#নীল চিরকুট
#লেখনীতে- নৌশিন আহমেদ রোদেলা
২৫.
নম্রতা-নীরা শীট-নোট কালেক্ট করে লাইব্রেরি থেকে যখন বেরুলো তখন দুপুর দুটো বাজে। দু’জনের শরীরই তখন ক্লান্ত, অবিশ্রান্ত। নীরা অস্বস্তি নিয়ে বিরবির করল,
‘ অন্তুর কোনো খবর পাওয়া গেল না, না?’
নম্রতা উদাস কন্ঠে বলল,
‘ পাওয়া গেল না তো। এখন তো ফোনও বন্ধ দেখাচ্ছে। চিন্তা করিস না, নাদিম-রঞ্জন খুঁজছে। পেয়ে যাবে।’
নীরা উত্তর দিল না। অতি সন্তপর্ণে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলল,
‘ তোর পত্রপ্রেমিকের কথা কি ভাবলি?’
‘পত্রপ্রেমিক’ শব্দটা শুনতেই ভেতর-বাহির নেচে উঠল নম্রতার। চোখদুটো চকচক করে উঠল। নীরা আবারও বলল,
‘ বিলিভ মি, দোস্ত। ডক্টর আরফান তোর পত্রপ্রেমিক তা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। এই লোকের পক্ষে চিঠিপত্র লেখা আদৌ সম্ভব?’
নম্রতা জবাব দিল না। আরফানের কথাটা মনে হতেই মন খারাপ লাগছে তার। আরফান আর সে দুজনকে তার দুই মেরুর মানুষ বলে মনে হচ্ছে। ‘সে’ তো চিঠিতে অতোটাও গম্ভীর ছিল না। তবে আরফান এতো গম্ভীর কেন? বাকিটা পথ দুজনের কেউই তেমন কথা বলল না। ক্যান্টিনে পৌঁছে হালকা কিছু অর্ডার করতেই কোথা থেকে উড়ে এলো নাদিম। চির পরিচিত গিটারটা এখনও ঝুলছে কাঁধে। গায়ে থাকা বাদামী শার্টটা ঘামে ল্যাপ্টে আছে বুকে। নম্রতার মুখোমুখি একটা চেয়ার টেনে ধুম করে বসে পড়লো নাদিম। তারপাশে বসল ক্লান্ত রঞ্জন। ছোঁয়া এলো আরও দশ/পনেরো মিনিট পর। হাতভর্তি বই নিয়ে টালমাটাল পায়ে টেবিলের সামনে দাঁড়াল সে। বিস্তর সরল হাসি দিয়ে বলল,
‘ নীলক্ষেত থেকে কিনে আনলাম এগুলো। কখন যে পড়ে শেষ করব সব।’
ছোঁয়ার কথার জবাবে কেউ কিছু বলল না। ছোঁয়ার এই অভ্যাসটা পুরোনো। পরীক্ষার আগে আগে স্যারের হাতে, টেবিলে, মুখে যত বইয়ের নাম শুনেছে বা দেখেছে সব কিনে এনে টেবিল বোঝাই করাই তার স্বভাব। তারপর রাতদিন এক করে একটা বইও শেষ করতে না পেরে ডিপ্রেশনে চলে যাওয়াটাও তার অন্যতম স্বভাব। নাদিম মুখে এসে যাওয়া কথাগুলো গিলে নিয়ে খাবার অর্ডার করতে গেল। সারাদিনের ব্যস্ততায় এক মুঠো ভাত খাওয়ারও সময় হয়নি তাদের। ট্রে ভর্তি ভাত, আলু ভর্তা আর ডাল এনেই ব্যস্ত ভঙ্গিতে খেতে শুরু করল সে। রঞ্জন ধীরস্থিরে নিজের প্লেটটা এগিয়ে নিল। টানা দশ মিনিট বিনাবাক্য ব্যয়ে খেয়ে চলল নাদিম। তারপর হুট করেই বলল,
‘ তোর ওই ধাক্কা আরফানকে দেখলাম রে নমু। তোগো মধ্যে প্রেম-পিরিতি হইয়া গেল না তো আবার?’
