, কুসুম মামনিরা খাবার দিচ্ছে।
আমি রাত ভাইয়ার পাশে।
হটাৎ আমার পায়ে ঠান্ডা কিছু অনুভব করলাম।
নিচের দিকে তাকাতেই আমি রাত ভাইয়ার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালাম কিন্তু সে একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আছে।
রাত ভাইয়া আমার পায়ের উপর পা দিয়ে আছে আর মনের সুখে খাচ্ছে, এই দিকে আমার কেমন অস্তি লাগছে।
আমি যেখানেই পা রাখছি সেখানেই সেও রাখছে।
এক সময় বিরক্ত হয়ে উঠে যেতে নিলে ভাইয়া আবার বসিয়ে দেয়।
রাতঃ খেয়ে তারপর উঠ।
কথাটা বলে সে উঠে চলে গেলো আলিফ তোয়ার কাছে সোফায় কারন তার খাওয়া শেষ।
আমি বাধ্য মেয়ের মতো সবটা শেষ করলাম।
নিলয়ঃ খেয়ে খেয়ে দিন দিন মুটি হয়ে যাচ্ছিস একটু কম খাইস রাক্ষসী।
নিলয় এর কথায় রেগে আগুন হয়ে গেলাম।
সামনে গ্লাস এ থাকা পানি ছুরে মারলাম ওর গায়ে এক তো শীত তার উপর ঠান্ডা পানি।
ও খাওয়া রেখে উঠে দাঁড়িয়ে পরলো।
নিলয়ঃ কি করলি তুই এইটা?
রৌদ্র চৌধুরীঃ যা করার করেছে এখন দুজনের একজন ও কথা বারাবি না।
নিলয়ঃ কিন্তুু মামা তুমি দেখেছো
রৌদ্র চৌধুরীঃ তোর ও দূষ আছে তুই কেনো মেঘলা কে রাক্ষসী বলতে গেলি।
আমি হেসে নিলয় কে ভেংচি কেটে চলে আসলাম।
নানু মনি সোফায় বসে ছিলো আমিও এসে নানু মনির পাশে বসে পরলাম।
নিলয় কিছু বলতে না পেরে রেগে চেঞ্জ করতে উপরে চলে গেলো আর আমি ওর রিয়াকশন দেখে গাল টিপে হাসতে লাগলাম।
নানু মনিঃ ছেলেটালে জল নাও মারতে পারতি।
মেঘঃ আমাকে রাক্ষসী বললো কেনো ঠিক হয়েছে।
রাতঃ হুম আপনাকেও দিবে চিন্তা করেন না ম্যাডাম তখন চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় করবেন নিলয় তো কিছু বললো না।
আমি রাত ভাইয়ার দিকে ব্রু কুচকিয়ে তাকালাম আর একটা ভেংচি কেটে বললাম।
তাহলে আমিও আবার দিবো।
এই ভাবে সারা সকাল কেটে গেলো।
দুপুর তিনটে আমরা সবাই রেডি হয়ে নিয়েছি শপিং এর জন্য।
মেরুন রং এর থ্রিপিস সাথে মেরুন হিজাব।
রাত ভাইয়ার কথা মতো হিজাব পরতে হলো।
নানু মনি যাবে না, তাই বড় খালা মনি আর বড় মামনী বাসায় থেকে গেলো।
ছোট মামনি, আমি,নীলা আপু, রাত ভাইয়া নিলয় আর ছোট মামা শপিং এর উদ্দেশ্য বের হলাম।
আর হ্যা আকাশ ভাইয়ার বাড়ির লোক ও আসবে।
আজ বিকেলে ছোট খালামনি আসবে কতদিন খালামনি কে দেখি না।
তাড়াতাড়ি আসলে আমাদের সাথে শপিং এ যেতে পারতো কিন্তু দেরি হবে তাই আমরা বেড়িয়ে পড়লাম।।
রাত ভাইয়া ড্রাইভিং করছে তার পাশে ছোট মামা, আর আমরা তিনজন পেছনের সিটে,সাথে তোয়াও আছে আলিফ নিলয় এর সাথে চলে গিয়েছে
নিলয় সয়তানটা ওর বাইকে।
গাড়ি এসে থামলো শপিং মল এর সামনে।
আমরা সবাই নেমে পরলাম, খুব ভালো লাগছে কতদিন পরে শপিং এ আসলাম।
কিছুক্ষণ পরে আর একটা গাড়ি এসে থামলো সেখান থেকে আকাশ ভাইয়া,আসফি,রাইমা, সুপ্তি।
আকাশ ভাইয়া ছোট মামাকে সালাম দিলো।
রাইমা কেমন বার বার রাত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে হাসছে অশব্যটা একদম দেখতে ইচ্ছে করে।
আসফিঃ কেমন আছো মেঘ?
মেঘঃ ভালো ভাইয়া।
সবাই যখন শপিং মল এর ভিতরে যাচ্ছি তখন রাত ভাইয়া আমাকে যেতে দিলো না বললো তার সাথে যেতে।
মামা নীলা আপুদের নিয়ে ভেতরে চলে গেলো আমি রাত ভাইয়ার জন্য দাঁড়িয়ে রইলাম ভাইয়া গাড়ি পার্কিং এ রেখে আসতে গিয়েছে।
নিলয় এসে আমার সামনে দাঁড়ালো।
কিরে একা দাড়িয়ে আছিস কেনো?
মেঘঃ তোর জন্য একটা বউ খুচ্ছিরে নিলয়।
নিলয়ঃ ওহ রিয়েলি এই তো একটা কাজের মতো কাজ করছিস।
পাশ থেকে কোনো বাজে একটা ছেলে বলে উঠলো।
ওফ কি জোস তা সুন্দরী এতো ছোট একটা ছেলের সাথে কেনো মনে হয় তোমার সমবয়সী এর সাথে না থেকে আমাদের কাছে চলে আসো।
বদমাশ ছেলে গুলোর কথায় নিলয় রেগে গিয়ে বললো।
ভালো চাস তো কেটে পর যা বলেছিস তার জন্য তওবা কাট ঐ কথটা আর মুখে আনিস না আমি তোদের ছোট তাই কিছু বললাম না কিন্তু সম্মান দিয়ে কথা বললাম না।
অন্য একটা ছেলে নিলয় কে বললো।
এই তোর সাহস হয় কি করে আমাদের তুই বলার? এই সুন্দরীকে তোলে নিয়ে যাবো দেখি তুই কি করিস?(আমার হাত ধরে)
রাতঃ এখন শালা পেটাবো। ( বলেই রাত ভাইয়া ছেলে গুলোকে বেদম পেটাতে লাগলো সাথে নিলয় ও)
ছেলে গুলো ওদের দুজন এর সাথে না পেরে এক প্রকার পালিয়ে চলে গেলো।
রাত ভাইয়া রেগে আগুন হয়ে গিয়েছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
আমার দিকে তাকিয়ে বললো এর পর থেকে বোরকা পরে আসবি।
বলে আমার হাত ধরে হাটা শুরু করলো।
মেঘঃ যাক বাবা হিজাব আবার হিজাব থেকে বোরকা
নিলয় ঠোঁট টিপে হাসছে আর মনে মনে ভাবছে মেঘলা তুই গেছিস এর পর থেকে তোর বোরকা পরতে হবে আন্টি আন্টি লাগবে আমিও তোকে রাগাতে পারবো।
সবাই মিলে ইচ্ছে মতো শপিং করছি নীলা আপু নিজের পছন্দ মতো কিনছে অবশ্য আকাশ ভাইয়াও পছন্দ করে দিচ্ছে।
হটাৎ আমার চোখ আটকে যায় একটা গোলাপির সাথে ব্লু কম্বিনেশন এর একটা লেহেঙ্গার দিকে এত্তো সুন্দর লাগছে আমি হাত বাড়িয়ে দেখতে যাবো সাথে রাত ভাইয়া ও সেই লেহেঙ্গাটাই দেখতে লাগলো।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলাম।
রাত ভাইয়া বললো,
আমার পরিটাকে খুব সুন্দর লাগবে এই লেহেঙ্গাটায়।
আমি লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে একটু হাসলাম।
রাইমাঃ ওয়াও কি সুন্দর লেহেঙ্গা টা আমি এটা নিবো।
রাইমার কথায় আমার একটু মন খারাপ হয়ে যায়।
কিন্তু রাত ভাইয়া মুহূর্তেই ভালো করে দিলো।
রাতঃ সরি ম্যাডাম ইট’স অলরেডি বুকিং।
রাইমাঃ কিন্তু
রাত ভাইয়া লেহেঙ্গা টা নিয়ে চলে গেলো আর রাইমা কে বললো,
অন্যটা পছন্দ করে নেও।
রাইমা হেবলার মতো দাঁড়িয়ে রইলো আর আমি মুখ টিপে হাসতে লাগলাম।
মেঘঃ আপু তুমি একটা কাজ করো শপিং মল এ আরো অনেক লেহেঙ্গা আছে এর থেকে বেশি সুন্দর সুন্দর তুমি ঐ খান থেকে নিয়ে নেও।
রাইমা কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
আমি রাইমা কে পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম।
নীলা আপু এবং বাকি সবারই শপিং প্রায় শেষ।
রাত ১০ টা বেজে গিয়েছে।
আমরা শপিংমল এর বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি ছোট চাচ্চু গাড়ি পার্কিং থেকে নিয়ে আসছে।
রাত ভাইয়া আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
রাইমা আর চোখে বার বার তাকিয়ে দেখছে।
হটাৎ রাত ভাইয়া নিলয় কে ডাকলো।
রাতঃ নিলয় শুন।
নিলয়ঃ হে বলো ভাইয়া।
রাতঃ তুই গাড়িতে চলে যা আমি তোর বাইকটা নিয়ে যাই।
নিলয়ঃ হে যাও এই যে চাবি।
ভাইয়া আমার হাত ধরেই বাইক এর সামনে গেলো এবং বাইক এ বসে পরলো।
আমি তাকিয়ে রইলাম আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমিও কি বাইক এ যাবো নাকি গাড়িতে?
রাতঃ দাঁড়িয়ে আছিস কেনো দাওয়াত দিয়ে উঠাতে হবে নাকি।
মেঘঃ আমি গাড়িতে যাই তুমি বাইক নিয়ে যাও( মুখ ফসকে কথাটা বেড়িয়ে পড়লো অবশ্য এইটা আমার মনের কথা কারণ এর আগে আমি কখনো বাইক উঠিনি তাই ভয় লাগছিলো)
রাত ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বাইক স্টার্ট দিয়ে জোড়ে হর্ন বাজাতে লাগলো, আমি বুঝতে পেরেছি এই হর্ন এর মানি কি।
আমিও লক্ষি মেয়ের মতো ভাইয়ার কাঁদে হাত দিয়ে উঠে পরলাম।
যতটা ভয় পেয়েছিলাম এখন অবশ্য ততটা ভয় লাগছে না।আসলে এই মানুষটা যদি আমার পাশে থাকে সব ভয় কে আমি হার মানাতে পারবো।
মুখে এক চিলতে সুখের হাসি চলে আসলো, নিজের অজান্তেই ভাইয়ার পিঠে মাথা রাখে চোখ বুঝে নিলাম।
এই মুর্হুতে একটা গান মনে পরছে,
এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
রাত মেঘ এর কান্ড দেখে মুচকি হাসলো।
মেঘের মতো রাত এর ও একি মনে হচ্ছে এই পাগলিটা তার সাথে থাকলে তার অনুভূতি টা কেমন হয়,পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ মনে হয় নিজেকে, খুব বেশি ভালোবাসি মেঘ তোকে।( মনে মনে কথাটা ভেবে তার কাঁদে থাকা মেঘ এর হাতে একটা চুমু একে দেয়)
মেঘ রাত স্পর্শে চমকে উঠে আর নিজের হাত ঘুটিয়ে নেয়।
রাত এদিক সেদিক তাকিয়ে হাসে।
বাসায় গিয়ে ছোট খালামনিকে দেখে আমি খুশিতে আত্মহারা।
রাহাত কে কোলে নিয়ে ইচ্ছে মতো পাপ্পি দিতে লাগলাম।
নীলা আপুরা এখনো বাসায় ফিরে নি।
রাহাত কে পাপ্পি দিতে দেখে রাত মেঘ কে বলে।
কি হচ্ছেটা কি মেঘ যা রুমে যা ফ্রেশ হয়ে নে।( একটু রেগে জোর গলায়)
মেঘ রাত এর এমন ব্যবহার এর কারণ খোজে পেলো না বাধ্য মেয়ের মতো নিজের রুমে চলে আসলো।
————————————————–
সকাল থেকে বাড়ি সাজানোর জন্য লোক চলে আসছে।
রাত ভাইয়াও খুব ব্যস্ত লোক গুলোকে দেখিয়ে দিচ্ছে সাথে বান্দর নিলয়টা ও আছে আমি সোফায় বসে বসে রাত ভাইয়া দেখছি।
আলিফ তোয়া রাহাত খুশিতে এদিক সেদিক ছুটোছুটি করছে।
আগামীকাল হলুদ আর মেহেন্দির অনুষ্ঠান আজ বিকেল থেকেই মেহমান আসবে। নীলা আপুর চাচা ফুপ্পিরা , বড় মামনি, ছোট মামনির বাবার বাড়ির লোকেরা, রাত ভাইয়া ছোট থেকে যাদের কাছে ছিলো তারাও নাকি আজ বিদেশ থেকে আসবে। রাত ভাইয়া বিকেলে তাদের রিছিভ করতে এয়ারপোর্টে যাবে
নীলা আপু আকাশ ভাইয়ার সাথে কথা বলছে।
নানুমনিঃ আমার দাদু ভাই এর নজর লেগে যাবে।যে ভাবে তাকিয়ে দেখছিস।
হটাৎ নানুমনির এমন কথায় আমি হকচকিয়ে গেলাম আর নানু মনি কে একটু রেগে বললাম।
নানু মনি তুমিও না
নানুমনি হেসে দিলো আর বললো,
তোরা ছোট বেলা থেকে এমন একজন আর একজনকে ছাড়া কিছু বুঝিস না।
আমি হেসে নানুমনিকে জড়িয়ে ধরলাম।
রাতঃ কি হচ্ছে দুই সতিন এর মাঝে এতো মাখামাখি কেনো?
মেঘঃ দুই সতিন মানি?(কাপাল কুঁচকে)
রাত ভাইয়া হেসে আমার পাশে বসে পায়ের উপর পা রেখে বললো,
হুম বন্ধুর বউ মানি আমার বউ মানি দিদুন আর তুই তো আমার
মেঘঃ না ( লজ্জা পেয়ে)
হটাৎ দিদুন উঠে চলে গেলো।
রাতঃ তুই আমাকে ঐ ভাবে তাকিয়ে দেখছিস কেনো?( মেঘ কে লজ্জায় ফেলতে এই কথাটা বলা কারন মেঘ এর লজ্জা মাখা মুখটা খুব ভালো লাগে)
মেঘঃ মা মানি আআমি কখন দেখলাম তোমাকে?( তুতলিয়ে)
রাতঃ আমি কিন্তু আমার কলিজা কে সবসময় দেখি আমার পাখিটা কি করছে কাকে দেখছে। ( কানের কাছে এসে ফিসফিস করে)
আমার বুক ধুকধুক করতে লাগলো জানি না এই লোকটা আমার কাছে আসলে এমন কেনো হয়।
একটা লোক এসে রাত ভাইয়া কে ডাকতে লাগলো কাজ এর জন্য।
স্যার একটু দেখে যান
রাত ভাইয়া আমার দিকে একবার তাকিয়ে উঠে আমার চুল থেকে হেয়ার বেন্ড টা নিয়ে চলে গেলো।
সাথে সাথে আমার চুল গুলো গড়িয়ে পড়লো ফ্যান এর বাতাসে এলোমেলো হয়ে পড়লো।
রাত ভাইয়া পেছন ফিরে একটা মুচকি হাসি দিলো ভাইয়ার হাসিতে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম আমার ঠোঁটের কোনেও হাসি চলে আসলো ।
____________________________________
বিকেল থেকে সব গেস্ট আসতে লাগলো।
সবাই যে যার মতো বসে আছে।
নীলা আপুর কাজিনরা ও চলে এসেছে তাদের আমি আগে থেকেই চেনা তাই কথা বলছিলাম।
হটাৎ রাত ভাইয়া উপর থেকে আমাকে ডাকছে।
মেঘ উপরে আয় দরকার আছে।
নীলাঃ যা রাত ডাকছে।
আমিও উপরে চলে আসলাম ভাইয়ার রুমে।
ভাইয়া একটা ব্লু রং এর শার্ট পরে আয়নার সামনে চুল ঠিক করছে।
কোথাও কি যাবে ওহ ভাইয়ার তো এয়ারপোর্টে যাওয়ার কথা।
মেঘঃ কেনো ভাইয়া?
রাতঃ ওদের সাথে এতো কিসের কথা?
মেঘঃ ওরা আমাদের বাসায় আসছে কথা না বললে কেমন দেখায়?
রাতঃ বাবা তুই দেখি বড় হয়ে গিয়েছিস।
মেঘঃ হুম বড় তো হবোই তোমার বউ……… ( কথটা বলে জিহ্বা কামড় দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো)
রাত মেঘ এর দিকে তাকিয়ে হেসে মেঘের হাত ধরে নিজের কাছে টেনে বললো,
আমার বউ হতে যাচ্ছিস বড় তো হবি তাই না।
মেঘঃ না মানি
রাত হাহাহা করে হেসে দিলো।
রাতঃ আচ্ছা এতো লজ্জা পেতে হবে না বাড়িতে অনেক মানুষ আর ছেলে মানি নীলার কাজিনরা ওদের থেকে দূরে থাকবি আমি এয়ারপোর্টে যাচ্ছি বড় মামাদের রিসিভ করতে।
মেঘঃ হুম
রাত মেঘের দু গাল ধরে কপালে একটা চুমু একে দিলো মেঘ কে বায় বলে বেড়িয়ে পড়লো।
মেঘ একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে নিজের রুমে গেলো।
বাড়িতে মেহমান দিয়ে থইথই করছে ড্রয়িং রুমে এক একজন এক এক জায়গায় বসে আছে।
সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে ভাইয়া এখনো আসে নি।
আমি উপর থেকে সবাইকে দেখছি।
হটাৎ নিলয় আমার পাশে এসে ধারালো।
নিলয়ঃ কিরে পেত্নী একা একা কি করিস?
মেঘঃ তোকে বলবো কেনো?
নিলয়ঃ পেত্নী ভালো ভাবে কিছু জিজ্ঞেস করলে সোজাসাপ্টা উত্তর দিতে তোর কষ্ট লাগে? আবশ্য এইটা তোর জন্মগত দূষ বললেই কি হবে।
মেঘঃ আমার সাথে জগরা না করলে ভালো লাগে না তোর।
নিলয়ঃ জগরা করবো না একটা গফ খোঁজে দে।
মেঘঃ তোর কপালে গার্ল ফ্রেন্ড হাহাহাহা তোর মতো বান্দর জীবনেও পাবি না।
নিলয়ঃ এই জন্যই তো তোরে দেখতে মন চায় না ইডিয়ট বেয়াদব মেয়ে।
নিলয় কে কিছু বলতে যাবো তার আগেই কলিং বেজে উঠলো কুসম গিয়ে গেইট খোলে দিলো।
গেইট এর দিকে তাকিয়ে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
চলবে,
Part 34-35
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩৪+৩৫
মেঘ গেইট এর দিকে তাকাতেই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো।
নিলয়ঃ বেপারটা কিরে মেঘ?
মেঘঃ আমি কিভাবে বলবো?
নিলয়ঃ রাত ভাইয়া অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে ভাবা যায়?
রাত অন্য একটা মেয়ের সাথে হাত ধরে আছে ভাবতেই মেঘের খুব কষ্ট হচ্ছে সয্য করতে পারছে না মেঘ কষ্টে ছোটে রুমে চলে গেলো।
নিলয় নিচে আসলো।
সাহেলা বেগমঃ দাদা ভাই, ভাবি কেমন আছো কত বছর পরে তোমাদের দেখলাম।
রাতের মামাঃ ভালো আছি তোকেও তো কত বছর পরে দেখলাম।
সাহেলা বেগমঃ নদী মামনি কত বড় হয়ে গিয়েছে।
রাতের মামিঃ হে রাত আর নদী তো একি বয়স এর বড় তো হবেই।
মিন্নী মামনিঃ ভাবি ভাইয়া অনেক জার্নি করে এসেছেন আগে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নেন পরে সবার সাথে কথা হবে।
সাহেলা বেগমঃ হে রাত বাড়িতে তো অনেক মেহমান নদীকে বরং মেঘলার রুমে দিয়ে আয়।
রাতঃ হে নদী চল
রাত আর নদী মেঘের রুমের দিকে পা বাড়ালো।
দরজা খোলা থাকাতে রাত নদীকে নিয়ে মেঘের রুমে যায়।
মেঘ বেলকনিতে থাকায় রাত মেঘকে দেখতে পায় নি।
রাতঃ এই রুমটা মেঘ এর তুই মেঘের সাথেই থাকিস সমস্যা হবে তোর?
নদীঃ হলেও মানিয়ে নিতে পারবো শুধু তোর জন্য।
মেঘ ওদের কথা শুনছিলো খুব কান্না ও পাচ্ছে।
রাতঃ আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি আসি এক সাথে ডিনার করবো অনেক দিন একসাথে খাওয়া হয় না।
নদী রাত কে একটা হাগ করে এবং বলে
ওকে মাই ডিয়ার,
রাত রুম থেকে বেড়িয়ে পরে।
নদী ওয়াশরুমে চলে যায়।
মেঘের বুকটা দুমড়ে মোচরে যাচ্ছে তার রাত ভাইয়া অন্য একটা মেয়ের এতো কেয়ার করছে হাত ধরে হাঁটছে, এক সাথে খাবে বলছে যা একদম সয্য করার মতো না।
মেঘঃ না মেঘ তোর ভেংগে পরলে হবে না বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান সেইটাও নীলা আপুর আমি চাই না আমার মন খারাপে নীলা আপুর আনন্দটা নষ্ট হোক আমি এই বজ্জাত রাক্ষসটার সাথে কথাই বলবো না ।
মেঘ রুমে আসলো কিছুক্ষণ পরে নদীও বেড়িয়ে আসলো একটা জিন্স এবং হোয়াইট টি শার্ট পরে।
নদী আমাকে দেখে এক পলক তাকিয়ে বললো
তুমি মেঘ এম আই রাইট?
মেঘঃ জি
নদীঃ আজ থেকে আমি তোমার সাথে থাকবো সমস্যা হবে তোমার?
মেঘঃ সমস্যা হবে না মানি অনেক হবে শাঁকচুন্নি আমার রাত ভাইয়া কে হাগ ইস ছি অশব্য মেয়ে ( মনে মনে)
নদীঃ হ্যালো
মেঘঃ নাহ কোনো সমস্যা হবে না।
নদীঃ আমি নদী রাতের মামাতো বোন।
মেঘঃ ওহ আচ্ছা ( তার মানি এদের বাসায় রাত ভাইয়া ছোট থেকে বড় হয়েছে)
হটাৎ রাত এর আগমন,
নদী হয়েছে তোর?
নদীঃ হে ( একটা হাসি দিয়ে)
রাতঃ আচ্ছা তো চল নিচে যাওয়া যাক,মেঘ তুইও চলে আয়।
নদী আর রাত চলে যায় মেঘ পাথর এর মুর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইলো রাত মেঘকে ইগনোর করছে যা মেঘ মানতেই পাড়ছে না, মেঘ থেকে নদীকে বেশি কেয়ার করছে।
ভাবতেই চোখে জল চলে আসলো মেঘ এর আবার কান্না করে দিলো।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরে মেঘ কিছু একটা ভেবে কান্না বন্ধ করে দিলো।
মেঘঃ কাঁদছি কেনো আমি, মেঘ তুইও কম কিসে তুইও রাত কে দেখিয়ে দে, হুম আমি রাত ভাইয়ার সাথে এমনি করবো আমি কেনো কান্না করবো?
নীলাঃ মেঘ এই মেঘ কি করছিস একা একা রুমে?
মেঘঃ এইতো আপু কিছু না আসছি।
নীলার ডাকে মেঘ রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো নীলার সাথে নিচে এসে নীলার কাজিনদের সাথে যোগ দিলো আড্ডায়।
রাত আর নদী অন্য পাশে বসে গল্প করছে আর খুব হাসাহাসি করছে।
মেঘ দেখে আবার কষ্ট পায় কিন্তু এবার চোখের জল ফেলে নি।
নিহানঃ হায় মেঘলা তোমার তো কোনো খবরি নেই কোথায় থাকো?
মেঘঃ আমি তো বিকেলেও আপনাদের সাথে কথা বললাম তারপর একটু বিজি ছিলাম।
নিহানঃ ওহ আচ্ছা তাই।
মেঘ ইচ্ছে ইচ্ছে করে হেসে হেসে কথা বলছে নিহানদের সাথে।
হটাৎ রাতের চোখ পরে মেঘের দিকে ও নিহান এর পাশে বসে আছে আবার এতো হেসে কথা বলছে।
রাত মুহূর্তেই রেগে আগুন হয়ে যায়।
রাত উঠে মেঘদের কাছে আসতেই নীলার মায়ের ডাক পরে সবাইকে ডিনার করার জন্য।
মেঘ রাতকে দেখে না দেখার বান করে নীলার সাথে চলে যায়।
সাহেলা বেগমঃ রাত নদীকে নিয়ে খাবার টেবিলে বস।
মায়ের ডাকে রাত নদীকে নিয়ে খাবার টেবিলে চলে যায়।
মেঘ আগে থেকেই নীলাদের সাথে বসে আছে।
রাত একটা চেয়ার টেনে নদীকে বসতে বলে এবং নিজে আর একটা চেয়ার টেনে বসে পরে।
খাওয়ার মাঝে নদী বিষম খায় মেঘের কিছু হলে রাত যেমনটা করে ঠিক একি রকম নদীর বেলায় করছে রাত।
মেঘ সয্য করতে না পেরে খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে চলে আসে।
কিন্তু রাতের সে দিকে কোনো খেয়াল নেই।
রাত মেঘের চেয়ার এর দিকে তাকাতেই দেখে মেঘ নেই।
সবার খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে যায়, কারণ আগামীকাল প্রোগ্রাম আজ রাত জাগা যাবে না।
রাত রুমে এসে মেঘের কথা ভাবছে মেঘ হটাৎ কেনো চলে আসলো?
মেঘের মোড একদম অফ খাটের এক কোনে ঘুটি মেরে সোয়ে আছে।
নীলা ওর পাশে সোয়ে পরলো আর মেঘকে জিজ্ঞেস করলো।
কি হয়েছে তোর মেঘলা?
মেঘঃ কিছু না আপু ঘুম আসবো।
নীলাঃ ওহহ আচ্ছা।
নীলাও চুপচাপ সোয়ে পড়লো।
তার পাশে এসে নদী।
———————————————-
সকালে,
শীতের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে এখন সকালে খুব বেশী একটা ঠান্ডা লাগে না।
মেঘ ঘুম থেকে উঠে ফরজ এর নামাজ পরে নেয়,
চারদিকে দিনের আলো ফুটতে লাগলো, সকালের পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ।
মেঘ প্রতিদিন এর মতো বারান্দায় চলে যায়।
নীলাও উঠে পরে, মেঘকে বারান্দায় দেখে সেও মেঘের পাশে গিয়ে বসে।
মেঘ নীলাকে দেখে একটা মিষ্টি হাসি দেয়।
নীলাঃ গুড মর্নিং
মেঘঃ গুড মর্নিং আপু
নীলাঃ বাহিরে যাস নি?
মেঘঃ না আপু বসে আছি এই খানেই।
নীলাঃ আচ্ছা চল আমরা যাই একটু হেঁট আসি।
মেঘঃ চলো
নীলাঃ নদী মেয়েটা কোথায় গিয়েছে?
মেঘঃ রুমেই তো ছিলো দেখি নি।
নীলা আর মেঘ দুজন বাগানে আসে।
সেখানে রাত আর নদীকে দেখতে পায়।
নীলা ঐ যে দেখ রাত ঐ খানে চল,
বলে মেঘ এর হাত ধরে রাতের সামনে নিয়ে যায়।
মেঘঃ আজ ভাইয়া আমাকে কোনো মেসেজ করলো না নদী আপুকে নিয়ে হাঁটছে ভাবতেই চোখে জল টলমল করছে।
নীলাঃ হায় রাত গুড মর্নিং।
রাত ঃ গুড মর্নিং নীলা এই দিকে আয়।
নীলা মেঘের হাত দরেই রাতের পাশে দাড়ালো মেঘ নিজের চোখের জল লুকাতে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।
হটাৎ নদী
আউচ
রাতঃ কি হলো?
নদীঃ চোখে কিছু একটা পরেছে।
রাত নদীর চোখ দেখতে লাগলো
মেঘ আর সয্য করতে পারছে না নীলার হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে দৌড়ে ওদের সামনে থেকে চলে যায়।
নীলা মেঘকে ডাকতে থাকে
মেঘ কি হলো কোথায় যাচ্ছিস?
