#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_৩৩
( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )
৩৭.
পৃথা কলেজে ক্লাস করা শুরু করে দিয়েছে ইতমধ্যে। এমনি এই বিয়ে, মান অভিমানে সময় চলে গিয়েছে অনেকটা। পড়াশোনাচতেও অনেক পিছিয়ে পড়েছে। সামনে এইচএসসি, এখনও যদি ঘাফেলতি করে তবে পরীক্ষায় ফেল করতে হবে নির্ঘাত। ইরাও পৃথার কলেজে একই ক্লাসে পড়ে শুধুমাত্র তাদের বিষয় আলাদা। তাই কলেজে যেতে কিংবা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে ততটা অসুবিধা হয়নি পৃথার। ক্লাস করা ব্যতীত দুই ননদ ভাবী সর্বদা এক সাথেই সময় কাটিয়েছে। ইরা তার পরিচিত অনেকের সাথেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছে পৃথার। সবটা মিলিয়ে নতুন পরিবেশেও সে বেশ ভালোই আছে।
তবে ইদানীং তুর্যটা দূরে দূরে থাকছে পৃথার। গভীর রাত ছাড়া তার দেখাই পাওয়া যায় না। সারাক্ষণ শুধু কাজ আর কাজ। এত কি কাজ করে জানা নেই পৃথার। যতদূর জানে সে বাড়ির ব্যবসার কাজেই যুক্ত। কিন্তু ব্যবসার কাজ তো বাড়ির বাবা, চাচা, ভাইরাও করে। তাদের তো এত চাপ নেই। তারা দুপুরে আসে আবার রাতেও তাড়াতাড়ি আসে তাহলে তুর্যের এত কি কাজ? মাঝে মাঝে তুর্যহীনা ভীষণ মন খারাপ হয় পৃথার, চাপা অভিমান জন্মে হৃদয়ে। কিন্তু যখন রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে যায় আর মাঝ রাতে এসে তুর্য তাকে আদুরে কন্ঠে ডেকে তুলে খাইয়ে দেয় তখন সব অভিমানেরা ঝড়ে পড়ে। তুর্যের ক্লান্ত মুখটার পানে তাকিয়ে ভীষণ মায়া লাগে তখন। হৃদয়টা হাহাকার করে। ভীষণভাবে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়,
-“আপনি কি ভীষন ক্লান্ত?”
কিন্তু এ প্রশ্নটা আর করতে পারে না পৃথা। নিজের ভিতরকার অস্বস্তিবোধে মনের প্রশ্ন মনেই রয়ে যায়। তবে পৃথা আজ ঘুমায়নি। অপেক্ষা করে রয়েছে তুর্যের আসার। বিছানায় কতগুলো বই খাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে তার মধ্যখানে ঘুমে ঢুলুঢুলু হয়ে বসে রয়েছে। অথচ তুর্যের আসার কোনো খবর নেই। পৃথা ঘাড় বাঁকিয়ে দেয়ালে টানানো ঘড়িটার পানে তাকালো একবার। ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক ধ্বনি তুলে জানান দিচ্ছে এখন রাত ১২ টা। পৃথা অস্থির হলো। বিছানায় ফেলে রাখা মোবাইলটা হাতে তুলে নিল। একবার ভাবলো কল করবে তুর্যকে কিন্তু পরক্ষনেই আবার সিদ্ধান্ত বদলালো। ছেলেটা হয়তো নিজের কাজে ব্যস্ত বেশ নয়তো ঠিক বাসায় চলে আসতো। এই কয়দিনে এইটুকু তো সে তুর্যকে চিনেছেই। পৃথা অস্থির হৃদয় নিয়ে বই খাতা ছড়ানো ছিটানো বিছানাটায় শুয়ে পড়লো, হতাশ ভঙ্গিতে তাকালো ইট পাথরে গড়া ছাদটার দিকে। ঠিক তখনই খট করে খুলে গেল কক্ষের দরজাটা। পৃথা চমকালো, হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো বিছানায়। দরজার পানে তাকিয়েই দেখা মিললো তুর্যের। পৃথার ওষ্ঠে হাসি ফুটে উঠলো। বিছানা থেকে তড়িঘড়ি করে নামতে নামতে সে বলল,
-“চলে এসেছেন আপনি?”