নাদিমের কথায় চমকে উঠল নম্রতা। টেবিলের ওপর ঝুঁকে কপাল কুঁচকাল,
‘ দেখলি? কোথায় দেখলি ওকে?’
নম্রতার উৎসাহে অবাক হলো নাদিম। সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকাল,
‘ কোথায় আবার? ভার্সিটিতেই তো দেখলাম। আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকেই বের হলো। ওই টাকলা স্যারও ছিল সাথে।’
নম্রতার মনে দুমুখো অনুভূতির জোয়ার ছুটলো। ‘আরফান তার খুঁজেই হয়ত এসেছিল’, এমন ভাবনায় খুশি হয়ে উঠল মন। পরমুহূ্র্তেই অদ্ভুত এক অস্বস্তি দানা বাঁধলো বুকে । নম্রতার ভাবের এই পরিবর্তন চোখ এড়াল না নাদিমের। খাওয়া থামিয়ে কপাল কুঁচকে তাকাল। সন্দিহান কন্ঠে বলল,
‘তোর ভাবভঙ্গি তো সুবিধার মনে হচ্ছে না রে মামা। কাহিনী কী? এমনে তো ডাক্তারের নাম শুনেই চিরিক মাইরা উঠো। আজ আবহাওয়া এতো ঠান্ডা কেমনে?’
নাদিমের কথায় অত্যন্ত ভাবুক কণ্ঠে প্রশ্ন করল ছোঁয়া,
‘হেই গাইস? হোয়াট ইজ চিরিক?’
ছোঁয়ার কথায় মেজাজ চটে গেল নাদিমের। ভীষণ বিরক্তি নিয়ে বলল,
‘তুই আবারও আমার মান্ধাতার আমলের মেজাজটা খিঁচড়ে দিলি বাল। দ্যাখ, আমি আজকে বিরাট সিরিয়াস। এই সিরিয়াস মেজাজটা খিঁচড়ে দিলে তোর খবর খারাপ।’
‘স্ট্রেঞ্জ! আমি আবার কী করলাম? আই ওয়াজ জাস্ট আসকিং……’
‘তোর আসকিং-এর ……’
নাদিমকে কথা শেষ করতে না দিয়েই বিরক্তির শিষ তুলল নম্রতা। বিরক্ত হয়ে বলল,
‘আহ্, থামবি তোরা?ডক্টর আরফান এখানে কেন এসেছিল সেটা বল।’
নাদিম চোখ ছোট ছোট করে বলল,
‘তুই আগে তোর কাহিনী বল। ওই ধাক্কা আরফানের জন্য তোর এতো নৃত্য করার কারণ কী? হুম হুম?’
কথাটা বলে ভ্রু নাঁচাল নাদিম। নম্রতা আমতা-আমতা করে কিছু বলার প্রস্তুতি নিতেই পাশ থেকে বিরস কন্ঠে বলে উঠল নীরা,
‘ ওর জন্য নৃত্য করবে না তো কার জন্য করবে? ওই ধাক্কাধাক্কিই তাহার পত্রপ্রেমিক মামা।’
নাদিম নীরার কথাকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে বলল,
‘ কি? পত্রপ্রেমিক বলতে?’
নীরা ভাবলেশহীন কন্ঠে বলল,
‘ যে প্রেমিক পত্রের মাধ্যমে প্রেম করে তাকে পত্র প্রেমিক বলে।’
নীরার কথা বলার ভঙ্গি ভাবলেশহীন হলেও বাকিদের চোখ চড়কগাছ। কয়েক মিনিট কেউ কোনো কথা বলতে পারল না। নাদিম খাবার মুখে তুলতে ভুলে গেল। তারপর নিতান্তই তাচ্ছিল্যের সাথে বলল,
‘ আজাইরা। আমি জিন্দেগীতে বিশ্বাস করি না। এটাও সম্ভব?’
