#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_৩২
( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )
৩৫.
দুপুরে বাড়ি ফেরা হয়নি তুর্যের। তাই রাতে কাজ শেষ করে একটু তাড়াতাড়িই বাড়ি ফেরার চেষ্টায় নেমেছে সে। পৃথার সাথে সারাদিন কথা হয়নি একটুও। একটা বারের জন্যও মেয়েটার ঐ সুমিষ্টি কন্ঠস্বরটা শোনা হয়নি। এই টুকু মাত্র সময়। এর মধ্যেই তুর্যের মনে হচ্ছে যেন কতশত বছর ধরে পৃথার কন্ঠ শুনছে না সে, দেখছে না মেয়েটার মায়াবী মুখ খানা। ছটফট করছে হৃদয়। একটু কল করে যে মেয়েটার সাথে কথা বলবে তারও উপায় নেই। মোবাইলই তো নেই পৃথার। যদিও সে চাইলেই বাড়ির অন্য কারো নাম্বারে কল করে পৃথার সাথে কথা বলতে চাইতে পারতো। কিন্তু এদের তো বিশ্বাস নেই কোনো। সব বি’শ্বা’স’ঘা’ত’ক এবং ঘষেটি বেগমের বংশধর। হতে পারে সে কল করলে এরা পৃথার সাথে কথা বলতে তো দিবেই না উল্টো এই কথা বলা, কথা বলা নিয়ে নাজেহাল করে ছাড়বে তাকে। তাই আর কারো নাম্বারে কল করেনি তুর্য।
রাত বেশি নয়, ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক ধ্বনি তুলে জানান দিচ্ছে রাত কেবল আটটা। তুর্য আজকের মতো নিজের সকল কাজের অবসান ঘটিয়ে বাড়িতে ঢুকলো। বসার কক্ষ পর্যন্ত আসতেই শব্দ পেল হৈ হুল্লোড়ের। বাড়ির ছোট বড় সকলেই আড্ডা মিলিয়েছে এই কক্ষে। পৃথাও আছে এদের সাথে, বসে রয়েছে সোফায়। তারেক আর ইরা তার পাশে বসেই কি যেন বলছে আর সে হেঁসে লুটোপুটি খাচ্ছে। তুর্যের দৃষ্টি শীতল হলো, প্রশান্তিতে ছেয়ে গেল তার হৃদয়। এই মেয়েটার মুখের একটু হাসি তাকে কতটা শান্তি দেয় তা কি সে জানে? হয়তো জানে না। তুর্য মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো পৃথার হাসি মুখটার পানে। সকলে আড্ডায় এতটাই মশগুল যে এখনও তাকে খেয়াল করেনি কেউ।
কিঞ্চিৎ সময় অতিবাহিত হলো। হঠাৎ তুর্যের মেঝ চাচি কুলসুম বেগমের নজর গেল দরজার পানে। চোখে পড়লো তুর্যকে। মহিলা ক্ষানিকটা চমকালেন। অবাক কন্ঠে বললেন,
-“আরে তুর্য কখন এসেছিস? আর ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
কুলসুম বেগমের কথায় হুশ ফিরলো সবার। চমকে উঠে তাকালো তুর্যের পানে। কুলসুম বেগম উঠে দাঁড়ালেন। ব্যস্ত ভঙ্গিতে আবার বললেন,
-“দুপুর গড়িয়ে রাতে ফিরেছিস। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো হয়েছে তো? তুই ফ্রেশ হয়ে আয় তাড়াতাড়ি। আমি খেতে দিচ্ছি।”
তুর্য হাসলো কুলসুম বেগমের তাড়াহুড়ো দেখে অতঃপর স্বাভাবিক কন্ঠে বলল,
-“আপনি ব্যস্ত হবেন না মেঝ চাচী। আমি দুপুরে খেয়েছি এরপর রাতের খাবারটা আপনাদের সাথেই খাবো।”
কন্ঠে তোলা ধ্বনিগুলোর সমাপ্তি ঘটিয়ে তুর্য আর দঁড়ালো না ঐ স্থানে। লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেল নিজের কক্ষে। সারাদিনের দৌড় ঝাপে শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছে ভীষন। এই মুহূর্তে একটু গোসল না করলেই নয়। তুর্য দেরী করলো না, কক্ষে ঢুকেই আলমারি থেকে নিজের জামা কাপড় নিয়ে ঢুকলো ওয়াশ রুমে।
বেশ কিছুটা সময় নিয়ে গোসল সেরে সে বেরিয়ে এলো বাইরে। গলায় ঝুলানো তোয়ালে দ্বারা মাথা মুছতে মুছতে তাকালো কক্ষের আনাচে কানাচে। ভ্রু কুঁচকে এলো তুর্যের। পৃথা এখনও আসেনি এ কক্ষে? তুর্য ভেবেছিল তাকে দেখেই পৃথা এখানে আসবে। আর যদি নাও আসতে চায় তবে বাড়ির লোকেরা জোর করে পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু তারা তা করেনি। তুর্য দাঁতে দাঁত চাপলো। বিরবিরয়ে বলল,