তুর্য তাকালো পৃথার পানে। মেয়েটাকে এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে দেখে অবাক হলো সে। এতদিনে এত রাত পর্যন্ত তো এই মেয়েকে সে জেগে থাকতে দেখেনি কখনও। তুর্য ভ্রু কুঁচকালো। বিছানার পানে এগিয়ে যেতে যেতে বলল,
-“আজ ঘুমাওনি এখনও? এত রাত অব্দি বসে আছো কেন?”
পৃথা অপ্রস্তুত হলো। “আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম” কথাটা বলতে গিয়েও আটকে গেল। কেমন একটা অস্বস্তি অস্বস্তি লাগছে তার। এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো পৃথা। সত্যিটা চেপে গিয়ে বলল,
-“ঘুম আসছিলো না তাই।”
তুর্য আর ঘাটলো না পৃথাকে। বাহিরের পোশাক শরীরে জড়ানো অবস্থাতেই সটান হয়ে শুয়ে পড়লো বিছানায়। পৃথা ভরকে গেল প্রথমে তবে পরপরই জ্বলে উঠলো আবার। বাহিরের ঘর্মাক্ত, ধুলোবালিময় পোশাক পড়ে এভাবে তার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বিছানায় লোকটা শুয়ে পড়লো? পৃথা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালো তুর্যের পানে। ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,
-“একি আপনি বাহিরের বাসী পোশাকে শুয়ে পড়লেন কেন? উঠুন ফ্রেশ না হয়ে আসুন তাড়াতাড়ি।”
তুর্য উঠলো না। নাকমুখ কুঁচকে বলল,
-“অনেক ধকল গেছে আজ আমার উপর থেকে। একটু বিশ্রাম নিতে তো দাও।”
পৃথা শুনলো না তুর্যের কোনো কথা। ছেলেটার এক হাত টেনে বসিয়ে দিল বিছানায়। চড়া গলায় বলল,
-“আগে ফ্রেশ হয়ে আসুন তারপর বিশ্রাম নিবেন, যান।”
তুর্য বিরক্ত হলো ভীষণ। শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছে, একটু শুয়ে বিশ্রাম নিবে তা না। এই মেয়েটা আজ জেগে কেন আছে কে জানে? জেগে না থাকলে সে একটু বিশ্রাম নিতে পারতো। তুর্য একরাশ বিরক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়ালো বিছানা থেকে। নাক মুখ কুঁচকে বাড়ির পোশাক নিয়ে ঢুকলো ওয়াশ রুমে ফ্রেশ হতে।
বেশ অনেকটা সময় নিয়ে গোসল সেড়ে তুর্য বেরিয়ে এলো বাইরে। সম্মুখে তাকিয়েই অবাক হলো সে। পৃথা বিছানা থেকে বই খাতা গুছিয়ে খাবারের প্লেট নিয়ে বসে আছে সেখানে। এ দৃশ্য বিশ্বাস করতে যেন কষ্ট হলো তুর্যের। সে ভুল দেখছে না তো? যে মেয়ে তাকে পাত্তা দেয় না, ভালোভাবে একটু কথা বলে না। সব সময় চড়া মেজাজে বসে থাকে সে কিনা আজ তার জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে? আশ্চর্য! তুর্য চোখ বন্ধ করে আবার খুললো। নাহ ভুল দেখছে না সে। সত্যিই পৃথা খাবার নিয়ে বসে আছে তার জন্য। তুর্য এগিয়ে গেল বিছানার পানে। অবিশ্বাস্য কন্ঠে বলল,
-“তুমি আমার জন্য খাবার এনেছো?”