নদী রাত এর হাত সরিয়ে রাত কে বললো,
রাত মেঘ হয়তো আমার পাশে তোকে দেখতে পারছে না আমি খেয়াল করেছি গতকাল থেকে ওর মোড খুব খারাপ তুই ওর যেমন চনচলতার কথা বলতি তেমন কিছুই আমি দেখতে পারছি না।
রাতের গতকাল থেকে এই কথাটা মাথায়ই আসে নি, আর সকালে আমি মেঘকে মেসেজও করি ওফ সিট আমি মেঘকে কি করে কষ্ট দিতে পারলাম দেত।
রাত আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে থেকে মেঘের পিছু ছোটলো।
নীলা অবাক চোখে নদীর দিকে তাকিয়ে রইলো।
নদীঃ কি নীলা কি খবর তোমার সাথে গতকাল কথা হয় নি।
নীলাঃ ভালো কিন্তু আমি তোমাকে নিয়ে নেগেটিভ চিন্তা করেছিলাম মেঘের বেপার টা আমিও বুঝতে পেরেছি কিন্তু রাত কে বলি নি।
নদীঃ হাহাহাহা রাত আমার ভালো একটা বন্ধু হে আমি রাত কে পছন্দ করতাম বাট রাত মেঘকে যতটা ভালোবাসে আমার ভালোলাগা সেইখানে তুচ্ছ। ( হেসে)
নীলাঃ নদীকে জড়িয়ে ধরে। আর বলে তুমি খুব ভালো নদী বিদেশে বড় হলেও নিজের দেশের মতোই কালচার তোমার।
নদীঃ সব ক্রেডিট রাতের
নীলাঃ
রাত মেঘকে খোজতে খোজতে ছাদে চলতি যায়।
মেঘ সে খানে রেলিং এ হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় জল পরছে, ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে।
রাত মেঘের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
রাত কে দেখে মেঘ চলে আসতে নেয়। কিন্তু রাত মেঘের হাড ধরে বাঁধা দেয়।মেঘ কে খুব শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে।
মেঘ রাতের বুকে জায়গা পেয়ে শব্দ করে কেঁদে দেয়।
রাত আরো শক্ত করে মেঘ কে জড়িয়ে ধরে।
আর নরম স্বরে বলে,
মেঘ সরি পাখি আমি বুঝতে পারি নি তুই কষ্ট পাবি আসলে তোর থেকে দূরে গিয়ে একমাত্র বন্ধু নদী ছিলো আমি তোর জন্য খুব কষ্ট পেতাম নদী সব সময় আমাকে ভরসা দিতো।আর ওর সাথে অনেক দিন পরে দেখা তাই আম সরি আর এমন হবে না প্লিজ কাঁদিস না লক্ষিটি প্লিজ।
মেঘ অভিমানী স্বরে বলে,
ছারো তুমি আমাকে তুমি আমার থেকে নদী আপুকে ভালোবাসো একটুও ভালোবাসো না আমাকে লাগবে না তোমার সরি।
রাতের বুক৷ থেকে নিজেকে ছারানোর বৃথা চেস্টা করে।
রাতঃ মারবো কিন্তু আমি যদি পৃথিবীতে সব থেকে বেশি ভালোবাসি সে শুধু তুই আমার মেঘ বউ।
মেঘঃ একটু ও না দেখেছি তো আমি গতকাল সন্ধ্যা থেকে দেঝে আসছি নদী আপু আসার পর থেকে আমাকে তোমার চোখেই পরে না আমি ইচ্ছে করে নিহান এর সাথে কথা বলেছি কিন্তু তুমি আমাকে কিছুই বলো নি।
রাতঃ ওফ থ্যাংক ইউ রাত হয়ে গিয়েছিলো তাই কিছু বলতে পারি নি এখন তোর শাস্তিটা পেতে হবে গতকাল না খেয়ে চলে আসলি তার উপর নিহান এর সাথে এতো হেসে হসে কথা বলেছিস আমি সব দেখেছি কিন্তু কিছু বলার সুযোগ পাই নি আমার কথার অবাধ্য কেনো হয়েছিস হুম।( মেঘকে নিজের বুকের থেকে উঠিয়ে দু বাহু ধরে)
মেঘঃ নিজে যখন অন্য একটা মেয়ের হাত ধরে ছিলেন,কত কেয়ার নিচ্ছিলেন আর আমি সব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছি আমার তো কিছু হয় না আর আমি একটু কথা বললেই দূষ।
মেঘের কথা শুনে রাত একটু ভেবে দেখলো মেঘ তো ঠিকি বলেছে।
রাতঃ আর এমন হবে না পাখি সরি, আর কাঁদিস না তুই জানিস তোর কান্না সয্য করতে পারি না তারপরও।
মেঘঃ ডং( বলে রাত কে পেছন করে দাঁড়িয়ে রইলো)
রাত মেঘের রাগ দেখে একটা হাসি দিয়ে মেঘকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
অবশ্য আমার বউটাকে রাগলে খুব কিউট লাগে এই যে গাল দুটি, নাকের ডগাটা লাগ হয়ে যায় হেব্বি লাগে দেখতে।
রাতের কথায় মেঘ খুব লজ্জা পায়।
মেঘঃ ছাছারো নিচে যাবো( একটু তুতলিয়ে)
রাতঃ পরে ( নরম স্বরে চোখ বুঝে)
মেঘঃ যাও না তোমার নদীর কাছে।
রাত একটু হেসে মেঘের কানের কাছে গিয়ে বললো।
নদীর কাছেই তো থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু নদী তো মেঘের কাছে পাঠিয়ে দিলো।
মেঘ এবার খুব রেগে গেলো রাতের দিকে ঘুরে রাতকে ইচ্ছে মতো কিল ঘুসি দিতে লাগলো।
রাত মেঘকে নিজের হাত দিয়ে বাধা দিতে লাগলো কিন্তু মেঘ তো থামছেই না।।
রাতঃ এই পাগলি দুষ্টুমি করলাম।
মেঘঃ মেরে ফেলবো তোকে আর কোনো মেয়ের আশেপাশে দেখলে রাক্ষস বেয়াদব পোলা, লুচু কোথাকার।
রাত হইছে ম্যাডাম এবার একটু বুকে এসে শান্ত হোন।
রাত মেঘকে আবার বুকে জড়িয়ে ধরে।
হটাৎ চিলেকোঠার সামনে থেকে কেউ মেঘ এর নাম ধরে ডাকলো।
মেঘ এবং রাত নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখে সামনের দিকে তাকালো,
রাতঃ নদী
নদীর সাথে নীলা ও আছে।
নদীঃ হে সরি তোদের প্রাইভেট মূহুর্তে আসার জন্য।
রাতঃ প্রাইভেট মানি
নদী হেসে দিলো ঐ আরকি
মেঘ আমি খুব দুঃখিত বুঝতে পারি নি তুমি কষ্ট পাবে আসলে রাত আমি খুব ভালো বন্ধু শুধু এইটুকুই।
নীলাঃ হে মেঘ নদী ঠিকি বলেছে তুই রাত কে ভুল বুঝিস না।
মেঘের এখন নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে যে রাতকে অবিশ্বাস করেছে।
মেঘঃ আ’ম সরি আপু আমি বুঝতে পারি নি।
নদীঃ ইট’স ওকে ডিয়ার বেস্ট অফ লাক।
বলে নদী আর নীলা ছাদ থেকে নেমে আসে।
রাতঃ শান্তি এবার মহারানী।
মেঘ লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে।
রাতঃ এইখানে লজ্জা পেতে হয় লজ্জা পাওয়ার মতো কি হলো,সব লজ্জা তোর কাছেই থাকে মেঘ?
মেঘঃ সরি রাত ভাইয়া। আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি কিন্তু তুমিও আমাকে এভয়েড করেছে তাই।
রাতঃ হুম আমার ভুল হয়েছে আমার কলিজাকে কষ্ট দিয়েছি সরি পাখি।
মেঘঃ আচ্ছা আমি নিচে যাই।
রাতঃ এখন না পরে।
মেঘঃ না তুমি থাকো আমি যাই।
রাতঃ জাস্ট সাট আপ ইডিয়ট।
মেঘঃ সব সময় শুধুই বকো( মন খারাপ করে)
রাতঃ শুধু বকি ভালোবাসি না?
মেঘঃ শাসন করার পরিমাণ অনেক বেশি।
রাতঃ আমার জান পাখিটাকে আমি যা ইচ্ছে তা করবো তুই বলার কে?
মেঘঃ ওহ আচ্ছা তাই তো আমি বলার কে আচ্ছা তুমি থাকো তোমার জান পাখিরাকে নিয়ে আমি যাই বায়।
মেঘ যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই রাত তার আগেই মেঘ কে পেছন থেকে জড়িয়ে নেয়।
মেঘঃ এই তুমি হুটহাট এমন জড়িয়ে ধরো কেনো?
রাতঃ বললাম না আমার জান পাখিকে যা ইচ্ছে তা করবো।তুই বলার কে?
মেঘঃ আমি বলার কেউ না আমাকে ছেড়ে দেও আমি চলে যাই।
রাতঃ অনেক বেশি পেচাল পারিশ,শুন সন্ধ্যেবেলা শুধু শাড়ীটাই পরবি আর কোনো সাজুগুজু করবি না।
মেঘঃ সবাই তো করবে আমি সবার মাঝে সাজুগুজু না করলে কেমন দেখাবে সবাই কি বলবে আমাকে?
রাতঃ আমি যা বলেছি তাই হবে এদিক সেদিক যেনো না হয় তাহলে খুব খারাপ হবে।
মেঘঃ হুম( মন খারাপ করে)
রাতঃ আমি চাই না আমার বউটার উপর কারো নজর পরুক,।,
রাতের মুখে বউ ডাকে মেঘ খুব লজ্জা পেলো।
মেঘঃ ছাছাড়ো
রাত বুঝতে পারে মেঘ বউ ডাকাতে লজ্জা পাচ্ছে তাই মেঘ কে ছেড়ে দিয়ে বললো,
আচ্ছা ম্যাডাম চলুন নিচে যাওয়া যাক
আর শুনেন রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নিবেন।
মেঘঃ কেনো?
রাতঃ যা বলেছি তা করেন এতো কথা না বলে, লং ড্রেস পরবেন, আর বাড়িতে যতদিন মেহমান থাকে ততদিন টি শার্ট পরবেন না got it।
মেঘঃ হুম
রাতঃ চল ( মেঘের হাত ধরে হাঁটতে লাগলো)
সবাই ঘুম থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
মেঘলা রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে একটা হোয়াইট কালার চুরিদার পরে নেয় সাথে একটা রেড দোপাট্টা তারপর নিচে চলে আসে।
নানুমনিঃ আয় মেঘলা কোথায় ছিলি?
মেঘঃ এই তো নানু একটু রুমে ছিলাম।
নানুমনিঃতোকে তো খুব সুন্দর লাগছে মেঘলা।
মেঘঃ নানু মনি আমাকে কি তোমার কাছে সবসময়ই সুন্দর লাগে?
নানুমনিঃ আমার কাছে তোকে পৃথিবীর সব থেকে সুন্দরী মনে হয় রে পাগলী।
রাতঃ আচ্ছা দিদুন বলোতো এই মেয়েটাকে কি পড়লে পেত্নি লাগবে,সব কিছু তে এতো কেনো সুন্দর লাগে, দিদুন শুধু কি আমার আর তোমার চোখেই এতো বেশি সুন্দর লাগে, আমি তো তোমার নাতনির জন্য দিন দিন পাগল হয়ে যাবো।তোমার নাতনিকে ছাড়া তো আমি কিছুই ভাবতে পারি না ইচ্ছে করে আঠার মতো লেগে থাকতে।
নানুমনি হাহাহা করে হাসতে লাগলো।
আর এদিকে এই রাক্ষস এর কথায় আমি লজ্জায় শেষ ছি অশব্য একটা।
মেঘঃ অশব্য, নির্লজ্জ ( কথাটা বলে ভেংচি কেটে ঐখান থেকে উঠে চলে আসলাম)
—————————————————————–
সন্ধ্যে বেলা,
নীলা আপুকে পার্লার৷ থেকে সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
আপুকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে হলুদের মাঝে লাল পাড়ের শাড়ি, কাঁচা ফুলের গহনা দিয়ে অসম্ভব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
অবশ্য আপুর সাথে সবাই পার্লার থেকে সবাই সেজেছে শুধু আমি ছাড়া তবে সবার সাথে মিল রেখে শাড়ী পরেছি কলাপাতা কম্বিনেশন এর সাথে গোলাপি পাড়ের শাড়ী, কিন্তু সবার মতো সাজুগুজু করা হয় নি কারন তো একটাই রাত তার বারন এদিক সেদিক হলে আমার খবর আছে।
নদীঃ মেঘলা তুমি সাজলে না কেনো?
মেঘঃ এমনি আপু আমার সাজুগুজু মোটেও পছন্দ না।
নদীঃ হাহাহা তোমার পছন্দ না নাকি রাতের ?
মেঘঃ না মানি আসলে
নদীঃ ইট’স ওকে ডিয়ার, আই আনড্রাসটেন্ড।
মেঘ নদীকে একটা হাসি উপহার দিলো।
নদীঃ তবে এতো সিম্পল না থেকে একটু সাজো আসো আমি সাজিয়ে দিচ্ছি।
মেঘঃ না না আপু আমি এই ভাবেই ঠিক আছি।
নদীঃ আরে আসো তো।
নদী জোড় করে মেঘের চুল গুলো খোপা করে দু’টি গোলাপ গেঁথে দিলো,সাথে একটু মোটা করে গারো কাজল কপালে ছোট একটা টিপ সাথে হালকা নোড লিপস্টিক কোনো মেকআপ ছাড়া।
নদীঃ ও মাইগড হাউ পসিবল, এইটুকু সাজে একটা মেয়েকে এতো সুন্দর কিভাবে লাগতে পারে। তোমাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না অসম্ভব সুন্দর লাগছে তোমাকে।
মেঘলাঃ ধন্যবাদ আপু( তবে নদীর কথায় অনেকটা লজ্জা ও পেয়েছে মেঘ)
নীলাঃ ওয়াও আমার বোনটাকে কি সুন্দর লাগছে।
মেঘলাঃ আপু তোমাকেও খুব সুন্দর লাগছে, ভাইয়া যদি দেখতে পেতো পাগল হয়ে যেতো।
নীলাঃ দুষ্ট একটা
মেঘলাঃ
আপুর কাজিনরা সবাই আমাদের রুমে চলে আসলো
সবাইকে দেখে আমি হা হয়ে রইলাম এতো সাজ বাবা গু।
তবে সবাইকে ভালোই লাগছিলো।
শান্তাঃ ইস নীলা তোকে কি সুন্দর লাগছে রে।
নীলাঃ তোকেও কোনো দিক দিয়ে কম লাগছে না।
আসতে আসতে সময় গড়িয়ে হলুদ এর সময় হয়ে গিয়েছে।
মেঘ এবং বাকি সবাই নীলা কে নিয়ে স্টেজে পা বাড়ালো।
রাত প্রোগ্রাম নিয়ে খুব ব্যস্ত তা ছাড়া রাতের বন্ধু বান্ধবরা ও এসেছে তাই আরো একটু বেশি ব্যস্ত।
মেঘ রাতকে উপর থেকে দেখেই হা হয়ে তাকিয়ে আছে পাঞ্জাবিতে এই রাক্ষসটাকে হেব্বি সুন্দর লাগছে তো।
মেঘ নীলাকে নিয়ে স্টেজে বসালো।
রাতের চোখ আটকে গেলো মেঘের দিকে, পলকহীন দৃষ্টিতে রাত তাকিয়ে আছে তার জান পাখির দিকে।
কি অসম্ভব সুন্দর লাগছে, এই মেয়ে সত্যি আমাকে দিয়ে ভুলবাল কিছু করিয়ে বসবে সকালে না বললাম সাজুগুজু করবি না তারপরও ও,মেঘ পাখি তুই কেনো বুঝিস না তোকে সাজলে যে অসম্ভব সুন্দর লাগে,আমি তোর সুন্দরয্যে মাতাল হয়ে যাই,নিজেকে পাগল পাগল লাগে তোর মাঝে ডুবে যেতে ইচ্ছে হয়।
নাহিদঃ এই শালা তোর কিহলো?
রাতঃ………
নাহিদঃ এই রাত কোথায় হারিয়ে গেলি?
রাতঃ মেঘের মাঝে
নাহিদঃ কিহহ
রাতঃ হে নাহ কিছু না এনজয় কর তোরা অনেক সুন্দরী রমনী আছে। শুধু ঐ রমনীকে ছাড়া সব কয়টা তোদের।
নাহিদঃ হে বুজছি তো তুমি তোমার মেঘকে নিয়ে পরে আছো।
রাতঃ মাথা চুলকালো।
নীলার মা সবার আগে নীলাকে হলুদ লাগাচ্ছে সাথে নানুমনি।
হটাৎ করে বড় খালা মনি হু হু করে কেঁদে দিলো নীলাকে জড়িয়ে।
নীলাঃ মা তুমি কাঁদছো কেনো?
মাঃ আজ যদি তোর বাবা থাকতো খুব খুশি হতো অনেক আশা ছিলো তোর বিয়ে নিয়ে কিন্তু তার ভাগ্যে যে হলো না।
নীলার চোখেও মুহূর্তে জল চলে আসলো।
বড় মামনিঃ আরে কি হচ্ছে কি এই খুশির মূহুর্তে কেউ কান্না করে নাকি পাগল হয়ে গিয়েছো তোমরা।
সবাই মা মেয়েকে বুঝিয়ে শান্ত করলো
একে একে সবাই হলুদ দিতে লাগলো।
মেঘ এবং নদী এক সাথে নীলাকে হলুদ লাগালো।
হলুদের পর্ব শেষে নীলাকে মেহেদী লাগাবে অবশ্য মেহেন্দী অনুষ্ঠানটা করার কথা ছিলো কিন্তু সময় এর জন্য আর হয়ে উটলো না।এক সপ্তাহে বিয়ের এ্যারেন্জমেন্ট সব মিলিয়ে খুব ঝামেলা।
মিন্নী বেগমঃ মেঘ তোর রুমে আমি মেহেদী টা রেখে আসছিলাম একটু এনে দে না।
মেঘঃ হে মামনি দিচ্ছি।
সবাই নীলার হলুদে খুব এনজয় করছে।
অন্যদিকপ আকাশের বাড়িতেও খুব হই হুল্লোড় করে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে।আকাশের খুব ইচ্ছে ছিলো হলুদের অনুষ্ঠান এক সাথে করার কিন্তু বড়দের কারনে আর হয়ে উটলো না।
কিন্তু নীলাকে জ্বালিয়ে মারছে হলুদের সাজে নীলাকে কেমন লাগছে বিডিও কল আর ছবি চাইতে চাইতে, নীলা প্রায় বিরক্ত।
মেঘ নিজের রুম থেকে মেহেন্দিটা নিয়ে যেই বের হতে নিবে ঠিক তখন কেউ তাকে দেয়াল এর সাথে চেপে ধরে।
মেঘ ভয় পেয়ে হাত থেকে মেহেন্দির ডালাটা হাত থেকে পরে যায়।
মেঘ সামনে থাকা লোকটাকে দেখে ভয় পেয়ে যায়।
মেঘঃ রারাত ভাইয়া ( তুতলিয়ে)
রাতঃ সাজতে না বলেছিলাম?
মেঘঃ আসলে নদী আপু জোড় করে এইটুকু সাজিয়ে দিলো।
রাতঃ এইটুকু সাজ এইখানে, কি অপূর্ব সুন্দর লাগছে তোকে জানিস তুই মেঘ।আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না তুই বুঝিস না কেনো পাখি।খুব মায়াবী লাগছে যে তোকে।
রাতের এমন নেশালো কন্ঠে কথা গুলো শুনে মেঘের যায় যায় অবস্থা, শরিল যেনো বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
রাত মেঘের কপাল থেকে টিপটা ফেলো দিলো।
চোখের কাজল মুছে ফেললে ভালো দেখাবে না তাই সে এই কাজটা করলো না, নিজের পকেট থেকে টিসু বের করে ঠোঁটে দেওয়া হালকা লিপস্টিকটাও মুছে দিলো।
রাতঃ আমার মেঘ পাখিকে এমনি অনেক সুন্দর লাগে আর সাজলে হুর পরি, এই পরিকে দেখে ভুলাবাল কিছু করে ফেললে তখন কিন্তু আমার কোনো দূষ না।
মেঘের মুখ দিয়ে কোনো কথায় বের হচ্ছে না চুপচাপ শুধু রাতের কথা শুনছে।
রাতঃ চুপ হয়ে আছিস কেনো?( মেঘের দু গাল ধরে)
মেঘঃ এএমনি।
রাতঃ আচ্ছা লেট হয়ে যাচ্ছে মেহেন্দী নিয়ে যা।
মেঘঃ হুম।
মেঘ যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে রাত আবার এক জটকায় মেঘ কে নিজের বুকে নিয়ে আসে।
চলবে,
Part 36-37-38
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩৬+৩৭+৩৮
মেঘ যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে রাত আবার এক ঝটকায় মেঘকে নিজের বুকে নিয়ে আসে।
আগের মতোই আবার মেহেন্দির ডালাটা ফ্লোরে পরে গেলো।
মেঘঃ কিকি হলো আ–বার( তুতলিয়ে)
রাতঃএতো সুন্দর কেনো তুই জান পাখি?
মেঘ রাতের কথার প্রতিউত্তর কি দিবে খোজে না পেয়ে রাতের দু কাধে হাত দিয়ে চুপটি মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।
রাতঃ পাগল করে দিবি তুই, সেই ছোট থেকে আমি তোর জন্য পাগল মেঘ খুব ভালোবাসি পাখি,ইচ্ছে করে সারাক্ষণ তোকে আমার কাছে কাছে রাখি একটা সেকেন্ড এর জন্য চোখের আড়াল করতে ইচ্ছে করে না বাবুই।
মেঘ কি বলবে বুঝতে পারছে না, রাতের এমন নেশা বরা কন্ঠে মেঘের গলা আটকে আসছে কোনো কথাই আসছে না।
রাতঃ এই জান পাখি কথা বলছিস না কেনো?
মেঘঃ ভা–ইয়া দেদেরি হয়ে যাচ্ছে আপুকে মেহেন্দি লাগাবে।
রাত এটকটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মেঘের কপালে একটা গভীর একটা চুমু একে দিলো,মেঘ চোখ বুঝে তা অনুভব করলো।
রাতঃ চল ( মেঘের হাত ধরে হাটতে লাগলো)
নিচে মানুষের হৈ হুল্লোড় মিউজিক এর শব্দ একদম জমজমাট অবস্থা।
বড় মামনি,খালামনি সবাই মেচিং হলুদের শাড়ী পরেছে আমার মনে হচ্ছে মেয়েদের থেকে মাদের সব থেকে বেশি সুন্দর লাগছে।
নিলয় ও পাঞ্জাবি পরছে নিলয় কে খুব সুন্দর লাগছে, অবশ্য নিলয় কোন দিক দিয়ে কম না সুন্দর লাগারি কথা।
আপুকে দুটি মেয়ে মেহেন্দি পড়াচ্ছে, আপু মূর্তির নেয় বসে আছে, আপুর দিকে তাকিয়ে আমি একটু মুচকি হাসলাম।
হটাৎ রাত ভাইয়া এনাউন্সমেন্ট করতে লাগলো,
হ্যালো এভরিবডি,
আশা করি সবাই ভালো আছেন? আপনাদের সবাইকে চৌধুরী মেনশনে স্বাগত। আজ এই প্রথম বারের মতো চৌধুরী মেনশনে কোনো প্রোগ্রাম হচ্ছে, সবাই এনজয় করুন।
তো আপনাদের কথা বিবেচনা করে বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশনদের জন্য নাচ,গান এর আয়োজন করা হয়েছে। প্লিজ সবাই শুসিল মার্জিত ভাবে পার্টিসিফেট করুন ধন্যবাদ সবাই।
মেঘ এক দৃষ্টিতে রাতের দিকে তাকিয়ে আছে কি সুন্দর ভাবে কথা বলছে ছেলেটা,
সবাই নির্দিষ্ট জায়গা নিয়ে বসে আছে আবার কেউ মিউজিক এর সাথে ডান্স করছে।
আমি সোফায় বসে ছিলাম হটাৎ পরিচিত একটা মানুষ পাশে এসে বসলো, তারদিকে না তাকিয়েও তার উপস্থিতি বুঝা যাচ্ছে।
রাতঃ তুই ঐ ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলি কেনো?আমার কি লজ্জা করে না মনে হচ্ছিল চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলি।
মেঘ রাতের কথায় ভেবাচেকা খেয়ে বসে রইলো।
চোখ দুটি ইয়া বড় করে রাতের দিকে তাকিয়ে।
আর মনে মনে ভাবতে লাগলো রাত ভাইয়া খেয়াল করেছে আমি তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম ছি কি লজ্জা।
মেঘঃক-কখোন তাকিয়ে ছিলাম আমার বয়েই গেছে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে
রাতঃ ওহ রিয়েলি মাই সুইট হার্ট?(মেঘের কাঁধের পেছন দিক দিয়ে সোফায় হাত রেখে পায়ের উপর পা তোলে)
মেঘঃ হুম
রাতঃ কাকে দেখা হচ্ছিলো তাহলে অন্য ছেলে সাহস হয় কি করে তোর (রাগী স্বরে)
মেঘ এবার একটু ভয় পেয়ে গেলো রাতের রাগ দেখে।
মেঘঃ না রাত ভাইয়া না মানি তোমাকে তোমাকে দেখছিলাম(চোখ মুখ খিচে কথাটা বলে দিলো মেঘ)
রাত হাহাহা করে হেসে দিলো মেঘের বিপরিত পাশের বাহু চেপে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো আর বললো,
আমি জানি পাগলি আমার পাখিটা যে আমাকে দেখছিলো।
কিন্তু জানটার মুখ থেকে শুনতে সামান্য প্রচেষ্টা
মেঘ এবার গাল ফুলিয়ে রাতের চুল টেনে ওর পাশ থেকে উঠে চলে আসলো।
রাতও মুচকি হেসে মেঘের পিছু পিছু আসলো এর একটাই কারন বাড়িতে অনেক ছেলে যদি মেঘকে ডিস্টার্ব করে তাই কোনো রকম রিস্ক নিচ্ছে না।
নীলার কাজিনরা সবাই খুব আনন্দ করছে,
রাত থেকে কিছুটা দূরে মেঘ দাড়িয়ে আছে মেঘ সবার আনন্দ দেখে মিষ্টি হাসছে।
হটাৎ কেউ তার হাত ধরে টেনে সবার সাথে ডান্স করতে নিয়ে যায়।
মেঘের ইচ্ছে থাকা না সত্যেও নিহান তার হাত ধরে ডান্স করতে লাগলো।
বাড়ির বড়রা + নদী,নীলা,নিলয় শুধু রাতের দিকে তাকিয়ে আছে এই মূহুর্তে কি হতে যাচ্ছে শুধু মাত্র আল্লাহ জানে নিহান এর কপালে কি লিখা আছে।
অন্যদিকে রাতের রাগে মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে আগুন বের হবে, হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিহান এর দিকে তাকিয়ে আছে।
রাত যেই পা বাড়াবে নাহিদ, তুহিন এসে রাত কে বাধা দেয়।
নাহিদঃ দুস্ত রিলাক্স, শান্ত হো বাড়িতে অনুষ্ঠান আর অনেক গেস্ট এসেছে তোর ফেমিলির একটা সম্মান আছে।
তুহিনঃ হে রাত এইখানে কোনো সিনক্রিয়েট করিস না দুস্ত পরে দেখে নিবো তুই জাস্ট মেঘ কে নিয়ে চলে আয়।
রাত এবার তুহিন এর দিকে রেগে তাকালো আর বললো,
ইস্টুপিট ডেম ইট, মেঘ নয় মেঘলা।
তুহিনঃ ওকে ওকে আ’ম সরি মেঘলা আনইজি ফিল করছে যা।
রাত আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না হনহন করে মেঘলার কাছে গিয়ে নিহানের থেকে হেঁচকা টানে রাতের কাছে নিয়ে আসলো।
হটাৎ এমন হওয়াতে নিহানের ডান্স বন্ধ হয়ে যায়,কিন্তু রাত সবাইকে অবাক করে দিয়ে, নিহান কে কিছু না বলে মেঘ কে নিয়ে কাপল ডান্স করতে লাগলো।
কিন্তু রাতের রাগ কমছে না,ইচ্ছে করছে এই নিহানের বাচ্চা কে এই খানে পুতে রাখতে কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও কিচ্ছু করতে পারছে না বাড়ির সম্মান আর বড় ফুপ্পির কথা ভেবে আজ অন্য কেউ হলে রাত শেষ করে ফেলতো একে।যে রাত মেঘ এর জন্য মানুষ খুন করতে পারে সে আজ মেঘের হাত ধরার জন্য মানুষটিকে পেটাতে পারছে না, এতো রাগ হচ্ছে যে মেঘের দিকে একবারে জন্য তাকাচ্ছে না পর্যন্ত।
অন্যদিকে মেঘ ভয় এ চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়ছে। রাত নিজের ইচ্ছে মতো মেঘের সাথে নাচ করে যাচ্ছে।
নিহান তাকিয়ে দেখতে লাগলো,নিজের কাছে খুব অপমান বোধ হচ্ছে রাতের এমন কাজে।
মেঘঃ ভা-ভাইয়া থা থামো প্লিজ।
রাত আগুন চোখ নিয়ে মেঘের দিকে তাকলো রাগে রাতের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
হটাৎ ডান্স বন্ধ করে মেঘ কে টানতে টানতে নিয়ে গেলো।
আর মেঘকে সোফায় বসিয়ে নিজেও সোফায় বসে পড়লো দু হাত দিয়ে মাথার চুল টেনে ধরে।
নীলা,নদী,নিলয় এবং বাকি সবাই অদের সামনে গিয়ে দাড়ালো।
রাতঃ নিলয় পানি দে
নিলয় তাড়াহুড়ো করে পানি নিয়ে আসলো,ডগডগ করে রাত পানি খেয়ে নিলো, আবার উঠে গিয়ে মিউজিক অফ করে দিলো।
সাথে সাথে সবাই থেমে গেলো,
রাত সবার উদ্দেশ্য বললো,
বাড়ির বড়দের সমস্যা হচ্ছে আ’ম রিয়েলি সরি।
এইটুকু বলে সে ঐ খান থেকে নিজের রুমে চলে আসলো।
অবশ্য অনেক রাতও হয়েছে তাই সবাই খুব ট্রায়েড।
রাতে আর কারো সাথে কোনো কথা হলো না যে যার মতো নিজের স্থান মতো ঘুমিয়ে পড়লো।
______________________________
সাকলে,
অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার কারনে সবাই একটু দেরিতে ঘুম থেকে উঠলো।
মেঘে ফজর এর নামাজ পরে এখনো সোয়ে আছে রাতের কথা চিন্তা করে ঐ মানুষের ভিরে যেতে ইচ্ছে করছে না।
নীলাঃ কিরে মেঘ সোয়ে থাকবি উঠ না প্লিজ ৮ টা বাজতে চললো।সবাই ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গিয়েছে।
হটাৎ নিচে কান্নার আওয়াজ পেলো মেঘ এবং নীলা।
নীলা এবং মেঘ তাড়াহুড়ো করে উটে চলে গেলো
নীলার বড় ফুপ্পি কান্না করছে কেউ নিহান কে খুব মেরেছে ডান হাতটা একদম ভেঙে দিয়েছে। আবার কোনো অচেনা লোক হসপিটালে এডমিড ও করে চিকিৎসা করিয়ে গাড়ি করে বাড়িতেও পৌঁছে দিয়েছে, কিন্তু হাতে, পায়ে, মাথায় খুব আঘাত লেগেছে।
বাড়ির সবার বুঝতে আর বাকি নেই এই কাজটা কার।
মেঘের রাতের উপর খুব রাগ হচ্ছে সামান্য তো হাত ধরেছে তাতে এমন করবে এমন ভাবে কাউকে মারবে মেঘ রাগে আবার নিজের রুমে চলে গেলো।
বাড়ির বড়রা মনে মনে খুব অনুতপ্ত কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না।
নীলার বড় ফুপ্পি নিহান কে নিয়ে চলে যায়,কারণ ছেলের এই অবস্থায় এই বিয়ে বাড়িতে থাকা সম্ভব না। তারাও ঢাকায় থাকে নিহানের বাবাও বিজনেস ম্যান।
নানুমনির রুমে,
রৌদ্র চৌধুরী নীলার মায়ের কাছে মাফ চাইছে রাতের এমন কাজে।
নীলার মাঃ পাগল হয়ে গিয়েছো তোমরা আমি তো জানি রাত এমন, আর নিহান তো অন্যায় করছে কারো ইচ্ছার বিরোদ্ধে কারো হাত ধরা অন্যায়।
সাহেলা বেগমঃ তারপরও রাত একটু বেশি করে ফেলছে।
রায়হান চৌধুরীঃ আচ্ছা বাদ দেও তো যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে রাত তো ছোট থেকেই মেঘলার সব ব্যাপারে এমন পজিটিভ এই আর নতুন কি অদের মনটা যে একি রকম অদের দুজন এর মনের অনেক মিল আছে, যা শুধু মনের মতো মন হলেই ভালোবাসার জন্য এতো কিছু করা যায়।
নানু মনিঃ হে নীলা আজ চলে যাবে এই বিষয়ে আট কোনো কথা নেই।
রাত ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে বাসায় ফিরলো সারা রাত এর জেদ টা সকালে ইচ্ছে মতো মেটালো।
বাড়ির ভেতর ডুকতেই নদী,
তুই জাস্ট একটা চিজ রাত ছেলেটাকে এই ভাবে মারতে পারলি আবার হসপিটালে নিয়ে গেলি অল দিজ ইজ পসিবল উইদ ইউ,হোয়াট লাভ।
রাত মুচকি হাসলো আর নদীকে বললো,
তুই মনে হয় নতুন শুনলি?ওহ হ্যা কখনো দেখিস নি শুনেছিস আমার মুখে।
নদীঃ আজ প্রথমবার দেখলাম নিজের চোখে কিন্তু রাত তুই তো আর আগের রাত নেই তুই সব ছেড়ে দিয়েছিস।
রাতঃ ছেরেছি বাট অভ্যাস রয়ে গিয়েছে, তবে অনেক চেঞ্জ হয়েছি তানাহলে ঐ কুত্তার বাচ্চা কে গতকালই শেষ করে দিতাম বাচিয়ে রাখতাম না।
নীলাঃ হে অনেক মহৎ কাজ করেছেন আপনি এবার আপনার প্রেয়সীকে সামলান যার জন্য এতো কিছু করলেন সে কেঁদে কেঁদে রুমে বন্যা বাসিয়ে দিয়েছে।
রাতঃ কিহ (ব্রু কুচকে নীলার দিকে তাকিয়ে)
নীলাঃ হে
রাত আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না সোজা মেঘের রুমে চলে গেলো।
মেঘ বালিশে মুখ গুজে কান্না করছে আর ভাবছে রাত ভাইয়া কি কখনো সুদরাবে না কেনো এমন পাগলামি করে কেনো ।
রাতঃ জান পাখি
রাতের ডাকে বালিশ থেকে মুখ উঠালো।
মেঘের মুখের দিকে তাকিয়ে রাতের বুকটা মোচর দিয়ে উঠলো কান্না করে চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে, লাল আভা পরে গিয়েছে।
মেঘ পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে রাত মেঘের হাত ধরে বাধা দেয়।
মেঘঃ ছাড়ুন আমাকে প্লিজ আপনি যে হাতে মানুষকে মারেন সে হাত দিয়ে আমাকে টাচ করবেন না। ( অনেকটা রেগে)
রাতঃ আ’ম সরি ডিয়ার
মেঘঃ কিসের সরি মানুষকে আঘাত করে কিসের সরি লাগবে না আপনার সরি, আপনি জাস্ট একটা গুন্ডা খারাপ একটা লোক।
মেঘের এইসব কথায় রাত এবার একটু রেগে গেলো।
মেঘকে দেয়াল এর সাথে শক্ত করে চেপে ধরলো
আর বলতে লাগলো,
যদি বলি এই সব কিছুর জন্য তুই দায়ী সব কিছু শুধু মাত্র তোর জন্য হয়েছে। আগের সময় হলে আমি ঐ নিহান কে খুন করে ফেলতাম, আমি পারি না সয্য করতে অন্য কোনো ছেলে তোকে টাচ করবে মানতে পারি না তোর পাশে আমি কাউকে সয্য করতে পারি না আমি ভালোবাসি তোকে সেই ছোট থেকে খুব ভালোবাসি,আমার সবটা জোরে তুই। আমি কি করবো সব কিছু সয্য করতে পারি শুধু তোর দিক ছারা, আর সেই তুই আমাকে গুন্ডা খারাপ লোক বললি, আমি তো সব ছেরে দিয়েছি শুধু তোর জন্য।
রাত কথা গুলো একদমে বলে মেঘকে ছেরে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
মেঘ অশ্রুশিক্ত চোখে রাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।
তুমি একদম একটা পাগল রাত ভাইয়া কেউ কাউকে এতোটা ভালোবাসে তোমাকে না দেখলে বুঝতামি না, সত্যি আমি খুব ভাগ্যবতী,কিন্তু রাত ভাইয়া আমার কথায় কষ্ট পেয়েছে, আমি কি করবো একটা মানুষকে কি কেউ এভাবে মারে।
দুপুর ১২টা নীলাকে সাজাতে পার্লার থেকে মানুষ এসেছে।
রাত ও খুব ব্যস্ত গেস্ট আসবে একটু পরেই।
বাড়ির বড়রা ও খুব ব্যস্ত
ওফ একবার ও রাত ভাইয়া কে পাচ্ছি না কি এতো কাজ করছে, অভিমান করে আছে আমার উপর।
মেঘ রুমে সটফট করছে।
নীলাঃ এই মেঘলা তুই রেডি হচ্ছিস না কেনো?