নীরা বিরক্ত হয়ে বলল,
‘ আমারও বিশ্বাস করতে বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু সত্যিটা তাই।’
রঞ্জন বলল,
‘ এই ছোট্ট ছোট্ট ঘটনাগুলো কি তবে নিতান্তই কাকতালীয়? এতো কাকতালীয় ঘটনাও পৃথিবীতে ঘটে? আশ্চর্য!’
‘ ঘটবে না কেন? আমার কি মনে হয় জানিস? ‘The whole world is a fair of coincidences’ আমাদের বেঁচে থাকাটাও বোধহয় একটা কাকতালীয় ব্যপার।’
ছোঁয়ার কথায় সরু চোখে তাকাল নাদিম। তবে কোনোরূপ ধমকা-ধমকি না করে অবিশ্বাসী কন্ঠে বলল,
‘ তোরা মাইয়ারা দেখি হেব্বি চালু। চিঠি চিঠি খেলেও রাঘব বোয়াল ক্যাচ করে ফেলছিস। মাই গড! আমি চিঠি লিখলে নির্ঘাত এই ছোঁইয়ার মতো মাথা পাগল, ছিট খাওরা, অশিক্ষিত, গাঞ্জাখোর মাইয়া জুটতো।’
ছোঁয়া চেতে উঠে বলল,
‘ এই তুই কী আমাকে গালি দিচ্ছিস? হুয়াই আর ইউ ইনসাল্টিং মি?’
নাদিম আর ছোঁয়ার কথা কাটাকাটির মাঝপথেই ফোন এলো রঞ্জনের। ফোনে কথা বলা শেষে স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। রঞ্জনের ফ্যাকাশে মুখ দেখে ভেতর ভেতর খানিকা চিন্তিত হলেও বরাবরের মতো ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ল নাদিম,
‘ কি হইছে? ফোনে কথা বইলাই এমন মটকা মারলি ক্যান?’
রঞ্জন নাদিমের দিকে তাকাল। বার কয়েক ঢোক গিলে নিয়ে অত্যন্ত শুকনো কন্ঠে বলল,
‘ অন্তু হাসপাতালে।’
এই দুটো শব্দেই হাত-পা অসাড় হয়ে এলো নীরার। বাকিরাও স্তব্ধ অবিশ্বাস নিয়ে চেয়ে রইল রঞ্জনের মুখপানে। সবসময় কুল থাকা নাদিমের কপালেও দেখা দিল মৃদু ঘাম। স্পষ্ট কন্ঠটা একটু কেঁপে উঠল তার,
‘ কোন হাসপাতাল?’
‘ মেডিক্যাল।’
কাউকে কিছু বলতে হলো না। বুঝিয়ে দিতে হলো না। পাঁচ জোড়া পা কোনো আলাপচারিতা ছাড়াই দৌঁড়ে বেরিয়ে গেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। টেবিলে পড়ে রইল আধ খাওয়া খাবার। পরীক্ষার নোট। ছোঁয়ার এক গাদা বই। গরমের জন্য খোলে রাখা নাদিমের জুতো জুড়োও। ক্যান্টিনের বাকি মানুষগুলো বিস্ময় নিয়ে খেয়াল করল, পাঁচজন যুবক-যুবতি দিগবিদিক ছুঁটে চলেছে। চোখে মুখে তাদের একই দ্যুতি। একই ভয়।
প্রচন্ড মেজাজ খারাপ নিয়ে রোগীর সামনে বসে আছে আরফান। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, আজ আর রোগী দেখবে না। এটাই শেষ। তারপর সোজা বাড়ি। শারীরিক পরিশ্রম, মানসিক চাপ সব মিলিয়ে কেমন দমবন্ধ লাগছে তার। এভাবে আসলে বাঁচা যায় না। রোগীর সব কথা ঠিকঠাক না শুনেই কাগজ টেনে প্রেসক্রিপশন লিখল আরফান। প্রেসক্রিপশনটা এগিয়ে দিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