পৃথা অপ্রস্তুত হলো আবারও। আমতা আমতা করে বলল,
-“তা তো প্রতিদিনই আনি। শুধুমাত্র প্রতিদিন ঘুমিয়ে থাকি আর আজ জেগে আছি এই টুকুই পার্থক্য।”
তুর্য আর কথা বাড়ালো না। তার বউ যে তার জন্য খাবার নিয়ে এসেছে এই তো অনেক। এরপর আবার বেশি কিছু বলতে গেলে দেখা যাবে এইটুকু যত্নও কপালে জুটবে না। তুর্য বসে পড়লো বিছানায়। খাবার প্লেট হাতে নিয়ে বলল,
-“পাশে বসো খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে।”
পৃথা খায়নি, তুর্যের জন্যই বসে ছিল এতক্ষন। এই কয়দিন তুর্যের হাতে খেতে খেতে তার হাতে খাওয়াটা কেমন একটা বদ অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে পৃথার। কিন্তু এই মুহূর্তে এসে ভিতরে ভিতরে একটা অস্বস্তিবোধও হচ্ছে ভীষনভাবে। এই কয়দিন তো তুর্য তাকে ঘুমের মধ্যে খাইয়ে দিয়েছে তাই তেমন কোনো অনুভূতির উপস্থিতি টের পায়নি হৃদয়ে। কিন্তু আজ তো জেগে আছে। কেমন একটা লাগছে ভিতরে ভিতরে। একটু লজ্জা, একটু অস্বস্তিবোধ, একটু ভালো লাগা সব মিলিয়ে মিশ্র এক অনুভূতির আভাস পাচ্ছে সে নিজ হৃদয়ে। পৃথা চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকালো। কন্ঠ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়েই বলল,
-“আমি খেয়েছি। আপনি খেয়ে নিন এখন।”
তুর্য শীতল দৃষ্টিতে তাকালো পৃথার পানে। ঠান্ডা কন্ঠে বলল,
-“তোমার মুখ দেখলেই তোমার পেটের খবর আমার কাছে চলে আসে। পাশে বসো খাইয়ে দিচ্ছি।”
পৃথা অবাক হলো। আনমনেই মুখে হাত চলে গেল মেয়েটার। তার মুখে কি লেখা আছে যে সে খায়নি অপেক্ষা করে বসে রয়েছে। আয়নায় দেখতে হচ্ছে তো বিষয়টা। পৃথার ভাবনার মধ্যেই তুর্য মৃদু কন্ঠে ধমকে উঠলো তাকে। ভারী স্বরে বলল,
-“কি হলো বসো।”
পৃথা আর দ্বিরুক্তি করলো না। এত রাত পর্যন্ত বসে থাকতে থাকতে পেটে ক্ষুধায় লাল বাত্তি জ্বলতে শুরু করেছে। এই লাল বাত্তির যন্ত্রনার থেকে অস্বস্তিবোধ উপেক্ষা করে খেয়ে নেওয়া ভালো। পৃথা বসে পড়লো তুর্যের পাশে। তুর্য সময় নিল না। মেয়েটা বসতেই ছোট ছোট লোকমা করে তুলে দিতে শুরু করলো তার মুখে আর সাথে সাথে নিজেও খেতে শুরু করলো তৃপ্তি নিয়ে।
***
বেশ কিছুটা সময় নিয়ে দুজনেই খাওয়া শেষ করলো। অতঃপর দুই দিকে দুইজন মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লো বিছানায়। কিন্তু আজ কেন যেন পৃথা অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে থাকতে পারলো না। অল্প সময়ের ব্যবধানেই সে ঘুরে গিয়ে তাকালো তুর্যের পানে। মায়া হলো ভীষন। লোকটা নিশ্চই খুব ক্লান্ত। তখন কেমন এসেই শুয়ে পড়লো। এতদিন করতে চাওয়া প্রশ্নটা আর নিজের ভিতরে চেপে রাখতে পারলো না পৃথা। হুট করেই বলে ফেললো,
-“আপনার কি খুব বেশি ক্লান্ত লাগছে?”
তুর্য অন্য দিকে মুখ করেই জবাব দিল,
-“ঠিক ক্লান্ত না তবে সারাদিনের কাজ কর্মে হাঁপিয়ে উঠেছি ভীষণ, মাথাটাও ধরেছে।”
পৃথা বিছানায় উঠে বসলো। ইতস্তত করে বলল,
-“আপনার মাথাটা টিপে দেব আমি? দেখবেন আর মাথা ব্যথা থাকবে না।”
তুর্য অবাক হলো। তড়িৎ গতিতে সে তাকালো পৃথার পানে। আজ কি হয়েছে মেয়েটার? এতটা খেয়াল রাখছে তার। তবে কি পৃথা সব মেনে নিতে শুরু করেছে? ভেঙে গেছে কি তার অভিমান? তুর্য ক্ষানিকটা অবাক সুরেই বলল,
-“সূর্য আজ কোন দিক থেকে উঠেছিল? এত রাত অব্দি জেগে আছো, আমার জন্য খাবার আনছো আবার এখন বলছো মাথা টিপে দিবে?”