মেঘঃ দূর আপু রেডি কি হবো ভালো লাগছে না।
রাত কাজের মাঝেও মেঘের কথা ভাবছে আচ্ছা মেঘ তো সকালে নাস্তা করেনি ওফ সিট আমার মেঘ না খেয়ে আছে।
রাত কিচেন এর সামনে গিয়ে কুসুম কে বললো কিছু খাবার নিলয় এর রুমে দিয়ে যেতে।
রাতঃ নিলয় তোর রুমে একটু মেঘকে ডেকে আনতো।
নিলয়ঃআচ্ছা ভায়া।
নিলয় মেঘের রুমে নক কারলো দরজা ভেতর থেকে লক করা কারন এই রুমে নীলাকে সাজাচ্ছে।
একটা মেয়ে এসে দরজা খোলে দিলো
নিলয়ঃ মেঘলা কে বলেন নিলয় ডাকছে।
মেয়েটি মেঘলাকে বললো
মেঘের এমনি মন খারাপ তারউপর নিলয় খবিশটার আবার কি হলো?
মেঘঃ কি হয়েছে তোর?
নিলয়ঃ দরকার আছে একটু একটা প্রবলেম হয়েছে। ( বলে হাঁটা শুরু করলো)
মেঘ একরাশ বিরক্ত নিয়ে ওর পিছু গেলো।
নিলয় এর রুমে গিয়ে মেঘকে বললো তুই বস আমি আসছি।
কুসুম আগেই খাবার রেখে গিয়েছে
নিলয় বের হওয়ার সাথে সাথে রাত রুমে প্রবেশ করে।
রাত কে দেখে মেঘের বুক ধুকধুক করতে লাগলো,এতোক্ষণ রাতকে খোজলেও এখন রাত আসাতে হার্টভিট বারতে লাগলো।
রাতঃ নাস্তা করেছিলি।
মেঘ মাথা ডানে বামে করে না সম্মতি জানালো।
রাত আর কোনো কথা না বলে খাবার প্লেট টা নিয়ে মেঘকে নিজেই খাওয়াতে লাগলো।
মেঘঃ খাবো না
রাত কোনো কথা না বলো গাল চেপে খাবার মুখে দিয়ে দিলো।
মেঘ কাঁপা কাঁপা হাতে রাতের মুখের কাছে একটু খাবার রাখলো রাত কিছু না বলে মুখে নিয়ে নিলো।
খাওয়া শেষে রাত চলে যেতে নিলে মেঘ।
রাত ভাইয়া আ’ম সরি আর কখনো তোমাকে ঐ রকম কথা বলবো না ( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
রাত পেছন ফিরে তাকায়
রাতঃ আর কিছু?
মেঘ এবার বে বে করে কেঁদে দিলো
আর বলতে লাগলো,
তুমি রাগ করলে আমার কষ্ট হয়।
রাত অন্যদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
মেঘ কান্না করেই যাচ্ছে, মেঘের কান্না সয্য করতে না পেরে রাত মেঘকে শক্ত করে জড়িয়ে দিরে।
রাতঃ রিলাক্স পাখি আমি তোর উপর রাগ করে নেই, শুধু একটু অভিমান হয়েছিলো,আর তুই তো জানিস আমি আমার কলিজার সাথে বেশি সময় অভিমান করে থাকতে পারি না।
মেঘ রাতের শার্ট চেপে ধরে বুকে মুখ গুজে আছে রাতের কথায় কান্নার ভেগ একটু কমে এসেছে তাছাড়া ছোট থেকেই তো রাতের বুকে আসলে মেঘ একদম শান্ত হয়ে যায়।
রাতঃ বউটা আমার ( এক হাত দিয়ে মেঘের গাল ধরে অন্যহাতে চোখের জল মুছে দিয়ে)
অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে বাড়িতে একটু পরে গেস্ট চলে আসবে বাবুই ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নে আর তাছাড়া আমার অনেক কাজ আছে একটু পরে অনেক ব্যস্ত হয়ে যাবো পাখি,রুমে গিয়ে ফ্রেশ হ আর লেহেঙ্গা টা পরে চোখে কাজল পরবি, হাতে কাচের চুরি আর কিছু না, ভুলেও ঠোঁটে লিপস্টিক পরবি না তাহলে নিজেকে ঠিক না রাখতে পেরে বাজে কিছু করে দিবো।
এতোক্ষণ রাতের কথা চুপচাপ শুনলেও শেষের কথাটায় মেঘ ভিষণ ভাবে লজ্জা পেয়ে এদিক সে দিক তাকাতে লাগলো।
রাত নিঃশব্দে হেসে মেঘের কপালে একটা গভীর ভাবে চুমু একে দিলো।
রাত মেঘকে ছেরে দুজন নিলয় এর রুম থেকে বেড়িয়ে যে যার রুমে রেডি হতে চলে গেলো।
______________________________________
দুপুর ১ঃ৩০
বাড়িতে গেস্টদের বন্যা ভয়ে গিয়েছে, রাতদের বাড়িটা অনেক বড় হওয়াতে এতো মানুষ থাকাতেও কোনো প্রবলেম হচ্ছে না।
রাত,রৌদ্র চৌধুরী, রায়হান চৌধুরী, নিলয় তদারকি করছে কারো কোনো প্রবলেম হচ্ছে কিনা।
অনেক বড় বড় বিজনেস ম্যানরাও এসেছে কিন্তু রৌদ্র চৌধুরী খুব অভাক হচ্ছে সেতো এতো বিজনেস ম্যানদের ইনভাইট করে নি তাহলে,কিন্তু রাতের দিকে তাকিয়ে দেখছে সে সবার সাথে হেনচেক করছে রৌদ্র চৌধুরী কোনো কারণ খোজে পাচ্ছে না পর মূহুর্তে রাতের অতীতের কথা মনে পরে।
নীলাকে এখনো স্টেজে আনা হয় নি, মেঘ ও তৈরি হয়ে নীলার সাথেই বসে আছে।
অন্যদিকে আকাশ বার বার নীলাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করছে।
নীলাঃ আচ্ছা আকাশ তুমি এমন পাগলামি করছো কেনো?
আকাশঃ বউটাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
নীলাঃ ৫ মিনিট হয়নি তুমি আমাকে দেখেছো আবার( অসহায় মুখ করে)
আকাশঃ কাছ থেকে
অন্যদিকে মেঘ মুখ টিপে হাসছে
মেঘঃ আপু মোবাইল টা দেও তো
নীলা মেঘের কাছে ফোনটা দিয়ে দিলো।
মেঘঃ ইস আকাশ ভাইয়া বউকে আজ তো নিয়েই যাবেন সারা রাত দিন দেখতে পাবেন এতো পাগলি করছেন কেনো আমাদের সাথে একটু সময় কাটাতে দেন আপুকে।
আকাশঃ তোমরা বুঝবা কি কিউট শালিকা, আমার তো সটফট করছে মনটা
মেঘ হাহা করে হেসে দেয়।
তাড়াতাড়ি চলে আসেন তারপর বউকে মন বরে দেখেন
কথার মাঝে মেঘের ফোন বেজে উঠে।
মেঘ নীলার কাছে ফোনটা দিয়ে নিজের ফোন রিছিভ করলো।
হ্যালো
রাতঃ দেখছি না কেনো আমার জানটাকে।
মেঘঃ মাত্র দেড় ঘন্টা আগেও তো দেখলা।
রাতঃ আমার কাছে দেড় বছর মনে হচ্ছে, নিচে আসতে হবে না একটু রুমের বাহিরে দাড়া পাখি।
মেঘঃ রাত ভাইয়া পাগল তুমি
রাতঃ হুম আমার কলিজার জন্য পাগল একটু আয় নিচে আসবি না কিন্তু অনেক লোক আছে নীলা যখন স্টেজে আসবে তখন আসিস এখন না, শুধু রুমের বাহিরে দাড়া।
মেঘ একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো আসছি।
মেঘ আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিলো সব ঠিক আছে কিনা, ভুল হলে তো আবার শাস্তি পেতে হবে।
না ঠিক আছে
মেঘ রুমের বাহিরে গিয়ে দুতালার রেলিং ধরে দারায় এতো মানুষের মাঝে রাত কোথায় চারো দিকে তাকিয়ে খোজতে লাগলো।
রাত মেঘকে দেখে একটা নিশ্বাস ছারলো।
মেঘও রাতকে দেখতে পেলো।
রাত মেঘ কে ফ্লাইং কিস করলো।
মেঘ লজ্জা পেয়ে এদিক সেদিক তাকালো।
রাত ইশারা দিয়ে বুঝালো আমার পাখিটাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
মেঘ মিষ্টি হেসে রাত কে টাটা দিলো।
রাত হেসে নিজের সম্মতি জানালো।
তিনটার দিকে আকাশ ভাইয়ারা চলে আসলো।
নীলা আপুর কাজিনরা মানি শান্তা আপুরা আকাশ ভাইয়ার থেকে টাকা নেওয়ার জন্য গেইট আটকালো।
আমারও খুব ইচ্ছে ছিলো কিন্তু রাত ভাইয়া একদম না বলে দিয়েছে তাই ইচ্ছে টা দমিয়ে রাখতে হলো।
আমিও নতুন বউ এর মতো নীলা আপুর সাথে বসে আছি।
বাড়িতে এখন অনেক লোক কমে গিয়েছে সব আকাশ ভাইয়াদের বাড়ির লোক আর আমাদের বাড়ির কিছু গেস্ট।
আপুকে স্টেজে আনা হয়েছে।
আমি আপুর সাথেই বসে আছি রাত ভাইয়া আমার পাশে এসে বসলো।
খুব ক্লান্ত লাগছে ভাইয়াকে।
আমাদের তিনজনকে এক সাথে বসে থাকতে দেখে ফটোগ্রাফার বললো রাত ভাইয়া একটু নীলা আপু ঐ পাশে গিয়ে বসেন একটা ছবি তুলি।
রাত ভাইয়া একবার আমার দিকে তাকিয়ে একটু মিষ্টি হেসে আপুর বিপরীত পাশে গিয়ে বসলো।
ফটোগ্রাফার প্রায় অনেক গুলো ছবি তুললো।
নীলা আপু রাত ভাইয়ার কানে কানে কিছু একটা বললো আর আপু একটু উঠে সরে দাঁড়ালো।
সাথে আমার পাশে চিপকে বসে পড়লো।
মেঘঃ কি হচ্ছে ভাইয়া এমন জড়িয়ে বসলে কেনো?
রাতঃ ছবি তুলবো তাই।
মেঘঃ আমার আনইজি লাগছে এতো মানুষের সামনে।
রাত মেঘের কোনো কথায় শুনলো কয়েকটা ছবি উঠানোর পরে আমি উঠে চলে আসতে নিলেই আমার সাথে ভাইয়াও দাঁড়িয়ে যায়
ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে কোমড় জড়িয়ে নাকের সাথে নাক লাগিয়ে নেয়
অন্যদিকে ফটোগ্রাফার সাথে সাথে তার ক্যামেরায় আমাদের বন্ধি করে নেয়।
ভাইয়াও আমাকে সাথে সাথে ছেড়ে দেয়।
অন্য দিকে ভাইয়ার বন্ধুরা শিস বাজিয়ে ভাইয়া কে
নাহিদঃ দুস্ত অস্থির হয়েছে।
তুহিনঃ দুস্ত বিয়ের কাজটা সেরে ফেল।
এদের কথাশ লজ্জায় আমার দম আটকে আসছে।
নীলা আপুও দাঁত কেলিয়ে হাসছে
আমি এক প্রকার দৌড়ে স্টেজ থেকে নামতে গিয়ে
তিথির সাথে ধাক্কা খেলাম।
ওরা সবাই আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মেঘঃ এএইভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো তোরা?
আশাঃ এসব কি দেখলাম আর কি শুনলাম?
আর আশার পর থেকে তোর কোনো দেখাই মিললো না।
সাগরঃ মিলবে কি করে সে তো প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
মেঘঃ না আসলে ঐ আর কি
জিহাদঃ কি কি আসলে নকলে শুরু করছিস?
হটাৎ রাতের উপস্থিতি গঠলো।
রিলাক্স এভরিবডি এতো চাপ দিচ্ছো কেনো আমার বউটাকে।
রাতের এমন কথায় ৪ জন হয়ে গেলো।
রাত মেঘের হাত ধরে সবকিছু বললো।
ওরা এতো কিছু শুনে অভাক এর শেষ প্রান্তে।
কিন্তু খুব খুশিও হলো।
অন্যদিকে আদ ঘন্টা গেইটে যুদ্ধ শেষে আকাশ ভাইয়াকে ভেতরে ডুকতে দিলো।
রাত ভাইয়া আবার একটু ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
আমি তিথিদের সাথে দাড়িয়ে গল্প করছিলাম
আসফিঃ হায় বিয়ান কেমন আছেন?
মেঘঃ ভালো, আপনি?
আসফিঃ হে ভালো
আসফির সাথে আরো তিন চার জন ছেলে।
একটা ছেলে আসফির কানে কানে জিজ্ঞেস করলো
দুস্ত কেরে এটা?
আসফিঃ আমাদের বেয়ান
ওফ দুস্ত দেখতে মাশাল্লাহ।
ওরা ফিসফিস ফিসফিস করে কথা বললো।
রাত দূর থেকে খেয়াল করলো মেঘ ছেলে গুলোর সাথে।
একটা ছেলে মেঘের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে হেনচেক কররা জন্য।
হায় বেয়ান।
রাতঃ হায় ( ছেলেটির সাথে হেনচেক করে)
মেঘ একটু ভয় পেয়ে পিছিয়ে দাঁড়ালো
ছেলেটির মুখটা ছোট হয়ে গেলো।
রাতঃ আসফি অনেক সময় গড়িয়ে গিয়েছে সবাইকে নিয়ে খেতে বসে পরো।
আসফিঃ হে অবশ্যই রাত।
জিহাদ ওরা রাতের কাজে অভাক।
রাতঃ নানুমনির ঐ খানে গিয়ে বসে থাক অন্যদিকে যেনো না দেখি
সাগরঃ অনেক কেয়ার করে তোকে দেখে মনে হচ্ছে?
নিলয়ঃ এইটা তো কিছুই না আমার মনে হয় রাত ভাইয়া মেঘের ছায়া কেও হিংসে করে।
মেঘঃ নিলয় কুত্তা।
নিলয়ঃ মেঘ কুত্তি
মেঘ বিরক্ত নিয়ে নানুমনির পাশে গিয়ে বসে থাকে।
তিথিরা মেঘকে বিদায় জানিয়ে চলে যায়।
নিলয় ওদের এগিয়ে দিতে বাহিরে যায়।
অন্যদিকে রাইমা রাতের পিছু পরে আছে তো পরে আছে।
রাইমাঃ হায় রাত কেমন আছো?
রাতঃ ভালো তুমি?
রাইমাঃ ভালো, তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
রাতঃ থ্যালক ইউ।
রাইমাঃ আমাকেও অবশ্য কম সুন্দর লাগছে না তাই না রাত?
রাতঃ হুম লাগছে তবে আটা ময়দাতে। ন্যাচার সু্ন্দর না মেকআপ আমার একদম পছন্দ না। মেয়েদের তো মেকআপ ছাড়াও পরির মতো লাগে বার বার প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়।( কথা গুলো মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে)
রাইমা অপমান বোধ করলো, ভার্সিটিতে রাইমা বলতে সব ছেলে পাগল আর এই রাত কিনা কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না।
রাত রাইমা কে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
_____________________________
সময় কারো জন্য থেমে থাকে না, সময় চলে নিজের গতীতে।
চাইলেও কেউ স্থির রাখতে পারবে না তেমনি ভাবে নীলার ও বিদায় এর সময় হয়ে গেলো।
খালামনি সোফায় বসে মুখে আঁচল চেপে কান্না করছে।
নিলয় এক পাশে দাড়িয়ে আছে চোখ অসম্ভব লাল বুঝায় যাচ্ছে এই হয়তো জল গড়িয়ে পরবে।
বড় মামা আকাশ ভাইয়ার বাবার হাতে নীলা আপুকে তুলো দিলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ ওর বাবা নেই প্লিজ আপনি ওকে বাবার মতো আগলিয়ে রাখবেন।
আকাশের বাবাঃ আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না নীলা মা আমাদের মেয়ে,
আপুকে স্টেজ থেকে এনে সবার সামনে দার করানো হয়েছে আপু ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে।
খালামনি থেকে বিদায় জানানোর জন্য আপুকে তার সামনে নেওয়া হলে হাউ মাউ করে কেঁদে দেও আপু আর খালামনি তাদের কান্না দেখে বাড়ির সবার চোখে জল চলে আসে।
আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে আপু আসার পর থেকে সবসময় আপুর সাথে থাকতাম আজ থেকে যে আমিও একা হয়ে যাবো।
মিন্নী মামনি নীলা আপুকে জোর করে ছাড়িয়ে নিলো
এবার আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয় আমিও আর নিজেকে সামলাতে না পেরে আপুকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকি আপু এক হাত দিয়ে আমাকে ধরে অন্য হাতে নিলয় কে ডাকে নিলয়ও এসে আপুকে জড়িয়ে কাঁদত থাকে।
রাতঃ কলিজা তোর কান্না আমার ভালো লাগে না সেই তুই আমার সামনে কাঁদছিস। ( মনে মনে)
রাত ভাইয়া আমাকে আর নিলয় কে ছাড়িয়ে আপুকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।
আর আকাশ ভাইয়া কে হাগ করে বলে
আকাশ ভাইয়া প্লিজ নীলা কে কখনো কষ্ট দিয়েন না।
আকাশ রাতকে ভরসা রাখতে বলে।
নীলা আপুকে নিয়ে আকাশ ভাইয়া গাড়ি করে করে চলে যায়।
খালামনি অসুস্থ হয়ে পরে, ছোট খালামনি আর মিন্নী মামনি খালামনিকে উপরে নিয়ে যায়।
আমি সোফায় আছি নানুমনির পাশে, আপুর জন্য খুব খারাপ লাগছে,
রাত ভাইয়া আমার পাশে এসে বসে আর আমার পেছন দিক থেকে আমার বাহু চেপে ধরে।
হটাৎ এমন হওয়াতে চমকে যাই।
রাতঃ মাথা বেথা করবে পাখি, নিজেও কষ্ট পাবি আর আমাকেও কষ্ট দিবি প্লিজ আর কাঁদিস না আগামীকালই তো নিয়ে আসবো নীলা কে।
মেঘঃ আপুর সাথে সময় কাটানো,ঘুম আসার অভাস হয়ে গিয়েছে আমি একা ঘুমাবো কি করে?
রাতঃ কেনে আমার সাথে
মেঘঃ দেত ছাড়ো সবসময় মজা করো( মন খারাপ করে)
রাতঃ আচ্ছা সরি, রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে নেও কলিজা আসো।
মেঘকে রাত তুমি করে বলাতে মেঘের বুকের ভিতর এ ধক করে উঠলো শরিল এর সব কটা লোম কেমন যেনো শিহরণ জাগলো।
রাতঃ কি হলো?
মেঘঃ কি কিছুনা।
রাত বুঝতে পেরে অন্যদিকে মুখ করে হাসলে।
পাগলি মাত্র তো শুরু পাখি আরো পাগল হয়ে যাবা( মনে মনে)
রাত মেঘকে রুমে দিয়ে নিজেও ফ্রেশ হওয়ার জন্য নিজের রুমে চলে গেলো।
নদী আগে থেকেই রুমে ছিলো।
ফ্রেশ হয়ে নিয়েছে সে।
নদীঃ মন খারাপ?
মেঘঃ একটু ( কাবাড থেকে ড্রেস বের করতে করতে)
নদীঃ আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নেও ভালো লাগবে।
মেঘঃ হুম।
রাত প্রায় দশটা,
সবাই বিয়ের জন্য অনেক ক্লান্ত থাকায় আজ সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
কিন্তু রাতের চোখে ঘুম নেই মেঘ কেমন যেনো একটা নেশা হয়ে গিয়েছে, এই মেয়েটাকে ছাড়া একটুও থাকতে পারে না।
মোবাইলে মেঘের ছবি দেখে একা একা কথা বলছে।
এই পাখি ঘুমিয়ে পড়েছো নাকি আমার মতো জেগে আছো।
আমি যে তোমার চিন্তায় ঘুমাতে পাড়ছি না একটু আগেও দেখেছি কিন্তু আবার দেখতে ইচ্ছে করছে। কি করবো বলোতো তোমাকে যে তাড়াতাড়ি আমার কাছে থাকার ব্যবস্তা করতে হবে কলিজা।
রাত প্রায় ১২ টা,
অন্যদিকে একটা নববিবাহিত কাপল তাদের জীবনের প্রথম রাত,তাদের এতোদিন এর ভালোবাসা সার্থক।
আসলে ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের করে পেতে ভাগ্য লাগে, যেই ভাগ্য নিয়ে নীলা জন্মিয়েছে।
নীলা কখনো ভাবতেও পারে নি তার ভালোবাসা কে এতো তাড়াতাড়ি নিজের করে পেয়ে যাবে।
রাত প্রায় সটফট করছে কিছুতেই ঘুম পাচ্ছে না।
কি হচ্ছে আমার এমন হলে তো আমার পাখিকে আগামীকাল এর মাঝেই নিজের কাছে রাখার ব্যবস্তা করতে হবে কিন্তু এইটা তো কোনো ভাবে সম্ভব না।
পাখি এখন তোমাকে আমার বুকে নিতেই হবে তানলে আমি এখন দম বন্ধ হয়ে আমি মরে যাবো( কথা গুলো রাত রুমের মাঝে সটফট করছে আর মনে মনে বলছে)
মোবাইল হাতে নিয়ে মেঘ কে ফোন করে।
মেঘ ঘুম ঘুম চোখে মোবাইল স্কিন এর দিকে তাকায়
এতো রাতে রাত ভাইয়া? (কপাল কুচকে)
ঘুম চোখ বুঝেই মেঘ ফোনটা রিছিভ করে।
হ্যালো
রাতঃ আ’ম সরি কলিজা ( করুন স্বরে)
মেঘঃ কেনো?(ঘুম ভরা কন্ঠে)
রাতঃ খুব দেখতে ইচ্ছে করছে অনেক চেস্টা করেও নিজেকে আটকাতে পারছি মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো, চাইলেই আমি তোমার রুমে তোমার পারমিশন ছারা চলে আসতে পারতাম, কিন্তু আমার পাখিটার পারমিশন ছাড়া এতো রাতে আমি তার রুমে যেতে চাচ্ছি না, আমার পাখিটাকে তাকে দেখার জন্য একটু অনুমতি দিবে প্লিজ( অসহায় এর মতো)
রাতের কথায় মেঘের ঠোঁটে মিষ্টি হাসি চলে আসলো।
কিন্তু কি বলবে এই পাগলটাকে এতো রাতে ও দেখার ইচ্ছে জাগে পাগল একটা।
রাতঃ কি হলো পাখি কিছু বলো?
মেঘঃ কোথায় তুমি?
রাতঃ তুমি রুম থেকে বেড়িয়ে দেখো
মেঘ মোবাইলটা রেখে যেই দরজটা খোলে সাথে সাথে কেউ তার রুমে ডুকে এক হাত দিয়ে দেয়ালে চেপে তো আর এক হাত মেঘের গালে।
মেঘ ভেবাচেকা খেয়ে যায়
চিৎকার দিতে গেলে রাত মুখ চেপে ধরে।
রাতঃ ডোন্ট সাউন্ড মাই হার্ট
মেঘঃ চোখ গুলো বড় বড় করে মনে মনে বলে রাক্ষস আমার পার্মিশন নাকি লাগবে খচ্চর একটা।
রাতঃ আ’ম সরি আমি তোমার পারমিশন এর অপেক্ষায় ছিলাম কিন্তু বাবা রুম থেকে বের হয়েছে আর আমাকে তোমার গেইট এর সামনে দেখলে কিনা কি ভাবতো তাই সরি পাখি।
মেঘঃ উম উম
রাতঃ উম উম করছো কেনো?
মেঘ চোখের ইশারায় নিজের মুখ থেকে রাতের হাত সরাতে বলে রাত বুঝতে পেরে সাথে সাথে সরিয়ে নেয় আর বলে সরি।
মেঘ হাঁপাতে থাকে আর একটু হলে দম বন্ধ হয়ে মারাই যেতো।
রাত এক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে মেঘ এদিক সেদিক তাকিয়ে বুকে হাত দিয়ে হাঁপাচ্ছে।
রাত মনে হচ্ছে সে এই মূহুর্তে কোনো একটা ঘুম পরিকে দেখতে পারছে, চোখে এখনো ঘুম ঘুম ভাব,গায়ে ডিলেডালা একটা হোয়াইট লেডিস টি শার্ট, লম্বা চুল গুলো বেনুনি করা ছোট ছোট চুলো এলোমেলো হয়ে কানের দুপাশে ছড়িয়ে ছিটি রয়েছে। এক অন্যরকম সুন্দর লাগছে, যে সুন্দরয্য রাতকে নেশা লাগিয়ে দিচ্ছে।
মেঘ রাতের এমন চাহনিতে চুপসে যায়, তার নরচরা বন্ধ হয়ে যায়।
মেঘঃ রা……….
মেঘ কিছু বলতে যাবে রাত ঠোঁটে আঙুল রেখে থামিয়ে দেয়।
এই প্রথমবার রাত তার ঠোঁট স্পর্শ করলো।
রাতঃ কোনো কথা বলবা না দেখতে দেও তোমাকে। ( নরম স্বরে)
মেঘ স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে হটাৎ রাত এমন করছে কেনো?
রাতঃ আমার পাখিটাকে খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজন আমার বুকটা শূন্য লাগে , আর পারবো না আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে কলিজা,আই কান্ঠ এনি মোর পাখি। ( নাকের সাথে নাক লাগিয়ে)
মেঘের গালে থাকা ছোট একটা তিলের মাঝে হটাৎ রাত নিজের ঠোঁট ছোঁয়ে দেয়।
মেঘ সাথে চোখ বন্ধ করে নেয় রাত মুচকি হাসে।
রাতঃপাখি এই পাখি
মেঘঃ হুম ( চোখ বন্ধ করেই)
রাতঃ তাকাও
মেঘঃউহুম
রাতঃ প্লিজ ওপেন ইউর আইজ জান।
মেঘ টিপ টিপ করে তাকায়।
রাতঃ আমি তোমার অনুমতি চাচ্ছি কলিজা বাসায় জানানোর জন্য।
মেঘ ভিষণ লজ্জা পাচ্ছে এই প্রথম রাতের সাথে এমন মুহূর্ত ফেস করছে।
রাতঃ ছে সামথিং বাবুই।
মেঘঃ জানি না ( লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে রাতকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে)
রাতঃ এই লজ্জা মাখা মুখকে কি আমি ভেবে নিবো যে আমার পাখি আমাকে অনুমতি দিয়েছে? ( পেছন থেকে জড়িয়ে মেঘের দুহাত পেটের উপর রেখে নিজের হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখে)
মেঘঃ কিন্তু….
রাতঃ কোনো কিন্তু না পাখি আমি আর পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে সত্যি আর পারবো না অপেক্ষা করতে করতে এতে গুলো বছর, অনেক কষ্ট করেছি আমি আর কষ্ট সয্য করতে পারবো না,আমি এবার তোমাকে নিজের করে পেতে চাই সুইট হার্ট।
মেঘঃ আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে এবার রুমে গিয়ে ঘুম আসো।
রাতঃ উহুম
মেঘঃ মানি ( ব্রু কুঁচকে)
রাতঃ রুমে গেলে ঘুম হবে না পাখি( আরো আকরে ধরে)
মেঘঃপাগল তুমি?