-“বি’শ্বা’স’ঘা’ত’কে’র দল সব। এরা না আমি সেদিন বিয়ের আসর ত্যাগ করার পর আমার বউকে ধরে রাখতে পেরেছে আর না এখন ঘরে পাঠাচ্ছে।”
তুর্য আরও কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো পৃথার আগমনের। কিন্তু সে আসলো না। নাহ এই বাড়ির লোকগুলো তাকে আর ভালো হতে দিল না। তার চরিত্র থেকে নির্লজ্জ শব্দটার উৎখাত করতে দিল না। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো তুর্য। অধৈর্য্য কন্ঠে ডাকলো,
-“পৃথা, এই পৃথা রুমে আসো তাড়াতাড়ি।”
তুর্যের জোরালো কন্ঠের হাক ডাক শুনলো বসার কক্ষে আড্ডায় নিয়োজিত সবাই। পৃথা লজ্জা পেল। আড় চোখে তাকালো সবার পানে। সবাই কেমন ঠোঁট টিপে হাসছে তার উপর। আর এ লোকটাকে ও বলিহারি যাই। দেখে গেল এখানে ছোট বড় এতগুলো মানুষ। তারপরও এভাবে ঘরে গিয়ে না ডাকলেই কি হতো না? ইরা নিজের কনুই দিয়ে গুতো মারলো পৃথার পেটে। রসিকতা করে বলল,
-“আমার ভাইকে তো দেখছি ভালোই পাগল করেছো ভাবী। বাড়িতে ফিরেই বউকে চোখে হারাচ্ছে।”
পৃথার লজ্জা বাড়লো। লাজে মাথা নুইয়ে ফেললো সাথে সাথে। কুলসুম বেগম দেখলেন মেয়েটাকে। ঠোঁট টিপে হেসে বললেন,
-“এখনও বসে আছো কেন মেয়ে? যাও গিয়ে দেখো তোমার স্বামী তোমাকে ডেকে ডেকে আমাদের কানের পোকা মারছে কেন?”
পৃথা এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। এরা কি লজ্জাটাই না দিচ্ছে তাকে। এখানে থাকলে হয়তো আরও লজ্জা দিবে। তার থেকে পৃথার এখান থেকে চলে যাওয়াই ভালো হয়তো। মেয়েটা হাঁসফাঁস করে উঠে দাঁড়ালো। লজ্জালু ভঙ্গিতে সম্মুখে পা বাড়াতেই সাথী বেগম একটা গ্লাস হাতে এসে দাঁড়ালেন পৃথার নিকটে। মেয়েটার হতে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
-“এটা নিয়ে যাও। ঠান্ডা শরবত, সারাদিন পর ছেলেটা বাড়ি ফিরেছে। শরীরটা নিশ্চই ক্লান্ত। এটা খেলে একটু ভালো লাগবে।”
পৃথা দ্বিরুক্তি করলো না। হালকা করে মাথা ঝাঁকিয়ে শরবতের গ্লাসটা হাতে নিয়ে গেল কক্ষের পানে। কিন্তু কক্ষে ঢুকেই নিজের ভোল বদলালো পৃথা। চড়া গলায় তুর্যকে বলল,
-“এভাবে ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছেন কেন? কি হয়েছে?”
তুর্য ঠোঁট উল্টালো। বাচ্চাদের মতো বলল,
-“তোমাকে ভীষন মিস করছিলাম তো। একদম চাতক পাখির ন্যায়।”
পৃথা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালো তুর্যের পানে তবে উত্তর দিল না কোনো। এ লোকের কথার উত্তর দেওয়া মানে আরেকটা অ’স’ভ্য মার্কা কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া। পৃথা নিজে হাতে ধরে থাকা শরবতের গ্লাসটা এগিয়ে দিল তুর্যের পানে। স্বাভাবিক কন্ঠে বলল,
-“ছোট চাচী ঠান্ডা শরবত পাঠিয়েছেন। খেয়ে নিন তাড়াতাড়ি।”
তুর্য হাত বাড়িয়ে পৃথার হাত থেকে নিল শরবতের গ্লাসটা। এক চুমুকে গ্লাস খালি করে রাখলো পাশেই টেবিলে। অতঃপর বিছানার উপর থেকে একটা মোবাইলে বাক্স তুলে এনে বাড়িয়ে দিল পৃথার পানে। ঠান্ডা কন্ঠে বলল,
-“এটা তোমার।”
পৃথার চোখ দুটো চকচক করে উঠলো। ছো মেরে সে মোবাইলের নিল তুর্যের হাত থেকে। অবিশ্বাস্য কন্ঠে বলল,
-“সত্যি?”