পৃথার কেমন ভালো লাগলো না তুর্যের কথাগুলো। সে কি স্বামীর প্রতি একটু মায়া করে কিছুই করতে পারে না। তাছাড়া আজ যা যা করেছে তাতে তার কতটা অস্বস্তিবোধ হয়েছে তা কি এ জানে? জানে তো নাই উল্টো তার অস্বস্তিবোধকে আরও বাড়িয়ে দিতে কতগুলো কথা বলল। পৃথা মাথা নুইয়ে ফেললো। মিনমিনিয়ে কন্ঠে বলল,
-“ঠিক আছে দেব না মাথা টিপে।”
তুর্য এক দন্ড সময়ও ব্যয় করলো না। তড়িঘড়ি করে মাথা রাখলো পৃথার কোলে। ক্যাবলার মতো হেসে বলল,
-“এই না না আমি তো মজা করছিলাম একটু। তুমি মাথা টিপে দাও আমার।”
পৃথা শিউরে উঠলো তুর্যের এহেন স্পর্শে। ভিতরে ভিতরে অস্বস্তিবোধেরা যেন আরও ডানা মেললো। হৃদ স্পন্দন বাড়লো দ্রুত। ঢোক গিললো পৃথা অতঃপর বলল,
-“বালিশ আছে তো।”
তুর্য শীতল দৃষ্টিতে তাকালো পৃথার পানে। মৃদু কন্ঠে বলল,
-“তোমার কোলে মাথা রেখে যে শান্তি আমি পাচ্ছি তা ঐ নরম তুলতুলে শিমুল তুলার বালিশেও নেই বউ।”
পৃথা আর বলল না কিছুই। লাজুক ভঙ্গিতে নিজের নরম হাত রাখলো স্বামীর মাথায়। আলতো হাতে টিপে দিতে শুরু করলো মাথাটা। তুর্য পরম আবেশে নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে নিল। কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে বলল,
-“তোমার হাত দুটো বেশ নরম বউ।”
পৃথা লজ্জা পেল। লাজুক হেসে বলল,
-“আর আপনার কপালটা ভীষন শক্ত।”
৩৮.
দুপুরের তপ্ত রৌদ্র। চারদিকে খা খা করছে যেন। সেই রৌদ্রকে মাথায় নিয়েই কলেজের সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে পৃথা এবং ইরা। একটু আগেই কলেজ ছুটি হয়েছে তাদের। প্রতিদিন তাদের ছুটির আগেই বাড়ির গাড়িটা দাঁড়িয়ে থাকে এখানে তাদের অপেক্ষায়। কিন্তু আজ এখনও আসছে না কেন কে জানে। চারদিকে একটু লোক সমাগমও বেশি আজ। আশেপাশে কিছু একটা ঘটেছে সম্ভবত। এতক্ষন ক্লাসে থাকার দরুন তারা জানে না কিছুই। তবে দলে দলে যেভাবে লোকজন ছোটাছুটি করছে তাতে মনে হচ্ছে মারাত্মক কিছু ঘটেছে। সকলের চোখে মুখেও কেমন আতঙ্কের ছাপ। পৃথা আর ইরার চেয়ে চেয়ে দেখছিলো সকলকে এর মধ্যেই কতগুলো ছেলে এসে দাঁড়ালো তাদের পাশে। সম্ভবত এ কলেজেরই শিক্ষার্থী এরা। কলেজ ড্রেস দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। ছেলেগুলোর মধ্যে একজন হঠাৎ বেশ আতঙ্কের স্বরে বলল,
-“দেখলি কি নির্মম ভাবে মা’র’লো লোকটাকে।”
ছেলেটার কথা শেষ হতে না হতেই আরেক জন ছেলে বলল,
-“বুকটা একদম গু’লি করে ঝাঁ’ঝ’রা করে দিয়েছিল দেখেছিস?”
আরেকজন বলল,
-“ওদের প্রশিক্ষণই দেওয়া হয় এমন মায়া দয়াহীভাবে।”
ইরা আর পৃথা পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনলো ছেলেগুলোর কথা। ভিতরে ভিতরে কৌতুহল অনুভব করলো তারা। কে আবার কাকে মে’রে’ছে? আর মা’রা’র’ও আবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নাকি? ইরা কিছুটা কৌতুহল নিয়েই ছেলেগুলোকে প্রশ্ন করলো,
-“কি হয়েছে ওখানে?”
ছেলেগুলো ওদের দিকে তাকালো। একজন বলল,
-“এন’কাউন্টা’র হয়েছে।”
সাথে সাথেই আরেকজন বলল,
-“আরুশ শেখ তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ এন’কাউন্টার’টা করে ফেলেছে আজ এখানে।”
চলবে…..