রাতঃ হুম তোমার পাগল।
মেঘঃ অশব্য
রাতঃ পাখি তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাতে চাই , রুমে গেলে আমার একটুও ঘুম হবে না প্লিজ।
মেঘঃ কিন্তু?……
মেঘ কে থামিয়ে দিয়ে রাত মেঘের দুগালে ধরে,
আমাকে বিশ্বাস করো তুমি?
মেঘঃ হুম
রাতঃ তাহলে আমার উপর ভরসা রাখো, আচ্ছা আমি তোমাকে টাচ ও করবো না তুমি এক পাশে আমি অন্য পাশে শুধু তোমাকে চোখ দিয়ে দেখবো প্লিজ।
মেঘ কি বলবে বুঝতে না পেরে রাতের বুকে মুখ লোকায়।
রাত একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে তার ভালোবাসার মানুষটিকে আকরে ধরে।
রাত মেঘকে যা কথা দিয়েছিলো রাত তাই পালন করতে চেয়েছিলো কিন্তু মেঘ নিজেই রাতের বুকে এসে ঘুমিয়ে আছে।
ভালোবাসার মানুষটি পাশে থাকলে কার না ভালো লাগে। তখন নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ মনে হয়।
যখন ভালোবাসার মানুষটি থেকে দূরে থাকি তখন তাকে কাছে পাওয়ার আকুলতা জাগে।তাকে দেখার জন্য মন সটফট করে, হ্যা ভালোবাসা এমনি যাকে চাইলেও দূরে রাখা যায় না,ইচ্ছে জাগে সারাজীবন তার হাতে হাত রাখতে, এক সাথে এক ছাঁদের নিচে নিজের পাশে আকরে ধরে বাঁচতে।
চারোদিকে ফজর এর আজানের ধ্বনি বেজে উঠে সাথে রাতের মোবাইলে দেওয়া এলার্ম।
নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের বুকে দেখে একটা প্রশান্তির হাসি চলে আসে রাতের মুখে।
কি নিষ্পাপ তার চেহেরাটা কেমন বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে, কিছু চুল চোখের উপর এসে পড়েছে।
রাত চুল গুলে কানের পিঠে গুজে দিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয়।
রাতঃ পাখি
মেঘ………..
রাতঃ এই জান পাখি
মেঘ একটু নরেচরে উঠে। সে হয়তো এই প্রথমবার এতো শান্তি তে ঘুমাচ্ছে।
রাতঃ জান উঠো আজান পরে গিয়েছে নামাজ পরবে সোনা আর আমি আমার রুমে যাবো।
মেঘ এখনে নিশ্চুপ।
রাতঃ বাবুই পাখি শুনতে পাচ্ছো তুমি এই পাগলি( এইবার একটু জোড়েই ডাকে)
মেঘ দরফরিয়ে রাতের বুকের থেকে উঠে বসে পরে।
রাতঃ রিলাক্স পাখি এমন করছো কেনো?
মেঘঃ না মানি এমনি
রাতঃ ঘুম কেমন হলো?
মেঘঃ ভালো ( উঠে খাট থেকে নেমে পড়লো সাথে রাত ও)
রাতঃ আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে নেও আমি ফোন দিলে বাহিরে যেও হাঁটতে বের হবো।
তারপর মেঘের কপালে একটা চুমু একে রাত চলে যায়।
মেঘের কেনো যেনে আজ অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে, মনটা কেমন ফুরফুরে লাগছে।খুশিতে সে দু’হাত মেলে ঘুড়তে থাকে।
অজু করে নামাজ আদায় করে নেয়।
চারো দিকে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ, আলো নেমে এসেছে কিন্তু এখনো হালকা শীত থাকাতে একটু আধটু কোয়াশার মেলা।
মেঘের মেসেজ টিউন বাজে,
চলবে,
Part 39-40
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৩৯+৪০
মেঘের ফোনে মেসেজ টিউন বেজে উঠে।
মেঘ খুশি মনে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে রাত।
ম্যাম গেইট এ আসেন অপেক্ষা করছি।
মেঘে ও চলে গেলো রাতের কাছে।
——–;——–
নীলাঃ আকাশ ছাড়ো।
আকাশঃ উহুমু ছারবো না।
নীলাঃ লেট হয়ে যাবে বাড়িতে কত মেহমান আর সবাইকি ভাববে।
আকাশঃ কি ভাববে নতুন বউ কে নিয়ে রোমান্স করছে।
নীলাঃ বেয়াদব অশব্য একটা ( আকাশের বুকে কিল দিয়ে)
আকাশঃ কত দিন এর স্বপ্ন আমার পূর্ন হলো নীলা তুমি জানো, আমি তো ভাবতেও পারি নি এতো সহজে আমি তোমাকে পেয়ে যাবো এতো সহজে সবাই মেনে নিবে।
নীলাঃ হুম।
আকাশ নীলার কপালে একটা চুমু একে দেয়।
নদী, মেঘ, রাত তিনজন বাহির থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসেছে।
বাড়িতে আরো গেস্ট আছে নীলার আত্মীয়রা কারন আজ সবাই নীলার বউ ভাতে যাবে।
_________________
নীলার কাজিনরা সেই বারোটার থেকে সেজেই যাচ্ছে এখনো বের হওয়ার নাম গন্ধ নেই।
দুইটা বাজে সবাই বের হবে।
নদী এবং মেঘ তৈরি হয়ে নিচে নামছে, রাত সোফায় বসে অদের জন্য অপেক্ষা করছিলো।
বাড়ির সবাই যাবে আপুকে আনতে শুধু নানু মনি আর বড়খালা মনি যাবে না।
মেঘ আজ একটা ব্লাক শাড়ী পরেছে, সাথে হোয়াইট স্টোন বসানো, দু হাত ভর্তি মেচিং করে ব্লাক চুড়ি পড়েছে, গলায় হোয়াইট গোল্ডের চেইন সাথে ব্লাক স্টোন এর লকেট,চোখে কাজল,ঠোঁটে হালকা পিংক লিপস্টিক।
চুল গুলো খোলাই রেখেছে ইচ্ছে করেই, আবশ্য এই সব কিছু রাতের পারমিশন নিয়েই করেছে।
নদী আর মেঘ নামতেই রাত হা হয়ে তাকিয়ে আছে মেঘের দিকে। একদম একটা ব্লাক পরির মতো লাগছে।
রাত এক মূহুর্তের জন্য চোখ সরাতে পারছে না।
রাতের এমন চাহনি দেখে মেঘ এদিক সেদিক তাকাচ্ছে, খুব লজ্জা লাগছে এতো মানুষের সামনে কেমন নির্লজ্জর মতো তাকিয়ে আছে আশব্য লোক একটা।
নদীঃ মুখে মাছি ডুকে পরবে তো তোর।
রাত নদীর কথায় ভেবাচেকা খেয়ে যায় এদিক সেদিক তাকিয়ে মাথা চুলকায়।
রাতও আজ মেঘের সাথে মেচিং করে, ব্লাক পেন্ট, ব্লেজার সাদা শার্ট সাথে তার পছন্দের ব্লাক সানগ্লাস। চুলগুলো জেল দিয়ে পরিমাটি করা।
অসম্ভব স্মার্ট লাগছে রাতকে।
রাত মেঘের হাত ধরে গাড়ীর সামনে এসে দাড়ায়, তুহিন রাতদের সাথে যাবে তাই ওর জন্য অয়েট করছে।
রাতঃ তোমার রূপের আগুনে আমি জ্বলসে যাবো পাখি।
মেঘঃ অশব্য একটা।
রাতঃ এখন মনে হচ্ছে ভুল হয়ে গিয়েছে পারমিশন দেওয়াটা নিজেকে কতক্ষণ কন্ট্রোল করে রাখতে পারব জানা নেই পাখি।
মেঘলাঃ রাত ভাইয়া তুমি দিন দিন একদম পচা হয়ে যাচ্ছো ইডিয়েট একটা।
রাত মেঘের লজ্জা মাখা মুখ দেখে মুখটিপে হাসে।
তুহিনঃ সরি দুস্ত লেট হয়ে গেলো।
রাতঃ ইটস ওকে চল,ড্রাইভ কর তুই।নদী তুই তুহিন এর সাথে বস।
নদী যেই পা বাড়াবে ভুল বসতো তুহিন এর সাথে ধক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে তুহিন ধরে নেয়।
তুহিনঃ সরি সরি আমি দেখতে পাই নাই।
নদীঃ ইট’স ওকে
বাড়ির সবাই যে যার সুবিধা মতো যার যার গাড়িতে বসে পড়লো।
গাড়ি চলছে আপন গতীতে অন্যদিকে নীলা সটফট করছে।
কখন তার আপন জনদের দেখবে, আসলে একজন কে আপন করে পেতে গিয়ে অন্য আপন জনদের থেকে দূরে থাকতে হয়।
সেইকখন থেকে মূর্তির মতো বসেই আছে বউ সেজে আকাশের কাজিনরা ছবি তুলতে তুলতে পাগল করে দিচ্ছে, আর বিশ্ব সুন্দরী রাইমা তো আছেই এক বস্তা আাটা ময়দা লাগিয়ে রাতের জন্য অপেক্ষা করছে।
————-
মেঘের অবাধ্য চুল গুলো বার বার মুখে চোখে আছরে পড়ছপ।খুব বিরক্ত লাগছে কেনো যে চুল গুলো খোলা রাখলাম অসয্য লাগছে এখন।
রাতঃ সমস্যা হচ্ছে?
মেঘঃ না ( হচ্ছে তারপরও রাত কে বললো না)
রাতঃ তুহিন দুস্ত গ্লাস টা লাগিয়ে দে।
তুহিন রাতের কথা মতো গ্লাস লাগিয়ে দিলো।
মেঘ রাতের দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিলো।
রাত মেঘকে ডান হাতদিয়ে কাছে টেনে বাহু জড়িয়ে ধরলো।
মেঘঃ কি হচ্ছে আপু তুহি…..
রাতঃ চুপ
মেঘঃ ওরা…..
তুহিনঃ ভাবি সমস্যা নেই আমরা কিছু দেখবো না ( বলে তুহিন আর নদী হাসতে লাগলো)
মেঘের লজ্জায় বরফ এর মতো গলে যেতে ইচ্ছে করছে।
তুহিন নদীর দিকে তাকিয়ে বললো,
আপনার হাসিটা খুব সুন্দর।
নদী তুহিন এর কথা অভাক এর থেকে লজ্জা বেশি পেলো বাহিরের দিকে তাকিয়ে তুহিন এর অজান্তেই একটু মুচকি হাসলো।
রাত এখনো মেঘের বাহু জড়িয়ে রেখেছে।
মেঘ বার বার নরাচরা করছে।
এইবার রাত একটু রেগেই গেলো।
রাতঃ আচ্ছা আমি টাচ করলে খুব সমস্যা হয় তোর তাই না ওকে টাচ করবো না। ( রেগে)
রাত মেঘকে ছেরে মাঝের সিট ফাঁকা রেখে বাম পাশে বসলো, মেঘের দিকে না তাকিয়ে মোবাইল বের করে দেখতে লাগলো।
মেঘ নিজের কাজে এখন নিজেই বিরক্ত হচ্ছে কেনো এমন করতে গেলো দেত। এখন সরিও বলতে পারবো না তুহিন ভাইয়া, নদী আপু কি ভাববে উফ অসয্য।
গাড়ী এসে থামলো নীলার শশুড় বাড়িতে।
রাত মেঘকে কোনো পাত্তা না দিয়েই নেমে পড়লো।
মেঘ বেশ অভাক হলো আজ ভাইয়া আমাকে না নিয়েই চলে গেলো,ভাবতেই খুব কষ্ট হচ্ছে।
মেঘ নদীর সাথে ভেতরে গেলো আর নীলাকে জড়িয়ে ধরলো।
নীলাঃ মেঘ কেমন আছিস?
মেঘঃ আপু তুমি চলে এসেছো কেমন থাকার কথা বলো?
নীলাঃ পাগলিটা আমারও যে তোদের জন্য মনটা সটফট করছিলো।
সবাই এসে নীলার সাথে দেখা করলো।
রাতও করেছে কিন্তু মেঘের দিকে একবারও ফিরেও তাকাচ্ছে না।
মেঘ বার বার করুন দৃষ্টিতে রাতের দিকে তাকাচ্ছে।
সবাই যখন খাওবার খাওয়ার জন্য চলে গেলো কিন্তু মেঘ যায় নি নীলার সাথেই বসে আছে।
নীলাঃ মেঘ তুই যাচ্ছিস না কেনো?
মেঘঃ খাবো না আমি ভালো লাগছে না।
নীলাঃ কি হয়েছে বেশি খারাপ লাগছে?
মেঘঃ না
আসফিঃ হেই ম্যাডাম আপনি এখানে বসে আছেন কেনো আসুন।
মেঘঃ না ভাইয়া আমি ঠিক আছি এখানেই।
আসফিঃ আরে আসুন তো ( মেঘের হাত ধরে)
মেঘের হাতের দিকে রাতের চোখ পড়াতেই চোখ মূহুর্তেই গড়ম হয়ে গেলো।
মেঘঃ আসফি ভাইয়া হাত ছাড়ুন আপনি যান আমি আসছি।(ভয় এ কাঁপা কাঁপা গলায়)
নীলাঃ হে আসফি তুমি যাও মেঘ আসছে।
আসফি হাত ছেড়ে দেয়।
সাথে রাত তেরে এসে মেঘকে টেনে নিয়ে খাবার টেবিলে বসায়, রাগে মাথা গজ গজ করছে,মেঘের ভয় এ হাত পা কাপছে।
রাত মেঘকে নিয়ে একদম সাইট টেবিলে বসেছে খুব কম মানুষ বলতে গেলে নেই।
রাত বার বার পানি খাচ্ছে।
রাতের পানি খাওয়া দেখে মেঘের হাসিও পাচ্ছে আবার ভয় ও হচ্ছে।
অয়েটার খাবার দিয়ে গেলে মেঘ বসে থাকে।
রাতঃ খাচ্ছিস না কেনো?
মেঘঃ খা খাবো না।
রাতঃ জাস্ট সাট আপ ডেম ইট।
রাইমাঃ হায় রাত এতো রেগে আছো কেনো? ( ভাইয়ার পাশের চেয়ার এ বসে)
রাতঃ খেয়েছো তুমি?
রাইমাঃ হে
রাতঃ তো এখান থেকে উঠে চলে যাও।
রাইমার নিজের কাছে খুব ছোট মনে হচ্ছে, মেঘও ভেবাচেকা খেয়ে রাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
রাইমা রেগে উঠে চলে যায়।
মেঘ খাওয়া শুরু করে রাত এর ভয় সম্পূর্ণ খাবার শেষ করে।
বিকেল পাঁচটা নীলাকে নিয়ে সবাাই আবার চৌধুরী বাড়িতে বেক করে।
আসার সময় রাত মেঘের সাথে বসে নি তুহিন এর সাথে বসেছে,মেঘের খুব কষ্ট হচ্ছে রাতের এমন বিহেভ এ।
নীলা আপুকে নিয়ে এসে, আপুর চাচা,ফুপ্পি কাজিনরা সবাই চলে যায়।
বাড়িটা আবার আগের মতো হয়ে গেলো,
সবাই আমরা ড্রয়িং রুমে বসে আছি সাথে আকাশ ভাইয়াও।
আলিফ তোয়া আকাশ ভাইয়ার সাথে কথা যে শুরু করেছে থামার আর নাম নেই।
সবার মাঝে থাকলেও মনটা শুধু রাক্ষসের কাছে পড়ে আছে এতো রাগ কেনো তার।
নাহ রাগ ভাঙাতে হবে। আর সাত পাঁচ না ভেবে ভাইয়ার রুমে কাছে চলে আসলাম কিন্তু ভেতরে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না।
এবার সাহস নিয়ে ডুকেই পরলাম।
ভেতরে গিয়ে দেখি ভাইয়া মাথার চুল টেনে বসে আছে।
আমি ভয়ে ভয়ে ভাইয়ার পাশে গিয়ে বসতেই আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো,আমি একদম শক্ট।
রাতঃ আমি পাগল হয়ে যাবো পাখি সত্যি পাগল হয়ে যাবো আমি তোর সাথে রাগ ও করে থাকতে পারি না, আমার মনে হচ্ছিলো দমটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো।বুকের ভেতরটা খুব বেথা করছিলো কলিজা।
মেঘ একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে রাতের পিঠ আকরে ধরলো।
মেঘঃ সরি ভাইয়া।
রাতঃ চুপ পাখি ( দু গালে হাত দিয়ে)
মেঘঃ তুমি এখনো ফ্রেশ হও নি।
রাতঃ সব তোর জন্য পাখি তুই আমার সব কিছু এলোমেলো করে দিয়েছিস সব কিছু।
মেঘঃ আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আমি যাই ( বুকটা কেমন ধুক ধুক করছে এর সামনে থাকলে আমি হার্টফেল করবো তাই উঠে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই ভাইয়া এক টানে খাটে ফেলে দিলো, আর নিজেও আমার উপর আদ সোয়া হয়ে সোয়ে পড়লো।
মেঘঃ ভা..ভাইয়া
রাত মেঘকে কিছু বলতে না দিয়ে মেঘের ঠোঁটে আঙুল রাখে
রাতঃ হুস,
মেঘের শরিল বরফ এর মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, রাতের চোখের চাহনি মেঘকে জানান দিচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটতে যাচ্ছে। মেঘের সারা শরীরে শিহরন জাগছে।
রাতের বারি নিশ্বাস মেঘের চোখে মুখে আচঁড়ে পড়ছে।
মেঘ সয্য করতে না পেরে চোখ বন্ধ করে নেয়।
রাত মেঘের চুলের ভাজে এক হাত আর গালে একহাত রাখে নেশাক্ত কন্ঠে বলে ।
কলিজা
রাতের এমন নেশাক্ত কন্ঠে মেঘের শরিলে বৈদ্যুতিক শক্ট এর মতো লাগলো,খাটের চাদর খামছে দরলো।
পাখি আ’ম সরি নিজেকে ঠিক রাখতে পারছি না আমার এই মূহুর্তে খুব করে কিছু পেতে ইচ্ছে করছে।
মেঘের ভাবনাটাই সত্যি, কিন্তু রাত কে কিছু বলতে পারছে না, সে যে একটু নরার ও শক্তি পাচ্ছে না।
আমি কি আমার পাখির কোমল ঠোঁটের একটু উষ্ণ স্পর্শ পেতে পাড়ি পাখি।
মেঘ রাতকে কিছু বলতে পারছে না তার শরিরে যে ঝর ভয়ে যাচ্ছে রাত কি তা বুঝতে পারছে না।
পাখি প্লিজ কিছু বলো,তাকাও আমার দিকে।
মেঘ ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে রাত না বললো।
রাত মেঘকে আরো নিবিড় ভাবে জড়িয়ে,
প্লিজ পাখি ওপেন ইউর আইজ, সে সামথিং বাবুই।
মেঘ নিজের ভালোবাসার মানুষের চাওয়া না করতে পারছে না এক পলক তাকিয়ে রাতের চুলের বাজে হাত রেখে সম্মতি দিলো।
রাত মেঘের অনুমতি পেয়ে মেঘের ঠোঁটের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যেতে লাগলো।
এক পর্যায় রাত নিজের পাখির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
মেঘের শরিলে এক প্রকার ঝর ভয়ে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে শরীল এ এতোক্ষণ যতটুকু শক্তি ছিলো এখন সে ততটুকুও পাচ্ছে না। আরো শক্ত করে রাতের চুল আকড়ে ধরে,কিন্তু নিজে রাতের সাথে তাল মিলাতে পারছে না।
ভালোবাসার মানুষের উষ্ণ ছোয়া পেয়ে মেঘের অজান্তেই চোখের জল গড়িয়ে পরছে। কিন্তু এইটা কষ্টের পরা জল না হয়তোবা সুখের জল।
রাত এতোসময় নিজের মধ্যে না থাকলেও মেঘের চোখের জল নিজের হাতে লাগাতে চমকে যায় সাথে সাথে মেঘের থেকে দূরে সরে আসে।
মেঘ উঠে বসে হাঁপাতে শুরু করে
রাতঃ আ’ম সরি পাখি আ..আমার কি হয়েছিলো বুঝতে পারি নি, আমি তোমার এতো কাছে যেতে চাই নি হাটৎ কি হলো আমার, কলিজা আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই নি, তুমি ঠিক আছো পাখি আর কখনো এমন ভুল হবে। ( খুব উত্তেজিত হয়ে মেঘের সামনে ফ্লোরে হাঁটু গেঁড়ে বসে)
মেঘ কি বলবে ভাষা হাঁড়িয়ে ফেলছে, তার তো কষ্ট পেয়ে চোখের জল পড়েনি তাহলে রাত এমন করছে কেনো?
রাতঃ ইউ আর ওকে বেবি?
মেঘের এই মূহুর্ত ভিষন পরিমাণ এ লজ্জা লাগছে। রাতের দিকে লজ্জায় তাকানোর সাহস পাচ্ছে না, যা কখনো কল্পনার বাহিরে ছিলো, এই রুমে আসার আগের পর্যন্ত ভাবে নি যে এমন কিছু ঘটে যাবে, এখন ভাবতেই শরিলে শিহরণ জাগছে।
রাতঃ পাখি সে সামথিং টেল্ক টু মি প্লিজ( অসহায় মুখ করে)
মেঘের এই মূহুর্তে মুখে কোনো কথা আসছে, রাতের দিকে তাকিয়ে লজ্জা মাখা হাসি উপহার দিলো,আর বললো অসভ্য একটা ( বলেই রাতের সামনে আর এক মূহুর্ত না থেকে দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়)
রাত একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে হাত পা মেলে খাটে সোয়ে পড়ে।
এতো ভালোলাগা কাজ করছে যা রাত ভাষায় প্রকাশ করতে পারছে না,আচ্ছা ভালোবাসার মানুষ থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু পেলে কি এমন ফিল হয়, নিজেকে এখন পাগল পাগল লাগছে। দুহাত চুলের বাজে রেখে আনমনে হাসছে রাত।
সত্যি পাখি আমি অশব্য হয়ে গিয়েছি, আমি রাত তোমার এতো কাছে চলে গেলাম হাহাহাহা ভাবতেই পারছি না কলিজা সত্যি একদিন আমি পাগল হয়ে মরে যাবো,আমাকে তুমি পাগল বানিয়ে ছারবে। আচ্ছা পাখি তোমার ও কি আমার মতো ফিল হচ্ছে বা তখন কি হয়েছে, তুমিও কি আমার মতো এনজয় করেছো মূহুর্তটা, ওফ পাখি আই লাভ ইউ টু মাচ।
মেঘ নিজের রুমে গিয়ে দুহাত মেলে ঘুরছে, ইচ্ছে করছে পাখির মতো ডানা মেলে উড়ে যেতে, ঐ মূহুর্তের কথাটা মনে করে এখন নিজে নিজেই লজ্জা পাচ্ছে। নিজের ঠোঁটে বার বার হাত বুলাচ্ছে,মনে হচ্ছে এখনো রাতের স্পর্শ লেগে আছে। প্রিয় মানুষের থেকে প্রথম বার কিছু পাওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা, বুকের ভেতর এখনো ধকধক করছে, মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে।একটু উষ্ণ স্পর্শ সত্যি একমুহূর্তে সব কিছু পালটে দেয়।
রাত ওয়াশরুম চলে যায়,কিন্তু ঠোঁটে পানি লাগাতে ইচ্ছে করছে না তার পাখির ছোয়া সে চাচ্ছে না মুছে ফেলতে কিন্তু চাইলেও কিছু যে করতে পারছে না,ফ্রেশ তো হতে হবে।
নীলা, আকাশ, নিলয়,নদী এবং আকাশের সাথে আসফি, রাইমা এবং অন্তুু ( আকাশে বন্ধু এসেছে) তারা ড্রয়িং রুমে বসে আছে, আজ তেমন একটা কোনো কোলাহল নেই কারন সবাই চলে গিয়েছে।
শুধু নদীরা আছে, কারন ওরা এক সপ্তাহ থেকে আবার বেক করবে।
একটা প্রবাদ বাক্য আছে,
” সময় এবং স্রোত কারো জন্যই থেমে থাকে না”
নীলার বিয়ের আগে সবাই কত এক্সসাইটেড ছিলো,সবাই আনন্দ করার জন্য চলে এসেছিলো।কিন্তু ঐ যে সময়, তার কাছে তো হার মানাতেই হবে, সময় কাটার সাথে সাথে সবাই যে যার গন্তব্যে চলে গিয়েছে।
আজ নীলার জন্য এই বাড়িতেও ফুলসজ্জার খাট সাজানো হয়েছে।
রাত ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে জয়েন করলো।
হায় এভরিবডি আমাকে ছাড়াই আড্ডা শুরু হয়ে গিয়েছে।
নদীঃ তোর আড্ডা দেওয়ার সময় আছে নাকি?
রাতঃ থাকবে না কেনো?
নিলয়ঃ তোমার সব সময় তো তোমার পাখি….এইটুকু বলে ভয়ে এ থেমে যায় নিলয়।
রাতঃ তোকে কিন্তু…….. রাতও সবার দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়।
এদের দুজন এর ভাষা কেউ বুঝতে পারলো না শুধু নদী আর নীলা ছাড়া।
রাইমাঃ হোয়াট আর টেলকিং এবাউট?
রাতঃ কিছু না এমনি আমরা এমনি। আর হ্যা রাইমা আ’ম ভেরি সরি ঐ সময় কোনো একটা কারণ নিয়ে খুব রেগে ছিলাম তাই মিস বিহেভ করে ফেলছি আমি সত্যি খুব দুঃখিত।
রাইমাঃ ইট’স ওকে,আমি কিছু মনে করি নি।
নীলাঃ আচ্ছা রাত মেঘলা কোথায় অনেকক্ষণ ধরে দেখতে পাচ্ছি না।
রাতের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে, পাগলি একটা এখনো রুম থেকে বের হয় নি।
রাত নীলার কানের কাছে গিয়ে বলে,
আমার পাখিটাতো লজ্জাবতী আর আমিও লজ্জাজনক একটা কাজ করে ফেলেছি তাই আর কি সেও লজ্জাবতী গাছ এর মতো চুপটি মেরে রুমে বসে আছে।
নীলাঃ রাত তুই পারিস ও বটে।
রাাত মাথ চুলকায়।
আকাশঃ রাত ও আমার বন্ধু অন্তুু তোমার সাথে পরিচয় করার সুযোগ হয়ে উঠে নি।
রাতঃ হায় নাইস টু মিট ইউ আমি রাত চৌধুরী।
অন্তুুঃসেম টু ইউ, আমি অর্নভ খান অন্তুু গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির মালিক অর্পন খান এর একমাত্র ছেলে।
রাতঃ ওহ রিয়েলি, ভালো লাগলো আপনার সাথে পরিচয় হয়ে।
অন্তুুঃ আমারও।
মেঘ এক ঘন্টা যাবত রুমে বসে থেকে থেকে বোর হয়ে গিয়েছে তাই নিচে এসে নানুমনির কাছে বসলো।
নীলারা ড্রয়িং রুমের অন্যপাশে, তাই মেঘের ও সুবিধা হলো রাতের মুখোমুখি হবে না ভেবে।
কিন্তু রাতের চোখা এড়ায় নি তার পাখি যে নিচে চলে এসেছে।
নানুমনিঃ কি দি ভাই শরিল খারাপ?
মেঘঃ না নানুমনি আমি একদম ফিট
নানুমনিঃ নীলার তো বিয়ে হয়েই গেলো এবার তোর আর রাতের বিয়েটা নিয়ে ভাবতে হবে।
মেঘঃ নানুমনি
রাতঃ হে দিদুন একটু তাড়াতাড়ি ভাবো না তোমার নাতনিকে ছাড়া যে আমি আর থাকতে পারছি না।
রাতের এমন কথা শুনে মেঘ ভেবাচেকা খেয়ে রাতের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে রইলো।
রাত মেঘ কে ব্রু নাচিয়ে ইশারা দিয়ে বললো এমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
মেঘ মুখে ভেংচি কেটে,উঠে মামনিদের কাছে চলে যায়।
মামনিরা খুব ব্যস্ত ছিলো রান্না নিয়ে অবশ্য এখন আর নেই কারন রান্না কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে।
চার শাশুড়ী মিলে মেয়ের জামাইকে কি খাওয়াবে তা নিয়ে এতোই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে ঘেমে নেয়ে একাকার।
মেঘঃ মামনি এতো রান্না কে খাবে গু আকাশ ভাইয়া কি রাক্ষস নাকি বলোতো?
সাহেলা বেগমঃ এই রাক্ষস হবে কেনো আমাদের একটা মাত্র মেয়ের জামাই ওরে খওয়াবো না কাকে খাওয়াবো?
এখানেও রাতের এন্ট্রি।
কেনো আর এক মেয়ের বর কি বানের জলে ভেসে যাবে নাকি?
সবাই রাতের কথা শুনে হেভলা কান্তর মতো তাকিয়ে রইলো?
এই প্রথম রাত এমন কথা বলছে,হে সবাই জানে রাত আর মেঘের কথা কিন্তু রাত বা মেঘ এই সব বেপারে কখনো কারো সাথে শেয়ার করেনি।রাতের মুখে এমন কথা না শুনে অভাক না হয়ে পারেছে না।
মিন্নী মামনিঃ আরেক মেয়ের জামাই সে হচ্ছে ঘড় জামাই তাই তার কোনো দাম নাই আমাদের কাছে।
সাহেলা বেগমঃ জামাইয়ের লজ্জা শরম নেই সারা বছর শশুড় বাড়িতে পরে থাকে ছি ছি লজ্জা থালা দরকার।
রাতঃ বউ নিয়ে চলে যাবে কিন্তু তখন বুঝবা।
মিন্নী বেগমঃ পা ভেঙে দিবো মেয়ে রেখে জামাই যেখানে ইচ্ছে যাক।
রাতঃ ইম্পসিবল বউ রেখে কোথাও যাবো না।
সবাই হাহাহাহা করে হেসে দেয়।
ছোট খালামনিঃ তবে রে বাদর অনেক দুষ্ট হয়ে গিয়েছিস।।
রাত হেসে কিচেন থেকে বের হয়ে যায়।
রাত ১০ঃ৩০
সবাই ডিনার টেবিলে বসে আছে।
বড় মামনি, মিন্নী মামনি, বড় খালা মনি তিনজন খাবার সার্ভ করছে। বুঝি না এরে কি যে পায় কাজের লোক থাকা সত্যেও তারাই কাজ করবে।
আকাশঃ ভাইয়া কে তিনজন মিলে জোর করে খাইয়ে যাচ্ছে সাথে অন্তুু, আসফি আর রাইমা কেও।
রাইমাঃ ওহ নো নো আমি এতো খাবার খাই না,
সাহেলা বেগমঃ আরে একদিন খেলে কিছু হবে না।
অন্তুুঃ আকাশ এমন শশুড় বাড়িতো প্রয়োজন দুস্ত।
আকাশ ভাইয়া হেসে বলে হে খেয়ে খেয়ে মোটা হয়ে যাবি।
রাতের পাশে মেঘ বসেছে, রাত বার বার আরে আরে মেঘের দিকে তাকাচ্ছে।
রৌদ্র চৌধুরী এবং রায়হান চৌধুরী খেয়ে সবার আগেই চলে গিয়েছে।
মেঘ একটুখানি খেয়ে উঠে চলে যেতে নিলে,
রাতঃকি…………..