‘ এই মেডিসিনগুলো এক সপ্তাহ ঠিকঠাক খান। এক সপ্তাহ পর আবার আসবেন।’
আরফানের কাট কাট কথায় নতুন করে কিছু বলার সাহস পেলো না আগুন্তকঃ। প্রেসক্রিপশনটা হাতে নিয়ে মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানাল। তারপর ধীর পায়ে বেরিয়ে গেল। আরফান ডানহাতে কপাল চেপে চেয়ারে ঠেস দিয়ে বসল। বিরক্তি আর রাগে মাথাটা ধপধপ করছে তার। পুরো পৃথিবীটাকে ভেঙে গুড়িয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। বিয়ে করছে! বিয়ে করছে মানে কী? মন চাইল আর বিয়ে করে ফেলল? বিয়ে কী মামার বাড়ির মোয়া? বিয়ের আনন্দে আরফানের সাথে পাঁচ মিনিটের জন্য কথা বলতে পারছে না? আরফানকে এই মারপ্যাঁচ, এই মানসিক অশান্তিতে রেখে কিভাবে বিয়ে করে ফেলতে পারে সে? সবকিছু এতো সোজা? দরকার পড়লে কিডন্যাপ করে হাত-পা বেঁধে সামনে বসিয়ে রাখবে। এই ধাঁধা থেকে মুক্তি না দিয়ে যাবে কোথায় এই মেয়ে? আরফান যা ভাবছে তাই যদি হয় তাহলে তো সারা জীবনেও ছাড়বে না তাকে। থাকতে না চাইলে, জোর করে রাখবে। আরফান চোয়াল শক্ত রেখেই ঘড়ির দিকে তাকাল, চারটা বিশ। চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতেই দরজায় কড়া নড়ল। আরফান ফিরে তাকাতেই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো ওয়ার্ড বয়। আরফানের কপাল কুঁচকে এলো। ভ্রু বাঁকিয়ে তেঁতো মুখে বলল,
‘ কিছু বলবে?’
ওয়ার্ড বয় মুখ কাঁচুমাচু করে বলল,
‘ স্যার ইমার্জেন্সির একটা প্যাশেন্টকে ঘন্টাদুই আগে কেবিনে দেওয়া হয়েছে।’
‘ তো?’
আরফানের থমথমে মুখ দেখে বাকিটা বলার ভরসা পেলো না ওয়ার্ড বয়। বার কয়েক ঢোক গিলে বলল,
‘ জি স্যার। আসলে…’
আরফান ধীরে অথচ শক্ত কন্ঠে বলল,
‘ যা বলার স্পষ্ট বলো। কি বলতে চাও?’
‘ রোগীর বাড়ির লোকরা ভীষণ হল্লা করছে। কেবিনে দেওয়ার পর আর কোনো ডাক্তার দেখেনি তাকে। আপনি যদি একটু দেখতেন। মুনতাসীর স্যার আপনার কথায় বলে গিয়েছে। ‘
আরফান মাত্রাতিরিক্ত বিরক্ত হয়ে বলল,
‘ বলে গিয়েছে মানে কী? এখন কি আমার ডিউটি? উনি নিজের ডিউটিটাও ঠিকমতো করতে পারেন না? আর আমিই কেন? হাসপাতালের সব ডাক্তার কি মারা গিয়েছে?’