তুর্য হাসলো। অভয় দিয়ে বলল,
-“একদম তিন সত্যি।”
পৃথার আনন্দ আর দেখে কে? সে মোবাইলটা নিয়ে উৎফুল্ল হয়ে বসলো বিছানায়। বাক্স খুলে বের করলো মোবাইলটা। বেশ দামীও মনে হচ্ছে। পৃথা উল্টে পাল্টে দেখতে শুরু করলো মোবাইলটা। তুর্য নিঃশব্দে বসলো তার পাশে। হুট করেই বলল,
-“পরিবারের সাথে কথা বলবে?”
পৃথার হৃদয় ভারী হলো, ওষ্ঠে স্থান পাওয়া হাসিটা উবে গেল মুহুর্তেই। ভীষণভাবে মনে পড়লো বাবা, মা এবং ভাইদের কথা। তারা কেমন আছে এখন? তার কথা কি মনে করছে? পৃথার ভীষণ ইচ্ছে করলো বাবা মা এবং ভাইদের সাথে কথা বলতে কিন্তু তার অভিমানেরা তাকে বেঁধে রেখেছে। কিভাবে পারলো তার পরিবার তার সাথে এত বড় একটা অন্যায় করতে? একটুও ভাবলো না তার কথা? তাদের কাছে মেয়ের থেকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রক্ষাটা কি খুব বেশিই বড় হয়ে গিয়েছিল? পৃথার চোখ মুখ শক্ত হয়ে উঠলো। শক্ত কন্ঠে বলল,
-“না।”
-“এখনও অভিমান করে আছো পরিবারের উপর?”
-“আমার কারো উপর কোনো অভিমান নেই।”
তুর্য একটু গা ঘেঁষে বসলো পৃথার। নমনীয় কন্ঠে বলল,
-“পরিবার যতই ভুল করুক না কেন তারা তোমার পরিবার পৃথা। তারা তোমাকে লালন পালন করে বড় করেছে। তারা যদি না থাকতো কখনওই তুমি এত সুন্দর একটা জীবন পেতে না। হ্যা মানছি তাদের একটা ভুল হয়েছে কিন্তু তাই বলে তুমি পরিবারের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে? জন্ম থেকে এই ১৭ টা বছর তুমি কিন্তু তাদের কাছেই ছিলে পৃথা। এই ১৭ বছরে কি তুমি তাদের সাথে কোনো ভুল করোনি? অবশ্যই করেছো। কিন্তু তারা কি সেই ভুলের জন্য তোমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে? তোমাকে কি পরিবার থেকে বিতাড়িত করেছে? করেনি বরং তোমাকে মাফ করে ভালোবেসে পরিবারের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে রেখেছে।
থামলো তুর্য আবার বলল,
-“শুনেছি প্রসবকালীন সময়ে একজন মা শরীরের ২০ টি হাড় ভাঙার সমান ব্যথা সহ্য করেন। যা পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টকর ব্যথাগুলোর একটি। প্রসবব্যথার সঙ্গে আর কোনো ব্যথার তুলনা হয় না। সেই ব্যথা সহ্য করে তোমার মা তোমাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তোমাকে জীবন দিয়েছে। অথচ আজ তোমার জীবনের একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তুমি তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চাইছো? হ্যা আমি তারপরও মানছি তাদের ভুল আছে, অন্যায় আছে। সমাজের আইন বা মানবাধিকারের মতে তারা তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে না। তবুও হয়ে গেছে একটা ভুল তাই বলে তুমি তো একদম পরিবার ছেড়ে দিতে পারো না। তাদের একটা অন্যায়ের জন্য তোমার প্রতি তাদের সারা জীবনের অবদান ভুলে যেতে পারো না।”
পৃথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো তুর্যের সব কথাগুলো। নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারলো। সত্যিই তো অভিমানের বশে পরিবার ছেড়ে দিতে পারে না সে। অথচ পৃথা পরিবার ছেড়েই এখানে এসেছে। মেয়েটার চোখের সম্মুখে ধীরে ধীরে ভেসে উঠলো শুরু করলো পরিবারের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো। হাসি কান্না মিলে কত মুহুর্ত। বাবার কাঁধে চড়া, ভাইদের সাথে দুষ্টুমি, মায়ের আঁচল ধরে ঘোরা। এই তো সেদিনও বাবা কি যত্ন করে ভাত খাইয়ে দিল তাকে অথচ আজ তারা কোথায়? আঁখি পল্লব ভারী হলো পৃথার। হুট করেই হু হু করে কেঁদে উঠলো মেয়েটা। তুর্য নিজের এক হাত বাড়িয়ে পৃথাকে আগলে নিল নিজ বক্ষের সাথে। শান্তনা দিয়ে বলল,
-“কান্না থামিয়ে বাড়িতে কল করো।”
পৃথা কান্না থামালো। তুর্যের বুক থেকে উঠে সোজা হয়ে বসলো। মোবাইল ঘেটে পলাশ শিকদারের নাম্বারটা তুললো স্ক্রীনে অতঃপর নিজের নতুন মোবাইল থেকে প্রথম কলটা সে তার বাবাকেই করলো।
একটু সময় রিং হতেই কলটা ধরলেন পলাশ সিকদার। ভারী কন্ঠে বললেন,
-“আসসালামুয়ালাইকুম, কে বলছেন!”