রাত কিছু বলার আগেই অন্তুু আরে মেঘ উঠে পরছো কেনো কিছুই তো খেলে না।
চলবে,
Part 41-42
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৪১+৪২
রাত কিছু বলার আগেই অন্তুু বলে উঠলো,আরে মেঘ তুমি তো কিছুই খেলে না।
অন্তুর কথায় সবাই অন্তুর দিকে তাকিয়ে রইলো,
অন্তুু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থতমত খেয়ে বললো,
না আসলে সবার আগে উঠে যাচ্ছে খাওয়া শেষ তো তাই আর কি।
রাতঃ ওর নাম মেঘ নয় মেঘলা, সো কল হিম মেঘলা। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
অন্তুুঃ ওকে।
রাতের মনটাই খারাপ হয়ে গেলো,নিজেও না খেয়ে উঠে পরলো আর মেঘলাকেও জোর করলো না।
খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে যায়।
মেঘ নানুমনির সাথে কথা বলে রুমে যেতে নিলে,
রাত মেঘকে হেচকা টানে নিজের রুমের দরজায় চেপে ধরে।
মেঘ অপ্রস্তুত থাকায় হটাৎ এমন হওয়াতে চমকে গিয়ে চিৎকার দিতে নেয়, রাত মুখ চেপে ধরে।
রাতঃ স্টুপিড এমন চেঁচাচ্ছিস কেনো?
মেঘ রাতের হাত সরিয়ে বুকে হাত দিয়ে চোখ বুজে একটা নিশ্বাস ফেলে বলে,
তুমি হুটহাট এমন করলে আমি হার্ট ফেল করবো।
রাতঃ সাট আপ।
মেঘঃ তুতুমি এমন করছো কেনো?
রাতঃ ঐ অন্তুুর সামনে যেনো না দেখি তোকে।
মেঘঃ কেকেনো?
রাতঃ আমি না বলেছি তাই।
মেঘঃ আআচ্ছা
রাতঃ তুই না খেয়ে উঠে পরলি কেনো?
মেঘঃ এমনি ভালো লাগছিলো না তাই।
রাতঃ কি হয়েছে পাখি( নরম স্বরে)
মেঘঃকিছু না,
রাক্ষস একটা এই বাঘ তো এই বিড়াল একটু আগে রেগে কথা বলে এখন আবার আদর করে কথা বলা ইস( মনে মনে)
রাতঃ আচ্ছা ঘুমাতে যাও বাবু। ( কপালে গভীর চুমু একে)
মেঘ রাতের ব্যবহার এর আগা মাথা কিছুই বুঝলো না।
মেঘঃ পাগল একটা কখন কি হয় সে নিজেও জানে না। (মনে মনে)
______________________________
সকালে,
স্নিগ্ধ সকাল,হাকলা কোয়াশার আনাগোনা,ছোট ছোট পাখির কিচিরমিচির শব্দ,শীত কাল পালাই পালাই অবস্থা,দিনে গড়ম তো রাতে শীত।চারো দিকে মিষ্টি রোদের আনাগোনা, ব্যস্ত শহর দিনের আলো ফুটার সাথে সাথে আবার ব্যস্তময়ী হয়ে যায়।
মেঘ নামাজ পরে প্রতিদিন এর মতোই রাতের সাথে হেঁটে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসেছে সবার সাথে।
মেঘের পাশে রাত এবং আকাশ সহ বাড়ির সবাই।
রৌদ্র চৌধুরীঃ আকাশ শুনলাম তুমি নাকি বিকেলে চলে যাবে?
আকাশঃ হে মামা অফিস এ জয়েন করতে হবে আগামীকাল থেকে তাই।
রৌদ্র চৌধুরীঃ অফিস জয়েন করা যদি অনেক বেশি প্রয়োজন না পরে তো নীলা কে নিয়ে থেকে যাও বাবা তাহলে আমাদের সবারই ভালো লাগবে।
আসফিঃ কিন্তু আমি বিকেলে চলে যাবো।
নীলাঃ আমরা থাকলে তোমার ও থাকতে হবে।
আসফিঃ ইম্পসিবল।
রাইমাঃআমার এখনি চলে যেতে হবে কারন আমাকে ভার্সিটি যেতে হবে। ( রাইমা গতকাল এর ব্যবহার এর পর থেকে আগের মত গায়ে পরা স্বভাব দেখা যায় নি খুব শান্ত হয়ে গিয়েছে)
নীলাঃ আবার চলে এসো ভার্সিটি থেকে।
রাইমাঃ না অন্য সময় আসবো।
অন্তুুঃ মামা একটা কথা ছিলো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে বলো,কি কথা?
অন্তুুঃ বিকেলে আমার বাবা আসতে চাচ্ছে যদি আপনারা একটু সময় দিতে পারেন।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে অবশ্যই অর্পন খান আমাদের বাসায় আসবে আর আমরা সময় দিবো না তা কি করে হয় আসতে বলো।
অন্তুুঃ ধন্যবাদ।
রাতঃ ডন্ট মাইন্ড অন্তুু, জানতে পারি কেনো আসবে?
অন্তুুঃ সারপ্রাইজ
রাতঃ ওহহ আচ্ছা।
আকাশঃ আমার জন্যও কি সারপ্রাইজ নাকি?
অন্তুুঃ হে তুইও বিকেলে জানতে পাবি।
সবাই যে যার মতো নিজেদের কাজে চলে গেলো।
অর্পন খান আশার কারনটা কি, রাতের মোটেও ঠিক লাগছে না। টেনশনে মাথাটা ফেটে যাচ্ছে, এই ছেলেকে আমার মোটেও ভালো লাগছে না, আকাশের বন্ধু বিদায় কিছু বলতেও পারছি না। মেঘ কে দেখতে পারছি না এই মেয়েটা আবার কোথায় গেলো? এই মেয়েটা কি বুঝতে পারে না আমার যে ভালো লাগছে না তাকে প্রয়োজন আমার এই মূহুর্তে, আমার সব অস্থিরতা এক মূহুর্তে শেষ হয়ে যাবে সে আমার পাশে থাকলে।
মেঘ রুমে একটু বই নিয়ে বসেছে এই এক সপ্তাহ বই এর সাথে সম্পর্ক একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই একটু বই নিয়ে বসেছিলো।
কিন্তু পাশে থাকা মোবাইলটা বেঘাত ঘটালো।
রাতের মেসেজ,
তুমি কি তোমার রুমে পাখি।
মেঘঃ হুম
রাত আর কোনো রিপ্লাই করলো না সোজা মেঘের রুমে আসে, রাত কে দেখে মেঘ উঠে দাঁড়ালো আর বললো,
কি হয়েছে?
রাত সাথে সাথে মেঘকে শক্ত করে বুকে জরিয়ে নেয়।
মেঘ ভেবাচেকা খেয়া চোখ গুলো রসগোল্লার মতো করে রাত কে জিজ্ঞেস করলো,
কি হয়েছে তুমি এমন হুটহাট এমন করো কেনো?
রাতঃ চুপ কথা বলবা না।
মেঘ কিছু বুঝতে না পেরে চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
রাত চোখ বুঝে শক্ত করে মেঘ কে জড়িয়ে রাখলো।
রাতঃ পাখি
মেঘঃ হুম
রাতঃ আজ মনটা কেমন যেনো লাগছে মনে হচ্ছে আজ কিছু একটা হবে।
মেঘঃ এমন মনে হচ্ছে কেনো/
রাতঃ আমি জানি না পাখি,যাই হোক না কেনো প্লিজ পাখি তুমি আমাকে ভুল বুঝোনা।
মেঘঃ তুমি এমন কথা বলছো কেনো?
রাতঃ এমনি বলছি আমার মনটা এমন কথা বলছে অস্থির লাগছিলো,কিন্তু আমার পাখি আমার বুকে এখন কিছু মনে হচ্ছে না, খুব শান্তি লাগছে পাখি। কি আছে তোমার মাঝে পাখি যে আমার অশান্ত মনটা শান্ত করে দেয়।তোমাকে জড়িয়ে ধরার পরে সব অশান্তি অস্থিরতা সব মুহূর্তে উধাও হয়ে গেলো।
মেঘের মুখে এক প্রশান্তির হাসি, নিজেকে এতো ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে, আমার ভাগ্যে এতো ভালোবাসা ছিলো? এই ভালোবাসা কি সারাজীবন আমার হয়ে থাকবে, আমি যে এই মানুষটার সাথে বৃদ্ধ হতে চাই। হাজার বছর বাঁচতে চাই আমি, এই ভালোবাসাকে বৃদ্ধ হওয়া পর্যন্ত আকরে ধরে থাকতে চাই খুব করে চাই খুব। আমিও যে তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসি রাত ভাইয়া খুব বেশি।
মেঘ চোখ বুঝে মনে মনে কথা গুলো ভাবছে।
রাতঃ আই লাভ ইউ। ( দু গালে আলতো করে ধরে)
মেঘঃঃ ভালোবাসি।
রাত একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেঘের নাকের সাথে নাক লাগিয়ে বললো,
তুমি পড়তে বসেছিলে পাখি ডিস্টার্ব করার জন্য দুঃখিত পাখি।
মেঘঃ ইশ ডিস্টার্ব করে এখন নেকামি করা হচ্ছে। ( রাত কে ছাড়িয়ে আবার পড়ার টেবিলে বসে)
রাতঃ আমার বউকে আমি যখন ইচ্ছে ডিস্টার্ব করবো তাতে তোর কি হে?
মেঘঃ এখনো বউ হইনি মিস্টার।
রাতঃ খুব শীগ্রই এই কথাটা আর বলতে পারবেন না ম্যাডাম।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল চলে আসলো,
সবাই অপেক্ষা করে আছে অন্তুর বাবার জন্য।
অন্তুু বার বার মেঘের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
আকাশঃ আচ্ছা তোর কাহিনাটা কি বলতো?
অন্তুুঃ তোর শশুড় বাড়ির জামাই হবো।
আকাশঃ মানি ( চিল্লিয়ে)
অন্তুুঃ হে এতে এতো অভাক হওয়ার কি আছে?
আকাশঃ তুই আমাকে জানাবি তো পাগল হয়ে গিয়েছিস?
অন্তুুঃ হুম তোর শালিকার রুপে পাগল হয়ে গিয়েছি।
আকাশঃ জাস্ট আমি কি বলবো ভাবতে পারছি না অন্তু, তুই কি করতে যাচ্ছিস তা তুই নিজেও বুঝতে পারছিস না। দুস্ত তোর আমার বন্ধুত্ব ছোট বেলা থেকে প্লিজ এই একটা বিষয় এর জন্য আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট করিস না।
অন্তুুঃ তোর আমার বন্ধুত্ব মৃত্যুর আগের পর্যন্ত থাকবে কেউ নষ্ট করতে পারবে না,কিন্তু যে কোনো বিনিময় মেঘলা কে আমি চাই।
আকাশঃ তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস।
এরি মাঝে অর্পন খান চলে আসে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হ্যালো মিস্টার খান আসেন বসুন, আমরা তো ভাবতেই পারি নি আপনি আমাদের বাসায় আসবেন।
অর্পন খানঃ না এসে পাড়লাম না,ছেলে আমাকে পাগল করে দিচ্ছে তাই আসতে হলো।
কুসুম এসে তাদের নাস্তা দিয়ে আবার চলে যায়।
রাত,আকাশ, অন্তু,রায়হান চৌধুরী, রৌদ্র চৌধুরী ড্রয়িং রুমের এক পাশে আর মেঘলারা অন্য পাশে বসে গল্প করছে।
রাতঃ তা আংকেল হটাৎ আপনার আগমন কেনো ঠিক বুঝতে পারলাম না।
অর্পন খানঃ এখনি বুঝতে পারবে,অন্তুু কি যেনো নাম?
অন্তুুঃ মেঘলা
অর্পনঃ মেঘলা কোথায়?
অন্তুুঃ ঐ যে বাবা হোয়াইট ড্রেস পরা।
অর্পনঃ বাহ মাশাল্লাহ।
কথাটা বলে অর্পন খান মেঘের দিকে এগিয়ে গেলো।
রৌদ্র চৌধুরী রাত সবাই ব্রু কুঁচকে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
অর্পন চৌধুরী কে দেখে মেঘলা সহ সাহেলা বেগম,মিন্নী বেগম সবাই দাঁড়িয়ে পরে।
সবাই অবাক এর শেষ প্রান্তে এই লোকের বিহেভ এ।
অর্পন খান কোনো কিছু না বলেই মেঘের হাতে একটা ডায়মন্ড রিং পড়িয়ে দেয়।
মেঘ এক প্রকার ভুত দেখার মতো অর্পন খান কে দেখছে।
রাতের রাগে মাথা জিম জিম করছে, চোখ গুলো রক্ত বর্ন ধারণ করছে ইচ্ছে করছে দুইটাকে কুকুর এর মতো পেটাতে।
রাত এক পা এগোতে গেলে রায়হান খান রাতের হাত ধরে আটকায় ।
রায়হান চৌধুরীঃ কন্ট্রোল ইউর শেল্ফ রাত। ( রাতের সামনে ফিসফিস করে)
রাতঃ চাচ্চু আমার মাথা গড়ম হয়ে যাচ্ছে।
রায়হান চৌধুরীঃ প্লিজ কোনো সিনক্রিয়েট করিস না ধর্য্য ধর।
রৌদ্র চৌধুরীঃ কি হচ্ছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, একটু ক্লিয়ারলি বুঝিয়ে বলবেন।
অর্পন খানঃ এখানে না বুঝার কিছু নেই মিস্টার রৌদ্র চৌধুরী,আপনার ভাগনি কে আমার ছেলের বউ করে নিতে চাই,আমার মনে হচ্ছে না আপনাদের কোনো আপত্তি আছে, তাই, সোজা ডায়মন্ড দিয়ে গ্রহণ করে নিলাম।
রাত এবার নিজের ধৈর্যের বাদ ভেঙে ফেলেছে।
রাতঃ বাহ কনফিডেন্স দেখে আপনাকে বাহবা দেওয়া দরকার, আপনার ছেলে কোন দেশের রাজপুত্র যে আমরা আপত্তি করবো না।
মেঘের সামনে গিয়ে হাত থেকে রিং টা খুলতে খুলতে কথাটা বললো রাত।
সাথে অর্পন খানের হাতে ধরেয়ে দিলো।
অন্তুুঃ রাত তুমি রিং টা খোললে কেনো,আমার বাবা পড়িয়ে দিয়েছে আর তোমার সাহস হলো কি করে খোলার?
রাতঃ রাতের সাহস নিয়ে কথা বললে সাহস দেখাতে এক সেকেন্ড সময় লাগবে না।
রৌদ্র চৌধুরীঃ সাট আপ রাত।
রাতঃ বাবা এদের আমার সামনে থেকে যেতে বলো আমি চাইছি না এদের অসম্মান করতে। আকাশ তোমার বন্ধু কে যেতে বলো।
এই সব কিছুর মাঝে আকাশ দুটানায় পরে গিয়েছে, ও জানতো এমন হবে , এখন ও কি করবে আকাশ ভাবতেই পাড়ছে না।
অর্পন খানঃ আমাকে অপমান করা হচ্ছে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ অর্পন খান আপনি যেচে অপমান হতে এসেছেন।
অর্পন খানঃ হোয়াট ডু ইউ মিন?
রৌদ্র চৌধুরীঃ আমরা মেঘলা কে আপনার ছেলের সাথে বিয়ে দিবো না। আর আপনি আমাদের কিছু না বলেই আমাদের মেয়ের হাতে রিং পড়িয়ে দেন, আপনার মতো একজন বুদ্ধিমান এমন কাজ করবে আমি আাশা করি নি, আপনারা আসতে পারেন।
অন্তুুঃ আংকেল যা বলছেন ভেবে চিন্তে বলছেন তো?
রাতঃ এই ভেবে চিন্তে বলবে কিরে বের হবি না দুইটাকে কুকুর এর মতো পেটাবো।( রাগে জোড়ে চিৎকার)
রাতের হুকার শুনে মেঘ ভয় বড় মামনির হাত চেপে ধরে।
আকাশ আর রায়হান খান রাত কে টেনে ধরে।
অর্পন খানঃ আমি দেখে নিবো তোমাদের আমাকে অপমান করা এই অর্পন খানের ছেলের জন্য মেয়ের বাবাদের লাইন ধরে থাকে আর তোমরা আমাকে রিজেক্ট করলে?( কথাটা বলে রেগে বেড়িয়ে পরে)
রাত নিজেকে কন্ট্রোল করার জন্য সোফায় মাথায় হাত চেপে চোখ বন্ধ করে রাখে।
অন্তুুঃ এই মেয়েকে তো আমি বউ বানাবো,সাথে তোদের সব কয়টাকে দেখে নিবো।এই দুইটাকার মেয়ের জন্য আমার বাবাকে অপমান হয়ে এই বাড়ি থেকে বের হতে হয়েছে, এরে তো আমি রক্ষিতা করে রাখবো আমার ঘড়ের।
রাত এবার নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলো না।
অন্তুর নাক বারাবর জোড়ে একটা ঘুসি মারে, সাথে সাথে অন্তুর নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পরতে থাকে।
রাতের দিকে তাকাতেই মেঘের আত্মা কেঁপে উঠে, সেইদিন এর মতো ভয়ংকর হয়ে গিয়েছে যেদিন রাত ঐ লোকটাকে মেরে ছিলো।
মেঘ কাঁপা কাঁপা গলায় বলে মা..মা রাত ভাইয়া কে আটকাও প্লিজ।
নিলয়,আকাশ, রায়হান চৌধুরী রাত কে ঝাপটে ধরে।
আকাশঃ প্লিজ রাত থামো ওকে মেরো না।
রাতঃ আকাশ ভাইয়া ছাড়ো নিলয় ছার বলছি একে তো আজ আমি শেষ করে ফলবো।
রায়হান চৌধুরীঃ আমরা পরে দেখে নিবো ও আমাদের বাড়িতে, আর আমাদের বাড়িতে এই সব মারামারি কখনো হয় নি রাত থাম প্লিজ। মেঘলা ভয় পাচ্ছে একবার ওর তিকে তাকিয়ে দেখ।
রাত মূহুর্তে থেমে যায় সাথে সাথে মেঘের দিকে তাকায়।
অম্তু উঠে চলে যায় অন্তুর পিছে আকাশ ও ছোটে।
মেঘ কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে, হেচকি উঠে গিয়েছে।
কিন্তু নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পরছে না। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে, বার বার অন্তুর কথা বলাটা কানে বাসছে
এই মেয়েকে তো আমি রক্ষিতা করে রাখবো রাত নিতে পারছে না এই কথাটা।
আবার সোফায় বসে পরে চুল গুলো দুহাত দিয়ে চেপে ধরে।
কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না, নিজের রাগ দমন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু পারছে না।
কিছু না ভেবেই সবার উদ্দেশ্য একটা কথা বলে আমি মেঘকে বিয়ে করবো, আর সেইটা এখন এই মুহূর্তে।
এতোক্ষণ সবাই যতটা না অভাক হয়েছে তার থেকে বেশি রাতের বলা কথাটায় এখন তারা অভাক হচ্ছে। রাতের সাথে মেঘের বিয়ে হবে এবং সবাই রাজী কিন্তু আজ এই মুহূর্তে অসম্ভব।
রৌদ্র চৌধুরীঃ পাগল হয়ে গিয়েছিস তুই?
রাতঃ আমি কারো কোনো কথা শুনতে চাচ্ছি না।
বলেই রাত কাউকে ফোন দিলো।
রায়হান চৌধুরীঃ রাত কি বলছিস তুই, এই ভাবে বিয়ে হয়। আমাদের অনেক ইচ্ছে তোর আর মেঘের বিয়েটা দুমদাম করে হবে।
রাতঃ সব পরে হবে কিন্তু আমি এখন যা বলেছি তাই হবে আর কোনো কথা আমি শুনতে চাই না।
নানুমনিঃ দাদু ভাই নিজেক সামলাও মেঘলা দিদি ভাই কষ্ট পাবে এই ভাবে বিয়ে হলে।
রাতঃ আমি কিছু জানতে চাচ্ছি না, বিয়ে আজ হবে তো হবেই।
অন্যদিকে অন্তুকে হসপিটালে নিয়ে যায় আকাশ।
আকাশঃ আমার কথা শুনলি না যদি শুনতি তো আজ হসপিটাল এ থাকতে হতো না।
অন্তুুঃ ঐ রাত কে তো আমি ছাড়বো না এর মাঝে তুই কোনো নাক গলাবি না,চলে যা।আমি তোর সাথে আর কোনো কথা বলতে চাই না আমি চাই না তোর আমার বন্ধুত্ব নষ্ট হোক।
আকাশ জানে অন্তুকে বলে কোনো লাভ নেই তাই সে হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে যায়।
অন্যদিকে নাহিদ আর তুহিন কাজি নিয়ে বাসায় আসে।
মেঘ ক্রমশ কেঁদেই যাচ্ছে।
মেঘঃ নানুমনি প্লিজ রাত ভাইয়া কে বুঝাও না, এমন ভাবে কি বিয়ে হয় বলো?
নানুমনিঃ ও কারো কথা শুনবে না দি ভাই কষ্ট পাস না সব ঠিক হয়ে যাবে দি ভাই।
নীলাঃ রাত এই ড্রেস এ বিয়ে অন্তত একটু সাজুগুজু করতে দে।
রাতঃ ওকে।
নীলাঃ চল মেঘলা
মেঘলঃ আমি কিছু করবো,বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিলো সব তুমি নষ্ট করে দিচ্ছ।
রাতঃ মেঘ আমি এখন কিছু শুনতে চাচ্ছি না, আমার মাথা ঠিক নেই প্লিজ কোনো সিনক্রিয়েট করে আমাকে বাধ্য করিস না তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করাতে। ( চোখ গড়ম করে)
মেঘ ভয় পেয়ে নীলার সাথে নিজের রুমে যায়।
নাহিদঃ দুস্ত তুই একটা পাঞ্জাবি পর বিয়ে যখন করছিস বাসর তো আজকেই সারবি।
রাতঃ নাহিদ আমি ফাজলামির মোডে নেই রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে।
নাহিদ চুপ মেরে যায়।
১০ মিনিট পরে লাল টুকটুকে একটা শাড়ি পরিয়ে নিয়ে আসে নীলা মেঘকে।
মেঘ এখনো কাঁদছে,সেও তো তার রাত কে চায় কিন্তু এই ভাবে তো কখনো চায় নি।
খুব কষ্ট হচ্ছে রাত কি তা বুঝতে পারছে না, কেনো এমন জোড় করছে। আমি এতো কাঁদছি তারপরও ও কি একটু মায়া হচ্ছে না সত্যি তুমি খুব পঁচা সবসময় আমাকে কষ্ট দেও আর কথা বলবো না তোমার সাথে। ( অভিমান করে মনে মনে)
রাত আট টা
সবাই মোনাজাত নিয়ে রাত এবং মেঘলার জন্য দোয়া করলো।
হে রাত মেঘলার বিয়ে সম্পূর্ণ হলো,
মেঘ সবার সামনে আর এক মুহূর্ত না থেকে দৌড়ে ছাঁদে চলে যায়,কারন তার খুব খারাপ লাগছে, বিয়ে নিয়ে তার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।
যখন খুব মন খারাপ থাকে তখনি ছাদে এসে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।
রাতও মেঘের পিছু যায়।সবারি মন খারাপ রাত এমন একটা জেদ করে বসবে কেউ বুঝতে পারে নি।যাইহোক তবে সবাই মনে মনে খুব খুশি এতো বছর এর ভালোবাসা আজ পূর্নতা পেলো।
মেঘ ছাঁদে হাতের উল্টো পাশ দিয়ে বার বার চোখের পানি মুছতে লাগলো।চোখের পানির বাদ মানছে না যেনো আজ।আজকের এই দিনে তো খুব খুশি থাকার কথা ছিলো তাহলে কেনো এমন হলো।
চলনে,
Part 43-44
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৪৩+৪৪
আকাশে লক্ষ তাঁরার মেলা,সাথে চাঁদের আপছা আলো, হালকা মৃদু বাতাস ছাদে দাঁড়িয়ে আছে মেঘ।হাতের উলটো পাশ দিয়ে বার বার চোখের পানি মুছে নিচ্ছে।
রাত এসে মেঘের পাশে দাঁড়ালো।
দু’জনের মাঝে নিরবতা, রাতের উপর একরাশ অভিমান নিয়ে বার বার চোখের জল মুছে যাচ্ছে মেঘ।
রাতঃ আ’ম সরি পাখি।
মেঘ কোনো কথার প্রতিউত্তর না দিয়ে রাতের সামনে থেকে চলে আসতে নেয়।
রাত মেঘের হাত ধরে হাঁটু গেঁড়ে বসে পরে।
রাতঃ আমি জানি এই ভাবে তুই বিয়েটা আশা করিস নি,কিন্তু আমি তোকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চাই না পাখি। তখন আমার এতোটাই রাগ উঠে গিয়েছিলো আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।পাখি তোকে কেউ বাজে কথা বললে আমি সয্য করতে পারছিলাম না। তখন আমি আমার নিজের মাঝে ছিলাম না আমার যা ভালো মনে হলো তাই করে ফেললাম, পর মুহূর্তে ভাবলাম আমার ভুল হয়েছে এই ভাবে বিয়েটা সম্পূর্ণ করা।কিন্তু পাখি আমি তোকে একা রুমে থাকতে দিতে পারবো না তাহলে আমি ঘুমাতে পারবো না।প্লিজ পাখি এমন অভিমান করে থাকিস না তোর এই চোখের জল আমাকে যে খুব কষ্ট দেয় পাখি।
মেঘের গলা আটকে আসছে এই মুহূর্তে তার কি করা উচিত বা কি করবে বুজে উঠতে পারছে না।রাতের এমন ইনোসেন্ট ফেস দেখে রাত কে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে আবার অভিমান দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
রাত বসা থেকে উঠে মেঘের জল মুছে দেয়,দুহাত দিয়ে আলতো করে মেঘের গাল স্পর্শ করে আবার বলতে থাকে,
আমাকে কি মাফ করা যায় না পাখি?
মেঘ রাতের চোখের দিকে তাকিয়ে এবার নিজেকে আর সামলিয়ে রাখতে পারলো না ঝাপিয়ে পরলো তার সব থেকে সুখের স্থান রাতের বুকে।
রাত নিঃশব্দে হেসে তার পাখিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
কিছুক্ষণ পরে মেঘ একদম শান্ত হয়ে গেলো,চোখে এখন আর জল নেই, এতোক্ষণ যতটা কষ্ট লাগছিলো এখন তার বিন্দু পরিমাণ কষ্ট নেই।
রাতঃ এই ভাবে এইখানেই কি দাড়িয়ে থাকবে?
মেঘঃ হুম
রাতঃ তাহকে এক কাজ করি ফুলসজ্জা টা এই ছাঁদেই হয়ে যাক কি বলিস।
মেঘ এবার লজ্জায় রাত কে ছেরে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।
রাত মুচকি হাসি দেয়।
লজ্জায় মেঘের ফর্সা গালে লাল আভা দেখে দিচ্ছে, মেঘ এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।
রাত আবার মেঘ কে পেছন থেকে জড়িয়ে বলে।
এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে বউ, তবে লজ্জা পেলে কিন্তু তোমাকে আরও বেশি সুন্দর লাগে, ফর্সা লাগটা যখন গোলাপের পাপড়ির মতো হয়ে যায় ইচ্ছে করে ঠোঁট দিয়ে ছোয়ে দিতে।
মেঘঃ ছাড়ো ফাজিল একটা।
রাত মেঘকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে বলে।
একটা ইচ্ছে পূরন করবা পাখি?
মেঘঃ কি ইচ্ছে?
রাতঃ আমাদের পবিত্র সম্পর্কের শুরুটা আজ এই খোলা আকাশের নিচে, এই হাজার তারার ভিরে থেকে শুরু করতে চাই, দুজন মিলে সারা রাত গল্প করবো আর ঐ মিষ্টি চাঁদটাকে দেখবো, আমার ইচ্ছে টা কি পূরণ হবে পাখি?
মেঘঃ কোনো ইচ্ছেই তো হলো না,ভেবেছিলাম দুমদাম করে বিয়ে হবে আমাদের, গায়ে হলুদ এ হলুদের সাজে সাজবো,বিয়ের দিমে ব্রাইডাল মেকআপ, আমাদের ফুলসজ্জার খাট বেলি ফুল আর গোলাপ দিয়ে সাজানো থাকবে।কত কি ভেবেছিলাম কিছু হলো না ।
রাতঃ আচ্ছা নিচে চল,কাজ আছে পরে আসবো।
মেঘঃ রাত ৯টা বাজে তোমার কিসের কাজ?
রাত মেঘকে কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা মেঘের হাত ধরে মেঘের রুমে নিয়ে বসিয়ে দেয়।
রাতঃ আমি যতক্ষণ না বলবো এই রুম থেকে বের হবি না।
মেঘঃ কিন্তু
আর কিছু বলার আগেই রাত বেড়িয়ে পরে।
কি হচ্ছে না হচ্ছে মেঘ কিছুই বুঝতে পারছে না।
বের ও হতে পারছে না কারন রাত বাহির থেকে লক করে গিয়েছে কেউ আসছেও না অসয্য লাগছে।
১ ঘেন্টা পরে নীলে রুমে আসে।
মেঘঃ আপু কি হচ্ছে আমার সাথে?
নীলাঃ আমি তো কিছু জানি না, এই গুলে নে রাত পাঠিয়েছে রেডি হতে বললো তোকে?
মেঘঃ আমি এই রাতের বেলা এই গুলো কেনো পরবো আমাকে কি জোকার মনে হয়?
নীলাঃ সেইটা তুমি তোমার প্রান প্রিয় স্বামী কে জিজ্ঞেস করো
মেঘঃ স্বামী
নীলাঃ হাহাহা রাত তো তোর স্বামি
মেঘঃ ইস ছি কেমন একটা স্বামী হাহাহাহা
নীলাঃ পাগলি একটা তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে তানহলে তোর স্বামী রেগে যাবে
মেঘঃ আপু
নীলা আর এক মুহূর্ত না থেকে চলে যায়।
মেঘ গুলো খুলে দেখতে থাকে,
নীল রঙের একটা হাফ স্লিভ পার্টি গাউন একদম পুতুল এর ড্রেস এর মতো,এত্তো গুলো নীল চুড়ি,মেচিং অর্নামেন্ট।
মুখে আমার প্রাপ্তির হাসি,
মোবাইল এর মেসেজ টুন ভেজে উঠলো,
রাতঃ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেও পাখি তুমি শাড়ী পরতে পারো না তাই শাড়ী নেই নি,আর তাছাড়া শাড়ী আমি তোমাকে পড়িয়ে দিবো আর আমার হাতে সময় নেই তাই গাউন টা পরে নেও, শুনো আজ তোমার ইচ্ছে মতো সাজো কোনো বাধা নেই কলিজা।
আমি মেসেজটা দেখে মৃদু হাসলাম।
রাত ভাইয়ার কথা মতো তার দেওয়া,গাউনটা পরে হাত ভর্তি চুরি পরলাম, হালকা মেকআপ করে কপালে একটা টিপ, প্রতি বার এর মতো আজ ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়ে নিলাম।
রাত ১২ টা রাত ভাইয়া আমার রুমে আসলো।
রাত পলকহীন চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে, অসম্ভব সুন্দর লাগছে তার পাখিটাকে।
রাতের এমন চাহনি দেখে মেঘ নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের আঙুল কচলাচ্ছে।
রাত ধীর পায়ে এসে মেঘর চোখ বেধে দেয়
মেঘ চমকে গিয়ে রাত কে বলে,
কি কি করছো?