ওয়ার্ড বয়ের মুখ ইতোমধ্যেই ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছি। সবসময় শান্ত, রাগহীন মানুষটির কন্ঠে স্পষ্ট রাগ ঝরতে দেখে আতঙ্কে অস্থির হয়ে উঠছে সে। আরফান খুব দ্রুত সামলে নিল নিজেকে। দুপুরের পর থেকে কিছুতেই রাগ কনট্রোলে রাখা যাচ্ছে না। হুটহাট রেগে যাচ্ছে। আর রেগে গেলেই সামনের মানুষগুলোকে কঠিন কিছু কথা শোনাতে ইচ্ছে করছে। আরফান গাল ফুলিয়ে শ্বাস নিয়ে মৃদু কন্ঠে বলল,
‘ তুমি যাও। আমি আসছি।’
ওয়ার্ড বয় যেন দেহে প্রাণ পেল। অনুমতি পেয়েই একরকম ছুটে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। আরফান তপ্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্টেথোস্কোপ হাতে বেরিয়ে গেল। নির্দিষ্ট কেবিনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে তার মনে হলো, চিকিৎসকের মতো বিশ্রী পেশা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। আর এই মুহূর্তে নিজের পেশার প্রতিই প্রচন্ড রকম বিরক্ত সে। নির্দিষ্ট কেবিনের সামনে এসেই হঠাৎ থমকে গেল আরফানের পা। করিডোরের চেয়ারে বসে থাকা চিন্তারত মেয়েটিকে দেখে কপালে থাকা বিরক্তির ভাঁজগুলো মিলিয়ে গেল মুহূর্তেই। বুকেজুড়ে ঠান্ডা পরশ বয়ে গেল। টগবগ করতে থাকা রাগগুলো কেমন থিতিয়ে গেল। চোখের দৃষ্টি এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে স্থির হয়ে গেল মেয়েটির পায়ে। কিন্তু হায়! মেয়েটির পা’জোড়া ঢেকে আছে কালো কাপড়ের নান্দনিক শো-জুতোই। আরফান হতাশ চোখে চেয়ে রইল জুতোই ঢাকা পা-জোড়ার দিকে। নম্রতা দুই হাতে কপাল চেপে বসে ছিল। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের দেওয়া সতর্ক বার্তায় চোখ তুলে তাকাতেই চমকে উঠল। আরফানকে নিবিষ্ট চোখে জুতো জোড়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করল সে। কিছুক্ষণ কাঁচুমাচু করে এখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই চোখ তুলে তাকাল আরফান। তার গম্ভীর,শান্ত কন্ঠে এবার খানিক চঞ্চলতা খেলে গেল।
‘ আপনি না বিয়ের শপিং-এ যান? তাহলে এখানে কি?’
‘ প্রয়োজন তাই।’
‘ ভেতরে কে? আপনার প্যাশেন্ট?’
নম্রতা মুখ কালো করে বলল,
‘ হুম। আমার ফ্রেন্ড।’
আরফান ভিন্ন ভঙ্গিতে ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘ ওহ!’
এটুকু বলে থামল আরফান। পকেটে হাত ঢুকিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল। এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফিরিয়ে ছোট্ট শ্বাস ফেলল। ঘাড়টা হালকা কাত করে বলল,
‘ কতক্ষণ থাকছেন?’
নম্রতা মুখ গুম করে উত্তর দিল,
‘ জানি না।’
আরফান অদ্ভুত কর্তৃত্বের স্বরে বলল,
‘ আমি না ফেরা পর্যন্ত এখানেই থাকবেন। কথা আছে। আমি আপনার ফ্রেন্ডকে দেখে আসছি। ফিরে এসে না পেলে খবর আছে।’
আরফানের মৃদু ধমকীতে চোয়াল ঝুলে পড়ার জোগার হলো নম্রতার। পাশে বসে থাকা ছোঁয়া চশমার উপর দিয়ে চোখ বড় বড় করে চেয়ে রইল। আরফান যখন কেবিনের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো। আরফানের লোমশ পুরুষালী হাত। ওই স্নিগ্ধ, গম্ভীর মুখখানা দেখে নম্রতার প্রথমবারের মতো মনে হলো, ‘ লোকটা দেখতে ততটাও খারাপ নয় বরং অদ্ভুত সুন্দর। ভীষণ ভীষণ সুন্দর।’
#চলবে…
[ ব্যস্ততার চাপে বিশাল বিশাল পর্বগুলো দিতে পারছি না। ]