পৃথার গলা ধরে এলো। মনে হচ্ছে যেন কত বছর পর সে তার বাবার কন্ঠস্বর শুনছে। যে বাবাকে চোখে হারাতো সে সেই বাবার সাথে গোটা দুইটা দিন কথা হয়নি তার। অনেক কষ্টে নিজের কান্না দমন করলো পৃথা। অস্ফুট কন্ঠে বলল,
-“বাবা!”
চমকে উঠলেন পলাশ শিকদার। আঁখিদ্বয় ভরে উঠলো পৌঢ় লোকটার। পৃথা কল করেছে তাকে। অবশেষে তাহলে মেয়ের অভিমান ভেঙেছে। পলাশ শিকদার সামলে নিলেন নিজেকে। নমনীয় কন্ঠে বললেন,
-“অবশেষে তাহলে আমার মেয়েটার মনে পড়লো আমাদের কথা। কেমন আছিস মা?”
-“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো বাবা? আর মা ভাইয়ারা তারা কেমন আছে?”
পলাশ শিকদার উত্তর দিবেন তার আগেই শোনা গেল সুফিয়া বেগমের কন্ঠস্বর। উনি পাশেই ছিলেন স্বামীর। মেয়ে কল করেছে শুনে আর ধরে রাখতে পারেননি নিজেকে। এক প্রকার পলাশ শিকদারের থেকে মোবাইলটা ছিনিয়ে নিয়ে ধরলো নিজের কানে। ভেজা কন্ঠে বলল,
-“কেমন আছিস মা? কেন আমাদের এভাবে ছেড়ে চলে গেলি? এত অভিমান তোর?”
পৃথা কানে মোবাইল নিয়েই তাকালো তুর্যের পানে। অপরাধীর কন্ঠে মাকে বলল,
-“স্যরি মা।”
ব্যস শুরু হয়ে গেল দুই মা মেয়ের কথোপকথন। এখানে আর কারো স্থান নেই। খুঁটিনাটি পানি খাওয়া থেকে ওয়াশ রুম সবকিছুর বর্ণনায় নামলো তারা। তুর্য হতাশ হলো। কোথায় সারদিনের কাজ সেড়ে এসে দুই দন্ড বউয়ের সাথে কথা বলবে হোক ঝগড়া তা না বউ এখন তার শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলতে ব্যস্ত। কেন যে এই সময়ে এসে সে পরিবারের সাথে কথা বলার কথা তুললো কে জানে? কাল কাজে বের হওয়ার আগে বলে যেতো কথা বলতে। সেও কাজে থাকতো আর পৃথাও পরিবারের সাথে কথা বলতো। তা না এখন শুরু করেছে। ঐ যে কথায় আছে না “চো’র পালালে বুদ্ধি বাড়ে” তুর্যের এখন বুদ্ধি বেড়েছে তবে এই বুদ্ধিতে লাভ নেই কোনো।
৩৬.
সময় প্রবাহমান। সে বয়ে চলছে নিজের গতিতে। এরই মধ্যে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। যদিও এই কয়দিনে তুর্য আর পৃথার সম্পর্কের উন্নতি হয়নি তেমন। তুর্য নিজের কাজের জন্য দিনের বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে ছিল। শুধুমাত্র রাতে এসেছে তাও পৃথার ঘুমানোর পর। মাঝে মাঝে পৃথা খেয়ে ঘুমালে বিরক্ত করেনি আর না খেয়ে ঘুমালে তুলে খাইয়ে দিয়েছে। এই টুকুই তাদের সাক্ষাৎ। মোবাইল একটা কিনে দিলেও তুর্যের সময়ের অভাবে দুজনের কথা হয়ে ওঠেনি তেমন। তবে এই সব কিছুর মধ্যে তুর্য একটা ভালো কাজ করেছে। তা হলো পৃথাকে রাজশাহী কলেজ থেকে এখানকার কলেজে ট্রান্সফার করিয়ে এনেছে। এখানকার কলেজেই ভর্তি করিয়ে দিয়েছে মেয়েটাকে।
চলবে…..
)