রাতঃ এখনো তো কিছু করি নি।
বলেই মেঘকে কোলে নিয়ে হাঁটতে থাকে, উদ্দেশ্য ছাঁদ।
রাতের এমন সোজাসাপ্টা উত্তর এ মেঘ এবার লজ্জায় শেষ, ইচ্ছে করছে বরফ এর মতো গলে যেতে।
রাত ছাদে গিয়ে মেঘকে নামিয়ে চোখের বাঁধন খোলে দেয়।
চারো দিকে তাকাতেই মেঘ অভাক,
মুখে৷ হাত দিয়ে চারো দিকে ঘোরে ঘোরে দেখতে লাগলো।
রাত মেঘকে মুগ্ধ নয়নে দেখছে তার পাখিটার ইচ্ছে একটু হলেও পূর্ন করতে পেরেছে।
মেঘ এই অল্প সময়ে এতো কিছু কি ভাবে সম্ভব।
রাতঃ আমার পাখি জন্য সব সম্ভব।
সম্পূর্ণ ছাদে মোমবাতি দিয়ে সাজানো ,বেলি ফুলের গন্ধে চারোদিকে মো মো করছে, ছাদের একপাশে তাকাতেই মেঘ আরো বেশি অভাক হয় কারন লাল রঙের একটা বিছানা যার চারো পাশে সাদা পর্দা লাগানো সম্পূর্ণ বিছানার গোলাপ আর বেলির সমাহার। লালের মধ্যে যেনো বেলি ফুল গুলো ফুটে আছে। খোলা আকাশের নিচে এমন একটা পরিবেশ যা কিনা যে কোনো রামপ্রসাদ কে হার মানবে। আমার চাওয়ার থেকে মনে হচ্ছে অনেক বেশি পেয়ে গিয়েছি।
তুমি সেই স্বপ্ন পরি,
যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি।
তুমি সেই অনুভূতি,
যাকে আমার মন অনুভব করে।
তুমি সেই প্রেমিকা,
যার ভালোবাসার ছন্দ প্রেমিক আমি।
আমার প্রিতিটা নিশ্বাস এ
আমি শুধু তোমাকে অনুভব করি
তোমার সুভাসে পাগল আমার এই মন,
তাইতো পাখি তোমার পাশে থাকতে চাই সারাজীবন।
নিবেকি পাখি কাছে টেনে আমায়?
আমি ভালোবেসে যাবো সারাজীবন তোমায়
এক গুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে মেঘের সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে রাত মেঘকে প্রপোজ করে।
মেঘের চোখে সুখের নোনা জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পরলো।
মেঘ ও রাতের সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ে।
কিছু বলতে পারছে না শুধু চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে।
রাতের হাতের উপর দিয়েই গোলাপ গুলো আকড়ে ধরে গোলাপ গুলোতে চুমু দেয়।
মেঘের হাতে গোলাপ গুলো দিয়ে মেঘের বাহু ধরে দার করিয়ে চোখের জল মুছে দেয়।
রাতঃ আর কখনো যেনো চোখে জল দেখিনা, আমার পাখিটা সব সময় আমার সামনে শুধু হাসবে, তুই কি জানিস পাখি তোর এই হাসির মাঝে আমার সব সুখ লুকিয়ে আছে, আর তোর চোখের জলে কষ্ট গুলো। আমার পাখিটাকে যে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি বড্ড বেশি। ( নরম স্বরে এক হাতে মেঘের কোমড় জড়িয়ে অন্য হাতে গালে রেখে)
মেঘঃ এই ভালোবাসা আকড়ে ধরে আমি তোমার সাথে বৃদ্ধ হতে চাই,দুজন বুড়ো বুড়ি রাস্তায় হাত ধরে হাঁটতে চাই।এক ডজন বেবির আম্মু হতে চাই।
রাত কপাল কুঁচকে মেঘের দিকে তাকালো।
মেঘ যখন বুঝতে পারলো সে কি কথা বলছে সাথে সাথে চুপসে যায় আর রাতের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছাদে রেলিং ধরে এদিক সেদিক তাকাতে লাগে।নিজের কথায় নিজেই লজ্জায় গলে যাচ্ছে।
রাত নিঃশব্দে হেসে মেঘ কে পেছন থেকে জড়িয়ে বলে,
এক ডজন বেবির আম্মুর এতো লজ্জা কই থেকে আসে?
তার লজ্জা মাখা মুখটা যে একডজন বেবির বাবাকে যে পাগল করে দেয় সেই খবর কি তার আছে?
মেঘ লজ্জা পেয়ে রাতের পাঞ্জাবি খামছে ধরে রাতের বুকে মুখ লুকায়।
রাতঃ বাহ কি সুন্দর আইডিয়া যার জন্য লজ্জা পাচ্ছে তার বুকেই লজ্জায় মুখ লুকাচ্ছে এমন আইডিয়ার পাখিটাকে নভেল দেওয়া দরকার
মেঘ এবার অভিমান করে বলে যাও তুমি তোমার বুকে আর কখনো যাবো না।
বলে আবার পেছন ঘোড়ে দাঁড়ায়।
রাত নিঃশব্দে হেসে তার পাখিকে আবার জড়িয়ে ধরে,
মেঘের উন্মুক্ত ঘাড়ে নিজের ঠোঁট ছোয়ে দেয়।
মেঘ সাথে সাথে কেঁপে উঠে নিজের জামা খামছে চোখ বুঝে নেয়।
রাতঃ আমার পাখিটা আমার বুকে থাকবে না মানি দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা সে আমার বুকে থাকবে। ( ঘাড়ে ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করতে করতে)
রাতের ছোঁয়ায় মেঘের ভেতরে ঝর সৃষ্টি হচ্ছে, মনে হচ্ছে কেউ তাকে কারেন্ট এ সক খাওয়াচ্ছে।
রাত মেঘের গালের সাথে গাল লাগিয়ে বলে,
পাখি
মেঘঃ হুম
রাতঃ এই এমন একটা দিনের জন্য আমি এতোটা বছর অপেক্ষা করেছি,কবে আমি আমার পাখিটাকে নিজের করে পাবো,মনটা সবসময় সটফট করতো,আর আজ আমি আমার পাখিটাকে নিজের করে পেয়েছি,জানো তুমি আমি আজ কত খুশি পাখি?
মেঘ মৃদু হাসলো
আর মনে মনে বললো,
নিজের বুঝার ক্ষমতা হওয়ার পর থেকে তোমার প্রহর গুনে এসেছি রাত ভাইয়া, তুমি চলে যাওয়ার পরে যে আমি খুব একা হয়ে গিয়েছিলাম।
রাতঃ কি ভাবছো পাখি ( মেঘের খোপা করা চুল গুলো ছেরে দিয়ে)
মেঘঃ কিছুনা।
রাতঃ তোমার সম্পূর্ণ ইচ্ছে আমি পূরন করতে পারলাম না পাখি এই অল্প সময়ে যতটুকু সম্ভব হলো তাই করলাম।
মেঘঃ এইটা আমার কাছে বিশাল মনে হচ্ছে হয়তো প্রোগ্রাম করে হলে এতোটা সারপ্রাইজ হতে পারতাম না।
রাতঃ তাই?
মেঘঃ হুম।
রাতঃ আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিলাম এবার আমার গিফট কোথায়?
মেঘঃ আমার তো এমন কোনো প্লানি ছিলো না বা আজ এমন কিছু হবে তা তো আমার ভাবনার বাহিরে ছিলো তাই এই মুহূর্তে কিছু দিতে পারছি না আগামীকাল পেয়ে যাবা।
রাত মুচকি হেসে বলে,
গিফট তোমার কাছেই এখনি আছে।
মেঘঃ আমার কাছে নেই সত্যি বলছি।( অসহায় ফেস করে)
রাত মেঘের কোমড় জড়িয়ে ঠোঁটে স্লাইড করতে করতে বলে,
তুই আমার সব থেকে বড় গিফট পাখি( ঘোর লাগা কন্ঠে)
মেঘঃ মামানি?
রাতঃ ঐ দিন এর মতো আমি কিছু চাচ্ছি পাখি তোমার কাছে গিফট হিসেবে দিবে?
রাত কি চাচ্ছে মেঘ তা বুঝতে পেরে লজ্জায় এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।
রাত মেঘকে নিজের কাছে আরো বেশি আঁকড়ে ধরে চুলের বাজে হাত রেখে
কপালে একটা গভীর চুমু খায়।
রাতঃ আমি আজ তোমার উপর কোনো স্বামীর অধিকার খাটাবো না শুধু কিছু মুহূর্তের জন্য তোমার ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শে ডুবে যেতে চাই, অনুমতি কি পাবো আমি ম্যাম?
মেঘ লজ্জা পেয়ে মুচকি হেসে রাতকে ছাড়িয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।
রাত নিঃশব্দে মুচকি হাসে।
রাত পেছন থেকে আঁকড়ে ধরে মেঘের গাড়ে ঠোঁট দিয়ে স্লাইভ করতে থাকে,
আর নেশা বরা কন্ঠে বলে,
রাতঃ তোমার কি মনে হয় পাখি আমার এই পিচ্চি পাখিটির কাছে স্বামীর অধিকার খাটাবো?
মেঘঃ কিন্তু আমি এখন চাচ্ছি না।
রাতঃ আমিও চাই না পাখি কিন্তু একটু উষ্ণ স্পর্শ তোমার জন্য কি খুব বেশি হয়ে যাবে?
মেঘ রাতের দিকে ঘোড়ে এক হাত গাড়ে বিপরিত হাত চুলের ভাজে রেখে সম্মতি জানায়।
রাত দ্বিতীয় বারের মতো তার পাখির ঠোঁটের স্বাদ নেয়।
মেঘকে কোলে নিয়ে বেলি ফুলের বিছানায় সোয়ে দিয়ে নিজেও আদ সোয়া হয়ে গলায় ছোট ছোট চুমু খায় রাত।
রাতের প্রতিটি স্পর্শে মেঘর শরীল কেঁপে উঠছে।
রাত মেঘের মুখের দিকে ঝোঁকে একটা প্রাপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে যা মেঘের চোখে মুখে আচঁড়ে পরে, মেঘ চোখ বুঝে নেয়।
রাত নিঃশব্দে হেসে তার কলিজাকে বুকে নিয়ে চোখ বুঝে অনুভব করতে থাকে।
_________________________________
সকালের স্নিগ্ধ রোদের আলো মেঘের চোখে মুখে আচঁড়ে পরছে,আড়মোড়া হয়ে উঠে বসতে নেয় কিন্তু ব্যর্থ হলো।
কারন রাত মেঘকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে।
মুহূর্তেই মেঘের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে।
কোনো রকম একটু মাথা উচু করে অপলক দৃষ্টিতে রাতের দিকে তাকিয়ে থাকে মেঘ।
মেঘঃ এই যে মিস্টার সকাল হয়েছে আর কত ঘুমাবেন আজ কিন্তু নামাজ পড়া হয় নি।
রাত একটু নরেচরে মেঘকে আরো নিজের সাথে জড়িয়ে বলে,
হোক সকাল আমাকে ডিস্টার্ব করবি না পাখি এমনি সারা রাত ঘুমাতে দিস নি।
মেঘ ব্রু কুঁচকে বললো আমি আবার তোমাকে ডিস্টার্ব করলা কখন?
রাতঃ হুম তোর মায়াবী মুখটা সারা রাত আমাকে ঘুমাতে দেয় নি পাখি( চোখ বুঝে ঘুম লাগা কন্ঠে)
মেঘ নিঃশব্দে হেসে নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করলো।
মেঘের এমন নরাচরায় বিরক্ত হয়ে মেঘকে বালিশ এ সোয়ে দিয়ে নিজে মেঘের উপর ঝোঁকে একটু রাগি স্বরে বলে
সমস্যা কি তোর একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিবি না নাকি?
মেঘঃ আমার আনইজি লাগছে সারা রাত এমন ড্রেস পরে সোয়ে ছিলাম এখন রৌদ্রের আলোতে ভালো লাগছে না চেঞ্জ করতে হবে।( অসহায় ফেস করে)
রাতঃ আগে বলবা না, কিন্তু তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে ছারতে ইচ্ছে করছে না পাখি( নাকে নাক লাগিয়ে)
মেঘঃ আমি তো আর পালিয়ে যাচ্ছি না।
রাত মেঘের দুগালে আলতো স্পর্শ করে কপলাে একটা গভীর চুমু খায় তারপর মেঘকে ছেড়ে দেয়।
মেঘ চিলেকোঠার সামনে এসে আবার থেমে যায় পেছন ফিরে রাতের দিকে তাকায়।
রাত ইশারায় বুঝালো কি হয়েছে?
মেঘ রাতের সামনে গিয়ে বললো
আমি কি করে যাবো
রাত ব্রু কুঁচকে বললো,
কি ভাবে যাবি মানি?
মেঘঃ সবাই কি ভাববে আমার লজ্জা লাগছে ( অসহায় ফেস করে)
রাত হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খায়।
মেঘ রেগে কোমড়ে হাত দিয়ে বলে তুমি হাসছো অশব্য লোক একটা।
রাত বিছানা থেকে নেমে কিছু না বলে মেঘ কে কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো।
আমার লজ্জাবতী বউটা, সোজা বললেই তো হয় রাত আমি তোমার কোলে উঠে রুমে যাবো।
মেঘ ভুত দেখা’র মতো চোখ করে কপাল কুঁচকে বলে
তুমি একটা আস্তো সয়তান আমার লজ্জা লাগছিলো তাই আর এই বদ লোক ভাবছে কি।
মেঘের কথায় রাত আবার হাসলো।
সবাই ড্রয়িং রুমে বসে চা খাচ্ছে।
রাত মেঘকে কোলে করে নিজের রুমের দিকে যাওয়ার সময়
আলিফ সবার উদ্দেশ্য বললো
দেখো রাত ভাইয়া মেঘলা আপুকে কোলে নিয়েছে হাহাহাহা
আলিফ তোয়া হাসতে লাগলো।
সবার দৃষ্টি মেঘ রাতের দিকে সবাই রাতের কান্ড দেখে মুখ টিপে হাসতে লাগলো।
রাত মেঘকে নিজের রুমে নিয়ে নামিয়ে দিলো।
মেঘঃ তুমি আমাকে তোমার রুমে আনলে কেনো?
রাতঃ বাহ কি সুন্দর কথা তাহলে কার রুমে নিবো?
মেঘঃ কারো রুমে তোমার নিতে হবে না আমি নিজেই যেতে পারবো ( বলে পা বাড়াতেই রাত হাত ধরে নেয়)
রাতঃ কোথায় যাচ্ছিস?
মেঘঃ আমার রুমে।
রাতঃ তুই একটা পাগলি এখন থেকে তুই আমার রুমে থাকবি তোর সব কিছু আমার রুমে রাখা আছে যা ফ্রেশ হতে যা।
মেঘঃ কিন্তু
রাত মেঘের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে থামিয়ে দেয়।
এতো বেশি কথা পছন্দ না যাও।
মেঘ রাতের কাবাড খোলে দেখে রাতের পোষাক এক পাশে মেঘের টা বিপরীত পাশে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা হয়েছে মেঘ দেখে একটা হাসি দিলো।
একটা হোয়াইট রঙের শার্ট এবং লেগিংস নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়।
রাত হেসে বিছানায় মোবাইল নিয়ে সোয়ে পরে।
মেঘ সাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বের হয়।ভেজা চুলে মেঘকে অপরুপ সুন্দর লাগছে।
রাত এক মুহুর্তের জন্য যেনো থমকে গেলো, মেঘকে হাজার বছর দেখলেও হয়তো তার মন ভরবে না।
মেঘ আয়নার সামনে এসে নিজের চুল মুছতে থাকে।
রাত এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে, ভেজা চুলে মুখ ডুবিয়ে, ঘোর লাগা কন্ঠে বলে
নিজেকে কতদিন সংযত রাখতে পারবো জানি না পাখি, তোমার রূপের আগুনে যে আমি জ্বলসে যাচ্ছি
রাতের এমন নেশালো কন্ঠ শুনে মেঘের হৃদস্পন্দন কেপে উঠে, হার্ট খুব দ্রুত উঠা নামা করছে।
মেঘের পেটের দিক দিয়ে আঁকড়ে ধরে রাত অনবরত মেঘের চুলে চোখ বুঝে মুখ ঘসছে,
মেঘ কাঁপা কাঁপা গলায় বললে,
ছাছড়ো এমনি অনেক লেট হয়ে গিয়েছে আজ কলেজ যেতে হবে।
রাত মেঘের গালের সাথে গাল লাগিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে বলে,
ভালোবাসি পাখি।
মেঘঃ আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি।এবার ফ্রেশ হয়ে নেও।
রাতঃ আচ্ছা (নরম স্বরে)
মেঘ নিঃশব্দে হেসে নিজের চুল ড্রাই করে নেয়।
রাত সাওয়ার নিয়ে একটা ট্রাউজার পরে গলায় টোয়াল পেচিয়ে আয়নার সামনে এসে হাত দিয়ে চুল জারতে থাকে।
মেঘের চুখ আটকে যায় রাতের দিকে ভেজা চুল,ফর্সা শরিল এ এখনো বিন্দু বিন্দু পানি লেগে আছে, সব থেকে বেশি ভালো লাগছে হাত দিয়ে চুল গুলো জারছে।
মেঘ আনমনে হেসে উঠে
রাত খেয়াল করে দেখে মেঘ হাসছে।
পাগলটাগল হয়ে গেলা নাকি?
মেঘ কাচুমাচু খেয়ে বল,
মানে?
রাতঃ হাসছো যে৷
মেঘঃ তুৃমি খালি গায়ে আগে কিছু পরো।
রাতঃ পরবো না ( মেঘকে কাছে টেনে)
মেঘ রাতের বুকে হাত ভুলাতে ভুলতে বলে।
সব সময় এতো ফাজলামির মোডে থাকো কেনো বলছি না দেরি হয়েছে গিয়েছে।।
রাতঃ ভালো লাগে না ইচ্ছে করে সারাক্ষণ এই ভাবে জড়িয়ে রাখতে।
মেঘঃ ওফ ছাড়োতো।(বিরক্তি ভাব নিয়ে)
রাত৷ ছেড়ে কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নেয়।
মেঘ ও নিজেকে ঠিক ঠাক করে দুজন নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।
আমার খুব লজ্জা লাগছে রাত ভাইয়া।
রাতঃ লজ্জা পাওয়ার কি আছে পাগলি।
মেঘঃ জানি না কিন্তু তারপরও।
রাত হেসে বলে
ডোন্টঅরি পাখি।।
চলবে,
Part 45-46
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃ৪৫+৪৬
মেঘ এবং রাত নাস্তার টেবিলে গিয়ে বসলো।
রাত সবাই কে হাসি মুখে গুড মর্নিং জানালেও মেঘ তা পারছে না আগের মতো সবার সাথে চনচলতা কাজ করছে না। লজ্জায় সে সবার দিকে তাকাতেই পারছে না।কেমন যেনো নিজের মাঝে একটা নতুন বউ বউ ভাব আসছে।
সাহেলা বেগমঃ কিরে মা খাচ্ছিস না কেনো।
মেঘঃ কই খা…………..( আর কিছু বলার আগেই নিলয়)
আরে বড় মামনি এখন যে ঐ বাড়ির বড় বউ লজ্জা পাচ্ছে বুঝানো তুমি। (চোখ টিপ সয়তানি হাসি দিয়ে)
মেঘ রেগে আগুন হয়ে যায়।
সয়তান ছেরা কুত্তা তুই জানিস আমি লজ্জা পাচ্ছি?
নিলয়ঃ হে তা অবশ্য ঠিক তুই আর লজ্জা আমার তো মনে হয় লজ্জা তোকে পায় তুই লজ্জা কে কেনো পাবি
মেঘঃ খালামনি খাবো না আমি( বলে উঠে দাঁড়ায়)
খালামনিঃ নিলয় তকে না সতান ছেলে একটা।
নিলয় এর কথা এবং মেঘের রাগ দেখে সবাই হাসছে।
রাত মেঘের হাত ধরে বসিয়ে কানের কাছে গিয়ে বলে,
খেতে ইচ্ছে না হলে খাস না নিলয় এর সাথে রাগ করে তবে খাবার না খেলে কিন্তু অন্য কিছু খাওয়াবো
মেঘঃ এই বাড়ির ছেলে গুলো বদের হাড্ডি ( দাঁতে দাঁত চেপে)
মেঘ ভদ্র মেয়ের মতো খেয়ে নিচ্ছে।
রাতঃ আকাশ ভাইয়া গতকাল এর জন্য দুঃখিত আসলে আমি ঐ রকম টা করতে চাই নি তোমার বন্ধুর সাথে। ওর কথায় মাথাটা গড়ম হয়ে গিয়েছিলো তাই আমি সত্যি দুঃখিত।
আকাশঃ না রাত তুমি মাফ চাচ্ছো কোনো অন্তু সত্যি অন্যায় করেছে, আমি ভাবতেও পারি নি ও এমন কাজ করবে।ও অনেক মেয়ের সাথে টাইম পাশ করে কিন্তু মেঘলা কে ডিরেক্ট বিয়ের প্রপোজাল দিবে আমি কখনো ভাবি নি
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে গতকাল যে এমন কিছু ঘটে যাবে ভাবনার বাহিরে ছিলো
আকাশঃ আচ্ছা মামা বাদ দিন,মামা আমারা আজ চলে যাবো নীলা কে বাসায় দিয়ে আমি অফিস যাবো।
রৌদ্র চৌধুরীঃ আচ্ছা বাবা কাজের বেপারে আটকাবো না, আবার সময় করে নীলা কে নিয়ে চলে এসো।
আকাশঃ হে অবশ্যই আপনারাও নীলাকে গিয়ে দেখে আসবেন।
মেঘঃ আপু তুমি চলে যাবে?(মন খারাপ করে)
নীলাঃ হে রে যেতে তো হবেই, ।
সবাই সবার কাজে যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে রৌদ্র চৌধুরী এবং রায়হান চৌধুরী নীলা, আকাশ কে বিদায় জানিয়ে অফিস চলে যায়।
নীলার মা নিলাকে জড়িয়ে কাঁদছে, আবার মেয়েটা চলে যাবে। ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে।
মেঘ নীলাকে জড়িয়ে ধরে,
আপু তোমাকে খুব মিস করবো( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
নীলাঃ আমিও যে তোকে খুব মিস করবো রে মেঘলা।
আকাশঃ আচ্ছা চলো আমার আবার দেরি হয়ে যাবে।
ওরা চলে যাওয়ার পর মেঘ,নিলয়,রাত ও কলেজের জন্য রওনা দেয়।
নিলয় নিলয়ের বাইকা নিয়ে মেঘকে ভেংচি কেটে চলে যায়।
মেঘ রাগে নিলয় এর দিকে তাকিয়ে ফুঁসছে।
রাত দেখে মুখ টিপে হাসছে।
রাতঃ এমন সাপের মতো ফুসফুস করলে কিন্তু হেব্বি সুন্দর লাগে ইচ্ছে করে গালে কামরে দেই।
মেঘঃ তোমরা সত্যি খুব ভাজে।( গাড়িতে উঠতে উঠতে)
রাত দাত কেলিয়ে হেঁসে গাড়ি স্ট্রাট দেয়।
গাড়ি চলছে আপন গতীতে, দুজন ভালোবাসার মানুষ পাশাপাশি বসে তাদের গন্তব্যে ছুটছে, আসলে ভালোবাসার কোনো উদাহরণ থাকেনা, ভালোবাসা তো মনে গভীরে লুকায়িত, ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়া ভাগ্যের বেপার আবার নিজের মনের মতো মানুষ পাওয়াও ভাগ্যের বেপার।
ভালোবাসার মানুষটি যদি পাশে থাকে নিজেকে অনেক সুখি মনে হয়,অনেক কঠিন কাজকেও মনে হয় সহজ।
অন্যদিকে আকাশ আর নীলাও নিজেদের গন্তব্যে যাচ্ছে।
নীলা আকাশের কাঁদে মাথা রেখে বসে আছে, মনটা ভিষণ খারাপ লাগছে, মেয়েদের জীবনটা সত্যি খুব অদ্ভুত। শিশু বয়স থেকে আমরা নিজের বাবা মায়ের কাছে লালনপালন হই অথচ বড় হয়ে সেই বাবা মা কে ছেড়ে অজানা অচেনা জায়গায় থাকতে হয়। কি সুন্দর নিয়ম পৃথিবীর এক সময় এর নিজের বাড়ি ভাবতাম কিন্তু সেই বাড়িতেই একটা সময় মেহমান হয়ে যাই আমরা মেয়ে জাতীরা।
রাত কলেজে গেইট এর সামনে এসে গাড়ি পার্কিং করে
মেঘ গাড়ি থেকে নামতে গেলে রাত হাত ধরে নেয়।
মেঘঃ কি হলো?
রাতঃ কত সময় তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারবো না পাখি।
মেঘঃ ৩-৪ ঘন্টা মাত্র আর এতো লুচু হয়ে যাচ্ছো কেনো তুমি?
রাতঃ বিয়ে করলে নাকি ছেলেরা এমন হয়ে যায় তাই আমিও তাছাড়া আমি তো আর অন্য মেয়ের সাথে করছি না নিজের বিয়ে করা বউয়ের সাথে করছি।
মেঘঃ আচ্ছা স্যার এবার হাতটা ছাড়ুন আপনার স্টুডেন্টরা দেখলে খারাপ ভাববে।
রাত মেঘকে হেঁচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে বলে দেখুক আমি আমার বউকে আঁদর করছি।
মেঘঃ ছাড়ো প্লিজ
রাত মেঘের কপলে একটা গভীর চুমু একে ছেড়ে দেয়।
দুজন এক সাথে কলেজের ভিতরে ঢুকে।
তিথি এবং আাশা ছোটে আসে মেঘকে দেখে।
সাগর, জিহাদ, নিলয় দূর থেকে তিনজন কে দেখছে।
তিথিঃ দুস্ত নিলয় কি বললো?
মেঘঃ কি বললো ( ব্রু কুঁচকে)
আশাঃ ইশ ফুলসজ্জা কমপ্লিট করে এখন নেকা সাজা হচ্ছে তাই না?
মেঘ ভুত দেখার মতো হা হয়ে তাকিয়ে রইলো তার মানে নিলয় এর বাচ্চা এসেই এদের কানে বিষ ডালছে ওর একদিন কি আমার একদিন।
আশাঃ ছি মেঘ ছি আমাদের রেখেই বিয়ের কাজটা শেরে ফেললি।
রাগে মেঘের মাথা ফেটে যাচ্ছে ইচ্ছে করছে নিলয় কে মাথায় তুলে আছার মারি।
মেঘঃ দুস্ত ইট’স এক্সসিডেন্ট(অসহায় মুখ করে)
তিথিঃ হুম তোর সব কিছুই এক্সসিডেন্ট
মেঘঃ এর পরের আবার বিয়ে করবো তারপর তদের সবাইকে নিয়ে ফুলসজ্জায় আনন্দ করবো…..
কথটা বলে মেঘ জিহ্বায় কামড় দেয়।
মেঘ আর তিথি হো হো করে হেসে দেয়।
সবাই মিলে ক্লাস এ চলে যায়।
_____________________________
বিকেলে সাহেলা বেগম,মিন্নী বেগম,বড় খালামনি, দিদুন, নিলয়,রাত, মেঘলা ড্রয়িং রুমে বসে আছে।
নিয়লঃ রাত ভাইয়া তোমাদের বিয়েটা ঠিক আমি মেনে নিতে পারছি না।
রাতঃ মানি?
নিলয়ঃ হে এইটা কোনো বিয়ে হলো খাবোদাবো আনন্দ করবো তাহলেই তো বিয়ে হলো এই বিয়ে আমি মানতে পারতাছি না।
মেঘলাঃ তুই তো রাক্ষস শুধু খাওয়ার চিন্তা করিস রাক্ষস একটা।
নিলয়ঃ তোর মতো পিত্নি না মানুষের রক্ত খাই না খাবার খাই যত্তসব।
মেঘলাঃ তোরে আমার বিয়া খাইতে দিমু না কুত্তা।
নিলয়ঃ ছি এমন নির্লজ্জ তোর বিয়া আমি খামু না আমি রাত ভাইয়ার বিয়ে খাবো।
মেঘলাঃ খা তোর রাত ভাইয়ার বিয়া।
রাতঃ থামবি তোরা ( ধমকে)
দুজন চুপ হয়ে যায়।
দিদুনঃ এদের ধমকে লাভ নাই রে দাদুভাই একটু পরেই আবার লেগে যাবে।
সাহেলা বেগমঃ হে রাত আমিও ভাবলাম আমার একটা মাত্র ছেলে আর তার বিয়ে এই ভাবে আমিও মানতে পারছি না।
রাতঃ তাহলে হয়ে যাক আর একবার বিয়ে আর সাথে……..
মেঘের কানের সামনে গিয়ে বললো আর সাথে ফুলসজ্জা এই বার ছাড়াছাড়ি নেই
মেঘ এর রিয়াকশন
রাত মুখ টিপে হাসে।
সন্ধ্যার আগের মুহূর্ত যখন সূর্যি মামা লাল রক্তিম বর্ন ধারণ করে আছে মেঘ আর রাত দাঁড়িয়ে আছে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে।
রাত মেঘ কে পেছন থেকে জড়িয়ে নিয়েছে।
রাতঃ এই মুহূর্ত টা তোমার কেমন লাগে পাখি?
মেঘঃ খুব ভালো লাগে, দেখো আকাশটা কেমন রক্তিম বর্ন ধারন করেছে সাথে সাদা নীল এ সংমিশ্রণ, হালকা মৃদু ঠান্ডা বাতাস, আর সাথে………
রাতঃ আর সাথে?
মেঘঃ কিছু না
রাতঃবলো…..
মেঘঃ সাথে তোমার উষ্ণ স্পর্শ যেনো প্রতিটা শিরা উপশিরায় এ স্পর্শ লাগছে। এমন একটা সুন্দর পরিবেশ কে আরো সুন্দর করে দেয়। ইচ্ছে হয় হাজার বছর বেঁচে থেকে প্রতিদিন তোমার সাথে এমন বিকেল কাটাতে।
মেঘের কথায় রাত নিঃশব্দে হেসে মেঘ কে আর একটু আঁকড়ে ধরে।
রাতঃ বাহ আমার পাখিটা তো বেশ রোমান্টিক হয়ে যাচ্ছে আমার সাথে থাকতে থাকতে।
মেঘ একটা লজ্জা পাখা হাসি উপর দেয়।
______________________________
রাতে ডিনার টাইমে,
সাহেলা বেগম রৌদ্র চৌধুরী কে বললো,
আচ্ছা রাত আর মেঘের বিয়ের একটা প্রোগ্রাম করো, ছেলে মেয়ের বিয়েটা আমি এই ভাবে মেনে নিতে পারছি না।
রৌদ্র চৌধুরীঃ হে আমিও ভাবছি একটা রিসিপশন পার্টির আয়োজন করার।
রায়হান চৌধুরীঃ হে দাদা সামনে কোম্পানির জন্য অনেক ব্যস্ত থাকতে হবে ২-১ দিনেই করে ফেলো তারপর কিন্তু সময় হবে না, এমনকি রাতের ও কোম্পানিতে জয়েন করা লাগতে পারে।
রাতঃ ইম্পসিবল তোমাদের কোম্পানি তোমরা চালাও আমি এর মধ্যে নেই।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত সব সময় তোমার জেদ চলবে না রায়হান যা বলেছে ঠিকি বলেছে।
নিলয়ঃ কিন্তু আগে পার্টির আয়োজন হোক।
মেঘলাঃ খালি খাই খাই পার্টিতে তোকে বিষ খাওয়াবো কুত্তা।
নিলয়ঃ পেত্নী তরে কিছু বলছি আমি।
রাতঃ এই চুপ।
নানুমনিঃ আলিফ তোয়া তোরা যেনো কি কার্টুন দেখিস শুধু জগরা লাগে?
আলিফঃ টম এন্ড জেরি।
নানুমনিঃ হে নিলয় আর মেঘলা ঠিক ঐ রকম সারা দিন লেগেই থাকে।
নানুমনির কথায় সবাই একটু হাসে।
ডিনার শেষে সবাই রুমে চলে যায়।
আজ মেঘ রাতের রুমে ঘুমাবে নিজের কাছে কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছে, খুব নার্ভাস লাগছে।
রাত খাটে সোয়ে আছে মেঘ এখনো রুমে আসে নি নানুমনির রুমে।
রাতঃ ওফ এই মেয়েটা এখনো আসছে না কেনো?
নানুমনিঃ মেঘলা রাত ১১ টা বাজে যা রাত তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
মেঘলাঃ নানুমনি তোমার সাথে ঘুমাবো।
নানুমনিঃ তোর রাত পাগল হয়ে যাবে তোকে ছাড়া ঘুমাতেই পারবে না তুই আর একটু দেরি করলে তোকে নিতে চলে আসবে।
মেঘলাঃ মোটেও না
নানুমনিঃ আচ্ছা দিভাই যা তো এমন করিস না।
মেঘলাঃ নানুমনি আমার কেমন যে লাগছে।
নানুমনিঃ কেনো গতরাতে তো এক সাথে ছিলি সারা রাত সকালে তো দেখলাম ভালোই কোলে উঠে রুমে আসলি এখন এমন কেনো?
নানুমনির কথা শুনে মেঘলা লজ্জা নানুমনির কোলে মুখ লুকায়।
নানুমনি হেসে দেয়।
রাত আর সয্য করতে না পেরে সোজা নানুমনির রুমে চলে আসে।
দিদুন তোমার নাতনি আমাকে আর কত জ্বালাবে বলোতো?
দিদুনঃ আমি জানি ভাই এই মেয়েকে বুঝাতে পারছি না তোরা বউ তুই নিয়ে যা।
মেঘলাঃ নানুমনি ( নানু কে আরো জড়িয়ে ধরে)
রাতঃ মেঘ তাড়াতাড়ি রুমে আয়।
মেঘলাঃ আমি যাবো না তুমি ঘুম আসো যাও।
রাতঃ তোকে ছাড়া ঘুম হবে না পাখি।
নানুমনি মিটমিট করে হাসছে।
রাতের কথায় নানুমনির সামনে মেঘলা আরো লজ্জা পায়।
রাতঃ প্লিজ কাম বেবি।
মেঘঃ উহুমু
দিদুন তোমার নাতনি ভালো কথাার মানুষ নিয়ে গেলাম আমি রুমে নিয়ে এর খবর আছে।
মেঘকে জোর করে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।
দিদুন এদের কাহিনি দেখে হাসতে থাকে।
রাতঃ আমার থেকে দূরে থাকতে ভালো লাগে তোর তাই না।( খাটে সোয়ে দিয়ে মেঘের উপর নিজেও ঝুঁকে সোয়ে পরে)
মেঘঃ আমার কেমন যেনো না লাগছে ( অসহায় ফেস করে)
রাতঃ কেমন লাগছে?
মেঘঃ জানি না
রাতঃ বলো….
মেঘঃ নানার্ভাস লাগছে বুবুকের ভেতর কেমন কম্পন হচ্ছে (তুতলিয়ে)
রাতঃ এমন কেনো হচ্ছে পাখি আমি তো এমন হওয়ার মতো কিছুই করি নি
মেঘঃ যাও ছাড়ো অশব্য একটা।
রাত হেঁসে মেঘকে নিজের বুকে এনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
রাতঃ পাখি তোমাকে ছাড়া একটা মুহূর্ত ও আমি ভাবতে পারি না তুমি জানো আমি অফিস এ কেনো জয়েন হতে চাই না শুধু তোমার জন্য অফিস থাকলে তোমাকে আমি দেখতে পাবো না, আর তোমাকে দেখতে না পারলে আমার দম বন্ধ হয়ে যায় মনে হয় দেহ থেকে প্রাণটা বেড়িয়ে যাচ্ছে মরে যাচ্ছি আমি।
মেঘ চমকে গিয়ে মাথা উঁচু করে রাতের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বলে,
এমন কথা কখনো বলবে না আমি ভাবতেও পারবো না এমন কথা যদি এমন কিছু হয় তাহলে আমার আগে হবে।
রাতঃ চুপ একদম চুপ ( মেঘকে বালিশে সোয়ে দিয়ে)
তোকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো পাখি? কখনোই না তুই আমার প্রাণ এই প্রাণ ছাড়া রাত চৌধুরী একদম একা। ( মেঘের নাকের সাথে নাক লাগিয়ে নরম স্বরে)
রাতের ঘন নিশ্বাস মেঘের ঠোঁটে গিয়ে লাগছে।
যার ফলে মেঘ রাতের টি শার্ট খামছে ধরে।
রাত মুচকি হেসে আচমকা মেঘের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়।
রাত ভেবেছিলো হয়তো মেঘ সটফট করবে কিন্তু রাত কে ভুল প্রমানিত করে নিজেও রাতের সাথে তাল মিলায়।
রাত নিজের উপর কন্ট্রোল হাড়িয়ে ফেলছে মেঘ রাতের চুল আঁকড়ে ধরে যার ফলে রাত আরো দূর্বল হয়ে পরছে ঠোঁট ছেড়ে মেঘের গলায় অনবরত চুমু আঁকছে।
রাত নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে চাচ্ছে কিন্তু নিজের আবেগের কাছে হার মেনে নিচ্ছে ইচ্ছে থাকা সত্বেও মেঘের থেকে দূরে সরে আসতে পারছে না কিন্তু মেঘ যে ওর কাছে সময় চেয়েছিলো নাহ দূরে আসতে হবে ভেবে রাত মেঘের গলা থেকে মুখ সরিয়ে নেয়।
মেঘ অন্য পাশ হয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে।
রাতও নিজের বালিশে সোয়ে হাঁপাতে থাকে।
মেঘ এবার লজ্জা পেয়ে নিজের বালিশে মুখ লুকায় সাথে লজ্জা মাখা হাসি।
রাত একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে মেঘ কে নিজের বুকে আঁকড়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।
___________________________________
আগামীকাল রাত মেঘের রিসিপশন পার্টি ঘটা করে বিয়ের আয়োজন করতে গেলে বেশ সময় এর প্রয়োজন তাই একদিনের একটা পার্টির আয়োজন সবাইকে নিয়ে।
আগামীকাল যেহেতু প্রোগ্রাম তাই আজ বিকেলে নীলা চলে এসেছে আকাশ সন্ধ্যাে বেলা অফিস শেষে আসবে।
ছোট খালামনি, বাড়ির আরো অনেক আত্মীয় স্বজনরাই এসেছে।
সন্ধ্যা বেলা সবাই বাসায় চলে আসে সাথে আকাশ ও।
আকাশঃ কি ভাগ্য রাত তোমার দুইবার ফুলসজ্জার সুযোগ পেলে।
রাতঃ সবি কপলা আকাশ ভাই।
আকাশঃ
নীলাঃ মেঘলা আয় তো আমার সাথে।
মেঘলাঃ কেনো আপু।
নীলাঃ আরে আয় না
এক প্রকার জোড় করে মেঘকে টেনে নিয়ে গেলো নীলা।
_____________________
রাত আকাশের সাথে কথা বলছে
এমন সময় নানুমনি বলে উঠলো বাহহ মাশাআল্লাহ!
নানুমনির কথায় সবাই উপরের দিকে তাকাতেই হা হয়ে তাকিয়ে রইলো মেঘলার দিকে।
হলুদ সুতি লাল পাড়ের কাপড়ে মেঘকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে, হাত ভর্তি লাল, হলুদ রেশমি চুড়ি,সাথে বেলি ফুলের গহনা, ঠোঁটে গাড়ো লাল লিপস্টিক, গাড়ো করে টানা কাজল কপালে লাল টিপ, মাথায় ঘোমটা টানা একদম হলুদ কাপড়ে হলুদ পরির মতো লাগছে।
সবার এমন চাহনিতে মেঘ লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে নীলা দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
সাহেলা বেগমঃ মাশাল্লাহ আমার বউকে কি সুন্দর লাগছে।
মেঘ একটা লজ্জা মাখা হাসি দিলো।
মেঘ আর চোখে রাত কে দেখে এক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে এতে যেনো মেঘ আরো লজ্জায় নোয়ে যাচ্ছে।
নীলাঃ কিরে এমন হা করে তাকিয়ে থাকবি নাকি মুখটা বন্ধ কর।
রাতঃ বোন আমাকে পাগল করার জন্য এই মায়াবীনিই যথেষ্ট। ইচ্ছে করছে সব লিপস্টিক খেয়ে ফেলতে।
নীলাঃ হাহাহাহা বিয়ে করার পর তোর লজ্জা সরম সব গেছে বদমাশ একটা।
রাত পেকেটে হাত দিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে হাসে।
মিন্নী বেগম এই যে আমাদের মেঘ রানীর হলুদ রেডি।
নীলাঃ হে গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান হবে না তা কি করে হয় রাত তুই তাড়াতাড়ি যা পাঞ্জাবি পরে আয় তোর রুমে রাখা আছে।
রাতঃ আরে পাগল হলি নাকি।
আকাশঃ আরে শালা বাবু পাগল হওয়ার সময় তো তোমার।
রাতঃ আকাশ ভাই কথটাা খারাপ বলো নি সত্য পাগল হওয়ার সময় আমার।( মেঘের দিকে তাকিয়ে)
রাত পাঞ্জাবি পরে নিচে আসে নিলয় নিয়ে মেঘের পাশে বসিয়ে দেয়।
নানুমনি রাত এবং মেঘলাকে হলুদ লাগিয়ে দেয় একে একে সবাই হলুদ লাগিয়ে দেয় দু’জন কে।
( পাঠক পাঠিকা রা আপনারাও চলে আসেন)
সবাই মিউজিক বাজিয়ে খুব আনন্দ করতে এক সাথে নাচ, মিউজিকের সাথে নিজেরাও মুখ ভুলাচ্ছে, বড়রা ছোটদের এমন আনন্দ দেখে বসে বসে হাসছে।
আসলে বড় প্রোগ্রাম করেও এতো আনন্দ হয় না যখন বাড়ির সবাই এক সাথে ছোটখাটো ঘরোয়া ভাবে কোনো কিছু আয়োজন করলে যতটা আনন্দ হয় এই আনন্দের মজাই আলাদা।
হটাৎ রাত মেঘের কোমড় জড়িয়ে নাচতে নাচতে বললো,
আমার পাখিকে কিন্তু আমি এখনো হলুদ মাখাতে পারলাম না এইটা কিন্তু মোটেও ঠিক হলো না পাখি।
মেঘঃ বর কখনো বউকে হলুদ লাগায় না অশব্য লোক একটা।
রাতঃ কিন্তু আমি আমার বউকে লাগাবো ( কথাটা বলেই মেঘকে আড়ালে নিয়ে নিজের গালে লাগানো হলুদ মেঘের গালে লাগিয়ে দেয়)
মেঘঃ রাত ভাইয়া কি করছো।
রাতঃ এখনো ভাইয়া
মেঘ হাহাহা করে হেসে দেয়।
মেঘঃ তুমি সারা জীবন আমার ভাইয়া হয়ে থাকবা।
রাতঃ নাাহহহ আমি আমার বাচ্চাদের মামা হতে চাই না এই অমানবিক অত্যাচার আমি মানতে পারবো না ইম্পসিবল।
রাতের কথায় মেঘ আরো জুরে হাসতে থাকে।
আর রাত তা মুগ্ধ নয়নে দেখতে থাকে।
মেঘ রাতের এমন চাহনি দেখে হাসি বন্ধ করে নিচের দিকে তাকিয়ে হাত কচলাতে থাকে।
রাত মেঘের কোমড় জড়িয়ে বলে
আমি আমার পাখিটার এই হাসিটা সারা জীবন দেখতে চাই পাখি।
মেঘঃ যদি কখনো হারিয়ে যাই?
রাতঃ একদম চুপ এই কথা মুখে আনবি না পাখি, আমি যে বাচঁতে পারবো তোকে ছাড়া। তোর মন আমার মন এক সুঁতোয় গাঁথা পাখি #মনের_মতো_মন।এক মন যদি না থাকে তো অন্য মন ও থাকবে না নিঃশ্বেস হয়ে যাবে, খুব বেশি ভালোবাসি পাখি তোকে খুব বেশি।
মেঘ রাতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,
আমিও যে তোমাকে খুব ভালোবাসি।
__________________________
পরের দিন,
সন্ধ্যা বেলা যেহেতু পার্টির আয়োজন করা হয়েছে তাই প্রোগ্রামটা সন্ধ্যা বেলাতেই দেওয়া হয়েছে।
চৌধুরী বাড়ি ভার্তি মেহমান এ ভরপুর।
খাওয়া দাওয়া আনন্দ সেই সন্ধ্যা থেকেই চলে আসছে।
মেঘ আজ হালকা পিংক এর উপর হোয়াইট স্টোন এর সিম্পল কাজের একটা লেহেঙ্গা পরেছে সাথে মেচিং অর্নামেন্ট,পার্লার থেকে সাজাতে খুব সুন্দর লাগছে মেগকে,রাতও মেঘের সাথে মেচিং নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে দু’জন কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
রৌদ্র চৌধুরী ছেলের অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ের কথা সবার মাঝে এনাউন্সমেন্ট করে,সবাই খুব খুশিও হয়।
রাত মেঘের সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে মেঘের হাতে একটা ডায়মন্ড রিং পড়িয়ে দেয়। এবং সবার সামনে মেঘের হাতে একটা ডিপ কিস করে।
মেঘ লজ্জায় সবার সামনে এদিক সেদিক তাকায়, অন্যদিকে রাত মুচকি হাসে।
_______________________
রাত ১২ টা মেঘ বেলি ফুলের রাজ্যে বসে আছে বউ সেজে।
রাত বিশ্ব জয় করা একটা হাসি দিয়ে রুমে প্রবেশ করে।
এর আগেও রাতের সাথে এক রুমে থেকেও কেমন যেনো একটা অজানা ভয় কাজ করছে মেঘের মাঝে।
কাঁপা শরিল নিয়েই খাট থেকে নেমে রাতকে সালাম করতে নিলে রাত মেঘ কে ধরে নেয় আর বলে,
বাহ বাহ আমার বউ দেখি বড় হয়ে গিয়েছে স্বামী কে সালাম করতে নেমে পরেছে।
মেঘঃ দেত তুমি আসলেই ভাজে নানু মনি বলেছিলো তাই হুম।
রাত কিন্তু আমার বউটাকে যে আমি আমার পা স্পর্শ করতে দিবো না।আমার পাখিটা সবসময় আমার বুকের গহীন ঘরে থাকবে বুঝাতে পেরেছি পাখি।
মেঘঃ হুম( মিষ্টি হাসি দিয়ে রাতের বুকে মাথা রেখে)
রাত ও পরম আবেশে মেঘকে নিজের বুকে জরিয়ে নেয়।
রাতঃ আমি কি সম্পূর্ণ ভাবে আজ আমার পাখিকে আপন করে পেতে পারি।
মেঘের এতোক্ষণ যতটা ভয় লাগছিলো সেই ভয়টা আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো সাথে লজ্জা রাতের একটি মাত্র কথায়।
মেঘ লজ্জায় রাতের বুক থেকে মাথা তুলে সরে গিয়ে দাঁড়ায়।
রাত ও মুচকি হেসে মেঘকে আবার পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে থুতনি রেখে বলে,
এতো লজ্জাবতী কেনো ছোয়ে দেওয়ার আগেই লজ্জায় নোয়ে পরো তুমি তো লজ্জাবতী গাছকে ও হার মানাবে।
মেঘের গলায় সব কথা আটকে আসছে।
কিছু বলতে না পেরে চুপ মেরে যায়।
রাতঃ কিছু বলো পাখি আজকের এইদিনে কি আমি আমার পাখিকে আপন করে পেতে পারি।
মেঘ রাতে দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে।
রাত মেঘের ভাষা বুঝতে পারে।
এতো বছর এর ভালোবাসা আজ পূর্ণতা পেতে চলছে,এই কাঁপল যোগল এর খুশিতে যেনো আজ আকাশের চাঁদ, তাঁরা গুলো মিটিমিটি হাসছে, চারোদিকে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এক জোড়া ভালোবাসার মানুষ তাদের মনের অনুভূতি গুলো প্রকাশ করছে তাদের ভালোবাসা আজ সব কিছুতে পূর্ণতা পাচ্ছে।
সব ভালোবাসা যদি এমন ভাবে পূর্নতা পেতো তাহলে হয়তো ভালোবাসার অভাব কারো জীবনেই থাকতো না,সব ভালোবাসা পূর্নতা পায় না বিদায় আজ পৃথিবীতে এতো ভালোবাসার অভাব,এতো কষ্ট। আচ্ছা যে যাকে ভালোবাসে তাকে জীবন সাথী করে পেলে কি সত্যি খুব খারাপ হতো? সব ভালোবাসা পূর্নতা পেলে হয়তো পৃথিবীতে কষ্ট বলতে কিছু থাকতো না তাই হয়তো বিধাতার এমন লিখন, কিন্তু কিছু ভালোবাসা পূর্নতা পাওয়ার পরেও হাড়িয়ে যায় প্রকৃতির নিয়মে।
চলবে….
Part 47(End Part)
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#পার্টঃসমাপ্তি।
স্নিগ্ধ সকাল বেলা সূর্যের উকি চারো দিকে আলোর ঝলকানি। ছোট ছোট পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ।
মেঘ টিপ টিপ করে চোখ মেলে তাকায়, রাত তাকে প্রতিদিন এর মতো আজ ও জড়িয়ে রেখেছে তবে প্রতিদিন এর থেকে আজকের অনুভূতি টা অন্যরকম লাগছে মেঘের কাছে। আজ নিজের কাছেই নিজের লজ্জা লজ্জা ফিল হচ্ছে, মেঘ আনমনেই হেসে রাতের বুকে আরো গভীর ভাবে জায়গা করে নেয়।
মেঘের নরাচরায় রাত মেঘকে আরো আকড়ে ধরে।
মেঘঃ এতো ঘুম আসলে কি ভাবে হবে স্যার কলেজ যেতে হবে।
রাতঃ…………..
মেঘঃ আচ্ছা তুমি ঘুম আসো আমাকে তো ছাড়ো।
রাতঃ উহুমু (ঘুম ঘুম কন্ঠে)
মেঘঃ সবাই কি ভাববে এতো সকাল পর্যন্ত রুমে থাকলে?
রাতঃ কিছু ভাববে না তাদেরও এমন দিন গিয়েছে। ( চোখ বুঝেই)
মেঘঃ আমার ভালো লাগছে ছারো।
রাত মেঘকে বলিশ এ সোয়ে দিয়ে মেঘের দিকে ঝোকে বলে।
একদম আনরোমেন্টিক বউ একটা কই নিজে এসে সকাল সকাল একটু আদর করবে, বর কে বুকে জড়িয়ে রাখবে তা না করে সে উঠার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে।
মেঘঃ এতো রোমান্টিকতা আসে কোথা থেকে?
রাতঃ আমার বউকে দেখে এমনি চলে আসে ইচ্ছে করে সারা দিন চুমু…………
মেঘঃ একদম না ছাড়ো
রাতঃ একদম চুপ কথাটা বলেই মেঘের গলায় মুখ গুজে অনবরত চুমু খেতে থাকে।
মেঘঃ রাত প্লিজ ছারো লক্ষিটি আমার ফ্রেশ হতে ইচ্ছে করছে।
রাত মেঘের দিকে ভুত দেখার মতো করে তাকিয়ে থাকে।
রাতের চাহনিতে মেঘ লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে অন্যদিকে মুঝ ঘুরিয়ে নেয়।
রাতঃ আমি কি ঠিক শুনলাম নাকি ভুল? আমার বউ এই ভাবে বললো আমালে ওফ কথাটা বার বার কানে বাজছে পাখি আবার বলো না প্লিজ।
মেঘঃ দেত ছাড়ো।
রাতঃ না আগে বলো।
মেঘঃ আচ্ছা ছারো রাত প্লিজ।
রাতঃ হুম ছাড়বো কিন্তু তার আগে একটা কথা আজ কলেজ যেতে হবে না এবং আজ তুই শাড়ী পরবি।
মেঘঃ ইম্পসিবল শাড়ী আমি পারবো না সামলাতে।
রাতঃ তো আমিও ছাড়ছি না সারাদিনও।
মেঘঃ আমি পড়তে পারি না( অসহায় মুখ করে)
রাতঃ আমি পড়িয়ে দিবো।
মেঘঃ তুমি
রাতঃ হুম
মেঘঃ কিন্তু
রাতঃ কোনো কিন্তু নয় ইট’স ফাইনাল আমি পারিয়ে দিবো মানি আমি পরিয়ে দিবো ওকে?
মেঘঃ হুম
রাত মেঘের ঠোঁটে একটা ডিপ কিস করে মেঘকে ছেড়ে দিয়ে একটা প্রাপ্তীর হাসি দিয়ে আবার বিছানায় সোয়ে পরে।
মেঘ সাওয়ার নিয়ে আশার পরে রাত খুব সুন্দর করে শাড়ী পড়িয়ে দেয়।
ব্লাক রঙের শাড়ীতে মেঘকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে একদম নতুন বউ বউ লাগছে। তারউপর ভেজা চুল রাতকে আরো মুগ্ধ করছে।
রাতঃ পাখি তোকে দেখলে আমার নেশা লেগে যায় এতো নেশা কেনো তোর মাঝে।
মেঘের লজ্জায় গালে লালচে ভাব চলে এসেছে এতে যেনো আরো কিউট লাগছে মেঘকে।
এইভাবেই চলতে থাকে মেঘ রাতের মিষ্টি মধুর ভালোবাসার দিন গুলো।
___________________________
দুই বছর পর,
রাত এখন অফিসে জয়েন করেছে মেঘ নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। রাত প্রতিদিম অফিস যাওয়ার পথে মেঘকে ড্রপ করে দিয়ে আসে।
একদিন সকালে,
মেঘ ভার্সিটি যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে রাত অফিস যাওয়ার জন্য।
সকাল থেকেই মেঘের খারাপ লাগছিলো কেমন যেনো মাথাটা জিম জিম করছিলো কিন্তু এখন যেনো তার পরিমাণটা বেড়েই চলছে।
মেঘঃ আচ্ছা আমি যা ভাবছি তা কি সত্যি হয়ে গেলো নাকি?( মনে মনে)
ভয় এ মেঘের গলাটা শুকিয়ে যাচ্ছে, যদি এমনটা হয় তাহলে রাত তাকে আস্তো রাখবে না।
পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে মুখে দেওয়ার আগেই ঠাস করে ফ্লোরে পরে গেলো।
মেঘ নিজেকে এখন আর সামলাতে পারছে না মাথা প্রচন্ড ঘোড়ছে।মাথায় হাত দিয়ে খাটে বসে পরে।
রাতঃ পাখি কি হয়েছে তুমি ঠিক আছো এমন করছো কেনো?
মেঘ রাতের দিলে এক পলক তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়।
রাতঃ পাখি এই পাখি কি হলো কথা বলছো না কেনো? ( গালে হালকা থাপ্পড় দিতে দিতে)
রাতঃ মা,কাকিমনি প্লিজ তাড়াতাড়ি এসো দেখো মেঘ কেমন সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে, পাখি এই পাখি কি হলো তোর।
রাতের চিৎকার এ সবাই মেঘের রুমে চলে আসে।
নিলয় নানুমনি কে ধরে ধরে নিয়ে আসে, নানুমনি এখন অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে।
সাহেলা বেগমঃ কি হয়েছে মেঘলার?
রাতঃ জানি না মা দেখো হটাৎ কেমন সেন্সলেস হয়ে পড়লো নিলয় তাড়াতাড়ি ডক্টর কে ফোন দে।( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
নিলয় ডক্টর কে ফোন দেয়।
সবাই মেঘের হাত পা মালিশ করতে থাকে রাত এক।
ডক্টর আশার আগেই মেঘের সেন্স ফিরে আসে।
রাত পাগল এর মতো বারবার জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে তোমার কিন্তু মেঘ কোনো কথা বলছে না।
ডক্টর আসলে চেক-আপ করে।
রাত ডক্টর কে বার বার জিজ্ঞেস করছে হয়েছে মেঘের।
ডক্টর হাসি দিয়ে সবার উদ্দেশ্য বলে আপনাদের পরিবারে নতুন অতিথি আসছে।
মেঘের বুকটা ধুক করে উঠে রাতের রিয়েক্ট কেমন হবে তা ভেবে।
সবার মুখে আনন্দের হাসি, সাহেলা মেঘ তো মেঘকে নিয়ে অস্থির হয়ে পরছে। সবার খুশি দেখে কে খুশি তে আত্মহারা।
নিলয়ঃ পেত্নী মা হবে আল্লাহ ভাবা যায় পেত্নী আমি মামা হবো ওফ ভাবতেই কেমন লাগছে। নীলা আপুকে আগে খবর টা দিয়ে নেই।
সবার মাঝেও রাত রক্ত চক্ষু নিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে মেঘ রাতের দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না।
কারন রাত বার বার না করেছে এতো তাড়াতাড়ি এমন একটা ডিসিশন না নিতে কিন্তু ওর কথা শুনলো না।
মিন্নী বেগমঃ আপা চলো আমরা নিচে যাই সবাইকে খবর টা দিতে হবে তো।
সবাই রুম থেকে চলে গেলো রাত এখনো একি ভাবে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।
মেঘ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে।
রাত আ’ম সসররি আমি
রাতঃ জাস্ট সাট আপ ডেম ইট আমি কত বার তোকে না করেছি তারপর ও তুই।
মেঘ কেঁপে উঠে সাথে সাথে কান্না করে দেয়।
রাতের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে,
মেঘ কান্না করতে করতে হেঁচকি তুলে ফেলছে রাত মেঘের কান্না আর সয্য করতে না পেরে মেঘের পাশে বসে মেঘকে বুকে জরিয়ে নেয়।
রাতঃ সরি পাখি তুমি আমার কথা শুনো নি তাই মাথা ঠিক ছিলো না, কতবার তোমাকে না বলেছি এমন একটা ডিসিশন না নিতে, তুমি জানো এর কারনটা কি এই প্রেগ্ন্যাসির বেপার টা আমার খুব ভয় হয় যদি কিছু পেতে গিয়ে আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলি আমি যে বাঁচতে পারবো না পাখি।
মেঘঃ তুমি এমন চিন্তা কেনো করো বলো, আমার একটা বেবি খুব প্রয়োজন যে আমাকে আদো আদো কন্ঠে আম্মু আম্মু বলে ডাকবে তোমাকে পাপা বলবে ভাবতেই কত আনন্দ লাগে বুঝতে পারছো তুমি?
রাতঃ হুম পাগলি বউ একটা কিন্তু আমার তো ভয় হয় আমার পাখিটা অনেক ছোট।
মেঘঃ আর কত বড় হবো বুড়ি হয়ে যাবো তো।
রাতঃ হাহাহা আসছে আমার বুড়ি। ( শক্ত করে বুকে জড়িয়ে)
মেঘঃ আচ্ছা তুমি অফিস যাও দেরি হয়ে গিয়েছে অলরেডি।
রাতঃ হুম পাখি তুমি কিন্তু নিচে নামবে না আমি বাসায় এসে নিচে নিয়ে যাবো একটা ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে শেষ করেই চলে আসবো ১ ঘন্টার মাঝে।
মেঘঃ বাসায় সবাই আছে আর এখন মাত্র ১ মাস পাগল কিচ্ছু হবে না।
রাতঃ আমি আমার পাখিকে নিয়ে কোনো প্রকার রিস্ক নিতে চাচ্ছি না বেবি।
মেঘঃ হুম বুজলাম যাবো না হ্যাপি।
রাতঃ হুম ( কপালে গভীর চুমু একে)
রাতের কেয়ার যেনো দিন দিন বেড়েই চলছে।
মেঘের প্রেগ্ন্যাসির ৪ মাস আগে থেকে পেটের উঁচুতা সামান্য একটু বেড়েছে যে রাত বেবি নিতেই না বলেছে এখন সে রাত বেবির জন্য পাগল প্রায়। সারাক্ষণ মেঘের পেটের মাঝে চুমু আাকে কান পেতে একা একা কথা বলে আর এই রকম পাগলামি দেখে মেঘ শুধু হাসে।
একদিন সকালে মেঘের ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে…………..
মেঘঃ হ্যালো কে বলছেন?
অচেনাঃ………………………..
মেঘঃ নাহহ ( বলার সাথে সাথে মেঘের হাত থেকে ফোনটা পরে যায়।)
নিজের এই অবস্থায় নিজের কথা না ভেবে দৌড়ে নিচে চলে আসে মেঘ এই মুহূর্তে আর কিছু ভাবতে পারছে না শুধু একটা কথা কানে বাজছে……..
নিচে কাউকে না দেখে কাউকে কিছু না বলেই বেড়িয়ে পরে বাড়ির গেইট এর সামনে আসতেই একটা গাড়ি এসে থামে মেঘের সামনে।
ড্রাইভারঃ আপনার মামা গাড়ি পাঠিয়েছে আপনাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে যেতে বলেছে।
মেঘ কোনো কিছু না ভেবে দ্রুত গাড়িতে উঠে বসে পরে।
মেঘ কান্না করতে করতে অস্থির হয়ে পড়ছে এক তো নিজের এই অবস্থা অন্যদিকে প্রিয় মানুষটির ঐ রকম এক্সসিডেন্ট এর কথা শুনে নিজের মাথা কাজ করছে না।
গাড়ি কোথায় যাচ্ছে মেঘের সে দিকে কোনো খেয়ালি নেই শুধু একটা কথাই তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে রাতের কাছে যেতে হবে।
গাড়ী এসে থামে একটা নির্জন বাড়ির সামনে মেঘ এতোসময় খেয়াল না করলেও এখন চারোদিকে তাকিয়ে দেখে এমন একটা নির্জন জায়গায় এসে থেমেছে।
মেঘঃ এইটা কোথায় আমাকে এখানে নিয়ে আসলেন কেনো হসপিটালে যাওয়ার কথা কিন্তু….
তোমার এইখানেই আশার কথা বেবি।
মেঘ পেছন ঘোড়ে তাকিয়ে অভাক হয়ে তাকিয়ে দেখে।
অন্তু ভাইয়া!
অন্তুঃ হে বেবি আমি আসো( মেঘের হাত ধরে)
না আমার রাতের কাছে যেতে হবে ছড়েন আমাকে আমি রাতের কাছে যাবো।
অন্তুুঃ রাতের কাছে তোর এই জন্মে ফিরা হবে না ( বলে টানতে টানতে মেঘকে ভেতরে নিয়ে একরা রুমে লক করে দেয়)
মেঘঃ অন্তু ভাইয়া প্লিজ আমাকে রাতের কাছে যেতে দিন।
অন্তুু মেঘের পাশে বসে বলে
বললাম তো এই জীবনে আর ফিরা হবে না। আজ আমি এতো বছরের অপমান এর প্রতি সুদ নিবো।
মেঘঃ আপনার সাথে তো কোনো অন্যায় করা হয় নি আপনি ভুল করেছেন তাই শাস্তি পেয়েছেন আর একবার ভুল করেন নি বার বার করেছেন এর আগেও আমার সাথে খারাপ কিছু করতে চেয়েছেন।
অন্তুঃ এইবার শেষ বার আর এই বার ফাইনাল ঐ রাতের বাচ্চা কে আমি শেষ করে দিবো ওর জন্য আমি এতোটা বছর জেল খেটেছি।ঐদিন আমার প্লান টা ভুল ছিলো তাই মিসটেক হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু আজ আর ভুল হবে না।
মেঘঃ প্লিজ আমি অন্তঃসত্ত্বা আমার সাথে বাজে কিছু করবেন না প্লিজ( কান্না করতে করতে হাত জোর করে অনুরোধ করে মেঘ কিন্তু সয়তান বলে কথা একটুও মায়া দেখায় নি অন্তুু মেঘের উপর।
রাত অনবরত ফোন দিয়ে যাচ্ছে মেঘের ফোনে ফোন সুইচড অফ মনটা খুব সটফট করছে তাই বাসায় চলে আসে।
কিন্তু বাসায় এসে রাতের বুকের ভিতর টা ধক করে উঠে মেঘের ফোন টুকরো হয়ে ফ্লোরে পরে আছে।
বাহিরে বের হয়ে সবাইকে জিজ্ঞেস করে মেঘ কোথায় কিন্তু সবারি অজানা মেঘ কোথায়।
রাত মেঘকে খোজে না পেয়ে এক প্রকার পাগল প্রায়।
গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে পুলিশদের ইনফর্ম করে জানতে পারে অন্তুু জামিন এ ছাড়া পেয়ে বাহিরে এসেছে। মনের ভিতর আরো ভয় ডুকে যায়।
হ্যা এর আগেও অন্তুু মেঘের ক্ষতি করতে চেয়েছে কিন্তু রাতের জন্য পারে নি পুলিশ এর হাতে ধরিয়ে দিয়েছে কিন্তু রাতের মনে হচ্ছে তখন ঐ জানোয়ার টা কে মেরে ফেললে হয়তো আজ এমন পরিস্থিতিতে পরতে হতো না।
নিলয়,রৌদ্র চৌধুরী, রায়হান চৌধুরী ও রাতের সাথে পাগলের মতো খোজে বেড়াচ্ছে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল মেঘের কোনো সন্ধান নেই।
সবাই ব্যর্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসে।
সারাদিন এ রাতের মুখটা ফেকাসে হয়ে গিয়েছে এক ফোটা জলও খায় নি মেঘেকে হারানোর ভয় এ তার কিছু ভালো লাগছে না।
বাড়ির গেইট এর সামনে এসে দপ করে হাটু ঘেরে বসে পরে রাত, চিৎকার করে বলে পাখি প্লিজ তুই আমার কাছে ফিরে আয় তোকে না দেখে যে আমি থাকতে পারছি না খুব কষ্ট হচ্ছে পাখি খুব কষ্ট হচ্ছে। রাতের এমন চিৎকার এ সবাই গেইট এর সামনে এসে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে।
হটাৎ একটা গাড়ি এসে মেঘের রক্তাক্ত শরীরটি ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
মেঘের এই রকম অবস্থা দেখে সবার দেহ থেকে প্রানটা যেনো উড়ে চলে যাচ্ছে।
রাত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে হাতে পায়ে তার কোনো শক্তি নেই উঠে দাঁড়াতে পাড়ছে না সে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার পাখির দিকে।
রৌদ্র চৌধুরী, নিলয় গিয়ে মেঘকে ধরে।
শরীল বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে গলায়, মুখে নখের আচর ফর্সা সরিলটা লাল টকটকে হয়ে গিয়েছে।
নিলয়ঃ এই পেত্নী কি হইছে তোর উঠ উঠ না জগরা করবি না প্লিজ উঠ মামা মামা ওরে হসপিটালে নিতে হবে তাড়াতাড়ি করো।
রায়হান চৌধুরী মেঘেলার পর্লস চেক করে নিলয় কে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়।
রায়হান চৌধুরীঃ নিলয় মেঘালা আর নেই তোর সাথে আর কখনো জগরা করবে না।
রায়হান চৌধুরীর মুখে কথাটা শুনা মাত্র রাত দৌড়ে মেঘের কাছে আসে মেঘেক বুকে জড়িয়ে গালে হাত দিয়ে শক্ত গলায় বলে।
মেঘের কিছু হয় নি চাচ্চু মেঘ পাখি চোখ মেলে তাকাও তোমার রাতকে দেখো আমাদের বেবিটা কবে হবে পাখি আমাকে পাপা বলে ডাকবে তোমাকে আম্মু তাকাও পাখি, আমি খুব খুশি পাখি আমি বাবা হবো আর তো কয়টা মাস পাখি আমাদের বেবি আমাদের কোলে আসবে।
এই পাখি কথা বলছিস না কেনো কলিজা প্লিজ আমি সয্য করতে পারছি না চোখ মেলে তাকা বলছি( জোড়ে চিৎকার করে)
রাতের চিৎকার এ যেনো সবাই হো হো করে কেঁদে দেয়।
চৌধুরী বাড়ি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে, রাতকে কেউ ধরে রাখতে পারছে না রাতের সাথে প্রতিটা মানুষ পাগল এর মতো আচরণ করছে।
রাতঃ দিদুন ও দিদুন তোমার নাতনি কে উঠতে বলো না আমি যে ওর এই ঘুম আর নিতে পারছি না তোমার নাতনি আমাকে এতো কষ্ট কেনো দিচ্ছে।
নিলয়ঃ পেত্নী, রাক্ষসি উঠ না আমাকে বক আমাকে মারার জন্য আমার পিছু ছুটবি না প্লিজ উঠ না পেত্নী।
মেঘের নিথর দেহর সামনে নিলয় ক্রমাগত কথা গুলো বলে যাচ্ছে।
মুহূর্তের মাঝে চৌধুরী বাড়িতে শত মানুষের ঢল পরে যায়।
নীলা নিজের আপন বোনের মতো বোনকে হারিয়ে পাগল এর মতো কাঁদছে।
আকাশের নিজের কাছে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে অন্তুু মতো একটা জানোয়ার কে আকাশ বন্ধু বানিয়েছিলো ভাবতেও তার কষ্ট হচ্ছে।
সবাইকে সামলাতে পারলেও রাত কে কউকে সামলাতে পারছে না পাগল এর মতো কেঁদে চলছে।
মেঘের নিথর দেহটা এখনো বুকে জড়িয়ে রেখেছে শত চেস্টা করেও ছারাতে পারছে না।
পাখি পাখি এই পাখি উঠ না আমাকে রাত বলে ডাক কলিজা,আমি তোকে ছাড়বো না তুই তো বলেছিলি তুই আর আমি বৃদ্ধ বয়সেও এক সাথে হাঁটবো,তুই বুড়ি হবি আর আমি বুড়ো তাহলে কেনো আমার সাথে এমন করছিস তুই কি বুঝতে পারছিস পাখি আমার কত কষ্ট হচ্ছে।
তুহিনঃ রাত মেঘকে ছার ও নেই ও মরে গিয়েছে অন্তুুর মতো জানোয়ার মেঘলা কে মেরে ফেলেছে।
মুহূর্তে রাতের চোখ রাগে রক্ত বর্ন ধারন করলো।
মেঘকে ছেরে তুহিন এর গলা টিপে ধরে বলে তুই কি বললি আমার মেঘ মরে গিয়েছে, সব কয়টা কে মেরে ফেলবো।
রৌদ্র চৌধুরী কাউকে ইশারা দিয়ে মেঘের লাস নিয়ে যেতে বলে মেঘকে নিয়ে যেতে দেখে তুহিন কে ছেড় আবার মেঘের কাছে ছুটে যায় সবাইকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আবার মেঘকে আঁকড়ে ধরে।
আমি আমার পাখিকে কোথাও যেতে দিবো না আমার পাখি আমার সাথে থাকবে কেউ ওকে টাচ করবা না মেরে ফেলবো তাহলে অন্তুু অন্তু কেও আমি শেষ করে দিবো মেরে ফেলবো আমি সবাইলে মেরে ফেলবো। আমার পাখি ঘুমাচ্ছে কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে সাথে আমার বেবিটা ও ঘুমাচ্ছে পাপা এই পাপা আমি তোমার আম্মু আর তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না( মেঘের পেটের উপর হাত রেখে)
মেঘ উঠে আমার দিকে না মেঘ তোর রাত খুব ভালোবাসে তোকে খুব বেশি ভালোবাসে।
নিলয় এই নিলয় দেখ তোর পেত্নী রাক্ষসি বোনটা কেমন ভাবে ঘুমাচ্ছে, নিলয় আমার মেঘকে বল না আমার দিকে একটা বার তাকিয়ে দেখতে, বাবা চাচ্চু বলো না ও মা মা গো তোমার বউ মাকে বলো না উঠতে, পাপা পাপা এই পাপা তোর আম্মু কে বল ঘুম থেকে উঠতে তুই যে আমার কোলে আসবি কয়েকটা মাস পরেই আমাকে পাপা বলবি না আম্মু কে বল না পাপার দিকে তাকাতে।
রাতের পাগলামিতে সবাই মুখ চেপে কাঁদছে।একটা মানুষের চলে যাওয়াতে যেনো একটা পরিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে সব কিছু কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
একটা পরিবার এ একটা মানুষের গুরুত্ব অনেক বেশি হয়তো অনেক সময় আমরা তার গুরুত্ব বুঝি না কিন্তু চলে যাওয়ার পরে বুঝি যে গুরুত্বটা কত বেশি।
রৌদ্র চৌধুরী কোনো উপায় না পেয়ে রাতের অজান্তেই ডক্টর দিয়ে রাতের শরিলে সেন্সলেস এর ইনজেকশন পুস করে।
রাত চোখে ঝাপসা দেখছে হয়তো এই শেষবারের মতো তার পাখির মায়াবী রক্তাক্ত মুখটি দেখলো কিছুক্ষণ পরেই ঢলে পরে যায় মেঘের পাশে।
কিছু মহিলা এসে মেঘকে শেষ গোসলে নিয়ে য়ায় সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে নেয়।মুখে এখনো নখের আচর ভেসে আছে।
তখন নিজেকে বাঁচানোর অনেক চেস্টা করার পরেও পারে নি অন্তঃসত্ত্বা মেঘ নিজেকে এবং তার চার মাসের বেবিটাকে।
মেঘকে নিয়ে যাওয়া হবে অন্ধকার মাটির ঘড়ে রাখার জন্য।
নাহিদ আর তুহিন রাতকে বার বার ডাকে শেষ বারের মতো তার পাখির মুখটা দেখার জন্য।
রাত পিট পিট করে একবার তাকিয়ে মেঘের মুখে শেষ বারের মতো হাত ভুলিয়ে দেয়। চোখ বুঝে নেয় আবার সাথে সাথে চোখের কার্নিস ভেয়ে জল গড়িয়ে পরে কিন্তু নিজের শক্তি সব হারিয়ে ফেলছে রাত।
সবাই নিয়তির কাছে হার মেনে শেষ বিদায় দেয় মেঘলা কে, আজ সেও তার মায়ের কাছে চলে গেলো,নানুমনি তা সয্য করতে না পেরে বার বার সেন্স হারিয়ে ফেলছে।
________________________
রাতকে আজ পনেরো দিন যাবত ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হচ্ছে কোনো ভাবেই তাকে সামলানো যাচ্ছে না যখনি ঘুম ভাংগে তখনি ঘড়ের সব কিছু ভাংচুর করে মেঘে মেঘ বলে চিৎকার করে কাঁদে, এক প্রকার পাগল এর মতো হয়ে গেছে রাত, যে রাতকে দেখে মেয়েরা ক্রাস খেতে বাধ্য হতো সে রাতকে আজ চেনায় যায় না।
অন্তুকে পুলিশ গ্রেফতার করে কিন্তু তাতে কি রাত তো আর তার পাখিকে ফিরে পাবে না সে তো আর কখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে না, ফিরে আসবে না আর চৌধুরী বাড়ির আনন্দ মুহূর্ত গুলো, ফিরে আসবে না মেঘের পেটে থাকা রাতের বেবি, আমরা যা না ভাবি বা কখনো কল্পনাও করি না যে আমাদের জীবনে এমন কিছু ঘটবে যার ফলে এক নিমিষেই আমাদের জীবনের সব কিছু উলটপালট পায়ে যাবে।
এক মাস পর,
আজকের রাত আর এক মাস আগের রাত চৌধুরীর মাঝে অাকাশ পাতাল পার্থক্য, সুন্দর সিল্ক চুল গুলো এখন বড় বড়, স্টাইল করা দাঁড়ি গুলো ও বড় হয়ে গিয়েছে, তার রুমে শুধুই পাখির ছবি হে তার মেঘ পাখির ছবি,
পাখি এই পাখি তুই আমাকে ছেড়ে কেনো গেলি, এমন তো হওয়ার কথা ছিলো না, তুই আমাকে ফাকি দিয়ে চলে গেলি পাখি তোকে যে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি, পাখি আমিও তোর কাছে চলে আসবো খুব শিঘ্রই আসবো তকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না, তুই যে আমার প্রান।
রাত আজ উন্মাদ পাগল, সে তার মেঘকে বলেছিলো মেঘ যদি তাকে কখনো ছেড়ে চলে যায় সে পাগল হয়ে যাবে হে আজ সত্যি রাত উন্মাদ পাগল হয়ে গিয়েছে, বাড়ির প্রতিটা মানুষ আজ নিঃশ্ব।নিজেদের সন্তানের এমন শেষ হয়ে যাওয়া কোনো বাবা মা মানতে পারবে না রৌদ্র চৌধুরী এবং সাহেলা বেগম ও পারছেনা ছেলের শুক আর মেঘকে হারানোর শুক এ তারাও আজ নিঃশ্ব হয়ে পরেছে।
রাত পাগল হয়েও তার পাখিকে ভুলে নি হাতে পায়ে শিলল বাঁধা অবস্থায় ও মেঘের ছবি বুকে আকরে ধরে মরে যাওয়ার মতো বেঁচে আছে হয়তো একদিন রাতও চলে যাবে তার ভালোবাসার কাছে। হ্যা এমন ভালোবাসা শুধু #মনের_মতো_মন হলেই সম্ভব
-সমাপ্ত –
আমি জানি সবাই আমাকে বকবেন কিন্তু গল্পটা আমি প্রথম থেকেই চেয়েছি sade ending করতে,তাই সেইটাই করলাম।আসলে আমাদের জীবনে এমন কিছু গঠনা ঘটে যা আমরা কখনো কোনো দিন কল্পনাও করি না যে এমন কিছু হবে।আমরা কখনো কখনো ভাবি এই মানুষটাকে কখনো আমরা হারাতে পারবো নাা কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু বাস্তবতার কাছে হার মেনে আমরা তাঁকে সব কিছুর আগেই হারিয়ে ফেলি।
অন্যদিক দিয়ে দেখতে গেলে আমাদের দেশে ধর্ষন এর জন্য এমন অনেক ভালোবাসার মানুষকে আমরা হারাচ্ছি প্রতিনিয়ত। এমন অনেক পরিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে হার মেনে নিচ্ছে নিয়তির কাছে।যাইহোক গল্পটা হয়তো কোনো দিক দিয়েই বাস্তবতার সাথে মিল নেই কিন্তু এমন ভালোবাসা আমাদের পৃথিবীতে এখনো হয়তোবা আছে। শুধু দুজনের মনের মিল থাকলেই এমন ভালোবাসা হওয়া সম্ভব।
যারা নিরব পাঠক/পাঠিকা গল্প পরেছেন কিন্তু মন্তব্য করেন নি আশা করছি আজ এই গল্পের শেষে কিছু বলে যাবেন খারাপ বা ভালো গল্পটা যার যেমন লেগেছে তাই মন্তব্য করুন সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ।
_______ সমাপ্তি _______
Extra Part
#মনের_মতো_মন
#লেখিকাঃতোয়া_ইসলাম
#Extra_part
(রাত এবং মেঘলার ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো)
আমি তোমাকে কত বার বলেছি তুমি একা একা নিচে আসবে না তারপরও কেনো আমার কথা শুনলে না (রাত)
মেঘঃ সরি
রাতঃ সরি মাই ফুড তোর সাহস হয় কি করে আমার কথার অবাধ্য হওয়ার, যদি কিছু একটা হয়ে যেতো?
নানুমনিঃঃ আচ্ছা রাত এতো হাইপার হচ্ছিস কেনো দাদুভাই কিছু হয় নি তো মাথা ঠান্ডা কর। মেয়েটা সারা দিন রুমে থাকে বিকেলে একটু নিচে আসছে আর রাগ করিস না।
রাতঃ দিদুন তুমি বুঝতে পারছো যদি কোনো দুর্ঘঠনা ঘটে যেতো?
সাহেলা বেগমঃ তুই আসলেই রাত একটা ছোট বেপার নিয়ে এতো মাথা ঘামচ্ছিস কিছু তো হয় নি,মেয়েটা কাঁদছে না কাঁদালে ভালো লাগে না তোর সয়তান ছেলে একটা আজ থেকে মেঘলা কে তোর কাছে দিবো না আমার কাছে রেখে দিবো।
রাত মাকে কোনো কিছু না বলে মেঘকে সোজা সবার সামনে কোলে নিয়ে কপালে একটা চুমু একে দিয়ে মায়ের উদ্দেশ্য বললো আমার বউ আর বেবি আমার কাছেই থাকবে। ( বলে মেঘকে নিয়ে হাঁটা শুরু করে)
উপস্থিত সবাই রাতের কান্ড দেখে হাহাহাহা করে হেসে দেয়।
মেঘ অভিমান করে মুখ ফুলিয়ে রেখেছে।
সারা দিন রুমে থাকতে থাকতে বোর হয়ে গিয়েছিলো তাই বিকেলে একটু সবার সাথে কথা বলার জন্য ড্রয়িং রুমে গিয়েছিলো আর তখনি রাত এসে পরে,মেঘকে নিচে দেখে রেগে আগুন হয়ে যায়।
রাত মেঘকে রুমে এনে খাটে সোয়ে দেয়।
কিন্তু মেঘ মুখ ফুলিয়ে কপাল কুঁচকে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।
রাতঃ সরি পাখি।
মেঘঃ………
রাতঃ ও পাখি সরি তোমাকে নিচে দেখে মাথা ঠিক ছিলো না কলিজা তাকাও আমার দিকে।
মেঘঃ……….
রাতঃ সরি বললাম তো, এই পাপা তোমার আম্মুকে বলো না আমার সাথে রাগ করতে না দেখো না কেমন মুখ গোমড়া করে আছে, জানো পাপা তোমার আম্মুকে না রাগ করলে এত্তো কিউট লাগে ইচ্ছে করে সারাদিন চুমু খাই।( মেঘের পেটের কাছে এসে)
মেঘ রাতের কথায় রাতের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়।
রাত সয়তানি হাসি দিয়ে ঠোঁট দিয়ে ফ্লাইং কিস দেখায় মেঘ মুখ ভেংচি কেটে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়।
রাতঃ আমি একটু বকেছি তুমি ভুল করেছো তাই কিন্তু বকার থেকে তো রাগ অনক বেশি করছো পাখি আচ্ছা এই দেখো কানে ধরেছি আর কখনো বকবো না আমার পাখিটাকে আমার পাপার আম্মুটাকে, আচ্ছা দেখো কানে ধরে ওঠবস করছি ( মেঘের সামনে কানে ধরে ওঠবস করতে থাকে)
মেঘ রাতের কান্ড দেখে ফিক করে হেসে দেয়।
রাত মেঘের হাসি দেখে নিজের প্রাণ ফিরে পায় এবং মেঘকে বুকে জড়িয়ে নেয়।
রাতঃ তোমাকে নিয়ে আমার অনেক ভয় হয় পাখি, আমি অফিস থাকি কিন্তু আমার মনটা আমার কলিজার কাছে থাকে তুমি জানো তোমাকে বাসায় রেখে যেতে আমার কত কষ্ট হয়, কতটা টেনশনে থাকি?
মেঘঃ বাসায় এতো গুলো মানুষ আছে তারপরও তুমি কেনো টেনশন করো বলো তো?
রাতঃ সেইটা তুমি বুঝবা না পাখি, আমার পাখিটাকে বুকে নিয়ে এখন কতটা শান্তি লাগছে যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো নারে পাখি খুব ভালোবাসি তোকে আমি খুব বেশি।
মেঘ রাতের কথা শুনে নিঃশব্দে হেসে রাতের বুকে আরো নিবিড় ভাবে জায়গা করে নেয়।রাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মেঘের কপালে গভীর চুমু একে দেয়।
রাত যে-দিন এর জন্য ভয় পাচ্ছিলো আজ সেইদিন চলে এসেছে,
মেঘ রুমে সোয়ে ছিলো একটা হালকা বেথা বেথা অনুভব হচ্ছে কিন্তু কাউকে বলে নি, কিন্তু এখন যেনো বেথার তিব্রতা বেড়েই চলছে,মামনিরা এতো সময় মেঘের রুমেই ছিলো একটু আগেই চলে গেলো।
উঠে ডাকার শক্তিও পাচ্ছিলো না,
কি করবো আল্লাহ রাত কে ফোন দিলেও ও টেনশন করবে।
আচ্ছা আমি মামনী কে ফোন দেই।
মেঘ মোবাইলটা নিয়ে মিন্নী বেগম কে ফোন দেয়।
মেঘের ফোন পেয়ে মিন্নী বেগম আন্দাজ করতে পারে হয়তো মেঘলার খারাপ লাগছে দৌড়ে মেঘের রুমে চলে আসে।
বিছানায় মেঘ বেথায় কাতরাচ্ছে।
মিন্নী বেগমঃ মেঘলা মামনি তুই ঠিক আছিস?
মেঘলাঃ মামনি খুব বেথা হচ্ছে আমি সয্য করতে পারছি না মামনি ( কান্না করতে করতে)
মিন্নী বেগম সাথে সাথে সবাইকে ডাকে নিলয় বাসায় ছিলো তাই সে রাত কে ফোন দিয়ে সবটা জানায় যে মেঘকে নিয়ে হসপিটাল এ যাচ্ছে তারা, রাত যেনো তাড়াতাড়ি চলে আসে।
মেঘের এমন কথা শুনে রাতের যেনো মাথায় আকাশ ভেঙে পরে তাড়াতাড়ি গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরে।
মেঘ গাড়িতে বেথায় কাঁদছে।
অন্যদিকে রাত বার বার ফোন দিয়েই যাচ্ছে।
রাতঃ নিলয় আমার পাখি আমার পাখি ঠিক আছে তো তোরা কেনো আসছিস না আমি হসপিটালে চলে এসেছি প্লিজ ভাই তাড়াতাড়ি আয়।
নিলয়ঃ ভাইয়া তুমি টেনশন করো না এইতো আমরা চলে এসেছি দুই মিনিট আর।
নিলয়দের গাড়ি এসে হসপিটালের সামনে থামে রাত পাগল এর মতো ছোটে যায় মেঘকে জড়িয়ে ধরে।
রাতঃ এই পাখি তোর খুব কষ্ট হচ্ছে খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না, আমি তো এর জন্য তোকে না বলেছিলাম পাখি। ( কাঁদো কাঁদো স্বরে)
নার্সঃ স্যার উনাকে নিতে দিন তাড়াতাড়ি।
রাত নার্স এর কথায় সম্মতি জানায় মেঘকে নিয়ে যায় রাত সহ সবাই পিছু যায়।
অপারেশন থ্রিয়েটার এর সামনে গিয়ে ডক্টর রাত কে থামিয়ে দিয়ে বলে,
সরি মিস্টার রাত আপনি ভিতরে যেতে পারবনে মা।
রাতঃ আমি আমার পাখি কে একা ছাড়বো না ওর খুব কষ্ট হচ্ছে।
রৌদ্র চৌধুরীঃ রাত বাবা শান্ত হ মেঘলার কিছু হবে না আল্লাহর উপর ভরসা রাখ বাবা।
রাত বাবাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কেঁদে দেয়।
রৌদ্র চৌধুরী রাতকে একটা চেয়ার এ বসিয়ে দেয়।
কিন্তু রাতের মন সটফট করছে নিজেকে স্থির রাখতে পারছে না একবার অপারেশন থ্রিয়েটার এর সামনে যায় তো আবার চেয়ারে এসে মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে। পাগল এর মতো করছে আর আল্লাহকে ডাকছে।
প্রায় ১ ঘন্টা পর।
একটা নার্স এসে রাতের উদ্দেশ্য বলে,
মিস্টার রাত চৌধুরী কংগ্রাচুলেশনস আপনার ছেলে বেবি হয়েছে।
নার্স এর কথায় সবার মুখে হাসি ফুটে উঠলেও রাত হাসতে পারছে না, কারন তার পাখি এখন কেমন আছে ও ঠিক আছে তো।
রাতঃ আমার মেঘ ঠিক আছে তো?
তখনি ডক্টর বেড়িয়ে এসে বলে,
জি মিস্টার রাত চৌধুরী আপনার মেঘ সম্পূর্ণ সুস্থ কিন্তু তাকে এখন অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
রাতঃ ডক্টর আমি দেখবো প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
ডক্টরঃ আরে আগে ছেলে কে কোলে তো নিন।
রাত ছেলের দিকে একবার তাকিয়ে আবার ডক্টর কে বলে প্লিজ ডক্টর আমাকে মেঘের কাছে যেতে দিন।
ডক্টরঃ ওকে যেতে পারেন তবে কোনো ভাবে রোগিকে ডিস্টার্ব করা যাবে না চুপচাপ বসে থাকবেন।
রাত আর এক মুহূর্ত দাঁড়ায় না দ্রুত পায়ে হেটে মেঘের পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে থাকে।
রাত এক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে, আর বার বার নিজের চোখের জল মুছে নিচ্ছে।
এই দুই ঘন্টায় রাতের চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে চুল গুলো এলোমেলো হয়ে কপালে লেপ্টে আছে। চোখ দিয়ে অনবরত জল গড়িয়ে পরছে।
মেঘের একটা হাত নিয়ে নিজের দুহাতে চেপে ধরে রাখে বার বার চুমু খায় হাতে।
কিছুক্ষণ পরে মেঘের সেন্স ফিরে আসে, টিপ টিপ করে পাশে থাকা লোকটার দিকে তাকায়।
মেঘঃ কি অবস্থা করেছো নিজের ( আস্তে আস্তে নরম স্বরে)
মেঘের কন্ঠ শুনে রাতের বুকের ভিতর দক করে উঠে উত্তেজিত হয়ে মেঘকে বলে।
পাখি এই পাখি তুই ঠিক আছিস, অনেক কষ্ট হয়েছে তোর তাই না, এখনো কষ্ট হচ্ছে। আমি চাই নি তোর কাছে বেবি আমি আমার পাখিকে কষ্ট দিয়ে তো বাবা হতে চাই নি কলিজা অনেক বেশি কষ্ট হয়েছে। ( রাত আবারও বাচ্চাদের মতো কাঁদতে থাকে)
মেঘ একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে রাত কে বলে।
আমি একদম ঠিক আছি, আমার কোনো কষ্ট হয় নি তুমি শুধু শুধু এমন করছো,আচ্ছা তুমি মনে হয় আমার বেবিটাকে কোলেও নেও নি তাই না?
রাতঃ আমি কি ভাবে নিবো আমার প্রাণটা কষ্টে সটফট করছে তাকে ছেড়ে আমি কি ভাবে আমাদের বেবিকে আদর করবো?
মেঘঃ কাছে এসো।
রাত মেঘের দিকে একটু ঝোঁকে বলে
হুম
মেঘঃ আরো একটু কাছে আসো।
রাত এবার মেঘের অনেক কাছে যায়।
মেঘ নিজের এক হাত রাতের চুলের ভাজে রেখে কপালে একটা গভীর চুমু একে দিয়ে বলে,
এতো ভালোবাসা কেনো তুমি আমাকে?
রাতঃ তুমি বুঝবা না, আর আমিও বুঝি না এতো কেনো ভালোবাসি ( বেবি ফেস করে কথাটা বলে রাত)
মেঘ ফিক করে হেঁসে দেয় সাথে রাতও হেসে মাথা চুলকায়।
নিলয়ঃ তোমাদের রোমান্স আর শেষ হবে হসপিটালে এসেও শুরু করে দিয়েছো। ( বেবিকে কোলে নিয়ে রুমে প্রবেশ করতে করতে নিলয় কথাটা বলে)
নিলয় এর সাথে সবাই রুমে চলে আসে।
মেঘ নিলয় এর কথায় একটা লজ্জামাখা হাসি দেয়।
রাত বেবিটাকে কোলে নিয়ে মেঘের পাশে সোয়ে দেয়।
বেবিটা একদম রাতের ফটোকপি হয়েছে, রাত সবার সামনেই মেঘের কপালে চুমু দিয়ে আবার বেবিকে চুমু দেয়।
____________________________
পাঁচ বছর পর,
রাত ছারো কি হচ্ছে টাকি সব সময় এমন লুচুমি করো কেনো রাফসান এর লেট হয়ে যাবে স্কুল যেতে আর তুমিও তো আফিস যাবে।
রাতঃ তুমি রান্না করতে কেনো আসো বাড়িতে রান্নার লোকের কি অভাব পরেছে। ( মেঘকে পেছন থেকে জড়িয়ে ঘাড়ে ঠোঁট ভুলাতে ভুলাতে)
মেঘঃ আমি আমার বেবিকে আর বর কে রান্না করে খাওয়াবো অন্য কেউ কেনো খাওয়াবে?
রাতঃ তুমি সকলে আমাকে আদর না করেই চলে এসেছো এখন এটা সুদে আসলে সুদ করবো।
মেঘঃ কিন্তু রাত………
মেঘ আর কিছু বলতে পারে না রাত তার আগেই মেঘের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়, নিজের মতো করে মেঘের ঠোঁটের সাধ নিতে থাকে। মেঘ ও কোনো উপায় না পেয়ে রাতের সাথে তাল মেলাতে থাকে।
রাতের ইচ্ছে করছে মেঘের মাঝে ডুবে যেতে ঠোঁট ছেড়ে মেঘকে পেছন থেকে জড়িয়ে ঘাড়ে নিজের ঠোঁট দিয়ে অনবরত কিস করতে থাকে।
মেঘ কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
রাত লক্ষিটি আমার এবার ছাড়ো এইটা কিচেন যে কেউ চলে আসবে ছারো লক্ষিটি আমার।
রাত নেশা বরা কন্ঠে বলে ইচ্ছে করছে না পাখি আরো আদর করতে ইচ্ছে করছে।
মেঘঃ এবার কিন্তু আমি রেগে যাবো তুমি যাবা( রাগী স্বরে)
রাতঃ যাচ্ছি যাচ্ছি করবো না আর আদর তোমাকে আদর না করলে কি হবে আবার ( একটা ভাব নিয়ে কিচেন থেকে বেড়িয়ে যায়)
মেঘ হাহাহা করে হাসতে থাকে।
রাত আবার কিচেনে ডুকে মেঘের গালে একটা চুমু একে দৌড়ে চলে যায়।
মেঘ হাসতে হাসতে বলে পাগল একটা।
এইভাবেই চলতে থাকে মেঘ রাতের ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো।
______________________________
সবাই মন খারাপ করেছেন সেড এন্ডিং এর জন্য তাই আপনাদের মন ভালো করার জন্য রাত মেঘের কিছু রোমান্টিক মুহূর্ত শেয়ার করলাম